দেরিতে হলেও লিখছি। অল্প কথায়। অনেকদিন ভেবেছি পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং আদিবাসীদের কথা নিয়ে সিরিয়াসলি কিছু লিখবো। সেটি এখনো হয়নি। কবে হবে তাও জানিনা। ভাবলাম, আজ এলোমেলো কিছুই লিখি যা গত ক’দিন ধরে পত্রপত্রিকায় পড়ছি। একটি ব্যাপার দেখলাম, বছর ঘুরে বছর আসে পার্বত্য চট্টগ্রামে ন্যাক্কারজনক অমানবিক ঘটনা ঘটেই চলে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আমরা শহুরে শিক্ষিত সমাজ এক ধরনের অদ্ভুত এবং নিষ্ঠুর নীরবতা পালন করি। আমি জানিনা ঠিক কেন।
এপ্রিলের গত একটি সপ্তাহ ঘটে চলা খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি নিয়ে আমার বলার কোন ভাষা নেই। পাহাড়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যায়-অবিচারের লিস্টি করলে তার শেষ হবে না। গতবছর, তার আগের বছর, গত পাঁচ বছর, গত ৩৫ বছর – পার্বত্য শান্তি চুক্তির আগে এবং পরে। অসংখ্যবার। পার্বত্য চট্টগ্রামে যে মানুষ থাকে এই মানবিক বিষয়টি আমাদের মাথায় কাজ করে না। তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের কাছে সেখানকার বনজ সম্পদ, দেশের পাহাড়, মাটি, সৌন্দর্যের লীলাভূমির পর্যটন সম্ভাবনা ইত্যাদি ইত্যাদি।অঞ্চলটিকে আমরা একটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবেই শুধু বিবেচনা করি। অথচ মানুষগুলো বিপন্ন। তারা তাদের আত্ম-পরিচয়ের দাবিতে দশকের পর দশক আন্দোলন করে যাচ্ছে। পাহাড়ের মূল সমস্যার একটি ভূমি। সেই কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা থেকে মানুষগুলোর বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ দিয়ে শুরু। তা এখন বাঙালি সেটেলার দিয়ে চরম ভূ-রাজনৈতিক সংকটের আকার ধারণ করেছে। আর বাংলাদেশ আমলে তো পাহাড়ের ভয়াবহ রক্তাক্ত ইতিহাস। একটি রাষ্ট্রের সাথে মোকাবিলা করা তো আর চাট্টিখানি কথা না। আমরা শুধু সংঘর্ষটাই দেখি বড় করে, তার নেপথ্য কারণগুলো অবহেলা করে যাই দিনের পর দিন।
পাহাড়ের মানুষগুলো বর্তমানে তাদের নিজেদের আদিবাসী দাবি করে। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চায় এই পরিচয়ের। তারা আদিবাসী তো বটেই। কিন্তু বাংলাদেশ সেইটা মানতে রাজি না। কারণ আদিবাসী স্বীকৃতি দিলে ভূমি অধিকার, মানবাধিকারসহ নানারকম আন্তর্জাতিক ইন্সট্রুমেন্ট তাদের হাতে চলে যাবে। সরকার তখন চিপায় পড়বে। আমরা পাহাড়ি আদিবাসীদের ইতিহাস, সংস্কৃতি কিংবা জীবনাচরণ নিয়ে কখনোই জানার চেষ্টা করিনা। তাদের ন্যূনতম সম্মান দেখাতেও নাক সিটকাই। আমি নিজে বাঙালিদের দেখেছি তাচ্ছিল্য করে ম্রোচাদের, “চুদানির মুরং”, খুমিদের “খুমির বিচি” বলে ডাকতে। সাধারণভাবে তাদের সবাইকে “উপজাতি” বলে ডাকতে ভালবাসি আমরা। আদিবাসীরা যে তাদের উপজাতি বললে অপমানিত বোধ করে এই সামান্য ভব্যতা এবং শিক্ষা আমাদের নেই। বাঙালি/বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ এবং সার্বভৌমত্বের গর্বে বুকের ছাতি দুই ইঞ্চি ফুলিয়ে ফেলি। অথচ তার চাপে যে আরেকজন মারা পড়ছে সেই অনুভূতি বোঝার মতো বোধশক্তি আমি ভোঁতা করে রাখতেই ভালবাসি। আবার রাষ্ট্রীয় কোন অনুষ্ঠানে তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী নাচ, পোশাক তুলে ধরে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলি – দেখো সবাই আমাদের সংস্কৃতি কত বর্ণাঢ্য!
পাহাড়ের মানুষরা তাদের জুমচাষ কেন্দ্রিক জুম্ম জাতিসত্তার স্পিরিট নিয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে পার্বত্য আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন দাবি করেছিল। বাংলাদেশ তা গলায় পাড়া দিয়ে দাবিয়ে রেখেছে।নিউট্রালাইজ করেছে। ভাবছে সফল হয়েছে। কিন্তু জাতিগোষ্ঠীর জাতীয়তাবাদী আন্দোলন পূর্ণ সফলতার মুখ না দেখলেও তার অনেকরকম অর্জন ঠিকই থাকে। তার একটি হলো বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং উগ্র জাতীয়তাবাদকে তাদের হাড়ে হাড়ে চেনা হয়ে গিয়েছে। আদিবাসীদের হৃদয়ে যে ক্ষত তা দিনে দিনে আরো পাকাপোক্ত হয়েছে। যেসব কারণে তাদের স্বায়ত্তশাসনের দাবি উঠেছিল, তার প্রতি এখনো পর্যন্ত কোনদিন যথাযথ সম্মান দেখায়নি বাংলাদেশ। একটি শান্তিচুক্তি হয়েছে, তার ষোল আনার বার আনাই বাস্তবায়ন করা হয়নি। সেইটা নিয়ে বরং বাংলাদেশ ভোটের রাজনীতি করতে ভালবাসে। ফলাফল যা হবার কথা ছিল তাই হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো। পান থেকে চুন খসলেই জাতিগত দাঙ্গা বাধছে বার বার। ভবিষ্যতে যে দাঙ্গা আরো বাড়বে এমনভাবে চললে সে বিষয়ে অনেকেই আশংকা করেন।
পাহাড়ের সমস্যা গত ৩৫ বছরে ভয়াবহ জটিলাকার ধারণ করেছে। কোন সমাধান নেই, পরিস্থিতি মোটেই এমন না। প্রথমে আমাদের প্রধান দুই দলের পার্বত্য বিষয়ে পোলারাইজড রাজনীতি বর্জন সবথেকে জরুরী। সেটা তাদের রাজনীতির সংস্কৃতিতে নেই। সংবেদনশীল গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সমাধান না এনে দমন-নিপীড়ন চালালে সমস্যা আরো জটিলতর আকার নিতে থাকবে এটা স্পষ্ট। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে সবপক্ষের সমতলে জুজুর ভয় দেখানোটা বন্ধ করা প্রয়োজন। সেইসাথে পাহাড়ে দরিদ্র নিরক্ষর, স্বল্প শিক্ষিত, কাটমোল্লা এবং কুশিক্ষিত বাঙালি সেটেলারদের বিষয়ে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান বের করা খুব প্রয়োজন। তাদেরকে উসকে দেয়া বা তাদের অন্যায় অযৌক্তিক দাবিকে অন্ধ সমর্থন দিয়ে যাওয়া কোন কাজের কথা না। তাতে সমস্যা আরো বাড়বে। পাহাড়ের এ্যাট্রোসিটিতে কার কি লাভ হয় জানিনা। আদিবাসী তাতে বসত ভিটা হারায়, নিগৃহীত এবং লাঞ্ছনার শিকার হয়, গ্রাম-ছাড়া হয়, আহত হয় এবং চরম পরিণতি হয় দাঙ্গায় নিষ্ঠুর জীবনাবসান। আর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মনে বাংলাদেশের প্রতি ঘৃণা এবং ক্ষোভ বাড়তেই থাকে। বছর দুই আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি ক্যাম্পের কাছাকাছি শৌচাগারের গায়ে একটি গ্র্যাফিটি দেখেছিলাম, তেমনটি আবার কোনদিন ঘটলে অবাক হবার তেমন কারণ থাকবে না –
শান্তি বাহিনীর হাতিয়ার
গর্জে উঠুক আরেকবার।
খাগড়াছড়ির ঘটনায় আমি খুবই গভীরভাবে মর্মাহত। প্রতিবার যখন এমন হয় আমার আদিবাসী বন্ধুদের কাছে অপমানে-লজ্জায় সাংঘাতিক ছোট হয়ে যাই। খুব অসহায় লাগে যখন তাদের ক্ষোভ, হতাশা এবং ভীতির কথাগুলি শুনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং আদিবাসী ইস্যুতে সংবেদনশীলতা, সচেতনতা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম নীতির পরিবর্তনের কোন বিকল্প নেই।
****
তানভীর মোকাম্মেলের কর্ণফুলির কান্না ডকুমেন্টরির ইউটিউব লিংক। ডকুমেন্টরিটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল এবং সম্ভবত আছে। তবে খুঁজলে ডিভিডি পাওয়া যাবে। অবশ্যই দেখা কর্তব্য এমন সত্যানুসন্ধানী একটি ডকুমেন্টরি।
****
আরো জানতে ক্লিক করুন এখানে।
————————————-
ছবিসূত্র: সিএইচটি নিউজ আপডেট
খুবই চমৎকার ও সময়োপযোগী লেখা।
এই বিষয়ে আমার মতামত অনেকটা আপনার মতই। শিক্ষিত মহলের অদ্ভুত নীরবতা আসলে পক্ষপাত নয় কিছুটা মিডিয়ায় না আসাটা বড় কারণ। আর পুঁজিবাদী মিডিয়া এই ব্যাপারগুলো নিয়ে জল ঘাটাতে চায় না কারণ তাতে তাদের পাবলিসিটি বাড়ে না। তারা বরং বুদ হয়ে থাকে ক্রিকেট দলের চামড়া ছিলা টক শো করতে।
আদিবাসীদের প্রতি অপকীর্তির ছোটখাটো লিস্ট সামুতে কয়েকজন ব্লগারের পোস্ট থেকে দেখেছিলাম বছর খানেক আগে। একজন বাঙালি হিসাবে আমি কুন্ঠিত বোধ করেছি তাদের প্রতি আমাদের বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রনীতি ও সামরিকনীতিতে। বাঙালি সেটেলার নিয়োগের সময় নাকি হিসাব করে দেখানো হয়েছিলো দেশে এত ঘনবসতি সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামে মাথাপিছু লোক এত কম হবে কেন?? সো ঢুকাও লোক। অথচ আমরা ভুলে যাই ওদের জীবন ধারার কষ্টের কথা। আমরা ভুলে যাই এক জমিতে জুম চাষ করলে তা পরের বছর অব্যভৃত থাকে। আমরা ভুলে যাই তাদের জীবন জীবিকার জন্য ক্রমাগত সংগ্রামের কথা।আদিবাসীদের মাঝেও মনে হয় একটু গ্রুপিং আছে। মানে একটা সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে ডোমিনেট করতে যায়। এর ফলে তুলনামূলক অনগ্ররসর আদিবাসীদের অবস্থা আসলেই সংকটাপন্ন।
আমাদের সবার তথা আমাদের রাষ্ট্রের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক এই কামনা ছাড়া আর কিছু করার নেই।
অফটপিক: বস, অদ্ভুত, শাসন এই শব্দগুলির বানান একটু ঠিক করে দিয়েন।
শিক্ষিত মহলের নীরবতা শুধু মিডিয়ার জন্য না - এটা দৃষ্টিভঙ্গীর ব্যাপার। ব্লগও তো একরকম মিডিয়া তাই না।
সেটেলার বাঙালি ছিল ভূমিহীন বাঙালি। নিয়ে যাওয়াটা একটা স্ট্রাটেজি ছিল কারণ সেসময় পার্বত্য অঞ্চলে তেমন বাঙালি ছিল না। এইটারে বলে বেঙ্গলাইজেশন - বাকিটা বুঝে নাও।
আদিবাসীদের রাজনৈতিক দল দুইটা - জেএসএস এবং ইউপিডিএফ। প্রথমটা শান্তি চুক্তির পক্ষের এবং দ্বিতীয়টা বিরোধী। পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিরতার পর সবসময়ই "ডিভাইড এন্ড রুল" করার প্রবণতা ছিল। বড় এবং ক্ষুদ্র জাতির আদিবাসীর একটা ডিভাইড আছে - মাইনোরিটি এমং দি মাইনোরিটিস। আবার সেটেলার বাঙালিদেরও একটা রাজনৈতিক দল আছে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আচ্ছা ভাইয়া, আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে কি কি চিপায় সরকার পরবে? আর এতে আদিবাসীদেরই বা কি কি লাভ হবে? মানে শাসনগত দিক দিয়ে আদিবাসী আর উপজাতির মধ্যে পার্থক্য কোথায় কোথায়?
উপজাতি কথাটা কলোনিয়াল। যারা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি চর্চা করতো এবং সাধারণ নিজস্ব টেকনোলজিতে জীবনধারণ করতো কলোনিয়াল মাষ্টাররা তাদের ট্রাইব নাম দেয়। দিয়ে একটা স্পেশাল স্ট্যাটাস দিয়ে দেয়। সেইটাই আধুনিক অনেক রাষ্ট্রে চলে আসছে। বাংলাদেশেও, বাংলাতে উপজাতি। জাতির থেকে ছোট এবং অবমাননাকর। এবং এই সুযোগে রাষ্ট্র তাদের নানাভাবে বঞ্চিত করতে থাকে (কাপ্তাইয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম বহুবছর বিদুৎ পায় নাই, সেখানকার বনভূমি, জমি ইত্যাদি)। আর আদিবাসী/ইন্ডিজিনাস পিপল হলো বর্তমানে আত্মস্বীকৃত পরিচয় যা সংস্কৃতি, পরিচয় এবং ভূমির উপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ আদিবাসীর গুরুত্বপূর্ন অধিকারসহ স্বীকৃতি দিয়েছে।
আমি পয়েন্ট টু পয়েন্ট যাচ্ছি না। প্রধানগুলো বলছি -
১. আদিবাসীর স্বাধীনভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রথাগত জীবনাচনের অধিকার থাকবে এবং স্বাধীনভাবে তা চর্চা করতে পারবে। সে তার আত্মপরিচয় নিশ্চিত করতে পারবে।
২. জোরপূর্বক আদিবাসীর ভূমি থেকে উৎখাত করা যাবে না এবং ঐতিহ্যগতভাবে ব্যবহার করে আসা তার ভূমির অধিকার দিতে রাষ্ট্র বাধ্য এবং তাদের ঐতিহ্যগত মালিকানা নিশ্চিত করবে। [আদিবাসীদের ব্যক্তিমালিকানা ছিল না, কালেকটিভ মালিকানা এবং তার কোন দলিল নেই]
৩. রাষ্ট্র আদিবাসীর সাংস্কৃতিক এবং বিশ্বাস ব্যবস্থার চর্চা স্বাধীনভাবে করা নিশ্চিত করবে এবং ঐতিহ্যগত সেরিমোনিয়াল আর্টিফেকটস, স্থান, প্রতিষ্ঠান এগুলো রক্ষা করবে।
৪. রাষ্ট্র তার ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রক্ষা করবে এবং তাকে স্বাধীনভাবে চর্চা করার সুযোগ নিশ্চিত করবে। আদিবাসীদের অধিকার খর্ব করে এমন আইনকানুন পাল্টাতে হবে।
৫. রাষ্ট্র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করে আদিবাসীর স্বার্থের বিরুদ্ধে বিদ্যমান সকল শোষন-বৈষম্য দূর করবে।
৬. রাষ্ট্রের যেসব নীতি আদিবাসীর জীবনে প্রভাব ফেলবে তা নির্ধারণের জন্য রাষ্ট্রকে আদিবাসীর মতামতকে মূল্য দিতে হবে, সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাকে অর্ন্তভূক্ত করতে হবে।
মোদ্দাকথা, আদিবাসী স্বীকৃতি দিলে রাষ্ট্রের আদিবাসীর আত্মপরিচয়, সাংস্কৃতিক অধিকার, ভূমি অধিকার যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে। কনসিকোয়েন্স হলো, সেটেলার সরিয়ে নিতে হবে/ নিদেনপক্ষে কমপেনসেশন দিতে হবে। সামরিক বাহিনীর ক্যান্টনমেন্ট বাদে বাকি স্থাপনা সরাতে হবে হয়তো। এটা অবশ্য পার্বত্য চুক্তিতেই আছে। আদিবাসীদের প্রথাগত প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা বাড়িয়ে কার্যকরী করতে হবে। এখন চারটি এ্যাডমিনিসট্রেশন আছে – দুটি রাষ্টের এবং দুটি আদিবাসী – তার একটি প্রথাগত, আরেকটি নির্বাচিত হবার কথা যদিও মনোনয়ন দিয়ে দিয়ে সরকার চালাচ্ছে। সরকারের দুটি এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের একটির চলে যেতে হবে অভ্যন্তরীন তদারকি থেকে যেটি এখন সবথেকে ক্ষমতাশালী প্রতিষ্ঠান পার্বত্য অঞ্চলে। কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নাই, সেটা দেয়া লাগবে। এরকম আরো অনেক ব্যাপার নিয়ে সরকার চিপায় পড়বে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
যথা সময়ে লেখাটার জন্য ধন্যবাদ রাব্বী ভাই।
আমাদের মধ্যে কেন জানি এই একটা ব্যাপার নিয়ে অসম্ভব নীরবতা দেখা যায়। এমন কী ইউনীতে আমার বন্ধুদের মধ্যে যে সবচেয়ে প্রগতিশীল বলে পরিচিত সেই দেখি একদিন প্রশ্ন করছে আদিবাসীদের আলাদা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দাবী দাওয়ার কোন ভিত্তি নেই। পরে এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে দেখি যে ছেলেটা আমিরিকান ফরেন পলিসির ইতিহাস, ভবিষ্যত নিয়ে চমতকার একটা বক্তৃতা দিতে পারে সে কীনা নিজের দেশের একটা অংশের বঞ্চনার ইতিহাস নিয়ে কিছুই জানে না এবং আমার মনে হয় এটাই হয়ত দেশের শিক্ষিত সমাজের পাবর্ত্য চট্টগ্রাম নিয়ে অজ্ঞতার আসল চিত্র। এ যেন একটা ট্যাবু। এ বিষয়ে জানা যাবে না, কথা বলা যাবে না আর কেউ যদি ভুল করে কথা বলেও ফেলে তাইলে কথা উঠবে তার দেশপ্রেম নিয়ে। তবে আমরা ভুলে যাই আইয়ুব খান যে লিগাসি শুরু করেছিল আমরা এখনো তা বহন করে যাচ্ছি।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সেইটাই - পুরাটাই অজ্ঞতা এবং প্রপাগান্ডা পলিটিকস। মানুষকে কোনদিন সম্মান এবং ভালবাসা না দেখালে সে কোনদিন আপন হয় না।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
নিজেদের ভিতরে পাকি মানসিকতা লালন করে আমরা পাকিদের গালি দেই। ট্র্যাজেডি............
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
যেখানে লাল-সবুজ দেশপ্রেম দেখানো দরকার সেখানে সবুজ-সাদা চাঁদ-তারার প্রেমে মগ্ন! আর যেখানে ভালবাসা এবং সম্মান দেখানো প্রয়োজন সেখানে দেখাই উগ্র জাতীয়তাবাদ এবং স্বার্বভৌত্বের দোহাই। বড়ই বিচিত্র ট্রাজেডি!
আমার বন্ধুয়া বিহনে
Rabbi vai,
(sorry, I am facing a wired prob in my comp regarding Bangla font, hope all to bear with it).
Apni khub e shundor blog likhen. Dharabahikotay eita o oshadharon. But finally ki bolte chaisen bujhi nai. Do u want that we fulfill all their demand? Do you support that we make CHT an autonomous state/province of our country?
Pore laptop thik hole details likhbo, ekhon shudhu etotuku boli, ei prob nie tension kore mathar chul pakaite hobe na, desher onek bigganir mathar chuk paktese eita nie, tara onek gobeshona kortese. Apnara relax korte paren. Kono karon to obosshoi ase, r na hoy shobai emon dekhe o na dekhar van kno kortese tai na...!!..amader desher jonno valo kisu nie chinta koren, amader deshe main prob poverty, illiteracy, corruption, power crisis etc. Eigular ekta bihit koren apnara shobai mile, pore eder nie chinta kora jabe mone hoy.
But Desh o jati, desher shomossa o jatir vobisshot nie chinta korar jonno dhonnobad.
বলতে চেয়েছি, পার্বত্য বিষয়ে আমাদের খুবই স্থবির এবং একচোখা একটি মাইন্ডসেট আছে। সেটার পরিবর্তন প্রয়োজন।
Do u want that we fulfill all their demand? Do you support that we make CHT an autonomous state/province of our country?
আদিবাসীদের যেসব জোরালো দাবিদাবা আছে সেগুলো নিয়ে কার্যকরী নেগোসিয়েশন হওয়া উচিত বলেই মনে করি। দেশের বিভিন্ন জেলার দাবিতে যদি আরা দুই/তিনটা বিভাগ হতে পারে তাহলে অটোনামাস স্টেট/প্রভিন্স আদিবাসীরা চাইলে তাকে দমন-পীড়ন চালানো সাড়ে তিন দশক ধরে সেইটা ঠিক সমর্থনযোগ্য না। এইটার রাজনৈতিক নেগোসিয়েশন এবং সমাধান জরুরী। ইন্টারনাল ডিপলোমেসি বলেও একটা ব্যাপার আছে। বলোতো দেখি অটোনামাস প্রভিন্স নাকি মিলিটারি প্রভিন্স কোনটা বেশি ভাল? অটোনামাস প্রভিন্স যে ফুল ক্যাপাসিটিতে এখন চায় এমনও না – শুধু তাদের কিছু দাবিদাবা আছে সেগুলোর প্রতি যাতে সরকার সদয় হয় সেটাই তাদের চাওয়া – আমি যতটুকু বুঝি। আর দাবিদাবার মূল কারণগুলোর প্রতি সংবেদনশীল হওয়াটাও গুরুত্বপূর্ন, তাহলে পানি এতোদূর গড়াতো না। সত্তরের দশকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন অনেক জাতিই করেছে, এটা তো বড় ক্যানভাসে দেখলে কোন অপরাধ না।
ei prob nie tension kore mathar chul pakaite hobe na, desher onek bigganir mathar chuk paktese eita nie, tara onek gobeshona kortese. Apnara relax korte paren.
এইটা আবার কেমন কথা?! তোমার মতো চৌকশ তরবারীর সম্মান পাওয়া মানুষের কাছ থেকে জাতি আরো বিবেচনাসম্পন্ন কথা আশা করে। এমন না যে তুমি এগুলো জোক করে বলেছো। টোনটা ভাল লাগলো না।
Kono karon to obosshoi ase, r na hoy shobai emon dekhe o na dekhar van kno kortese tai na…!!
আমার কাছে মনে হয় কারণটা – তথ্যের সেনসরশীপ, প্রোপাগান্ডা পলিটিকস এবং অজ্ঞতা।
..amader desher jonno valo kisu nie chinta koren
পার্বত্য সমস্যাটারে কি কম গুরুত্বপূর্ন মনে হয়? আমাদেরকেও কিন্তু বছর চল্লিশেক আগে কম গুরুত্ব দেওয়া হতো।
amader deshe main prob poverty, illiteracy, corruption, power crisis etc. Eigular ekta bihit koren apnara shobai mile, pore eder nie chinta kora jabe mone hoy.
দেশে তো মানুষ এবং সমস্যা দুইটারই কোন অভাব নাই। আমি না হয় এ্ইটা নিয়েই বললাম। সমস্যা তো কিছু নাই।
সবশেষে, এইরকম একটা কমেন্ট না আসলেই অবাক হতাম! আমার জন্য একটা রহম করো, প্রতিউত্তরটা বাংলায় দিও। বাংলা ব্লগে ইংরেজি কমেন্ট পড়তে ভাল লাগে না। আর আমাকে বাংলায় প্রশ্ন করলে বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করবো। মূল্যবান কমেন্টের জন্য তোমাকেও ধন্যবাদ, সোলায়মান 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বি ভাই, আমার শব্দ ভান্ডার এর সীমাবদ্ধতার কারণে আমি সঠিক tone এ কথা গুলা বলতে পারি নাই. ক্ষমা করবেন. আর ইংরেজি তে লিখার ইসসা সীল না , আমি কম্পিউটার কম বুঝি, কি জানি হইসে, বাংলা type হস্সে না, খমা করবেন. আপনার সাথে কখনো কথা হয় নাই, খালি blog পরি, ভালো লাগে, তাই আজকে মনে হলো একটু কমেন্ট করি, আসলে বেশি কিছু চিন্তা করে করি নাই. আপনার কথা ঠিক এ, এই সমসার সমাধান হইলে আর কেউ খুশি হবে নাকি জানি না, আমার মত যাদের ঐখানে জঙ্গল এ চাকরী করতে হয় , তারা খুশি হবে এইটা বুঝি. আমিও চাই এই ঝামেলা মিটুক. কথা গুলা হতাশা থেকে ই লিখসি, বুঝিতে পারি নাই ঠিকমত. সাথে একটা কথা বলতে পারি, আমার চাকরি র অভিগ্গতা থেকে, এইটা আসলে অনেক বড় খেলা, এইটা এত তারাতারি শেষ হবে না মনে হয়, আর পাহাড়ি রা যা চাস্সে, আসলে তাদের দাবি দাওয়া ও অনেক বেশি বলে ই হয়ত সরকার কর্ণপাত করতেসে না.
ভুল হলে খমা করে দিবেন please . (আমি এখন কানাডা তে আসি, আপনারে দেখতে মন চায় ..!!!)
সমস্যা নাই, সোলায়মান। ব্লগ ওপেন ফোরাম। মতামত শেয়ার করার জন্যই সবাই এখানে কথা বলে। আদিবাসীদের চাওয়া বেশি শুনাইতে পারে তবে তাদের নানারকম অভিজ্ঞতায় দেয়ালে পিঠ ঠেকানো অবস্থা। আস্থার চরম সংকট তৈরি হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যারা একটু স্বচ্ছ ধারণা রাখে সবাই জানে যে সেখানে অনেকগুলো পক্ষ মিলে জটিল অবস্থা। মাঝখান দিয়ে আদিবাসীরা সান্ডউইচড। আর বড় খেলা বলতে ভারতীয় জুজুর ভয়তো? আর কত? কন্সপিরেসি থিওরি অনেক গেলানো হয়েছে ৩৫ বছরে। খোলামনে উদার দৃষ্টিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যু বোঝার করো "জঙ্গলের" মানুষগুলোর সাথে যে অন্যায় করা হয়েছে এবং হচ্ছে সেটা তুমিই অনুধাবন করতে পারবা। তোমার মতো মানুষজনের অনুধাবন করাটা জরুরী কারণ তুমি একদিন অনেক বড় নেতৃত্বে যাবা। কর্ণফুলির কান্নাটা দেখো।
ইমেইল করো।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সরকার ওদের প্রতি যা করতেসে সেইটা কতটুকু ঠিক আমি জানিনা। তবে আমার কাছে মনে হয় ওদের অনুভুতিটা ঠিক সেরকম, যেরকম আমাদের ছিল ৪০ বছর আগে। তারা নিজেদেরকে বঞ্চিত ভাবে, তারা ভাবে তাদের সম্পদ আমাদের উপকারে লাগানো হচ্ছে অথচ তাদের কোনো উন্নতি হচ্ছে না। আর ভাবনাটা পুরোপুরি ভুল ও না।
"আমরা" এবং "ওরা" - এই দূরত্ব যতো কম হবে ততোই মঙ্গল। ইউনিতে আদিবাসী কোন ছেলে/মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করে দেখো যে কি চমৎকার বন্ধু হয়। আমার অভিজ্ঞতা খুব ভাল ছিল।
আদিবাসীরা মনে করে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসনিক ব্যবস্থা হলো এক ধরনের নিও-কলোনিয়ালিজম। আমরা এখনো আদিবাসীদের আপনজন করে নিতে পারিনি। বেশ কঠিনও। কল্পনা চাকমা লিখে একটা সার্চ দাও।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ভাইয়া কলেজ কিংবা ভার্সিটি কথাও কোনো আদিবাসী বন্ধু পেলাম না। মাঝে মাঝে আফসোস হয়। কিন্তু মুখচোরা স্বভাবের কারণে অন্য কোথাও যেয়ে বন্ধুত্বও করতে পারি না।
রাব্বি ভাই, (আপনি এই বেপারে হয়ত কিসু জানবেন, আমার কিসু দৌব্ত clear করেন ত)
১. একটা জিনিস আপনি খেয়িয়াল করেছেন কিনা জানি না (আমার ও ভুল হতে পারে) --আমি কলেজে থাকা অবস্তায়, এমন কি CHT তে আমার প্রথম চাকরি করার সময় (৮-৯ বছর আগে) ও আমরা এই পাহাড়ি জনগুষ্টি কে 'উপজাতি ' বলে জানতাম.....এখন সবাই তাদের ' আদিবাসী' বলে...আপনি ও আপনার লিখায় ' আদিবাসী' বেবহার করেছেন. আসলে এই ' উপজাতি ' আর ' আদিবাসী' এর মধ্যে গেনজাম টা কোথায়? কিসুদিন আগে আবার আমাদের PM এক সরকারী নির্দেশের মাধ্যমে তাদের ' nre ' জনগুষ্টি বলতে বলেসেন..!!! এইটার কি কারণ হতে পারে?
২. আপনি ত বেশ অনেকদিন থেকে কানাডা তে আসেন, এইখানকার ' native কানাডিয়ান' রা কি কি সুবিদা ভোগ করে জানেন নাকি?
৩. আমার জানা মতে উপজাতি দের অনেক সমসসা এর মধ্যে সাম্প্রতিক বড় সমসসা হস্সে ভূমি সমসসা. সাম্প্রতিক কালের বিভিন্ন দাঙ্গা র মূল কারণ ও এইটা...এমন কি সরকার এর অনেক চেষ্টা সত্যে ও ভূমি commission এইটা নিয়ে কোনো কাজ করতেসে না? এই ভূমি নিয়ে বোরোধ টা কোথায়?
তোমার জানার প্রচেষ্টাকে আমি স্বাগত জানাই এবং পজেটিভলি দেখি।
১. ট্রাইব/উপজাতি একটা উপনিবেশিক টার্ম এবং অবমাননাকর। আদিবাসী মোট ১১টি জাতি এবং তাদের আলাদা আলাদা নাম আছে। তারা যখন জাতীয়তাবাদী আন্দোলন করেছিল তখন জু্ম্ম জাতি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয় দেয় সবাই একটা প্লাটফর্মে সমবেত হবার জন্য তার ভিত্তি ছিল জুম চাষ। সরকার সেটা মানে নাই। সেই সশস্ত্র জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এখন আর নেই। তো তারা এখন নিজেদের আদিবাসী/ইন্ডিজিনাস পিপল হিসেবে দাবি করে। এই দাবিটা আসলে গ্লোবাল, ভূমিপুত্র (সান অব দ্য সয়েল) হিসেবে। এই নাম-পরিচয়ের সাথে কিছু অধিকারের লিগাল ইন্সট্রুমেন্ট আছে জাতিসংঘের দেয়া। সরকার এটা দিতে চায় না। তারা কিছু তথাকথিত এক্সপার্ট দিয়ে বিষয়টি এড়ানোর জন্য তাদের “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি” নাম দিয়েছে তাদের সম্মতি/মতামত ছাড়াই। আমি আদিবাসী বলছি কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষরা তাদের এখন এই পরিচয় দাবি করে। এটা একটা মানুষকে সম্মান দেখানোর ব্যাপার।
২. নেটিভ কেনেডিয়ানদের তো বলে র্ফাষ্ট নেশনস/ইন্ডিজিনাস পিপলস কারণ এই দেশটাই তাদের ছিল। এখানেও সাংঘাতিক বর্বরতা ছিল। এখন রিকনসিলিয়েশনের চেষ্টা চলছে। ফার্ষ্ট নেশনদের মর্যাদা বহুগুন বাড়ানো হয়েছে। তাদেরকে অনেক বিষয়ে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। ফার্ষ্ট নেশন কার্ড আছে যেটা দেখালে যেকোন কেনাকাটা থেকে শুরু করে সবখানে ট্যাক্স মওকুফ হয়। শিক্ষা, বাসস্থান থেকে অনেককিছুই ফ্রি। তাদেরকে অনেক সম্মানজনক পদ দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রে। নুনাভুট প্রভিন্সটাই ইনুইটদের। গুগল করো আরো স্পষ্ট ধারণা পাবে।
৩. ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানের ধীরগতি এবং স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে সমস্যা। এককভাবে তিনি সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা রাখেন। তিনি চান ভূমি জরিপ প্রথমে হবে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির আগে। কিন্তু আদিবাসীদের বেশিরভাগের হাতে ভূমির ব্যক্তিমালিকানার কাগজপত্র নেই। তারা প্রথাগত কালেকটিভ ভূমি অধিকার ভোগ করে আসছে। সেটেলাররা অনেকে আদিবাসীদের জমি দখল করে নিয়ে কাগজ বানিয়েছে। বাঙালি সেটেলারদের হাতে পাহাড়ি জমির মালিকানা দলিল আছে। জরিপ হলে আদিবাসীরা ধরা খাবে। তাই তারা জরিপ আগে হোক এটা চায় না। জরিপ আগে হলে বাঙালি সেটেলাররা লাভবান হবে। ধরো, গ্রামে তোমার বাপদাদার জায়গা কেউ দখল করে নিয়েছে। তুমি নিঃস্ব। তোমার দলিল নেই। আইনকানুন এবং প্রশাসন দখলকারীর পক্ষে। তখন তুমি কি তোমার শেষ শক্তিটুকু দিয়ে দখলকারীকে প্রতিহত করতে না? বাঙালি সেটেলার জমি দখলের ফন্দিফিকিরে যে আলেম লোক এটাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই! আমরা তো চাই যে সেটেলার সব দখল করে নিক - নাকি?!
আমার বন্ধুয়া বিহনে
শান্তিচুক্তিতেও তারা নিজেদেরকে উপজাতি হিসেবে দাবি করেছিল, তখন তাদেরকে এ নিয়ে 'অপমানিত' হতে দেখা যায় না। 'জুম্ম' কথাটা স্রেফ একটা কথার কথা। চাকমা আর বড়জোর মারমারা ছাড়া অন্য উপজাতিদের মধ্যে এ ব্যাপারটা খুব একটা 'চেতনা জাগানিয়া' নয়।
আসল কথা হচ্ছে, আদিবাসী একটা ট্রেন্ড এবং এতে করে জাতিসংঘের রেজুলেশন মোতাবেক কিছু অদ্ভুতুড়ে দাবি আদায় করা সম্ভব হবে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে, আদিবাসী অধ্যুসিত এলাকায় সেনা প্রবেশ নিষিদ্ধ। আপনি কি পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূ-রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা জনিত স্পর্শকাতরতার গুরুত্ব অস্বিকার করেন? সেক্ষেত্রে চিন্তা করতে পারেন পরিস্থিতি কি হতে পারে?
আর সত্যিকার অরথেও তারা সেখানের ভূমিপূত্র নয়, ২-৩শ বছর আগে আরাকান থেকে পালিয়ে আসা জনগোষ্ঠিকে আপনি নিশ্চয়ই ভূমিপূত্র বলতে পারেন না। তাহলে তারা সেখানের আদিবাসী হয় কি করে?
তারা ইংরেজ আমলে করা 'হিল ট্র্যাক্টস ম্যানুয়েল-১৯০০' অনুসারে সেখানে সেখানকার বাইরের অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ হোক তা চায়। এবং সেটি অনুসারে সমস্ত বাঙালিদের 'অবৈধ' গণ্য করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে সামষ্টিকভাবে নিজেদের মালিকানায় নিতে চায়। অর্থাৎ তাঁদের দাবির অ্যাঙ্গেলটা আইনী। কিন্তু, ইংরেজরা চলে যাওয়ার পর তাঁদের করে যাওয়া বিধিমালার আইনি গুরুত্ব কতটুকু? পাকিস্তানিরাও সেটা বাতিল করেছিল একবার। আর এককেন্দ্রিক একটা দেশে উপনিবেশিক আমলের মত কোন এলাকাকে 'সামষ্টিক' ভাবে দাবি করাটা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত?
সেটাই ... ইন্টারনাল কলনিয়ালিজম বেশি যুক্তিযুক্ত!
বেশ ওভার কনফিডেন্ট মন্তব্য। আলট্রা ন্যাশলালিস্টিক মগজ ধোলাই!
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ধন্যবাদ রাব্বী, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাটা নিয়ে লেখার জন্য। মাঝে-মধ্যে আমার সন্দেহ হয়, ক্যাডেটরা দেশ-বিদেশ-সমাজ-রাজনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অর্থনীতি, বিচার-শাসন নিয়ে আদৌ ভাবনা-চিন্তা করে কিনা! আরব বিশ্বে এই যে বিশাল সুনামি ধাক্কা দিয়েছে, তা আমরা কি দৃষ্টিতে দেখছি? জাপানে এতোবড়ো বিপর্যয় আমাদের কী কোনোভাবে প্রভাবিত করেছে? দেশে এই যে একের পর এক ইস্যু তৈরি হচ্ছে তা নিয়েই বা আমরা কি ভাবছি? ব্লগে তার কোনো ছাপ দেখি না। হতাশ হই। জানি না, আজকের প্রজন্ম রাজনীতিবিমুখ হয়ে গড়ে উঠছে কিনা!
বড়সরো একটা মন্তব্য বা নিজের পর্যবেক্ষণ দিতে চাইছি, কিন্তু সময় পাচ্ছি না। প্রথম প্যারাটা লিখেছি ৩ ঘণ্টা আগে।
একটা পয়েন্ট। অনেকে বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের এক-দশমাংশ। আর ওখানে লোক থাকে মাত্র কয়েক লাখ। এখন সম্ভবত ১২ লাখ পেরিয়ে গেছে। আর দেশের বাকি অংশে থাকে সোয়া ১৬ কোটি মানুষ। তাহলে ওইটা বাঙালি দিয়ে ভর্তি করে ফেললে সমস্যা কি?
এরা সম্ভবত জানেনা, পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ জমি চাষাবাদ আর বসবাস উপযোগি। আর কৃষিই হচ্ছে ৯০ শতাংশের একমাত্র জীবিকা।
সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। অস্ত্রের চোরাচালানের প্রশ্ন। ভারত দখল করে নেওয়ার জুজু।
দেশের বাকি নয়-দশমাংশে কয়টা সেনা ক্যাম্প আছে সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য। সারা দেশের সীমান্ত যদি বর্ডার গার্ড রক্ষা করতে পারে, পার্বত্য চট্টগ্রামে পারবে না কেন? ৫টি সেনানিবাস (তাই তো, যদি ভুল না হয়), জালের মতো ছড়ানো শ শ সেনা ক্যাম্প যে মূলতঃ ৩ বা ৪ লাখ সেটেলার বা বসতি স্থাপনকারীদের রক্ষার জন্য সেটা নতুন করে বলার কি আছে! আর ভারত-চীন তো বাংলাদেশের বাজার অনেক আগেই দখল করে নিয়েছে। আর এইটুকু জমি সঙ্গে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের চাপ নিয়ে কী কোনো লাভ আছে?
পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্ত্র ঢোকে কোথা দিয়ে? চট্টগ্রাম (১০ ট্রাক অস্ত্র বন্দরেই খালাস হয়েছিল। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রাম হয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল), কক্সবাজার, টেকনাফ ছাড়াও সম্ভাব্য ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত। এতো সেনা, বর্ডার গার্ড মোতায়েন থাকতে ওই অঞ্চলে অস্ত্র ঢোকে কী করে? নাকি সমস্যা জিইয়ে রাখতে ইচ্ছে করেই ঢোকানো হয়!
আজ আর না। পরে সময় পেলে আরো লিখবো। (সম্পাদিত)
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাই, ব্লগ নিয়ে আপনার হতাশাটা আমারো হয়। ব্লগে সবরকম লেখাই আসা উচিত। খাইছি, ঘুমাইছি, ঢিলাইছি টাইপ ব্লগ কিংবা সাহিত্য ব্লগ আমার ভালই লাগে। কিন্তু সিরিয়াস বিষয় নিয়ে সিসিবিতে লেখালেখির সত্যিই একটা দৈন্য অবস্থা। এই ব্লগটা দেবার আগে আমি নিজেই ইতস্তত করেছি। কারণ এটার রিপার্কেশন বিভিন্নরকম হতে পারে। আমি কখনো সক্রিয় রাজনীতি করিনি। কিন্তু সবসময়ই রাজনীতি সচেতন থাকার চেষ্টা করি। পলিটিক্যালি কারেক্ট অবস্থান নেয়াটা জরুরী।
আমি নিশ্চিত আপনি পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে আমার চেয়ে বহুগুন ভাল জানেন। দীর্ঘসময় পার্বত্য ইস্যু নিয়ে সংবাদ বিড করার অবিজ্ঞতা। সবরকম পরিবর্তনের সাক্ষী আপনি। আমার সামান্য যতটুকু জানাশোনা, সবই শান্তি চুক্তির পর। মানুষগুলো দেশের অনেক বড় সম্পদ পার্বত্য অঞ্চলের জমির চেয়ে - এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। বৈচিত্রই বেশি সুন্দর।
পার্বত্য সমস্যাটা রাজনৈতিক, সেটার মিলিটারি সমাধান তৈরি করে সমস্যাটা জিইয়ে রাখা হয়েছে। সামরিক বাহিনীতে পার্বত্য বিষয়ের ওরিয়েন্টেশনটাও সঠিকভাবে হয় না বলে আমার ধারণা। আশাকরি যারা এই প্রজন্মের অফিসার তারা নিজ আগ্রহে বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন আনুক। আর আমাদের সবার পার্বত্য বিষয়ে যে ভুল ধারণা মনে আছে এবং ফ্যালাসি কাজ করে সেগুলো ভাঙ্গা প্রয়োজন।
আপনর এই কমেন্টটির প্রয়োজন ছিল। ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ভাইয়া পাহাড়িদের মাঝে স্থায়ীভাবে বাঙালি ঢুকানো আমি সাপোর্ট করিনা।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাব্বি তোর লেখাটা খুব ভালো হইছে। আমার জানামতে কর্ণফুলী বাঁধের কারণে ওদের মন্দির ভেসে যায়। ভারতে মসজিদ ভেঙ্গে দেওয়ার কথা উঠলে আমরা কি করি?
পৃথিবীর অনেক জায়গায় গির্জায় মসজিদ বানানো হয়েছে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ধন্যবাদ রাজীব ভাই। কাপ্তাই বাঁধের কারণে কৃষিজমি, ঘরবাড়ী, উপাসনালয়সহ প্রাক্তন রাঙামাটি শহর পানিতে তলিয়ে যায়। যে কারণে বহু মানুষ ডেভেলপমেন্ট রিফিউজি হয়। তাদের জমির দলিলদস্তাবেজ না থাকার কারণে ক্ষতিপূরনটুকুও পায়নি বেশিরভাগ মানুষ। উপরন্তু সেই বরাদ্দ টাকার একটি অংশ নিয়ে প্রশাসনের লোকজন দূর্নীতি করেছিল। তবে পরিস্থিতি বেশি জটিলকার নেয়া শুরু হয় সত্তরের দশকের শেষের দিকে বাঙালি সেটেলারদের আনার পর থেকে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
১। আদিবাসী বনাম পাহাড়ী বিতর্ক। কেন? জারী রাখার স্বার্থটা কাদের? নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে পাহাড়ীরা কিভাবে আদিবাসী হয়? আদিবাসীত্বের সংগা কি স্থান নির্ভর না সময় নির্ভর?
২। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্বায়ত্বশাসন কি আদৌ বাস্তবানুগ? আলাদা স্টেট হওয়ার সম্ভাবনা কেন বাঙালি(বাংলাদেশী)রা মেনে নেবে? গণতন্ত্র কি সংখ্যাগুরুদের চাপিয়ে দেওয়া একনায়কতন্ত্ররই অপর নাম নয়? অথবা সেই মৌলিক স্বার্থবাদ?
৩। বাঙালি(বাংলাদেশী) সেটেলাররা যে কার্যকারণেই আজ সেখানে থাকুক(কারণ বিশ্লেষণ গৌণ স্বভাবতই) না কেন, তাদের স্বার্থ কীভাবে দেখা হবে?
৪। ইন্দিরা গান্ধির প্রত্যক্ষ মদদে শান্তিবাহিনী তৈরী হয়েছিলো, সেক্ষেত্রে বিদেশী প্রভাব কি আমরা একেবারেই উপেক্ষা করবো?
৫। পৃথকতার ধারণা এখন সারা বিশ্বেই গৌণ, মূলত সেগ্রেগেশনের চল এখন, আমরা কেন সর্বক্ষেত্রে তাদের আত্মীকরণে জোর দেবো না পৃথকতার বদলে? প্রয়োজনে কোটা বাড়াবো, আলাদা ভার্সিটি খোলা হবে, দেশের জন্য প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ করা হবে । কেন আমরা শুরুতেই পৃথকতার সুর ধরছি?
৬। আদিবাসী/পাহাড়ি ইস্যু কি মূলত চাকমাদের বক্তব্য না সমগ্র জাতিগোষ্ঠিগুলোরই বক্তব্য? আমরা যদি আলাদা স্টেটই বানাই তবে কি গ্যারান্টি আছে যে তারা নতুন শোষকের ভূমিকায় নামবে না?
----
আলোচনার একটা ফ্রেম আপাতত দাঁড় করালাম; আপনার সহযোগিতায় হয়তো আরো এগোবে।
ধন্যবাদ।
অনাহুত সাহেব, আপনার প্রশ্নগুলো নিয়ে দিনের পর দিন তর্ক-বিতর্ক করা যায়। আমি আমার মতো করে উত্তর দেবার চেষ্টা করছি।আপনার পরিচয় পেলে আরো সাচ্ছন্দ্যে উত্তর দিতে পারতাম। আপনার ছয়টি প্রশ্নের প্যাকেজের ভিতর মোট ১৪টি প্রশ্নের হোমওয়ার্ককে ধন্যবাদ।
১. বিতর্কটি আদিবাসী বনাম উপজাতি। কারণটি অধিকারের প্রশ্নে। আদিবাসী বনাম পাহাড়ী নয়। পাহাড়ী বললে এখন একটি অস্পষ্টতা তৈরি হয় কারণ সেটেলার বাঙালিও নিজেকে এখন পাহাড়ী দাবি করছে। আর জারি রাখা হয় আসলে বহু পক্ষের স্বার্থেই। আপনি নিজেও তার অর্ন্তগত। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বললে, আদিবাসীত্ব নিয়ে আপনি সন্দেহের তীর যাদের দিকে ছুড়েছেন তারাই আদিবাসী। আদিবাসী সাধারণত সেই জাতিগোষ্ঠিকে বলে যারা ভূমির সাথে প্রথাগত এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্কের সাপেক্ষে কোন প্রান্তিক/আঞ্চলিক ভূ-খন্ডের মূল দাবিদার। আদিবাসী আসলে একটি বহুসূত্রীয় ধারণা, কোন বৈশ্বিক একক সংঙ্গা এখনো নেই। স্থান এবং সময় গুরুত্বপূর্ন, তবে শুধুমাত্র এদুটির/কোন একটির ভিত্তিতেই নয় অনেকসময়। কেন নয় বলছি – ইনুইটরা আর্কটিকের আদিবাসী, তারা থাকে বরফের উপর, তাদের পার্মানেন্ট সেটেলমেন্ট অনেক ক্ষেত্রেই নেই। তারা শিকার/পশুর সংখ্যার উপর ভিত্তি করে খানিকটা নোমাডিক। তারওপর বরফ গলে গেলে নিচে পানি/সাগর অর্থাৎ মাটি নেই। সুতরাং স্থান – ভূ-অর্থে নেই। তারপরও আর্কটিক অঞ্চলের আদিবাসী ইনুইট, সেটা রাষ্ট্র স্বীকৃত। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূ-খন্ডের আদি দাবিদার সেখানকার ১১টি জাতিগোষ্ঠি – সেই অর্থেই তারা আদিবাসী। ভূ-খন্ড এবং সময় দুই অর্থেই। এবং পার্বত্য অঞ্চলের প্রকৃতির সাথে জীবিকার সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে।
২. বাংলাদেশে তো এক সময় ইন্টারনেট ব্যবহারও বাস্তবানুগ ছিল না। মনে করা হতো, দেশের সব গোপনীয়তা পাঁচার হয়ে যাবে। দেশের স্বার্বভৌমত্বে চরম হুমকি হবে। তো ২০১১ সালে এসে কি মনে হচ্ছে? স্বায়ত্বশাসন চেয়েছিল সত্তরের দশকে। এখন সেসব দাবিদাবা অনেকটাই অবসিলিট হয়ে গিয়েছে। স্বায়ত্বশাসন ব্যাপারটি কোন লিনিয়ার প্রক্রিয়া নয়। এটা যখন চাওয়া হয় এবং রাষ্ট্র প্রদান করে তখন বহুমূখী নেগোসিয়েশন হয়।
৩. বাঙালি সেটেলারদের স্বার্থ তো শুরু থেকেই নানাভাবে দেখা হয়ে আসছে - নিরাপত্তা প্রদান, রেশন, জমি এবং আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে। লোকগুলো সমতলে দরিদ্র ভূমিহীন ছিল, তাদেরকে এভাবে যথেচ্ছ ব্যবহার করা যৌক্তিক ছিল কিনা তা নিয়ে বরং প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। কার্যকারণ বিশ্লেষন কোন অর্থেই গৌন হতে পারে না। গৌন ধরলে বুঝতে হবে আপনি মূল সমস্যা এড়িয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাদের স্বার্থ কিভাবে দেখা হবে তা নিয়ে তো আর মুখের কথায ব্লগে বসে উত্তর হতে পারে না। তাই না? সেটার সমাধান রাজনৈতিকভাবে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে হওয়া উচিত। “তালগাছ আমার” থিওরি দিয়ে অন্তত ব্লগে আলোচনা চালানো সম্ভব না, অনাহুত সাহেব।
৪. আপনি জুম্ম জাতিগোষ্ঠির জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে যদি শুধুমাত্র শান্তি বাহিনীর গঠন ইন্দিরা গান্ধীর প্রত্যক্ষ মদদ হিসেবে চালিয়ে দেন, তাহলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনী গঠনকে যদি কেউ কটাক্ষ করে বলে যে সেটাও ইন্দিরা গান্ধীর মদদে হয়েছে। তখন কিভাবে ডিফেন্ড করবেন? জাতিগোষ্টির আত্মপরিচয়ের আবেগকে সম্মান দেখানোর ব্যাপার আছে, অনাহুত সাহেব। বাংলাদেশে আর কোথাও বিদেশি প্রভাব কি আপনার চোখে পড়ে না? কি করতে পারছেন সেখানে? জুজুর ভয় দেখিয়ে আর কত মগজ ধোলাই চলবে? দয়াকরে সমস্যার আরো গভীরে দেখুন।
৫. পৃথকীকরণের সুর কেউ তুলছে না। খেয়াল করুন, আদিবাসীদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে এবং সে বিষয়ে আমাদের একচোখা স্থবির দৃষ্টিভঙ্গি সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সারা পৃথিবীতে আদিবাসীদের আত্মপরিচয়ের অধিকার রয়েছে। আদিবাসীরা অষ্ট্রেলিয়াতে ‘এ্যাবোরিজিনস’, আমেরিকা এবং কানাডায় ফার্ষ্ট নেশনশ/ইন্ডিজিনাস পিপলস/নেটিভ নামে পরিচিত। বিভিন্নদেশে আলাদা নিজস্ব পরিচয় ধারণ করেই আছে। অষ্ট্রেলিয়া, আমেরিকা এবং কানাডার মতো মেল্টিংপটে যখন নিজস্ব আত্মপরিচয়ের অধিকার স্বীকৃত রয়েছে, বাংলাদেশে সমস্যা কোথায়? আর আপনি বোধহয় কিছুবিষয়ে গুলিয়ে ফেলেছেন। নাহলে একই সাথে এই কথাটি বলতেন না -
৬. আদিবাসী/পাহাড়ী ইস্যু সামগ্রীকভাবে সকল আদিবাসী জাতির। চাকমারা তাদের মধ্যে সংখ্যার দিক দিয়ে বড় জাতি। তাদের শিক্ষিতের হার বেশি এবং অন্য জাতিগোষ্ঠির চেয়ে সংগঠিত। নেতৃত্বেও তারা এগিয়ে। তাই তাদেরকেই চোখে পড়ে বেশি। সেখানে ছোটবড় জাতিগোষ্ঠির ভিতরেও ক্ষমতার রাজনীতি আছে। তবে আত্মপরিচয়ের ইস্যুটি সকলের। আর দ্বিতীয় অংশের হাইপোথেটিক্যাল প্রশ্নের গ্যারান্টি আপনাকে সয়ং ঈশ্বরও দিতে পারবেন না। তাই আপাতত যদির কথা নদীতে ফেলি।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী,
তোমার লেখা এবং সবগুলো মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য পড়ে অনেককিছু শিখলাম।
পাহাড়ি বলি, বা আদিবাসী, মানুষ বলে তাদের এই রাষ্ট্র যে ঠিক স্বীকৃতি দিতে চায়না সেটা তো আমরা সবাই বুঝি। আমার জাতীয়তার পরিচয়ে আমি গর্বিত, কিন্তু সেই জাতিসত্তার চাপে অন্যরা মারা পড়ছে কি না তা তলিয়ে দেখার মানসিকতা আমাদের কখনোই গড়ে ওঠেনি।নইলে মুজিব বলতেননা ''বাংগালি হইয়া যা।''
এমন পরিস্থিতিতে বাস্তবতা যাই বলুক, রাজনীতি যাই ভাবুক, মানুষ তার স্বভাববোধেই বিদ্রোহ লালন করবে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বয়স কত আর! তার থেকে বেশী সময় পরাধীন থেকেও মানুষ স্বাধীন হয়েছে। আমরা নিজেরাও স্বাধীন হয়েছি (স্বাধীনতার মর্ম বুঝি আর না বুঝি, পেয়েছি তো)।
একটি ছোট্ট ভূখণ্ডের জনগোষ্ঠীকে সম্মান দেখাতেও এ দেশকে এতটাই ভাবতে হয়! যুগে যুগে আমরা এঁদের বিশ্বাস আর ভরসা হারিয়েছি, কি করলে ফিরে পাবো তা ভাবিনা, ভাবনার বাস্তবতা নিয়ে ভাবি।
হা বাংলাদেশ, হা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ।
নূপুর'দা! কতদিন পর!
বড় মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমাদের এসব ব্যাপার আমাকেও হতাশ করে। চোখ থাকতেও যে দেখতে পায় না ইচ্ছে করে তাকে আসলে দেখানোর কাজট কঠিন।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী ভাই,
আপনার এই যুক্তিবাদী লেখা 'আদিবাসী' বিরুদ্ধ বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মানস পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে আশা করি- অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এই সাহসী লেখার জন্য ।
একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি, গতবছর জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরাম এর ৯ব্ম অধিবেসন এ অংশগ্রহন করেছিলাম রাজা দেবাশীষ রায় সহ। ২০০৭ সালে "আদিবাসীদের অধিকার বিসযাক জাতিসংঘের ঘোষণাপত্র" প্রণয়নের সময় যে চারটি দেশ বিরোধিতা করেছিল তাদের মধ্যে ছিল আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রলিয়া এবং নিউজেল্যান্ড। এর মধ্যে এই অধিবেশন এর আগে অস্ট্রলিয়া এই ঘোষণাপত্র কে সমর্থন জানিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়, নিউজিয়াল্যান্ড এই অধিবেশন জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সামনে সমর্থন এর কথা জানিয়ে দেয়, কানাডা এবং আমেরিকা ও এই ঘোষণাপত্রকে ইতিবাচক ভাবে বিবেচনা করছে বলে জানায় (পরে গত বছর ওবামা আদিবাসীদের এক সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক সমর্থন এর কথা জানান )। পুরো অধিবেশন এর পরিবেশটা ছিল উৎসব মুখর । বিভিন্ন দেশ তাদের দেশের আদিবাসীদের জীবন-মান উন্নয়নের জন্য কী কী করছে তার বিবরণ দিহ্ছে। এমন সময় বাংলাদেশ এর সরকারী প্রতিনিধির নাম ঘোষণা হলো স্তাতেমেন্ট দেবার জন্য। আমরা প্রস্তুত হলাম শুনার জন্য। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি প্রথম বাকক্কে বল্লেন 'বাংলাদেশ এ কন আদিবাসী নেই, যআরা আছে তারা সবাই উপজাতি (sub-nation )!! এই বক্তব্অ শুনার পর ৩ জন expert বাংলাদেশ প্রতিনিধির বক্তব্বয় কে দুঃখজন্ক বল্লেন, অন্নরা অনেক হাসি-তামাশা করল বাংলাদেশ এর স্তাতেমেন্ট নিয়ে ।আমরা হলাম লজ্জিত আর বিব্রত । অথছ অই দিন এ ECOSOC পরবরতি ৩ বছরের জন্য বাংলাদেশ এর রাজা দেবাশীষ রায় কে জাতিসংঘের আদিবাসী বিসয়াক স্তায়ী ফোরাম এর expert সদস্য হিসেবে নিয়গ দেয়।
আমার কথা হলো 'আদিবাসী' হিসেবে বলতে সরকারী োকন আসুবি্ধা থাকলে অই ফোরাম এ স্তাতেমেন্ট দেবার এ বা কি দরকার?? ভারত, চীন তারা ত দেয় না, diplomatic অবস্তান নিয়ে থাকে, এতাই কি হউয়া উচিত নই এম্ব্রাসিং অবস্তায় পরার ছেয়ে? নাকি যএন তেন একটা স্তাতেমেন্ত দিতে পারলেই দেশের সম্মান বাড়এ??
পল্লব মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। কিছু নতুন তথ্যও জানতে পারলাম। আদিবাসী ইস্যুতে গত কয়েক বছর ভালই নেগোসিয়েশন হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিল। এরা আসলে ভয় - ইতিহাসের কৃতকর্মের ভয়। ক্ষমতা হারাবার ভয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধির স্টুপিডিটি নিয়ে কিছু বলার নাই। তিন কিস্তির সামরিক সরকার এবং চার কিস্তির গনতান্ত্রিক সরকার প্রায় অভিন্ন পার্বত্য চট্টগ্রাম নীতি অনুসরন করছে। দুঃখজনক। হয়তো একদিন ভাল পরিবর্তন আসবে।
"Hope is a good thing, may be the best of things, and no good thing ever dies."
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আপনাদের মতো যুব এবং শিক্ষিত শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে সত্যিকার অর্থে যদি বৃহত্তর স্বার্থকে মাথায় রেখে আধিবাসীদের উন্নয়ন এবং অধিকারের জন্য প্লাটফর্ম দাড় করাতে হয় । এমন সাহসী লেখা দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে যে সত্যে আসলেই নির্মম এবং বাস্তবতার নিরিখে কঠিন । মন্তব্যগুলো এমনভাবে লেখক করেছেন যাতে করে আসল অধিকারের কথাগুলো সুন্দরভাবে উঠে এসেছে । প্রশ্ন এবং উত্তরের মধ্যে দিয়ে কিন্তু অনেক কিছু জানা যায়, সে কাজটি বিচক্ষণতারসহীত লেখক যে করে চলেছেন, আশাকরি এভাবে একদিন সংখ্যাগুরু মানুষের বি্ভ্রান্তি এবং অন্ধ জাতীয়তাবাদীর খোলস খুলে যাবে । লেখককে বিশাল অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ ।
অমিত আশা রাখুন। সময় এক রকম যায় না। পরিবর্তন আসতে বাধ্য। অন্যায় চিরকাল চলতে পারে না। হয়তো আজ নয়, আগামীকাল ঠিকই আসবে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
বেশ চিন্তাশীল লেখা। এ জন্য লেখককে সাধুবাদ জানাই। তবে সহিংসতা বন্ধের উপায় তথা পার্বত্য সমস্যার সমাধান বন্ধের বিষয়ে লেখায় খানিকটা আভাষ থাকলেও এ নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলা হয় নি।
আমার মনে হয়, পাহাড় থেকে যতদিন সেনা-সেটেলার প্রত্যাহার, যথাযথভাবে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন, আইন সংশোধন করে ভূমি কমিশনের মাধ্যমে জমির বিরোধ নিস্পত্তি না হবে, ততদিন পাহাড়ে একের পর এক বাঘাইছড়ি, লংগদু বা রামগড়ের মতো সহিংস ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সর্ম্পকে সরকারগুলোর সীমাহীন অবহেলার মাশুল এখন দিতে হচ্ছে সেখানের পাহাড়ি-বাঙালি উভয়কেই, একদিন এই মাশুল দিতে হবে পুরো বাংলাদেশকেই।…
এই অন্তর্দশনের বাইরে ইউএন শান্তি মিশনে গৌরব কুড়ানো ‘দেশ প্রেমিক সেনা বাহিনী’র জন্য সাধারণের গর্বে বুক ফুলে উঠবে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মতো বড়মাপের অনুষ্ঠানগুলোতে আদিবাসী নাচ-গান দেখে দেশি-বিদেশী দর্শকদের মনে হবে, এদেশের আদিবাসীরা তো ভালোই আছেন!!
---
লেখাটি ফেসবুক গ্রুপ 'পাহাড়ের রূদ্ধকণ্ঠ CHT Voice' [লিংক] শেয়ার করলাম।
---
এ বিষয়ে আরো পড়ুন: পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ [লিংক]।
বিল্পব ভাই, আপনার লেখা ব্লগ এবং বইয়ের সাথে আমি পরিচিত। আমার ব্লগটি এলোমেলোভাবে লেখা। তাই কিছুটা অস্পষ্টতা পেয়েছেন। ব্লগটি সাম্প্র্রতিক সংহিসতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে। ভাল লেখা জন্য হোমওয়ার্ক প্রয়োজন।
আপনার ধারণার সাথে আমারো সহমত। দিনদিন সংহিসতা বাড়বে। কারণ যে ভ্রান্ত পার্বত্য নীতিতে চলছে তাতে সমস্যা সমাধানের সুযোগ সীমিত। গায়ের জোরে হয়তো অনেকদিন দাবিয়ে রাখা যায় কিন্তু চিরকাল যায় না। ইতিহাস তাই বলে। রাজনীতিক এবং সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের সেই বোধদয় হলেই মঙ্গল।
শেয়ার করার জন্যই লেখা। অবশ্যই শেয়ার করুন। তবে যারা পড়লে প্রকৃত উপকার হতো। তারা এসব পড়েন না। আপনাকে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ভাইয়া, আপনার সুন্দর লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। আশা রাখি, আমার ক্যাডেট ভাইরা আপনার লেখা থেকে CHT সম্পর্কে অনেক কিছু জানবে, অনেকের ভুল ভাংবে এবং CHT-এর প্রতি তাদের সহমর্মিতা থাকবে।
ধন্যবাদ।
ক্যাডেট কলেজ কমিউনিটি সঠিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে জানলে আমার লেখাটি কাজে আসলো মনে করবো। তোমাকে ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
এই লেখাগুলো পড়তে গিয়ে আমি কোন লেখা থেকেই চোখ সরাতে পারিনি। মি, রাব্বী'র যুক্তিপূর্ণ উত্তর আমাকে মুগ্ধ করেছে। অনেক আদিবাসী বন্ধুদের কাছেও এসব পুরোপুরি জানা নেই; সব অর্থেই লেখাটি যথার্থ।
সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে "মাইণ্ডসেট" পরিবর্তন করা দরকার- - - - - আর "মাইণ্ডসেট" পরিবর্তন করতে আপনাদের মত সাহসী ও যুক্তিবাদী মানুষের দরকার।
আপনাকে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। মাইন্ডসেটে পরিবর্তন আসবে কিনা জানি না। তবে দিন একরকম থাকবে না বলেই অনুমান করি।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আমরা যেন অন্ধ জাতীয়তাবাদের শিকার না হই। এটা এমন একটা জায়গা যেখানে ভুল করলেও আমরা সহজে বুঝতে পারি না। এমন জাতীয়তাবাদ থেকেই সাম্প্রদায়িকতার উন্মেষ ঘটে।
মগজ ধোলাই থেকে সতর্ক থাকা জরুরী। উদার, স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে অন্যায় কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য না।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
খুবই চমৎকার ও সময়োপযোগী লেখা।
এই বিষয়ে আমার মতামত অনেকটা আপনার মতই। শিক্ষিত মহলের অদ্ভুত নীরবতা আসলে পক্ষপাত নয় কিছুটা মিডিয়ায় না আসাটা বড় কারণ। আর পুঁজিবাদী মিডিয়া এই ব্যাপারগুলো নিয়ে জল ঘাটাতে চায় না কারণ তাতে তাদের পাবলিসিটি বাড়ে না। তারা বরং বুদ হয়ে থাকে ক্রিকেট দলের চামড়া ছিলা টক শো করতে।
ধন্যবাদ অসীম।
আপনি বোধহয় ইলেকট্রনিক/টিভি মিডিয়ার কথা বলছেন। প্রিন্ট মিডিয়াতে ভালই কাভার করেছে। সমতলের মানুষের মনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে প্রোপাগান্ডা পলিটিকস এতো শক্তিশালীভাবে বিদ্যমান যে বিষয়টি টেলিভিশনে গুরুত্বের দিক দিয়ে অনেক নিচে নেমে যায়। সাথে কিছু সেনসরশীপ পলিসিও বিদ্যমান আছে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
Hi Rabbi, Sanaullah and the rest,
My sincere apologies for not writing in Bangla. It's been such a long time that the last time i have written in Bangla that i am afraid i might not be able to articulate it properly. Yet i couldn't resist myself without a few words of appreciation.
Rabbi, I have read each and every comment in this post. What can i say?The way you commented and answered each and every question, PERFECT is the only word! Thank you for standing by the jumma people and doing the right thing. Support from general public is perhaps the only option we are left with!
Sanaullah, there were so many times i thought i would write something on "Why Chittagong Hill Tracts was/is not the least densely populated area in Bangladesh". Thank you for doing what i could not do.
The rest, thank you for your posts, it is very interesting to know what the majority is thinking.
With Regards,
Liya Chakma
Melbourne, Australia
সমস্যা নাই, লিয়া। বাংলা আপনার দ্বিতীয় ভাষা এবং অনেকদিন চর্চা করেন না যেহেতু তাই ইংরেজি ঠিক আছে।
আমার ধারণা সমতলের সাধারণ বাঙালিদের সমর্থন এবং যথার্থ বিবেচনাবোধ বাড়ছে - যদিও খুব ধীর গতিতে। আমার ব্লগের দৃষ্টিভঙ্গি আসলে প্রচলিত সমতলের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এখনো না বলেই সন্দেহ করি। তবে সংখ্যাতে অল্প হলেও কিছু মানুষ ঠিকই আপনাদের পাশে আছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
-লোপামুদ্রা
যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
- রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
:thumbup:
চমৎকার উদ্ধৃতি, কিবরিয়া।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
Informative
ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সময় নিয়ে সবগুলো মন্তব্য পড়লাম। কর্ণফুলির কান্না আজকে ডাউনলোড করে দেখবো। পার্বত্য চট্টগ্রামের গল্প প্রথম শুনেছি বাবার কাছে, তার প্রথম পোস্টিং ছিলো ওখানে। এবং শান্তিচুক্তি হওয়ারও অনেক অনেক দিন পরে গিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলাম।
আমি আশেপাশে যেমন মেন্টালিটি দেখি, সেগুলোর প্রতিনিধি করা কমেন্ট খুব বেশি আসে নি। হয় ব্লগে তারা সক্রিয় না, নয়তো কমেন্ট করে 'ঝামেলা' বাঁধাতে চাইছে না। কিন্তু আসলেই বেশিরভাগের মেন্টালিটি আদিবাসীদের উপজাতি ভাবা পর্যন্ত। আরো অনেক গভীরেও (এত জমি দেয়া লাগবে কেন ইত্যাদি প্রশ্ন)।
এই মানসিকতার নির্মূল প্রয়োজন। আমাদের মতো দেশের এই রকম জাতীয়তাবাদ কেবল বিলাসিতাই নয়, আতঙ্কজনক ও বিধ্বংসীও বটে। রিকনসিলিয়েশন পাকিদের/রাজাকারদের সাথে না করে আদিবাসীদের সাথে করা উচিত। তাদের ন্যায্য অধিকারগুলো দেয়ার ব্যাপারে আশু পদক্ষেপ নেয়া উচিত!
পার্বত্য চট্টগ্রামের অভিজ্ঞতা আমাদের একেকজনের একেকভাবে হয়। কিন্তু বিষয়গুলো শুদ্ধ দৃষ্টিতে দেখতে তো আর কোন সমস্যা নেই। আমিও খানিকটা অবাক আমাদের প্রতিনিধিত্ব করা মানুষিকতার কমেন্ট তেমন না পড়ায়। তবে তোমার কারণ ব্যাখ্যাই হয়তো কাজ করছে। শেষ প্যারাতে তোমার সব প্রত্যাশা পূরণ হলেই মঙ্গল।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী,
অনেকদিন ধরে নিজের মনের মাঝে জমে থাকা কথাগুলো সুন্দর উঠে এসেছে তোমার লেখায়।
কি দেশে, কি বিদেশে, কি শিক্ষিত, কি অশিক্ষিত- প্রায় সবার সাথেই পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমার বেশ খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে।
২০০৩ সালে প্রথম গিয়েছিলাম খাগড়াছড়ি, বান্দরবন আর কক্সবাজার ট্যুরে, সমাজবিজ্ঞানের ৩৮ জন সহপাঠি আর দুইজন শিক্ষকের সাথে। কাপ্তাই লেকের টলটলে পানির বুকে সাঁতার কেটে 'পেডা টিংটিং' এ গিয়ে বাঙ্গালী হোটেল থেকে নিয়ে যাওয়া কাতলা মাছের প্রমাণ-সাইজের পেটি দিয়ে ভাত খেয়ে তৃপ্তীর ঢেকুর তুলেছি আর চারদিকের প্রাকৃত সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। কারো মনে হয়নি যে, এই লেকের পানির নিচে আমরা ডুবিয়ে দিয়েছি একটা পুরো জনপদ!
বিদেশে আড্ডাগুলোতে প্রায়শঃই কথা দেশের নানা বিষয়ে। নানা জনের থাকে নানা মত। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা উঠলে সাধারণতঃ একটা ঔক্যমত দেখি বাংলাদেশীদের মধ্যে যে, এই এলাকাটা আমাদের। কিন্তু কেমনে, কখন থেকে, কিভাবে এটা বাংলাদেশের হলো, এটা কি পতিত এলাকা কি না, আগে থেকে বসবাসকারী কেউ থাকলে তারা কারা, তাদের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কি- এইসব নিয়ে কেউ ভাবতে রাজী নয়; তাদের শুধু একটাই কথা- পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অংশ (!!!) এবং সেখানকার লোকজনও বাংলাদেশি! কাজেই, তাদের অধিকার নিয়ে আলাদা ভাবে ভাবার দরকার নেই।-
ইদানিং আবার কোন কোন সংবাদ মাধ্যম+ব্লগে দেখি পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইস্রায়েল বানাবার পরিকল্পনার জুজু-ভীতি। এইসব বুদ্ধি-প্রতিবন্ধীর এই সোজাকথাটা মাথায় আসেনা যে, সাত পুরুষের ভিটেমাটি কেড়ে নিয়ে সেখানে অন্য এলাকা থেকে মানুষ নিয়ে এসে বসতি গড়ে দিলে পাগলেও প্রতিবাদ করবে।
এই ধরণের লেখা আরো বেশি করে আসুক সিসিবি'তে। তাইলে আমরা জাতি হিসেবে নিজেদের আত্ম-সমালোচনা করার এবং তা' থেকে সংশোধনের উপায় খুঁজে পাবো।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ঠিকই বলেছেন মাহমুদ ভাই। আমাদের চোখের পর্দার স্তর এতো পুরু যে বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে থাকি। পাহাড় নিয়ে রোমান্টিক বাতুলতায় ভুগি। পাহাড় নিয়ে রাজনীতি-রাজনীতি খেলার অবসান এবং প্রাকৃতিক সম্পদের মোহ না কাটলে কোন সমাধান হবে না। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা সত্যিকারে কতটুকু আত্ম-সমালোচনার জন্য প্রস্তুত?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
এই সহজ সত্যটা আমরা কবে বুঝতে শিখবো?
::salute::
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
first of all, i am sorry to say, i am not used to write in bangla in the computer....even i couldn't get chance to learn it. this blog is almost in bangla..also its nice and easy to read in bangla as wel. but i have no way, but my hand writing in bangla is excellent...:):)
i would like to thanks to the bloggers to write about CHT. ys is really a nice topics to discuss about the political situation. as i know most of the bangalis of bangladesh who visited CHT they must have the nice experience about the CHT's peoples hospitality...even we like to respect and honored each and every insects in this entire world because the main reason is we are mostly Buddhist.
i can remember in my childhood i never heard peoples kills peoples..but after the curtain time when the clash become more aggressive and lots of JUMMA peoples are killed by the Settlers (i dont want to mention bengalies..because we are not fighting against to them, basically learned bangalies are really really nice people because my all close friends are bengali from my childhood) and army tortured the peoples and also lots of girls, women's are raped by the army and settlers.
Now day by day CHT peoples are realizing that, we cant expect anything form Bangladesh Govt. because the govt. always betrayed with us and still doing it..
we are very simple, we are used to live with nature. our demand is not much as like the city peoples. we just want recognize we are equal as all the bangladeshi citizens not freedom. we have lost everything, basic human needs never fulfilled there and the most valuable thing is LAND.
Even my family have to change 4 times of our settlement, 3 times we have lost everything.. all time we have to start from zero....
last time i went to my home in Khagrachari few days back. i was so upset because of there is no electricity supply all day long..its comes only for 1-2 hours a day. but the electricity is producing in my land which is we lost for the kaptai dam.....i am ignorant...!!!!!!
if the bangladesh govt don't change the policy about the CHT and shouldn't take the positive initiative.....its not so long days CHT will be a different state...i can predict..because the CHT peoples minds are changing they are thinking to fight again..if its start again..nothing will can stop till a state. .even Bri. Ibrahim also told the same thing in a TV show...
WE WANT TO LIVE IN PEACEFUL LIFE. ITS OUR ONLY DEMAND. WE DON'T WANT ANYTHING EXTRA FROM THE GOVT. BECAUSE WE ARE HEARD WORKER WE CAN DO OURSELVES.
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
জুম্ম জাতিসত্তা কি খুব উন্নত চিন্তার প্রতিফলন?????????
ফায়হাম, আপনার প্রশ্ন এবং অতিরিক্ত আটটি প্রশ্নবোধক চিহ্নকে চ্যালেঞ্জ করে প্রফেসর আমেনা মোহসীন নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি একটি পিএইচডি থিসিস লেখেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। যেটি ১৯৯৭ সালে "দ্য পলিটিকস অব ন্যাশনালিজম: দ্য কেস অব দ্য চিটাগং হিল ট্রাক্টস, বাংলাদেশ" নামে একটি পুস্তকারে প্রকাশিত হয়। কষ্ট করে বইটি পড়ুন, আপনার সব সংশয়ের উত্তর পেয়ে যাবেন। (সম্পাদিত)
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ফায়হাম,
'উন্নত চিন্তা' বলতে আপনি নিজে কি বোঝেন সেটা জানাটা জরুরী।
আমার আপনার জাতিসত্তাও অন্য অন্য রাম শ্যাম গরু ছাগলের কাছে নেহাৎ অপাঙ্ক্তেয় মনে হতে পারে। তো?
আর আপনার বিচারে যা কিছু 'খুব উন্নত' নয় তাকেই বুঝি নির্বিচারে দমন/ বিলীন করার বাসনা পোষণ করেন?
খুব উন্নত চিন্তার পরিচয় দিলেন যা হোক!
রাব্বী, নূপুর, দেবাশীষ, মাহমুদ, আন্দালিব, লিয়া, অমিত, বিপ্লব, সলিত ও অন্যরা,
উপরের নামগুলি বিশেষ করে উল্লেখ করলাম - কারন সবার লেখাতে যে জিনিসটা খুবই পরিস্কার হয়ে উঠে এসেছে তা হচ্ছে বর্তমান এবং অতীতের বাংলাদেশ সরকার এবং তাদের সহযোগীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অত্যাচার করে আসছে তাকে কোন ভাবেই সমার্থন করা যায় না।
বর্তমান পৃথিবীতে দেশ-প্রেম বা জাতি-সত্বার প্রতি আনুগত্যের চাইতেই অনেক বেশী বড় হচ্ছে মানবতাবোধ। ইন্টারনেটের যুগে কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি অন্ধ সমার্থনের দিনও শেষ হতে চলেছে। আমরা এখন শুধু কথা নয়, সত্যিকারের কাজ দেখে ঠিক করবো কাকে সমার্থন দেব আর কাকে দেব না।
এমন কোন কথা নেই যে আমি আওয়ামী লীগ করি বলে বলতে পারবো না যে মুজিব যখন বলেছিল - 'তোরা সব বাঙ্গালী হয়ে যা', সেটা ঠিক ছিল না। আবার তেমনি আমি জাতীয়তাবাদী দলের সমার্থক হলে যে বলতে পারবো না যে জিয়ার পরিকল্পনা মত সাধারণ অসহায় বাংগালীদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঠেলে পাঠানো সঠিক ছিল না - এমন কোন কথা নেই।
বর্তমান বাংলাদেশে সব চাইতে বড় অসুবিধা হচ্ছে যে সত্য কথা বলার লোকের অভাব হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমি আমার দুই চাচাকে হারিয়ে ছিলাম, তাই আমি যদি আজ এই 'সত্য কথাটা' বলতে চাই যে, প্রায় এক লাখ খুনী পাকি-আর্মিকে শেখ মুজিব 'নিজের স্বার্থের' জন্যে ক্ষমা করে দিয়ে অন্যায় করেছেন এবং এর জন্যে অন্যান্য রাজাকারদের মত তারও বিচার দাবী করছি আমি - তাহলে হয়তো আমাকে ততক্ষনাৎ খুন করে ফেলার জন্যে উঠে পড়ে লাগবে বিশেষ দলের লোকেরা। কিন্তু আমার এই কথাটার মধ্যে কি একেবারেই কোন যুক্তি নেই??
ধরে নিতে পারি শেখ মুজিব 'আদিবাসী' বা 'উপজাতী' - এ সম্পর্কে বেশী জ্ঞান রাখার সুযোগ পাননি এবং হয়তো বা সরল মনে বলতে চেয়েছেন যে 'তোরা সব এক হয়ে যা', কিন্তু হাসিনার আমলে 'শান্তি চুক্তি' স্বাক্ষর করার পর সেটা বাস্তবায়ন না করা অথচ 'নোবেল প্রাইজ' পাবার স্বপ্ন দেখার কি যুক্তিকতা থাকতে পারে?
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদিবাসী, ময়মনসিংহের গারো, রংপুর-দিনাজপুরের সাওতাল, পটুয়াখালী অঞ্চলের রাঙ্খাইনসহ বাংলাদেশী ভূখন্ডে বসবাসকারী সব আদিবাসীকে তাদের ব্রিটিশ-আমল থেকে পাওয়া অধিকারসমূহ সম্পূর্ণ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং পারলে এতদিনের অবহেলিত এলাকা বলে এদেরকে আরও বেশী সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। এছাড়া অন্য কোন গত্যন্তর নেই।
শহীদ ভাই,
আমি মনে করি, মুজিবের এই 'বাঙালী হইয়া যা' বলাটা একটা ঐতিহাসিক ব্যর্থতা। ৭ মার্চের ভাষণে যিনি বলছেন 'দাবায়া রাখতে পারবানা' তিনিই ক'দিন পরে এমন একটা মন্তব্য যখন করছেন সেটা নেহাৎ সারল্য বলে আমি মানতে পারিনা। সেখানে আমার শুধু চোখে পড়ে উপেক্ষা আর নির্বিকারতা। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সংসদ থেকে বেরিয়ে গিয়ে যখন গোপন রাজনীতির পথে পা বাড়ালেন তখনো কারো বোধোদয় হয়নি বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে।
পুরো একটা জাতির স্বাধীনতার কাণ্ডারী যিনি তাঁর এমন মন্তব্য ইতিহাস কোনদিন ক্ষমা করবেনা।
নৃতত্বের যে হিসেবে আমাদের উর্দু ভাষাভাষী হওয়া অবান্তর ছিল, পাকিস্তানী হতে পারিনি ধর্মের বর্ম পরেও,
সেই হিসেবেই অন্য অন্য জাতি আর সংস্কৃতির গলা দাবিয়ে গায়ের জোরে বলতে পারিনা 'বাঙালী হইয়া যা'!
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হয়েছে বলে কতই না গর্ব অনুভব করি বাঙালি হিসেবে। আমাদের দেশের অন্য ভাষাভাষীদের স্বীয় মাতৃভাষা চর্চা করার কতটা সুযোগ দিয়েছি? (সম্পাদিত)
ধন্যবাদ সাইফ ভাই।
আপনার কথাগুলো খুব গুরুত্বপূর্ন। কাউকে অত্যাচার করে তার কাছ থেকে আসলে রাষ্ট্রের প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা এবং আনুগত্য আদায় করা যায় না। আপনি পাকিস্থান এবং বাংলাদেশ দুই জাতীয়তাবাদ দেখেছেন এবং একাত্তরে আপনজন হারিয়েছেন দেখেই হয়তো অন্যরকম করে চিন্তা করতে পারেন। আপনার কথাগুলো খুব গুরুত্বপূর্ন।
আত্ম-সমালোচনা না করতে পারলে যে নিজের ভুল কোনদিন জানতে/বুঝতে পারবো না - এই ব্যাপারটি অনেকেই মানতে পারেন না। আমাদের আরেকটি সমস্যা হলো রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা আমরা অনেক সময় ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে নিই। সেটি নিয়ে কথা বলতে অস্বস্থিবোধ করি - এটা দূর করতে পারলেই মঙ্গল।
শান্তিচুক্তির সফলতা দাবি করে নোবেল প্রাইজ পাবার বাসনাটা কি অবাস্তব এবং আহম্মকি - সেটা নিয়ে বলার কিছু নেই। আপনার শেষ প্যারার কথাগুলোর গুরুত্ব যদি সবাই বুঝতো তাহলে সত্যিই আদিবাসীদের ক্ষোভ কিছুটা কমতো।
খুব খাঁটি কথা বলেছেন -
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী ভাই,আদিবাসী সমস্যা নিয়ে আপনার সমস্ত লেখা এবং মন্তব্যগুলো পড়ে দেখলাম।লেখাগুলো অত্যান্ত যৌক্তিক এবং গুরুত্বপূর্ণ।হয়তো আমাদের অনেক আদিবাসী ছাত্র ছাত্রী কিংবা কোন প্রাপ্তবয়স্ক নারী পুরুষও এসব বিষয় নিয়ে জ্ঞাত নয়।আপনার এ লেখা এবং মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ এবং আশা রাখি ভবিষ্যতে আরো লিখবেন।আপনার মন্তব্যে আপনি বাঙালী জাতীয়তাবাদের শিকল থেকে বেড়িয়ে এক মানবিক এবং সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন,যা কেউ সহজে অনুধাবন করতে পারে না।আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকে নজর দিলেই দেখতে পায়,এদেশের জন্য কিভাবে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করা হয়েছিল।বিশেষত একটি মাত্র কারণে,বিজাতীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করার জন্যে।কেননা আমরা দেখেছি পাকিস্তানিরা কিভাবে এদেশে বর্বরতা চালিয়েছিল।তাহলে এসব চিন্তা করেও কি একটুও উপলব্ধি হয় না,এদেশের আদিবাসীরা এখন কোন অবস্থানে রয়েছে।সেখানে কেন সেনাশাসন বলবত রাখা হয়েছে? পার্বত্য চট্টগ্রামকে কেন খন্ড খন্ড করে ভাগ করা হচ্ছে? দেশের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী দরকার,তাই বলে কি আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে সেনাক্যাম্প বসাতে হবে।
আমরাও এদেশের নাগরিক,এদেশকে আমরাও ভালোবাসি,আমরা কখনো বলিনি বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চায়,আমরা শুধু নিজেদের অস্তিত্বকে নিয়ে বাঁচতে চেয়েছি।
এবং আশা করি পার্বত্য চুক্তির ধারাগুলো পড়ে থাকলে আপনাদের কাছে তা আরো বোধগম্য হবে।
আপনার মন্তব্য এর জন্য ধন্যবাদ, মিটুল। জাতীয়তাবাদ, জাতিসত্তা এবং ভূমি আসলে খুব জটিল বিষয়। যেকোন দেশে সেনাবাহিনী তখনি কাজের কাজ করে যখন সেটি সঠিক রাজনৈতিক প্রকল্পের ভেতর পরিচালিত হয় - পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতা তা নয়।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
পুরো লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়ে গেলাম। অসাধারণ লেখা আর প্রশ্নের উত্তর বা যুক্তি খন্ডন। বাংলাধেশের প্রত্যেক সচেতন নাগরিক যদি অনুধাবন করতেন, বুঝার চেষ্টা করতেন, তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামে এত অনাচার-অবিচার, এত নির্যাতন হতো না। রাব্বী ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার মন্তব্য এর জন্য ধন্যবাদ, জ্ঞান বিকাশ।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
অনেকদিন পরে আবার আসলাম অরূপ দার শেয়ার এর জন্য। ভালোই হয়েছে। এখানে এই ডকুটা থাকা দরকার।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ রাব্বী ভাই। কেননা বাংলাদেশের কয়জন লোক আমাদের দুঃখের কথা জানে এবং আমরা কত সমস্যার সম্মূখীন হয়ে এই পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে আসছি। এই পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রধান সমস্যাগুলো হচ্ছে- ভূমি বিরোধ, সেটেলার সমস্য এবং সেনাবাহিনী। তাছাড়া প্রতিনিয়ত আমাদের আধিবাসীদের উপর নানাভাবে সেনাবাহিনীরা নির্যাতন করতেছে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে। আপনি জানেন কি? পাহাড়ী মেয়েদের চলাফেরা করার সময় ঔট পেতে থাকে হায়নার দল সেটেলার, সুযোগ পেলে জোর করে ধর্ষণ করে আমাদের আধিবাসী মেয়েদের। মাঝে মাঝে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি "কেমন দেশে বসবাস করি আমি? যেখানে নিজের এবং মা-বোনের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই"