একটা বিষয় নিয়ে আমি কদিন ধরেই লিখব লিখব করছিলাম কিন্তু পহেলা বৈশাখের নানা প্রোগ্রাম আর প্রোগ্রাম পরবর্তী পরীক্ষা সমূহের জন্য হয়ে উঠছিল না। পরীক্ষা এখনো চলছে যদিও, তাও ভাবলাম লিখি। আর সহ্য হচ্ছে না।
১৫ তারিখে সার্টিফিকেট তোলার জন্য গিয়েছিলাম JCC তে। ভালই লেগেছিল এতদিন পর আবার সেই চেনা জায়গা-তে ঢুকে। আমার সাথে ছিল আমার বন্ধু নাঈম। ওর প্রায় ৭ বছর পর কলেজে ঢোকা হলো কারণ ২০০৭ এর রি-ইউনিয়ন ও মিস করেছিল। এজন্য তার মনের আনন্দ তা ছিল আরেকটু বেশি-ই। আমাদের timing যাতে মিসম্যাচ না করে সেজন্য ওকে বলেছিলাম ঢাকা থেকে আগে খুলনা আসতে তার পর একসাথে ঝিনেদা যাব। ওর খুলনা পৌছুতে পৌছুতে ভোর সাড়ে ছ’টা বাজলো। যাই হোক, আমরা সময় মত রওনা করলাম।
বাসের জার্নি টা অত সুবিধা’র হয়নি, কারণ আমাদের ঠিক পেছনের সিট-এ যে মহিলা বসেছিলেন তার দুর্ভাগ্যক্রমে motion-sickness নামক ব্যাপারটা ছিল যেটার কারণে আমাদের বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। যদিও ওরকম ভাসাভাসি টাইপ কোনো অভিজ্ঞতা হয়নি আল্লাহ’র রহমতে। খুলনা-কুষ্টিয়া বাসে তো আর ভলভো বাস এর মৃদু দুলুনি উপভোগ করার কোনো সুযোগ নেই, তাই না? আমার সাথে যারা যারা ফেসবুকে attach আছেন তারা হয়ত দেখে থাকবেন আমার ফেসবুক এর সাদাকালো কবি কবি চেহারা’র profile picture-টা। ওটা যাবার সময় তোলা. (অরিজিনাল ছবি টা কুত্তার মত আইসিলো, এডিট কইরা এরম বানায় নিসি!)
আচ্ছা এবার আসল ঘটনায় আসি। কলেজে পৌঁছে দেখি আমরা খুব মার্জিনাল টাইম-এ এসেছি। আর আধাঘন্টা’র মধ্যে অফিস বন্ধ হয়ে যাবে আর কি। সার্টিফিকেট এর ঝামেলা করার আগে ভাবলাম প্রিন্সিপাল আর এডজুটেন্ট এর সাথে দেখা করি। প্রিন্সিপাল নাকি আমাদের ১৪ না ১৫ ইনটেক-এর কলেজ ভাই। তখন অফিস এর ভিতরে ছিল। আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে. অল্প কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর বিরক্তিমাখা চেহারা নিয়ে উনি বেরুলেন, সাথে এডজুটেন্ট। আমরা সালাম দিলাম, বললাম আমরা ex-cadet ৩৪তম ব্যাচ। কেন এসেছি সেটা বললাম। আমরা কোথায় কি করছি সেটা জানতে চাইলেন। বললাম এক এক করে. যখন উনি শুনলেন যে আমি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি’র ছাত্র ছিলাম, তার অভিব্যক্তি যদি দেখানো যেত! উনি বলতে লাগলেন: “এসব প্রাইভেট ভার্সিটি’গুলার আমার কাছে কোনো value নাই। সবগুলা business organization…” তারপর এক পর্যায় বললেন: “আমার কাছে যদি একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি’র ট্যালেন্ট ছেলেও আসে আমি তার মূল্যায়ন করিনা কারণ সে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করা। সে যতই জ্ঞানের সাগর-ই হোক আমার কাছে তার কোনো value থাকবে না।” তার এই নিম্নমানের মানসিকতার পরিচয় পেয়ে আমার নিজের-ই লজ্জা লাগতে থাকলো – এই লোক আমার কলেজ ভাই??
আমার তর্ক করার সময় ছিল না, আমি শুধু বলেছিলাম যে, স্যার বাইরের দেশগুলা তে তো বেশির ভাগ খ্যাতিমান ভার্সিটি গুলা প্রাইভেট। উনি তখন বলে “Don’t compare… don’t compare.” আরে, কম্পেয়ার-ই যদি না করি তাহলে ভাল জিনিস টা শিখব কিভাবে? কম্পেয়ার করেছি বলেই তো এখন অন্তত পক্ষে ফাইবার অপটিক লাইন-এর ইন্টারনেট পাচ্ছি, আগে তো টেলিফোন লাইন দিয়ে কুতায় কুতায় নেট ব্রাউজ করতাম। উন্নত দেশগুলাতে এখন আলট্রা-হাই-স্পিড লাইন ব্যবহার হয়, আমরা না হয় নিজেদের ভুল এর কারণে সেটা একসময় পাইনি, কম্পেয়ার করেই না বুঝলাম কোনটা উত্তম। একসময় মানুষ কষ্ট করে বিজয় দিয়ে টাইপ করত, এখন ‘অভ্র’ চালায়, google transliteration ইউজ করে। জব্বার সাহেবের ওই বিরক্তিকর বাংলা প্রসেসর কেউ চায় না। কম্পেয়ার করেই না সুবিধাজনক বিষয়গুলা আমরা বেছে নেই। আজকাল মানুষ প্রাইভেট ব্যাংক-এর ব্যবহার-এ বেশি আগ্রহী কারণ তাদের সার্ভিস ভাল, ইলেকট্রন কার্ডের সুবিধা আছে, অনলাইন ব্যাংকিং, comfortable environment আরো কত কি! সরকারী ব্যাংকগুলাতে অযথা সময় নষ্ট করার মত ফুসরত কারো নাই। যেখানে টেলিফোন সহ সকল সেক্টরে এখন ধীরে ধীরে privatization চালু হচ্ছে, সেখানে এই ধরনের narrow thinking এর কি মানে আমি বুঝলাম না। নাকি ক্যাডেট কলেজ এর পরিবেশ-টাই এমন যে যারা authoritative level-এ থাকেন তারা সবাই এমন সংকীর্ণ মনমানসিকতার হয়ে যান?
আমি ধরে নিচ্ছি যে উনি প্রাইভেট ভার্সিটি-গুলার শিক্ষাদান procedure সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অজ্ঞ। আমি এটা ভেবেই আমার মন কে শান্ত করেছি যে, যার ওই বিষয় কোনো জ্ঞান-ই নাই তার উপর রাগ করা যায়না। সরকার তো আর ঘাস কেটে UGC গঠন করে নাই। ওরা যেসব ইউনিভার্সিটি কে approval দিয়েছে দেখা যাবে ওসব প্রতিষ্ঠান গুলার ছাত্রনীতি ভালই শক্ত। আমারটা-তেই কোনো ছাত্র ৩-এর অধিক বার রিটেক খেলে তার ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যায়। He is no longer considered eligible for being a student of NUB… এটা যদি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান-ই হত, তাহলে ওসব গাধা-গরু ছাত্রদের নিয়ে সারাজীবন ব্যবসা করত। বাংলাদেশ এর অন্যতম top বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে NSU একটি (প্রাইভেট গুলার মধ্যে এর পজিশন এর কথা আর না-ই বা বললাম)। সেখানে পড়তে হলে যে অনেক টাকাপয়সা খরচ করার gutt থাকা লাগে সেটাও সকলের জানা। উনার কথা অনুযায়ী NSU হবে একটা মারদাঙ্গা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু উনি কি জানেন, double A+ holder-দের জন্য টিউশন ফি মৌকুফ? এটা যদি সত্যিকার অর্থে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হত তবে এই ধরনের opportunity-এর কোনো সুযোগ থাকার কথা ছিল না। আমার ইউনিভার্সিটি তে-ও এই প্রভিশন আছে, এবং আমার ধারণা অন্য যেসব অনুমোদিত প্রাইভেট ভার্সিটি আছে সেগুলায় খোঁজ করলে সেখানে-ও এই সুযোগ-এর উপস্থিতি দেখা যাবে। আদৌ এই বিষয়গুলো কখনো উনি কোনোদিন যাচাই করেছিলেন কিনা সন্দেহের বিষয়। তার পুত্র যখন প্রাইভেট ভার্সিটি’র কথা বলে, তখন উনি তাকে বলেন “Stop studying”; এমন একটা ভাব যে, প্রাইভেট-এ কিছুই শিখানো হয়না, অযথা পয়সা ঢালা হয়। কিছুই যদি শিখানো না হত তাহলে প্রাইভেট থেকে পাশ করা ছেলেমেয়েরা কোথাও কোয়ালিফাই-ই করত না। কিন্তু হরদম তো হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ এ নয়, বাইরের দেশেও তাদের অর্জিত জ্ঞান মর্যাদা পাচ্ছে।
এটা মাথায় রাখতে হবে যে আমি কখনো-ই বলছিনা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়-এ পড়াশুনা হয়না। এদের পড়াশুনার মান শ্রেষ্ঠ হত যদি ‘নোংরা ছাত্র রাজনীতি’ এসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর পরিবেশ নষ্ট না করত। এই একটা জিনিসের জন্য যেসব ছাত্র সত্যি সত্যি পড়তে আসে তারা হয় ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা খুলনা ইউনিভার্সিটি’র দিকে তাকালে বিষয়-টা ভাল তুলনা করতে পারব। আমার মনে হয় সব পাবলিক ভার্সিটিগুলার উচিত খুলনা ইউনিভার্সিটি-কে আদর্শ মানা।
আমার কলেজে এর মধ্যে recently বেশ ক’জন কলেজ ভাই admin-এর সাথে থেকে গেছেন গত ৫ বছরের মধ্যে। ৯-এর একজন প্রিন্সিপাল ছিলেন, ১৭ এর একজন এডজুটেন্ট ছিলেন। তাদের সময় কলেজে বেশ কিছু আপগ্রেড হয়েছে সেটা আমাদের যারা পুরানো ভাই-ব্রাদাররা আছেন অনেকদিন যান-টান না তারা গেলেই দেখতে পাবেন। কিছু উদাহরণ দিয়ে বলা যায় – হাউজে ও একাডেমিক ব্লকে ইন্টারনেট, অডিটোরিয়ামে আপগ্রেড সাউন্ড সিস্টেম, লাইটিং, মিউজিক ইনস্ট্রুমেন্টস, প্রজেকটর ইত্যাদি আরো অনেক। কিন্তু এবারের প্রিন্সিপাল এর মত মনমানসিকতার লোক যদি ক্যাডেট বড় করার কাজে নিয়োজিত হয় তাহলে তো হইসে কাম!!!
আমার উনাকে খুব বলতে ইচ্ছা করছিল: “একটা সরকারী ভার্সিটি’র politically biased গুন্ডা-গোছের ছেলে এসে ওর কোমরে গোঁজা জিনিসটা বের করে আপনার নাকের সামনে নাচাবে আর আপনি তাকে আপনার air-conditioned অফিস রুমে স্পেশাল চা দিয়ে আপ্যায়ন করবেন? আর একটা বেসরকারী ভার্সিটি’র studious আর প্রতিভাবান ছেলের পাছায় আপনার গোদা ফৌজি বুট-এর লাথি মারবেন? … বাহ বাহ বেশ শিখছে ক্যাডেটরা আপনাদের কাছ থেকে! প্রতিভা নয়, প্রতিষ্ঠান-এর জয় হো… এই না হলে বাংলাদেশ”!!
পুনশ্চঃ সকলের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি – খুব ডিরেক্টলী লেখার জন্য। কি করব, আমি যার-পর-নাই বিরক্ত x-(
😀
কি মিয়া প্রথম হইয়া বিশাল ক্যালাইলেন দিকি!! congrats :clap:
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিগুলা (প্রাইভেট/পাব্লিক) নিয়া আসলে পুরা সমাজেই একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। খুব গভীরে না গিয়েই আমরা ঢালাও মন্তব্য করি। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠার পরামর্শ খুব একটা পাওয়া যায় না।
বস :hatsoff:
দারুন রকমের সময়োপযোগি লেখা। :thumbup:
খুবই অবাক হচ্ছি এই প্রিন্সিপাল সাহেবের একাডেমিক চিন্তাভাবনা দেখে।
আমার এক বন্ধু (প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করা) এখন বিএমএ-তে ইন্সট্রাক্টর। আমি যতদুর যানি তার তার ট্রেনিংয়ের সময় সে শর্ট কোর্সের মধ্যে সে টপ করেছিল। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় যদি এতই খারাপ জিনিস তাহলে আমার বন্ধুটি কিভাবে তার অবস্থান করে নিতে পেরেছে (বলে রাখছি সে কোন রুই তাতলার সন্তান নয়; আর দশজনের মতই সাধারন পরিবার থেকে আসা)?
এমন একটা লেখা দেবার জন্য আদনানকে অভিনন্দন। :clap: :hatsoff:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
৫ তারা।
প্রিয়তে নিলাম।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ভাই, অনেক ধন্যবাদ 🙂
আহমদ ভাই, একটা বিস্তারিত লেখা দেন তো, সমস্যা ও দিক-নির্দেশিনা মূলক। :teacup:
x-( x-(
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
এমন একটা লেখা দেবার জন্য আদনানকে অভিনন্দন। :hatsoff:
শিরোনামের প্রশ্নটারই জবাব দেইঃ আমি মনে করি প্রতিভাকে উপযুক্ত 'প্রেষণা' আর পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার জন্যে গুটিকয়েক মানুষই যথেষ্ট। তবে সেই ব্যবস্থাটা ঐ মানুষগুলোর অনুপস্থিতিতে যেন বিগড়ে না যায়, সেজন্যে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মের দরকার প্রবল। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, এখনও ৫/১০ বছর বয়েসী যেগুলো, সেই নিয়মনীতি গড়ে ওঠেনি। এখনও সেগুলোর অবকাঠামো শক্ত নয়। এমন উদাহরণ আছে, যেখানে ঐ গুটিকয়েক মানুষের মধ্যে "ভিশন"-এর অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো 'পটেনশিয়ালি গুড' ছাত্র নিয়েও ভালো অবস্থানে যেতে পারছে না। আবার খুঁজলে বিপরীত চিত্রও পাওয়া যাবে, যেখানে গুটিকয়েক মানুষের জোরেই এক একটা বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, গেছে।
আবার উল্টাটাও ঠিক, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খেটে খাওয়া প্রতিভার খনি নিয়ে বসে আছে, তারা নিজের মতো করেই রাজনীতি, সেশনজটের চিপা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে, টিঁকে থাকার চেষ্টা করছে, কিন্তু কর্তাব্যক্তিদের মাথাব্যথা নাই।
তবে ঐ যে ফরিদ ভাই যেটা বলেছেন, মিশ্র অবস্থা, এজন্যে অনেকেই খুব দ্রুত সরলীকরণ করে ফেলেন। সাদা/কালো'তে ভাগ করে ফেলেন। আরে, এইটা তো আর ভাতের হাঁড়ি না, যে একটা ভাত টিপলেই পুরা পাতিলের খবর পাওয়া যায়! 😛
আমার কাছে যদি একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি’র ট্যালেন্ট ছেলেও আসে আমি তার মূল্যায়ন করিনা কারণ সে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করা। সে যতই জ্ঞানের সাগর-ই হোক আমার কাছে তার কোনো value থাকবে না।
আচ্ছা,এই একই যুক্তিতে যদি হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড এসব জায়গায় বিজ্ঞানীরা বলতেন-তৃতীয় বিশ্বের ছাত্র যতই মেধাবী হোক তাহলে তাকে আমরা নেব না- তাহলে উপমহাদেশের নোবেল লরিয়েটগুলা কি আসমান থেকে পয়দা হইতো? আমি নিজে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাবদ্ধতাগুলো আমি নতশীরে স্বীকার করে নেই। প্রাইভেট-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অন্যান্য ব্লগে অনেক ক্যাঁচাল হয়েছে এবং সিসিবিতে সেটা অপ্রয়োজনীয় বলেই আমার ধারণা-কারণ মোটামুটি সবাই এখানে দুধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেই জ্ঞান রাখেন।একটা মানুষের গুণ বিচার না করে শুধু প্রতিষ্ঠান দিয়ে যাচাই করার মত অন্ধ যে মানুষ, আমার আলমা ম্যাটার প্রাণপ্রিয় জেসিসির প্রিন্সিপাল এরকম একজন কূপমণ্ডূক-একথা ভাবতেই বিতৃষ্ণায় বিবমিষা-আক্রান্ত হচ্ছি।
অফ টপিক- ব্লাডি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা এই অধম এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ছাত্র :shy: প্রায় ১২০০ আবেদনকারীর মধ্য থেকে বাছাই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এবছর যে ৩৫ জনকে চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে তাদের মধ্যে দুজন সিসিবিয়ান আছেন- একজন ১৯৯৬-২০০২ ব্যাচের ঝকক এর ফারহান ভাই আর আরেকজন আপনাদের স্নেহধন্য মাস্ফ্যু :shy: :shy: :shy: । ওই প্রিন্সিপাল শুনলে অবাক হবেন, তিনি যে প্রাইভেট ভার্সিটির ছাত্রদের কোন দামই দেন না- উপরোক্ত দুই হতভাগা সেরকম একটি জায়গারই(NSU) ছাত্র।
অফ টপিক ২-
double A+ holder-দের জন্য টিউশন ফি মৌকুফ? এটা যদি সত্যিকার অর্থে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হত তবে এই ধরনের opportunity-এর কোনো সুযোগ থাকার কথা ছিল না
দোস্ত, ডোন্ট গেট মি রঙ। নসুর গভর্নিং বডি মেম্বারেরা পিউর বিজনেসম্যান এইটা নিয়া ভুলেও একবিন্দু ডাউট রাখিস না। এইটা ঠিক যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে টিচিং এসিসট্যান্টশিপ,ফাইনান্সিয়াল এইড ইত্যাদির মাধ্যমে বিনা ফীতে পড়ার সুযোগ আছে কিন্তু তাতে এই গভর্নিং বডির চরিত্র একটুও বদলায় না। ফি বাড়ানো নিয়ে এরা যেই কাহিনী করছিল সেইটা আজ ভুলি নাই।
তবে এত সীমাবদ্ধতার পরেও এন এস ইউর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ অনেক কারণেই।এন এস ইউতে না পড়লে আমি ২৮তম বিসিএস পরীক্ষা ধরতে পারতামনা যেখানে আমার চেয়ে অনেক মেধাবী পাবলিক ভার্সিটির বন্ধুরা সেশন জ্যামের কারণে এতদিনে কেবল ৩০তম বিসিএস পরীক্ষা দিচ্ছে।
সরল স্বীকারোক্তি। খুবই ভাল লাগল।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
মাস্ফু ভাইয়ের একটা কথার সাথে জোরালোভাবে সহমত।অন্যান্য ব্লগে পাব্লিক/প্রাইভেট নিয়া যে পরিমান ক্যাঁচাল লাগে!!রীতিমত বস হবার প্রতিযোগিতা লেগে যায়।কিছু থাকে পাব্লিক ভার্সিটির পিছে লাগবে,কিছউ প্রাইভেটকে নাক সিঁটকাবে,আর আরেকটা গ্রুপ যুক্তি দিয়ে দুই নৌকায় পা রাখবে 😛 😛
কাহিনী যা ঘটার ঘটে,শেষের দিকে তুই তোকারী আর গালিগালাজ শুরু হয়।
একটা কথা বলে রাখি,পাবলিক ভার্সিটিতে নোংরা রাজনীতির বিকাশের কারনে ছাত্রদের চেয়ে শিক্ষকদের দোষ কোন অংশে কম না,বরং বেশি।অনেক শিক্ষকই সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত।তবে সরকার/রাজনৈতিক পার্টি ইচ্ছে করেই পাবলিক ভার্সিটির রাজনীতি বন্ধের উদ্যোগ কখনোই নিবে না,কারন এই জায়গাগুলি তাদের নোংরা রাজনীতি বিকাশের অন্যতম ঘাঁটি।এই কারনেই বেশিরভাগ পাব্লিক ভার্সিটির হলগুলোতে সর্বদা সিট সংকট বিরাজ করে।এই সংকট বিরাজ করার ফলেই একটি ছাত্রকে সিট নিতে গেলে রাজনৈতিক ব্যানারে উঠতে হয়।এইভাবে রাজনৈতিক ব্যানারে একবার নাম লেখানোর ফলে,হলে থাকতে হলে তাঁকে সক্রিয়ভাবে মিছিল,মিটিং,মারপিট সব ঘটনায় অংশ নিতে হয়।
পাব্লিক প্রতিষ্ঠানেও এই নষ্ট রাজনীতি থাকবে না,যদি সম্পূর্নভাবে আবাসন সংকট এবং ছাত্রদের জন্য ফ্যাসিলিটি বাড়ায়।কারন ভার্সিটির ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর ধান্দা কম ছেলেরই।যারা ঠেকায় পড়েও এইসবে ঢুকে,তাদের ভিতরেও রাজনীতির চেয়ে নিজের আখের গোছানো মূল লক্ষ্য।
আদনান, কেমন আছো? অনেকদিন পর তোমার পোষ্ট, তাও আবার একটা গুরুত্বপূর্ণ টপিকে দেখে লগ-ইন না করে থাকতে পারলাম না।
তোমার উপস্থাপিত প্রাইভেট/পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক যুক্তিগুলোতে প্রায় পুরো দ্বিমত পোষন করি। কেন তা' বলার চেষ্টা করছি-
১। প্রাইভেট/পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে প্রতিষ্ঠান, আর ছাত্ররা হচ্ছে ব্যক্তি-মানুষ, সেইসব প্রতিষ্ঠানের উপাদান+প্রোডাক্ট। তাই প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিষ্ঠানের তুলনায় তাদের সার্বিক দিক বিবেচনায় আসা উচিত, শুধু একটি মাত্র উপাদান (ছাত্র) নয়। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পাবার কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে অবকাঠামোগত অবস্থানে রয়েছে সেই পর্যায়ে যেতে সর্ব প্রধান প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ-সাউথকেও আরো ১০/১৫ বছর বর্তমানের গতিতে চলতে হবে।
২। UGC আপাদমস্তক একটা অথর্ব প্রতিষ্ঠান। ইউনিভার্সিটিগুলোর উপর খবরদারীকারী সরকারী প্রতিষ্ঠান হলেও এর কোনো বেইল নাই, পাবলিক+প্রাইভেট উভয় ইউনিভার্সিটির কাছেই। পাবলিকগুলো চলে তাদের ইচ্ছেমত (শিক্ষক নিয়োগ, ছাত্রভর্তি, নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভূক্তি, ইত্যাদি লক্ষ্যনীয়), আর প্রাইভেটগুলো টাকা ঢেলে নানা রকম আইনের ফাঁক গলে বের হয়ে আসে সব সময়ই (মুরগীর খোপের সাইজের ক্যাম্পাস, সিলেক্টিভ কয়েকটিমাত্র বিষয়, যা' তা' মানের সিলেবাস, তারও থেকে যা' তা' মানের পরীক্ষা পদ্ধতি, ছাত্রদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত আদায় করা বেতন+নানা রকম ফী, ইত্যাদি লক্ষ্যনীয়)।
৩।পাবলিকে ছাত্র রাজনীতির কথা তুলে যা' বলতে চাইলে তা' খুবই খেলো যুক্তি মনে হলো। আমার ধারণা এ' ব্যাপারে পাবলিকে পড়া অনেকেই আমার সাথে একমত হবে। ছাত্র রাজনীতির ফলে কোর্স শেষ করার সময় দীর্ঘায়িত হওয়াটাই আমার কাছে বড় সমস্যা মনে হয়; এর সাথে সাধারণ ছাত্রদের মানের সরাসরি কোন রকম সম্পর্ক নাই, আর কার্যকারণ সম্পর্ক তো নাইই।
- ২০০৪-০৫ এ NUB-তে আর এখন AIUB-তে নিজে পড়াতে গিয়ে এবং আরো নানা পাবলিক+প্রাইভেটে বন্ধুদের পড়ানোর অভিজ্ঞতা থেকে আমার চিন্তাভাবনাগুলো বললাম। কোন পয়েন্টে দ্বিমত থাকলে বলো, আরো বিস্তারিত আলাপ করা যাবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
UGC এর ব্যাপারে পুরো সহমত। :thumbup: আমার কমেন্টে এইটা বাদ পড়ছিলো!
মাহমুদ ভাইয়ের সঙ্গে একমত।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে অবকাঠামোগত অবস্থানে রয়েছে সেই পর্যায়ে যেতে সর্ব প্রধান প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ-সাউথকেও আরো ১০/১৫ বছর বর্তমানের গতিতে চলতে হবে। ভাইয়া, আমি আরো একটি বিষয় যোগ করি।অবকাঠামোর কথা যদি বাদও দিই,আমার মনে হয় "বিশ্ববিদ্যালয়" আসলে অনেক বড় একটা ব্যাপার-অনেকটা "বৈশ্বিক" পর্যায়ের মত বৃহৎ এর ব্যাপ্তি। আর এখানে সংস্কৃতি,ঐতিহ্য এগুলো খুব খুব বেশি গুরুত্বপুর্ণ।আমার বাবা-মা দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-তাঁরা মাঝে মাঝে বলেন- "ঢাকা(পাবলিক)বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ছাত্র যদি বলে যে বাংলাদেশের ইতিহাসের একটা প্রতিশব্দ হচ্ছে ঢাকা(পাবলিক) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস"-তাহলে প্রতিবাদ করার মত খুব বেশি মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবেনা।১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে তুলনায় আসতেই ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কম করে হলেও আরো অন্ততঃ ৫০ বৎসর পার করতে হবে-এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।দয়া করে এটা ভাববেন না যে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি বলেই এমনটি বলছি- আমার বিশ্ববিদ্যালয়(NSU) এর প্রতি নানা কারনে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।এন এস ইউইয়ের একজন কৃতজ্ঞ ছাত্র এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি চাইব আগামী পঞ্চাশ বছরেীই দিকগুলো চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে আমার বিশ্ববিদ্যালয় সেই পর্যায়ে যাবে,পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে এমন একটি অবস্থানে যাবে যেখানে উভয়ের মধ্যে শিক্ষাগত উন্নতির একটি স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা হবে-আমার দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইভি লীগ স্কুলগুলোর মত বিশ্বজোড়া নাম করবে।
হোক না দিবাস্বপ্ন,দেখতে ক্ষতি কি? তবে এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে একটা জরুরী কাজ হবে জেসিসির বর্তমান প্রিন্সিপাল জাতীয় কূপমন্ডুক লোকদের শিক্ষাক্ষেত্র থেকে শতহাত দূরে রাখা।
- হুম, খুব প্রয়োজনীয় একটা কথা বলেছো। কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে শিক্ষা হলো 'পাবলিক গুড'- তারমানে মুনাফা বিবেচ্যই নয়, আর ব্যক্তি-ইয়দ্যোক্তার কাছে মুনাফাই মূল। এই দ্বান্দ্বিকতার বোঝাপড়া কিভাবে হবে তা'র উপর নির্ভর করবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে পাবলিক/প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক অবস্থান। তবে এখন পর্যন্ত আমি কোনটাই নিয়ে খুব আশাবাদী না।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাইয়ের সাথে একমত, বরাবরের মতোই। তবে আমার দুইপয়সা দিয়া যাই। আমাদের দেশে ছাত্র বেশি, বিশ্ববিদ্যালয় কম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলার তাই ভাব বেশি। ছাত্র কম হইত, তবে ঠেলাটা বুঝত। নিজের অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্যই ছাত্রকেন্দ্রিক উন্নয়নের চেষ্টা চালাইত। আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় যদি খুব ব্যবসায়িক মনোভাবের হয়, তাইলেও আমার আপত্তি নাই। ন্যায্য ব্যবসায়িক মনোভাব তো হইল, লোয়েস্ট প্রাইসে বেস্ট প্রোডাক্ট দিবে। প্রাইভেট ভার্সিটি যদি বেস্ট প্রোডাক্ট সাপ্লাই দিতে পারে, তাইলে দাম দিতে অসুবিধা নাই। আর ছাত্র হিসাবে আমাদেরও দায় আছে। আমরা খালি সার্টিফিকেট নামের অর্থহীন কাগজটার পিছে ছুটি, আসল শিক্ষার নামে লবডংকা।
- তোফিক, মুক্তবাজার অর্থনীতির মধ্যে বিদ্যমান 'অতি গুরুত্বপূর্ণ (consequential)'
"আধা-সত্য"গুলোর মধ্যে এটা অন্যতম। বাস্তবে যা হয়, তা' হচ্ছে- লো প্রাইসে বেষ্ট প্রোডাক্ট দিবে সেই পর্যন্ত যতক্ষন বাজারে প্রতিদন্দ্বী থাকবে। বাজার একবার দখল করা হয়ে গেলে এই নীতি দ্রুতই বদলে যায়। তখন ব্যক্তি-পুঁজি আসল চেহারায় দেখা দেয় যার একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান হলো মুনাফা, তা' সে যে কোন উপায়েই হোক।
আর, নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগত কারণেই কিছু কিছু জিনিষ collective বা গোষ্ঠিগত, যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, অবকাঠামো, ইত্যাদি। এগুলোকে ব্যক্তি-পুঁজির আওতায় আনলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক (আসলে বেশিরভাগ) ব্যক্তিই ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
এইভাবে তো চিন্তা করি নাই। আপনার কথাগুলো পড়ার পর কানাডার হেলথ কেয়ার আর আমেরিকার হেলথ কেয়ারের কথা মনে হচ্ছে। হসপিটালে গেলে এইখানে সবাইকেই লাইনে দাঁড়াইতে হয়, এইটা খুব ভালো লাগে।
আরো একটা কথা যোগ করি,প্রাইভেট ভার্সিটির শিক্ষকেরা ছাত্রদের সুযোগ-সুবিধা,পলিসি এসবের ব্যাপারে যথেষ্ঠ সচেতন।আর পাবলিকের শিক্ষকদের কথা নাই বা বললাম,তাঁরা সবসময় আছে নিজেদের স্বার্থ নিয়ে।এমনকি সাধারন একটা সহানূভূতিশীল বিষয়েও কোন বিবেচনা করা হয় না।এখানকার প্রশাসনিক জটিলতা এত চরমে যে,সেই জটিলতাইয় পড়ে একটা ছাত্রের কি পরিমান দূর্ভোগ পোহাতে হবে,এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই।এই শিক্ষকেরাই যখন প্রাইভেটে ক্লাস নিতে যান,সেখানকার ছাত্রদের প্রতি যথেষ্ঠই উদার থাকেন।এমনকি এর মূল কারন হল,শিক্ষার বানিজ্যিকীকরন।
তবে ভার্সিটির অবকাঠামোর চেয়ে নিজ নিজ ডিপার্টমেন্টের অবকাঠামো উন্নতি করলেই এই সমস্যা অনেকাংশে দূর হবে।একটা উদাহরন দেই,২০০৬-০৭ আমার সাথে যারা ভার্সিটিতে(বিবিধ কারনে আমার ১ বছর গ্যাপ পড়ে) খুব ভাল ভাল বিভাগে ভর্তি হয়েছিল,অনেকেই এখনো ৩য় বর্ষের
মিডটার্ম/ফাইনাল শেষ করতে পারেনি।আর এদিকে আমি এখন ৪র্থ বর্ষের মিডটার্ম দিচ্ছি।এইটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে আমার নিজের বিভাগের নিয়মকানুনে কড়াকড়ি থাকার কারনে।আমাদের অনেক সিনিয়র স্যারদেরও রেগুলার রুটিনমাফিক ক্লাস না করালে তাঁর চেয়ে বয়সে জুনিয়র,ইন্সটিটিউটের পরিচালকের কাছে জবাবদিহি করতে হয়।
(অটঃ কেউ যদি ভাবেন নিজের বিভাগের প্রশংসা করছি,তাইলে আগেই করার লাইগা :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: )
২০০৬ সালে যখন bma থেকে out হই তখন এই so called public university র কল্যাণেই আজ বর্তমান অবস্থানে আছি। খারাপ ভালো সব প্রতিষ্টানেই থাকে।
তথাপি ব্যাক্তিগত প্রচেষ্টাকে অবমূল্যায়ন করে শুধুমাত্র কতিপয় প্রতিষ্টানের প্রতি অনুরক্ত এই একচোখা ব্যক্তিরা নিশ্চিত আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে আরও কলূষিত করবে।
আর আসলেই কি সব প্রাইভেট uni তেই সিলেবাসের দুর্বলতা আছে ? আমি প্রাইভেটর মধ্যেও সবথেকে দুর্বল একটা থেকে পড়াশুনা করছি, NSU র মতো আমারটায় এত সুযোগ সুবিধা ছিলনা। কিন্তু আমার সিলেবাস যথেষ্ট উন্নত ছিল, আমার particular field এ আমি সব থেকে আধুনিক বিষয়ই পড়ছি। অবশ্যি আমার ল্যাব এবং অন্যান্য কিছু সুবিধা অপ্রতুল ছিল। কিন্তু সেটা ব্যাক্তিগত চেষ্টায় overcome possible।
আর তোফিক ভাই এর সাথে এক্মতলোয়েস্ট প্রাইসে বেস্ট প্রোডাক্ট এটা যদি নিশ্চিত করা যায় তাহলে ভালো বই খারাপ হবে না
তোমার কলেজের ঘটনার জন্য দুঃখিত। আমি তোমার জায়গায় হলে আমারো হয়তো অনেক খারাপ লাগতো। কিন্তু এই ঘটনার পরিপেক্ষিতে যে পাবলিক-প্রাইভেট তুলনামূলক চিত্র দিয়ে যুক্তিগুলো দাড় করিয়েছো, সেই লাইন অব আগ্রুমেন্টের সাথে একমত হতে পারলাম না ভাই।
প্রথমেই বলি, আমাদের দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই আদর্শ অবস্থায় নেই। সেটা পাবলিক-প্রাইভেট, প্রকৌশল-সাধারণ, পুরানো-নতুন সব বিশ্ববিদ্যালয়ই আমার ধারণায় পেডাগজিক্যাল সংকটে আবর্তিত। তারপরও, মৌলিক কাঠামো ও উদ্যোক্তার উদ্দেশ্য খেয়াল করলেই পাবলিক-প্রাইভেট প্রার্থক্যগুলো বেশি করে চোখে পড়বে। একটার উদ্যোক্তা হলো রাষ্ট্র এবং আরেকটার হলো গুটিকয়েক মানুষ তারা মূলতঃ ব্যবসায়ী। রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য জ্ঞানের মাধ্যমে যুক্তিবাদী, স্বাধীন বিচার-বিবেচনা সম্পন্ন এবং কর্মক্ষম শিক্ষিত জনশক্তি উৎপাদন আর ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য বাজারমূখী চাহিদার সাথে মিল রেখে শিক্ষাপন্য বিক্রি করে মুনাফা অর্জন। আমাদের মতো দেশে রাষ্ট্রই এখনো বড় উদ্যোক্তা এবং তার প্রকল্পে সমগ্র জনগোষ্টিকে অর্ন্তভূক্ত করে। টারশিয়ারি শিক্ষার পর্যায়ে এখনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়লকে ছাত্র সংকটের মুখে পড়তে হয়নি এবং সম্ভবত হবেও না। সাবসিডাইজড লেখাপড়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এতিহাসিক পরম্পরার কারণে মেধাবীরা এখনো প্রথমে সেখানে দৌড়ায়। ব্যতিক্রম নেই তা নয়, ঢাকার ধনীক, উচ্চ মধ্যবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক ছাত্রই এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি উন্নাসিক। মূল ব্যাপার হলো, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে গ্রহনযোগ্যতা এবং হেজিমনিক ইমেজ নির্মানের প্রতিযোগিতায় শিক্ষিত সমাজে এগিয়ে রয়েছে তুমি তার কারণে কলেজে গিয়ে ডিসক্রিমিনেটেড হয়েছো।
মেধার কোন পাবলিক-প্রাইভেট বিভাজন বড়দাগে আমি দেখি না, মেধাবী যেখানেই থাকুক বিকশিত হবে, তবে শর্ত সাপেক্ষে। তুমি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ট্যুইশন মওকুফের কথা বললে সেটা আর কিছু না, আরেকটা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য মাত্র। একটা ভাল ছাত্র ভর্তি হলে, পালের যদু, মধু অনেকেই তাকে অনুসরন করবে, এই হলো মূল ব্যাপার। নব্য উদার অর্থনীতিতে শিক্ষার মতো উপাদান ব্যক্তিমালিকানাকরণ উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালযগুলোতেও তীব্র সমলোচনার মুখে পড়ছে, সেখানে আমাদের মতো দেশের জন্য দিনের শেষে খুব একটা ভাল কিছু না আদতে। শিক্ষার সুযোগ প্রসারিত হয় এটা ঠিক, কিন্তু তাতে মোটাদাগে কর্পোরেট স্বার্থ লাভবান হয়। হয়তো একদিন রাষ্ট্র্র আরো বেশি উপকৃত হবে।
তুমি যে নেতিবাচক ছাত্ররাজনীতির কথা বলেছো সেটা হলো আম্লিগ, বিন্পি আর জামাতের পায়ুজাত বর্তমান রাজনীতি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এর বাইরেও রাজনীতি আছে এবং একটা সামগ্রিক রাজনীতি সচেতন আবহ ও পরিবেশ তৈরি করে। একটা দৃষ্টিভঙ্গি রোপন করে, যেটা খুব প্রয়োজনীয় মনে করি, তা না হলে রাজনীতির ধ্যানধারনাশূন্য একটা মানুষ কখনো জনগোষ্ঠি, ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাথে নিজেকে রিলেট করতে পারে না। “ছাত্ররাজনীতি” নোংরা জিনিস এটা কখনো মনে করি না, কিন্তু কিভাবে, কার মাধ্যমে এবং কি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিক রাজনীতি নেই ঠিক, কিন্তু ভিতরের মেকানিজম অন্যগুলোর মতো। আবার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকটা আবার শুনেছি জামাতি খোয়াড়, আমার এক বন্ধু এমন একটা থেকে না পেরে চাকরি ছেড়ে দেয়। তাছাড়া একসময় সবগুলোতেই হিজবুত তাহরীরের কার্যক্রম ছিল, এখন কি অবস্থা জানিনা। তাই প্রাইভেট মানেই রাজনীতিশূন্য এটা মনে করি না। দেশের পাবলিক-প্রাইভেট দুই জায়গার অভিজ্ঞতাই আমার আছে। প্রাইভেটে যেটা ভাল তা হলো শিক্ষার সুযোগ, ফ্লেক্সজিবিলিটি এবং সঠিকভাবে সেমিষ্টারের সময় নিয়ন্ত্রন। ব্যুরোক্রাটিক জটিলতা বেশ কম। খানিকটা পশ্চিমা বিশ্বের ধাচের কারিকুলাম কাঠামো। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কিনা জানিনা, চার-পাঁচটায় এরকমই। পেডাগোজি যদিও নির্ভর করে শিক্ষক-ছাত্রের মানের উপর। সব প্রাইভেটের সম্পূর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনার উপর প্রশাসনের (বা গর্ভনিং বডির) একছত্র নিয়ন্ত্রন, এটার অবশ্য ভাল-খারাপ দুইদিকই জোরালো। কমেন্ট হিসাবে, অনেক কথা হয়ে গেল, এখানে শেষ করা উচিত।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ডোন্ট মাইন্ড আদনান। এইটা আমাদের মানসিকতার একটা সমস্যা। কি শিখছে এবং কেমন শিখছে সেটার চাইতে আমরা কোথায় শিখছে সেটাকে বড় বেশী গুরুত্ব দিয়ে ফেলি।
দুই খানেই তো পড়লাম, অনেক কিছুই তো বুঝলাম 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
জাতি তা জান্তে চায়
প্রতিভা না দেখে প্রতিষ্ঠান দেখে বিচার করাটা কিন্তু খালি উপরোক্ত প্রিন্সিপাল স্যারের সমস্যা না, এইটা সারা বিশ্বের সবার সমস্যা। খুব সহজ (যদিও একটু বাড়াবাড়ি) উদাহরন হল, দুজন ছাত্রঃ একজন বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর আরেকজন ধরা যাক প্রিন্সটনের, আমার মনে হয় না কোন ইন্টারভিউতে বাংলাদেশী ছাত্রের কোন সুযোগ থাকবে। এইটাই ব্রান্ডিং, এটা সব জায়গায় চলে। আর হয়তো (হয়তো কেন, নিশ্চই) অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে অনেক ভাল, কিন্তু যতদিন না তারা নিজেদের "প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়", এই জাতি থেকে আলাদা করতে পারবে, ততদিন অন্য বাজে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর দায় তাদের নিতেই হবে। আমি নিজে ছাত্র থাকা অবস্থায় অনেক প্রাইভেটের ছাত্র পড়িয়েছি, অবস্থাটা নিজের চোখে দেখা। ২০ টা অংক দাগিয়ে দিয়ে বলা যে ওর থেকেই পরীক্ষায় আসবে, কিম্বা প্রজেক্ট করতে দেয়া যেটা সবাই অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নিতো, এইসব ছিল সাধারন ব্যাপার। যেখানে আমরা পুরা ইন্টিগ্রেশন বই শেষ করার পরও পরীক্ষার হলে গিয়ে কমন পেতাম না। দুঃখই লাগতো।
তবে এটাও ঠিক আমার বেশ কিছু বন্ধু প্রাইভেটে পড়েছে, যারা অসাধারন মেধাবী। জানিনা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কতটুকু কি দিতে পেরেছে, কিন্তু তারা নিজেদের চেষ্টায় বহুদুর চলে গেছে আমাদের অনেক আগেই। এখনো দুঃখ হয়, আহা, ৪ বছরের কোর্স ৪ বছরে শেষ করতে পারলে কত কিছুই না হতে পারত।
উলটা কেইসও আছে- পাবলিকে ১০ টা প্রশ্নের প্রিপারেশন নিয়ে ৫ টা কমন পেয়ে ফার্স্ট ক্লাস ম্যানেজ করা পাবলিকও আমার নিজের চোখে দেখা।ইংলিশ ডিপার্টমেন্টে ৫ বছর অনার্স মাস্টার্স করে দুই পাতা শুদ্ধ ইংরেজি লিখতে পারেনা এই উদাহরণও একেবারে বিরল না।
কবে যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এইসব সমস্যা থেকে মুক্ত হবে 🙁 🙁 🙁
সুমন্ত ভাই, আপনের ব্র্যান্ডিং এর উদাহরণটা জটিল হইছে।পিএসসির ভাইভা দিতে গিয়ে যা অভিজ্ঞতা হইছে তা আর বলার মত না :(( :(( :((
অবশ্যি মাসরুফ, পাবলিক মানেই এক্কেরে মেধাবীদের ভিড়, তা কিন্তু না। তার উপর, পাবলিকের সব বিভাগের সুনামও একরকম না। অনেক বিভাগ আছে এখনো আধিপত্য করে কারন তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করার কেউ নেই বাজারে। আবার অনেক শিক্ষকও আছেন যারা পাবলিকের প্রশ্ন করার পিছনে সময়ই দিতে চাননা, কারন লাভ কি? টাকা তো আর পাচ্ছেন না, বরং ঐ সময়টা অন্য কোথাও ক্লাশ নিলে বেশ মোটা অংকের টাকা কামানো যাবে। ফলাফল, একই প্রশ্ন বারবার। অন্যদিকে, সেই বেশি টাকা কামানো জায়গায় আবার তার রেপুটেশনের ভিত্তি হচ্ছে ছাত্রদের সন্তুষ্টি, ফলাফল আবার সহজ প্রশ্ন। সর্বশেষ, আমরা ছাত্ররা এই ব্যবস্থার বলি। উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে গেলে বুঝতে পারি কত অদ্ভুত শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা বেড়ে উঠেছি।
সার্কাসের চেয়ে কম না আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা 🙁
যতই পাব্লিক প্রাইভেট হোক,একে অন্যর প্রতি বিদ্বেষমূলক মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।আসলে এই অবস্থাটা তৈরি হয় কিছু ছেলেমেয়ের অহংকারের কারনে,পাব্লিকের কিছু ছেলেমেয়ে,আমার সাথেই পড়ে এমন ছেলেমেয়েরাও আছে,প্রাইভেট নাম শুনলেই ভ্রুকুটি করে।এমন ভাব যেন একমাত্র তাদেরই মেধা আছে,অন্যদের নাই।পাবলিক ভার্সিটির আড্ডগুলোতে গেলে অনেক সময়েই তারা প্রাইভেট ভার্সিটির বিরুদ্ধে বিষেদাগার কথা বলে।
আবার প্রাইভেটেও এমন ছেলেমেয়ে আছে,কোন রকমে ইন্টার পাস করে(ক্ষেত্র বিশেষে ২য় চান্সে পাস করে) বাপের টাকার শ্রাদ্ধ করে প্রাইভেটে ভর্তি হয়ে তখন বলে,পাব্লিকের ছেলেরা ক্ষেত।বুয়েট,ঢাবির সেশন জ্যামের দোহাই দিয়ে যখন নিজেরা আকাশে উঠবার চেষ্টা করে,তখনই বিদ্বেষটা চরমে উঠে।
আমার মনে হয়, পাবলিকের ছাত্রদের এই মানসিকতার পিছনে কাজ করে অনেক প্রতিযোগিতামূলক একটা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে পার হয়ে আসার ব্যাপারটা। পাবলিকের বেশীরভাগ ছেলেরই ধারনা, বাবার টাকা থাকলেই প্রাইভেটে ভর্তি হওয়া যায়। ফলে এই ধারনাটা গড়ে উঠে যে, "আমরা নিজের চেষ্টায় এতদূর এলাম, আর ওরা বাপের পয়সায় মাস্তি করছে, ক'দিন পর বাপের পয়সায় বিদেশ চলে যাবে।" এর থেকে জন্ম নেয়া হতাশাও এই বিদ্বেষের একটা বড় কারন বলে আমার ধারনা।
হতাশাটা অযৌক্তিক তা কিন্তু বলা যাবেনা।এক কোটি টাকা খরচ কইরা অক্সফোর্ড-হার্ভার্ডে পড়া বড়লোকের পোলাপাইন তো নিজের চোখেই দেখা।আপনেরাও দেখছেন-বিলাওয়াল ভুট্টো কিন্তু পাকিস্তানের ফার্স্ট বয় না হইয়াও অক্সফোর্ডে পড়ালেখা করে 😀 😀 তারে দেইখা আমিও ইট্টু আধটু হিংসিত না হইয়া পারিনা 🙁
সব কিসুর উপর বেক্তি প্রচেস্থাই বড়|
সহমত।
অফ টপিক- আরেকটু অনুশীলন করে বাংলা টাইপিংটা একটু আয়ত্তে আনো ভাই 🙂 আমার অবস্থাও তোমার মতই ছিল, এডু স্যারের ঝাড়ি খাইয়া ঠিক হইছে।
:thumbup: :thumbup: :thumbup: