বালকদিগের সর্দার ক্যাডেট ফটিকের মাথায় চট করিয়া এক নতুন ভাবোদয় হইল!কক্ষে সপ্তম শ্রেণীর এক কনিষ্ঠ ক্যাডেট তাহার অধীনে ছিল;স্থির হইল,তাহাকে অভিনব কৌশলে শাস্তি দেওয়া হইবে!
ক্যাডেট কলেজে কনিষ্ঠদেরকে শাস্তি প্রদানের বিচিত্রসব কৌশল বিরাজমান!তাহার উদ্ভাবিত এই নতুন ধরণের শাস্তির আতিশয্যে উক্ত কনিষ্ঠের যে কতখানি বিরক্তিবোধ হইবে তাহা উপলব্ধি করিয়া ফটিক শিহরিত হইতে লাগিল!
প্রেপ হইতে ফিরিয়া ফটিক অপেক্ষা করিতে লাগিল!কিয়ৎকাল পরে মাখন নামের সেই কনিষ্ঠ বালক কক্ষে প্রবেশের অনুমতি চাইবার জন্যে দ্বারে আসিয়া দাড়াইয়া কহিল,মে আই কাম ইন প্লিজ!ফটিকের নেত্র উজ্জ্বল হইল,প্রবেশের অনুমতি দিয়া সে বালককে তাহার নিকটে আসিতে বলিল!বালক এমনিতেই ফটিকের নিদারুন অত্যাচারে জড়োসড়ো হইয়া থাকিত,তথাপি তাহার এইরূপ ডাকে এবং ফটিকের ঠোঁটের কোণে কেমন হাসি খেলা করিতেছে লক্ষ্য করিয়া আরো ভীত কাচুমাচু হইয়া ফটিকের সামনে আসিয়া দাড়াইল!ফটিকের হাসি মুছিয়া সেখানে গম্ভীর থমথমে ভাব চলিয়া আসিল!গলাটুকু আরো গম্ভীর করিয়া সে কহিল,আজ প্রেপে যাবার সময় রুম থেকে বেরোবার পারমিশন নাওনি কেন?মাখন হতভম্ব হইয়া গেল।মাগরিবের পর হাউজে আসিয়া অতিশয় দ্রুততার সহিত পোশাক পরিবর্তন করিয়া বাঁশি পড়িবার পূর্বের তাহাদের ফলইনে চলিয়া যাইতে হয়!গত সপ্তাহে এই নিয়ে ১০ মিনিট লং আপ আর ৫০ টা পুশ আপ দেবার পর আর কোনদিন অনুমতি নিতে ভুলে নাই!আজ এই ভুল করার প্রশ্নই আসে না!তাহার স্পষ্ট মনে আছে,আজো ইহার ব্যতিক্রম হয় নাই!কিন্তু ভাবিয়া দেখিল তর্ক করা বৃথা।অতএব চুপ থাকাকেই শ্রেয় ভাবিয়া অধোমুখে পদযুগলের পানে চাহিয়া রহিল!ফটিক আবার জিজ্ঞাসা করিল,পারমিশন নাও নি কেন?বালক এবারও চুপ!ফটিক আর নিজেকে ঢরিয়া রাখিতে পারিল না,মাখনের চুপ থাকাকে তাহার উপহাসের মতন বিঁধিল!অতএব তাহার গন্ডদেশে চপেটাঘাত করিয়া এইরূপ উদ্ধত আচরণের উপযুক্ত শাস্তি দিয়া দিল!চড় খাইয়া মাখন এইবার মুখ খুলিল,বলিল,ভাইয়া,আমি তো পারমিশন নিয়েছিলাম!ফটিক দেখিল অবস্থা বেগতিক,মাখন সত্যই বলিতেছে,চড় দেওয়া উচিত হয় নাই!আবার মনে ভাবিলসে তো পারমিশন না নেওয়ার জন্য শাস্তি দেয় নাই,তাহার প্রশ্নে নিরুত্তর থাকিয়া তাহাকে অধৈর্য্য করিবার অপরাধে অমন শাস্তি! তবুও তাহার অপ্রস্তুত ভাব কাটাইতে এইবার পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ শক্তিতে বালকের গালে চপেটাঘাত পুর্বক কহিল,কত বড় সাহস,সিনিয়রের মুখে মুখে তর্ক কর!
মাখন এমনিতে এইরূপ শাস্তিতে অভ্যস্ত,কিন্তু পরপর দুইবার বিনাদোষে চড় খাইয়া তাহার টলমল চোখ থেকে জলের ধারা নামিয়া আসিল!
তবুও ফটিকের মন ভরিল না!বালকের চোখে অশ্রু দেখিয়া সে ক্ষিপ্ত হইল,চিৎকার করিয়া তাকে ভৎর্সনা করিয়া আবারো চড় দিতে উদ্যত হইল!
এমন সময় একজন প্রৌঢ় দ্বারে আসিয়া দাড়াইলেন,কহিলেন ,”কী হচ্ছে তোমাদের?”
মাখন যেন আশার প্রদীপ দেখিল!মুহুর্তেই সে তাহার পাশে গিয়া দাড়াইল!প্রৌঢ়টি ছিল তাহাদের শিক্ষক,উক্ত হাউজের হাউজ মাস্টার!মাথায় কাঁচাপাকা চুল আর ভারি চশমা চোখে এই শিক্ষকটির এক বিশেষ খ্যাতি ছিল ক্যাডেট মহলে!গুজব ছিল টিভি রুমের তালা ভেঙ্গে মাঝরাতে টিভি দেখার এক ঘটনায় যুগপৎ রাগন্বিত ও বিস্মিত হইয়া এক ক্যাডেটকে রুম চেঞ্জ করিয়া টিভি রুমকে তাহার স্থায়ী আবাস করিয়া ছিলেন! অতএব এইরূপ একজন মানুষের কাছে কেউ আশ্রয় তাহার নিরাপত্তার কোন আশঙ্কা থাকে না!কিন্তু ফটিক ভাবিল অন্য কথা!তিনি কী তাকে নতুন কোন উপায়ে শাস্তির বিধান করিবেন?সেটা কী তার নিজের উদ্ভাবিত শাস্তির চেয়ে কোন রূপে বেশী অভিনব?অতএব সে প্রমাদ গুনিল!
মাখনের চোখ অশ্রু দেখিয়া শিক্ষকটি জিজ্ঞেস করিলেন,কী হয়েছে!মাখন নালিশের সুরে সব জানাইয়া দিল!তিনি ফটিকের দিকে মুখ তুলিতেই ফটিক কহিল,সব মিথ্যা-ষড়যন্ত্র!অতএব তিনি আর কথা বাড়াইলেন না!এমনিতেই তিনি গম্ভীর মানুষ!তার পঞ্চাশোর্ধ কপালে ক’খানা ভাজ লইয়া মাখনকে সাথে করিয়া তিনি চলিয়া গেলেন!এরপর আধঘন্টা জেরার পর মাখন ফিরিয়া আসিল!এরইমধ্যে অস্টমশ্রেণীর সব ক্যাডেটদের মিটিং বসল ফটিকের রুমে,নানা তর্ক আর বিজ্ঞ আলোচনার পর কোন এক প্রিফেক্টের আগমনী সংবাদ শুনিয়া তাহারা অমীমাংসীত ভাবে বিরস মুখে যার যার রুমে চলিয়া গেল!এরপর আর ফটিকের সাথে মাখনের কোন কথা হয় নাই……………(চলবে)
২৩ টি মন্তব্য : “ভ্যাকেশনঃছুটি গল্পের ক্যাডেট কলেজ ভার্সন!”
মন্তব্য করুন
এইটা কি ফার্স্ট এপিসোড নাকি ????
ছুটি গল্পের থিম মনে আছে......... বাকি সব ভুলে গেছি
হুমমম......চলবে!আর ছুটি গল্প ভুইলা যান,খালি আমারটা মনে রাইখেন :grr: :grr:
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
জট্টিলসসসসসসসসসসসসসসসসসস।
চালায়া যাও।
আবার মূলা ঝুলাইছে ...
ছুটো গল্পোও সিরিজ বানাইয়া লেকপা?
কিন্ত এইটা তো ২০০৯। 😮
ক্যাম্নে কি?
এখনও আছে আর কি 😉
এখনো অধ্যায়নরত মনে হয়...
অই পোলা ইন্টারনেট কি কলেজে বইসা ইউজ কর?
না...ভ্যাকেশন চলিতেছে! : B-) B-)
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
তুমি যে আগে থেকে ২০০৪-২০১০ লিখা রাখ এখন যদি আউট হইয়া জাও x-(
তুমি তো দেখি ভাই অলরাউন্ডার ......... পদ্য ভালো লিখ জানতাম, এখন তো দেখি গদ্যেও ভালো ...... :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap:
:shy: :shy:
লজ্জা পেলুম!
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
ইন্টারেসটিং হইসে... দেখি, ফাইনালি রিমেকটা কেমন দাঁড়ায়!!
ফাটাফাটি হচ্ছে :thumbup: :thumbup: :thumbup: :thumbup: চালায় যাও, পরের পর্ব তারাতারি দিও।
কঠিন লিখেছেন......সুন্দর কইরা ফটিকের কলকাতায় যাবার ক্যাডেট কলেজ ভার্সনে লিখেন।
ফিনিশিংটাও দিয়েন...
আপনি আইজকাল সব্বাইরে মুনে হয় আপনি কইয়া ডাকেন?? 😛 😛
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
:)) :)) :))
এক ঙ্গে আর কত রূপ দেখাইবা ছুড ভাই; দারুন লিখেছো।
ভাইয়া, পরের পর্ব তাড়াতাড়ি :thumbup: :thumbup:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
এখন কি কলেজ ছুটি............?? ভাল হচ্ছে লেখাটা। কত পর্বে শেষ করবা...??
লেখাটা ভালো লাগলো আরো চালাও
ওই !!! এই হাউস মাস্টার টা কেডা ? তসলিম নাকি আজিজ ? নাকি কাল্পনিক ? যাই হোক ভালো হইছে... 😉
মামা চরম হইসে :clap: :clap: :clap: !! চালায়ে যাও।। পরেরটা তাড়াতাড়ি দিও!!
:clap: :clap: :clap: জটিল হইতেসে..... চালায় যা...
মজা পাইলাম 🙂 continue কর