একেই বলে কাকডাকা ভোর। ছোট্ট মফস্বল শহরটায় বাস থেকে এসময়েই নামলো সাগর। মোটেই তার আসার কথা না। সাগর চায়ও না বাসার কেউ দেখে ফেলুক। কিছুসময় থেকেই আবার বাসে উঠতে হবে। পরীক্ষা চলছে, ঢাকায় ফিরে পড়তে বসতে হবে। ফাইনাল পরীক্ষা।
হুট করে হল থেকে বেড়িয়ে এক কাপড়ে রাতের বাসে উঠার পরিকল্পনা সন্ধ্যা বেলায়ও মাথায় ছিল না। তারপরেও চলে আসলো সাগর। জীবনে কিছুটা পাগলামি থাকতেই হয়। তবে পরীক্ষার আগের দিন এ ধরণের পাগলামি করাটা যে ঠিক হচ্ছে সেটাও সে বোঝে।
এতো ভোরে কোথাও ফুল পাবার কথা না। ছোট্ট এই মফস্বল শহরটা তার হাতের তালুর মতো চেনা। সাগর জানে এখন কোথাও ফুল পাবে না। কিন্তু ফুল লাগবেই। গুনে গুনে ২২টা গোলাপ। উপায় একমাত্র থানার পাশে মনিরদের বাড়ি। এই বড়িটাতেই সব সময় গোলাপ ফুটে থাকে। তবে চাইলেই পাওয়া যাবে না। পুরো বাড়ি কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। ঢুকতে পারাটা সহজ না। সাগরের আর কোনো উপায় নেই। এতো ভোরে কেউ থাকবে না এটাই একমাত্র ভরসা।
কাঁটাতার টপকে বাগানে ঢোকা সহজ না। পায়ে কেডস, তাই খানিকটা সুবিধাই হলো। সমস্যা হাত নিয়ে। যে কোনো সময় কাঁটাতারের খোঁচা খাওয়ার আশঙ্কা। উঠেছিল ভাল ভাবেই, নামতে গিয়েই যত বিপত্তি। লাফ দিতে গিয়ে তর্জনিটা কাঁটাতারে লেগে কেটে গেল অনেকখানি। রক্ত ঝড়ছে, পকেট থেকে রুমালটা বের করে কোনোরকম আঙুলটা পেচিয়ে বাগানে ঢুকে পড়লো। গুনে গুনে ২২টা গোলাপ তুললো সাগর। তুলতে গিয়ে গোলাপের কাঁটার খোঁচা খেলো আরও কয়েকটা। হাতে কোনো রকম গোলাপগুলো ধরে আবার কাঁটাতার টপকে বের হল সাগর।
এখন সমস্যা হচ্ছে এতো ভোরে সাথীকে পাওয়া। দরজায় টোকা দেওয়া যাবে না। সাগর চায়ও না ও এসেছে এটা অন্য কেউ জানুক। এই আসাটা কেবল সাথীর জন্য। সাথীদের বাসার সামনে এক চিলতে জায়গা আছে। সেখানে যেতেই অবাক হলো সাগর। সাথী দাঁড়ানো। সাগর ঠিক সামনে যেয়ে ২২টা গোলাপ হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো ‘শুভ জন্মদিন সাথী’।
সাথী ফুলগুলো নিয়ে বললো, কেন জানি মনে হচ্ছিল তুমি আসবে। তাই তো দাঁড়িয়েছিলাম।
তখনই সাথীর চোখ পড়লো সাগরের হাতের দিকে। রক্ত পড়ছে, অনেক রক্ত।
-রক্ত কেন? হাত কাঁটলো কি ভাবে?
সাগর কেবল হাসলো। তার সেই বিখ্যাত হাসি, যা সাথী মুগ্ধ হয়ে দেখে। আজ আর সাথী হাসি দেখে ভুললো না, ‘তোমার না কাল পরীক্ষা? এই হাত দিয়ে কেমনে কলম ধরবে? পরীক্ষা কিভাবে দেবে? কিভাবে কাঁটলো।’
-তোমার জন্য গোলাপ আনতে গিয়েই তো-
-পরীক্ষা দিবা কিভাবে?
আবারও হাসলো সাগর।
এইটুক পড়েই হো হো করে হেসে দিল সাথী। বহু কষ্টে হাসি থামিয়ে কেবল বলতে পারলো, ‘চাপাবাজ’। তারপর আবার হি হি করে হাসি। এই এক দোষ সাথীর, একবার হাসা শুরু করলে থামানো মুশকিল।
আমি বললাম, ‘এতো হাসির কি হলো?’
-হাসবো না। এতো মিথ্যা কি করে লেখো।?
-মিথ্যা কৈ লিখলাম।
-মিথ্যা না, আমার মোটেই জন্মদিন ছিল না। হলের সামনে মেয়েটা শেষবেলায় ১০টাকায় সবকটা গোলাপ ফুল বিক্রি করতে চাইলো, সেই ফুল তুমি কিনে দিয়েছিলে। তাও যদি ফুলগুলো তাজা থাকতো।
-কেন আঙুল তো কেঁটেছিল? আর আমার পরীক্ষাও ছিল। জানো আমার কলম ধরতে কষ্ট হয়েছে, খেতে গিয়েও কষ্ট হয়েছে।
-আবার চাপা। তেমন কোনো পরীক্ষা ছিল না। ক্লাশ টেস্ট টাইপ, ফাইনালেও যোগ হবে না। তাছাড়া, ফুলটা দেওয়ার সময় সামান্য একটু আঁচর লেগেছিল। রক্তও পড়েনি। দেখি দেখি আঙুলটা।
সাথী আমার হাতটা টেনে নিল। তন্ন তন্ন করে খুঁজে আমিও কাটা জায়গাটা খুঁজে পেলাম না।
হাতটা ধরে রেখেই সাথী বললো, এতো মিথ্যা কথা যে কিভাবে লেখো। আজব!
😀 খুব ভালো লাগলো লেখাটা ভাইয়া।
😀
ভাল লিখসেন এইটা বলা তো সূর্য পশ্চিম দিকে অস্ত যায় বলার মত।তাই সেটা আর বললাম না।তবে নামটা পছন্দ হইছে অন্য একটা কারণে।
R@fee
কারণটা কি? সেইটা কও
রাফি নামটা কি কারনে পছন্দ হইছে? 😀
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
আসাধারণের চেয়েও বেশী...
*****
নামটা অনেক ভালো লাগলো,লেখাটা খুব এ সুইট ভাইয়া। 🙂
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
অসাধারন শওকত ভাই !!!! :boss: :boss: :boss:
এত ছোট জায়গাতে কিভাবে এত কিছু বলে দিলেন ...
🙂
দুনিয়ার এত নাম থাকতে আমার সদ্য বিয়ে করা বউয়ের নাম - এতেই ভালো লাগলো । মনে হলো আমার জন্যই লেখা যেন ।
:guitar: :guitar:
@আমিন, যা তুই ৪৪ টা গোলাপ চুরি করে ভাবীকে দিয়ে আয়... =))
খাইছে, আমিন ভাই কি রূপবান রহিম কেস নাকি :grr: :grr: :grr:
আগেই :frontroll: :frontroll: :frontroll: কিয়ামত পর্যন্ত
=)) =)) =))
তোমাকে অনেক শুভেচ্ছা, নতুন বউকেও। অভিনন্দন
শওকত ভাই, :thumbup: :thumbup: :hatsoff: :hatsoff:
অসাধারন হয়েছে মাসুম ভাই 😀
এক কথায় অসাধারণ...........শওকত ভাই
:boss: :hatsoff: :salute:
অনুগল্প!! দারুণ। :thumbup: কেন যে এইরকম প্রেম প্রেম ভাব আমার কোনোদিনই আসে না!! ~x( ~x( ~x(
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
স্বীকার না করলে আমাদের কি করার আছে? 🙁
বয়সের প্রভাব নাকি, লাবলু ভাই? 😀
দুনিয়ার এত নাম থাকতে আমার সদ্য বিয়ে করা বউয়ের নাম – এতেই ভালো লাগলো । মনে হলো আমার জন্যই লেখা যেন ।
=)) =)) =))
বশ মাথায় ঢুকতাছে না। আরেকবার পড়া লাগব।
নতুন করে কি বলবো... অসাধারণ মাসুম ভাই :boss:
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
ক্যান জানি সিসিবিতে আপনার লেখা দেখলেই খুশি লাগে।
এইটা রেলের চাক্কায় তেল না, ১০০% সত্য কথা। 😛
প্রিয়তে নেয়ার ব্যপারে আমি খুব রক্ষণশীল।
কিন্তু আপনার লেখা পড়ার পর ওই লিঙ্কটাতে ক্লিক করতেই হয়। 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
কামরুল পোলাডা অনেক ভাল। 😛
ফাটাফাটি। কী বিশেষণে উল্লেখ করব বুঝছি না। স্যরি আসলে মোবাইলে পড়তে গিয়ে একটু গড়বড় হয়েছিল।
সত্য, :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
সিরাম সিরাম..................ভাই,আপনি একটা ''কী??!!!''
আমিন ভাই এর এই গল্পটা প্রিয়তে যোগ করা উচিত 😉 =))
=))
জটিল :clap: :hatsoff:
:boss:
:boss: :boss:
:clap: 🙂 :salute:
আজব! এমন গল্প ক্যামনে লেখেন? :hatsoff:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
বয়স বাড়ে নাই তাইলে ;)) ;))
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
:boss: :boss:
Life is Mad.
হুম৷ সাগরের কপাল ভাল ওর ২২টা ফুল দরকার ছিল এবং বাগানে কমপক্ষে ২২টা গোলাপ ছিল৷
না থাকলেও মনে হয় সমস্যা ছিল না, সাগর নিশ্চয়ই ভোরের সূর্য থেকে আসা বর্শার মত লাল আলোকরশ্মি গুলিকে গোলাপের পাপড়িতে পরিণত করে ফেলে ২২টি গোলাপ ফুল তৈরী করে ফেলতো৷
প্রেম কর্তে মঞ্ছায় :dreamy:
প্রেমের গল্প পড়তে মজা লাগে 😀
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এখনো প্রেমই করতে পারলাম না... 🙁
আরো বেশি দেরি হয়ে গেলে তো গোলাপ কিনতে গিয়া ফতুর হয়ে যাব দেখছি... :bash:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
সহজ কথায় লিখা চমৎকার একটা গল্প। :boss:
আজব! এমন গল্প ক্যামনে লেখেন? :hatsoff:
ক.রা. মাহমুদ ভাই
ওরে শওকত ভাই রে............সিরাম সিরাম :boss:
আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।