শহীদলিপির ইতিহাস-২
শহীদলিপির ইতিহাস-৩
শহীদলিপির ইতিহাস-৪
শহীদলিপির ইতিহাস-৫
এক বছরের জায়গায়, দুই বছর পর বিদেশ থেকে দেশে ফিরলাম। দেশে ফেরার পরে বেক্সিমকো কম্পুউটার্স-এর ম্যানেজিং ডিরেকটরের দায়িত্বভার গ্রহন করলাম। ধানমন্ডী ২৮ (পুরানো) নং রোডে বেশ বড় একটি দোতলা বাড়ীতে আমাদের অফিস ছিল তখন। আমি নতুন একটা ‘R&D’ বিভাগ খুললাম কোম্পানীতে।
রাবা কনটেল নামের এক ভারতীয় কোম্পানী তখন বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, ইতাদি দেশের এ্যাপেলের পরিবেশক নিযুক্ত হয়েছে। আমি লন্ডনে থাকতেই তাদের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম, যাতে তারা বেক্সিমকোকে তাদের ডিলার নিযুক্ত করে। তখন তাদের এম ডি আমাকে জানিয়েছিল যে, যদি আমি বাংলাদেশে ফিরে যেয়ে এই কোম্পানীর হাল ধরি তবে আমাদেরকে ডিলার নিয়োগ করতে আপত্তি হবে না তার। এটা বছর খানেক আগের কথা। ঐ মুহূর্তে তখন দেশে ফেরার পরিকল্পনা ছিল না।
দেশে ফিরে এসে আবার তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করলাম। একাই দিল্লীতে গেলাম তাদের সাথে দেখা করতে। আমার সিনিয়ার ফৌজিয়ান, খালিদ আমিরুল ভাই, তখন দিল্লীতে বাংলাদেশ দূতাবাসে উচ্চ পদে ছিলেন। তাকে বললাম ঘন্টা খানেক পরে আমাকে রাবা কন্টেলের অফিসে ফোন করতে। ততক্ষণে আমি আমার দিনের প্রোগ্রাম জেনে যাবো এবং ঠিক করতে পারবো কখন তার সাথে দেখা করতে পারবো। যথা রীতি ফোন এলো, আমি তখন তাদের এমডির অফিসে। তারা জানলো দূতাবাসের সাথে আমার ঘনিষ্ট সম্পর্কের কথা। সাথে করে ফটো এলবাম নিয়ে গিয়েছিলাম। এতে ছিলো বেক্সিমকো কম্পুউটার্স অফিসের ছবি ও বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত কর্মচারীদের বিভিন্ন ছবি। আবাহনীর মাঠে ইন্টার-কোম্পানী ক্রিকেট ম্যাচ খেলছি – তার ছবিও ছিলো। ডিলারশিপ পেতে অসুবিধা হলো না।
এদিকে আমাদেরকে ডিলার নিয়োগ করার আগে থেকেই জনাব আশিকুর রহমানের (এক্স-সি এস পি অফিসার এবং বর্তমান এম পি) কোম্পানীকে ডিলার নিয়োগ করেছিলো রাবা কন্টেল। অবশ্য এই ব্যবসায়ে তেমন সুবিধা করতে পারছিলো না তার কোম্পানী। আমি আশিক ভাইকে চিনতাম। সোনারগাঁয়ে খাওয়াতে নিয়ে গিয়ে তার কোম্পানী কিনে নেবার প্রস্তাব দিলাম আমি। তিনি রাজী হলেন এবং তার একাউন্টের কাগজ পত্র পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু ভারতীয় কোম্পানী বাদ সাধলো যখন তাদেরকে আমার পরিকল্পনার কথা জানালাম ।
আমার চিন্তাধারা ছিল এরূপ – বাংলাদেশে তখন কপিরাইট আইন তেমন কার্যকর নয় এবং বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক কারনে সাধারণ মানুষ, সফট-ওয়ার, যা হাতে ছোয়া যায় না বা চোখে দেখা যায় না, কেনার জন্যে টাকা খরচের ব্যাপারে আগ্রহী ছিল কম। এছাড়া যেহেতু শহীদলিপি তখন শুধু এ্যাপেল কম্পুউটারে চলে, তাই যদি এ্যাপেলের একমাত্র ডিলার বা পরিবেশক হতে পারি, তা হলে সফট-ওয়ারের জন্যে আলাদা কোন চার্জ না করেই হার্ড-ওয়ার বিক্রি করে আমরা সফট-ওয়ারের খরচ উঠিয়ে নিতে পারবো। তবে আরো একটি ডিলার থাকায় আমার পরিকল্পনাটা বাধাগ্রস্থ হচ্ছিল। আমি চাইছিলাম, আমরা যেমন IBM-এর এক মাত্র পরিবেশক, তেমনি সম্পর্ক এ্যাপেলের সাথে করতে।
সালমান প্রস্তাব দিলো শহীদলিপিকে সরকারী স্টান্ডার্ড হিসাবে গন্য করাতে। তখনকার বাংলাদেশে আমরা চেষ্টা করলে হয়তো এটা করা সম্ভব হতো। কিন্তু আমি প্রস্তাবে বাধা দিলাম। আমার বাধা দেবার মূল কারণ ছিলো তখনো প্রমিত বাংলা সৃষ্টির ব্যাপারে বেশ কাজ বাকী। সবে ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম গঠন হয়েছে বড় বড় কিছু কম্পুউটার কোম্পানীকে নিয়ে। আই,বি,এম-এর সাজ্জাদ ভাই (আমার সিনিয়ার প্রকৌশলী এবং শেরে বাংলা হলে থাকার সময় আমরা একই ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম) আমার সাথে দেখা করে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের সাথে সহযোগিতা করার কথা বললেন। আমার আপত্তি ছিলো না। তবে তখন কাজ চলছিলো খুব ধীর গতিতে। বিশেষ করে বাংলাদেশে প্রমিত বাংলা সৃষ্টির ব্যাপারে কাজ খুব একটা এগোচ্ছিলো না বিশেষ বিশেষ ভাষা বিশেষজ্ঞের কিছুটা গোড়ামী ও কিছুটা অজ্ঞতার কারনে।
২৫ বছর পরেও বর্তমান অবস্থা দেখে মাঝে মাঝে মনে হয় তখন সালমানের প্রস্তাব মেনে নিলেই বরং ভাল হতো।
আমরা প্রথম থেকেই আই,বি,এম কম্পুউটারের এক মাত্র পরিবেশক বাংলাদেশে। আই,বি,এম খুব একটা ভাল চোখে দেখছিল না আমাদের সাথে এ্যাপেলের সম্পর্কটা। তারা তখন PS2 নামে নতুন একটি কম্পুউটার বাজারজাত করার চেষ্টা করছে। খুব ঘনঘটা করে এই কম্পুউটারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হলো ব্যাংককে। আমি যোগ দিলাম সেই অনুষ্ঠানে। OS2 নামে একটি নতুন অপারেটিং সিসটেম ব্যবহার করলো IBM এই কম্পুউটারে। ব্যাংককে যে কটা দিন ছিলাম, নাড়াচড়া করে দেখলাম কম্পুউটারটি। কেন জানি না, খুব উৎসাহিত হতে পারলাম না। ঢাকা ফিরে আমার বস, সোহেল রহমানকে জানালাম :
– আমার মনে হয় না তেমন সুবিধা করতে পারবে এই কম্পুউটার বাংলাদেশে।
– সেটা কি করে বলতে পারেন। আপনি কি মনে করেন আপনি আই বি এম-এর থেকে বেশী জানেন। – একটু যেন উষ্মা প্রকাশ পেল তার কণ্ঠে।
– তা কি করে বলি, বর্তমানে ৭ জন নোবেল পুরস্কার পাওয়া বিজ্ঞানী কাজ করছে আই বি এম-এ এবং সারা পৃথিবীতে সহস্রাধিক লোক তাদের হয়ে কাজ করছে। তবে আমি আমার বাংলাদেশের অবস্থা বুঝি আর কম্পউটার সম্পর্কে যতটা বুঝি তার থেকে আমার ধারণার কথা বলছি।
পরে দেখা গেল, আমার ধারনাই সঠিক প্রমানিত হলো। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে কোথাও বেশী দিন চললো না এই কম্পুউটার।
যাহোক, এ্যাপেল কম্পুউটারের ডিলারশীপ পাবার পর, সাত মসজিদ রোডে একটা নতুন অফিস নিয়ে এ্যাপেল ডিভিশন খুললাম। সেখানে ডেস্ক-টপ পাবলিশিংয়ের একটি আলাদা ডিপার্টমেন্ট করা হলো। আমি লন্ডনে থাকতে যে কটা লেজার প্রিন্টারের উপযোগী ফন্ট তৈরী করেছিলাম, সেগুলির আরও উন্নতি সাধন করলাম এবং আরও নতুন নতুন কিছু লেজার প্রিন্টারের উপযোগী পোস্টস্ক্রিপ্ট ও ট্রু-টাইপ (TTF) ফন্ট তৈরী করার জন্যে কয়েক জন আর্ট কলেজের শিল্পীকে কি ভাবে ফন্ট তৈরী করতে হয় শিখিয়ে দিয়ে কাজে বসিয়ে দিলাম। ফন্টোগ্রাফার নামক একটি সফটওয়ারের মাধ্যমে নতুন ফন্ট তৈরী করা তখন অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। পরে যারা বাজারে এসেছে তাদের মধ্যে অনেকেই শহীদলিপির তৈরী ফন্ট ফাইল নিয়ে, ফন্টোগ্রাফারের মাধ্যমে সামান্য কিছু পরিবর্তন করে, নিজের তৈরী বলে চালিয়েছে। নীচে শহীদলিপির কিছু ফন্টের নমুনা দিলাম যাতে তোমরাই তুলনা করে দেখতে পারো [ যদিও এই ফন্ট গুলি ইউনিকোডের বদলে ASCII কোডিং করা, তোমরা কেউ চাইলে, আমি ই-মেইল করে পাঠিয়ে দিতে পারি ] :
ওই সময় একটু বেশীই সমাদর পেতে থাকলাম সবার কাছ থেকে। ভালই লাগলো। আমি বিলাতে থাকার সময়ই শুনেছিলাম যে ইত্তেফাক তার প্রথম পাতার সেকেন্ড হেড লাইন হিসাবে ছেপেছিল শহীদলিপির খবর। এবার বাংলাদেশ টিভি থেকে অনুরোধ এলো তাদের একটা বিজ্ঞান সম্পর্কীয় অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ গ্রহনের জন্যে। বাংলাদেশ টিভি তখন ঢাকার একমাত্র টিভি ষ্টেশন। সুতরাং টিভি দেখা মানে বিটিভি দেখা। শুরু করলাম এই বিজ্ঞান ভিত্তিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করা। ৩-৪টি প্রোগ্রামে অংশ গ্রহন করার পর বিটিভির মহম্মদ জাহাঙ্গীর তার এক ইন্টারভিউ প্রোগ্রামে অংশ গ্রহন করার অনুরোধ জানালেন। তার অনুষ্ঠানে, আমার সম্পর্কে আমার সামনেই একটু বেশী প্রশংসা করে ফেললেন। পরে ঠিক করলাম – আর না, এত প্রচার ভাল না। এরপর থেকে টিভিতে আর আত্মপ্রচার মূলক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাইনি।
ঐ সময়ে বাংলাতে যারা বই ছাপাতে চাইতেন তাদের জন্যে দুটি পথ খোলা ছিল। একটি হলো লেটার প্রিন্টিং প্রেসে ছাপানো – এতে লেখার অক্ষরগুলি অতটা ভাল আসতো না এবং কিছুটা মোটা মোটা হত লেখা গুলি (হয়তো একই অক্ষর অনেকবার ব্যবহারের জন্যে)। অন্য পদ্ধতি ছিল অফ-সেট প্রিন্টিং মেসিনে ছাপানো। এই দ্বিতীয় পদ্ধতিতে খরচ হতো অনেক বেশী। সংখ্যায় বেশী সংখ্যক বই না ছাপালে পোষাতো না।
তবে অফ-সেট প্রিন্টিং প্রেসের টাইপ সেটিং মেসিন ব্যবহার না করে, কম্পুউটার কম্পোজ করে ভাল ফন্টে লেজার প্রিন্টারে ছাপিয়ে নিয়ে সেই মাষ্টার কপি থেকে অফ-সেট প্রিন্টিং প্রেসে ছাপালে খরচ বেশ কমে আসতো। ফলে অনেকেই আমাদের ডেস্ক-টপ পাবলিশিং ডিপার্টমেন্টে আসতে লাগলো তাদের বই-এর মাষ্টার কপি কম্পোজ ও প্রিন্ট করিয়ে নিতে। আমার মনে আছে – কবি নির্মলেন্দু গুন, বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী, ইত্যাদিকে দেখেছি আমাদের অফিসে কম্পুউটার অপারেটর ছেলে-মেয়েদের সাথে বসে তাদের টাইপিং-এর কারেকশনগুলি দেখিয়ে দিচ্ছেন। দেখতে দেখতে অনুরূপ অনেক ডেস্ক-টপ পাবলিশিং সেন্টার গড়ে উঠলো – প্রথমে ঢাকা শহরে, তারপর সারা দেশে।
আমি আর একটা পরীক্ষা চালালাম – অফ-সেট প্রিন্টিং প্রেসে একেবারে না যেয়ে, লেজার প্রিন্ট করা পাতা থেকেই বাধাই করে বই বের করলে কেমন হয়। কম সংখ্যক কপি বই বের করতে হলে এতে খরচ কম পরার কথা। শুধু নিশ্চিত ছিলাম না – এই ধরনের বইয়ের লেখা কত দিন টিকে থাকবে, যেহেতু ভিন্ন ধরনের কালি ব্যবহার হয়। পরীক্ষামূলক ভাবে যারা বই প্রকাশ করতে চায়, বা সামান্য কয়েক কপি প্রথমে ছাপিয়ে রিভিউয়ের জন্যে পাঠাতে চায়, অথবা নতুন লেখক যে শুধু সামান্য কয়েক কপি বই ছাপাতে চায় তার প্রিয়জনদের মধ্যে বিলি করার জন্যে – তাদের জনো এটি হবে এক সুবর্ণ সুযোগ। তবে হাতের কাছে কাউকে পেলাম না এমন পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্যে টাকা খরচ করে কম্পিউটারে বই ছাপাতে আগ্রহী।
আমার স্ত্রী, মমতাজ শহীদ, এক জন কবি এবং লেখিকা। এর আগে তার দু’টি কবিতার বই (একটি বাংলা একাডেমী প্রেস এবং অন্যটি লন্ডন থেকে) ছাপানো হয়েছিল। তাকে রাজী করিয়ে তার আর একটি কবিতার বই, ‘সুখের কাছে তুমি’ এভাবে কম্পুউটার কম্পোজ করে হার্ড কভারে বাধিয়ে প্রকাশ করলাম। এটাই বাংলাদেশে সর্ব প্রথম কম্পিউটারে মুদ্রিত বাংলা গ্রন্থ।
List of books by Mamtaz Shahid
বেক্সিমকো কম্পুউটারস-এ তখন আমরা ৬০ জনের বেশী কাজ করি। তখন এটি ছিল বাংলাদেশের সর্ব-বৃহৎ কম্পুউটার কোম্পানী। আমার উদ্দেশ্য ছিল, শুধু দেশের ভিতরে নয়, দেশের বাইরে ও আমরা আমাদের কাজের পরিধি বিস্তার করবো। বিলাতে থাকার সময়ই আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে পৃথিবী জুড়ে এই আই, টি সেকটরে উপযুক্ত দক্ষ জনবলের অনেক অভাব। বাংলাদেশে যদি আমরা নিজেদেরকে উপযুক্ত করে তুলতে পারি, তা হলে সমগ্র পৃথিবী উন্মুক্ত হয়ে যাবে আমাদের জন্যে।
খোঁজ নিয়ে জানলাম যে বুয়েটের কম্পুউটার বিভাগে তখনো আগের দিনের ফোরট্রান ও প্যাসকাল ল্যানগুয়েজ শেখানো হচ্ছে। তাদের এক অনুষ্ঠানে তারা আমাকে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ করেছিল। প্রধান অতিথির ভাষনের সময় আমার স্বভাবজাত স্পষ্ট কথায় বলে এলাম, এখনি যদি এই সব বস্তা পঁচা সিলেবাস পরিবর্তন করে C, C++ জাতীয় অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড ল্যানগুয়েজ এবং নতুন নতুন বিষয়াদি শেখানো আরম্ভ না করা হয়, তবে এই ফ্যাকাল্টিকে আমরা ভবিষ্যতে জ্ঞানপাপী বলে ধারণা করবো। কোন লাভ হলো না। ডিপার্টমেন্ট হেড আমাকে বোঝালেন কতটা দুরূহ এবং সময় সাপেক্ষ তাদের সিলেবাস পরিবর্তনের পদ্ধতি।
আমি নিজেই বেক্সিমকোতে একটি এডুকেশন সেন্টার খুললাম যেখানে কম্পুউটার বিষয়ক পোষ্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা কোর্স শুরু করে দিলাম। কিছু দিন পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে আমাদের নামে কারণ দর্শাবার চিঠি এলো যে আইন বহির্ভূত হওয়ায় কেন ঐ সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে। খুব অবাক হলাম এবং কিছুটা দুঃখও পেলাম মন্ত্রণালয়ের এই চিঠি পেয়ে। ব্যারিষ্টার রফিকুল হকের সাথে আলোচনা করে আমি নিজের বরাতে ঐ চিঠির উত্তর দিলাম। আমি লিখলাম – প্রজাতন্ত্রের শাসনতন্ত্র অনুসারে শিক্ষা পাবার ও দেবার অধিকার সবার আছে। মন্ত্রণালয় যেন আমাকে দয়া করে জানায় শাসনতন্ত্রের কোন আইনের কোন ধারা বলে তারা বলছে যে শিক্ষা দেবার অধিকার আমার নেই। আর কোন জবাব পাইনি আমার চিঠির উত্তরে। প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সনদ বিতরণ উৎসবে শ্রদ্ধেয় প্রফেসর মতিন পাটয়ারী এলেন প্রধান অতিথি হিসাবে (তিনি তখন ICTVTR-এর উপাচার্য)।
আমাদের সফটওয়ার ডিপার্টমেন্টের তৈরী – বেক্সিব্যাংক ও বেক্সিলেজার নামের দুটো সফটওয়ার বেশ বিক্রি হচ্ছিল। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের থেকে বেশ কয়েকটা ম্যাকিনটশ কম্পুউটার এবং তাদের জন্যে বাংলায় একাউটিংয়ের সফটওয়ার তৈরী করতে অর্ডার দিল। উৎসাহের সাথে লেগে গেলাম আমরা এই কাজে। তবে সঠিক উপাত্তের অভাবে হোচট খেয়ে খেয়ে চললো এই প্রোজেক্ট অনেক দিন ধরে।
তখন ডেস্কটপ পাব্লিশিংয়ের বাইরে বাংলা সফটওয়ার তৈরী ও ব্যবহারের সব চাইতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল বাংলার প্রমিত রূপের অভাব। এর ফলে আমরা বাংলা অক্ষরের সর্টিং অর্ডারও ঠিক করতে পারছিলাম না। যে কোন ডাটা-বেসে কাজ করতে গেলে সর্টিং অর্ডারটি ঠিক করা খুবই প্রয়োজন। ততদিনে ডজন খানেক কোম্পানী কম্পুউটার ব্যবসায়ে ভালভাবে নেমে পড়েছে। বিভিন্ন সময়ে সরকারের সাথে দেন-দরবার করার জন্যে আমরা কয়েকটা কোম্পানী এক সাথে হয়ে বাংলাদেশ কম্পুউটার সমিতি নামে একটা প্রতিষ্ঠান গঠন করলাম। এই প্রতিষ্ঠানের একজন ফাউন্ডার সহ-সভাপতি ছিলাম আমি। বেশ কিছু তদবিরের পর শেষ পর্যন্ত ‘কম্পুউটারে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন ও ষ্টান্ডার্ডাইজেশন কমিটি’ নামে একটি কমিটি সরকার থেকে গঠন করা হল। এই কমিটির অর্ধেক সদস্য এলেন দেশের বিভিন্ন কম্পুউটার কোম্পনীতে যারা বাংলা ভাষা নিয়ে কাজ করছে তাদের মধ্যে থেকে, আর বাকী অর্ধেক এলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমী জাতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে, যারা ভাষার উপর বিশেষজ্ঞ। আমিও ছিলাম এই কমিটিতে। দুর্ভাগ্য বসত, এই কমিটির কাজ চললো খুবই ধীর গতীতে। কমিটির সভাতে দেখা যেতো, যারা ভাষাবিদ তারা সময় ব্যয় করছেন তাদের কম্পুউটার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে, অন্য দিকে কিছু কিছু ‘তথা-কথিত টেকীরা’ বাংলা ভাষার উপর তাদের জ্ঞান জাহির করে কালক্ষেপণ করছেন।
আবশ্য ব্যাপারটা এতো সহজও ছিল না। বাংলা ভাষার একটি ঐতিহ্যবান অতীত রয়েছে। এমন কিছু করাটা ঠিক হতো না যাতে করে সেই অতীতের সাথে আমাদের সংযোগ ছিন্ন হয়ে যায় এবং অতীতের লেখা সাহিত্য পড়তে নতুন প্রজন্মের অসুবিধা হয়।
ৎ-বর্ণটি কি ত-বর্গের সাথে গণ্য হবে, নাকি ব্যঞ্জনবর্ণের শেষের দিকে গণ্য হবে? অন্তস্থ-ব বাংলাদেশে আলাদা ভাবে ব্যবহার হয় না। তবে এটাকে কি প-বর্গের ব-এর সাথে এক করে দেখা হবে, না ভাষা থেকে মুছে ফেলতে হবে? বর্ণানুক্রম করার সময় ং ঃ ঁ বর্ণগুলি কি স্বরবর্ণের পরে বসবে না ব্যঞ্জনবর্ণের শেষে? ব্যঞ্জন বর্ণের পরে র-এর যুক্ত রূপকে র-ফলা (যথা ক্র) বলা হয়, আর ব্যঞ্জনবর্ণের পূর্বে র-এর যুক্ত রূপকে রেফ (যথা র্ক) বলা হয়। লেখার সময় কিন্তু আমরা আগে ব্যঞ্জনবর্ণটি লিখি তার পর রেফ চিহ্নটি বসায়। কম্পুউটারে লেখার সময় কি ভাবে লিখবো আমরা? এমনই অনেক প্রশ্নের উত্তর চাচ্ছিলাম আমরা।
এছাড়া রাজনীতির প্রশ্ন ছিল। পশ্চিম-বাংলার বাংলার প্রমিত রূপ অনেকটা হিন্দীকে অনুসরণ করে করা হয়েছে। আমরা কি বৃহত্তর স্বার্থে সেটাই অনুসরণ করবো, না পূর্ব-পাকিস্তানী ভাব ধারা বজায় রাখবো বাংলাদেশে?
যেহেতু তখনও বাংলা ভাষার কোন প্রমিত রূপ স্থির করা হয়নি, বিভিন্ন ডেভেলপাররা তাদের নিজেদের চিন্তা ও যুক্তি অনুসারে বিভিন্ন কী-বোর্ড লে-আউট এবং বিভিন্ন ক্যারেকটার কোডিং ব্যবহার শুরু করে দিল। আমার ইচ্ছা ছিলো কিছু ডাটাবেসের কাজ করার এবং বাংলা স্পেল চেকার জাতীয় কিছু টুলস তৈরী করার। তবে আমি তখন প্রমিত রূপ ঠিক হবার আশায় আপাততঃ অপেক্ষা করতে মনস্ত করলাম।
আজ প্রায় ২৫ বছর পরে, আমি এখনো জানি না আমার সেই অপেক্ষার দিন সত্যিকার ভাবে শেষ হয়েছে কিনা।
গোল 🙂
"আমার বাধা দেবার মূল কারণ ছিলো তখনো প্রমিত বাংলা সৃষ্টির ব্যাপারে বেশ কাজ বাকী।"
- ভাইয়া মোস্তফা জব্বার নামের একটা ঘৃণ্য ভাষা ব্যবসায়ী'র নাম শুনেছেন ??? আপনি আপনার টিম এবং পরিচিতজনদের নিয়ে প্রমিত করার চেষ্টা করছিলেন আর ওদিকে সেই ****-টা পুরো প্রসেসটাকেই পেটেন্ট করিয়ে নিয়েছে। আপনার ফন্টগুলির সাথে বিজয়ের অনেক ফন্টের মিল.....
যাই হোক, ভাবছিলাম কমেন্ট করবো কিন্তু শেষ লাইনটা পড়ে ঠিক করলাম কমেন্ট না। বড় একটা পোস্ট লিখে এই জিনিসগুলি নিয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করবো।
সিউল,
হ্যা, শিগ্রী এ ব্যাপারে লেখা-লেখি শুরু করো। তুমি বুঝতে পারছো তোমার রোকেয়া কী-বোর্ডের ভবিষ্যত নির্ভর করবে এ সবের উপরে।
শুনেছিলাম এক কোম্পানী নাকি নিম গাছের পেটেন্ট করতে চেয়েছিলো। তাদের উচিৎ ছিলো বাংলাদেশে এসে চেষ্টা করা - হয়তো তাহলে পেয়ে যেতো।
এছাড়া, এবার না আবার 'বিজয়' দিবস উৎযাপন বন্ধ হয়ে যায় উকিলের চিঠি এসে।
তার অনুষ্ঠানে, আমার সম্পর্কে আমার সামনেই একটু বেশী প্রশংসা করে ফেললেন। পরে ঠিক করলাম – আর না, এত প্রচার ভাল না। এরপর থেকে টিভিতে আর আত্মপ্রচার মূলক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাইনি।
আমাদের জব্বার সাহেব যদি আপনাকে দেখে কিছু শিখতেন...কিন্তু হায়, মূর্খকূলের সহসা নেই জ্ঞানপ্রাপ্তির আশা...
আসলে প্রশংসা আল্প বিস্তর সবারই ভাল লাগে। সীমা যখন তোমার প্রশংসা করে - তোমার ভাল লাগে না? তবে হিসাবের বাইরে হয়ে গেলে অন্য কথা।
অসাধারন সিরিজ, প্রত্যেকটা একটানে পড়ে ফেলেছি। কিন্তু শেষ হয়ে গেল কি?? 🙁 🙁
হ্যা শাফি - শহীদলিপির কাহিনী আপাতত এখানেই শেষ।
এখন আমি অপেক্ষা করবো তোমাদের মতো নতুন প্রজন্মের নতুন নতুন সাফল্যের কাহিনী শোনার জন্যে।
অসাধারন একটা সিরিজ ...... :boss: :boss: :boss:
আমি এখন অনেকটা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ করি। কিন্তু আমাদের কাজ শুধু কাস্টমাইজেশন করা। অনেকটা "তোল ঝাপি, মার কোপ" --- স্টাইলের। কাস্টমারের উইশলিস্ট দেখে কাছাকাছি কোন মডিউল আবার ডিজাইন করে কোডিং, টেস্টিং আর ডেলিভারী। কি হলে কার ঘাড়ে দায় চাপবে সব পুর্বনির্ধারিত।
একেবারে শুন্য থেকে শুরু করতে গিয়ে কত শত চ্যালেঞ্জ আসে আপনার লেখা পড়ে অনুভব করলাম।
ভাবীকে আমাদের হয়ে অনুরোধ করবেন, আমাদের সিসিবির জন্যেও যেনো তিনি একটু সময় দিয়ে কিছু লেখেন।
মইনুল,
মইনুল,
আমি জানি তুমি কি অভিজ্ঞতার কথা বলছো। সৈভাগ্য বা দুর্ভাগ্যবসত আমিও এখন আমেরিকাতে ঐ রকমই কাজ করি। বিজিনেস এনালিস্ট, সিস্টেম এনালিস্ট, ডেভেলপার, ইউনিট টেস্টিং, কিউ-এ টেস্টিং, সিস্টেম টেস্টিং, ডিবিএ, মাইগ্রেটার, ইন্টেগ্রেটার - সবাই যার যার অংশটুকু করে যাচ্ছে - অন্যের ব্যাপারে মাথা ব্যাথা নেই। এ যেন অন্ধের হাতি দেখা।
"ডিভিশন অফ লেবার" এর একেবারে জ্বলজ্যান্ত প্রমান!
এটা সম্ভবত হেনরী ফোর্ড বা তারও আগে থেকে চলে আসছে। কিছু কাজে দক্ষতা বাড়াতে অনেক সহায়ক। এটার ভাল মন্দ দুটি দিকই আছে।
সাইফ ভাই,
শহীদলিপির ইতিহাস ভাল লেগেছে। অনেক কিছু জানলাম। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আলীম - আমার কষ্ট সার্থক।
বর্তমানের প্রেক্ষিতে syllabus-এ কোন কোন জিনিসগুলো থাকা উচিত বলে মনে করেন?
গুলশান,
বাংলাদেশ ছেড়ে আমেরিকান হবার পর 'বিনা পয়সায়' উপদেশ দেওয়া বন্ধ করেছি ['ঠাট্টা']।
খুব কঠিন প্রশ্ন। এখনাকার এক্সপার্টরাই হিমশিম খাচ্ছে। আমি এখনও স্কুলে যাই নতুন নতুন জিনিস শিখতে। এছাড়া কোম্পানী থেকে পাঠানো ট্রেনিংতো আছেই।
আগের মত সব জান্তা হওয়া আর সম্ভব না। প্রতেকের নিজের বিষয়ে এতো কিছু আছে জানার আছে এবং এত কিছু নতুন নতুন প্রতি দিন হচ্ছে - তাল রাখা মুশকিল।
তুমি স্কুল বা কলেজে যা শিখবে - পাশ করে বের হবার আগেই দেখবে সেগুলির আর দাম নেই।
যে বিষয়টা তোমার ভাল লাগে সেটা নিয়েই সারাক্ষণ পরে থাকো। তবে চাকরী পাবার ব্যাপারটা তো আলাদা - সেটা তো বোঝো।
শহীদ ভাই, আপনার এই সিরিজটা শুরু থেকে পড়ছি সচলায়তনে এবং বলা বাহুল্য যে অসাধারন লেগেছে।
মাথার উপরে আপনারা আছেন বলেই আমাদের গর্বের অন্ত নেই।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
আসলে প্রচলিত যে কোনো পদ্ধতির পরিবর্তন আনতে গেলে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়ই, তা সে যত ছোট উদ্যোগই হোক না কেন। আপনার লেখা পড়া খুবই অনুপ্রানিত বোধ করছি।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
ধন্যবাদ জিতু।
তোমার মেয়ের খুব আদরকারা চেহারা। আর ছবি কোথায়?
:salute: :salute:
সেই তথাকথিত টেকিরা সম্ভবত তখন ব্যবসার ধান্দায় ছিলো, কাজেই সময়ক্ষেপন করাই সবচেয়ে লাভজনক। সেসময় যদি শহীদলিপি প্রমিতরূপ নিতে পারতো, তাহলে আমাদের বিশ+ বছর বাংলা কম্পিউটিং নিয়ে নির্লজ্জ ব্যবসা দেখতে হতো না।
আপনার সেই রেফ বা একার নিয়ে প্রশ্ন এখনো শেষ হয়নি।
চাইনিজরা কিন্তু ঠিকই তাদের ভাষা সিম্প্লিফাইড করে নিয়েছে, কমম্পিউটারের ক্ষেত্রে ফনেটিক টাইপিং (পিনয়িন) যুক্ত করে নিয়েছে, ডান থেকে বামে লেখা ভাষায় যুক্ত করে নিয়েছে, আমাদের সব থাকা সত্ত্বেও সবার লিডার হওয়ার ইচ্ছার জন্য কোনোটাই ঠিকমতন করতে পারিনি।
আমার একটা প্রশ্ন আছে: ফোনেটিক-কে পাবলিশিং-এর ক্ষেত্রে establish করা কি খুব কঠিন? এটা এখনো করা হচ্ছেনা কেন?
উত্তরদাতার কাছ থেকে সহজ ভাষা আশা করছি; টেকনোলজী পছন্দ করি, কিন্তু টেকী নই।
আদনান,
তুমি 'ফোনেটিক' বলতে কি UNICODE বুঝিয়েছো? নিশ্চয় সম্ভব প্রকাশনার কাজে UNICODE ব্যবহার করা। আমি যতদূর জানি অনেক সফটওয়ার বিক্রেতা এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশে এ ব্যাপারে কতটুকু কাজ হয়েছে ঠিক জানিনা, তবে বেশ কিছু ভারতীয় ভাষায় এটা সম্ভব।
যারা Windows 98 বা পুরানো সিসটেম ব্যবহার করে তারা সহজে UNICODE ব্যবহার নাও করতে পারে। তবে Windows 98 কি বাংলাদেশে আর বেশী কেউ ব্যবহার করে?
এই লেখাটার শহিদলিপির জন্ম সেই সাথে পেছনের কাহিনীর প্রতি আগ্রহ ছিল খুবই। কিছু প্রশ্ন জেগেছে। জিজ্ঞেস করছি
১- কোনটা বেশি কঠিন ছিল, মূল কাজ (শহিদলিপির জন্ম) না তার আগের বা পরের ধাপগুলো?
২-শহিদলিপির বর্তমান অবস্থা কী?
৩-বাংলাদেশের পাবলিশিং সিস্টেমে বিজয় গেড়ে গেছে। শহিদলিপি কেন এই স্থান নিতে পারলো না?
৪-অতীতে যাওয়ার সুযোগ থাকলে শহিদলিপি সংক্রান্ত কোন জিনিষটা আবার নতুন করে করতেন?
৫-পরবর্তীতে এ ধরনের আর কী নিয়ে কাজ করেছিলেন?
৬-আপনার আইডিয়া আছে কিন্তু সময় করে উঠতে পারছেন না এরকম কিছু বিষয় শেয়ার করবেন কী?
বেশি প্রশ্ন করে ফেলছি। কিন্তু আরো অনেক কিছুই জানতে ইচ্ছে করছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তা,
তোমার প্রশ্নগুলির জন্যে ধন্যবাদ। একটু সময় নিয়ে হয়তো আলাদা ভাবে উত্তর দেওয়াটা ঠিক হবে। পারলে ইমেলে যোগাযোগ করো।
অসাধারণ - কিভাবে যেন বহুত গর্ব বোধ করছি :boss: :hatsoff: :salute: ।
Life is Mad.
অসম্ভব দারুন সিরিজটা পড়া শেষ করলাম। আগেও শহীদ ভাইকে বলেছি, এখন অনুমতি চাইছি, পুরো লেখাটা সিসিবির পক্ষ থেকে ইবুক আকারে বের করতে। ইবুক বের করার পর এটা প্রথম পাতায় ঝুলিয়ে রাখা হবে আজীবনের জন্য।
রায়হান,
আমার কোন আপত্তি নেই। বরং ধন্যবাদ তোমাদের সবাইকে।
সাইফ ভাইয়ের অনুমতি যেহেতু পাওয়া গেছে, আমার মনে হয় সিসিবির প্রকাশনা পরিষদ এখন ই-বুকের কাজ শুরু করতে পারে। আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।
সাইফ ভাই
ব্যস্ততার কারণে মন্তব্য করা হয়নি। কিন্তু প্রতিটি পর্ব পড়েছি। সচলায়তনে আপনার সাক্ষাৎকারটা শোনার পর থেকে এই নিয়ে বিশদ জানার আগ্রহ ছিল। এই সিরিজটা সেই আগ্রহ অনেকটাই পূরন করেছে।
আরো যেগুলো আপনার কাছ থেকে জানার আগ্রহ ছিল উপরে দেখলাম শান্তা আপু সেসব প্রসঙ্গও তুলেছেন। আশা করছি সময় বের করে আপনি সেগুলো নিয়েও লিখবেন। ই-বুকটাতে আমরা সেই প্রসঙ্গগুলোও যোগ করতে চাই।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
অনেক অনেক শুভকামনা।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
সাইফ ভাই, ভালো লাগলো বললে কম বলা হবে। সিসিবিতে একটা দারুণ সংযোজন হলো একজন উদ্যমী, সাহসী প্রযুক্তিবিদের অভিযাত্রার ইতিহাস। আপনার উদ্যোগ, কাজ আমাদের সবসময় প্রেরণা যোগাবে। ভাবীকে শুভেচ্ছা জানাবেন। আপনার ছেলের জন্য শুভকামনা।
সিসিবি টিম, ই-বুকটি শিগ্গিরই দেখতে চাই।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
শুধু অসাধারণ বললে কমই বলা হবে। আমাদের উচিত এই লেখাটি যেভাবেই হোক সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া।
শহীদলিপির ফন্টগুলো দেখে খুব সহজেই বুঝা যাচ্ছে, কম্পিউটারে বাংলা চালু করার দাবীদাররা কোত্থেকে তাদের মাল মশল্লা কালেক্ট করছেন।
লেখাটি মূলধারার কোন প্রিন্ট মিডিয়ায় ছাপানোর ব্যবস্থা করা দরকার সবার জানার জন্য।
আমাদের ই-বুকটাও খুব দ্রুত বের করে ফেলা দরকার।
মূলধারার প্রকাশনা শিল্পে এখনও ইউনিকোড সাপোর্ট তেমন নেই। সফটওয়্যার গুলো এখনো আসকি বেইজড। এই সুযোগেই মূলত মনোপলি চলছে একটা সফটওয়ার এর। এর থেকে মুক্তির কি উপায় এটা নিয়ে সাইফ ভাই সহ আরো যারা এক্সপার্ট আছেন তাদের নির্দেশনা বা প্রস্তাব জানতে চাই।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
অসাধারন সিরিজটা একটানে পড়ে শেষ করলাম। ভীষণ গর্ব হচ্ছে ভাইয়া আপনার জন্য। একটা জায়গায় এসে অবাক, মুগ্ধ কিংবা বিস্মিত হচ্ছি, সেই সময়ে ঐ অত অত সীমাবদ্ধতার মধ্যে একজন মানুষ কেমন করে এত বড় একটা কাজ এত অবলীলায় করার সাহাস করল আর একদিন এত এত অধ্যবসায়ে সেটা শেষ ও করে ফেলল।
হাল না ছেড়ে লেগে থাকার এমন উদাহরণ মনে হয় আমাদের এই প্রজন্মের জন্য খুব বেশী দরকার।