সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জিহাদ , মুহাম্মদ আর ফরিদকে সাথে নিয়ে পিলখানায় বিডিআর গেটে গিয়ে দেখি তখনো কেউ আসেনি।
ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার থেকে রিকশা নিয়েছিলাম। আমাদের আগের রিকশায় ছিলো আমাদের ব্যাচের আজিজ আর রাসেল। জ্যামে পড়ে ওরা সম্ভবত আমাদের চেয়ে পিছিয়ে গিয়েছিলো তাই পৌছলো আমাদের মিনিট দ’শেক পর। কাইয়ূম ভাই আর জুনায়েদ রিকশা পায়নি, তাই হেঁটেই রওনা দিয়েছিলেন। পরে মাঝপথে এসে রিকশা পেয়েছিলেন কিনা আর জিজ্ঞেস করিনি, কিন্তু রাসেলদের কিছু পরেই তারাও এসে পড়লেন।
বিডিআর গেটের সামনে তখন আমরা ছাড়াও অনেক মানুষ। অস্থায়ী একটা বেদী করা হয়েছে শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্যে। সেটা ঘিরে সবাই দাঁড়িয়ে আছে। কেউ কেউ ফুল দিয়ে শহীদদের স্মরণ করছেন, কেউ নিছক উৎসাহে দাঁড়িয়ে আছেন দেখার জন্যে। একপাশে একটু জায়গা করে নিয়ে আমরা ক’জন দাঁড়ালাম মোমবাতি আর ফুল হাতে নিয়ে।
রায়হানকে সঙ্গে নিয়ে লাবলু ভাই আসছিলেন সরাসরি এবিসি’র অফিস থেকে। উনার গাড়িও জ্যামে পড়লো। ফোন দিয়ে জানালেন কাছাকাছি এসে পড়েছেন। আর একটু।
ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বড়ভাই, ছোটভাইদের ফোন ধরছি আর আমাদের অবস্থান বুঝিয়ে দিচ্ছি এমন সময় তাইফুর ভাই এসে পৌছলেন। অফিস সেরে একসঙ্গে আসলো তানভীর আর রবিন। তার কিছুক্ষণ পর ফুল আর মোমবাতি হাতে শোয়েব। আর ছোট্ট বোনকে সঙ্গে নিয়ে মাস্ফু।
এবং তারপর একে একে আরো অনেকে।
রায়হান আর লাবলু ভাই আসার পরই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা দাঁড়ালাম বিডিআর প্রধান গেটের সামনে। ব্যানার করা হয়েছিলো- নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো, যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো। সেটা মেলে ধরা হলো সামনে, আর মোমবাতি জ্বালিয়ে আমরা দাঁড়ালাম তার পিছনে।
শওকত ভাই এসে পড়েছেন এর মধ্যেই। সিসিবিতে যার মজার লেখাগুলি পড়ার জন্যে সারাক্ষণ বসে বসে অপেক্ষা করি তার চোখ দেখলাম টলমল। ইউসুফ ভাই এসেই লাবলু ভাইকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন। দূর থেকে দেখলাম শুধু, কাছে যাওয়ার সাহস হলো না।
সামিয়া আসবেনা জানতাম। মনে মনে চাইছিলাম যেন না আসে। ওর দিকে তাকানোর সাহসও আমার ছিলো না।
বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে যাওয়া নৃশংস এ হত্যাকান্ডে স্বজন হারিয়েছেন অনেকে। আমরা হারিয়েছি আমাদের আমাদের অনেক প্রিয় বড়ভাই, বন্ধু, ছোটভাইদের। প্রিয়জন হারানোর ব্যাথা নিয়ে এক হয়েছিলাম আমরা সবাই। লাবলু ভাই সবার উদ্দেশ্যে পড়ে শুনালেন গণহত্যার শিকার সব শহীদ এক্স-ক্যাডেট ভাইদের নাম। তারপর সকল শহীদদের স্মরণে নিরবতা পালন করা হলো কিছুক্ষণ।
শহীদ বেদিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখে ফুল দিলাম আমরা সবাই। একসঙ্গে গলা মিলিয়ে শহীদদের স্মরণে গাইলাম,
নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো
যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো
ব্যথা মোর ঊঠবে জ্বলে উর্ধ্বপানে
আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে……
মাত্র দুদিনের নোটিশে আমাদের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করতে এসেছিলেন সিসিবির আরো অনেক সদস্য। নাম জানা-না জানা অনেক প্রাক্তন ক্যাডেট। স্বজন হারানো আরো অনেকে, নৃশংস এ ঘটনায় শোকাতুর আরো অনেকে।
সবার একটাই চাওয়া ছিলো, শোক পরিনত হোক শক্তিতে। জঘন্যতম এ হত্যাকান্ডের বিচার হোক খুব তাড়াতাড়ি।
আগুনের পরশমণি আমাদের সবার হৃদয়ে ছুঁয়ে যাক ।
:thumbup:
ওর দিকে তাকানোর সাহস আমাদের কারোরই নেই।
প্রথম আলোর খবরের ছবিটা দিয়ে দিচ্ছি, ইপ্রথম-আলো থেকে:
Lit a Candle in honour of the Martyr Officers - Facebook event টিতে গেলে ছবি বড় করে দেখা যাবে।
প্রথম আলো এর লিঙ্ক টা দাও
সমস্যা হচ্ছে উবুন্টু থেকে এখনও প্রথম আলো দেখার কোন সিস্টেম বের করতে পারিনি। এজন্য eprothom-alo দেখতে হয়। আজকের ইপ্রথমআলোর ১৯ নাম্বার পৃষ্ঠায় খবরটা আছে। ১৯ নাম্বার পৃষ্ঠার লিংকটা দিচ্ছি। সেখান থেকে সিসিবি-র খবরের উপর ক্লিক করলেই বড় করে দেখা যাবে:
http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=19&date=2009-03-04
মুহাম্মদ
প্রথম-আলোর ছবিটাও মূল লেখায় যোগ করে দিলাম।
আমাদের শোক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে এবং এর নেপথ্যে যারা ছিল কাউকে যেন ছেড়ে দেয়া না হয়। সবার বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, চেয়ে যাব, যতদিন না মিমাংসা হচ্ছে...
কখনো কি হবে?
দুইটি সম্ভাবনা আছে,
হয় আমরা চোখে চোখ রেখে বলব, 'আপু দেখ্, বাংলার মানুষ আজ সেই সব নরপশুদের সুষ্ঠু বিচার করে শাস্তি দিয়েছে...'
অথবা চোরের মতন ক্ষীণ স্বরে বলব, 'আপু, তোর ভাইরা আবার ব্যর্থ...আমাদের তুই ক্ষমা করিস...'
সময় বলে দেবে কি হবে...!!!
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:salute: :salute:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আমিও ছিলাম তোমাদের এক চিপায়, তোমরা আমাকে খুজেই পেলে না। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
😮 😮 😮
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
এত অবাক হবার কি আছে? তুই তো তখন লংআপ হয়ে ছিলি, মনে নাই? :grr: :grr:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কাইউম আপনারে ঠিকই দেখতে পাইছিল ... আমার তো তাই মনে হইছে
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
আর আমি শিওর... B-)
যেম্নে পাম-পট্টি দিচ্ছিলেন... 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:grr: :grr:
চিপায় যাওয়ার অভ্যাসটা এইবার ছাড়েন ফয়েজ ভাই, বয়েস তো আর কম হৈলোনা :grr:
ওই মাস্ফু, তুই কালকে কোন চিপা দিয়া গেলি গা না কইয়া?
আমিও ছিলাম তবে শারিরীকভাবে নয়।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই কার্যক্রমকে সার্থক করে তুলার জন্য।
ঐ...
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
ঐ
ঐ...
এই আয়োজনের সাথে জড়িত সবার জন্য রইল অকৃত্রিম ভালোবাসা।
:((
এই কান্না কি থামবে?
আমি গিয়েছিলাম মেহেদি (মকক)-কে নিয়ে। ৬-৩০ থেকেই অপেক্ষা করছিলাম। ধন্যবাদ সবাইকে এর আয়োজন করার জন্য।
আর হ্যা, যারা যারা যেতে পারেনি তাদের জন্যও কিন্তু "শীখা অনির্বাণ" জালানো হয়েছিল।
ইনশাআল্লাহ আমাদের ভাইরা ন্যায় বিচার পাবেই।
আমিন।।
হুম......
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অফিস থাকায় সবার সঙ্গে ভালভাবে কথা হলো না। আমি লাবলু ভাই আর রায়হান এক সাথে গেছিলাম। রায়হানের সাথেই একমাত্র কথাবার্তা হলো। আর এই পরিবেশে সেই রকম মুডও ছিল না। নেক্সট টাইম।
অন্য কোথাও, অন্য কোনখানে। 🙂
কামরুল ভাই, আমরা রিকশা পাইছিলাম কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড এ গিয়ে...টেনশন কইরেন না... 😛
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আয়োজকদের আমার অন্তরের অন্ত:স্থল থেকে ভালবাসা...
আমি একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করলাম। সি সি বি এর যাদের সাথে দেখা হল, তারা কেউই কোন বিব্রতকর প্রশ্ন করল না। নট এ সিংগেল ওয়ান!
সবার চোখে মুখে সুবিচার প্রাপ্তির প্রত্যয়, ধৈর্য্যের দৃপ্ততা আর স্বচ্ছ চিন্তাধারা। অসাধারন!
জঘন্যতম এ হত্যাকান্ডের বিচার হোক খুব তাড়াতাড়ি।
সবাইকে এই লেখাটা দেখার জন্য দৃষ্টি আকর্ষন করলাম।
সাম্প্রতিক বিডিআর কেলেংকারীতে আমি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ , আমার এক ঘনিষ্ট বন্ধু , যার সাথে ঘটনার দুইদিন আগেও আড্ডা মেরে এসেছি , সেই বন্ধুর লাশের খোঁজে পিলখানার গেটে রাস্তায় বসে থাকার যে মানসিক পীড়ন ,সেটা বর্ণনা করার ভাষা আমার নেই ।
নিজে ক্ষতিগ্রস্থ থাকলে এ বিষয়ে নিরপেক্ষ মতামত দেয়া যায় না , ঘটনা নিয়ে তাই আমি কোন ধরনের বিশ্লেষনে যাচ্ছিলাম না । এক অসহায় ক্ষোভ-ক্রোধ আমাকে আহত কুরে কুরে খাচ্ছিল , সামনে পেলে হয়তো দুচারটা বিডিআরকে আমি চিবিয়েই খেয়ে ফেলতাম , এরকম মানসিক অবস্থায় কোন কিছু বিচার বিশ্লেষন করার ক্ষমতা থাকে না ।
ব্লগে যে বা যারাই বিডিআর এর পক্ষে বলছিলেন , তাঁদেরকে তুলোধুনো করে ছাড়ছিলাম , সেই তীর্যক মন্তব্য অনেককেই আহতও করেছে ।
শেষ কথা হচ্ছে , আমি এই ঘটনায় আর্মিদের সমব্যথী । যারা মারা গেছেন তারা সেনাবাহিনীর সহকর্মী , তাঁদের কষ্টটা আমি বুঝতে চেষ্টা করি । কোর্সমেটরা ভাইয়ের মতো , তাদের মৃত্যু ভাইয়ের মৃত্যুর মতোই ভারী ,তাদের কষ্টটা আমাকেও ব্যথিত করে ।
গত কয়দিন যে গুজবগুলো চলছিল , সেগুলো গুজব হিসেবে ধরেও বলি , পুরো ঘটনার কারনে সরকারের সামরিক বাহিনীর সাথে বেসামরিক অংশের একধরনের দূরত্ব তৈরী হয়েছে বলে মনে হচ্ছিল । প্রধানমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে সেই দূরত্ব মোচনের চেষ্টা করেছেন । তিনি তাঁর চেয়ারে গোঁ ধরে বসে থাকেন নি , এই বিষয়টা আমাকে মুগ্ধ করেছে । একজন দায়িত্ববান মানুষকে এটা মনে রাখতে হবে যে শোকের সময় মানুষের মাথা ঠিক থাকে না , সেই সময়ে তাদের সব আচরনকে নিক্তির পাল্লায় মাপার দরকার নেই । প্রধানমন্ত্রী তাই করেছেন , তিনি সেনাবাহিনীর সাথে সভা করে তাদের সমব্যথী হওয়ার চেষ্টা করেছেন ।
কিন্তু তারপরে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি হচ্ছে ন্যাক্কারজনকের চূড়ান্ত । প্রধানমন্ত্রীর সাথে সেনাবাহিনীর পুরো বৈঠকটির অডিও টেপ দ্রুতই ইন্টারনেটে চলে এসেছে ।
বিষয়টি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি । সেনানিবাসের ভেতরের একটি ক্লোজডোর মিটিং ,যেখানে সরকারের সর্বোচ্চ নির্বাহী সহ সেনাবাহিনীর সিনিয়ার অফিসাররা উপস্থিত আছেন , যে মিটিংয়ের নিরাপত্তায় রাষ্ট্রের কোটী টাকার এলিট ফোর্স নিয়োজিত , সেই মিটিংয়ের কথোপকথন যদি মুড়ি মুড়কির মতো বাজারে সহজলভ্য হয়ে যায় , তখন আমরা স্তব্ধ হয়ে পড়ি ।
এই জায়গায় এসে তাই প্রশ্ন দাড়ায় , একটি প্রফেশনাল সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কি এতোই নাজুক ? এতো নাজুক ও ভঙ্গুর সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাহলে কি আনসার বাহিনী নিয়োগ করতে হবে ?
সময় এসেছে পুরো বিষয়টিকে উলটপালট করে দেখার । তথাকথিত প্রফেশনাল সেনাবাহিনী যদি নিজেদের কাছা সামলে রাখতে না পারে , তাহলে তাদেরকে নিয়ে গর্ব করার দিন বোধহয় ফুরিয়ে এসেছে ।
উদ্যত সঙ্গীনের ভয়ে আমরা সুশীলরা যতোই বলি , সেনাবাহিনী আমাদের প্রফেশনাল ইন্সটিটিউশনের গর্বিত উদাহরন ; খুব বেশি দেরী নেই যখন রাস্তার ধারের ছোট্ট শিশুটা অবাক হয়ে বলে বসবে -
রাজার গায়ে কাপড় কোথায় মা ?
রাজা দেখি ন্যাংটো !!
ব্যাপারটা আমাকেও অবাক আর ব্যাথিত করেছে।
আশা করব সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ তদন্ত করবে, তাদের লিকেজ গুলোও খুজে বের করা দরকার।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ঐ
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
An Army Officer Carrying the Corpse of his Mate for Burial
As nation and riffles weep, my eyes- dry
And wandering - delve down the deep recess
Of heart and drown in ardent well of tears.
Lord! Grace me with lure. I swear not to cry.
I'm trained to kill, inherent to defy
The symmetry of fear. I set fire - harsh
And hellish - burning my foes like the trash.
But what's on my shoulder swelling my eye?
Wasn't it Sunday morn? I signed off the day
Assigning you to take charge; least aware
Of dragons waiting in mask to haul their prey
And dim the light of day. Is it you dear?
How could I let them take your breath away
And feast on you as blood sucking ogre?
কাম্রুল,তুই অন প্যারেড হইয়াও আমার লগে কথা কস না ক্যান...।