পুত্রের শিক্ষকের কাছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের পত্র

প্রাক কথনঃ
১। ক্লাস করতে গিয়ে এই কনটেন্টটা হাতে আসল। পড়ে ভালো লাগলো। ভাবলাম সিসিবির সংগে শেয়ার করে ফেলি। আমেরিকাকে যতই “মাইনাস” দেই, এটা তো সত্যি তারা কয়েকজন বড় নেতা আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন।
২। অনুবাদ আমি করিনি। আমি অনুবাদ করা অবস্থায় পেয়েছি, তবে আমার কাছে ইংরেজী স্ত্রীপ্টটাও আছে। পাঠক যদি ইংরেজীরটাও পড়তে চায়, তুলে দিতে পারব।
৩। এটার সোর্স ক্লাস টিচার। তাই সত্যিই লিংকন এধরনের চিঠি লিখেছেন কিনা, যাচাই করতে চাই নি।

মাননীয় মহাশয়,

আমার পুত্রকে জ্ঞান অর্জনের জন্য আপনার কাছে প্রেরন করলাম। তাকে আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলবেন এটাই আপনার কাছে আমার বিশেষ দাবি।

আমার পুত্রকে অবশ্যই শেখাবেন-সব মানুষই ন্যায়পরায়ণ নয়, সব মানুষই সত্যনিষ্ঠ নয়। তাকে এও শেখাবেন প্রত্যেক বদমায়েশের মাঝেও একজন বীর থাকতে পারে, প্রত্যেক স্বার্থপর রাজনীতিকের মাঝেও একজন নিঃস্বার্থ নেতা থাকে। তাকে শেখাবেন প্রত্যেক শত্রুর মাঝে একজন বন্ধুও থাকে। আমি জানি এটা শিখতে তার সময় লাগবে, তবুও যদি পারেন তাকে শেখাবেন, পাঁচটি ডলার কুড়িয়ে পাওয়ার চেয়ে একটি উপার্জিত ডলার অধিক মূল্যবান। এও তাকে শেখাবেন কিভাবে পরাজয়কে মেনে নিতে হয় এবং কিভাবে বিজয়োল্লাস উপভোগ করতে হয়। হিংসা থেকে দূরে থাকার শিক্ষাও তাকে দিবেন। যদি পারেন হাসির গোপন সৌন্দর্য তাকে শেখাবেন। সে যেন আগে-ভাগেই একথা বুঝতে শেখে, যারা পীড়নকারী তাদেরকে সহজেই কাবু করা যায়। বইয়ের মাঝে কী রহস্য লুকিয়ে আছে, তাও তাকে বুঝতে শেখাবেন।

আমার পুত্রকে শেখাবেন, বিদ্যালয়ে নকল করার চেয়ে অকৃতকার্য হওয়া অনেক বেশি সম্মানজনক। নিজের উপর তার যেন সুমহান আস্থা থাকে। এমনকি সবাই যদি সেটাকে ভূলও মনে করে।

তাকে শেখাবেন ভদ্রলোকের প্রতি ভদ্র আচরন করতে, কঠোরদের প্রতি কঠোর হতে। আমার পুত্র যেন এ শক্তি পায় হুজুগে মাতাল জনতার পদাঙ্ক অনুসরন না করার। সে যেন সবার কথা শোনে এবং তা সত্যের পর্দায় ছেঁকে যেন ভালোটাই শুধু করে-এ শিক্ষাও তাকে দেবেন।

সে যেন শেখে দুঃখে কিভাবে হাসতে হয়, আবার কান্নার মাঝে সে লজ্জা নেই একথা তাকে বুঝতে শেখাবেন। যারা নির্দয়, নির্মম তাদেরকে সে যেন ঘৃণা করতে শেখে আর অতিরিক্ত আরাম-আয়েশ থেকে যেন সবধান থাকে।

আমার পুত্রের প্রতি সদয় আচরণ করবেন কিন্তু সোহাগ করবেন না। কেননা আগুনে পুড়ে ইস্পাত খাঁটি হয়। আমার সন্তানের যেন অধৈর্য্য হবার সাহস না থাকে, থাকে যেন তার সাহসী হবার ধৈর্য্য। তাকে এ শিক্ষাও দেবেন- নিজের প্রতি তার যেন সুমহান আস্থা থাকে আর তখনই সুমহান আস্থা থাকবে মানব জাতির প্রতি।

ইতি –

আপনার বিশ্বস্ত
আব্রাহাম লিংকন।

১১,২৮৬ বার দেখা হয়েছে

১১০ টি মন্তব্য : “পুত্রের শিক্ষকের কাছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের পত্র”

  1. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    ফয়েজ ভাই,

    চিঠিটা ভালো ছিলো। :thumbup:

    অফটপিকঃ জাতীয় কবি লে জে হো মো এরশাদের কথা মনে পড়ে।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  2. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    আজকাল শুনলাম, জেনারেলদের চাপে ক্যাডেট কলেজগুলার প্রশাসন নাকি তটস্থ থাকে। তাদের পোলা-মাইয়ারা ক্যাডেট কলেজে পড়ে বলে জেনারেলরা নানাভাবে কলেজ প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করে। এ কারণে প্রশাসন দুর্বল হয়ে পড়েছে।

    অথচ আমাদের সময়ও জেনারেলদের পোলারা (আমাদের বন্ধু ফাহাদ তো ছিলই) কলেজে পড়তো। ফাহাদ তো একবার ভালো বিপদেই পড়েছিল এক জুনিয়রকে শাস্তি দিতে গিয়ে। কিন্তু মেজর জেনারেল খলিল কোনোদিন এ নিয়ে প্রিন্সিপালের সঙ্গে আদৌ কথাও বলেছেন কিনা সন্দেহ।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

      এটা বিরাট সমস্যা। এখন যারা জেনারেল হচ্ছেন বা তার কাছাকাছি আছেন, তারা সম্ভবত খুব বেশি স্নেহপ্রবন হয়ে যাচ্ছেন, অথবা তাদের মিসেসরা, এজন্য নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না। তারা তাদের সন্তাদের ক্যাডেটে পড়াবেন, আবার ক্যাডেটে কলেজের নিয়ম মানবেন না, এত ঝামেলা না করে, বাসায় রেখে পড়ালেও পারেন। তারাই নিয়ম বানাবেন আবার তাদের বানানো নিয়মে তাদের ছেলেমেয়েদের রাখবেন না, আবার ক্যাডেটের ছাপ্পড়ও চাই, বিরাট জগাখিচুড়ী অবস্থা হয়ে যাচ্ছেনা।

      এত কিছু বললাম কারন, আমিও শুনেছি, আর্মির সন্তানেরা নাকি কলেজের নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। আমাদের কলেজের কর্নেল জিয়াউদ্দিনের সময় নাকি এ রকম হয়েছিল। তার ছেলে জাকি ভাই রাতে প্রিন্সিপালের বাসায় গিয়ে ঘুমাতেন, ষ্টাফ দের শাসাতেন, সব অবশ্য শুনা কথা।

      তবে কলেজের ডিসিপ্লিন নেমে গিয়েছিল এটা আমরা দেখেছি, পরে এটাকে ঠিক করেছিলেন কর্নেল এমদাদ স্যার।


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
    • জেনারেলদের চাপে ক্যাডেট কলেজগুলার প্রশাসন নাকি তটস্থ থাকে। তাদের পোলা-মাইয়ারা ক্যাডেট কলেজে পড়ে বলে জেনারেলরা নানাভাবে কলেজ প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করে। এ কারণে প্রশাসন দুর্বল হয়ে পড়েছে।

      :thumbup: :thumbup:
      আমার কাছে ভাইয়া একাধিক প্রমাণ আছে
      খুবই অরুচিকর সব হস্তক্ষেপ,প্রভাব আর চাপের ঘটনা
      😡 😡

      জবাব দিন
    • সামীউর (৯৭-০৩)

      বর্তমান সেনাপ্রধান ও তৎকালীন কমান্ড্যান্ট এসআইএন্ডটি মইন উ আহমেদ এর পুত্রের সিলেট ক্যাডেট কলেজে আগমণ , প্রস্থান এবং এর মধ্যবর্তী ঘটনা গুলো এই সব অবৈধ হস্তক্ষেপ এর অকাট্য প্রমাণ।

      জবাব দিন
  3. এহসান (৮৯-৯৫)
    আমাদের টিচারদের চিঠি পড়ার টাইম নাই

    আমরা রাজনীতিবিদদের গালাগালি করি। কিন্তু শিক্ষকরাও অনেক বদলে গেছেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার সাথে সাথেই এক বন্ধু চাকরী পেয়ে গেলো। এক স্যারকে বললো... মাত্র ৮,০০০ টাকা বেতন। চাকরী নিবো নাকি বুঝতেসি না। স্যার বললেন আরে নিয়ে নাও... আলগা কামাই তো আছেই। 😮

    বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ সন্ধানী লাল, নীল স্যারদের কথা আর নাই বললাম। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির এক স্যারের ইগো আর গোয়ার্তুমিতে জাহানারা ইমামের নামে হলের নামকরন নিয়ে আমাদের শিক্ষা জীবন থেকে দুই বছর হারিয়ে গেলো।

    ইউনিভার্সিটিতে প্রথম বছরেই দেখেছিলাম সেই একই স্যার শিবিরের অংগ সংগঠন অনির্বানের সাংস্কতিক সপ্তাহের উদ্বোধন করছেন। আমার কাছে এসব স্যার কে মুনাফিক মনে হয়।

    ফয়েজ ভাই, চিঠিটা শেয়ার করা জন্য ধন্যবাদ। (ফজু মল্লিক বলি নাই কিন্তু)

    জবাব দিন
    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

      রাজনীতিবিদ দের আমি একদম না পারলে গালি দেই, একদম লাষ্ট ষ্টেজে।

      আমি প্রথমে গালি দেই আমারে, এর পর পাব্লিক রে। আমরা মানুষ খারাপ, তাই আমাদের নেতা খারাপ। আমরা যদি মানুষ ভালো হতাম, আমাদের নেতা ভালো হতে বাধ্য হত। সিম্পল ইকুয়েশন।

      তুমি আমারে দেখাইতে পারবা, বাংলার সুশীল সমাজ এবং বুদ্ধিজীবি রঙ বিহীন কয়জন আর রঙিং কয়জন? লেখক বল আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সম্পাদক আর বুদ্ধিজীবি, কতজন আছেন শুধু দেশের জন্য ভাবেন।

      একবার ভাবছিলাম ব্লগেও শপথ নিয়া একটা পোষ্ট দিলে মন্দ হয় না। একটা পোষ্ট হবে, আমরা সবাই গিয়া একটা শপথ করে আসব। সেটা ব্লগের এক কোনায় ঝুলায় দেয়া হবে। সবাই সেটা প্রতিদিন একবার করে পড়ব।

      করা যায় তো নাকি?


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
      • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

        এই প্রস্তাব'রে মাইনাস (বস :frontroll: )

        প্রকাশ্য শপথ দিয়ে আর যাই হোক (ব্যবসা, প্রচার, ভাব-নেওয়া, ইত্যাদি), ভালো কিছু হওয়ার আশা দেখি না। আযান দিয়ে এইসব লোক-দেখানো শপথ বাদ দিয়ে ভোটের সময় 'গোপনে কাম সারলেই' ত মামলা ডিসমিস। (অবশ্য ভোটের আগেই যদি ফলাফল প্রচার শুরু হয়ে যায়, তাইলে ঐটাও আর গোপন থাকে না......নাহ, প্রচুর গিয়াঞ্জাম :grr: )


        There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

        জবাব দিন
        • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

          এটাতো আমাদের নিজেদের জন্য মাহমুদ, অন্যদের জন্য নয়। এমন নয় ব্লগে আমার করা শপথ দিয়ে আমি বা আমাদের ব্লগ ব্যবসা করবে। প্রথম আলো কিজন্য করছে এটা আমার কাছে মুখ্য মনে হচ্ছে না এখন, আমার মনে হচ্ছে এরকম করা দরকার, দূর্নীতি দূর করতে হবে সমাজিক ভাবেই, আইন দিয়ে এটা হবে না।

          এনি ওয়ে, তুমি তোমার কথা বলেছ, দেখি বাকীরা কি বলে।


          পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

          জবাব দিন
            • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

              ঠিকাছে, তাদের কথা বলনি, বলছো তাদের কথা যারা শপথ করছে, রাইট?

              তাদের এইসব শপথ দেখে নতুন প্রজন্মের একটা ছেলেও যদি নিজেকে ঠিক করে ফেলে, খারাপ কি?


              পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

              জবাব দিন
              • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
                তাদের এইসব শপথ দেখে নতুন প্রজন্মের একটা ছেলেও যদি নিজেকে ঠিক করে ফেলে, খারাপ কি?

                ফয়েজ ভাই, এই প্রকাশ্য-শপথ ব্যাপারটা'তে পাবলিক আর প্রাইভেটের মধ্যকার পার্থক্যটা অবশ্যই লক্ষ্যনীয়। কলেজের/বিএমএর মটো একতা পাবলিক জিনিস যা' বাই-ডেফিনিশন প্রকাশ্য, আর নিজের শপথটা কিন্তু একান্তই ব্যক্তিগত।- এটা জনসমক্ষে নিয়ে আসা'টা তাই ব্যক্তির স্বাতন্ত্র্যে অনাকাংখিত হস্তক্ষেপ, অনেকটা তাবলীগ জামাতীদের নানান বয়ান-দ্বারা তাড়িত হয়ে শুক্রবারে মসজিদে গিয়ে (অনেকটা ইচ্ছের বিরূদ্ধ) হুজুরের বয়ানের পর আরেক দয়া বেহেস্ত-দোজখের হিসেব-নিকেশের পর চল্লিশ দিন 'সময় লাগানো'র মতো।- আর এই জাতীয় মুসল্লিদের কথা আর নাই-বা বললাম। (প্রকৃত নামাযী+তাবলীগের ভাইয়েরা এই হিসেবের বাইরে)।

                মঈনূল,

                অ্যাকটেলে থাকতে কর্পোরেট এথিকস সাপ্লাই দিয়ে বলেছিলো, টেবিলের ওপরে বইটা রাখবেন। টেবিলের ওপরে বইটা থাকলে বইটা আপনাদের পড়া হবে।

                - টেবিলের উপর বই রাখলেই যদি পড়ার ইচ্ছে জাগতো, তাইলে ড্র্য়িং রূমে সাজিয়ে রাখা ক্লাসিক বইগুলোর কারণে সুশীলদের অনেকেই জ্ঞানের জাহাজ হয়া যাইতো। সেইসব বইয়ে ধূলার স্তর না থাকাটা তাদের বই-পাঠের অভ্যাসের জন্য নয়, তাদের বাসায় অল্প-বয়সী কাজের ছেলে/মেয়েটার নিত্যকার ডিউটির ফল।- যে বই পড়বে, সে প্রাণের টানেই পড়বে, সেই বই যেখানেই রাখা হোক। তুমি যদি বই টেবিলে রাখার কারণে পড়ে থাকো, তাইলে আমি বলবো সেই বই তুমি টেবিলে না-রাখলেও পড়তে। আমার কথা যাচাই করতে অন্য আরো কয়েকজনকে যারা বই টেবিলে সাজিয়ে রেখেছে তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করে দেখো তাদের কতজন সেইসব সাজিয়ে রাখা বই পড়েছে।

                প্রতিদিন চোখের সামনে একটা জিনিস দেখতে থাকলে সেটা আস্তে আস্তে মনের মধ্যে গেথে যাবে

                হাসান,
                ও-তে শুধু বইয়ের নামটা মনে গেঁথে যেতে পারে, আর কিছু নয়। অনেকের টেবিলে/ড্রয়িং রূমে সঞ্চয়িতা বা রচনাবলী আছে। খোঁজ নিলে দেখবে বেশিরভাগেরই সেটা পরার সময়/সুযোগ এখনো হয়নি। ;;;


                There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

                জবাব দিন
                • মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

                  বস, আপনি যদি আম জনতার সংবাদপত্র পাঠের স্টাইল দেখেন, তাহলে দেখবেন তারা সকালে পেপার পাবার সাথে সাথেই তার প্রিয় টপিকটা আগে পড়ে নেয়। অধিকাংশ লোকই পুরো পেপারের বিষয়বস্তুগুলো সমানভাবে পছন্দ করে না। কিন্তু তারপরেও দিনের শেষে তার পুরো পেপারে কি কি আছে অন্তত একবার পড়া হয়ে যায়, কারন, সে মাঝে মাঝে একটু একটু ব্রেক নিচ্ছে আর পেপারটা তার সামনে পরে আছে বলে।

                  যে বই পড়বে, সে প্রাণের টানেই পড়বে, সেই বই যেখানেই রাখা হোক।

                  এইটা বস বিশাল গুরুত্বপুর্ন একটা কথা। আমি নিজেকে বা আমার বন্ধুবান্ধব্দের যদ্দুর দেখেছি, যাদের পড়ার অভ্যেস আছে, তাদের বাসাতে বই আলমারির বা শোকেসের চাইতে রুমের ভেতরে রিডিং টেবিলে বা ড্রেসিং টেবিলের ওপরে বা খাটের নীচে লাইন ধরে (এইটা আমার স্টাইল, কেনো জানি আমার প্রেমিকা এইটা নিয়ে বেশ রাগারাগি করতো আমার সাথে), মোট কথা, হাতের কাছেই বই রাখতে পছন্দ করে।

                  ওই এথিকসের ট্রেনিংটার সময় ওই লোক (নাম মনে নাই) বলেছিলো, হাতের নাগালের কাছে থাকলে, আপনার পড়ার অভ্যেস থাকুক বা না থাকুক, সম্ভাবনা বেশী যে আপনি বইটা নেড়ে ঘেটে দেখবেন।
                  আমার কাছে ব্যাপারটা যুক্তি সঙ্গত মনে হয়েছিলো। এই জন্যেই চোখের সামনে ভালো কথা রাখার ব্যাপারে একমত আছি।

                  জবাব দিন
                  • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

                    মইনূল,

                    তোমার সাথে আমার মতের পার্থক্য আসলে খুব বেশি না। আমি 'প্রাইভেট-পাবলিক' প্যাজগীর মধ্যেই ঘুরতে আছি। তোমার খাটের তলা বা পড়ার টেবিল আর প্রকাশ্যরাস্তার মধ্যকার পার্থক্যটা আমার কাছে বেশি জ্বলজ্বল করছে।

                    আজ এখনই লাইব্রেরীতে যাচ্ছি। পারলে একসময় মনে করায়া দিও গ্রামসীর বরাত দিয়ে চেষ্টা করে দেখুমনে, আমার বক্তব্য আরেকটু খোলাসা করা যায় কি না।


                    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

                    জবাব দিন
          • কামরুল হাসান (৯৪-০০)

            মাহমুদ ভাইয়ের সাথে একমত।
            শপথ নিতে চাইলে নিজের কাছে নিজেই নেয়া যায়, ঘোষনা দিয়ে নিতে হয় না।


            ---------------------------------------------------------------------------
            বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
            ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

            জবাব দিন
          • মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

            অ্যাকটেলে থাকতে কর্পোরেট এথিকস সাপ্লাই দিয়ে বলেছিলো, টেবিলের ওপরে বইটা রাখবেন। টেবিলের ওপরে বইটা থাকলে বইটা আপনাদের পড়া হবে।

            ফয়েজ ভাইয়ের সাথে একমত। কিছু ভালো কথা এককোনায় লেখা থাকলে, মাঝে মাঝে চোখ গেলে ওই ভালো কাজগুলো হয়ত করতে মন চাইবে। তখন হয়ত করেও ফেলতে পারি।

            জবাব দিন
            • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

              এটা স্বাভাবিক ব্যাপার, আমাদের কলেজের মটো আমাদের চোখের সামনে ঝুলে থাকতো, হাউসের সামনে বড় করে লেখা থাকতো হাউস মটো। ভাটিয়ারীর পাহাড়ে লেখা আছে বিএমএর মটো।

              আমি মানি আমার মটো আমার ভিতরে, কিন্তু সেটা শেয়ার করতে দোষ দেখি না। বরং অন্যে জানলে আরও ভাল, আমাকে মনে করে দিতে পারবে। তাতে আমার সংশোধনের রাস্তা আরও সহজ হবে। অবলিগেশন তৈরী হবে। খারাপ কি। আমি তো সংশোধিত হতেই চাই, আর এর জন্য সব রাস্তাই আমি ব্যবহার করলাম।


              পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

              জবাব দিন
                • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

                  @ মাহমুদ,

                  তোমার কথা বুঝতে পারছি, সে সাথে এটাও ধরে নিচ্ছি তুমি যা বলছ এটা কোন সূত্র না, সম্ভাবনা, আবার আমি যা বলছি তাও কোন সূত্র না, সম্ভাবনা। কারন একই ঘটনা বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন দৃষ্টিভংগিতে দেখে।

                  তবে একটা কথা তুমি বল বা আমি, মূল বস্তু থেকে সরে না আসলেই হবে। পদ্ধতি একেক জনের একেক রকম হতে পারে, কিন্তু লক্ষ্য মনে হয় এক্টাই, আর তা হল দেশ কে বদলানো। তুমি তোমার জায়গা থেকে শুরু কর, আমি আমার জায়গা থেকে শুরু করি। তুমি তোমার শপথ গোপনে নাও, আমি প্রকাশ্যে নেই। তুমি আমাকে গালি দিও না, আমিও তোমাকে গালি দিব না।


                  পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

                  জবাব দিন
                  • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
                    তুমি আমাকে গালি দিও না, আমিও তোমাকে গালি দিব না।

                    বস, গালির প্রশ্নই আছে না।

                    কিন্তু গোপন-প্রকাশ্যের মধ্যে মৌলিক বিরোধ আছে একটা- 'ডেমনষ্ট্রেশন ইফেক্ট' বিবেচনা করলে এটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। মসজিদে/ঈদগাহে/জনসভায় দানের অংক ঘোষনা করা আর নিভৃতে বাড়িতে বসে দান করার পার্থক্যটা খেয়াল করেন। প্রকাশ্যে কাজটা করার মাধ্যমে যারা অপ্রকাশ্যে করতে পছন্দ করে তাদের উপর একটা 'মোরাল প্রেশার' দেওয়া হয় ঐ কাজটা করার জন্য।- এই অর্থে আমি প্রকাশ্য শপথকে বলছি ব্যক্তি-স্বাধীনতায় অনাকাংখীত হস্তক্ষেপ হিসেবে।

                    যাই হোক, আমি আপাততঃ অফ গেলাম। টার্ম শেষ হলে এই নিয়ে বিস্তারিত আলাপ হবে।


                    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

                    জবাব দিন
  4. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ভাল লাগল ফয়েজ ভাই :thumbup: :thumbup:

    তবে কোর্সের আর সব কাহিনি (ঝাতি যেইগুলা শুনতে চায় আর কি 😛 ) আগামীতে চাই


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  5. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    আমার কাছে লেখা আব্রাহাম লিঙ্কনের চিঠি ফজু ভাইয়ের হাতে গেলো ক্যাম্নে বুঝতে পারতেছি না।
    নাহ! দুনিয়ায় গোপনীয়তা বলে কিছু রইলো না 😛


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

      সিরিয়াস কিছু না, 😀

      আমি কইতেছি "আমার নেতা চোর, কারন আমি চোর" এইটা নিয়া আলোচনা চলে। সাথে আনুসঙ্গিক কিছু ব্যাপার আসছে। আমার নিজের চুরি ঠেকাইতে গিয়া আমার কি করা উচিৎ, যা করা উচিৎ এটাকে কি সবার সামনে প্রকাশ করা উচিৎ নাকি মনের মধ্যে রাখলেই হবে। এইসব আরকি।


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
  6. আদনান (১৯৯৪-২০০০)

    শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ফয়েজ ভাই । আমাদের দিল্লী এখনো অনেক দূর, মাঝে মাঝে হতাশ লাগে । তবে একদম আশা ছাড়ি নাই, এখনো আশা জাগানিয়া লোকজন আছেন, রাজনীতিতে হয়তো নেই ।

    জবাব দিন
  7. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    আজকে আমার আর আমার ইয়ের মইদ্দে এইটা নিয়া পেজকি লাগছে-আমি শপথ লিখছি আমার মতামত ফয়েজ ভাইয়ের মত আর আমার ইয়ে সেইটা দেইখা আমারে কইছে যে এইগুলা মিনিংলেস-মাহমুদ ভাইয়ের মত ~x( ~x( ~x(

    জবাব দিন
  8. সামি হক (৯০-৯৬)

    আমাদের পলিটিশিয়ানরাও চিঠি দিয়ে পাঠায় ব্যবসায়ীদের কাছে

    আমার ছেলে এখন থেকে সবকিছু দেখাশুনা করবে ওকে এখন থেকে পার্সেন্টেজটা বুঝিয়ে দিবেন। একই সাথে শিখিয়ে দিবেন কিভাবে কালো টাকা সাদা করতে হয়। আপনার কাছে কোন সরকারী জমির খোজ থাকলে তাও ওকে জানাবেন। আমার ছেলেকে আমি মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিতে শিখিয়েছি, কষ্ট করে উপার্জন করে বোকারা।

    তাকে সব রকমভাবে সহয়তা করবেন নাহলে এই দেশে ব্যবসা করা আপনার জন্য সুখকর হবে না।

    জবাব দিন
      • সামি হক (৯০-৯৬)

        মিয়া ডিউটি ক্যাডেট হুইসেল দিলেই কি পিটিতে যাবো নাকি? আমি যাই ধীরে সুস্থে একদম লাস্টে 😀 ...

        আসলে পড়ি আগেই কিন্তু কমেন্টের সময় আলসেমী চাইপা ধরে B-) ...

        জাতি জানতে চায় আপনি এমবিএ ক্লাসে কি করতাছেন?কেন এতো বার বলার পরও ওই নিয়ে আপনার কোন রা নাই? আমরা কি এতে কোন সূক্ষ কারচুপির গন্ধ খুজে পাবো? ওহ আরেকটা কথা আপনাদের কি চিটাগং ইউনির টিচাররা ক্লাস নেয়? আমার এক ফ্রেন্ড ছিল এমবিএ র ক্লাস নিতো আলমগীর নাম, আপনার টিচার হলে বলেন 😀

        জবাব দিন
        • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

          চিটাগাং ইউনির টিচাররা ক্লাস নেয়। আলমগীর নামের কাউকে এখন পর্যন্ত পাই নাই, তবে মোসলেউদ্দিন খালেদ নামে এক্স-ফৌজিয়ান একজন ক্লাস নিচ্ছে।

          এমবিএ ক্লাসে বলার মত এখন পর্যন্ত কিছু হয়নি। তবে প্রাইভেট ইউনি, মাশা-আল্লাহ, এসি ক্লাস রুম, পানির ডাব্বা, গ্লাস, কত কি।

          সব আছে শুধু মাঠ নাই, বাসা বাড়ির মত। নিজেরে ফার্মের মুরগী মনে হয়, চরার জায়গা নাই। পোলারা সিড়িতে না হলে সোফায় বইসা বইসা মাইয়াগো লগে গুজ গুজ করে। 😀


          পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

          জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।