ভ্যাকেশনঃছুটি গল্পের ক্যাডেট কলেজ ভার্সন-১
এইভাবে একদিন কাটিয়া গেল!ফটিক সারাবেলা মন মরা হইয়া ছিল!খুবই চুপচাপ যাহা তাহার চরিত্রের পুরোপুরি ব্যতিক্রম!ক্লাসমেটরা সকলেই কাহিনী জানিত তাই কেহ তাহাকে ঘাটাইতে গেল না।পরের রাত্রিতে প্রেপ হইতে আসিবার পথে ফটিককে হাউজ বেয়ারা খবর দিল,আপনাকে স্যার ডাকছেন!ফটিক রুমে আসিয়া টাই খুলিয়া বিষণ্ণ মনে হাউজ অফিস পানে চলিল!হাউজ অফিসে তখন অন্য সব হাউজ টিউটররা উপস্থিত!সকলেই কৌতুহলী চোখে ফটিকের দিকে চাহিয়া আছে!ফটিক গিয়া হাউজ মাস্টার স্যারের সামনে দাড়াইল!হাউজ অফিসে তখন পিনপতন নীরবতা!শেষ পর্যন্ত হাউজ মাস্টার স্যারই মুখ খুলিলেন,বলিলেন,আমরা তোমার সব কাজ পর্যবেক্ষন করে দেখলাম,তুমি রুম লিডার হওয়ার অযোগ্য!ছোটদের সাথে থাকার যোগ্য তুমি নও!তাদের তোমার কাছ থেকে শিখার কিছুই নেই!তাই তোমাকে সিনিয়রদের রুমে পাঠানো হচ্ছে!সেখানে থেকে তুমি সিনিয়রদের থেকে কিছু শিখতে পারো কিনা দেখো!
পরদিন ফটিক তাহার তল্পাতল্পি লইয়া অন্য কক্ষে গমন করিল!সেখানে পৌছিয়া দেখিল কক্ষে তাহার দুইজন রুমমেট,উভয়েই তাহার সিনিয়র এবং সেই সর্ব কনিষ্ঠ!পরিস্তিতি দেখিয়া সে অন্তরে দমিয়া গেল!এখন আর সে জুনিয়র দ্বারা কাজ করাইতে পারিবে না,নিজেকেই রুম ঝাড়ু দেয়া,পিটিসু জিঙ্ক করা,জুতা পালিশ করা এবং অন্যান্য কাজ গুলো করিতে হইবে এবং সিনিয়রদের মনতুষ্টিই হবে তার প্রধান দায়িত্ব!এই প্রথম বারের মত সে কিঞ্চিত অসহায় অনুভব করিল!উপরন্তু হাউজ মাষ্টার তাহার নতুন রুমে আসিয়া রুম লিডারকে তাহার পূর্বকৃত কাজগুলো সম্পর্কে অবিহিত করিয়া তাহার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখিতে বলিয়া গেলেন!
নতুন কক্ষে আসিয়া ফটিক যেন অথৈ জলে পড়িল!তাহার দুই রুমমেটের মাঝে প্রথমজন অর্থাৎ যিনি রুম লিডার,শিক্ষকের আদেশ মত তাহার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখিয়াছিল এবং এই দৃষ্টিই ফটিকের জন্য কাল হইয়া দাড়াইল!
অন্যজন অর্থাৎ দ্বিতীয় রুমমেট নিতান্তই একজন সাধাসিধে ভালো মানুষ!কারো সাতে পাঁচে নাই,নিজেকে লইয়াই তাহার সকল ব্যস্ততা!পাঁচবেলা নামাজ পড়িত,হাউজ মস্কের ইমামের পদটি ছিল তার জন্য স্থায়ী!মাথায় টুপি এবং গোড়ালির উপর প্যান্ট ভাঁজ করিয়া রাখা এই মানুষটিকে ফটিকের ভাল লাগিত!রুমে যতক্ষণ থাকিত ফটিককে সে সারাক্ষণ বিভিন্ন সদুপদেশ দিত আর মায়া লইয়া কথা বলিত!ফটিকের মনে হইত এই কথা গুলো যেন তার বাবা মায়ের উপদেশগুলোর মতই স্নেহমাখা!কিন্তু বাবা মায়ের উপদেশ সে যেমন এক কর্ণ দিয়া ঢুকাইয়া অন্য কর্ণে বাহির করিয়া দিত,এই সিনিয়রের বেলায়ও সে অন্যথা করে নাই!অতএব সে যে ফটিক তাহাই রহিয়া গেল!তবুও উপদেশ ব্যতিত অন্য সব কার্যে ফটিকের সাথে তাহার এক সম্পর্ক সূত্রপাত হইতে পারিত!কিন্তু রুম লিডারের হস্তক্ষেপের কারণে সেই সম্ভাবনা অচিরেই নির্মূল হইয়া গেল!অতএব ফটিকের দুর্দশা আর গেল না!
প্রত্যহ ফটিককে নিদ্রা পরিপূর্ণ হইবার পূর্বেই শয্যা ত্যাগ করিয়া তাহার নিজের এবং সিনিয়রদের মশারী খুলিয়া যথাস্থানে রাখিতে হইত!অতঃপর রুম থেকে যখন সে পিটির উদ্দেশ্যে যাইত তখনো রুম লিডার তন্দ্রাচ্ছন্ন!তাহাকে নিদ্রা হইতে তুলিয়া,তাহার অনুমতি লইয়া কক্ষ ত্যাগ করিতে হইত!প্রতিদিন রেস্ট আওয়ারে কক্ষ ঝাড়ু দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন ইন্সপেকশনে পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত সব কাজ তাহাকে একাই করিতে হইত!রুম লিডার সারাক্ষণ তাহার ত্রুটি খুজিয়া বেড়াইত,পাইলে আনন্দিত চিত্তে তাহাকে নানা রকম প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করিত এবং যথাযোগ্য উত্তরে সন্তুষ্ট করিতে না পারিলে চড় থাপ্পড়ের দ্বারা সেই বিশেষ দৃষ্টির কর্তব পালন করিত!ফটিক কাউকে একথা বলিতেও পারিত না লজ্জায়,আবার ভয়ও পাইত-তাহার নানা দুষ্কর্মের লিপিবদ্ধ এক স্টেটমেন্ট তৈরি করেছিল রুম লিডার,সেটা যদি আবার জমা দিয়া দেয়!
এদিকে এইরূপ চাপের মাঝে থাকিয়া সে পাক্ষিক পরীক্ষায় খারাপ করিল।হাউজের তখন একাডেমিক পাওয়া জরুরী!তাই প্রিফেক্টদের রোষনলেও পড়িল সে! তখন কেবল অস্টম শ্রেণীতে তাই ক্যাডেটদের স্বাভাবিক একত্ব তখনো দানা বাধে নাই!আগে ক্লাসমেটদের টিজ এবং নানা ভাবে জ্বালাইত,সেই কারণে তার এই দুর্দশাতে সকলে না হইলেও কেউ কেউ খুশি হইয়াছিল!তাহারা নানা সময়ে তাহাকে বর্তমান নিয়ে ব্যঙ্গ করিলেও তাহার জবাব দেবার মানসিক শাক্ত্য ফটিকের ছিল না,সে আগ্রহও পাইত না!
এইরূপে ফটিকের ক্যাডেট জীবন একরূপ বিষময় হইয়া গেল!প্রায়ই রাত্রে ঘুমাইবার পূর্বে সে তার পূর্বদিনগুলোর কৃতকর্ম আর কনিষ্ঠদের প্রতি তাহার নির্দয় আচরণের কথা স্মরণ করিয়া লজ্জিত হইত।ভাবিতে ভাবিতেই তার ক্লান্ত দেহ ঘুমের কাছে হার মানিয়া স্বপ্নের দেশে চলিয়া যাইত!
সবকিছুর অগোচরে তাহার একখানা ক্যালেন্ডারসহ ডায়েরী ছিল ডেস্কের ভেতরে!প্রতিদিন প্রেপে যাইয়া সে ডায়েরী খুলিয়া হিসাব কষিত ভ্যাকেশনের আর কত দেরী!টার্মের তখন মাঝামাঝি,ভ্যাকেশন তখনও ঢের দেরী,সর্বশেষ প্যারেন্টস’ ডে’ও কিছুদিন আগে হইয়া গেছে! তার ওপর সামনে টার্মএন্ড পরীক্ষা!কিন্তু পড়াশুনায় তাহার মন বসিত না!প্রেপটাইমে তাহার চঞ্চল মন সর্বদা বাসায় পড়িয়া থাকিত,বাসার ছোট বোনটার সাথে নানা দুষ্টামী আর কম্পিউটার গেমসগুলোর কথা ভাবিতে ভাবিতে তাহার প্রেপ যে কখন ফুরাইয়া যাইত!এইভাবে তাহার প্রতীক্ষা চলিতে লাগিল!
একদিন অধ্যক্ষ আসিলেন হাউজ পরিদর্শনে………………
……………(চলবে)
1st
🙂
ভালই হইসে কিন্তু এত প্যাচাচ্ছিস কেন?? তাড়াতাড়ি গল্প শেষ কর। 🙁 🙁
x-( x-( না চলুক।তুই হ্যান্ডস ডাউন হ শেষ না হওইয়া পর্যন্ত।
তাড়াতাড়ি হ x-(
মাশরুফ ভাই আপনে রেষ্ট নেন আমি দেখতেসি x-(
জটিল .......... অত্যধিক কাল ক্ষেপন না করিয়া পরবর্তি কাহিনী লিখিয়া ফেলো .........
জটিল কেন??বুঝিতে সমস্যা হইলে বলিবেন! 😉
=)) =))
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
:)) :)) :)) :)) :)) :clap: :clap: :clap: :clap: :clap:
শাহ্রিয়ার,এই পর্বটা আগের চেয়ে অনেক অনেক ভাল হয়েছে।চালায়া যাও ভাই!অসাধারণ!একেবারে মনে হচ্ছে ক্যাডেট কলেজের সেই দিন গুলাতে ফিরে গেলাম...
থ্যাঙ্কু ভাইয়া,আপনাকে অনেকদিন দেখিনাই!ওইদিন আপনার ২০০০ তম ব্লগটা পইড়া ভালো লাগলো!কই ছিলেন এতদিন?
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
ঐটা কি আসলেই ২০০০ তম ব্লগ ছিল.........????
😮 😮 😮 😮
ওনার ২০০০ তম না......ব্লগের ২০০০তম! 😉
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
ব্লগের ২০০১ তম 😀
আগের পর্বের মতই :just: :gulli2:
সাবাস ।
ফটিক এর এ অবস্থা দেখে জুনিয়র রা নাচানাচি করে না?? মনে আসে আমরা জাহিন ভাইয়ার রুম লিডারশীপ চ্যাঞ্জ হবার পর নাচানাচি করছিলাম চমক দের রুম এ গিয়া :tuski: :tuski: :tuski: :tuski:
ওই পোলা, আর্মি তে জয়েন কর। ভাল করবা। তয় এইরকম কডলিভার অয়েল দিলে ত ছলবে না।
@মাসরুফ, তোমার ২০০০ 😉 তম পোষ্ট টা পড়লাম।
তোমাকেই খুজ়ছে বাংলাদেশ।
:clap: :clap: :clap: :clap: :clap:
চালায়া যাও।
দারুণ লাগলো ছোট ভাই B-)
পরেরটা তাড়াতাড়ি নামাই দাও
শাহরিয়ার, বেশ মজা পাচ্ছি তোমার এই সিরিজটাতে।
চমৎকার। :clap: :clap:
ফাটাফাটি :just: :gulli2:
R@fee
next part koi?