এখন চিন্তা করতে গিয়ে হয়ত মনে হচ্ছে এটা অনেক বড় ব্যাপার ছিল, একটা মেয়ে আমার সাথে এগিয়ে এসে কথা বলল! তাও আমার এত প্রশংসা করল! তাও কি না আমি, যে কি না তেমন একটা মেয়েদের সাথে কথাই বলতে পারি না তার!
কিন্তু ঐসময় কেন জানি সেরকম কিছুই মনে হয় নাই। পরেরদিন নিয়মমত ক্লাসে গেলাম। পিছনের দিকে বসলাম, ক্লাসরুমের বামদিকে। এক পিরিয়ড পরে খেয়াল করলাম ডানদিকে মুমুও একা একা মেয়েদের সারিতে বসেছে। চোখাচোখি হতেই আমি আবার পাঠে মনোনিবেশকরতঃ সামনে তাকালাম। একটু পরে আবার ঘাড় স্বয়ংক্রিয় ঘূর্ণনে ডানে ঘুরে গেল। আবারও চোখাচোখি!! মেয়েটার কি বাম কানের উপরেও দুইটা চোখ আছে নাকি?? যাই হোক বাকি দিনটা বেশ নিরুপদ্রবে কাটল। এভাবে কয়েকদিন যাবার পরে বেশ একটা নিয়ম তৈরি হয়ে গেল। হয় ক্লাসে চোখের সাথে চোখের একটা ঠুকঠাক হবে, নয়ত ক্লাস শেষে কিভাবে কিভাবে জানি মুমু আর আমি একসাথে বাসায় ফিরতে শুরু করলাম। 😀
মধ্যে এক বৃহস্পতিবার স্কুলে যাই নাই। শনিবার গিয়ে দেখি সবাই হেসে হেসে অভিনন্দন জানাচ্ছে! জানতে পারলাম আমি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় সবগুলাতেই প্রথম হয়ে গেছি!!! 😕 পিরামিড ভেঙ্গে পড়লেও মনে হয় আমি এত অবাক হতাম না। মোটামুটি এক ধাক্কায় পুরো ক্লাসের মনোযোগে চলে এলাম। “ঢাকা থেকে একটা ছেলে আসছে, হেব্বি!!” আমি বিরাট লজ্জায় পড়লাম!! এমনিতেই চুপচাপ থাকি বন্ধু-টন্ধুও বিশেষ নাই, সবাই এসে যখন এভাবে বলছিল তখন অবস্থা হলো, ভালোও লাগে আবার “নইজ্জা”-ও লাগে! :shy:
সবশেষে বাসায় ফেরার পথে এল মুমু।
-“কংগ্র্যাটস্! তুমি তো সবগুলোয় ফার্স্ট হয়ে গেলা।”
-(মুচকি হাসি)
-“আমি জানতাম তুমি ভালো করবা, বলসিলাম না?”
(হায়রে! তবুও তোমারই কৃতিত্ব?)
-“আরে নাহ্। কিভাবে জানি হয়ে গেসে, ঝড়ে বক। আমি আসলে অত ভালো অভিনয়ও পারি না, গল্পও বলতে পারি না। আর বানান তো খুব বাজে!”(বিনয়ে আমি মাখনের চেয়েও দ্রুত গলে যাই) B-) B-)
-“না না”, ঘন ঘন মাথা নাড়ে মুমু, প্রবল দোলনে দুইটা বেনি সরল দোলক হয়ে যায়, “তুমি আসলেই পারো। সামনে তো বৃত্তিও পাবা! কত ভাল!”
এইবার আমি প্রমাদ গুণি, চাছাছোলাভাবে বলি, “আমি পড়াশোনায় অত ভাল না। বৃত্তি পাওয়া অনেক কঠিন, বুঝলা?”
এইসব তুচ্ছ হেঁয়ালি কথায় অল্প রাস্তাটুকু পার হয়ে দু’জনেই বাসার কাছে চলে আসি। মনে হয় রাস্তাটা আরেকটু লম্বা হলে ভাল হত, আরেকটু গল্প করা যেত।
-“আচ্ছা যাই”, বেনি দুলিয়ে চলে যায় মুমু, হঠাৎই উল্টো ঘুরে বলে,” বিকালে নিচে নামবা না তুমি?”
-“অ্যাঁ-হ্যাঁ- মানে- ইয়ে- হ্যাঁ, নামবো তো!”(একটা ইয়েস বলতে তোতলাচ্ছিস, গাধা!!) x-( x-(
বিকেলে নেমে ইতিউঁতি চাই, পার্কে একটু যাই, সাইকেল-রেসে আর মন থাকেনা, চালাতে চালাতে হঠাৎ মোড় নিয়ে অন্যদিকে চলে যাই! বগুড়া ক্যান্টনমেন্টের পাশে একটা বন এলাকা ছিল, সিপাহিদের ট্রেনিং হত মনে হয় ওর ভেতরে। আমি সাইকেল নিয়ে তখন প্রায়ই কাঁচা রাস্তা দিয়ে বনের মধ্যে চলে যেতাম। চারপাশে গাঢ় কালচে সবুজ, হলদে সবুজ, আর লাল মাটির পথ খুব আপন মনে হত। আশে পাশে কত বিচিত্র গাছপালা, পাখি যে দেখতাম তার কোন ইয়ত্তা নেই! যেই যেই দিন কোচিং থাকত, পড়ো বিকেলে কোচিং শেষে আমি হেঁটে বনের দিকে যেতাম, একা একা। ভালো লাগত একা একা ঘুরতে। মানুষের সাথে কথা বলার সময় কতকিছু হিসেব করতে হয়, মনে মনে যা ভাবি সেগুলো কখনও বলা যায় না। কিন্তু ঐ নিভৃতে আমি যেন পুরো আপন বলয়ে থাকতে পারতাম!
(আগামী পর্বে সমাপ্য)
“ঢাকা থেকে একটা ছেলে আসছে, হেব্বি!!”
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আমার কৈশোরে অনেক মাস্তি ছিল...কিন্তু কোন রোমান্স ছিল না... :((
আন্দালিব, জটিল... :clap: :clap:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
থ্যাংক্স কবীর ভাই। রোমান্স না থেকে ভাল হইছে! থাকলে বুঝতেন, এইটা দিল্লী না, এক্কেরে জাপানের লাড্ডু! খাইলে প'রে বাম্বু যে কোন্দিক দিয়া খাইতেন টেরও পাইতেন না!
সেক্ষেত্রে বাম্বুটাকে বেশি ডেঞ্জারাস বলে মনে হচ্ছে না...মানে যদি টেরই না পাই...আর কি...!!! :-B
হে হে ! প্রথমে পাইতেন না। পরে যতো বড়ো হইতেন, নড়াচড়া হইতো আর একটু একটু করে টের পাইতেন! 😉 😉 😉
🙁
জটিল বলছ। পুরা একমত।
ক্যাডেট কলেজের আগ পর্যন্ত পুরা রোমাঞ্চ দিয়ে ভরপুর ছিল জীবন টা। বুড়া বয়সে ক্যামুন ক্যামুন জানি লাগে এখন।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ ভাই, এইটা কী বললেন? ডিটেইলস শুনতে চাই। নাইলে ভাবীকে জানায়া দিমু।
লিটল ম্যানহাটনের কথা মনে পইড়া গেলো। 🙂
এই ছবিটা অইটা থেকেই নেয়া। ছবিটা দেখে মুমুকে মনে পড়ে গেছিলো! :(( :((
আমার মনে পড়ছিল লোপা নামের একজনের কথা। সচলে পোস্টাইছিলাম সেই কাহিনী লিখখা। শুরুতে এই ছবিটাও দিসিলাম 😛
সেই কাহিনী আমরা আবারও ঝান্তে ছাই! 😉
ঝাতি আসলেও ঝানবার চায়। রায়হান তারাতারি লেখা নামা।
আবারো!!! 😡 😡
এই পোলাডা খালি ঝুলাইয়া রাখে। :bash: কইসা মাইর দিতে হবে দেখি। এখনো প্রেম হয় নাই, ধুর, এতো দেরি করতেছো কেনো? x-(
আমি লিখলে তো প্রথম পর্বেই প্রেম হইয়া যাইতো। 😉 😉
এরাম দাবড়ানি দিলে খেলুম না! x-(
আমি কত কষ্ট করে লিখতেছি! :bash: হাত ব্যথা হয়ে যাইতেছে! 🙁
বস্, একটা এক পর্বের পেরেম কাহিনী ছাড়েন! পইড়া একটু ভালো লাগবে! :dreamy:
আহারে আন্দালিব এর মতো যদি ছুডু বেলায়ই এরম পাইকা ( 😉 ) যাইতে পারতাম তাইলে মনে হয় এখন এরকম লেখক হইতে পারতাম :(( :((
ইশ, ক্যান যে কুনু রুমান্টিক ছুডু বেলা পিলাম না :(( :((
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
বেলা মেয়েটা দেখতে কেমুন ছিল বস্?? B-) B-)
দেখতে ভালোই আছিলো মাগার রুমান্টিক আর ছুডু আছিলোনা 😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
হুম! ম্যাচিউর?? আপ্নে বস্ পাব্লিক আপ্নেরে স্যালুট! :salute:
কিরে ইমো কুনডা দিমু 😉 এইডা? :dreamy: এইডা ? :-B
নাকি এইডা ;))
😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
সবাই যাই বলুক, ছবিটা কিন্তু জোশশশশশশশশ
:boss: :thumbup:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
হ্যাঁ, ছবিটা আসলেই অনেক জোশ! একটা ছবির পোস্টার এটা! নাম Little Manhattan। সময় পেলে মুভিটা সবাই দেখবেন। :thumbup: :thumbup:
হুমমমমমমমমম !!! মধুতো দেখি দিন দিন আরো মিষ্টি হচ্ছে 😡 । পাঠকের আগ্রহ বাড়িয়ে দিচ্ছ হে আন্দালিব। এখানেই লেখকের সার্থকতা :boss: । শেষ পর্বের অপেক্ষায় রইলাম :dreamy:
ছুট্টুবেলার কথা মনে পইড়া যাইতেছে... :dreamy:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আন্দালিব, আবারো চমৎকার একটা লেখা। তোমার লেখা দেখলে আমার আমার আর লেখতে ইচ্ছা করেনা! (অবশ্য এমনিতেই আমার লেখালেখির ইচ্ছা অনেক কম!)
পরের পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে রইলাম। :dreamy: :dreamy: :dreamy:
জটিল হচ্ছে আন্দালিব ভাই। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আন্দালিব ভাই পিকটা এক্কেরে পারফেক্ট দিছেন। :thumbup: :thumbup: B-)
হে হে...... লিটল ম্যানহাটন বস আর আপনের লিটল বগুড়া বসসসসস। 😀
আহারে সেই দিনগুলা। :dreamy: :dreamy:
কোন দিনগুলা? তোমার বাচ্চাকালের পেরেম কাহিনী ছাড়ো! 😀 😀
উম্মমা.........
খেলুম না।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আন্দালিব
তোমার লেখায় অনেক সময়ই কমেন্ট করার কিছু খুঁজে পাই না।বারবার 'অসাধারণ' বলাটাও তো বিরক্তিকর তাই না?
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
জুনা ভাইয়ের সাথে যুগাযুগ করেন। ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না.কম থেকে ভাষা পেয়ে যাইবেন!
অনেক ভালো লাগলো টিটো ভাই!
পুলাডা সব সময় কঠিন কঠিন জায়গাতে আইসা লেখা ভন কইরা দেয়। এত মজা নিয়া লেখা গুলা পড়ি শেষে আইসা ঠাশ কইরা থাইমা যায়। আর চাতক পাখির মত চাইয়া থাকা লাগে নেক্সট পর্বের জন্য। এটার একটা বিহিত হওয়া দরকার।
(অফটপিকঃ আইচ্ছা কেউ কিছু মনে নিয়েন না, "চাতক পাখি" জিনিস টা কি?? :-B )
ঠাশ কইরা থামছে এখন পরের পর্ব আইতে একটু টাইম লাগলে শেষে না আমি ঠাশ ঠাশ মাইর খাই! 😕 😕 😕
চাতক পাখি হইলো একটা পাখি। তার চাহনি খুবই উদ্বিগ্ন, দেখলে মনে হয় খায়া-না খায়া তাকায় রইছে! :-B :-B
ধুর মিয়া তারাতারি পরের পর্ব ছারেন কুইক
ইসসিরে কেন যে ছুডুবেলায় ইরাম সহপাঠিনী পাই নাই :bash: :bash: :bash:
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
অপূর্ণ সুন্দর।
আমি বুঝলাম না কারো এই জায়গাটা নজরে পরলো না কেন? আন্দালিব কি "পিচ্চি প্রেম" বনে নিয়ে যাচ্ছে??
পরেরটা ছাড়ো তাড়াতাড়ি। তর সইতাছে না। 😡 😡 😡
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ঐ আমলে বনে যাইত বইলাই তো পরে জেসিসিতে গিয়া ভর্তি হইছিল... :-B
আড্ডা দিয়া, খাওয়া দাওয়া কইরা মন তো ভালো থাকার কথা। এখন তাড়াতাড়ি পরের পর্ব ছাইড়া দে। 🙂
আমার লগে ক্লাশ ওয়ান আর টু'তে জেসমিন পড়ত। আমরা দুইজনও এক লগে স্কুলে যাইতাম আর আসতাম...
আহারে ছুডুবেলার পেরেম! বড়োই মধুর! :dreamy: :dreamy: :dreamy:
এই বর্ণনাভঙ্গিটুকু অদ্ভূত সুন্দর লাগলো।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
থ্যাঙ্কু তোমারে! 🙂