সাবধান,হোটেল শেরাটন আর ইগলু কোম্পানিতে কর্মরত এক্স ক্যাডেটরা অন্য চাকরি খোঁজা শুরু করে দিন…

আজি প্রভাতে গিয়াছিলাম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষা বিষয়ক সেমিনারে-গিয়াই উহাদের চাপাবাজি এবং জনৈক প্রাক্তন ডিআইজি সাহেবের ভাইভা টিপসের পরিবর্তে উনি বসনিয়ায় মিশনে থাকাকালে কোন সুন্দরী ললনা উনার প্রেমে দিওয়ানা হইয়াছিল সেই কাহিনী শুনিয়া বিবমিষ-চিত্তে বাহির হইয়া আসিলাম।রাস্তায় দাঁড়াইয়া ইক্ষুর শরবতের সহিত কিঞ্চিৎ লেবুর রস মিশ্রিত করিয়া গলাধঃকরণ করিবার উপক্রম করিতেছি-এই মুহূর্তে মুঠোফোন বাজিয়া উঠিল-এই অধমকে কল প্রদানকারী নিজের পরিচয় হিসেবে জানাইলেন রেডিও এবিসি হইতে।ইহা শুনিয়াই আমি যাহা বোঝার বুঝিয়া গেলাম-বিড়ালের ভাগ্যেও শিকা কখনও কখনও ছিঁড়িয়া যায়-গোবেচারাও গোফঁচাড়া দেয় একদিন-ডজন ডজন ছ্যাঁকা খাইতে খাইতেও যাস্ট মাস্ফ্যুর কপালে যাস্ট (গার্ল)ফ্রেন্ড জুটিয়া যায়।

হৃদয় আমার নাচিয়া উঠিল-চিত্তের পুলকে আকাশ বাতাশ প্রকম্পিত মনে হইতে লাগিল,আমি যে পরীক্ষার নাম করিয়া দৈনন্দিন ব্যায়াম ছাড়িয়া দিয়া আশি হইতে নগদে সাতাশি কেজি হইয়া গিয়াছি তাহাও ভুলিয়া গেলাম।ছা-পোষা এই আমি আপন প্রিয়দর্শিনীকে বাহুলগ্না করিয়া শেরাটন নামক অভিজাত হোটেলে রথী-মহারথীগণের সহিত বরফ-প্রলেপ ভক্ষন করিব-ইহা ভাবিতে ভাবিতেই আমার আকাশ নানান রঙ্গে রঙ্গিন হইয়া উঠিল।দুরালাপনীর মাধ্যমে সদ্য গতপরশু জন্মদিন পালন করা আমার “শুধুই” (বালিকা)বন্ধু আইসক্রিম খাওয়ার কথা শুনিয়া গতকালকের বুশ-ওসামা সুলভ প্রাক-দাম্পত্য কলহটিও বেমালুম ক্ষমা করিয়া দিলেন।

কিন্তু আমরা যেহেতু ক্যাডেট-এই দেশের অর্থে আমাদের যে লালন-পালন,তাহাতে আমার ক্ষণিক আনন্দের যে সুদূর প্রভাব-তাহা উপেক্ষা করিতে পারিলাম না।কি মনে করিয়া গতকাল নিশিতে কিছুই খাইনাই,আজ প্রভাতে ধানমন্ডি হ্রদে লৌহ-দুরমুজ সহকারে কঠোর শরীরচর্চা করিয়াছি।ক্ষুধা এতই বাড়িয়া উঠিয়াছে যে সম্মুখে যাহা পাই তাহাই পাকস্থলীতে প্রবেশ করাইয়া দিতে ইচ্ছা করিতেছে।সুতরাং আমি আমার ও আমার ততোধিক ভোজনরসিকা বালিকা বন্ধু মিলিয়া শেরাটন সরাইখানায় ইগলু কোম্পানির খাদ্য সরবরাহে যেই মহাপ্রলয় ঘটাইতে যাইতেছি তাহার তাৎক্ষণিক ফলাফল যে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার চাইতে বেশি বৈকম নয়-ইহা জানিতে শার্লক হোমস,ফেলুদা বা ব্যোমকেশ বকশি-এর কোনটাই হইতে হয়না।

অতএব,হে ভ্রাতঃগণ-আপনারা যাহারা শেরাটন সরাইখানা অথবা ইগলু বরফ-প্রলেপ কারখানায় চাকরি করিয়া জীবিকা নির্বাহ করিতেছেন,দুই এক দিনের মধ্যে লালবাতি জ্বলিয়া উঠিবে এই আগাম সতর্কবানীকে ধ্রুবসত্য ধরিয়া অতিসত্বর নব্য জীবিকার সন্ধানে বাহির হউন!!!!!

৬,৩৪১ বার দেখা হয়েছে

৮০ টি মন্তব্য : “সাবধান,হোটেল শেরাটন আর ইগলু কোম্পানিতে কর্মরত এক্স ক্যাডেটরা অন্য চাকরি খোঁজা শুরু করে দিন…”

    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      বস আমিও লিখুম আর তেলাপোকাও পাখি হইব-বড়ই ইনফেরিওরিটি কম্পলেক্সে ভুগি সিসিবির লেখকদের লেখা পইড়া।

      কিন্তু এইবার মাপ নাই-আপনের উৎসাহ পাইয়া একটার পর একটা লিখা ছাইড়া এক্কেরে "ফ্লাডিং" কইরা ভাসায় দিমু ভাবতাছি... :shy:

      জবাব দিন
  1. ভাই,
    সিরাম হইছে...

    সাধু ভাষায় এইরকম জটিল একটা লেখা এত অল্প সময়ে কীভাবে লিখলেন এবং এতটা সুন্দর করে কীভাবে প্রকাশ করলেম সেইটা আমার কাছে রহস্য।

    কিন্তু এইটা পরিষ্কার ----

    আইজকা আমার পোস্টটারে হাতে হারিকেন দেয়ার উদ্দেশ্যে আপনি আপনার এই পোস্ট প্রকাশ করছেন...

    এই দেখেন ২ ঘন্টা পরে পোস্ট দিয়াও আপনি আমার সমান পাঠ্য হয়া গেছেন...

    😡 😡 😡 😡 😡 😡 😡

    জবাব দিন
  2. আদনান (১৯৯৭-২০০৩)

    বন্ধু, তোমার এহেন কোপের ঠ্যালায় তো আমাদের মত সাধারণ বোধবুদ্ধির মানুষদের বাংলা অভিধান নিয়ে বসা লাগবে!

    শুন্‌ তুই ও আমার মত সিরিজ লিখা শুরু কইরে দে তাইলে নিয়মিত হয়া যাইবিগানে...

    জবাব দিন
    • যাহারা যাহারা কেবলি "আবেগ-ছবি" তুলিয়া ধরিয়া মন্তব্য করিয়াছ তাহারা সকলে একযোগে সম্মুখ-চক্র( :frontroll: ) শুরু করিতে আজ্ঞা হয় x-(

      জবাব দিন
  3. সামীউর (৯৭-০৩)

    সুহৃদ মাস্ফু,
    অন্তর্জালে তোমার সাধু ভাষায় লিখিত দিনপঞ্জি খানা পাঠ করিয়া বড়ই পুলক বোধ করিলাম। উত্তর-দক্ষিণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী যে এই রূপ বাংগালা ভাষায় গদ্য রচনা করিতে সক্ষম তাহা আমার জ্ঞাত ছিলোনা। প্রার্থনা করি সরকারী চাকুরিতে তুমি নিয়োগ প্রাপ্ত হইয়া দেশ ও জাতির ভান্ডার উজাড় করিয়া তোমার সুহৃদ গণকে সুস্বাদু দুগ্ধ-মালাই প্রলেপ যুক্ত বরফ খন্ড ভোজন করাইবে।

    জবাব দিন
  4. ইউসুফ (১৯৮৩-৮৯)

    প্রিয় ভগ্নি-পুত্র মাস্ফ্যু,

    বরফ-প্রলেপ খাইবার পূর্বে ও পরের আপাদমস্তক দুইখানি চিত্র এই স্থলে উর্ধভর্তি করিয়া ফেল তো চাঁদ!

    অবলোকনে অবগত হই বরফ-প্রলেপ কারখানার মালিকদের ব্যাবসা-মন্দার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে।

    জবাব দিন
  5. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    এক্ষণে আমি ইহা কি পাঠ করিলাম! আমার মস্তিস্ক হইতে সমুদয় পাঠ্য-ভাবনা তিরহিত হইয়া কি এক আমোদ-আবেশে চিত্ত ভরিয়া উঠিল।- কিয়তক্ষণ অতিবাহিত হইবার অন্তর রচনার অন্তঃস্থিত সংবাদ (বিনামূল্যে যথেচ্ছা বরফ-প্রলেপ ভক্ষণ)অনুধাবন করিয়া নিদারুন মর্মজ্বালা উপস্থিত হইল।

    ভ্রাতঃ, তোমার এহেন ভাষা-জ্ঞান হইতে নিসৃত ফল্গুধারা হইতে সিসিবি'কে বঞ্চিত রাখিবার অধিকার কাড়িয়া লইবার আবেদন জানানো হইলো।

    (পঞ্চতারকা সংযুক্তকরণপূর্বক প্রিয়তে সংরক্ষণ করা হইলো।)


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      ভ্রাত মাহমুদ,
      আমরা বালকসেনারা যে জন্মলগ্ন হইতেই বিলুপ্তপ্রায় বঙ্কিমীয় ভাষায় দক্ষ তাহা এই দিনলিপির মন্তব্যসমূহে চক্ষু লেপন করিলেই অনুধাবন করা যায়।আপনার এইরূপ উৎসাহ পাইয়া ভাবিতেছি আমার উচ্চ বিদ্যাশিক্ষার নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন সম্পর্কিত একখানা লিপি রচনা করিয়া চিত্রসহ অতি শিঘ্রই সিসিবি গৃহে পেশ করিব :shy: :shy:

      অনালোচ্য আলোচনা- আপনার মত গুনী ব্যক্তির উৎসাহ নির্গুন এই অধমের চলার পথকে কুসুমাস্তীর্ণ না হউক অন্ততঃ কণ্টকাকীর্ণ করা হইতে বিরত করিবে-ইহা হৃদয় অনুযোগে কহিতে পারি।আমার পরম কৃতজ্ঞতা আপনার রাজীব চরণে অর্পণ করিলাম-গ্রহণ করিয়া বাধিত করিবেন!

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।