পাহাড়ের দিনলিপি-২

DSC_0529
Good Morning Sunday…সকাল থেকে আকাশ মেঘলা…এই মধ্য কার্তিকে, এই হেমন্তে বৃষ্টি হওয়ার কথা না…কাল দুপুর পর্যন্ত আঝোর বৃষ্টি হয়েছে…ঠিক ভাবে বললে মন্ত্রী আসার আগ পর্যন্ত…অথবা মন্ত্রী বৃষ্টি থামতেই এসেছেন…রেইনকোট পড়ে বৃষ্টিতে হাটতে হাটতে ভেবেছি এই কার্তিকের বৃষ্টি নিয়ে কেউ কবিতা লিখেছেন কিনা…ভেবে পাইনি…রাতে ঘরে ফিরে নেটে ঘেটেছি…পেয়েছিলামও…এখন মনে নেই…তাই অফিসে বসেই খোঁজ করছি…পাচ্ছি না…অস্থির লাগছে…
কাল রাতে কোন কোন পেজ গুলো ব্রাউজ করেছি? হিস্ট্রি নেই…অটো ডিলিট হয়ে যায়…অন্য কোন ভাবে? কী বই পড়েছি কাল রাতে? যতদূর মনে পড়ে কবিতার বই না…নন-ফিকশন…ঘুমানোর আগে পৃষ্ঠা উল্টিয়েছি…ছোটবেলার অভ্যাস…পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়া…কী বই পড়েছি?…বালিশের পাশে খোঁজ নিতে হবে…অথবা টেবিলের উপর স্তুপে।
বৃষ্টি কি হবে? শান্ত,উদার লেক থেকে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। পেছনের জানালাটা বন্ধ করে দিয়েছি..তাতে ঘর অন্ধকার। লেকটা রূপালি…মেঘের ছায়ায়। দূরে নীল পাহাড়ের সারিতে মেঘ আটকে আছে। ধোঁয়া ধোঁয়া, তুলোর মত মেঘ। এইসব উপকরন দিয়ে ভাবি গল্পটা শেষ করবো। হেলিকপ্টারে চড়ে মন্ত্রীর আগমনটা হবে সেইসব খুনের কারনে। রেইনকোট পড়ে কবির হাটার কথা না। অসংলগ্ন মনে হয়। এক্ষেত্রে কবিকে সরিয়ে দিতে হবে, অন্য কেউ রেইনকোট পড়ে হাটবে, বৃষ্টির মধ্যে। এই ১৭ কার্তিক, ১৪২২ সনে।
এই মুহুর্তে মনে পড়লো, November Rain শুনছিলাম কাল রাতে। Guns N’ Roses এর…
‘Cause nothin’ lasts forever
And we both know hearts can change
And it’s hard to hold a candle
In the cold November rain

We’ve been through this such a long long time
Just tryin’ to kill the pain
মাঝে মাঝে অফিসে স্পীকারের অভাব বোধ করি….মৃদ্যু তালে ইন্সট্রুমেন্টাল বাজবে…লো ভয়েসে…স্পীকারটা থাকা উচিত টেবিলের নিচে…ব্লুটুথ স্পীকার…ডানপাশে জানালায় তাকালেই লেকের রূপালি জলরাশি, শান্ত পাহাড়ি গ্রাম…বাজে জেনারেটরের টিমটিমে আলো…ইনবক্স, পেন্ডিং খালি…

হয়না…এমন হয় না…অফিস ইজ এ সেক্রেড প্লেস…..এখানে গান বাজনা উচিত না…

শীতের বাতাস বইছে বাইরে …এই হেমন্তে…পাতাঝরা বাতাস…শ্রাবনের মতো আর্দ্র আকাশ…নভেম্বার মাস…সপ্তাহের শুরু…ভাস্কর চট্টোপাধ্যায় পড়ি …ভালো লাগে না সুপর্ণা, আমি মানুষের মতো না, আলো না, স্বপ্ন না – পায়ের পাতা আমার চওড়া হয়ে আসছে ক্রমশ – ঘোড়ার ক্ষুরের শব্দ শুনলেই বুক কাঁপে, তড়বড়ে নিশ্বাস ফেলি, ঘড়ির কাঁটা আঙ্গুল দিয়ে এগিয়ে দিই প্রতিদিন– আমার ভালো লাগে না – শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা আমি তিনমাস ঘুমিয়ে থাকবো।

৩,৩৫৩ বার দেখা হয়েছে

২ টি মন্তব্য : “পাহাড়ের দিনলিপি-২”

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।