আমি অনেকদিন ধরেই কিছু লিখতে পারছি না। লিখতে না পারার যন্ত্রণা বা অসহায়ত্বের সাথে আমার অনেকদিনের সখ্য। এমন অনেকদিন হয়েছে, আমি দিনের পর দিন লিখতে পারি নি। আমার চারপাশে যারা লেখেন, তারা খুব চমৎকার লেখা পাতার পর পাতা লিখে ফেলেছেন। আমার তেমন কিছু মনে হয় নি। অন্যের লেখা পড়েও আমি টের পেয়েছি আমার ভেতরে কোনো শব্দ নেই। কোন সুর নেই। তাই আমি চুপচাপ হয়ে গেছি। আরো কিছুদিন পরে একটা সময়ে অনেক অনেক কথা ঘুম ভেঙে আমার মাথায় চলে এসেছে। তখন আমি আবার লিখতে শুরু করেছি। লিখতে লিখতে আমি ভুলে গেছি যে মাঝে কিছুদিন আমি শব্দহীন হয়ে কাটিয়েছিলাম! এমন সময় আসলে তাই আমি এখন একেবারেই বিচলিত হই না। ভাবি, যে কিছুদিন পরেই এই সময়টা কেটে যাবে। কেটে গেলে আমি কী কী লিখবো সেটা নিয়েও অনেক সময়ে আমি চিন্তা করেছি। কিন্তু এবারে কেনো জানি সেই চিন্তাগুলোও হচ্ছে না! আমি টের পাচ্ছি আমার ভেতরে কোনো শব্দ আসছে না। শব্দহীন হয়ে গেলে আমার কানের ওপর কেমন যেনো একটা চাপ পড়ে। মনে হয় একগাদা তুলো দিয়ে কেউ আমার কানে ধুম ধুম হাতুড়ি পেটা করছে।
শীত এলেও আমার এই অনুভব শুরু হয়। মনে হতে থাকে যে মাথায় ড্রামের বাড়ি পড়ছে। বড়ো একটা বিগ-ড্রাম নিয়ে রিজওয়ান যেভাবে তালে তালে বাড়ি দিতো, সেভাবে কেউ একজন বাড়ি দিচ্ছে। আমি রিজওয়ানের পাশেই বাঁশি নিয়ে দাঁড়াতাম বলে টের পেতাম ড্রামের সেই বাড়িগুলো কেমন করে বুকে এসে লাগে। শব্দের শক্তি নিয়ে আমার সকল সংশয় কেটে যেতো! রিজওয়ান এখন ফাইটার প্লেন চালায়। শাঁশাঁ করে ও যখন ছুটে বেড়ায় ‘বাংলার আকাশ রাখিবো মুক্ত’ শ্লোগান নিয়ে, আমার তখন খুব হিংসা হয়। ছেলেটা সারাজীবন শক্তিশালী শব্দ তৈরি করেই গেলো! আমি তেমন পারি না। আমার তৈরি করা শব্দেরা মৃদুমন্দ, লাজুক ও বিনম্র। খুব বেশি চিৎকার করলেও, হা হা করে অট্টহাসি দিলেও, আমি লিখতে গেলে খুব সোচ্চার হতে পারি না। আমার মনে হতে থাকে খুব জোরে বললে হয়তো কথাটার জোর কমে যাবে। হয়তো আমি যা বললাম, তুমি বা তোমরা সেটা বুঝবে না। ধরতেই পারবে না আমি কী অসম-সম্ভব তুলনা বুনছিলাম, রূপকের কত নিখুঁত রূপে মুগ্ধ হচ্ছিলাম! খুব জোরে বললে সেটা ঝাপসা হয়ে যায়।
এই শীত আর লেখাহীনতা তাই আমাকে অনেক কাবু করে ফেলছে। বুড়ো দাদুর মত আমি বেঁকে যাচ্ছি ভেতরে ভেতরে। এগুলো অর্থহীন বিলাসিতা, আমি জানি। আমার অস্তিত্বের টিঁকে থাকার জন্যে একেবারেই বাতুল-চিন্তা। তাই কাউকে হয়তো বলা হয় না। খুব প্রিয় মানুষটাকেও বলা হয় না। আসলে বলার তেমন কিছু নেইও। এমন না যে বলার সাথে সাথে সমস্যা দূর হয়ে যাবে। বা কারো সাথে এটা আলোচনা করলে, শেয়ার করলে একটা সুরাহা বের হবে। এই সমস্যা এতই বালখিল্য যে এটার গুরুত্ব কেবল আমার নিজের কাছেই। নিজে নিজে বুঝে গেছি, হয়তো একদিন এমনি এমনিই ঠিক হবে, তবে কীভাবে আর কবে হবে এটা আমার জানা নেই। জানা নেই বলেই আমি অপেক্ষা করি। কারো আগমন নিশ্চিত জেনে যে রকম অপেক্ষা করা দরকার, ঠিক তেমন। কান সতর্ক, ইন্দ্রিয় সজাগ করে হিম হিম শীত আর চাপ চাপ নৈঃশব্দ্য পাশে বসিয়ে আমি অপেক্ষা করি। আমি খুব ভালো করেই জানি আমার এই অপেক্ষা খুব শিগগিরই শেষ হবে। তারপরে নানান শব্দ আর সুর, রঙ আর রূপ আমার কাছে চলে আসবে। আমি আবার লিখতে শুরু করবো। প্রতিবার এমন বিরতির পরে আমার লেখা বদলে বদলে যায়। এবারেও যাবে আর আর সেই বদলে যাওয়া লেখাগুলো আমার ভালো লাগবে!
প্রিয় শব্দেরা, তোমরা সশব্দে এসো আমার ঘরে!
🙂 ১ম
:clap:
:boss: তোর অক্লান্ত পরিশ্রম সার্থক হইছে :boss:
শুভ জন্মদিন... 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
হ্যাঁ, শুভ জন্মদিন! আসেন ঈদের বকেয়া কোলাকুলির সাথে জন্মদিনের কোলাকুলি মিশায়ে ছয়টা কোলাকুলি করি! 😀 :hug:
:hug:
হেপি সাউন্ড ফাইন্ডিং... :-B
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
লিখতে পারিনা কইতে কইতে কত্ত বড় ঢাউস একখান লেখা লিখি ফেলছে পোলাটা 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
হে হে ঠিক বলিছেন ভাই। আসুলেই পুলাটা এক্কেরে ভাদাইম্যা। 😛
😛 😛 😛
😀 😀 😀
Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet
ভাল লেগেছে ভাইয়া।এত সুন্দর লিখেও বলছেন শব্দ নেই!
দোয়া করছি খুব তাড়াতাড়ি আপ্নি আপনার প্রিয় শব্দ গুলোফিরে পাবেন :b 🙂
শুভকামনার জন্যে ধন্যবাদ জেরিন। নিজে নিজে তো পারছি না শব্দগুলো ফেরত আনতে, এখন যদি সবার দোয়ার ঠেলায় আসে! 🙂
যাক, তোমার রাইটার্স ব্লক কেটে গেছে তাহলে।
সামনে তোমার অনেকগুলা লেখা পাব, এই আশায় রইলাম। 🙂
ব্লক এখনও কাটেনি মনে হয়। মানে, আমি এখনও সেভাবে লিখতে পারছি না! দেখি, অপেক্ষায় আছি, আইজুদ্দিন! 😀
অাহা অনেকদিন পর তোর শীতের পিঠা................ :hatsoff:
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
কী করুম বলেন? শীত আইলেই লিখতে ইচ্ছা করে! 😕 :hatsoff:
হ, শীত তাই লিখে যাই( গীত গাই) টাইপ..........নামাইয়া ফালা কয়েকখান পর পর...
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
নামাইয়া ফালা ফালা কইরা দিম!! :grr:
অনেকদিন পর এলি... মনে হচ্ছে শব্দেরা আসিতেছে... কিন্তু শব্দদের সাবধান করে দিয়ে বলছি, এবার যেন কঠিন কঠিন সব শব্দরা না আসে... 😀 😀
ঠিক, এই শীতে কঠিন শব্দ হলে জমবে না। এখন দরকার সকালের নরম রোদের মতো মুচমুচে শব্দ!
:thumbup:
জব্বর ওয়েলকামিং ব্যাক :thumbup:
শব্দ নাই লেখা নাই। ওয়েলকাম দিয়ে কাজ হবে কী না বুঝতেছি না! 😕
অনেক ভাল্লাগলো আন্দালিব ভাই। এই হিড় হিড় করা শীতে কষ্ট করে এন্টেনাটা সোয়েটারের বাইরে বাইর করতে হয়নাই। আপনি আমার অভিবাদন গ্রহণ করুন।
কিন্তু আপনার পিকনিকে আসার কনফার্মেশন পাইলামনা তো এখনো কোন, কাহিনি কি?
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
পিকনিকে আসতে পারবো না এজন্যে আর আওয়াজ দেই নাই! :((
না আন্দালিব ভাই। হয়ত এটাই আসল চিন্তা। এটাই হয়ত অস্তিত্বের উপলব্ধি। ব্লক না আসলে বোধহয় লেখকরা টেরই পায় না যে তারা লেখক, তাদের প্রধান কাজ লেখা, শব্দ সৃষ্টি করা...
খুব ভালো লাগলো কথাগুলো। আমিও মনে হয় এই লেখাহীনতার সময়েই টের পেলাম যে লেখা ছাড়া আমার কোনো নিস্তার নেই!
বদলে যাওয়া লেখা নামাইতে থাকো। জলদি........... শীত শেষ হওয়ার আগেই। ভালো থেকো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ওক্কে বস। চেষ্টা করবো লেখাগুলো তাড়াতাড়ি লিখে ফেলার! 🙂
শব্দরা ফিরে আসুক, জায়গা চিনে নিক 🙂
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আসুক!
আন্দালিব ভাই অসাধারন একজন লেখক। শব্দেরা প্লীজ উনার ঘরে যাও।
আর ভাই, আপনি তাড়াতাড়ি লেখা নামান।
রাজী, ধন্যবাদ তোমার শুভকামনার জন্যে।
তয় তেলটুক মাখলাম না! 😉 :grr:
তুই আসলে মানুষ না। কি সুন্দর করে লেখলি। বড় ভাল লাগলরে।
গাছ আবার মানুষ হয় কেমনে? =))
হুরমুর করে সব শব্দরা তোর কাছে চলে আসুক ।
শব্দের জাদুকর বহুদিন পর এলেন। ভাইয়া, আছেন কেমন???
অফটপিকঃ ২০০৩ এ একবার রেজওয়ান ভাইয়ের সাথে দেখা হইছিল সিএমএইচে; পা ভেঙ্গে ভর্তি ছিলেন উনি। কেমন আছেন তিনি?
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
রিজওয়ান ভালই আছে। মাঝে অনেকদিন ওর সাথে যোগাযোগ নাই। আর করে পোস্টিঙয়ের চাকরি সুতরাং দেখাও হয় না তেমন। তবে ভালো আছে, যদ্দুর জানি।
শব্দেরা বেশ শব্দ করেই ফিরে আসবে, 🙂
লম্বা বিরতি নিলে ভাইয়া, আছো কেমন?
আছি ভালই। তবে লিখতে পারছি না অনেকদিন, এজন্যে ভালো লাগে না মাঝে মাঝে।
খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন-কে স্বাগত জানাই :hatsoff:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ধন্যবাদ বস। শুভেচ্ছা! :boss:
লেখক হিসেবে আপনের ধারে কাছেও যাইবার পারুম না , মাগার এই প্রবলেমডা আমারেও ভুগাইতেছে। প্লট মাথায় আসে, আঙ্গুলে আসে না 🙁
একটা সল্যুশন হিসেবে, তৌফিকের মতো প্লট নিয়েই ব্লগ দিতে পারো। দেখবা সবাই গাট্টি বাঁধা প্লট নিয়ে হাজির হবে। আর কিছু না পারলে আবোল তাবোল যা ইচ্ছা করে লিখতে শুরু করো। চর্চা চালিয়ে গেলে লেখার পুরনো আমেজ আবার ফিরে আসবেই!!
শব্দের সশব্দ প্রকাশ না হলেও কাছাকাছি গেছেন বলা যেতে পারে আন্দা ভাই। কেমন আছেন?
হুম, কাছাকাছি যেতে পেরেছি সেটাই এখন খিছুটা সান্ত্বনা।
আমি মোটামুটি আছি। ভালো খারাপ মিলিয়েই। তোমার কী খবর? কেমন আছো??