১.
রাত বেড়েছে,রাতের সাথে কালো-
মেঘের ছায়া ছুটছে চাঁদের পিছে
তোমার গায়ে পরপুরুষের শ্বাস
কাঁপছো তুমি নিওন আলোর নিচে।
শঙ্খ বাজে দূর সাগরের পাড়ে
মধ্যরাতে চোখ মেলে ফুলকুড়ি
তোমার দেহে অন্যলোকের চোখ
তাতেও তোমার স্পষ্ট বাহাদুরি।
মাদক লাগা হাসনাহেনার ঝাড়ে
পেঁচিয়ে থাকে মোহগ্রস্থ সাপ
অন্ধকারে সে ঠিকই পায় টের
তোমার দেহে পরপুরুষের ছাপ!
২.
আজকে তোমার মন ভেঙে যাক ঘূর্ণিঝড়ে
আজকে ভূমিকম্পে কাঁপুক সর্বশরীর
জীর্ণ তরীর
যাত্রীরা সব ঢেউয়ের দোলায় তটস্থ হোক
সবাই জানুক আমিই তোমার চতুর প্রেমিক-শঠ প্রতারক!
৩.
সত্য তো এক বিশাল ব্যাপার
আমরা না হয় মিথ্যে বলি
কী হয় এতে!
নাহয় তাতে এক বালকের ঘুম হবে না কয়েকটা দিন
কয়েকটা মাস
কয়েক বছর
তারপর তো বালক ঠিকই ঘুমিয়ে যাবে
তখন তোমার হাজার ডাকে
অনুনয়ে
অনুরোধে
ফিরবে না আর,যতই ডাকো
যতই কাঁদো!
অবশ্য যে কাঁদবে না তা আমিও জানি
তবুও যদি আশ্বাস পাই,আমার প্রিয় নিদ্রা দিনে
কাঁদবে তুমি
এই মুহুর্তে মরে যাবো,কসম বলছি!
৪.
-“তোমার কাছে ফিরে যাবার চেষ্টা চরিত বোঝাই বৃথা
আকাঙ্খা নয়,আমি,মানে সত্যি সত্যি ভেবেছিলাম,এটাই তো ঠিক
এটাই হবার কথা ছিল,এটাই তো হয়
যতই ভাঙুক কাঁচের চূড়ি,মাটি কি আর ফিরিয়ে দেয় তার নদীকে?
কিংবা কি আর প্রজাপতির পাখাটি কি পাখাই কেবল?
উড়ার জন্য?আর কিছু নেই?
রামধনু বা মরীচিকা-সুখের মতন-দূরের থেকে স্বপ্ন দেখায়
কাছে গেলেই রঙিন আগুন
সে আগুনে হাত দিতে যে কত লোকের হাত পুড়েছে
ভালোবাসার মতন এমন ঠুনকো একটা ব্যাপার নিয়ে
মানুষ বলো কেন এত কাব্য করে?”
-এবার বলো,আমি ছাড়া তোমায় নিয়ে এই দুনিয়ায় কোন পুরুষটা গান লিখেছে?
৫.
এবার বলো আমায় নিয়ে খেলছো কেনো?
আমায় তুমি নিষ্কৃতি দাও
কী চাও তুমি আমার কাছে?
যদিও আমার অল্প বাজেট
তবুও তোমার ইচ্ছে মত একশো আটটা নীল পদ্ম খোঁজ করছি
প্রয়োজনে বসরা থেকে আনবো কিনে সাতশো গোলাপ
আর কতটা মারণাস্ত্র তৈরি হলে,আর কতটা যুদ্ধ হলে তুষ্ট তুমি?
আর কতটা রক্ত হলে এবার তোমার তৃষ্ণা মেটে?
তুমি চাইলে এই মুহুর্তে মিছিল ছেড়ে দাড়িয়ে যাবে,
অস্ত্রধারী গুন্ডা হবে-এই পৃথিবীর সকল তরুণ
কেবল তোমার এক ইশারায় মিথ্যে এসব কাব্য লেখার কষ্ট ছেড়ে
বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে দাড়িয়ে যাবো লোকের সাথে
এক কাতারে।
ফিলিস্তিনের সদ্যোজাত শিশুটিকে হত্যা করার বদলা নেবো।
আর আমি তো পুরুষ মানুষ,অশ্রু মুক্তোদানা হবে
এ রূপকথার নেই অবকাশ
এবার তোমার ডিমান্ড বলো
আর কতদিন কাঁদবো বলো,আর কতটা
কাঁদতে কাঁদতে আমার সকল অশ্রু ফোঁটা শুকিয়ে যেদিন
মরু হবে
সেদিন তুমি একটি মুঠো মাটি নিয়ে
আমার পোড়া গোরস্থানে ঢেলে দিও
মধ্যরাতে একলা জেগে তোমার প্রতি
এটাই হলো বাঁশিওয়ালার প্রেম নিবেদন।
৬.
আমার তো বেশ ভালই লাগে ন্যাংটোপুরে
রোদদুপুরে
ঘুড়ি এবং লাটিম নিয়ে খেলতে।
আমার তো বেশ ভালোই লাগে তোমার সাথে
দুপুররাতে
স্বপ্ন রঙিন মেঘের পাশে অবুঝ ডান মেলতে।
৭.
কী করে ঠকাবে আমাকে,আমি তো জানিই তোমাকে
তাইতো সর্বস্ব নিয়েই এসেছি এই জেনে
তুমি প্রতারক!
এখন আমার চোখে প্রেমের মলম লাগিয়ে
কিংবা অজ্ঞানপার্টির মতো নাকে চেপে
ধরো তোমার বুকের সুগন্ধি মাখা রুমাল
আমার পকেটমার গেলে তোমার কাছেই খুঁজবো
(প্রমাণসরূপ)তোমার ষোলো বছরের ফটো রাখা
আমার মানিব্যাগ,আর কিছু এলোমেলো হয়ে যাওয়া
খুচরো কয়েন-আর সেসব ভাংতি টাকা!
তুমি জানো না আমি কতদিন ধরে রাত জাগি,
বসে থাকি মধ্যরাতে-দেয়ালের পাশে
শুধু তুমি সিঁধ কেটে আমার ঘরে ঢোকেই
বিস্মিত হবে আমার আচমকা চুম্বনে!
শাহরিয়ার, খুবই ভাল লাগল লেখা। কিছু লাইন জোঁকের মত মাথার ভেতর থেকে ভাবনা শোষে নিচ্ছে। থামানো যাচ্ছে না।
তবুও তুমি থেমে থেকো না। :thumbup:
সবসময়ের মতই অন্যরকম সুন্দর 🙂
শাহরীয়ার, খুব সুন্দর কবিতা লেখ তুমি!!!