ক্যাডেটদের ফাজলামি নিয়ে লেখা এই গল্প গুলির কিছু আমার নিজের দেখা, কিছু রি-ইউনিয়নে বড় ভাইয়াদের কাছে শুনা।
১.
আমাদের অনেক সিনিয়র কাশেম ভাই হঠাৎ করে একদিন পাগল হয়ে গেলেন।
গেমস টাইমে বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে সবাই খেলছিল। হঠাৎ কাশেম ভাই বলা নেই কওয়া নেই গ্রাউন্ডের চারদিকে চক্কর দেয়া শুরু করলেন। প্রথমে কেউ দেখল না বা দেখলেও পাত্তা দিল না। কিন্তু গেমস টাইম শেষ হওয়ার পরও কাশেম ভাই চক্কর দিতেছে দেখে স্টাফ ডাক দিয়ে বললেন
-কাশেম ব্রেক আপ হয়ে গেছে, যাও যাও।
কাশেম ভাই থামলেন না। বাস্কেটবল গ্রাউন্ডের চারদিকে দৌড়াইতেই থাকলেন। বিরক্ত হয়ে স্টাফ বাশি দিলেন
-পি পিপ, কাশেম থামবে। থামবে বলছি।
কিন্তু কাশেম ভাই আর থামেন না। গ্রাউন্ডের চারপাশে চক্কর দিতেই আছেন, দিতেই আছেন।
এবার স্টাফ কাশেম ভাই এর পিছন পিছন দৌড় শুরু করলেন উনাকে ধরার জন্য। দু একজন যারা তখনো মাঠ ছেড়ে যায়নি তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো আর হাসাহাসি শুরু করলো। একটু পর অন্য স্টাফরাও এসে কাশেম ভাই এর পিছনে দৌড় শুরু করলেন উনাকে ধরার জন্য। কিন্তু কেউ ধরতে পারতেছে না। একজন স্টাফ কাশেম ভাই এর সামনে এসে দুই হাত ছড়িয়ে উনাকে ধরার চেস্টা করেন। মনে হয় এই বুঝি ধরে ফেলল, কিন্তু ফুটবল খেলোয়াড়রা যেমন সামনে বিপক্ষের কাউকে পেলে ডজ দেয়, কাশেম ভাই তেমন করে উনাকে ডজ দিয়ে চলে যান। সবাই হাত তালি দেওয়া শুরু করল।
এমন সময় এডজুটেন্ট স্যার আসেন। এই অবস্থা দেখে উনি সাউট করলেন
-কাশেম হোয়াট হেপেনড? স্টপ ইট।
কিন্তু কে শুনে কার কথা। কাশেম ভাই বাস্কেটবল গ্রাউন্ডের চারদিকে চক্কর দিতেই থাকলেন, দিতেই থাকলেন। এইবার এডজুটেন্ট স্যারও উনার পিছনে দৌড় শুরু করলেন। চারদিকে সবাই হাসাহাসি করছে, এডজুটেন্ট স্যার আর স্টাফরা কাশেম ভাই কে ধরার চেস্টা করছেন আর যে যার মতো বাশি দিচ্ছেন
-পি পিপ, কাশেম থামবে।
-পি পিপ, কাশেম হল্ট, হল্ট বলছি।
-কাশেম স্টপ ইট, ইউ ব্লাডি ফাকার………
অবশেষে কাশেম ভাই ধরা পরলেন। সবাই মিলে হাতে হাত ধরে সার্কেল তৈরি করল। কাশেম ভাই সেই জালে ধরা পড়লেন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আইসুলেশন ওয়ার্ডে রেখে আসা হল। সবাই জানল কাশেম ভাই পাগল হয়ে গেসেন।
সেবার কাশেম ভাই এর এস.এস.সি প্রি-টেস্ট পরীক্ষা দেয়া হল না। সবচেয়ে মজার ব্যপার পরীক্ষা যেদিন শেষ হল সেদিনই কাশেম ভাই সুস্থ হয়ে গেলেন। ডাক্তার স্যার কে গিয়ে বললেন
-স্যার আমি ক্লাসে যাবো। আমাকে ডিসচার্জ করে দেন।
-ডিসচার্জ করে দিলে আবার দৌড়াদৌড়ি করবা না তো?
-দৌড়াদৌড়ি? দৌড়াদৌড়ি করবো কেন?
-তুমি তো পাগল হয়ে গেসিলা। খালি আন্দা-গুন্দা দৌড়াদৌড়ি করতা।
-কি সব আবোল-তাবোল বলেন স্যার? আমি পাগল হবো কোন দুঃখে?
-কিছু মনে নাই তোমার?
-কি মনে থাকবে স্যার? অকারনে হাসপাতালে রাইখা দিসেন। খামাখা পরীক্ষাটা মিস হইলো।
অবাক হয়ে ডাক্তার স্যার কাশেম ভাই কে ডিসচার্জ করে দিলেন। হাসতে হাসতে কাশেম ভাই হাউসে ফিরে এলেন।
আসল ঘটনা জানা গিয়েছিল এর অনেক পরে। প্রিপারেসন খুব বাজে ছিল। পরিক্ষা দিলে নির্ঘাত ফেল করতেন। উপায় না দেখে কাশেম ভাই পাগলের অভিনয় করা শুরু করলেন। পরীক্ষা শেষ, উনিও সুস্থ।
২.
ইফতেখার ভাইয়ের ঘটনাটা একটু অন্য রকম। মেট্রিক পরিক্ষার রেজাল্ট দেয়ার পর দেখা গেলো ইফতেখার ভাই ইংরেজি রচনামূলকে পেয়েছেন ২।
ভাগ্য ভাল, তখন বোর্ডের নিয়ম ছিল নৈর্ব্যক্তিক অথবা রচনামূলক যেকোন একটায় ৩৩ এর উপরে পেলেই পাশ । তো ইফতেখার ভাই অবজেক্টিবে ৩৩-এর বেশি পেয়ে পাশ করে গেছেন। কিন্তু স্যাররা সবাই খুব রাগ করলেন। ক্যাডেট কলেজের একটা ছেলে ইংরেজিতে ২ কেমনে পায়?
প্রিন্সিপাল স্যার ডেকে পাঠালেন ইফতেখার ভাইকে।
-ইফতেখার আমি ঠিক করছি তোমার খাতা আমি রি-এক্সামিন করতে পাঠাবো। আমার মনে হয় কোথাও কোন ভুল হইসে। পরীক্ষা খারাপ হইলে কম নাম্বার দিতে পারে, কিন্তু তাই বইলা ২ দিলো কেমনে?
-স্যার, আল্লার দোহাই লাগে খাতা রি-এক্সামিন করতে পাঠাইয়েন না।
-কেন সমস্যা কী?
-স্যার , ২ কেন দিলো আমিও বুঝতেসিনা। আমি তো কিছুই লিখি নাই। সাদা খাতা জমা দিসি।
এর পরে প্রিন্সিপাল স্যার আর কোন কথা বলেন নাই।
পরিচ্ছন্নতার জন্য
=))
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
@সেলিনা
এতো মজার মন্তব্য করে একজন চলে গেলো কিন্তু চিনতে পারলাম না।
জিহাদ চিন ?
আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে তাহলে এই আপুটা ৮৮ ব্যাচ, এম জি সি সি।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
সেলিনা আপা (স্যরি ম্যাডাম 😀 ), আপনি কি বুয়েটের সেলিনা ম্যাডাম? আপা আপনি দেশে আসবেননা আর?? তাড়াতাড়ি আসেন...আমাকে হলে সিট দেয় না, বহুত কষ্টে আছি 🙁 আপনি এসে আবার হলে জয়েন করেন, আমাকে সিট পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন...
দরখাস্তের আগে সম্বোধন নাই, শেষে বিনীত নিবেদক নাই।
এই জিনিস দিয়া এত কিছু আশা কর ক্যাম্নে? :grr:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
একটা কথা মনে পরে গেল।কলেজে থাকতে সবার আগে ৩ গোয়েন্দা,কুয়াশা বা লাইব্রেরী তে আসা নতুন বই ১ম পাঠক হতে পারলে যে জগত জয়ের আনন্দ লাগতো আজ এই লেখার প্রথম মন্তব্য কারী হিসাবে মনের মাঝে সেই রকম আনন্দ লাগছে......।।লেখাটা জটিল হইছে..................।
বন্ধু, প্রথম হইতে পারস নাই... দেখ তোর আগে কয়টা মন্তব্য :grr:
কেমন আছস দোস্ত? আরতো কিছু লেখস না!
কামরুল দোস্ত, সুন্দর লেখা :clap:
:salute:
:)) =))
এইটা কেমনে সম্ভব!!!মেট্রিক পরীক্ষায় সাদা খাতা জমা দেয় নাকি কেউ?আমরা প্রি-টেস্ট এ পিটি মাপ না করার প্রতিবাদে সবাই সাদা খাতা জমা দিসিলাম কিন্তু তাই বইলা এস এস সি তে......
ইফতেখার ভাইজানের কি নাট বল্টু একটু ঢিলা ছিলনি?কি সাঙ্ঘাতিক!!
তার পরেও উনারে ধন্যবাদ......এই ঘটনা না ঘটাইলে আম্রা এত হাসির ব্লগ টাও পাইতাম না......হাসতেই আছি =))
কাশেম ভাইয়ের বুদ্ধিটা জোশ...আহারে আগে যদি মাথায় আসত... 🙁
আমার কলেজে থাকতেই আইডিয়া টা মাথায় এসেছিল। কিন্তু এতো বেশি ফেল করতাম যে একবার শুরু করলে কয়দিন পরে পরেই পাগল সাজতে হবে এই ভয়ে আর করিনি।
🙁
:)) @কামরুলঃ কি আর বলব।তোমার লেখা গুলা বরাবরি ভাল হয়।নতুন করে বলার ত কিছু নাই। (নিজের প্রশংসা শোনার জন্য কথা বলাইতে চাও,না?!)
আবার কয়। নিজের প্রশংসা কে না শুনতে চায়।
পাগলের অভিনয়ের আইডিয়া টা যথেষ্ট ক্রিয়েটিভ। 😀
তবে আমাদের ব্যাচের ১ জনের সত্যি সত্যি মাথা খারাপ হইছিল। ফুটবল খেলার সময় মাথায় বলের আঘাত পায় ছেলেটি। মাথায় তেমন আঘাত পায়নি। কিন্তু আঘাতের পর ২ ঘন্টার মেমোরি হারায় সে। ২ ঘন্টার কিছুই মানে নেই তার। অথচ ওই দুই ঘন্টা ওর মধ্যে তেমন কোন অস্বাভাবীকতা আমাদের চোখে পরেনি। ছেলেটার নাম ফাস করলাম না। CCR_19 এর পোলাপাইনের কি ঘটনাটা মনে আছে? মনে থাকলে জায়গায় বইসা আওয়াজ দিস। CCR_19 এর তো মনে হয় মাত্র ২ জন আছে এই ব্লগে। আমি আর মান্নান। আফসোস। CCB এর জন্য নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে নামা লাগবে মনে হচ্ছে।
:))
নওরীন আজকাল বেশ কিপটা হয়ে গেসে। শুধু স্মাইলি দিয়ে চলে যায়। কিছু বলে না। বড় দুঃখ পেলাম।
রোজার দিনে আসলে বেশি কথাবার্তা বলা উচিত না।রোজা হাল্কা হয়ে যেতে পারে।তাই খালি স্মাইলি দেন।
@সামিয়া
তোমার দুঃখে দুখি হলাম। আমি আর ক্ষমতায় নাই। 🙁 (আসলে কোনদিন ছিলনা) 😕
@কামরুল আশা করি পরিচয় পেয়েছ।
@সেলিনা আপা
ভুল হয়ে গেছে আপা। এই যে চিনলাম আর কোনদিন ভুলবো না।
মাফ চা আপুর কাছে...............।।
আমারে তো মাফ কইরা দিছে আপু। কিন্তু তোর মাফ নাই। তুই চিনস নাই কেন?
তোরে সেলিনা আপা পাইলে পাঙ্গা দিয়া বডির সিভিল পানি সব বের কইরা দিবে।
আমরা মোমিন মুসলমান।একজন মাফ চাইলেই হয়।তুই মাফ চাইছস তাতেই আপু আমাকে মাফ করে দিবে।আপু কি বলেন............।।
গণ মাফ??
:clap:
জুনায়েদ মনে হয় আমার সিদ্ধান্ত দিয়ে দিল। x-(
তোমরা সবাই খুব চমৎকার লেখ। এই কারনে মাফ করলাম...
আপু,
ওটা আমার সিদ্ধান্ত ছিল না...দাবী ছিল... O:-) O:-)
আমার মাঝে মাঝে এডজুটেন্টরে পিটাইতে ইচ্ছা করতো। ঠিক করে রেখেছিলাম একবার যদি পিটাইতে পারি তাহলে পাগলের অভিনয় শুরু করবো। সেইটা আর হয় নাই 🙁
খেল দেখাইছে আমার ফুফাত ভাই মাহমুদ। আমার কলেজেই এক বছরের সিনিয়র। ইন্সপেকশনের দিন মোল্লা স্যাররে আঙ্গুল তুলে হুমকি দিসিল। দূর্জনরা অবশ্য বলে উনি মারতে গেছিলেন, সিপি এজাজা ভাই তারে হবু কষ্টে আটকাইয়া রাখছিল। তারপর থেকে হেও পাগল হৈয়া গেলো।
পাগল হৈছিল আমাদের জয়ও। কলেজ আউট থেকে বাঁচার জন্য।
@ সেলিনা আপা,আপনি কি আইপি র সেলিনা ম্যাডাম।
ইস আগে পরিচয়টা পাইলে বি মাইনাচটা পাওয়া লাগত না।
কামরুল ভাই..আপনি কত লাকি...আপারা আপনেরে সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেয়..আমারলেখায় তো কোন খারাপ মন্তব্যও দেয়না.?মনে হয় আমার লেখা পড়ে আপারা মাইন্ড করছে?..ভাই,আমার কপাল খারাপ..... 🙁
আপারা সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দিলেই লাকি আর ভাইয়ারা দিলে বুঝি লাকি না?
ভাইরা দিলে হয় Great..
=)) =))
:boss: :boss:
এইখানে খা খা কই? 🙁 এইদিকে আমারে ত কপিরাইটের মামলায় ফাঁসায়া দিছেন :((
=)) =)) =)) =))
:boss: :boss: :boss: :boss:
আরে এই পোস্টে আবার কমেন্ট পড়তেছে ক্যান? 🙁
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
এইরকম মজার একটা পোস্টে আবার কমেন্ট তো পড়বই। 😀
😛
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
দুই বছর আগের হারানো রস খুঁইজা পাইলাম...
তোর কথাবার্তা দিন দিন অশ্লীল হইয়া যাইতেছে।
রস কি পইড়া গেছিল? :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
:(( কামরুল ভাই আপনের মনের মইধ্যে খালি অশালীন ইঙ্গিত কুটকুট করে-নাহ,শিজ্ঞিরি আপনেরে মিরিত্যুদন্ড না দিলে ঠিক হইবেন না বুঝতে পারছি...
অফ টপিক-ডায়রেক্টরদের নাকি মিরিত্যুদন্ড হয়না,নায়িকার সাথে যাবজ্জীবন হয়-কাহিনী কি সত্য? :dreamy:
অস্থায়ী যাবজ্জীবন হয়। তবে সশ্রম। 😉
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
=)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =))