– হ্যালু, ক্যা ফুন করছেন?
– হ্যালো, সিরাজ ভাই আমি নাসিমা, ঢাকা থেইকা …
– কিরে নাসিমা? আসোস কেমন? তর ফুন না পাইয়া আমি এইদিকে চিন্তায় পইড়া গেচিলাম।
– বালা আছি। আফনের খবর কি হেইডা কন?
– আমি তো সবসময় ভালাই থাক্কি। তয়, দুকানের কামডা ছাইড়া দিসি।
– হায়! হায়! কন কি?
– হ, ওহন বইয়া বইয়া রিটারমিন খাইতাছি। হেঃ হেঃ হেঃ
– আরিকটা কাম পাইছেন নাকি মালিকে খেদাইয়া দিসে?
– হুন, তর সিরাজ ভাইরে খেদানোর ক্ষেমতা এই দোন্যাই কেরুর নাই…
– হ, হ, বুচ্চি … আফনেরে আমার চিনা আছে… আফনের মতো আকাইম্যা ব্যাডা আমি দুইডা দেহিনাই।
– তর এই কথার লাইগা তরে যে আমার কি করতে ইচ্চা করে …
– এই হুনেন, দুকান থেইকা ফূন করছি, ওহন রঙঢঙের কতা কয়োনের টাইম নাই। আফনে ঢাকা আইবেন কিনা হেইডা কন?
– ওহন ঢাকায় আমু কেমনে?! আমার কত কাইমকাইজ আছে জানোস?
– আফনের তো চাকরিই নাই। কিয়ের কাম আফনের? হুনেন, আমাগো খালু জাপান যাইবো দুই মাসের লাইগা। খালাম্মা এট্টা নিজোগো চিন-পরিচয় ব্যাডা খুঁজতাছে বাসায় থাহনের লাইগা। আমি আফনের কতা কইছি।
– আমার কথা কি কইচোত?
– কইছি, আফনে আমার বড় কাকার পুলা … হিঃ হিঃ হিঃ
– তুইতো দেহি ম্যালা চালাক হইয়া গ্যাচোস ঢাকা থাইক্কা! হুন, আমি এট্টু ভাইবা দেহি আর এদিকের কাইমকাইজ সাইজ দিয়া লই।
– হুনেন, আফনে তো এককান আকামের ঢেকি। ঢাকা আয়োনের একটা ব্যবস্থা হইছে, এইডা কিন্তু আর পাইবেন না। একবার আইলে তখন আরেট্টা কাম জুইট্টা যাইবো। না আইয়া শিবালয়ে বইয়া থাকলে চাকরি কেউ আফনেরে গালে তুইলা দিবো নাকি?
– মাইয়্যা মানুষ সবসময় এট্টা ফ্যাসিলিটির মইদ্যে ফালাইয়া দ্যায় … হুন…
– কি হুনুম? আফনের অইলো প্যাটে ক্ষিদা আর মুক্কে লাজ; মেনিমুইখ্যা বরকন্দাজ কুনহানকার… আমারে আর পাইবেন না কইলাম… বুচ্চেন?
– যা কতা হিকচোছ না! হুন, তর খালু যাইবো কবে?
– সিপটিম্মরে যাইবো, ওহন তো আগুষ্ট মাস, এ্যার পরের মাসে। খালু যাওনের আগ দিয়া আফনের আইতে হইবো কইলাম।
– আইচ্চা তাইলে তর খালাম্মারে আমার কথা ফাইন্নাল কইয়া দে।
– আমি খালাম্মারে কওনের পর কিন্তু মুড়ামুড়ি কর্তে পারবেন না, পাক্কা কথা কন ওহনি।
– ক্যা? আমার কতা তর কানে ঢুকতাছে না, নাকি? কি কইলাম তরে?
– চ্যাতেন কিয়ের লাইগ্যা?
– এ্যা? চেতুম না, উনারে ধইরা সুহাগ করুম! হুন, তর খালুর লগে আমারে ফুনে ধরায় দেস।
– খালু লাগবো না। খালাম্মাই কেস ফাইনাল। এ্যাগো বাসায় মাগী মোড়ল মিনসে গাড়ল, বুচ্চেন? … আমার আর আফনের লাহান… হিঃ হিঃ হিঃ
– তরে ওহন সামনে পাইলে থাপড়িয়া তর দাঁত ফালিয়ে দিতাম।
[হিঃ হিঃ হিঃ … … ]
– হুনেন, হুদাই এতো ভাব নিয়েননা। পাটুরিয়ার মন্নান ভাই আমার খুঁজখবর নিয়া যায় রিগুলার। হেই সিয়েনজি চালায়তাছে ঢাকায়। বুচ্চেন? আফনের তো কুনো কামের মুরোদ নাই। নাসিমা এতো সস্তা না! দাম আছে।
– মন্নানের লগে যাবি তো যা। তরে কি আমি বাইন্দা রাখছি?
– মন্নান ভাইর কতা কইচি আর ছ্যাত কইরা জ্বইল্লা উঠছে, না? ওই মিয়া বুজেন না, আপনেরে ঢাকায় ক্যান আইতে কই? হেইডা কিয়ের লাইগা? যত্তসব।
– হ, ওহন আর ভুজুংভাজুং মারন লাগবো না। তর যে অদপতন হইতাছে, দিনদিন এট্টা খ্রাপ মাইয়া হইয়া যাইতাছোস।
– হ, আমি তো খ্রাপ মাইয়া। খ্রাপ মাইয়ার লগে দুই দিন কতা না কইলে আবার আফনের ঘুম অয়না। সিরাজ ভাই হুনেন, মায় কইলো মোমেনা নাকি বাপের বাড়িত ওহন … আপনের লগে দেখা হয়নাই? হিঃ হিঃ হিঃ
– না, হয়নাই। অয় বাপের বাড়ি আইলে আমার কি?
– ক্যান? অয় না আপনের পুরানু দিল্লাগি! অয় তো আপনেরে অনেক চাইতো … হিঃ হিঃ হিঃ
– একটা চটকানি দিমু তরে ধইরা।
– এইযে হুনেন, আমি ওহন ফুন রাখুম। সাত মিনিট হইছে।
– আপনে খালাম্মার ফুনে ফুন দিয়েন। রিজিয়া বুরে দিয়া করাইয়েন। ডাইরেট কইরেন না কইলাম। খালাম্মায় ব্যাটা মানুষ চাইলে দিবার চায় না। মিজাজ দ্যাখায় পরে।
– আইচ্চা, করুমনে। তুই বালা থাকিছ। হুন, তর লাইগা লাল চুঁড়ি কিইন্না রাখছি। আহনের হময় আনুমনে।
– করচেন কি? আফনের পকেড তো এমনিতেই ফুডা, আবার আমার লাইগা কিনচেন? আইচ্চা হুনেন, আমি খালাম্মার কাচ থেইকা কুনফাম হইয়া আপনেরে পাক্কা জানামুনে।
– হ, ঠিকাসে, জানাইস। কতা হইবোরে নাসিমা। ভালা থাহিছ আর মন দিয়া কাইমকাইজ করিস।
– আইচ্চা, আফনেও ভালা থাইক্কেন। সিলামালিকুম।
– হ…।
.
ছবি: জিওফ্রে হিলার, ২০০৯
খ্যাক খ্যাক।
পত্থমে হান্টসভিল, আর এইবার এক গুতায় শিবালয়।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
এরপরের গুতায় যদি টরন্টো হয়, তখন কি হপে! 😮
আমার বন্ধুয়া বিহনে
না ...... এর পরেরটা মিডল ইস্টে যাবে। পশ্চিম দিকে যাচ্ছে গল্প।
একটু বুঝায় বলেন তো, স্বপ্নচারী ভাই, ঘটনাটা কি?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
মশকরা কর শালা ??
কি যে বলেন দুলাভাই! আপনার সাথে মশকরা? ছিঃ ছিঃ এসব খ্রাপ কাজে আমি নেই।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
তা কোনসব খ্রাপ কাজে আছোস ক'তো দেখি :grr:
আর তোরা দুইটা যে কুটুম্ব লাগোস আগে কইবিনা? 😛
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
:clap: এই তাইলে কাহিনী!!!! :shy:
কেমন আছো ভাইয়া?
ভালো লাগার কথা জানিয়ে গেলাম। প্রথমটাতে মন্তব্য করা হয়ে উঠেনি। তবে পড়া হয়েছে। 🙂
ভালো থেকো।
অনেক ধন্যবাদ, দিহান। তোমাদের জন্যে শুভকামনা। 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
কোন এলাকার ভাষা? মানিকগঞ্জ? 🙂
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
হুঁ, চেষ্টা করলাম একটু। মিক্সড হয়ে গেলো বোধহয়। আসলে ইউনিভার্সিটে আমাদের এক বন্ধু ছিল মানিকগঞ্জের, ওর মুখে খুব শুনতাম।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
হয়েছে বোধহয়। আমিও ঠিক জানি না। আমারও এক ইউনিভার্সিটির বন্ধু ছিল মানিকগঞ্জের, তার মুখে শুনতাম 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
দারুন প্লট। তুমি এভাবে এগুবে প্রথমটা পড়ে বুঝতে পারিনি। রকিং :thumbup:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ ভাই, আপনার কমেন্টে সবসময় উৎসাহ পাই। ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ক্যাডেটরা আসলেই বস :clap:
একেবারে। যেমনঃ কামরুল হাসান (১৯৯৬-২০০২, ফকক)। 🙂
পড়বার জন্য ধন্যবাদ, হাসান।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
নতুনত্বের স্বাদ পেলাম... অসাধারণ তো....
-আলীম হায়দার.1312.
জেনে আনন্দিত হলাম। তোমার কবিতা পড়ছি। লিখতে থাকো। ডিপার্টমেন্ট কোনটা তোমার?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
৫ তারা দাগায়ে গেলাম
তাই! সার্ফ এক্সেলঃ দাগেই শেখা, দাগেই মজা ...
ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ব্যতিক্রম ধর্মী প্লট।
পড়ে মজা পাইছি।
অ ট নাম দেখে মনে করছিলাম আগের টার কন্টিনিউ 😕
এমন একটি ব্যতিক্রমধর্মী কমেন্টে আমিও মজা পাইছি 😀
আমার বন্ধুয়া বিহনে
কই থেকে কই নিয়া গ্যালেন 😮
পুরাই চমক :thumbup:
কেনু? কেনু? মানিকগঞ্জ - ঢাকা কি বেশি দূর? যাত্রীসেবা, পদ্মা লাইন, নবীন বরণ, ভিলেজ লাইন, জনসেবা একটায় গেলেই হয়। চমক কেটে যাবে একেবারে।
ধন্যবাদ। 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
না না ভাইয়া, আমি ১ম পর্ব আর এটার কথা বলছিলাম 🙂
ড়াব্বি ভাই,
দেশে আসেন। বান্দরবান শঙ্খ নদীর পাড়ে বইসা কথোপকথণ করতে মঞ্চায় 😀
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
জিহাদ, ইমোশনাল হয়ে পড়লাম।
দেশে আসলে এবার রেমাক্রি, টিন্ডু থেকে বান্দরবান পযর্ন্ত একটা রিভার ক্রুজ করবো শঙ্খ নদীতে একসাথে। আটকে আছিরে ভাই 🙁
আমার বন্ধুয়া বিহনে
😀
ওই তোর হইসে কি? সব জায়গাতে দাঁত কেলায়ে জাসগা।
x-( x-(
আমি মোবাইল দিয়া ঢুকি তাই 🙁
ভাইয়া সংলাপ পড়ে তো মনে হল হয় সত্যি নাসিমা লিখছে, অথবা লেখক নাসিমাকে কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। :grr: কেম্নে কি??
এই ধাঁচের আলাপ গুলো অনেক শুনেছি, ঠিক এই রকম সহানুভূতি দেখাই নি কখনও। আপ্নি আসলে বড় মনের মানুষ। :salute:
মেলিতা, ধন্যবাদ। নাসিমা এবং সিরাজরা তো আমাদের সুবিধাপ্রাপ্ত জীবনের সাথে মিলেমিশে আছে। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়।
সমবেদনা দেখাইনি। স্নিগ্ধ ছলনার কথোপকথন ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
দুইটা পর্বই চমৎকার লাগল রাব্বী ভাই। এই পর্বটা একটু বেশি ভালো লাগল। 🙂
তানভীর, পড়ে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। উৎসাহ পেলাম।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
:))
পাইছি সিরাজী হাউস! স্ট্রাট ফ্রন্টরোল বিগিন ...
রাকেশ, খবর কি? আছো কেমন?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সিসিবির অন্যতম কথা শিল্পী রাব্বী :hatsoff:
দুইটা কথোপকথন পুরা দুই মেরুতে গেসেগা দেখি। বাফার জোনের কিছু মনে হয় সামনে আসতেসে :thumbup:
রাব্বী, মইনুল, তাইফুর, রহমান, নাহ [৯২-৯৮] এর সবাই দেখি সেইরকম লেখে :thumbup: :thumbup:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আর সায়েদও সেইরকম লেখে। :thumbup: কাইয়ূমও খুউব ভাল লিখতো। এখন সে একজন খেলাপি লেখক :thumbdown:
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আরে সায়েদের নামটা ক্যাম্নে মিস করলাম :bash: ধুররর ~x( আমাদের আরেকজন তারকা ব্লগার :thumbup:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
স্নিগ্ধ ছলনা, তাই না?
হবে হয়তো। আসলেই হয়তো সেটা স্নিগ্ধ ছলনা।
তিনটা পর্বের মাঝে শেষেরটা পড়েছি সবার আগে। মাঝে গত দুইদিন ভাবছিলাম ওই জেনারেশনের মানুষ না হয়ে কিভাবে তাদের কথা ধরলেন। তারপরে প্রথম পর্বটা পড়লাম আজ। মোটামুটি, গতানুগতিক, হয়তো পুর্ণেন্দু বাবু বা অন্যেরা মিলে ক্লিশে করে ফেলেছে, আমাদের মধ্যমানের মধ্যবিত্তীয় কথাবার্তাকে। এখন কোন উহ্য কথাও আমরা চেহারা না দেখে কানে কানে বুঝে ফেলতে পারি, টেক্সটে তো তার চেয়ে বেশি আসে।
তবে আমি রীতিমত মুগ্ধ হয়ে গেলাম এই ২য় পর্বে! এতোটা সাবলীল, আর ভিভিড (ভিভিডের ভালো বাংলা নেই!)। এটা তো শুধু জেনারেশনের বদল নয়, স্থানের বদল, মানুষের শ্রেণীর বদল, প্রজন্মের বদল বলতে পারছি না, এই শ্রেণীর মানুষ হয়তো প্রজন্ম প্রজন্ম ধরে একই নিয়মে জীবনপাত করছে। উপরে উপরে যে মানুষ বা তার ভাষা দেখা যায়, শোনা যায়, সেখানে একটু নজর ফেললে হয়ত এমন ডিটেইল দেখা যেতো। আরেকটু মনোযোগ দিলে হয়তো নাসিমার ছল- কিংবা ফোন রেখে দেয়ার পরে সিরাজের মৃদু হাসি দেখতে পেতাম।
আপনার লেখাটা সেই চিন্তা সেই কল্পনাকে উস্কে দিলো। টুপি বিয়োজন!! :hatsoff:
আন্দালিব, তোমার কমেন্ট খেয়াল করলাম আজ। এই পর্ব সর্ম্পকে তোমার ভাল লাগা এবং মূল্যায়ন নিঃসন্দেহে আমাকে লিখতে উৎসাহ জোগাবে। কথোপকথনটি কল্পনাকে এতোটা উস্কে দিতে পারবে লেখার সময় চিন্তা করতে পারিনি। নিরন্তর ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
একদম মনের কথা বলসেন ভাইয়া। এ কারণেই এই পর্বটা বেশি ভালো লাগছে।
দেরী করে পড়ার অসুবিধা হচ্ছে.. কমেন্ট দিতে যেয়ে দেখা যায়, যা বলতে চাচ্ছি তা অন্যরা আগেই লিখে রেখেছে। এইরকম অসাধারণ গল্প হয়তো অনেকবার পড়লেও ভালো লাগে, কিন্তু কমেন্ট যত ভালোই হোক, তা কি লেখকদের দুইবার পড়তে ভালো লাগে? নিজে লিখি নাতো, তাই উত্তরটা জানি না।
তয়, কোনো রহমে উত্তরটা যদি পজিটিভ হয়, তাইলে পরে.. সব কয়টা কমেন্ট আরো একবার পইড়া লইয়ো 🙂 😀
খাইছে! দুইকলম ব্লগ লিখেই লেখক হয়ে গেলাম! 😛
আমার বন্ধুয়া বিহনে