সিসিবিতে এসে দেখলাম আজ মাত্র একটা পোস্ট। ভাবলাম আগামি কাল পোলাপান মন্তব্য করবে কিসে। তাই সামুতে প্রকাশিত আমার একটা গল্প আজ দিয়ে দিলাম এখানে। গল্প হলেও এটা একটা সত্যা ঘটনা। ২/১ মাস এদিক ওদিক হতে পারে কারন ৩৭ বছর আগের ঘটনা সম্পূর্ন স্মৃতি থেকে লেখা।
প্রায় ৩৭ বছর আগের ঘটনা। আমার বয়স তখন চার বছরের একটু বেশি। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট কেও এখন বেচে নেই অথবা থাকলেও তাদের কথা আমার মনে নেই। ১৯৭১ সাল, স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়নি অর্থাৎ মার্চ মাসের আগের ঘটনা, তখন কিন্তু সবাই বলতো গন্ডোগোল, আমার বুদ্ধি হবার অনেক পরে আমি এটাকে স্বাধীনতার যুদ্ধ বলতে শিখেছি। আমাদের একটা পুরান আমলের ইট শুরকীর বাসা ছিল পাবনা শহরের দিলালপুরে লিয়াকত স্কুলের পিছনে (এখন ওই স্কুলের নাম সেলিম নাযির)। আমরা যুদ্ধ শুরু হবার পুর্বে আমার নানার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। আব্বা এড্রুক লিঃ এ চাকুরি করতেন। চাকুরি করার কারনে উনার যাওয়া হয়নি। সাথে ছিল আমার ২ বছরের ছোট বোন। আমার নানা ছিল বোনাইনগর ফরিদপুরের থানার দারোগা বা ঐ জাতীয় কিছু। ওনার কোয়ার্টার ছিল থানার সাথে। উনার নাম ছিল সালার উদ্দিন।নানী ছাড়া আর কেঊ হয়তো ওখানে থাকতোনা। মামারা পাবনায় পড়ালিখা করতো বলে নানী নানার সাথে একা বা ছোট মামা সহ থাকতেন। নানার কোয়ার্টার টা ছিল বড়াল নদীর ধারে। নদীতে থানার বিশাল এক নৌকা বাধা থাকতো। আমরা প্রতিদিন বিকালে ঐ নৌকায় বসে বাদাম খেতাম।
হঠাত একদিন অনেকগুলু লোক সসস্ত্র এসে বললেন আমরা মুক্তিযোদ্ধা আপানাদের থানা ঘেরাউ করে ফেলেছি আপনারা আমদের কাছে সারেন্ডার করে থানা ছেড়ে চলে যান। আমার এখনো স্মৃতিতে ভাসে তারা ২০/২৫ জন ক্রলিং করে পজিশন নিয়ে ছিল। সম্ভবত বিনা প্রতিবাদে থানা তাদের জিম্মায় দিয়ে আমদের রাতের অন্ধকারে থানার ঐ নোকায় পালানোর চেষ্টা করা হলো কারন খবর পেলে খুব তাড়াতাড়ি পাকবাহিনী চলে আসতে পারে। রাতের অন্ধকারে আমি, মা, আমার বোন, নাণী এবং আরো ২/১ জন বিস্বস্ত মাঝির মাধ্যমে ঐ এলাকা ত্যাগ করলাম। সারারাত নৌকা ভ্রমন। মাঝি কিছুক্ষন পরপরই নৌকা সাইডে ভিড়ায়। কারা যেন তল্লাশি করে আবার ছেড়ে দেয়। অন্ধকারে অতকিছু দেখি নাই বা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মাঝে মাঝে আমার ছোটবোন কান্দে আর আমার মা মুখে হাত দিয়ে শব্দ কমানোর চেষ্টা করে। এভাবে কয়েকদিন পর পাবানায় আমদের বাসায় চলে এলাম। এর পর আর কখন ওখানে যাওয়া হয়নি। আসলে আমি জানিওনা ওটা কোথায় এবং কিভাবে ওখানে যাওয়া যায়। আমার খুব সখ আমার সন্তানদের ওই জায়গাটা দেখায়। কিন্তু না জানার জন্য আমার ইচ্ছা পুরন হয়নি আজও। এখন বলতে গেলে পাবনার সাথে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আমদের বাড়ীটাও আর আমাদের নাই।
১ম
ভাল লাগলো আপনার অভিজ্ঞতা পরে ।
2য় B-)
১ম
কিরে তুই ১ম কেমনে? সিনিয়র কে ১ম দেখেও নিজেকে ১ম দাবী করার জন্য তোর ব্যান্চাই ।
:hatsoff: :hatsoff: :salute:
Life is Mad.
ভাই,
আপনার আসলেই পুরা ফটোগ্রাফিক মেমরি... :boss:
কলেজের ঘটনাগুলা যেইভাবে এতোদিন পরেও প্রায় পুঙ্খানুপুঙ্খ(বানান ঠিক হইল :-/ ?) ভাবে বর্ণনা দেন, তাতেই পুরা টাশকি খায়া যাই...
আর এখন তো দেখি আরো গেন্দাকালের ঘটনাও আপনার মনে আসে... 😮
মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের গল্প একজন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে শোনার রোমাঞ্চটাই অন্যরকম :hatsoff:
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
=)) =)) =))
তয় আমিও একমত... :thumbup:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে ইচ্ছে করে খুব।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আসেলই তোমার ফটোগ্রাফিক মেমোরি। এত ডিটেইলস মনে রাখো কিভাবে। স্মরণশিক্ত নিয়া ভাল একটা জোকস আছে। দেবো কিনা ভাবতাছি।
মাসুম ভাই ইদানীং খুব বেশি ভাবাভাবি শুরু করছেন 😛
দেই তাইলে। দিমু?
আবার কয় !! 😀
আসলেই খুব রোমান্ঞ্চকর ঘটনা। তার উপর নিজের চোখে মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষী হওয়াটা সত্যিই গর্বের।
ধন্যবাদ এডিসন ভাই ।
হুম। লেখাটা ভাল লাগছে।
আপনি চমৎকার করে তুলে আনেন সব কাহিনী।
পুরা জীবন্ত।
শুধুই :salute:
সৈয়দ সাফী