আজকের সুর্যটাও টুপ করে ডুবে গেছে…আমরা কাউন্ট ডাউন করছিলাম…১…২…৩……৩০ পর্যন্ত যেতেই পাহাড়ের আড়ালে সূর্যটা ডুবে গেলো, আমাদের আলোক উজ্জ্বল আকাশটা নিমেষেই সন্ধ্যা হয়ে গেলো, বাতিঘরে জ্বলে উঠলো পানি থেকে উঠে যাওয়ার সংকেত…ঘরের বাতিটা নিভু নিভু…সন্ধ্যার পর এই আধঘন্টার মধ্যে ৪ বার ইলেক্ট্রিসিটি যাওয়া আসা করেছে…আমি টাওয়াল পরে বসে আছি লেখার টেবিলে…স্পীকারে বাজছে আনুশকা শঙ্করের সেতার, বর্ণময় ধ্বনি।
সেতারের শব্দ বর্ণময় হয়? হতে পারে। আমার টেবিল থেকে উঠতে ইচ্ছা হচ্ছে না, শাওয়ারে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এভাবেই বসে থাকি, এভাবেই শুনতে থাকি সোলেয়া…আজীবন…আজীবন। অফিসে বাং মারতে ইচ্ছে করতেসে…অনেক কাজ জমে আছে…উঠতে হবে এখনই।
হুম শব্দ বর্ণময় হতে পারে…আনুশকার সেতার, নোরা জোনসের পিয়ানো…দুই বোন, অথচ কী ভিন্নতা, কী অসাধারণ গায়কী, বর্ণময় সুর। আর এদের সাথে তুলনা করা যেতে পারে চৌরাশিয়ার বাঁশি…কী অপার্থিব, অপার্থিব।
আর একটা সুর মনে পড়ে…কোন এক অক্টোবর-নভেম্বরের বিকেলে রাজশাহীতে, পদ্মার পাড়ে…কোথায় দূরে কোন ভবঘুরে ফকির বাঁশি বাজাচ্ছিল,মোহনবাশি…ফকির নয়, বাশি বিক্রেতা…ঝোলার ভেতর আরো ত্রিশ চল্লিশটা বাশি…কী ভুবন ভোলানো সুর তুলেছিল…ইচ্ছে করছিল বসে থাকি এইখানে, এইভাবে…শুনতে থাকি…শুনতে থাকি…
শোনা হয় নি, বসা যায় নি…এইভাবে এই ভদ্র লোকের পোষাকে বসে পড়া যায় না রাস্তায়, শোনা যায় না বৃদ্ধ বাশি বিক্রেতার করুণ সঙ্গীত…কারণ এতে শিল্প নেই…এতে দুঃখ আছে…অভাব আছে…দারিদ্রের হাহাকার আছে।
কিন্তু অফিস বাং মেরে নিজের ঘরে বসে আনুশকা শঙ্কর শোনা যায়, নোরাহ জোন্স শোনা যায়…এই সব বিষণ্ন সন্ধ্যা, এই সব অবসাদগ্রস্থ দিনে…সিনিস্টার গ্রেইন। কারণ এতে শিল্প আছে, আভিজাত্য আছে, দারিদ্র নেই। তাই এতে সুখ আছে।সুর বিকোনোর চেয়ে সুখী করার ইচ্ছা আছে।
যার যা অভাব সে তো তা চাইবেই।
ভালো লেগেছে। Inside Me শুনেই বুঝেছি, বাকি গুলো শোনা লাগবে।
আ হা।
আনুশকার সেতার যেমন ভালো লাগে, আনুশকাকেও আমার খুব ভাল্লাগে।
প্রেমে পড়ে যাচ্ছিলাম প্রায় ওর।
পাহাড়, সূর্য, সেতার, পিয়ানো, বাঁশী আহা এতেই তো নাই নাই। তারপর যা সব নাম। আর নিজের হদিস টিকিয়ে রাখা কি যায় !
শ্যামের পানে যাই না কুলের পানে ধাই !
"যার যা অভাব সে তো তা চাইবেই" - চমৎকার কথা!