এড হকিন্স এর লেখা Bookie Gambler Fixer Spy বইটির দুইটি অধ্যায় আমার পরিচিত ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য অনুবাদ শুরু করেছি। ঠিক অনুবাদ নয়, ভাবানুবাদ। আকারে বেশি বড় হয়ে যাবার কারণে কিছু অনুচ্ছেদ আমি বাদ দিয়েছি।
যাই হোক, আজ সেটার তৃতীয় কিস্তি শেয়ার করছি। মনে রাখবেন স্পয়লার এলার্ট কিন্তু আগেই দিয়ে রাখছি। নিজ দায়িত্বে পড়বেন। কারণ ‘It will change the way you look at cricket!’
———–
———–
অধ্যায় ৪
স্ক্রিপ্ট
জর্জ অরওয়েল বলেছিলেন Sport is war minus the shooting। অর্থাৎ খেলাধুলা অনেকটাই যুদ্ধের মত, খালি যুদ্ধের মত হতাহতের ঘটনা ঘটে না। তিনি এই কথাটি বলেছিলেন ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরে, ভারত-পাকিস্তানের জন্মের দুই বছর আগে এবং দুই দল ক্রিকেটের ময়দানে প্রথমবারের মত মোকাবেলা করার প্রায় ৭ বছর আগে। অরওয়েল দূরদর্শী ছিলেন, প্রায়শই তিনি এমন কথা বলতেন যা ভবিষ্যতে সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। কে জানে খেলাধুলা সংক্রান্ত ঐ উক্তি তিনি হয়ত ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথের কথা মাথায় রেখেই বলেছিলেন! কালক্রমে যা হয়ে ওঠে খেলাধুলার জগতের অন্যতম তিক্ত ও টানটান উত্তেজনাময় দ্বৈরথ।
দুই দলের মোকাবেলা তখনই প্রকট হয়ে ওঠে যখন দুই দেশের মধ্যে ঝামেলা কম থাকে। কারণ দুই দেশ যখন ক্রিকেটের ময়দানে মোকাবেলা করে এর মানে হচ্ছে তারা পরস্পরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত নেই! সম্ভবত অন্যজনকে হারাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষাটি হয়ত সবাই খেলার মাধ্যমে প্রকাশ করে! উগ্র জাতীয়তাবাদের কুৎসিত রূপ যুদ্ধ ও খেলার ময়দানে কিছুটা ভিন্ন হলেও মূল চেহারা কাছাকাছিই!
দুই দেশ গত প্রায় সাত দশক-জুড়ে দেখেছে দেশভাগ, তিনটি যুদ্ধ, পারস্পরিক সন্দেহ, শত্রুতা, জম্মু-কাশ্মির, যুদ্ধবিরতি, সন্ত্রাসবাদ, পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, কূটনৈতিক তৎপরতা ও সমঝোতার প্রচেষ্টা ইত্যাদি! এত কিছুর পরও তাদের সম্পর্ক তিক্তই রয়ে গেছে। এ পর্যন্ত চারবার তারা নিজেদের মধ্যে সকল প্রকার ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। শেষবার করেছে ২০০৮ সালের মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার পর, যা পাকিস্তান থেকে পরিচালনা করা হয়েছিল এবং খোদ পাকিস্তানের নাগরিকগণই ঘটিয়েছিল।
এ কারণে ভাগ্যের ফেরে এই দুই দল যখন ২০১১ সালের বিশ্বকাপ সেমিতে একে অপরের মোকাবেলা করবে বলে নির্ধারিত হল, সারা পৃথিবীর ক্রিকেট ভক্তকুলের উত্তেজনায় তখন দম বন্ধ হয়ে যাওয়া অবস্থা। কে জানে দুই দেশের বৈরি সম্পর্কের নতুন কোন রক্তাক্ত অধ্যায় রচিত হতে চলেছে! এর আগে এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তারা কখনোই মোকাবেলা করেনি। বিজয়ী দল শুধু দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেট অঙ্গনেই শ্রেষ্ঠত্বই অর্জন করবে না, দুই দেশের সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠত্বও নির্ধারিত হয়ে যাবে। চারিদিকে সাজ সাজ রব পরে গেল! যেন যুদ্ধ শুরু হতে চলেছে! স্থান, কাল, পাত্র ভিন্ন হলেও সত্যিকারের যুদ্ধের মত প্রস্তুতি।
খেলার ভেন্যু মোহালির পাঞ্জাব এসোসিয়েশনের স্টেডিয়াম। শহরটি ভারতের চন্ডিগর অবস্থিত, যা পাকিস্তান বর্ডার থেকে মাত্র ১৫০ মাইল দূরে। চন্ডিগর শহরটি দ্যা বিউটিফুল সিটি নামে পরিচিত। কিন্তু সেমি ফাইনালের সূচী চূড়ান্ত হবার পর কয়েক দিনের নোটিশে সেটি যেন দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত হল। সামরিক বাহিনী আনাগোনা এতটাই বেড়ে গেল দেখে মনে হচ্ছিল এটা কোন শহর নয়, সামরিক ঘাটি! শহরের উপর দিয়ে কোন উড়োজাহাজ উড়তে না পারে এজন্য নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হল, স্টেডিয়ামের চারপাশে নিশ্ছিদ্র, নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়া হল যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ ঢুকতে বা বের হতে না পারে। এসবের পাশাপাশি রাস্তার মোড়ে মোড়ে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী রোবট টহল দিতে লাগল!শুধু তাই নয়, চন্ডিগর পুলিশ বাহিনীর দু’ জন সদস্যকে পাকিস্তানী দলের সাথে থাকার নির্দেশ দেয়া হল। তাদের দায়িত্ব ছিল তিনবেলা পাকিস্তানী দলের খাবার পরীক্ষা করে দেখা যাতে কেউ বিষ মেশাতে না পারে! বিভিন্ন উঁচু ভবনের ছাদে স্নাইপার নিযুক্ত করা হল। পদে পদে লোকজনকে থামিয়ে তল্লাশি চলতে থাকল, বেসামরিক তো বটেই সামরিক সদস্যগণও এর থেকে রেহাই পাচ্ছিল না।
তবে, দুই দেশের সরকারের হাবভাব দেখে এসব কিছুই আঁচ করা যাচ্ছিল না। তারা একে অপরের সাথে এমন আচরণ করতে লাগল যেন দুই দেশের মাঝে বহুদিনের পুরনো বন্ধুত্ব! ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা জিলানি ঘোষণা দিলেন দুজনে একসাথে, পাশাপাশি বসে এই ঐতিহাসিক খেলা উপভোগ করবেন। পাক প্রধানমন্ত্রী তো সেদিন পুরো দেশে হাফ বেলা ছুটিই দিয়ে দিলেন। ক্ষমতাসীন জোটের সদস্য হিসেবে ভারতীয় কংগ্রেস দলের প্রধান সোনিয়া গান্ধীও খেলা দেখার আমন্ত্রণ পেলেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এতটা ভাগ্যবান ছিল না। কারণ স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা ছিল মাত্র ৩৫ হাজার। ফলে, কালোবাজারিদের কারসাজিতে টিকিটের দাম হু হু করতে বাড়তে লাগল। একাধিকবার হাত বদল হবার কারণে টিকিটের দাম বেড়ে দাঁড়াল প্রায় ১,৫০০ মার্কিন ডলারে! বাধ্য হয়ে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করল এবং eBay তে বেশি দামে টিকিট বিক্রি করার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতার করল।
যাদের কপালে টিকিট জোটে নি তারা টিভির সামনে বসে যেতে ভুলল না। ভারতের সংসদ অধিবেশন দুপুর আড়াইটা বাজার আগেই শেষ হয়ে গেল এবং সংসদের ভেতরেই বিশাল পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হল। জানা গেল মুম্বাই এর অন্যতম বড় শ্রমিক ইউনিয়ন গোষ্ঠী ট্যাক্সি ড্রাইভার সমিতি তাদের সংগঠনকে বলে খেলার দিন দুপুরের পর থেকে ছুটি নিয়েছে। তাদেরকে আগে-ভাগেই আশ্বাস দিয়ে বলা হল যে প্রথম বল থেকেই তারা ছুটি উপভোগ করতে পারবে। এভাবে একটি খেলাকে কেন্দ্র করে আপাতদৃষ্টিতে পুরো উপমহাদেশই যেন একেবারে থমকে গেল!
খেলোয়াড়দের কী অবস্থা হল?
ঠিক! ওদের উপরেই তো শত কোটি মানুষের স্বপ্ন, আশা, ভরসা নির্ভর করছিল। ভারতীয় অধিনায়ক, সদা মৃদুভাষী এম এস ধোনি ম্যাচের আগের সাংবাদিক সম্মেলনে দেরি করে আসলেন এবং স্বল্প কথায় সবকিছু সারলেন। তবে, পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন শহিদ আফ্রিদিকে বেশ খোশ মেজাজে থাকতে দেখা গেল। দেখে মনে হচ্ছিল প্রেশার কুকার্যের মত ভীষণ চাপকে তিনি বরং উপভোগই করছেন। একজন সাংবাদিক যখন তাকে জিজ্ঞাসা করল কেন পাক দল অনুশীলন করছে না, তখন মজা করতেও ছাড়লেন না! ’কেন, আপনাদের পছন্দ হচ্ছে না?’ হেসে উলটো প্রশ্ন করলেন।
পুরো সাংবাদিক সম্মেলনে আফ্রিদি অনেকটা কূটনীতিবিদের মতই কথা বলল। ‘আমি মনে করি এটা দুই দেশের জন্যই দারুণ একটি ব্যাপার যে আমাদের শীর্ষ রাজনীতিবিদগণ একসাথে মিলিত হচ্ছেন। খেলাধুলা, বিশেষ করে ক্রিকেট আমাদের দুই দেশকে সবসময়ই এক সূত্রে গাঁথতে পারে।’
ভারতীয় অল রাউন্ডার যুবরাজ সিং সবকিছু উপরওয়ালার হাতে ছেড়ে দিল। ‘আমরা আমাদের সাধ্যমত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি, বাকিটা ঈশ্বরের হাতে। এটা আর পাঁচটা সাধারণ ম্যাচের মত নয়। আপনারা চান আমরা জিতি, পুরো দেশের মানুষ চায় আমরা যেন জিতি।’
ফিক্সারদের কী অবস্থা?
নিশ্চিতভাবে তারা এই খেলার ধারে কাছেও ঘেঁষার সাহস পাবে না। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক দৃঢ়কন্ঠে বললেন, ‘আমি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছি যাতে এই খেলায় কোন প্রকার ঝামেলা না হয়। আমি কিন্তু খেলার উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখব। সামান্যতম কিছু সন্দেহ হলেই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। অবশ্য হুঁশিয়ারির পাশাপাশি দলকে কিছুটা পরামর্শও দিলেন। তোমরা বেশি করে প্র্যাকটিস করবে, তবে খেলার আগের দিন তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বে এবং সকালে ঠিক সময়ে উঠবে। খেলায় নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেবে। ভারত-পাকিস্তানের এই ম্যাচ ঘিরে ভীষণ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ক্রিকেটারদের সবাই অত্যন্ত ভালবাসে এবং আপামর জনগণের বিশ্বাস আছে তারা এই ম্যাচ জিতে নেবে। আশা করছি আমাদের দল পুরো দেশের মানুষকে হতাশ করবে না।’
বুকমেকারদের কী অবস্থা?
দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়া দিল্লীর এক বুকমেকারের উদ্ধৃতি দিয়ে খবর ছাপাল- ভারত এই ম্যাচে ফেভারিট এবং মানুষ মোটা অংকের টাকা মেন ইন ব্লু’র পক্ষে বাজি ধরছে। ভারতের পক্ষে প্রতি রুপির বিনিময়ে (জিতলে) লোকে পাবে ৬০ পয়সা। ওদিকে পাকিদের জন্য এই দর ১.৫৫। যেহেতু ওয়ার্ল্ড কাপের কোন ম্যাচে ভারত কখনোই পাকিস্তানের কাছে হারে নি, তাই বাজির দর পাকিদের জন্য বেশি।
খবরটির অনলাইন সংস্করণের নিচে ন্যাথান নামে ব্যাঙ্গালোর শহরের একজন এই কমেন্টটি লিখেছে- ‘এসব খেলা দেখে সময় ও টাকা নষ্ট করার কোন মানে হয় না। এর চেয়ে আমাদের যা করা উচিত তা হল আমরা বুকিদের স্ক্রিপ্ট লিখতে অনুরোধ করতে পারি যাতে সেই স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী খেলোয়াড়গণ অভিনয় করতে পারে…!’
যাই হোক, আশাবাদী বা নিরাশাবাদী, ভারতীয় বা পাকিস্তানি, হিন্দু বা মুসলমান, দেশপ্রেমী বা নিরপেক্ষ- যে যাই হোক কেন- এই ম্যাচ না দেখার কথা কেউ ভাবতেই পারছিল না। এ যেন এক অমোঘ আকর্ষণ! জানা গেল কমপক্ষে একশো কোটি মানুষ এক যোগে এই খেলা টেলিভিশনের পর্দায় উপভোগ করবে, যা ক্রিকেট দুনিয়ার নতুন রেকর্ড হতে চলেছে।
নিরপেক্ষ ক্রিকেট দর্শকদের জন্যও দারুণ রোমাঞ্চকর একটি ম্যাচ দেখার সুযোগ তৈরি হল। ভারতীয় দলে রয়েছে লিটল মাস্টার বলে খ্যাত ব্যাটিং জিনিয়াস শচিন টেন্ডুলকার, বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান বীরেন্দর শেহবাগ, যিনি নিজের দিনে একাই প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে পারেন। আরও রয়েছে স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিং, যিনি কিছুদিন আগেই টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ম্যাচে স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারেই ছয় ছক্কা হাঁকিয়েছেন! বিপক্ষ দল পাকিস্তান, যারা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে বল হাতে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। প্রতি উইকেটের জন্য তারা গড়ে রান দিয়েছে মাত্র ১৯.৯৫! যেখানে ভারতীয় বোলারদের গড় ছিল ২৯.১৪! পাক বোলারদের ওভার প্রতি রান দেয়ার গড়ও ছিল ভারতীয় বোলারদের চেয়ে শ্রেয়তর। অপরদিকে ভারতীয় ব্যাটসম্যানের গড় রান পাক ব্যাটসম্যানদের চেয়ে ছয়েরও বেশি। অর্থাৎ, সেমিফাইনালটি আক্ষরিক অর্থেই ব্যাট-বলের লড়াই হয়ে উঠল!
ওদিকে বাজির মার্কেটেও ধুম লেগে গেল। নিজের মাটিতে খেলার সুবিধে এবং ভারতে অনুষ্ঠিত ২৬ টি পাক-ভারত দ্বৈরথের মধ্যে ১৭টি জেতার কারণে স্বাভাবিকভাবেই সবার দৃষ্টিতে ভারতই ফেভারিট ছিল। বেটিং প্রিভিউতে আমি লিখেছিলাম-এসব পরিসংখ্যানের চেয়ে সবচেয়ে জরুরী ব্যাপার হল ম্যাচ চলাকালীন স্নায়ুচাপ সামলে রাখা এবং টস জয়। পুরো লেখার সারমর্ম অনেকটা এমন ছিল-
দারুণ ব্যাটিং উইকেট হবার কারণে দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইন-আপ সম্পন্ন ভারত দল (১.৬২ বা ৫-৮) বাজির দরে পাকিদের (২.৫৮ বা ৮.৫) চেয়ে এগিয়ে আছে। তবে, একটু ভাল করে বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় আসলে ভারতীয় দলই বাজির দরে পিছিয়ে থাকার কথা।
শুধু ব্যাটিং গভীরতার কারণে ভারতকে এগিয়ে রাখলে সেটি যৌক্তিক নয়। গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচেও ভারত ব্যাটিং-বান্ধব পিচে শ্রেয়তর ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিততে পারে নি। এবং ২০০৭ সালে তারা এই মোহালিতেই পাকিদের চেয়ে ভাল ব্যাটিং নিয়েও হেরেছিল, ৩২২ রানের পাহাড়সম স্কোর করেও। আসলে, মোহালির মাঠে অনুষ্ঠিত দুই পাক-ভারত ম্যাচেই পাকিরা জিতেছে।
মোদ্দা কথা হচ্ছে বাজির দরে ভুল রয়েছে। আমার হিসেব মতে ভারতের পক্ষে বাজির দর হওয়া উচিত ১.৭৫। এক জহির খান ছাড়া বল হাতে পাকিদের ভড়কে দেয়ার মত কেউ নেই। তাছাড়া ম্যাচে টসের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এ পর্যন্ত এই মাঠে অনুষ্ঠিত ১৫ টি দিবা-রাত্রির ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৫ বার পরে ব্যাট করা দল জিতেছে। ফলে, হিসেব অনুযায়ী পাকিস্তান দল বাজির দরে এগিয়ে থাকার কথা।
পাকিদের পক্ষে বাজি ধরার ব্যাপারটি আরেকভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, গোল্ডেন রুল অব বেটিং এর মাধ্যমে। সেটি হল-বাজির দর সঠিক না হলে সেখানে বাজি ধরা উচিত নয়। এই ম্যাচের ক্ষেত্রে ঠিক সেটিই হয়েছিল। আগে ব্যাট করলে যদি সুবিধে পাওয়া যায়, তখন দুই দলের বাজির দর কাছাকাছি হওয়া উচিত। কারণ টসে যে কোন দলের জেতার সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি। অবশ্য, বাজির দর ঠিক করার ক্ষেত্রে হিসেবের এসব মারপ্যাঁচ সব সময়ই যে মানা হয় তাও নয়।
(চলবে)
- তিনি যথার্থই তা বলেছিলেন।
এই ম্যাচটিকে ঘিরে অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল সত্যই বিস্ময়কর!