১।
জানুয়ারি, ১৯৭১।
কথায় আছে- ‘মক্কার লোক হজ্জ্ব পায় না’!!
অনিকের জন্য কথাটা শতভাগ প্রযোজ্য! ওর বাসা খুলনা পুলিশ লাইনের ঠিক পাশের গলিতেই। বাসা থেকে সার্কিট হাউজের মাঠে যেতে এক মিনিটেরও কম সময় লাগে। অথচ কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিনই বিকালের প্র্যাকটিসে ও সবার শেষে উপস্থিত হচ্ছে! কোচ সুনীলদা ওকে খুব স্নেহ করেন বলে তেমন কিছু বলেন না, শুধু ওয়ার্ম আপের সময় দুই চক্কর বেশি দৌড়াতে পাঠান।
ঘড়িতে এখন বিকাল চারটা পঁচিশ বাজে, অর্থাৎ আজকেও দশ মিনিট দেরি করে এসেছে অনিক। অন্যদিনের মতন কোচের নির্দেশের অপেক্ষা না করে নিজেই চক্কর দেয়া শুরু করল। অন্যরা পাঁচ চক্কর শেষ করে ফেললেও অনিক আরও দুই চক্কর দিয়ে সুনীলদা’র সামনে উপস্থিত হল। জানুয়ারির মাঝামাঝি বলে এখনো বেশ ঠাণ্ডা রয়েছে, এতক্ষণ তাই সোয়েটার পড়ে দৌড়াচ্ছিল। সাত চক্করের পরিশ্রমে শরীর ঘেমে যাওয়ায় সোয়েটার খুলে কোমরে বেঁধে নিলো ও।
-অনিক, আজকে তুই ব্যাটিং পাবি না। শুধু বোলিং এবং ফিল্ডিং করবি…
-সুনীলদা…
-আমি কোন কথা শুনতে চাই না! যা বলেছি তাই কর…
মাথা নিচু করে ধীরে ধীরে মিড অনে গিয়ে দাঁড়াল। শোভন এবং ফয়সাল ওর দিকে তাকিয়ে গা জ্বালানো হাসি দিয়ে প্যাড পড়া শুরু করল।
প্রথমে শারেক এবং সুমন বোলিং শুরু করল। ওরা দলের স্ট্রাইক বোলার। দুজনের বয়স ১৭-১৮ হলেও বেশ ভাল গতি আছে। এছাড়াও আরও তিনজন পেসার আছেন- কামাল ভাই, দীপ্তদা এবং টুটুল ভাই। ওদের বয়স আরেকটু বেশি-তিনজনই বি.এল কলেজে ডিগ্রী পড়ে। এই তিন জন এবং দলের ক্যাপ্টেন শাহিন ভাই ছাড়া বাকি সবাই ক্লাস নাইন থেকে শুরু করে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের মধ্যে। অনিক সিটি কলেজে পড়ে, ইন্টার পরীক্ষার্থী। এ বছরের মাঝামাঝি কোন এক সময়ে ফাইনাল পরীক্ষা হবার কথা রয়েছে। ছাত্র হিসেবে বেশ ভাল। খুলনা জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক দিয়েছিল, দুইটি লেটার সহ স্টার মার্কস ছিল।
ক্লাস বা পড়াশুনায় অনিক অনেক নিয়মিত এবং আন্তরিক। কিন্তু, দেশের পরিস্থিতি যেরকম উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে, মাঝে মাঝেই ক্লাস বাতিল হয়ে যাচ্ছে। গত মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া জেনারেল ইলেকশনের কারণেও অনেক দিন ক্লাস বন্ধ ছিল। অবশ্য, ইলেকশনের আগেও সকল স্তরের রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীও ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছিল। অনিক এবং ওদের বন্ধুরা ক্লাস বাদ দিয়ে খুলনা জেলার প্রায় প্রতিটি থানা-মহকুমায় গিয়েছিল। অক্টোবর এবং নভেম্বর মাস জুড়ে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করেছিল। ৭ ডিসেম্বরের ইলেকশনে আওয়ামী লীগ জেতার পর পুরো দেশজুড়ে খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়ল। খুলনার মতন শান্ত শহরেও সে আমেজ ভীষণভাবে বোঝা গিয়েছিল। বড়দের পাশাপাশি অনিকরাও ঐতিহাসিক বিজয়কে উৎযাপন করেছিল ধুমধামের সাথে। সবাই বলাবলি করছিল এবার বোধহয় আমাদের কষ্টের দিন ফুরোল!
কিন্তু গত একমাস ধরে পিপলস পার্টির অপপ্রচার এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের গড়িমসি দেখে আবার সবার মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে! সত্যিই কি ওরা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে?
যাই হোক, সুনীলদাকে কয়েকবার বলতে গিয়েও ওর সমস্যার কথা বলতে পারে নি অনিক। বড় চাচার বাড়িতে থাকে বলে অনেক কাজই নিজের ইচ্ছায় করতে পারে না। ওর বাবা-মা থাকেন গোপালগঞ্জে। পড়াশুনা যেন ভাল হয় এজন্য অনিককে খুলনায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। বড় চাচা পুলিশে চাকরী করেন, খুবই রাশভারী লোক। নিজের কোন বাচ্চা নেই, অনিককে নিজের ছেলের মতন দেখেন। মাস খানেক আগে বলে দিয়েছেন কলেজে যেহেতু তেমন পড়াশুনা হচ্ছে না, ও যেন বাড়িতে পড়াশুনায় আরও জোর দেয়। এজন্যই ইদানীং দুপুরের খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণের জন্য হলেও পড়তে বসতে হয়। ফলে প্র্যাকটিসে আসতেও দেরি হয়।
এমনিতে বড় চাচা ‘পড়ার সময় পড়া, খেলার সময় খেলা’ নীতিতে বিশ্বাস করেন। এমনকি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণেও বাঁধা দেন না। তাঁর মতে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকেই ‘অলরাউন্ডার’ হওয়া উচিত। অর্থাৎ শুধু পড়াশুনাই নয়- খেলা-ধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং রাজনীতিতেও অবদান রাখতে হবে। গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু যখন খুলনায় আসলেন চাচা ওকে সাথে নিয়ে সার্কিট হাউজের জনসভায় এসেছিলেন। ঐদিনের মত বিরাট জনসভা অনিক আর কখনো দেখেনি। হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল! সেদিনের কথা মনে হলে আজও শরীরের রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। বঙ্গবন্ধু সবাইকে জেনারেল ইলেকশনে অংশ নেবার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
শারেক ও সুমনের চার ওভার করে শেষ হবার পর সুনীলদা ওকে বল করার জন্য বললেন। অনিক লেগ স্পিন করে। শুরুতে মিডিয়াম পেস করলেও সুনীলদার পরামর্শে গত ৮-৯ মাস ধরে লেগ স্পিন করছে। সুনীলদার মতে ও নাকি ন্যাচারাল লেগ স্পিনার, ঠিক মত লেগে থাকতে পারলে খুব ভাল করবে! লেগ স্পিন করাটা কঠিন হলেও অনিক খুব দ্রুতই এতে পারদর্শী হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যেই লাইন, লেন্থের ব্যাপারে বেশ ভাল নিয়ন্ত্রণ তৈরি হয়েছে। গত তিন-চার মাস ধরে গুগলি রপ্ত করার চেষ্টা করছে। মোটামুটি আয়ত্তে এসেছে বলা যায়। তবে, কোন ম্যাচে এখনো মোক্ষম অস্ত্রটি ব্যবহার করে নি।
-আজকের সবগুলো বল গুগলি করবি, ঠিক আছে?
সুনীলদার কথায় অনিক মাথা ঝাঁকিয়ে জানালো সে শুনেছে, একই সাথে মুখটা আঁধার করে রেখে এটাও বোঝাতে চাইল যে মনে মনে ওঁর উপর অসন্তুষ্ট হয়ে আছে! অনিকের রান আপ চার স্টেপের, প্রথম তিনটি সাধারণ স্টেপ এবং শেষেরটি বড় করে লাফ দিয়ে। রান আপ মেপে কেডস এর প্রান্ত দিয়ে মাটিতে দাগ কেটে নিলো। ততক্ষণে সুনীলদা আম্পায়ারের জায়গায় দাঁড়িয়ে গিয়েছে, অনিকের বল ভালভাবে দেখার জন্য। ব্যাটসম্যান শাহিন ভাই, তিনি শুধু ওদের ক্লাবেরই সেরা ব্যাটসম্যান নয়- এই মুহূর্তে খুলনা বিভাগের প্রথম তিনজন ব্যাটসম্যানের একজন!
অনিকের করা প্রথম বলটি মিডল-লেগ স্ট্যাম্প বরাবর পিচ করে টার্ন নিয়ে লেগ দিয়ে বের হয়ে গেল। লেন্থ ভাল ছিল, তবে লাইন ঠিক ছিল না। শাহিন ভাই খেলার চেষ্টাও করল না। সুনীলদা কিছু না বলে পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।
অনিক আবার বল করল। এবার অফ স্ট্যাম্পে ছিল, ভেতরে ঢোকার মুহূর্তে শাহিন ভাই ফ্রন্টফুটে গিয়ে দারুণ ড্রাইভ করলেন, দর্শনীয় কাভার ড্রাইভ! সুনীলদা ‘গুড শট, শাহিন’ বলে উঠলেন। পরক্ষণেই অনিকের দিকে তাকিয়ে বললেন,
-এটাই করতে থাক, তবে অফ এর আরেকটু বাইরে রাখার চেষ্টা কর।
-কিন্তু শাহিন ভাই তো আবার ড্রাইভ করবে, তারপর আপনি আবার ‘গুড শট’ বলবেন। কিছুটা উষ্মার সাথে বলল অনিক।
-শট ভাল হলে সেটাকে ভাল বলব না? আজব! তবে শাহিন জানে যে তুই গুগলি করবি, ম্যাচে তো আর আগে থেকে কেউ জানবে না- তুই কি ধরনের বল করতে যাচ্ছিস? তাই না? এজন্যই বলছি, বলের পিচিং ভাল হচ্ছে। গুগলি করার জন্য অলমোস্ট পারফেক্ট।
অনিকের কালো হয়ে থাকা মুখের উপর কিছুটা আলো ফিরল যেন। পরপর আরও দু’টি বল একই ভাবে গুগলি করল- শাহিন ভাইও একই ভাবে পা নিয়ে ড্রাইভ করলেন। তৃতীয় বলটি কিছুটা ফ্লাইট দিয়ে ছাড়ল অনিক, অফ স্ট্যাম্পের উপর ছিল। তিনি কিছুটা এগিয়ে এসে ড্রাইভ করতে গেলেন, কিন্তু ব্যাটে-বলে হল না। কেননা এবারের বলটা গুগলি ছিল না, স্বাভাবিক লেগ স্পিন ছিল। ফলে শাহিন ভাই পরাস্ত হয়ে গেলেন। যদিও কোন উইকেট কিপার ছিল না, তবুও সুনীলদা আঙ্গুল তুলে আউট দেখালেন,
-শাহিন, তুমি আমার কথা শুনে গুগলি আশা করে থাকলে হবে? বল দেখে শট খেলতে হবে না?
শাহিন ভাই মনে হয় কিছুটা লজ্জা পেলেন।
-স্যরি, সুনীলদা। ভুল হয়ে গেছে…
সুনীলদা এবার অনিককে বললেন,
-কিরে? তোকে না সব গুগলি করতে বললাম?
-বলেছেন। তবে, শাহিন ভাইকেও বুঝতে হবে ব্যাট করার সময়ে আগে থেকেই শট চিন্তা করলে হবে না- বল বুঝে শট খেলতে হবে!
সুনীলদা কিছু না বলে একটু হাসি দিলেন।
প্রশ্রয়ের হাসি।
**************************
প্রতিদিনের মতন ১০ জন ব্যাট করার পর ওরা সবাই ফিল্ডিং এবং ক্যাচিং প্র্যাকটিস করা শুরু করল।
রয়েল বেঙ্গল ক্রিকেট ক্লাবে বর্তমানে ২০ জন ক্রিকেটার আছে। প্রতিদিন সবার ব্যাটিং করার সময় হয় না বলে দুই গ্রুপে ভাগ করে একদিন পরপর ব্যাট করে। আজকে অনিকের বদলে শিহাব ব্যাট করেছে।
উইকেট কিপার কাইয়ুমকে নিয়ে সুনীলদা সার্কিট হাউজের মাঠের পূর্ব প্রান্তে দাঁড়ালেন। কাইয়ুমের সামনে একটি স্ট্যাম্প পোঁতা আছে। দূরে অনিকরা সবাই এক লাইন করে দাঁড়িয়ে আছে। একজন করে সামনে আসবে, সুনীলদা ব্যাট দিয়ে বল মারবেন-একবার ক্যাচের জন্য, অন্যবার গ্রাউন্ড ফিল্ডিং এর জন্য। ক্যাচ নেবার পর বা গ্রাউন্ড ফিল্ডিং এর সবাইকে বল থ্রো করে এক উইকেটে লাগাবার চেষ্টা করতে হবে। থ্রো বাজে হলে এবং ক্যাচ মিস হলে শাস্তি হিসেবে দশবার বুক ডন দিতে হবে এবং আবার লাইনের পেছনে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। দুটোই ঠিক ভাবে হলে আজকের মতন ছুটি!
বরাবরের মতন অধিনায়ক শাহিনকে দিয়ে শুরু হল। ক্যাচিং, থ্রোয়িং দুটোই ভালভাবে করে সবার দিকে তাকিয়ে তিনি ‘টা টা, বাই বাই’ বলে চলে গেলেন। এরপর একে একে কামাল ভাই, দীপ্তদা, টুটুল ভাই গেলেন। বড়দের শেষ হবার পর অন্যরাও একে একে এগোল। শারেক এবং শোভন ক্যাচ মিস করলো। যথারীতি বুক ডন দিয়ে আবার লাইনের শেষে গিয়ে দাঁড়ালো। এবার অনিকের পালা।
খুব সহজেই ক্যাচ নিয়ে উইকেট বরাবর থ্রো করল। টক্কাস! সরাসরি উইকেটে গিয়ে লাগল। আজকের দিনে এই প্রথম কেউ উইকেটে লাগাল! পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই হাততালি দিল। এবার সুনীলদা গ্রাউন্ডে মারলেন। দৌড়ে গিয়ে প্রায় ৮০ গজ দূর থেকে আবার চমৎকার থ্রো করল অনিক। এবার উইকেটে না লাগলেও চমৎকার থ্রো হল, ঠিক স্ট্যাম্পের উপরে! ক্যাপ খুলে সবার দিকে ‘বাউ’ করে অনিক মাঠের বাইরে যেতে উদ্যত হল। এমন সময় সুনীলদা চিৎকার করে বললেন,
-অনিক অপেক্ষা কর। একসাথে যাব।
ক্লাব ঘরের তালা বন্ধ করে সুনীলদা যখন যাবার জন্য প্রস্তুত হলেন ততক্ষণে চারিদিকে অন্ধকার হয়ে গেছে। অবশ্য ক্লাব না বলে বাসা বলাই ভাল। দুই রুমের বাসার একটি অংশজুড়ে ক্লাবের জায়গা, বাকি অংশে সুনীলদা থাকেন। চিরকুমার মানুষ, দিব্যি চলে যাচ্ছে তাঁর। অনিক দেখল আশপাশের বাসা গুলোয় আলো জ্বলা শুরু হয়েছে। আজকে একটু বেশিই দেরি হয়ে গেছে। চাচা সম্ভবত চিন্তা করা শুরু করেছেন!
-এবার বল, তোর কি সমস্যা?
-কিসের সমস্যা?
-বিকেলে কি জানি বলতে চেয়েছিলি?
– ওহ, আচ্ছা… আসলে হয়েছে কি…
বলে ওর গত কয়েকদিন ধরে প্র্যাকটিসে দেরি করে আসার কারণ ব্যাখ্যা করা শুরু করল।
সব শুনে সুনীলদা বললেন,
-আমাকে আগে বলিস নি কেন?
-বলার সুযোগ দিলেন কই? বলে জিহ্বা দেখাল অনিক।
-আচ্ছা চল, তোর সাথে বাসায় যাই। অনেক দিন রাশেদের সাথে দেখা হয় না।
উল্লেখ্য, অনিকের চাচা রাশেদ আহমেদ এবং সুনীলদা স্কুল-কলেজের বন্ধু ছিলেন। সুনীলদা পরে ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, এক সময় দীর্ঘদিন সেকেন্ড ডিভিশন ক্রিকেটও খেলেছেন। পশ্চিম পাকিস্তানের কায়েদে-আজম ট্রফিতে খেলার জন্যও ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু খেলার জন্য লাহোর-করাচী যেতে হবে বলে রাজি হন নি। সুনীলদার মারাত্মক হোম সিকনেস আছে। যাই হোক, রাশেদ চাচা তার বাবা অর্থাৎ অনিকের দাদার নির্দেশে পুলিশে ঢোকেন। দুজনের মধ্যে অনেক বৈপরীত্য থাকলেও বন্ধুত্ব আগের মতনই অটুট আছে। সুনীলদার কাছে শুনেছে চাচাও নাকি এক সময় খুব ভাল ক্রিকেট খেলতেন। ফাস্ট বোলার ছিলেন। উচ্চতা বেশি হবার কারণে বোলিং এ গতির পাশাপাশি বাউন্সও পেতেন। কিছুটা নাম ডাকও হয়েছিল। তবে বাসা থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে বেশিদিন খেলা চালাতে পারেন নি। চাচার বন্ধু হওয়া কারণে কোচকে দাদা ডাকতে প্রথম প্রথম অনিকের অস্বস্তি লাগত। এখন অবশ্য অভ্যাস হয়ে গেছে।
-চলুন যাই, বলে সুনীলকে নিয়ে বাসার দিকে হাঁটা শুরু করল অনিক। (চলবে)
———————————-
বিঃ দ্রঃ সত্যি কথা বলতে কি-এটি আসলে গল্প/উপন্যাস নয়, অনেকখানিই সত্য ঘটনার উপর নির্ভর করে লেখা। বছর দুয়েক আগে আমি ঠিক করেছিলাম খুলনায় যতজন জীবিত মুক্তিযোদ্ধা আছেন সবার সাক্ষাৎকার নেবো, তাঁদের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনব। এই উদ্দেশ্যে প্রথমে যার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম তাঁর নাম জনাব এস এম আনোয়ার হোসেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে দীর্ঘদিন চাকুরী করার পর বর্তমানে তিনি অবসরে আছেন।
তাঁর সাক্ষাৎকার নেবার পরই ব্যক্তিগত কারণে আমাকে খুলনা ছেড়ে চট্টগ্রামে চলে যেতে হয়। ফলে, বাকি আর কোন মুক্তিযোদ্ধার সাথে দেখা করা সম্ভব হয় নি। সে সময় সিদ্ধান্ত নিই জনাব আনোয়ার হোসেনের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে আমি একটি গল্প/উপন্যাস লিখব (চেষ্টা করব আর কী!)। মূল চরিত্র ‘অনিক’ আসলে তাঁর উপর নির্ভর করেই লেখা। এটি লেখার সময় আমি যতটা সম্ভব ঐতিহাসিক সত্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। এজন্য জনাব আনোয়ারের হোসেনের বর্ণনার পাশাপাশি আমি সাহায্য নিয়েছি মোল্লা আমীর হোসেন রচিত ‘মুক্তিযুদ্ধে খুলনা’, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র এবং বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ওয়েবসাইটের।
আমার এক শুভাকাঙ্ক্ষী জানিয়েছেন লেখায় ইতিহাস একটু বেশিই চলে এসেছে। আমি ইচ্ছে করেই এটি করেছি। গল্পের ছলেও যদি নতুন করে দুই-একজন আমাদের গর্বিত ইতিহাস পড়ে, মন্দ কি? (অবশ্য সিসিবি’র ইতিহাস বলে এখানে বড় লেখা বা উপন্যাসের পাঠক নেই বললেই চলে। তবুও…)
মুক্তিযুদ্ধ এবং ক্রিকেট দুটোই আমার অত্যন্ত পছন্দের বিষয়বস্তু। আর এভাবেই ‘বলের বদলে গ্রেনেড’ এর জন্ম।
:clap: :clap:
অনেক দিন পর তোর দেখা মিললো, জুনা। ভাল আছিস আশাকরি।
শুরুতেই ১৯৭১ লেখা বলে নড়েচড়ে বসে পড়লাম। শুরুটা বেশ লাগলো কিন্তু। প্রতি বৃহষ্পতিবার একটা করে পর্ব দিয়ে যাস আমাদের।
বলের বদলে গ্রেনেড চলতে থাকুক, জুনা।
আপা, কেমন আছো?
আসলেই অনেক দিন পর...
অনুপ্রেরণার জন্য অনেক ধন্যবাদ, আপা! 🙂
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
জুনায়েদ ভাই, উপন্যাসটা ভালো লাগছে। আরও ভালো লাগছে খুলনার সব পরিচিত যায়গার নাম দেখে। চালিয়ে যান।
অনেক ধন্যবাদ।
খুলনার কথা আরও বেশি করে আসবে।
আশা করি সাথেই থাকবি।
ভাল থাকিস...
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:clap: :clap: