শূন্য থেকে যার শুরু

সবাই চেয়েছেন, সিসিবি-র ১০০০তম পোস্টটি হোক ইতিহাস বিষয়ে, জগৎ ও জীবনের ইতিহাস না, এই সিসিবি-র ইতিহাস। সিসিবির সূচনা এবং যাত্রাপথ সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা দেয়াই এর উদ্দেশ্য। অনেক কিছুই হয়ত বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে না, নৈর্বক্তিক পোস্টে খুব বেশী কিছু আশাও করা যায় না। ইতিহাসের চেয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা মানুষগুলোই গুরুত্বপূর্ণ, সেদিক দিয়ে সিসিবি-র সবাই সিসিবি-র ইতিহাস। নিজেদের এই ইতিহাসকেই কিছুটা নৈর্বক্তিক করে তোলার কাজ তাহলে শুরু করে দেয়া যাক:

* শুরুটা ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে। কারণ তখন সিসিবি-র বর্তমান সদস্য কেউই ব্লগের সাথে খুব বেশী জড়িত ছিলেন না। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে ইংরেজি উইকিপিডিয়াতে “Cadet Colleges in Bangladesh” নামে একটি নিবন্ধ লেখা হয়। ক্যাডেটরা ফাঁকিবাজ। তাই এই কাজটি করতে গিয়েও তারা বাংলাপিডিয়া থেকে কপি-পেস্ট করেছিলেন। যথারীতি নিবন্ধটি মুছে দেয়া হয়। কিন্তু উৎসাহ তাতে কমেনি, বরং বেড়েছে। এক সময় ইংরেজি উইকিপিডিয়ায় ১০টি ক্যাডেট কলেজ নিয়ে আলাদা আলাদা নিবন্ধ লিখা হয়।

* অবশেষে প্রথম আলোতে রাগিব হাসানের প্রচারণার সুবাদে বাংলা উইকিপিডিয়ার খোঁজ পাওয়া যায়। বেশ কয়েকজন এক্স-ক্যাডেট বাংলা উইকিপিডিয়ায় লেখা শুরু করেন। তখনই এই প্লাটফর্মে ক্যাডেট ফিলিংসের গোড়াপত্তন হয়। এই ফিলিংস থেকেই একটি টেম্পলেট বানানো হয় যাতে লেখা ছিল “এই ব্যবহারকারী একজন এক্স-ক্যাডেট”। এক্স-ক্যাডেট উইকিপিডিয়ানরা তাদের ব্যবহারকারী পাতায় এই টেম্পলেটটি রাখা শুরু করেন। সেই এক্স-ক্যাডেট উইকিপিডিয়ানদের নাম এখানে দেখতে পাবেন: বোকা মানুষটা (মহিব), মুহাম্মদ, রায়হান আবীর, স্বপ্নগুলো তোমার মত (জিহাদ), স্যাম ঝ্যাং (সামিয়া)।

* কিছুদিন পর ইংরেজি উইকিপিডিয়ায় ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের নিবন্ধে রাহুল দেওয়ান (প্রাক্তন কলেজ প্রিফেক্ট) ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়। উনি পরিচয় করিয়ে দেন আরিফুর রহমান ভাইয়ের (ফৌজিয়ান-১৭৬০) সাথে। আরিফ ভাইয়ের নিজের একটি সার্ভার আছে এবং সেই সার্ভারে তিনি OFA-র একটি উইকিভিত্তিক ওয়েবসাইট চালান। আরিফ ভাইয়ের সার্ভারে অচিরেই মেকার উইকি এবং এককের উইকি চালু হয়।

* ওদিকে জিহাদ তখন ভাবছে অন্য কিছুর কথা। তিনমাসের ম্যারাথন ছুটিতে কি করা কি করা যায় ভাবতে ইন্টারনেটের ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছিল তখন একদিন গুগলে কোন একটা সার্চ রেজাল্টের লেজ ধরে সামহোয়ার ইন ব্লগের খোঁজ পেয়ে যায় একদিন। অভ্রর সাথে ওর পরিচয় এরও বেশ কয়েকদিন আগেই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইন্টারনেটের খোলা আঙিনায় নিজের খুব চেনা শব্দগুলোকে এমনভাবে সেইই প্রথমবারের মত দেখা। প্রেমে পড়তে সময় লাগেনি। সেই প্রেম পরিণতিতে এসে ঠেকলো সেদিনই ব্লগে রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমে। ব্লগিং শুরু করার কিছুদিন পরেই আবার ভাবনাতে এল অন্য চিন্তা; সামহোয়ার ইন যখন ঘোষণা দিল তারা আলাদা ভাবে গ্রুপ ব্লগিং এর শুরু করতে যাচ্ছে। গ্রুপ ব্লগিং এর কথা শুনে আবার সেই কলেজ লাইফের আড্ডাগুলো ভার্চুয়াল অবয়বে ফিরিয়ে আনার কথা মাথায় আসলো ওর। যেই ভাবা সেই কাজ। ঝটপট একটা মেইল লিখে ফেললো নতুন একটা গ্রুপ খোলার আবেদন জানিয়ে সামহোয়ার ইন কর্তৃপক্ষ বরাবর।” Dear sir, i want to open a group blog named “স্মৃতিময় ক্যাডেট কলেজ”….” মেইল লেখা শেষ করে ড্রাফট হিসেবে সেভ করে রেখে দিল আরেকটু ঘষামাজা করার দরকার আছে কীনা ভেবে। কারণ যে করেই হোক গ্রুপটা খুলতেই হবে। কোন ভাবেই মিস হতে দেয়া যাবেনা।

* এই অবস্থায় পরদিন ইয়াহু মেসেঞ্জারে রায়হানের নক। মেকা উইকি সাইটের একটা পেজের লিংক দিয়ে বললো ওখানে ক্যাডেট কলেজের জন্য একটা স্মৃতিচারণমূলক ব্লগ খুলেছে ও আর মুহাম্মদ মিলে। তেমন আহামরি কিছু নয়। একটা উইকি সাইটে নতুন একটা পৃষ্ঠা তৈরি করে তাতে ব্লগের মত করে সবকিছু সাজানো হয়েছে। ওদের দুইজনের পাশাপশি তুহিনকেও দেখা গেল। আর “স্যাম ঝ্যাং” নামের এম জি সি র কেউ একজন। কি অদ্ভূত নাম! জিহাদ ভাবলো। ওদের সাথে ভীড়ে মিশে যেতে সময় লাগলোনা একমুহূর্তও। ছোট হোক, তবু নিজেদের তো। নিজেদের মত করেই না হয় তাকে সাজিয়ে নেয়া যাবে ধীরে ধীরে। প্রথমে লেখা সেই মেইলটা ড্রাফট ফোল্ডারেই থেকে গেল। sent items এ ঠাঁই পাওয়া আর হলোনা। কারণ সামনে তখন আরও বড় কিছুর হাতছানি….
প্রথম বিশুদ্ধ ক্যাডেটীয় ব্লগিং প্লাটফর্মের যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালের ৮ই ডিসেম্বর। এজন্য এই দিনটিকে ক্যাডেট কলেজ ব্লগের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনই মেকার উইকিতে “Blog for all” নামে একটি আলাদা পৃষ্ঠা তৈরী করা হয়েছিল। সচলায়তন বা সামহোয়ারইনের মত সাধারণ প্লাটফর্মে ক্যাডেটীয় আড্ডা খুব বেশী জমতো না। নিজেদের জায়গায় শুধু নিজেরা থাকলেও সবকিছু আপন আপন লাগছিল।

* কিন্তু উইকিতে অনেক ঝামেলা ছিল। সেখানে অটোমেটিক কিছুই হতো না। সাম্প্রতিক মন্তব্য অপশনটাও নিজেদের যোগ করতে হত। তাই প্রকৃত ব্লগিং প্লাটফর্মের প্রয়োজনীয়তাটা বেড়ে যায়। হাতে দুটি অপশন ছিল: সামহোয়ারইনে ক্যাডেটদের জন্য একটি আলাদা গ্রুপ করা অথবা ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগস্পটের মত ব্লগ হোস্টিং সাইটগুলোতে নতুন ব্লগ শুরু করা। অবশেষে জিহাদ ওয়ার্ডপ্রেসে একটি ব্লগ তৈরী করে যার ঠিকানা ছিল: http://cadetcollege.wordpress.com

ওয়ার্ডপ্রেসে সিসিবি* ওয়ার্ডপ্রেসের এই ব্লগ সাইটটি ক্যাডেটীয় ব্লগিং জগতে বিপ্লব এনে দেয়। সামহোয়ারইনে যেসব ক্যাডেট ব্লগিং করতেন এবং যারা ব্যক্তিগত ব্লগিং এ অভ্যস্ত ছিলেন তারা সবাই একে একে এখানে পাড়ি জমান। তখনও খুব বেশী ব্লগ আসতো না। অনেকে পড়লেও নিয়মিত লেখক বেশ কম ছিল। বিভিন্ন ইয়াহু গ্রুপ এবং ফেসবুকে প্রচারণার কারণে আস্তে আস্তে সংখ্যাটি বাড়তে থাকে। এমন একটি সময়ই সবকিছু পরিবর্তন করে দেন কামরুলতপু ভাই। প্রতিনিয়ত মজার মজার সব কাহিনী লিখে যেতে থাকেন। আমরা অচিরেই বুঝতে পারলাম: এখনই সময় cadetcollegeblog.com নামে একটা স্বাধীন ব্লগ শুরু করে দিতে।

* শুরু হয়ে গেল জল্পনা-কল্পনা। স্থিতিশীল অবস্থা আসতে অনেক সময় লেগেছে। অনেকগুলো ধাপ পার হতে হয়েছে। প্রথমেই ডোমেইন কেনা দরকার ছিল। তারেক ভাই (কনফুসিয়াস/মু. নূরুল হাসান) cadetcollegeblog.com ডোমেইনটি কিনে ফেললেন। এখন কেবল হোস্ট প্রয়োজন। প্রথমে হোস্টিং এর দায়িত্ব নিলেন ওফা উইকির আরিফুর রহমান ভাই। হোস্ট কেনা বাদ দিয়ে আমরা আরিফ ভাইয়ের লিনাক্স সার্ভারেই সাইট শুরু করলাম। সাইটের ডিজাইন নিয়ে মির্জাপুরিয়ান নাজমুল ভাই অনেক সাহায্য করেছিলেন। তিনি নিজে বেশ কয়েকটি ডিজাইন করেও দিয়েছিলেন।

সিসিবির প্রথম থিম* সিসিবি-র সদস্য সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। আরিফ ভাইয়ের সার্ভারের সব ট্রাফিক আমরা একাই খেয়ে ফেলতে থাকি। তাই সার্ভার পরিবর্তনের প্রয়োজন দেখা দেয়। এরই মধ্যে আবার dot5hosting এ জায়গা কেনা হয়। কামরুলতপু ভাই জায়গা কেনার ব্যবস্থা করেন, জাপান প্রবাসী আরেক বড় ভাই স্পন্সর করেন। কিন্তু সেই হোস্টের স্পিড ভাল ছিল না। নাজমুল ভাইয়ের ডিজাইন করা সাইটগুলো সেই সার্ভারে আসতে অনেক দেরি করছিল। তাই ডট ফাইভ হোস্টিং আবার বিক্রি করে দেয়া হয়। এ সময় হোস্টিং করতে এগিয়ে আসেন এক্স-বিসিসি শফি ভাই।

* শফি ভাইয়ের সার্ভার থেকে পরবর্তীতে আমরা হোস্ট মনস্টারে চলে যাই। হোস্ট মনস্টারে সিসিবি ছাড়া আরও পাঁচটি ব্লগ ছিল। এর মধ্যে একটি হল মুক্তাঙ্গন। মুক্তাঙ্গনের মডারেটর রায়হান রশীদ ভাই (ফৌজিয়ান ৮৬-৯২) এক্ষেত্রে আমাদেরকে সহায়তা করেন। কিন্তু একই সার্ভারে একাধিক ব্লগ থাকায় বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়। আমরা নিজেদের আলাদা জায়ঘার কথা ভাবতে থাকি। অবশেষে hostmonster থেকেই আলাদা জায়গা কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। ততদিনে সানাউল্লাহ ভাই, ফৌজিয়ান ভাই, কামরুল হাসান ভাই, সায়েদ ভাই, ফয়েজ ভাই সহ আরও অনেকে চলে এসেছেন। সিসিবি এক পুরোদস্তুর ব্লগে পরিণত হয়েছে। hostmonster এর হোস্টিং স্পন্সর করেন মরতুজা ভাই। নিজস্ব সার্ভারে আবার নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে সিসিবি।

এই হল সিসিবির অতি সংক্ষিপ্ত এবং অসম্পূর্ণ ইতিহাস। যার শুরু হয়েছিল শূণ্য থেকে। সেখান থেকে আজ এসে দাঁড়ালো এক হাজারতম পোস্টের আঙিনায়। আপনাদের মন্তব্যের মাধ্যমেই এর ইতিহাস পূর্ণতা পাবে। তাই মন্তব্যে আপনার সিসিবি-তে আসার কাহিনী এবং সিসিবি সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতার কথা জানান। একটি মন্তব্যে সংক্ষেপে লিখলে ভাল হয়। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় অংশটুকু পরবর্তীতে এই লেখায় যুক্ত করা হবে।

১০৬ টি মন্তব্য : “শূন্য থেকে যার শুরু”

  1. রকিব (০১-০৭)

    অল্পের জন্য মিস হয়ে গেল... আমার মনে হয় এর থেকে ভালো কোন হাজারতম পোষ্ট হতে পারে না... লং লিভ ক্যাডেট কলেজ। লং লিভ সিসিবি।
    :salute:


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. সাইফ (৯৪-০০)

    আমি খুওব অলস প্র কৃতির মানুষ অনেকটা ধাক্কায় চালিত,আড্ডা বাজি করে বিড়ি ফুকে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে টানা কয়দিন এক কাপড়ে কাটীয়ে দিতে পারি,সেই মানুষ্টা যখন মরুভুমিতে এসে একাকীত্ব আর অসহয়ত্বে কান্না কাটি করতে শুরু করল এমন এক সময়ে প্রানপ্রিয় দোস্ত কাম রুল মেসেঞ্জার এ লিঙ্ক দিয়ে বল ল এইখানে এখুনি নিবন্ধন কর,সেই থেকে বল্গের সাথে বন্ধুত্ব।লিখতে পারি না,আলসেমির কারণে এমন কি ম ন্তব্যো দিই না,সব সময়,কিন্তু চুপি চুপি সব ই পড়ি আর মজা লই...............ব্লগ এডজুটেণ্টের মান আছে বেশি লিখা যাবে না.........এই ব্লগের পথি কৃত আর স্রস্টাদের জন্য রইল :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute:

    জবাব দিন
  3. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)
    প্রথম বিশুদ্ধ ক্যাডেটীয় ব্লগিং প্লাটফর্মের যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালের ৮ই ডিসেম্বর। এজন্য এই দিনটিকে ক্যাডেট কলেজ ব্লগের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়।

    কাগজে কলমে আমার জন্মদিন ১৯৮০ এর ৮ই ডিসেম্বর 😀 😀 😀 😀 ।

    ততদিনে সানাউল্লাহ ভাই, ফৌজিয়ান ভাই, কামরুল হাসান ভাই, সায়েদ ভাইসহ আরও অনেকে চলে এসেছেন।

    আমার নাম!! আমার নাম!!! :awesome: :awesome: :awesome: :awesome:


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  4. ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

    সিসিবির ইতিহাসে জড়িত সকল উদ্যোক্তা এবং এর সক্রিয় এবং সকল পাঠককেই ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানাই।
    :clap:

    একদিন আমরা থাকব না। রয়ে যাবে সিসিবির পাতায় আমাদের আনাগোনা।

    হাজার পেরিয়ে এর পোস্ট সংখ্যা বাড়ুক জ্যামিতিক হারে।
    এই কামনা করি।


    সৈয়দ সাফী

    জবাব দিন
  5. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    তখন আমার খুব খারাপ সময় যাচ্ছিল। সারাদিনই মন খারাপ করে বসে থাকতাম। এমন একটা জায়গা দরকার ছিল যেখানে গিয়ে হাঁপ ছাড়ব। সচলায়তনে ঢুকতে চেয়েছিলাম। নিজের ভিতরের অচেনা কষ্ট গুলাকে কলমে আকৃতি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অতিথি লেখক হয়ে ভাল লাগছিল না। তখনই সিসিবির খবর পেলাম কলেজের সাইটে। যেদিন প্রথম সিসিবি ব্রাউজ করি সেদিন আমার টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এরপর পরীক্ষা শেষ হল যেদিন টানা ৪ ঘন্টা লাগিয়ে সব লেখা পড়লাম তারপর শুরু হল আমার ব্লগিং। রাতে ঘুমাতে পারতাম না কিছু না কিছু মাথায় চলে আসত লেখার জন্য। আজ থেকে প্রায় ১ বছর আগের কথা। এক বছরে ১০০০ পোষ্ট মানে গড়ে দিনে ৩ টা সিসিবি সেই ছোট্ট সাইট থেকে আজ পূর্ণাঙ্গ ব্লগ হয়ে উঠেছে এত আনন্দ কই রাখি? সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন। যারা লেখেন যারা কমেন্টান যারা পড়েন সবার জন্য।

    জবাব দিন
  6. রহমান (৯২-৯৮)

    সিসিবির শততম পোষ্টের একজন অংশীদার হিসেবে আমি অত্যন্ত গর্ববোধ করছি। এই মূহূর্তে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার ছোট বড় সেই সব ভাই-বোনদের প্রতি যাদের পরিশ্রম, অধ্যাবসায় এবং অসাধারণ কন্ট্রিবিউশন বা অবদানের কারনে সিসিবি ধীরে ধীরে একটি পূনাংগ ব্লগে রুপান্তরিত হচ্ছে। এই কৃতিত্বের দাবীদার কম বেশি আমাদের সবার।

    আমি কিভাবে এই ব্লগের সন্ধান পেলাম তা আমার ব্যক্তিগত ১ম পোষ্টেই বিস্তারিত বলেছিলাম। হাজারতম পোষ্ট এবং সিসিবির ইতিহাস স্মরণের এই মাহেন্দ্রক্ষনে আমি আবারো স্মরণ করি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ক্যাপ্টেন সায়েদ (বিসিসি ৯২-৯৮ ব্যাচ) এর প্রতি যার মাধ্যমে আমার এত সুন্দর একটি জগতে অনুপ্রবেশ। লাইবেরিয়ার মতো আফ্রিকার একটি বিনোদনহীন (আমাদের জন্য) অনুন্নত দেশে শান্তিরক্ষী মিশনে এসে সিসিবির সন্ধান পাওয়া আমার কাছে অনেকটা গহীন অরণ্যের মধ্যে রাজপ্রাসাদ পাওয়ার মতোই ব্যাপার। তাইতো অবসর সময়ের প্রায় পুরোটাই এখন আমার কাটে সিসিবির পরতে পরতে, আনাচে কানাচে। সম্মোহিতের মতো তাই সারা দিন-রাত বসে থাকি আমার কম্পিউটারের মনিটরের সামনে। কি যে এক মায়াজালে জড়িয়ে গেলাম! যতই দিন যাচ্ছে এই মায়ার জাল যেন ততই আমাকে আষ্টে পিষ্টে বেঁধে ফেলছে।

    শুন্য থেকেই যেমনি সব কিছুর শুরু হয়, তেমনি আজ জানতে পারলাম সিসিবির শুরুটাও হয়েছিল শুন্য থেকেই। আমার ভাবতেই ভাল লাগে যে আমার চেয়ে ছোট ছোট অনেক ভাই বোন রা এই ব্লগটি শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছিল এবং তারা সফল হয়েছে। তাদের নিরলস সাধনা, এবং দৃঢ় মনোবলই সিসিবিকে আজ এই অবস্থায় আনতে সক্ষম হয়েছে। ১০ ক্যাডেট কলেজকে এভাবে এক সুতায় গাঁথার যে বিরল দৃষ্টান্ত এরা দেখাল তা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।

    এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে সিসিবি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ১০০০ তম পোষ্ট অতিক্রম করতে পেরেছে। শুধু কোয়ান্টিটিই নয়, কোয়ালিটিতেও সিসিবি পিছিয়ে নেই। কি কাব্য, কি বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস, চলতি ঘটনা কিংবা যেকোন সাহিত্যচর্চা, বিভিন্ন গঠনমুখী আলোচনা, কিংবা বিনোদনমূলক বিষয় ইত্যাদি যুগোপযোগী বিষয়সমূহের সবই এখন সিসিবিতে স্থান করে নিয়েছে।

    সময়ের তালে তালে সিসিবি আগের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে এলেও আমাদের লক্ষ্য থাকবে একে শ্রেষ্ঠ একটি ব্লগে পরিনত করার। এজন্য আমাদের সবার গঠনমুখী অবদান রাখতে হবে। এই পথ পাড়ি দিতে অনেক বাঁধা ও প্রতিকূলতা এসেছিল এবং সামনে আরো বাঁধা আসতেও পারে। সেজন্য আমাদেরকে মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।

    সিসিবির যে দিকটি আমার সবচেয়ে ভাল লাগে তা হলো এখানে সিনিয়র জুনিয়রদের মধ্যে যে চমৎকার একটা সুস্থ্য সম্পর্ক বিদ্যমান তা খুবই বিরল। পরস্পরের প্রতি এই শ্রদ্ধাবোধ এবং সহনশীলতা সিসিবিকে অনেকদূর নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। এই ব্লগের আরেকটি আকর্ষনীয় দিক হলো এখানে সাহিত্য ছাড়াও হরেক রকম বিষয় নিয়ে লেখালেখি ও আলোচনা হয়, যা বিভিন্ন শ্রেনীর বা স্তরের পাঠকের চাহিদা পূরণ করতে কার্যকরী ভুমিকা রাখে। লেখার ক্যাটাগরী যত বাড়ানো যাবে ততোই এর পাঠকের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।

    সিসিবি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় জীবনেও অনেক উপকার বয়ে আনতে পারে। সিসিবির মাধ্যমে আমরা অনেক কিছুই করতে পারি এবং পারব। এর ছোট একটি উদাহরন হলো গত জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ বা জানার ক্ষেত্রে সিসিবির ভুমিকা। অনেক অতিথি পাঠকরা এসে আমাদের ব্লগ থেকে সেদিন ফলাফল জেনে নিচ্ছিল। নিঃসন্দেহে এটি আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়। তথ্য-প্রযিক্তির এই যুগে মিডিয়ার ক্ষমতা যে কতখানি তা নিশ্চয়ই আমাদের কারো অজানা নয়। সিসিবি একটি পূর্নাঙ্গ ব্লগ হয়ে উঠলে এর মাধ্যমে জন সচেতনতা, সামাজিক আন্দোলন সহ বিরাট বিরাট বিপ্লব ঘটানোও সম্ভব বলে আমার বিশ্বাস। এর ছোট একটি উদাহরন হতে পারে- "রাজাকারদের বিরূদ্ধে গন-সচেতনতা সষ্টি করা"। সামাজিক ভাবেও সিসিবি আমাদের উপকারে আসতে পারে যার উদাহরণ- "সিমির জন্য সাহায্যের হাত বাড়ানোর আবেদন"

    একটি বিষয়ে আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষন করতে চাই। আমাদের দেশে, বা বিদেশে অবস্থানরত ক্যাডেটদের সংখ্যা হিসেব করলে আমি বলব, সিসিবির বর্তমান সদস্য সংখ্যা সময়ের তুলনায় অত্যন্ত কম। এক বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও আমাদের সদস্য সংখ্যা আজ মাত্র ৪১০ জন। এই সংখ্যাটা ইতিমধ্যে কয়েক হাজারে উন্নীত হওয়া উচিত ছিল। আমি মনে করি এ সংখ্যাটা বাড়ানোর জন্য আমাদের সবার আরো অনেক বেশি উদ্যোগ নেয়া উচিত। সদস্য সংখ্যা বাড়লে ব্লগে লেখা ও কমেন্ট সর্বোপরি এই ব্লগের মান অটোমেটিক্যালি অনেক বেড়ে যাবে।

    সিসিবি আমাদের নিজের বাড়ি, নিজের ঘর, নিজের পরিবার। চলুন সবাই মিলে আমাদের এই ঘরকে আরো গুছিয়ে রাখি, সাজিয়ে তুলি, রাঙ্গিয়ে তুলি মনের রংতুলি দিয়ে।

    আরো অনেক কথা বলার ছিল। কিন্তু আমি একাই সব বলে ফেললে অন্যদের প্রতি অবিচার করা হবে। তাই আমার মন্তব্য আর না বাড়িয়ে পরিশেষে আমি বলতে চাই, আসুন আমরা সবাই মিলে সিসিবিকে একটি যুগান্তকারী শ্রেষ্ঠ ব্লগে রূপান্তরিত করি যার মাধ্যমে শুধুমাত্র ক্যাডেট পরিবারই নয়, বরং এই দেশ তথা সমগ্র জাতি উপকৃত হবে।

    সিসিবির সবার জন্য রইল শুভকামনা। ধন্যবাদ

    জবাব দিন
  7. কনক রায়হান (৯৮-০৪)

    তপু ভাইয়ার কাছ থেকেই সিসিবির খোঁজ পাওয়া।ও পড়ে পড়ে আমাকে মজার মজার সব কাহিনী বলতো।আস্তে আস্তে আমিও সিসিবির একজন হয়ে গেলাম।অন্য কোন ব্লগে আমার যাতায়াত নাই তাই সিসিবিই আমার কাছে সব।

    আশা করি আমাদের সবার প্রানের জায়গা হয়েই থাকবে এই সিসিবি।

    সিসিবি কে :salute:
    সব সিসিবিয়ানদের কে :salute:

    জবাব দিন
  8. তানভীর (৯৪-০০)

    আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাব '৯৯ ব্যাচের সেইসব ক্যাডেটদের যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই আমাদের ব্লগটি এতদূর আসতে পেরেছে। এরপর ধন্যবাদ দিতে চাই এই ব্লগের অন্তঃপ্রাণ কিছু মানুষদের যাদের বাড়ানো ভালোবাসার হাত ধরেই ব্লগের পুরাদমে পথ চলা। প্রথমদিকে সদস্য হলেও আমার সক্রিয় অংশগ্রহন হয় (মানে কমেন্ট দেয়া আর কি!) অনেক পরে। চলার পথে দেখেছি শুধুই ক্যাডেট কলেজের স্মৃতিমূলক ব্লগ থেকে একটি পূর্ণাংগ ব্লগে এর রূপান্তর, হয়েছি এই ইতিহাসের সাক্ষী। দেখেছি সিনিয়র-জুনিয়রদের পারস্পরিক ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ। শিখেছি মতের অমিল থাকা স্বত্তেও কিভাবে আরেকজনের কাছে নিজের কথাটুকু বলা যায়। শুধু বড়দের কাছেই নয়, ছোটদের কাছ থেকে যে কতকিছু শিখেছি তার ইয়ত্তা নেই। আজ লিখতে গিয়ে এত কথা মাথায় চলে আসছে যে কোনটা বাদ দিয়ে কোনটা লিখব বুঝে উঠতে পারছিনা।
    এই ব্লগটা কখন যে আমার প্রাণের প্রিয় অনুভূতিগুলোকে নাড়া দিয়ে মনের আরো গভীরে প্রবেশ করে ফেলল টেরই পেলাম না।

    আমাদের প্রাণের সিসিবি আজীবন তার সৌন্দর্য্যটুকু নিয়ে বেঁচে থাক, এই শুভকামনা রইল।

    জবাব দিন
  9. রাফি (০২-০৭)

    আমি সিসিবি তে আসি ফেসবুক থেকে। কিন্তু এসেই আমার মাথা খারাপ হয়ে যায়। কত বার যে কতকিছু পরে হেশেছি, কেঁদেছি। টার্ন আউট ক্যাডেট বলে অনেক কষ্ট হত। কিন্তু সিসিবি আমার সেই কষ্ট দূর করেছে। ধন্যবাদ সিসিবি এবং সিসিবির সকল ভাই ও বোনদের, তাদের এই নিরলস চেষ্টার ফলেই আজ আমরা আমাদের নিজেদের একটা জায়গা পেয়েছি। আমার পক্ষ থেকে তাদের সকলকে

    জেনারেল সালাম :salute:

    জবাব দিন
  10. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

    "এমন ব্লগটি কোথাও খুঁজে পাবেনাকো তুমি"

    বাংলা ব্লগিং থেকে মোটামুটি অবসর নিয়ে ফেলেছিলাম বছর দুয়েক আগে...হঠাৎ কামরুলতপুর কাছ থেকে খোঁজ পেলাম সিসিবি'র...তার আগে বলে নেয়া ভালো যে, আমি আপাদমস্তক একজন ক্যাডেটকলেজ প্রেমিক মানুষ; অনেক চেষ্টা করেও ক্যাডেটদের প্রতি নিজের নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্ব আর দুর্বলতা কিছুতেই লুকায়ে রাখতে পারিনা...তাই এতোগুলা ক্যাডেটের সাথে প্রতিদিন আড্ডা মারতে পারার সুযোগ- এরচেয়ে আনন্দের ব্যাপার আর কিছু হতে পারেনা...চোখে দেখা-একটু ভালো লাগা- কাছে আসা - জড়িয়ে পড়া- তারপর শুধু মাতাল অনুভব...

    এতোদিন "স্বপ্ন দিয়ে তৈরী, স্মৃতি দিয়ে ঘেরা" সেই ছয়টা দুর্দান্ত বছর শুধু মনের মনিকোঠাতেই পাথেয় হয়ে ছিলো...সিসিবি আমার প্রতিটা দিনই নতুন করে স্বপ্ন দিয়ে ভরে দিলো, স্মৃতি দিয়ে ঘিরে দিলো...

    এই ব্লগের উদ্যোগের সাথে যারাযারা জড়িত, তাদের সবাইকে শুধু ধন্যবাদ দিয়ে আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারবোনা...ক্যাডেট কলেজের প্রতিটা ইট-কাঠ-ঘাস-ফুল কে একদিন যেমন নিজের করে ভাবতাম, সিসিবি আবার ফিরিইয়ে দিয়েছে সেই একান্ত আপন আপন অনুভূতিটা...তার সাথে ভালো লাগা, ভালো লাগা...

    আমার ভাবতে খুব ভালো লাগে যে, আমাদের দেশটার সত্যিকারের পরিবর্তন শুরু হবে একদল ক্যাডেটদের হাত দিয়ে...আমি জানি, সেই দলে আমার এই আপন বাড়ির বাসিন্দারাই হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ...


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  11. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ৯৯ এর পিচ্চি পোলাগুলারে আপাততঃ :salute: দেই।

    জিহাদ, মুহম্মদ, মহিব (এই পোলা আহে না ক্যান আর), স্যাম ঝাং ঝুন, লেজহোমো এরশাদ (তুহিন মনে হয়), কামরুলতপু, মামুন (এইটা কেডায়) মাস্ফু তোমারদের সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন।

    তোমাদের জন্যই জীবন এখন অনেক বেশি আনন্দের।

    নিজে ক্যামতে আইলাম এইটা এট্টু পরে কই।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  12. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    সিসিবি দিয়েই আমার ব্লগযাত্রা শুরু, অন্য কোথাও যাবার আর প্রয়োজন বোধ করি না... :-B
    সিসিবির সামনের-পেছনের (কেউ অন্যভাবে নিয়েন না...) সবাইকে... :just: :salute:

    একটা কবিতা দিয়ে শেষ করি-

    যেখানে সীমান্ত তোমার
    সেখানে বসন্ত আমার

    ...ধুর্‌র...আবার মনে হয় অপ্রাসংগিক হয়ে গেল... :bash:
    যাই হোক, কবিতাটা পূর্বে অন্য কোথাও প্রকাশিত...তাই অনেকের কাছে পরিচিত মনে হতে পারে... :-B


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  13. তারেক (৯৪ - ০০)

    ৯৯ ব্যাচের পুঁচকা গুলারে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন। এইরকম দারুণ একটা কাজ করার জন্যে বেশ শক্তপোক্ত ধরণের স্বপ্ন দেখতে হয়, তা না হলে সেটার বাস্তবায়ন হয় না। সেদিক দিয়ে জিহাদ-রায়হান-মুহাম্মদ-সামিয়া ওরা সবাই সফল স্বপ্নবাজ! হ্যাটস অফ টু ইউ।
    *
    সিসিবি-র খবর যে কেমন করে পেয়েছি সেটা আজ অনেকক্ষণ ভেবেও কিছুতেই মনে করতে পারলাম না। 🙁
    জিহাদ-রায়হান-মহিব, এই তিনজনের সাথে পরিচয় ঘটেছে সচলায়তনে। অতিথি ব্লগারদের পোস্ট পড়তে গিয়ে দেখি ক্যাডেট নিয়ে লেখা। আমি তো দুই লাফে গিয়ে পড়া শুরু করলাম। যেটা হয়, দেখি সেখানে মন্তব্যের খরা, আমিই উৎসাহ ভরে সেইসব পোস্টে মন্তব্য করতাম। তখনো ভালমতন পরিচয় হয়নি ওদের সাথে। তারপর কেমন কেমন করে জানি, সম্ভবত ওদেরই কোন লেখার সূত্র ধরে বা অন্য কোন উপায়ে খোঁজ পেলাম ওয়ার্ডপ্রেসের ব্লগটার। তারপর আর কি, এই স্বপ্নে শামিল হয়ে গেলাম আপনাতেই।
    *
    ক্যাডেটদের নিয়ে ব্লগ করার বেশ কিছু ব্যর্থ চেষ্টা এর আগে আমি করেছিলাম। অনেকগুলা কারণেই পারিনি। আমার বন্ধুদের অলসতা, অথবা এককে আমার অজনপ্রিয়তা একটা কারণ হতে পারে আমার ব্যর্থতার। 🙂 তাই শেষমেষ হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। এ কারণেই যখন সিসিবির খোঁজ পাই, শুরু থেকেই লেগে ছিলাম। ( এই সুযোগে মুর্দাবাদ জানিয়ে দিই সেইসব পাপিষ্ঠদের যারা আমাকে ফাঁকিবাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে আদাজল খেয়ে লেগেছে! শুরুতে আমি ছিলাম রেগুলার অন প্যারেড। নো মকরামি!)
    *
    সত্যি কথা হলো, ঐ ৯৯ এর পিচ্চিগুলার অস্বাভাবিক মনের জোরে সিসিবি একেবারে তরতর করে এগিয়েছে। তবে, সিসিবি-র সাম্প্রতিক চেহারার জন্যে জিহাদ্রায়হান্সামিয়ামুহাম্মদের সাথে সাথে আমি যার কথা বলবো, সে হলো কামরুল। এই পোলাটা একাই একশ। মাঝের সময়টায় প্রায় একাই মাতিয়ে রেখেছে পুরো সিসিবি। এবং আমার ধারণা কামরুল-কে সিসিবিতে টেনে আনার বুদ্ধিটা সিসিবি এবং আমাদের সবার জন্যে একটা বিরাট "রাশির গুণ"। ( ওবায়দুল্লাহ ভাইয়ে-র কাছ থেকে ধার নিয়ে বললাম।)
    *
    সিসিবি প্রতি মুহুর্তেই বেশ চমকিত করেছে।
    আমার নিজের ধারণা আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো, আমাদের চেইন অব কমান্ডটা। অন্য সব ব্লগকেই যে জিনিসটা রীতিমত কষ্ট করে গড়ে নিতে হয়, আমরা সেটা আপনাতেই পেয়ে গেছি। নামের পাশে সন দেখে আমরা আদর আর সম্মান বরাদ্দ করে দিই সাথে সাথে। বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সব ব্লগারদের কাছে তাই আমার অনুরোধ থাকবে, এই জিনিসটা যে কোন ভাবে যেন আমরা ধরে রাখি। একটা চমৎকার সুন্দর পরিবেশ এখানে রাখার জন্যে এর বিকল্প কিছু নাই।
    *
    সিসিবি শুধু স্মৃতিচারণ নির্ভর না হয় যেন, সে জন্যে শুরুর দিকে আমরা ইচ্ছে করেই ভিন্ন লেখা নিয়ে আসতাম। কিন্তু এখন আর সেরকম কোন কষ্টই করতে হয় না। সিসিবি-তে এত এত ভাল লেখক আছে যে আমার ভীষণ গর্ব হয় এর একটা অংশ হতে পেরে।
    পুরানো যাদের চিনি তারাতো আছেই। এখানে এসে যাদের সাথে পরিচয় হয়েছে তাদের অনেকের লেখা পড়ে চমকিত হয়েছি। সায়েদ ভাইএর বহুমাত্রিক লেখা দেখে অবাক হয়ে যাই, একটাই মানুষ অথচ কত গুণ! ফয়েজ ভাইয়ের গল্পের গাঁথুনিও কি অসম্ভব চমৎকার। মুগ্ধ হই আন্দালীবের লেখা পড়ে, সানাউল্লাহ ভাই এবং তৌফিক এরও। আর ওবায়দুল্লাহ ভাইয়ের লেখার আমি সাম্প্রতিক পাংখা। জুনায়েদের কমেন্ট পড়ে হাসতে হাসতে কী বোর্ড থাপড়েছি এরকম কতবার ঘটেছে! ফৌজিয়ান ভাইয়ের দুর্দান্ত গ্রাফিক্স, রহমান ভাইয়ের নানামূখী লেখা, আর আপাতত গর-হাজির তাইফুর ভাইয়ের সবার সাথে, বিশেষ করে জুনার সাথে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য মনে থাকবে সবসময়। আমার তিন দোস্ত কামরুল-টিটো- আর তানভীরের কথা বলাই বাহুল্য। এবং সিসিবিতে আমার আরেকজন প্রিয় মানুষ- আমাদের সকলের পরিচিত বৃক্ষ মাস্ফ্যু!
    এই মানুষগুলারে কেমন করে পেতাম সিসিবি না থাকলে?
    *
    একেকটা দিন কাটাই আর জীবনের কাছে ঋণ বেড়ে যায়। তো, আজ এই মর্মে ঘোষণা দিয়ে ফেললাম, এই ঋণ বেড়ে যাবার অন্যতম কারণ এখন সিসিবিও!
    সবাইকে অনেক শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন!


    www.tareqnurulhasan.com

    জবাব দিন
    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

      একটা মজার কথা বলি। তখন সচল চিনি, সিসিবি চিনি না। সচলে যাই, অতিথি কমেন্ট করি, পড়ি।

      কি একটা ব্যাপার (মনে হয় ফারুক ওয়াসিফ আর হিমুর কমেন্ট, মঞ্জুরাউলের পোষ্টে)বিরাট হাউকাউ লেগে গেল ওদের মাঝে। একদম যা-তা অবস্থা। তখন কনফুসিয়াস নামে এক পোলা দেখি সব দিক ব্যালান্স করে সুন্দর একটা কমেন্ট দিল। বাকীদের রেসপন্স দেখে মনে হল, এই ব্যাটা বিরাট কিছু একটা। তার কমেন্ট এত ম্যাচিউর ছিল, আমি খুব ভাল বোধ করছিলাম, কারন আমি এর আগে ঠিক করেছি সচলে লিখব নিয়মিত।

      যাইহোক, পদ্মা-মেঘনা-যমুনার পানি বয়ে যাওয়ার মত আমি যখন সিসিবি তে আসলাম তখন রায়হানের এক পুরানো পোষ্টে পেলাম কনফুসিয়াসের খবর। আ-মর জ্বালা, এইটা তো দেখি পিচ্চি পুলা। এত পাকনা কথা কই থেকে শিখল হে।


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
    • এবং সিসিবিতে আমার আরেকজন প্রিয় মানুষ- আমাদের সকলের পরিচিত বৃক্ষ মাস্ফ্যু!

      :shy: :shy: :shy: :shy: :shy: :shy: :shy: :shy: :shy: :shy:
      মামা কি আমার নাম কইলেন নি??????শরম্পাইতেছিতো :shy: :shy: :shy:

      জবাব দিন
  14. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    আগের একটা পোস্টে ডিটেইলস লিখ্যাফেলছিলাম 😀

    কতদিন আগের কথা? বছর খানেক কি? হতে পারে, একটু আগে পরেও হতে পারে। ইন্টারনেট এ বাংলা সাইটগুলোতে ব্লগে ব্লগে ঘুরে বেড়াই। কিছু ভালো লাগে, কিছু লাগেনা। কোনোটাতে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছা হয় আবার কোনোটার হোমপেইজ হয়তো জীবনে একবারই দেখেছি, প্রথমবারই। কিন্তু শান্তি আর পাইনা। নিজের মনে হয়না কোনো কিছুই। আমার কাছের বন্ধুরা বলে আমি নাকি অনেকটাই অসামাজিক। হতে পারে। কিন্তু এই আমিই হঠাৎই উইকির ইনফোকিউবের কিছু লেখালেখির লিংক পেয়ে উৎফুল্ল হয়ে উঠি। হ্যা, সেটি ছিলো আমাদের সিসিবির সেই আদি সাইট। বুঝতে পারি আই ইউ টি’র কয়েকটা পিচ্চি সাথে একই ব্যাচের (৯৯-০৫) আরো কয়েকজন এক্স ক্যাডেট মিলে ক্যাডেট কলেজের স্মৃতি রোমন্থনের জন্য নিজেদের একটা অনলাইন লেখালেখির জায়গা বেছে নিয়েছে। পড়তে ভালো লাগে। নিজেদের ক্যাডেট লাইফের প্রতিফলন দেখি। কিন্তু অংশগ্রহণ আর করা হয়না।

    হঠাৎ ওরা তাদের উইকি পেইজটাকে ওয়ার্ডপ্রেসে নিয়ে আসলো সব বয়সী সব কলেজের ক্যাডেটদের নিয়ে আরো বড় কিছু করার জন্য। তাও শেষমেশ দেখি ওরা ওরাই। আমি যাই প্রতিদিনই। একটা নাম রেজিস্টারও করি।

    এইখানে এড করি আরো,
    তখন ওয়ার্ডপ্রেসে এনোনিমাস কমেন্ট করতাম।
    প্রথম লেখি (আসলে লেখি না, কপি পেস্ট করি 😀 ) “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন”
    তারপর থেকেতো আছিই 😀
    লেখালেখি পারিনা। আপাততঃ সিনিয়র সিসিবি মহলে মার্কেটিংএর কাম করতাছি 😀 সো ব্যাকগ্রাউন্ড ওয়ার্কফোর্সের সমস্ত জুনিয়র সিনিয়র ভাইদেরসহ নিজেকে একটা লম্বা :salute:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  15. সে এক বিরাট ইতিহাস। ঘরে ছিলো না কেরোসিন। পরিবার বললো কেরোসিন লাগবে......। 😀
    ধুর!! কিয়ের মধ্যে কি কই......। 😛

    তখন ফেব্রুয়ারি মাস মনে হয়। ২০০৮। ;)) একদিন সুন্দর সকালে ডাইরেক্ট ইংরেজিতে sylhet cadet college লিখা গুগোলে সার্চ দিলাম। যা রেজাল্ট আসছিলো সেইগুলি সব দেখা শুরু করলাম। ১৩ না ১৪ নাম্বার পাতায় গিয়া একটা সাইট দেখলাম, http://cadetcollege.wordpress.com। ঢুইকা দেখি, কিছু বদ পোলাপাইন মিলা হাউকাউ করতেছে, বাংলায়, কেউ বাংলিশে। রেজিস্ট্রেশন কইরা মেম্বার হউয়ার সুযোগ ছিলো, হইয়া গেলাম। পাসওয়ার্ড কাজ করতেছিলো না, জিহাদরে ঝাড়ি দিয়া তাও ঠিক করাইলাম। তারপর চলে আসলাম। এবং ভুইলা গেলাম। ~x(

    এর পর আবার অনেকদিন বাদে নেটে ঢুইকা মনে পড়লো ক্যাডেট কলেজের কিসে জানি মেম্বার হইছিলাম। মেইল থেইকা ওইটা খুইজা বের করলাম। তারপর গিয়া দেখি, আরে এইখানে তো আমারে নিয়া আলোচনা চলতাছে। আমার বলতে লজ্জা লাগে ,তাই আপনারাই দেখেন কি আলোচনা চলতেছিলো...।

    tareq, on মার্চ 16th, 2008 Project Management 5:18 pm Said:।।
    এইখানে সিলেটের আমাদের ব্যাচের কামরুল (তপুদের দুই ব্যাচ আগের) লিখছিলো দেখছিলাম একবার। ওরে কি ইনভাইটেশান পাঠানো হইছে?
    না পাঠাইলে শিগগির পাঠাও, ধইরা বাইধা যেমনেই হোক নিয়া আসো। ও হইতেছে আমার দেখা সবচে গ্রেট গল্পবাজ!

    কামরুলতপু, on মার্চ 16th, 2008 Project Management 5:26 pm Said:
    কামরুল ভাইকে পাঠানো হইছে উনি জয়েন ও করেছে। কিন্তু ওনার কাছ থেকে কোন লেখা পাইনাই।

    :tuski: :tuski:

    এক্কেরে আবেগাপ্লুত হইয়া গেলাম। কি করা যায় , ভাবছি। এমন ভাবে আরো কিছুদিন গেলো।

    ১২মে। ২০০৮।
    আমাদের ৯৪'ব্যাচের ওইদিন বর্ষপূর্তি ছিলো। সেদিন আমি ফার্স্ট লেখা দিলাম। কোথায় পাবো তাদের-১।
    আপনারা হয়তো বলবেন নিজের গুনগান করতেছি, কিন্তু সত্যি বলছি মাইরি, প্রথম সিনেমা হিট হয়ে গেলো। ব্রেক পেয়ে গেলাম।
    একের পর এক শিল্পা শেঠী, ঐশ্বরিয়া রাই, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, কারিনা সবার সাথে ছবি করার অফার আসতে লাগলো। কিন্তু আমি খুব বুঝে শুনে, আমির খানের মতো বছরে একটা সিনেমা করার সিদ্বান্ত নিলাম। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে হলে খুব সমঝদার হতে হয়।

    শিল্পা শেঠীর সাথে কোথায় পাবো তাদের-২ সুপারহিট হলো। এরপর করলাম ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সাথে জলপাই রঙের গল্প। সেটাও বক্স-অফিসে আলোড়ন তুললো। এরপর রিলিজ পেলো প্রিয়াঙ্কার সাথে দুষ্ট ছবি আর দুষ্ট গানের গল্প। ঢাকা নারায়ঙ্গঞ্জ সহ সারাদেশে এই ছবির গান সবার মুখে মুখে। সমালোচকরাও খুব প্রশংসা করলেন। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি।

    এখন তো আমার শিডিউলই নেই। হলিঊড (সচলায়তন) থেকেও দুএকটা অফার এসেছে। কিন্তু আমার কাছে সবার আগে আমার দেশ (সিসিবি)। তাই আপাতত অন্য কোথাও যাবার কথা ভাবছি না। :khekz: :khekz:

    সবশেষে আমার ভক্তদের জন্য অনেক শুভেচ্ছা। :-* :-*

    জবাব দিন
  16. তাইফুর (৯২-৯৮)

    আমি এক্কেরে শেষের দিকে জয়েন করা, 'জুস খাওয়া' পাব্লিক। পোলাপাইন খাইট্টা খুইট্টা "শূণ্য" থিকা বানাইছে, আমি মজা নেই।

    জয়েন করার প্রথম দুই মাস রাতে ঠিক মত ঘুমাইতে পারতাম না, এই বুঝি নতুন লেখা এল, পালটা কমেন্ট'এর চান্স ছুটে গেল ... সেই সময় 'দিনের সর্বোচ্চ মন্তব্যকারী' খানা ছিল না ... থাকলে ...

    মাঝখানে আফ্রিকানদের 'বোতল প্রীতি'র কল্যানে তিন সপ্তাহ ডিসকানেক্টেড থাইকা কষ্ট যখন যন্ত্রনা'র রূপ নিল, তখন বুঝলাম, সিসিবি ছাড়া আমার গতি নাই।

    সিসিবি'র যে দিকটা আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে সেটা হল ... চিনি না, দেখি নাই অনেক গুলো মানুষকে এখন খুব, খুব আপন মনে হয়। আমার মনে হয় না, যেদিন সবার সাথে দেখা হবে আমার মাঝে নতুন পরিচয়ের জড়তা থাকবে।

    ৯৯ আর ৯৪ ব্যাচের অদ্ভুত সব পোলাপাইনের দেখা পাইলাম। (এইখানে ৯৯ আর ৯৪ এর পোলাপাইন বেশী বইলাই এইদুইটা ব্যাচের নাম আলাদা করে বলা) আমি ভাবতাম ৯৮ সালে আমরা বাইর হয়া আসার পর ক্যাডেট কলেজ গুলা মাদ্রাসা হয়া গেছে। (শুধু আমি না আসলে হয়ত সবাই কম বেশী ভাবে যে তাদের ব্যাচ চইলা আসার পর ...) একবার শুনলাম কলেজে ক্লাস সেভেন'রে পিটি গ্রাউন্ড-এ ফোম বিছায়া ফ্রন্ট্রোল দেয়া শিখানো হচ্ছে ইদানিং। সিসিবি'তে আইসা বুঝলাম যুগে যুগে ক্যাডেট কলেজ গুলা 'জিনিয়াস' ছাড়া অন্য কিছু প্রডাকশান করে না।

    সব নাম লিখতে গেলে বিশাল বড় হয়া যাবে, কামরুলতপু'র ভাষায়, যারা লেখেন যারা কমেন্টান যারা পড়েন সবার জন্য :hatsoff:


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  17. রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

    ১...

    সিসিবি আমার নিজের জীবনের বেশ বড় একটা অনুপ্রেরণা। সিসিবির এই দাঁড়িয়ে যাওয়ায় আমি একটা স্বপ্ন পূরণের ছোঁয়া পাই। আমি তাই কখনও হতাশ হইনা। কারণ পৃথিবীর কত কত মানুষ আছে- যাদের জীবনের কোন স্বপ্নই পূরণ হয়নি। আমার একটা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমাদের সবার একটা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

    ২...

    একবছর আগের ছুটিতে আইইউটিতে। সারাদিন ঘুমাই, সারারাত জেগে থাকি। উইকি এডিট করতাম- মাঝখানে, তখন সেটাও ভালো লাগতো না। নেটে বসে বসে ইয়াহু আনসারে ঘুরাঘুরি করি খালি। এমন সময় গুগল করে মুহাম্মদ সামুর খোঁজ পেল। সেখানে সে মারাত্মক জ্ঞান গর্ভ এক ব্লগ লিখলো।

    মুহাম্মদকে দেখে আমার সখ জাগলো আমিও ব্লগ লিখবো। বাংলায় আমি টেস্টে ৮৬ পেয়েছিলাম- কিন্তু ব্লগ লিখতে যেয়ে বুঝলাম আমাকে দ্বারা হবে না। কারণ মুহাম্মদের ব্লগ দেখে আমি বুঝেছিলাম ব্লগে খালি তীব্র আঁতেলীয় জিনিস লিখতে হয়। আঁতলামী লেখা আমাকে দ্বারা হবে না।

    আমার মাথায় খালি ক্যাডেট কলেজের কাহিনী ঘুরে। সেগুলোই লিখতে ইচ্ছা করে। ডিনার শেষে চা খাচ্ছি- দোকানে বসে, তখন ওকে বললাম- চল আমরা একটা ব্লগ খুলি। সেখানে শুধু ক্যাডেট টাইপ লেখা থাকবে। মুহাম্মদ আমার কথাটিকে বড়ই গুরুত্ব দিলো। সেদিন রাতেই আমরা বসে বসে মেকার ঐ সাইটটিতে ফ্রেন্স উইকির মতো করে একটা ব্লগ পেজ তৈরী করে ফেললাম। তারপর লিখতে বসে গেলাম। আমি একটা লিখলাম, মুহাম্মদ লিখলো। মেসেঞ্জারে জিহাদকে জানানো হলো- আমাদের পরিকল্পনার কথা।

    ৩...

    সেই সময়টায় স্যামের সাথে প্রায় প্রতিদিনই মেসেঞ্জারে কথা হতো। এই মেয়েটার সাথে আমার বিরাট খাতিরের একটা কারণ- ওর সেইরকম ক্যাডেট প্রীতি। বাংলা উইকিতে ও যখন যোগ দিল, তখন আমি একদিন রাতে ওর পাতায় ক্যাডেট টেম্পলেটা যোগ করে দিলাম, সেটা দেখে ওর কী আনন্দ।

    আমার প্রায় সকল ধরণের প্ল্যান পোগ্রাম ও খুব মন দিয়ে শুনে। তারপর যদি বলি তুইও চলে আয়, তখন একদম পরিষ্কার করে "না" বলে। ক্যাডেট কলেজ ব্লগের ক্ষেত্রেও তাই। ও নাকী লিখতে পারে না। ওর লেখার সাথে আমার পরিচয় অনেক আগে থেকেই। ৩৬০ এর চিপায় ওর লেখা পড়ে আমি অনেক আগে থেকেই ওর ভক্ত।

    না বললেও শেষমেশ মেয়েটা সব কিছুতেই থাকে। আমাদের ক্যাডেট কলেজ ব্লগেও সে যোগ দিলো- সুন্দর একটা লেখা দিলো।

    তারপর আসলো তুহিন। ইশ!! কী সুন্দর দিন ছিল। আমরা নিজেরাই লিখতাম, নিজেদের পিঠ চাপড়াতাম।

    ৪...

    মুহাম্মদ যেটা বললো, উইকি ভিত্তিক সাইটে আসলে ব্লগিং করা যায় না। কারণ সব কিছুই ম্যানুয়ালি করতে হয়। তাই জিহাদ ব্লগটাকে ওয়ার্ডপ্রেসে সরিয়ে নিল। আমার একদমই ইচ্ছা ছিল না। মনে হচ্ছিল- যা আছে থাকুক।

    মেইলে দুই দিন ইনভাইটেশন পড়ে ছিল। তারপর একদিন জয়েন করলাম। ততদিনে মাত্র দুই খান ব্লগ লিখেই আমার মনে হলো, আর কী লিখবো??

    ওয়ার্ড প্রেসের সেই ম্যান্দামারা সাইটটাকে একদম জমিয়ে দিলো, হাসনাইন- তার কতিপয় ডায়লগ পোস্টটা দিয়ে। তারপর ধীরে ধীরে তপু ভাই আসলেন, মাস্ফু ভাই আসলেন।

    মনে আছে ওয়ার্ডপ্রেসে সবচে বেশী হিট হয়েছিল একদিন বন্যর সাথে সামান্য কথাকাটাকাটির জের হয়ে। বন্যটা অল্পতেই মাইন্ড খায়- সেদিনও খেয়েছিল। আমরা সবাই মিলে ওরে শান্ত করলাম। অভিমানী হলেও সে ছেলে ভালো- রাগ বেশীক্ষণ পুষে রাখে না।

    ৫...

    তারপরের কেচ্ছা কাহিনী সবার প্রায় জানা। মাঝখানে স্মৃতিচারণ লেখার চাপে আমি বেশ কিছুদিন অনুপস্থিত ছিলাম। সেই সময়টাকে জিহাদ সিসিবিতে আগলে ধরে রেখেছিল। আগলে ধরে রেখেছিল আরো অনেক মানুষ।

    একটা ভালো সাইট হিসেবে সিসিবিকে দাঁড় করানোর পেছনে জিহাদের অবদান সবচে বেশী। বেচারা পড়ালেখা বাদ দিয়ে সারাদিন সিসিবি নিয়ে পড়ে থাকতো/ থাকে। ওকেই সবচে বেশি স্যালুট।

    ৬...

    সেদিন আইইউটির এক ভাইয়ের সাথে মেসেঞ্জারে কথা হচ্ছে। উনি আমাদের নিয়মিত পাঠক। বললেন, তোমাদের ব্লগটা দাঁড়িয়ে গেলো দেখে খুব ভালো লাগছে। রাইটার বেইজটা আরেকটু ভালো হলে- দেখবা ব্লগ কই যায়।

    আমাদের বেইজটা ধীরে ধীরে আরও ভাল হবে। আপাতত দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা সিসিবিকে সময় দেওয়ার জন্য কামরুল ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা। সায়েদ ভাই, ফয়েজ ভাই এর মতো ডেডিকেট লেখকদেরও। যারা শুধু মন প্রাণ দিয়ে সিসিবিকেই ভালোবাসেন- সব শ্রম এক করে এখানেই লিখেন। ক্যাডেটদের মাঝে এমন আরও অনেকেই হয়তো আছেন। ধীরে ধীরে আমরা তাদেরও পাবো। সিসিবি ধীরে ধীরে আরও সমৃদ্ধ হবে।

    ৭...

    ইফতার পার্টিতে ক্যাডেট কলেজের এক ছোট ভাইয়ের সাথ দেখা হলো। কথায় কথায় সে আমাকে জানালো- সে সিসিবির লেখা পড়ে। ওর নেট নাই। বন্ধুর রুম থেকে পেইজগুলো সেভ করে রুমে গিয়ে তারপর পড়তে হয়। ওর এই কথাটায় আমার এত ভালো লেগেছিল- সেটা আসলেই প্রকাশ করা যাবে না।

    হাজারতম পোস্টে তাই সবাইকে ধন্যবাদ। যারা অফলাইনে থেকে হলেও আমাদের সাথে আছেন, যারা নিয়মিত লিখছেন, যারা তানভীর ভাই কাইয়ুম ভাইয়ের মতো মন্তব্যেই জীবন পার করে দিতে চাচ্ছেন- তাদের সবাইকে।

    জবাব দিন
  18. সামিয়া (৯৯-০৫)

    মজার তো!! এত তাড়াতাড়ি ১০০০ তম পোস্ট...আমার কেন যেন মনে হচ্ছে এই সেইদিনের কথা।
    এই ব্লগটা আমার খুব ভালোবাসার জায়গা, কিন্তু এর উপ্রে আমি খুব বিরক্ত, আমার দিনের অর্ধেক টাইমের ডাবল টাইম এ খায় ফেলায়। ব্লগটায় একটা বোমা ফালায় দিলে ভাল হত।
    ব্লগের সব্বাইকে সব্বাইকে সব্বাইকে :salute:
    নেন একটা গান শুনেন :guitar:

    জবাব দিন
    • সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

      আমারো একটা বোমা দরকার... x-(
      সিসিবির কারণে আমার শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পইড়া গেসে ~x( ...মাস্টার্স থিসিস জমা দেওয়ার আর তিন সপ্তাহও বাকী নাই...তবু এইখান থেকে বাইর হইতে পারিনা...

      কে আছিস, আমারে সিসিবির হাত থেকে বাঁচা :bash:


      "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
      আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

      জবাব দিন
  19. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    মাঝখানে অনেকদিন আমি সিসিবিতে অনুপস্থিত ছিলাম। সেইজন্য এখন খুব খারাপ লাগছে। জিহাদ সিসিবিটা আগলে না রাখলে অনেক কিছুই সম্ভব হয়ে উঠতো না। আমি তো অনেকদিন পর সিসিবিতে এসে দেখেছিলাম সবকিছু বদলে গেছে, প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি। কিন্তু খুব উৎসাহ পেয়েছিলাম। সেই উৎসাহ এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
    আমার সমস্যা হল, মন্তব্য করতে পারি না। মন্তব্য অনেকটা কারও সাথে কথা বলার মত। কথোপকথনে যেহেতু আমি খুব কাঁচা তাই মন্তব্যেও খুব কাঁচা। এজন্য মন্তব্য করা হয় খুব কম, মাঝেমাঝে পড়লেও মন্তব্য করা হয়ে উঠে না।

    জবাব দিন
  20. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    এই পোস্টে মন্তব্য করতে গিয়া দেখি বিরাট ইতিহাস হইয়া যাইতাছে। তাই কষ্ট কইরা একটা পোস্টই দিয়া দিলাম। ফৌজদারহাটের একটা বাড়লো আরকি!!

    সিসিবির সবাইকে :salute:


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  21. আন্দালিব (৯৬-০২)

    সবাই নিজের নিজের ইতিহাস লিখতেছে, তাহলে আমিও লিখি!

    আমি ব্লগিং জিনিশটা শুরু করেছি, এক বছর আগে। তার আগে লেখালেখি বলতে যা বুঝায়, কলেজের ওয়াল ম্যাগাজিন আর বার্ষিকীতে মাঝে মধ্যে দুয়েকটা লেখা, এই যা। কলেজ থেকে বের হয়ে একটা গল্প লিখেছি। তারপরে চার বছর কিছুই লিখি নাই। শেষে লেখা শুরু করলাম, সেখানে মনে হয় জিহাদ প্রথম আমাকে ক্যাডেট কলেজ ব্লগের কথা জানায়। শুনেই ঢুঁ মেরেছি। রেজিঃ করলাম। কিন্তু কী লিখব সেটা একেবারেই বুঝে ঊঠতে পারলাম না। আমি প্রথমে যে কোনো পাবলিক গ্যাদারিং বা আলোচনায় একটু সংকুচিত থাকি, মানে হাব ভাব বুঝে নিতে পারি না বলে চুপ থাকি। এজন্য প্রথমে এসে হকচকিয়ে যাচ্ছিলাম। সবাই জমায়ে আড্ডা দিতেছে আর সব কথা আমার মাথার উপর দিয়ে যাইতেছে।বহুদিন পার হইল, আমি এইমুখো হইনাই। তারপরে গতমাসে বা তার আগের মাসে, কী মনে করে একটা ক্লান্ত বিকেলে প্রথম পোস্ট করলাম। অভাবিতভাবে সাড়া পেয়েছি সেদিন। আমাকে চিনে এরকম দুয়েকজন, মাস্ফ্যু, কবীর ভাই খুব উৎসাহ দিলেন,আর অন্যদিকে চিনেন না এমন সকলে আপন করে নিলেন। আমার মনে হয় সিসিবি দাঁড়িয়ে যাওয়ার পেছনে এটাই সব থেকে বড় ব্যাপার। এখানে একজন নতুন ব্লগার এসে যে নিরাপত্তা আর বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ পাবে তা অন্য কোথাও খুবই দূর্লভ!

    ক্যাডেট কলেজ ব্লগের সাথে আছি। এবং এই ব্লগের সাথে জড়িত সবগুলো মানুষকে প্রাণ ঢালা অভিনন্দন!!

    জবাব দিন
  22. সামিয়া (৯৯-০৫)

    আমার নিজের কথা বলতে ভুলে গেছি, তাই কম্পু খুলে আবার চলে আসছি :shy: । একটি মন্তব্যে সংক্ষেপে দিতে বলা হইছে, যদিও এই নিয়ে আমার তিন নম্বর মন্তব্য। :shy:

    রায়হান একদিন মেসেজ পাঠাল, মুহম্মদ reminiscence লিখার জন্য একটা সাইট খুলছে, আমি যেন এক্ষুণি দৌড় দিয়ে গিয়ে ওইখানে লিখে আসি।
    আমি জীবনে reminiscence শব্দটা শুনি নাই, মানুষজনের কত জ্ঞান এটা ভাবতে ভাবতে ডিকশনারী খুলে অর্থ দেখলাম, আর অর্থ দেখার পর আক্ষরিক অর্থেই দৌড় দিয়ে এসে পিসির সামনে বসলাম। সেই বসাই শেষ বসা, তারপর আর ওঠা হয়নাই 🙁 😡 :chup:
    এই সাইটের জন্য মাঝে মাঝে একে ওকে বিরক্ত করা ছাড়া আমি আর কিছুই করি নাই,ভাবলে দুঃখই লাগে 🙁 । বিশেষ করে তরফদার সাহেব, ও থাকতে কেন যে বিল গেটস কে হেড বানায় রাখছে... :-B এই ছেলেটাকে এত বিরক্ত করছি, শান্ত মুখে সমস্ত প্রবলেম সল্ভ করে দিছে (মনে মনে নিশ্চুই চৌদ্দ গুষ্ঠী তুলে গালি দিছে 😡 )
    আর রায়হান আমার যে জ্বালাতন সহ্য করছে, তাতে আমি তার ধৈর্য্য প্রতিভায় মুগ্ধ। মানুষ কোন রিপ্লাই আশা না করে মানুষের জন্য বহুত কিছু করতে পারে, এটা এরে না দেখলে আমি জানতাম না।
    আর একজন তো আছে মাশআল্লাহ, যে জ্ঞানের জ্ঞান, যে কোন দিন ঈর্ষার কোপানলে পড়ে আমি মুহম্মদ সাহেবকে খুন করে বসতে পারি।
    আরও তুহিন, ইশতিয়াক, উল্কার মত ধুম করে আসল হাস্নাইন সাহেব...অর্চি আর নাবিল-এই দুইটা এমুন আইলসার আইলসা, টাইপ করতে কষ্ট বলে ব্লগ লিখে না...সুষমা বেচারা খুবই লিখতে চায়, কিন্তু ওর নেট নাই 🙁 ...আর মহিব নামের ছেলেটাকে পেলেও আমি খুন করে ফেলতাম, এত সুন্দর একটা সিরিজ (আমাদের পান্ডুলিপি) শুরু করে শেষ করে নাই ।
    বন্যর লিখাগুলা খুব মিস করি, বন্য তুই আবার 'এক্স ও ওয়াই কেমন বন্ধু' টাইপ লিখা দে রে :tuski: আর ওই ধরা দেওয়া টাইপ কমেন্টশিল্প শুরু কর।
    ব্লগের সব মানুষজনকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছা হইছে...... ~x(
    ..................................................................................................................
    (এইখানে সব্বাইরে নিয়ে কথাবার্তা, সময় সংক্ষেপনের জন্য দেখাতে পারছে না বলে বিটিভি দুঃখিত :-B )
    ..................................................................................................................

    পরীক্ষা সামনে, ব্লগ থেকে দুইশ মাইল দূরে থাকার চেষ্টা করলেও কেমনে কেমনে জানি চলে আসি। আর আসব না, ধুর। ফাউল জায়গা। খালি সময় নষ্ট। যা পড়তে বস ফাজিল। 😡

    জবাব দিন
  23. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    লেখালেখির অভ্যাসটা অনেক পুরনো, যদি চিঠি এবং ডাইরী লেখাকে "লেখালেখি করি" বলা যায়। বন্ধু মহলে অনেক লম্বা করে সুন্দর চিঠি লিখতাম। ক্যাডেট কলেজের ম্যাগাজিন কিংবা ষ্টেজ মাতানো ছিল ডালভাত আমার কাছে। লেখাটাকে আরও আপন করেছিলাম এইচ,এস,সির পরের টালমাটাল সময়টাতে। কিন্তু "ছাপাতে হবে বা ছাপাবো" এই ধরনের মানসিকতা কাজ করেনি কখনও।

    পড়াশুনার জন্য খুলনাকে বেছে নেয়ার অনেকগুলো কারন ছিল, এর মাঝে ছোট একটা কারন হল আমার মানসিক প্রশান্তি, খুলনায় আমার আত্নীয় বা বন্ধু কেউ ছিল না, আমি যাদের এড়াতে চাচ্ছিলাম কিছু ব্যক্তিগত কারনে। খুলনার সময়টাতে আমি শুধু ডাইরী লিখতাম, যেগুলো আমি নিজ হাতে আবার ছিড়ে পুকুরে ডুবিয়ে দিয়েছি চলে আসার আগে আগে। অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প আর কবিতা ছিল ওগুলোতে, অত সুন্দর করে আমি এখন আর লিখতে পারি না। এরপর ডুবে গেলাম চাকুরী আর ইংরেজি ড্রাফটে।

    অনেকদিন পরে, ২০০৮ এর এপ্রিল হবে বোধহয়, হঠাৎ মনে হল বাংলা টাইপটা শিখে নিলে মন্দ হয় না। বিপুল উৎসাহে ল্যাপটপে বিজয় ইন্সটল করলাম, ল্যাপটপের কি-বোর্ড প্র্যাকটিসে নষ্ট হতে পারে ভেবে আলাদা ইউএসবি কি-বোর্ড কেনা হল, ডাউস সাইজের বিজয় লে-আউট চোখের সামনে ঝুলিয়ে প্রাকটিস শুরু করলাম, অত জোরেশোরে না অবশ্য, মাঝারি গতিতে। তখনও ব্লগ বলতে বুঝি আমির খান আর শাহরুখ খানের ঝগড়া করার টেকি সিষ্টেম।

    প্রথম বাংলা ব্লগের খোজ পাই বিডি-নিউজ থেকে। সচলায়তন নামের একটা বাংলা ব্লগ সাইটে বাংলাদেশ থেকে লগ-ইন হচ্ছে না, মুল খবর ছিল এটাই। আমি তখন কেয়ার-টেকার সরকারের উপর নানা কারনে খুব বিরক্ত ছিলাম। এই বিরক্তি বাড়ানো জন্য কিনা জানি না, সচলের আ্যড্রেস ডুকিয়ে নিলাম "এক্সপ্লোরার" এর "ফেবারিটস" অপশনে। লগ-ইন করলাম আরও সাত দিন পর।

    সচলে আমি প্রথম পড়ি সম্ভবত স্বপ্নাহতের লেখা জনি জনি প্লিজ ডোন্ট ক্রাই। অসাধারন লাগে আমার কাছে। আমি জিহাদের নিজস্ব ব্লগে চলে যাই। ওর অনেক গুলো লেখা পড়ি, দেখি ও একজন এক্স-ক্যাডেট। আমার খুব গর্ব হয় এটা দেখে। তখন ডিসিশান নেই আমিও লিখব সচলে। ওর লেখা পড়েছি মনে হয় ১৮ তারিখ। ২০ তারিখ আমি রিকোয়েষ্ট পাঠাই সচলে। এর মাঝে সচলের লিংক ঘেটে অভ্র ডাউনলোড করি। প্র্যাকটিস শুরু করি অভ্র দিয়ে লেখার। অভ্রর কারনেই বাংলায় লেখালেখি অনেক সহজ হয়ে যায় আমার কাছে। ২১ তারিখ প্রথম লেখা দেই। মোটামুটি সাড়া পাই। ২৮ তারিখ আমি প্রথম ধাক্কা খাই আমার প্রিয় কবিতাটি পোষ্ট করে। এটা তারা প্রথম পাতায় প্রকাশ করে না। আমি কারন জানতে চাই। কোন উত্তর দেয় না তারা। নিজেকে খুব অপমানিত মনে হয় তখন। আমি সাধারনত গুগলে যাই না অলসতার জন্য। কিন্তু লেখার তীব্র ইচ্ছা আমাকে গুগলে গিয়ে "বাংলা ব্লগ" লিখে সার্চ দিতে বাধ্য করে। অনেক গুলো ব্লগ সাইট চলে আসে। এর মাঝে সামহয়ার ইন আর আমার ব্লগে রেজিষ্ট্রি করে ফেলি নিজেকে। শুধু পড়ি। সচলেও যাই, কমেন্ট করি, পড়ি। কিন্তু লেখা জমা দিতে ইচ্ছে করেনা।

    এর মাঝে গুগলে থেকেই ক্যাডেট কলেজ ব্লগের একটা লিংক পাই। ক্লিক করার পড়, এখন ড্যাশ বোর্ডে ক্লিক করলে যে রকম উইনন্ডো আসে অই রকম একটা উইনন্ডো পাই, কিন্তু তা আমাকে টানেনি।

    একদিন আমার ব্লগে ডুকে অলস বসে আছি। হঠাৎ কি মনে করে খুটিয়ে খুটিয়ে প্রথম পাতা দেখা শুরু করলাম। দেখি ওর নিচে "ক্যাডেট কলেজ ব্লগ" লেখা। ক্লিক করে চলে আসলাম, রেজিষ্ট্রি করলাম। তখন অতিথি হিসেবেই ডুকে বসে থাকতাম। পড়তাম আর হাসতাম লেখা আর কমেন্ট পড়ে। কিন্তু বাহালুলের আমাদের ব্যাচ কে নিয়ে একটা পোষ্টে বাধ্য হলাম কমেন্ট করতে। আমার প্রথম কমেন্ট। এর পর আবার কিছু দিন চুপচাপ।

    প্রায় বিশদিন পড়ে, যখন সবাই আমার কথা ভুলতে বসেছে, তখন মনে হল নাহ একটু মাস্তানি করা দরকার, অনেক চুপ থেকেছি। দিলাম প্রথম চিৎকার। এরপর দ্বিতীয় চিৎকার দিয়েই ঝাড়া শুরু করলাম কামরুল কে, লেখা আসতে এত দেরী হয় কেন? ওই ব্যাটা আমার ঝাড়িতে সদস্য বানিয়ে দিল তৃতীয় পোষ্ট দেয়ার আগেই।

    ওই যে ঝাড়া শুরু করছি, চলছে তো চলছেই।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  24. শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

    আমার ব্লগ সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না। প্রথম যখন আইইউটির পোলাপাইনের কাছ থেকে সিসিবির কথা শুনি তখন আমার বাসায় বেট ছিল না। আমি তাই রেজিঃ করতে পারলাম না। পরে যখন নেত নেই তখন আমি সিসিবির কথা ভুলেই গেছি। হঠাৎ খোমাবইয়ে সিসিবির লিংক পেয়ে গেলাম। আমার পদচারনা সিসিবিতে যথেষ্ট অনিয়মিত। কারন অনেকগুলো। প্রধান কারন আমি খুবই অলস(ক্যাডেটিয় গুণ)। তাছাড়া আমি একটু ব্যস্ত থাকি :-B (সিনিয়ররা কেউ মাইরেন না ভাই)। আমার এলাকা ঢাকার এমন স্থানে যেখানে ব্রডব্যান্ড লাইনের অবস্থা খুবই খারাপ। তাই মধ্যে ৪ দিন নেট না থাকার ফলশ্রুতিতে আমি এখন সম্পুর্নরুপে পোস্ট গুলো পড়ে শেষ করতে পারি নাই। লেখা দেওয়ার চেয়ে পড়তে আমি বেশি আরাম পাই। তাই পড়া শেষ করে পোস্ট দেবো চিন্তা করে আর লেখা দেয়া হচ্ছে না। তাই বর্তমানে আমি সিসিবিতে নিশ্চুপ বিচরন চালাচ্ছি।

    কি লিখতে গিয়ে কি লিখে ফেললাম। ধুর আমি লিখতেই পারি না।

    জবাব দিন
  25. তৌফিক

    এইটা আমার কাহিনী।

    কাহিনীতে আমাদের আমিন আর আশিকের নাম উল্লেখ করতে ভুলে গেছিলাম। এখানে করলাম। আমার লেখা শুরু করার পেছনে ওদের উৎসাহ কাজ করেছে।

    সিসিবি দীর্ঘজীবি হোক। পোস্টসংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে যাক।

    আমার একটা প্রস্তাব ছিল। সিসিবি চালানো খরচের ব্যাপার। শ্রম নাহয় কতগুলো ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো ফাটাফাটি ছেলেমেয়ে দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আর্থিক ব্যাপারগুলোতে মনে হয় সিসিবির একটা ফান্ড থাকা ভালো। ব্লগের নতুন চেহারায় দেখেছিলাম গুগল এডসেন্স আছে। পরে আর দেখি নাই। একটা অনলাইন ডোনেশন ফান্ড করা যায় না সিসিবির জন্য? যার ইচ্ছা হইল কিছু দিল। না দিলে নাই, দরকার হইলে ফান্ড থেকে টাকা ব্যবহার করা যাবে। প্রয়োজনীয় টাকা না থাকলে আর কি, পুরোনো পদ্ধতিতে মরতুজা ভাই, কামরুলদের এগিয়ে আসতে হবে।

    আমি নিজে যেভাবে অনুভব করি, সিসিবি সময় কাটানোর এতো ভালো একটা জায়গা দিচ্ছে। আমরা সিসিবিকে কি কিছু ফেরত দিতে পারি না?

    জবাব দিন
  26. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    আমি ঠিক করছি ফৌজদারহাটের পোস্ট বাড়াইতে এরপর থেকে প্রতিটি মন্তব্যকে আলাদা আলাদা পোস্ট বানাবো!! বুদ্ধিটা খারাপ না?? মাঝে-মধ্যে খালি ইমো দিয়া পোস্ট দিলে কেমন হয়??


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  27. রহমান (৯২-৯৮)

    ১০০০ তম পোষ্টে ১০০ তম কমেন্ট করাটাকে কি সৌভাগ্য বলা যায়? এই সেঞ্চুরী উপলক্ষ্যে ব্যাট তুললে কেউ কি মাইন্ড করবেন?

    ব্লগ এডু সবার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন হাজারতম পোষ্টে সিসিবির সবাই মন্তব্য করবে, পরবর্তীতে সেই মন্তব্যগুলোর চুম্বকঅংশগুলো নিয়ে ব্লগ এডু পুনরায় একটি সম্মিলিত পোষ্ট বের করবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কিছু কিছু সদস্য তাদের নিজ নিজ কলেজের পোষ্টের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে অন্যত্র মন্তব্য করে পোষ্ট আকারে প্রকাশ করেছেন, যা আইনের পরিপন্থী। আমি একজন নির্যাতিত(মানসিক ভাবে), নীপিড়িত :-B এবং উপেক্ষিত ব্লগার হিসেবে এর বিচার দাবী করছি বিজ্ঞ বিচারক মন্ডলী... 😡

    জবাব দিন
  28. মো. তারিক মাহমুদ (২০০১-০৭)

    সামহোয়ারে ব্লগিং করতে গিয়ে ক্যাডেট কলেজের কথাগুলো যখন লিখতাম তখন সবাই কেমন কেমন যেন কমেন্ট করত... ... একদিন search দিলাম google এ ... ... খুব বেশি কিছু পেলাম না ... অবশেষে একদিন কীভাবে যেন wordpress এ পেয়ে গেলাম http://cadetcollege.wordpress.com

    তখন সিসিবির সদস্য ছিল হাতে গোনা ৯/১০ ... নিয়মিত লিখতাম। আমি ছিলাম তখন ব্লগের সবচেয়ে জুনিয়র এক্সক্যাডেট, সবাই আমারে খালি বকা দিত "... ... আমি নাকি খালি মন খারাপ করা পোস্ট দেই ... ..."

    আস্তে আস্তে সেই সিসিবি আজ এতদূর ...
    জয়তু সিসিবি...

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।