শহীদলিপির ইতিহাস-৫

শহীদলিপির ইতিহাস-১
শহীদলিপির ইতিহাস-২
শহীদলিপির ইতিহাস-৩
শহীদলিপির ইতিহাস-৪

আগে ঠিক করা হয়েছিল এক বছর বিলাতে থেকে আমরা দেখবো আমাদের ছেলে সাঈদের কিছু উন্নতি হচ্ছে কিনা। ঠিক বুঝতে পারছিলাম না উন্নতি তেমন কিছু হচ্ছে কিনা। এক বছরের বেশী থাকতে চাইলে বেক্সিমকো রাজী হবে কিনা বুঝতে পারছিলাম না, যদিও আমি বেক্সিমকোর জন্মলগ্ন থেকে ১৪ বছরের বেশী সেখানে কাজ করে যাচ্ছি। আমি যখন যোগ দিয়েছিলাম তখন আমরা মাত্র ৩ জন কর্মচারী ছিলাম, আর সেই সংখ্যা বেড়ে এখন কর্মচারীর সংখ্যা কয়েক হাজার। ফলে ইচ্ছা থাকলেও আগের মত সবার সুখ সুবিধা দেখা হয়তো কোম্পানীর পক্ষে সম্ভব হবে না। তবে যখন আমার ইচ্ছাটা প্রকাশ করলাম, তখন দেখলাম সবাই সহানুভুতির সাথে আমার কথা শুনলো এবং চিন্তা করতে লাগলো কি ভাবে আমাকে সাহায্য করা যায় তার পথ খুঁজতে। তখন আমার এক বছর বিলাতে থাকতে প্রায় ১৫ হাজার পাউন্ডের মতন খরচ হতো।

খবর পাওয়া গেলো লন্ডনের এক বাংলাদেশী ব্যক্তি ও তার সুইডিশ মহিলা পার্টনার মিলে একটি কম্পুউটার পার্টসের দোকান চালাতো, সেটা তারা বিক্রি করার কথা ভাবছে। বেক্সিমকোর সালমান রহমান তখন এক কাজে লন্ডনে। তাকে নিয়ে দেখতে গেলাম দোকানটি। উদ্দেশ্য যদি পচ্ছন্দ হয়, তবে বেক্সিমকো থেকে কিছু টাকা ধার করে দোকানটি কিনে নিয়ে আমি চালাবো। মোটামুটি পচ্ছন্দ হলো। ঠিক হলো তাদের আয় ব্যায়ের হিসাবের কাগজ পত্র আমাদেরকে পাঠিয়ে দেবে দোকানের মূল্য নির্ধারণ করার জন্যে।

এর মধ্যে বেক্সিমকোর আমেরিকা অফিস খোঁজ পেলো যে UNDP বাংলা ওয়ার্ড প্রসেসর কেনার জন্য বাংলাদেশী এক প্রতিষ্ঠানের জন্য কিছু টাকা মঞ্জুরী দিয়েছে, কিন্তু উপযুক্ত সফটওয়ারের অভাবে টাকাটা পরে আছে। আমরা শহীদলিপির বৃতান্ত দিয়ে লন্ডন অফিসের মাধ্যমে সেখানে আমাদের অফার পাঠালাম। প্রতিষ্ঠানটি ছিলো জাতীয় গণ-মাধ্যম ইনস্টিটিউট। তারা আমাদের প্রস্তাব লুফে নিলো। ঐ প্রতিষ্ঠানের তখন প্রধান ছিলেন জনাব জামিল চৌধুরী। বাংলাদেশের জন্মের পর তিনি বাংলাদেশ টিভির প্রধান হিসাবে অনেক কাজ করেছিলেন। এক নিবেদিত প্রাণ বাংলা প্রেমিক ছিলেন তিনি। তিনি আমাকে সরাসরি একটি চিঠি পাঠিয়ে জানতে চাইলেন তার প্রতিষ্ঠানের হয়ে কিছুদিন কাজ করতে আমি রাজী আছি কিনা। আমি তাকে জানালাম, আমার মনে হয় না যে একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আমার উপযুক্ত সম্মানী দেওয়া সম্ভব হবে (কম বয়সের উন্নাসিকতা)।

পরে চিন্তা করে দেখলাম – এ ভাবে না লিখলেই পারতাম। ঐ মুহূর্তে আমার ঢাকায় যাবার কোন ইচ্ছা ছিলো না এবং UNDP-র টাকায় আমার আরো এক বছর বিলাতে থাকার ব্যবস্থা হওয়ায় আমার চিন্তা-ভাবনা অন্য খাতে ছিলো। আসলে তারা চাইছিলেন যে তারা যেন ঠিক মতো শহীদলিপি ব্যবহার করতে পারেন। আমার কাছে হয়তো শহীদলিপি ব্যবহার করাটা খুব সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু যারা কখনো কোনই কম্পুউটার ব্যবহার করেনি তাদের পক্ষে ইদুরে ক্লিক করাও যে একটি বিরাট ব্যাপার হতে পারে সেটা আমি আগে চিন্তা করিনি।

আমি ঠিক করলাম, যতটা সম্ভব সহজ করে এবং বিস্তারিত ভাবে একটি ম্যানুয়াল লিখবো। যাতে এই ম্যানুয়ালের সাহায্যে যে কেউ সহজেই শহীদলিপি ব্যবহার করতে পারে। বেশ খেটে এবং মাস খানেক সময় ব্যয় করে কম্পুউটারে শহীদলিপি ব্যবহার করেই ম্যানুয়াল লিখলাম। নতুন রিবন কিনে এনে আমার ডট-মেট্রিক্স ইমেজরাইটার প্রিন্টারে লাগালাম। তারপর এক পাতা এক পাতা করে সম্পূর্ণ ম্যানুয়ালের এক শতের বেশী পৃষ্ঠা প্রিন্ট করলাম। উত্তর লন্ডনে আমাদের বাড়ী থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরে একটি ছোট অফসেট প্রিন্টিংয়ের দোকান খুঁজে বের করে আমার প্রিন্ট করা মাস্টার কপি গুলি সেখানে নিয়ে গেলাম। আমার ম্যানুয়াল সম্পূর্ণ বাংলায় লেখা, এমনকি পৃষ্ঠা সংখ্যাগুলি ও বাংলাতে। দোকানের লোকদের বললাম, ঠিক যেভাবে পাতাগুলি সাজানো আছে, সেই ভাবেই যেন প্রিন্ট করে। তারা বললো কোন অসুবিধা হবে না এবং দু’দিন পরে এসে ৫০ কপি ছাপানো বই নিয়ে যেতে।

বাড়ীতে ফিরে চিন্তায় থাকলাম। আমার চিন্তা হলো পৃষ্ঠা গুলি ওলোট পালোট না হয়ে যায়। যেহেতু পৃষ্ঠা সংখ্যা বাংলাতে লেখা, ওলোট পালোট হয়ে গেলে তাদের পক্ষে ঠিক করা সম্ভব হবেনা। খুবই অবাক হলাম যখন দেখলাম খুব সুন্দর বই ছাপা হয়েছে। হয়তো এটাই প্রথম বাংলায় কম্পুউটারে কম্পোজ করে অফসেটে প্রিন্ট করা বই।

শহীদলিপির ম্যানুয়াল

শহীদলিপির সাথে ৩টি কম্পুউটার দেবার কথা ছিল আমাদের অর্ডারে। প্রথমে ভেবেছিলাম কী-টপসের উপরে কাগজে হাতে লেখা বা কম্পুউটারে প্রিন্ট করা বাংলা অক্ষর স্টিকার টেপ দিয়ে লাগিয়ে দেবো। পরে ঠিক করলাম আরো ভাল ভাবে প্রফেশনাল বাংলা কী-বোর্ড বানাতে চেষ্টা করবো। ইংরেজী অক্ষর গুলি মুছে সেখানে স্ক্রীন প্রিন্টিং করে বাংলা অক্ষর বসাবো – ভাবছিলাম। আমার ম্যাকের কী-বোর্ড থেকে কয়েকটি কী-টপস স্ক্রু-ড্রাইভারের সাহায্যে একটু চাড় দিয়ে হাত দিয়ে টেনে খুলে ফেললাম। ইংরেজী অক্ষর মুছতে যেয়ে দেখলাম কাজটি সহজ নয় বা সম্ভব নয়। কী-টপসের উপরে অক্ষর গুলি এমবস করে প্রিন্ট করা।

আমেরিকার এ্যাপেল কম্পুউটার কোম্পানীকে অনুরোধ করলাম আমাকে কিছু ব্লাঙ্ক কী-টপস পাঠাবার জন্যে। এ্যাপেল কম্পুউটার ডজন খানেক ব্লাঙ্ক কী-টপস পাঠিয়ে দিল কোন পয়সা ছাড়া। খেয়াল করে দেখলাম কী-বোর্ডে অবস্থানের উপরে ভিত্তি করে বেশ কয়েক ধরণের কী-টপস আছে। একটা একটা করে ভাগ করলাম কী-টপস গুলি । তারপর কম্পুউটার থেকে প্রিন্ট করলাম বাংলা অক্ষর গুলি। কী-টপসের উপরে রাখলাম ৪টি বাংলা অক্ষর। মূল অক্ষরটি আকারে বড় এবং বাকী ৩টি অক্ষর একটু ছোট আকারে। এছাড়াও কী-টপসের সামনের সাইডে ইংরেজী অক্ষরটি বসালাম। ফলে একটি কী-টপসে ৫টি অক্ষরের ছবি থাকলো।

শহর ছাড়িয়ে বেশ কিছু দূরে খুজে বের করলাম একটি ছোট স্ক্রীন প্রিন্টিং-এর দোকান যে আমার নির্দেশ অনুসারে কাজ করতে রাজী হলো। আলাদা আলাদা প্যাকেট করে নিয়ে গেলাম কী-টপস গুলি। আর সাথে নিলাম বাংলা অক্ষর প্রিন্ট করা মাস্টার কপির কাগজ। ভালো ভাবে বুঝিয়ে দিলাম কি করতে হবে। লোক গুলো যদিও মাথা নেড়ে সায় দিচ্ছিলো যখন আমি বুঝাচ্ছিলাম – আমার যতেষ্ট সন্দেহ ছিলো ঠিক মত বুঝলো কিনা। তারা যেহেতু বাংলা পড়তে পারে না , বাংলা অক্ষরের কোন দিকটা উপর এবং কোন দিকটা নীচে কি ভাবে ঠিক করবে তারা? বুঝালাম ‘মাত্রা’ থাকে অক্ষরের উপরে আর একটু বড় করে লেখা মুল আক্ষরটি কী-টপসের নীচে বা’দিকে বসবো।

খুব ভালো লাগলো যখন পরের দিন যেয়ে দেখলাম একটিও কী-টপস নষ্ট না করে খুব সুন্দর ভাবে অক্ষর গুলি স্ক্রীন প্রিন্ট করে ছাপিয়েছে তারা। নীচের সাইডে প্রিন্ট করা ইংরেজী অক্ষরগুলিও সহজে দেখা যাচ্ছে। এই প্রথম কোন কম্পুউটার কী-বোর্ড সম্পূর্ণ বাংলায় তৈরী করা হলো আমার জানা মতে।

ঢাকাতে যখন এগুলি পৌঁছালো, দেখে খুশী হলো সবাই। অতিরিক্ত কয়েক কপি ম্যানুয়াল ও বিবিসি ইন্টারভিউয়ের ক্যাসেটের কপিও পাঠালাম। আমাদের ইচ্ছা ছিলো এ্যাপেল কম্পুউটারের বাংলাদেশের ডিলারশিপ নিয়ে আমরা তার সাথে শহীদলিপি কোন বিশেষ কপি প্রটেকশনের ব্যবস্থা ছাড়াই বিক্রি করবো।

যদিও আমি ম্যানুয়ালের শুরুতে সতর্কবানী হিসাবে লিখে দিয়েছিলামঃ “বিনা অনুমতিতে শহীদলিপির নকল বন্ধ করার জন্যে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে অন্য বর্তনীতে শহীদলিপির প্রোগ্রামগুলির প্রতিলিপি ধারণ করা সম্ভব হবে না। এছাড়াও প্রতিটি মূল বর্তনীতে গ্রাহকের নাম ধরে রাখা হয়েছে। এজন্যে মুল বর্তনীর যথাযথ সংরক্ষণের দায়িত্ব গ্রাহকের।” আসলে তেমন কোন ব্যবস্থা আমি তখনো নিই নাই।

এ্যাপেল কম্পুউটার তখন প্রতি দিনই সাড়া পৃথিবীব্যাপী তাদের ব্যবসা বাড়িয়ে চলেছে। আমরা খোঁজ করে জানলাম, আমেরিকার বদলে তাদের সিঙ্গাপুর অফিস তখন বাংলাদেশের ডিস্ট্রিবিউটার হিসাবে কাজ করছে। সালমান রহমান সিঙ্গাপুর যেয়ে এ্যাপেলের ডিস্ট্রিবিউটারের সাথে দেখা আমাদের কাজের বিবরণ তাদেরকে জানালো এবং শহীদলিপির ম্যানুয়াল দেখালো। তারা খুব ইম্প্রেসড হলো এই সব দেখে ও শুনে। তারা জানালো যে যতদূর তারা জানে – অনেক দেশে বিভিন্ন ফন্ট নিয়ে কাজ হলেও সম্পূর্ণ অপারেটিং সিসটেম স্থানীয় ভাষায় রূপান্তরিত তখনো কেউ করেনি বা স্থানীয় ভাষায় ম্যানুয়াল লিখে ছাপায়নি। তবে খারাপ খবর হলো – খুবই সম্প্রতি এক ভারতীয় কোম্পানীকে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, ইত্যাদি দেশের ডিস্ট্রিবিউটারসিপ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে কয়েকটি ভারতীয় কোম্পানীর সাথে কাজ করে আমাদের খুব একটা ভালো অভিজ্ঞতা হয়নি। ফলে সালমান তার উৎসাহ হারিয়ে ফেললো। এ্যাপেল কম্পুউটারর্সকে বাংলাদেশের জন্যে ডিলারসিপ চেয়ে আমি যে চিঠি লিখেছিলাম সেটি তারা সেই ভারতীয় কোম্পানীকে পাঠিয়ে দিয়েছিলো । সেই ভারতীয় কোম্পানীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমাকে চিঠি দিয়ে জানালো যে, যদি আমি নিজে বাংলাদেশে ফিরে যেয়ে আমাদের কোম্পানীর ভার গ্রহণ করি তবে তারা আমাদেরকে বাংলাদেশের জন্যে ডিলার নিয়োগ করার কথা চিন্তা করবে । এবার আমিও উৎসাহ হারিয়ে ফেললাম।

টাইপ সেটিং-এর কাজে তখনকার দিনে লাইনোটাইপ ও মনোটাইপ নামে দু’টি কোম্পানী প্রায় এক চেটিয়া বাজার দখল করে ছিলো। আমি মনোটাইপের সাথে যোগাযোগ করে আমার কাজের কথা বললাম। তারা যেতে বললো তাদের অফিসে। লন্ডন থেকে খুব বেশী দূরে ছিলো না তাদের অফিস। আমি গাড়ী চালিয়ে গেলাম সেখানে। আগ্রহ ভরে দেখলো শহীদলিপির ফন্টগুলি। তারপর টেস্ট করে দেখতে চাইলো তাদের নিজস্ব পোস্টস্ক্রিপ্ট প্রিন্টারে লেখা কেমন হয় দেখতে। ফ্যাক্টরির ভিতরে তাদের মেসিন। আমাকে অফিসে বসিয়ে রেখে শুধু শহীদলিপির ডিস্কটি ভিতরে নিয়ে গেলো। পরে অনুমান করলাম, এই সুযোগে হয়তো ডিস্কটার একটি কপি করে রাখলো। তবে এ নিয়ে খুব বেশী মাথা ঘামালাম না আমি। মনোটাইপের মতো কোম্পানী যে আগ্রহ ভরে আমার কাজ দেখলো তাতেই খুশী আমি।

লন্ডনে আমাদের জীবন মোটামুটি ভালই কাটছিলো। সাময়িক ভাবে ব্যবহার করার জন্যে কোম্পানী থেকে একটা গাড়ী পেয়েছিলাম। প্রায় প্রতি সপ্তাহান্তে আমরা বিলাতের বিভিন্ন স্থানে গাড়ী করে বেড়াতে যেতাম। অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, লিভারপুল, স্টাফোর্ড-অন-এভন, ল্যান্ডস এন্ড, ডোভার, প্রভৃতি জায়গায় যেতাম আমরা। মারিয়ার বয়স তখনও দুই বছর হয়নি। তার বেড়ে ওঠা দেখতে ভাল লাগতো। বেশ দুষ্টুও ছিলো। সে যাতে হামাগুড়ি দিয়ে লিভিং রুম থেকে রান্না ঘরে চলে না আসে তার জন্যে আমি লিভিং রুম ও রান্না ঘরের মধ্যে পার্টিশন দিয়ে রেখেছিলাম। এক দিন দেখি সে সেই পার্টিশনের নীচের সামান্য ফাঁক দিয়ে মাথা ঢুকিয়ে দিয়ে আটকে গেছে। পার্টিশন খুলে তাকে বের করতে হলো। শপিং সেন্টারে গেলে তার মা যখন সাঈদকে স্ট্রলারে ঠেলে দোকানে দোকানে ঘুরতো, তখন মারিয়াকে সামলাতাম আমি। সে তখন নতুন হাটতে শিখেছে। তাকে এক জায়গায় রাখা যেতো না। তাকে একটা বড় স্ট্রাপে বেধে স্ট্রাপের ফিতাটা হাতে ধরে রাখতাম। তার একটা মজার খেলা ছিলো শপিং সেন্টারের এসকেলেটরে চড়ে একবার উপরে উঠতো আবার পাশের এসকেলেটরে চড়ে নেমে আসতো। আর আমিও হাতে স্ট্রাপ ধরে তার পিছু পিছু উঠতে আর নামতে বাধ্য হতাম।

আমাদের বাড়ীতে এক মাত্র সাঈদের ছিল নিয়ম বাধা জীবন। সপ্তাহের ৫ দিন সকালের নাস্তা খাবার পর স্পেশাল স্কুলের গাড়ীতে চড়ে তার স্কুলে যেত সে। তাকে গাড়ীতে উঠিয়ে দেওয়া এবং স্কুল শেষে গাড়ী থেকে নামিয়ে আনা ছিলো আমার কাজ। তার বয়স যাই হোক, সে ছিলো আমাদের নান্না-মুন্না। তাকে মুখে তুলে খাওয়ানা থেকে শুরু করে তার সব কাজ আমাদেরই করতে হতো। কিছুটা উন্নতি হলেও বাকী জীবন আমাদেরকে এভাবেই তার সব কাজ করে দিতে হবে – এই ছিলো ডাক্তারদের ধারনা। মানতে কষ্ট হলেও মেনে নিতে বাধ্য হলাম এই নিষ্ঠুর সত্য। ঠিক করলাম দেশে ফিরতে।

(চলবে …)

শহীদলিপির ইতিহাস-৬

২,৯৪৮ বার দেখা হয়েছে

২১ টি মন্তব্য : “শহীদলিপির ইতিহাস-৫”

  1. রুম্মান (১৯৯৩-৯৯)

    :salute: :salute: :salute:
    আমি এমন ক্যান ? কুনো যোগ্যতাই তো আমার নাই ।
    আর একটা মানুষ এক জীবনে এত কিছু করে কিভাবে ?


    আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
    ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
    ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
    সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
    ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
    আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।

    জবাব দিন
  2. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ভাইয়া আপনি প্রথম যেদিন কম্পুতে বাংলায় টাইপ করে মাকে চিঠি লিখেছেন সেইদিনটা প্রাতিস্টানিক ভাবে উৎযাপন করা যায় কিনা ভাবছিলাম।

    এ ব্যাপারে সবার মতামতও প্রয়োজন। মানে ধরনটা কি রকম হবে। হয়তো এখন এত বড় স্কেলে হবে না, আমরা সিসিবিরাই উৎযাপন শুরু করলাম, এর পরে নিশ্চয়ই এটা ছড়িয়ে যাবে।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  3. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    কত বছর আগে এতো এতো কিছু হয়েছিলো বাংলাকে কম্পিউটারে নিয়ে আসার জন্য - বরাবরের মতো বেশ রোমাঞ্ছকর লেখা।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।