(মাঝে আমার একজন প্রিয়কবি বলেছেন, আমি ইদানিং কবিতায় নিরীক্ষামূলক কাজ কমিয়ে দিয়েছি। কথাটা কিছুটা টনক নড়িয়ে দিল। কবিতার ব্যাপারে আমি এই সময়েও অচল পয়সার মত মায়া পুষে রাখি। যে দৃশ্যের প্রেমে পড়ে আমার ভেতরে শব্দ, পংক্তি ও স্তবক ঝরে পড়ে সেগুলোর প্রতি একটা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের চেষ্টা করলাম। নিচের লেখাগুলো পুরোপুরি নিজস্ব বিচারে লেখা, মানে অনেকটা রাইটিং ফর প্লেজার। তবে সবার মতামতের জন্য আকাঙ্ক্ষাটুকু নির্লজ্জের মত বলেই সাহস করে দেয়া…)
ড্রয়ার
দৃশ্যকল্পের কয়েকটা গাছ বুনেছিলাম ঘরের কোণে রাখা পুরনো আলমারির ভেতরের
চাবি দেয়া ড্রয়ারে। ঘষাছাল চামড়া থেকে অনুমেয়ঃ আমার বয়সের দ্বিগুণ বয়সী কাঠের
আলমারি প্রায়শঃ বৃদ্ধ শরীরে বহু টানাপোড়েন, টানাহ্যাঁচড়া, বাসাবদলের স্মৃতি ধরে
রাখেন। মূলত গৃহস্থের ঘরে অন্য সবার সাথে জায়গা না হওয়ায় তার অবস্থান এ ঘরে
ঘটেছে, এমন তথ্য মনে সৌহার্দ্যের জন্ম দেয়। আর্দ্রতা ও শৈত্যপ্রভাবে কাঠের শরীরে
প্রসারণ-সংকোচন, ফলতঃ ড্রয়ারের খোল ও কাঠামো ঢিলে, নড়বড়ে করে হয়ে গেছে,
তাই চাবি দেয়া ড্রয়ার যথেষ্ট অগোপন- মৃদু আন্দোলনেই প্রতিরোধ তার, ভেঙে পড়ে।
তবু গোপনীয়তা ফাঁসের এই সমূহ সম্ভাবনা মাথায় রেখে যাবতীয় সম্পদ, সম্পত্তি,
অর্থবাচক স্থাবর আবেগ সেই কুঠুরিতেই নিরীহ ঘুম-মগ্ন। এবং সম্পদের ভাঁজে কিছু
দৃশ্যকল্পের গাছ ন্যাপথলিনের পোকারোধক-ভূমিকা পালন করে, স্মৃতিজাত গবেষণায়
প্রাপ্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সম্পদের সুষ্ঠু বিতরণ না ঘটিয়ে পুরনো আলমারির ড্রয়ারে চাবি
দেয়া থাকলে আমাদের এই তৃতীয় বিশ্বেও মন্দা দেখা দিবে। দৃশ্যকল্পের গাছেরা তাই
আলোহীন কুঠুরিতে স্মিতমুখে আগাছার জনন দ্রুততায় বেড়ে ওঠে। দিনমান ব্যস্ততায়
তাদের ভুলে থাকা যায়, ড্রয়ারটি অমনোযোগে ভারি থেকে ভারি হতে থাকে, হায়
সকল বনসাই দৃশ্যকল্পের ফুল, নরম গালিচা স্মৃতির শবাধারে বিমুগ্ধ শ্রোতা- আর দেখো
আমাদের সকল বসবাস জুড়ে কী ভীষণ জমকালো শোক। অনাদিব্যাপী বনসাই চিত্রলেখ।
অজগর
প্রতিটি শকটে জ্বলন্ত লাল ও হলুদ চোখ, স্থবির অজগর বাঁকানো কালো শরীরে
পড়ে আছে। নদীতটে বা ঘাটে জমানো নৌকার মত দুলছে, নিভছে, ধীরে, ধীরে
এই আধুনিক বাহনে ছইয়ের মত উঁচু হয়ে থাকা পেটের ভেতর শীতল বাতাস
তোমাদের অন্তর্বাসে হিম বরফকণা চেটে শুয়ে থাকে। সূক্ষ পুলকসমূহ দীর্ঘশ্বাস
হয়ে চোরাগোপ্তা পথে তুলোর পোশাক চুঁয়ে চুঁয়ে শকটের পাঁজরে লেগে থাকে,
এবং ভিক্ষাপ্রার্থীর খোঁড়ল-জমা দৃষ্টিতে কয়েকটি চাঁদে-পাওয়া আহ্বানের ফাঁকে
সেগুলো চুপিসারে পাচার হয়ে যায়- শকটবন্দীর অন্তর্বাস হতে পুলকচুরি অহরহ
ঘটছেই। জনপদ বিধাতার সভাসদের শয্যা থেকে ক্রমশ বিলীন নিম্নবিত্ত বিরহ!
গলনাঙ্ক
একটি বিষণ্ণ কাচের গেলাস উষ্ণজুনের তাপদাহে ঘামের শীতলবিন্দু বুকে মেখে
গোলাপি টিস্যুর পোশাক পরে আকুল কাঁদছে। দেখো কী সহজে সে কান্না দেখে
আমি স্ট্র দিয়ে টেনে নিচ্ছি হরিৎ তরল পানীয়। মনে পড়ে কুহকী অ্যাবসিন্থ আহা
জিহ্বার কোষ খুঁড়ে স্বাদের নেশা তুঙ্গে ধাপে ধাপে উঠতে থাকে। গলিত লোহা-
গোলানো পানিতে আমাদের প্রেম ও পাপ, বিবিধ গলনাঙ্কে মিশে যেতে থাকে
গেলাসের শীতলবিন্দুর প্যাভিলিয়ন হতে উষ্ণতার জুন কেবল চোখ মেলে রাখে।
সিঁড়ি
সন্ধ্যের পরে যেমন আঁধার নামছে, সভ্য নগরে
ওভারব্রীজ বেয়ে তুলোবোনা ওড়নাগুলো গিঁট বেঁধে
উঠে আসে
…………আশে পাশে
…………………….নেমে আসে
………………………………..ধাপে ধাপে
লোহার সিঁড়িতে ধুলোবন্দী মূল্যমানে তাদের
………………….কৌমার্য
………………………….বেণির ধৈর্য
……………………………………..সাহচর্য
……………………মিশে যেতে থাকে-
আ……………শ্চ…………..র্য
পেছনের পথে নুয়ে পড়া স্ট্রীটলাইটের জিহ্বা ও শিশ্ন থরথরে কাঁপন ধরে রাখে
লোহার পেছনে
দাঁতের পেছনে
রেলিঙের গায়ে
সিঁড়িদের পায়ে
বিগত সন্ধ্যার লালাভ দীপ্তি জ্বলজ্বলে হাসি হয়ে ঝরে পড়তে থাকে।
***
[ব্লগের পাতায় ইন্ডেন্টিং পারি না বিধায় অনাবশ্যক ডট দিতে হলো]
২.৮.৯
🙂 🙂 😀
😕 😕 😕
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ভাবির জন্য... :teacup: :teacup:
রকিব, চা বানাইতে গিয়া ধরা খাইলা মনে হয়? 😛
চায়ের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। 🙂
" 😕 😕 😕 "
:thumbup:
পোস্টের ছবিটারে সাইজ করতে পারতেছি না! :bash: :bash:
URL দিয়ে পোস্ট করলাম, কিন্তু এমন বেখাপ্পা বেসাইজটাকে কীভাবে ঠিক করবো?? 😕
আহ! আমার এন্টেনা! :awesome: :awesome:
অনটপিক: কালকে পরীক্ষা শেষ। ধীরে সুস্থে কালকে কমেন্ট দিবো। মানে যদি বুঝি। আর না বুঝলে তাইফুর ভাই ও তার সিঁড়ি তো আছেই। ;;; ;;;
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
তাইফুর ভাইয়ের নোট বই এইবার না কিনলেই না 😕
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
জিহাদ, মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম।
রাশেদ, তাইফুর ভাই বস লোক। কিন্তু এখন তো বড়ো হইতেছ, তোমার যা মনে চায় বলো। আমি খুবই খুশি হবো। 🙂
আন্দালিব ভাই, এইবারের মত মাফ কইরা দেন 🙁 আরেকটু বড় হয়া নেই ।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
🙁 😕 :bash:
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
তোমাকেও বন্ধু দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ;;;
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
মাহে রমজানের শুভেচ্ছা কামরুল ভাই। :))
আন্দা,
সবসময় রসিকতা করি বলে কাব্য রস বুঝি না তা কিন্তু না ... 😛
তোর লেখার ভক্ত আমি এইটা আগেও বলছি ... O:-)
কোন পরিস্থিতিতে, কোন ভাবনায়, কি বুঝাইতে চাওয়া হচ্ছে, কবি কি বুঝতে চাচ্ছে ... অনেকটাই বুঝি বলেই হইত রসিকতা করার সাহস পাই।
বরাবরের মত এইটাতেও ৫ দাগায়া গেলাম।
( :bash: সিরিয়াস কমেন্ট হয়া গ্যালো ...
:khekz: :khekz: :khekz: )
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
তাইফুর ভাই.......জনগণ আপনার কাছে আরেকটা উচ্চ নম্বরের সিঁড়ি চায়.... 😀
একক মতামত-কে জনগণের মতামত বইলা চালায়া দেওয়ার চেষ্টা করে গণতন্ত্র কে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবার জন্য তানভীরের ভ্যাঞ্চাই।
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
তাইফুর ভাই, আমি অবশ্য আপনার রসিকতাটাকে খুব উপভোগ করি! আগে যখন "উচ্চ নম্বরের সিঁড়ি" প্রকাশিত হলো, তার পাতায় পাতায় আমার লেখার ব্যবচ্ছেদ, বর্ণনা! আহা! পড়তে পড়তে মন খুশিতে ভরে গিয়েছিল। 🙂
এবারের লেখাগুলো, কিছুটা গদ্য ঢঙে। আমি সৌমিত্র বা নূপুর ভাই যেমন ছন্দে লেখেন, তেমন করে লিখতে পারি না। তাই একটু ভিন্নভাবে অন্ত্যমিল রেখে লেখার চেষ্টা করলাম। মনে আশা, হয়তো একদি ছন্দের অপ্সরা আমার কাছে ধরা দিবে!
ঐ 😀
ওরে বাপরে! এই লেখাটা দেখি সাংঘাতিক!
অনেক কষ্ট করে, অনেক মনযোগ দিয়ে পড়ে বুঝলাম- তাইফুর ভাইয়ের গাইড বই ছাড়া উপায় নাই... 😀
লেখাটা মনে আসলেই একটু বেশিই জটিল হয়ে গেছে। আমি আসলে দৃশ্য আঁকতে চাইছিলাম। অপটু আঁকিয়ে বলেই তেমন প্রাঞ্জল হয়ে ওঠেনি বোধহয়।
গাইড বই পড়লে পাশ হইবো, কিন্তু স্ট্যাণ্ড হইবো না তানভীর ভাই! ;;;
আর কিছু বলা লাগব তাইফুর ভাই? 😉 😉
কাইউম'রে জিগা ...
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
কি বলেন কাইয়ূম ভাই? :grr: :grr:
একটি নিঁখোজ সংবাদ
" কাইয়ূম ভাই গতকাল লেখা পোষ্ট করার পর পর'ই হারিয়ে গেছেন, যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি উনার খোঁজ পেয়ে থাকেন, সরাসরি সিসিবি'তে জানানোর জন্যে অনুরোধ করা হইলো " ... B-)
:khekz: :khekz: :pira:
andalib boraborer motoi oosadharon!
বিনীত ধন্যবাদ মনসুর ভাই। :hatsoff: :hatsoff:
সত্যিই বলছি আন্দালিব বুঝিনি। দুবার পড়লাম। প্রথমটা কি স্মৃতি? দ্বিতীয়টা মনে হয় রাস্তা নিয়ে। তৃতীয়টা কি সুরা? আর চতুর্থটা?? পারলাম না। তোমার ভাবনাগুলো একটু ভাগাভাগি করো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানা ভাই, এটা আসলে আমাদের নাগরিক দৃশ্যকল্পগুলো তুলে আনার প্রয়াস বলতে পারেন। আমাদের জীবন যেমন দ্রুত, সেই গতিতেই আমরা সকল অনুভূতি আর উপলব্ধিগুলোকে এক মুহূর্তেই পুরনো করে দেই। সেই ঘটনাটাই তুলে আনতে চেয়েছি।
প্রথমটা স্মৃতিই বটে। দ্বিতীয়টা রাস্তায় এক দীর্ঘ ক্লান্তিকর জ্যাম-এ বসে লেখা। আমার পাশের বাহনে একটা বেঞ্জের ভেতরে এক ললনাকে নিয়ে। কাচের আড়াল থেকেও আমি তার উত্তাপ আন্দাজ করতে পারছিলাম!
তৃতীয়টা তো আপনার পাঠে নতুন মাত্রা পেল! আমি ওভাবে ভাবিনি, তবে আপনার আইডিয়াটাও কবিতার সাথে বেশ যাচ্ছে। কবিতার মধ্যে এই নব-নব ইন্টারপ্রিটেশন আমি খুব উপভোগ করি।
চতুর্থের পটভূমি সন্ধ্যা, কিছু সুতির (তুলোবোনা) ওড়না পরিহিতাকে নিয়ে। তারা আমাদের সম্ভাবনাময় পোশাক শিল্পে তাদের শ্রম আর জীবনের অগুণতি দিন রাত উৎসর্গ করে দিয়েছেন। আমার কেন জানি মনে হয় এই জান্তব ঢাকা নগর মনে মনে এই কর্মীদের প্রতি খুব লোলুপ মনোভাব পোষণ করে।
আন্দালিব ভাইয়া ধন্যবাদ এইভাবে বুঝিয়ে বলার জন্য।
কালকে থেকে পড়ছি, কিন্তু কিছু লিখার সাহস করে উঠতে পারছিলাম না।
বুঝিইতো নাই। 🙁 কিন্তু চেষ্ঠা জারী ছিলো। 🙂
ভাবি, আমি যদিও অতো হাসি-তামাশা করতে পারি না, কিন্তু বড়ই নিরীহ প্রাণী। আপনি দুর্দান্ত সাহসে যা বলবেন, সেটা আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্লগ আমার কাছে ক্রমশ নিজের খুঁত কাটিয়ে নেয়ার জায়গা। এমন মিথস্ক্রিয়া না পেলে আমার লেখালেখি হত না একেবারেই। তাই পাঠক হিসেবে সবার মতামত আমাকে নতুন নতুন চিন্তা দেয়, লেখার প্রেরণা দেয়!
কবিতা দিয়েই বলি:
:boss:
আন্দালিব, এইবার আবার পড়ি?
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
:hatsoff:
ধন্যবাদ আন্দালিব। এইবার কিছুটা বোঝা গেল। তবে আরো কয়েকবার পড়তে হবে মনে হচ্ছে......... :hatsoff:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
😀
ভাই, কবিতা যত বেশি পঠিত হয়, ততই তার ভেতর থেকে নতুন নতুন আঙ্গিক বেরিয়ে আসতে থাকে। এখানেই লেবুর সাথে কবিতার পার্থক্য! ;;;
সময়ে অসময়ে কেউ আমার কবিতা পড়ছে এটা আমার জন্য সুখকর প্রাপ্তি! :clap:
আন্দালিব একমাত্র প্রথমটা পড়ে কিছুটা বুঝেছি । মনে হলো স্মৃতি/অতীত নিয়ে লিখেছিস । বাকি তিনটা অনেক বেশি এ্যাবস্ট্রাক্ট । তুই বুঝিয়ে না বললে হয়তো দৃশ্য গুলো বুঝতাম না । গলনাঙ্ক আমার কাছে সবচেয়ে বেশি এ্যাবস্ট্রাক্ট মনে হয়েছে ।
আদনান ভাই, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে কবিটাগুলো পড়ার জন্য।
আপনার মন্তব্যে মনে হচ্ছে প্রথমটাকে নিয়ে একটু কাজ করতে হবে। আমি আসলেই চাইছিলাম অ্যাবস্ট্রাক্ট দৃশ্য গড়তে। কারণ আমরা আশে পাশে যা দেখি, সবই খুব ভিভিড। আলাদা। সেই চেনা ছবিগুলোকেই যদি একটা ঘন পরিসরে নিয়ে কম্পোজ করি, তাহলে কেমন দাঁড়ায়, তাদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কগুলো কেমনভাবে তৈরি হয় বা ভেঙে পড়ে, সেটাই দেখার চেষ্টা করেছি। উপরের ছবিটা যেমন, অনেকগুলো বস্তুর গঠনকে একটার সাথে আরেকটা জুড়ে দেয়া হয়েছে, আলাদা করে কিছুই দেখা যায় না, তবু বোঝা যায় যে সেখানে একটা সুন্দর কিছু আছে! 🙂
"সিঁড়ি" বেশ বেশ ভালো লেগেছে আন্দালিব।
গদ্যে তোমার হাত ঈর্ষণীয়।
টুকরো টুকরো ছবিগুলো, কথাগুলো দারুণ লেগেছে আমার।
কিন্তু আমার মনে হলো,
হয়তো আরো কম কথায়,
সবগুলো দৃশ্যকল্প না বলেও
এই আমেজটা মেইনটেইন করা যেতো।
অনেকগুলো সুন্দর জিনিসের সমাহার আমরা পেলাম,
দারুণ গদ্য পেলাম, কবিতাকে যেন পেলামনা।
তুমি পরিশ্রমী লেখক,
আমার মন্তব্যে ক্ষুণ্ণ হবেনা নিশ্চয়ই!
বিমূর্ত ভাব তুমি দিতে পেরেছ সন্দেহ নেই,
তোমার লেখাটিতে আধুনিকতার ছোঁয়াও প্রবল,
নিজস্ব কাব্যভাষাও অধরা নেই আর।
নিরীক্ষাধর্মী এমন সব লেখা আমাকে নতুন করে লেখার প্রেরণা যোগাচ্ছে।
নূপুর ভাই, এটা আমিও মানি। কবিতাগুলো লিখে ফেলার সময়ে আমার মধ্যে কাজ করছিল "সবকিছু" বলে ফেলার প্রবণতা। অর্থাৎ আমি যা যা দেখছি, যেভাবে যেভাবে দেখছি, দৃশ্যগুলো আমার চোখে, মুখে, নাকে, মনে যেভাবে ঘাই মারছে সেভাবেই তাদের বর্ণনা করা। সেক্ষেত্রে কাব্যময়তা বা কবিতার শরীর স্থূল হয়ে গেছে মানছি। এমনকি লিখে ফেলার পরের যে কাটছাঁট, পংক্তির মাঝে একটা অদৃশ্য জায়গা পাঠকের জন্য ছেড়ে দেয়ার পুরনো অভ্যাস, সেটাকেও চেপে রেখেছিলাম। এই দৃশ্যগুলোকেই আবার অন্যভাবে তুলে আনা যায়। এখন ভাবছি "অপরচুনিটি কস্ট" হিসেবে এই গদ্যঢঙ কতটা মূল্য পাবে! 🙂
তবে এইখানে বস একটু আসলেই ক্ষুণ্ণ হইলাম। আমি ব্লগে বা যে কোন মিডিয়ামে কবিতা নিয়ে আলোচনাকে অনেক বেশি স্বাগত জানাই। ক্ষুণ্ণ হবো কেন?? বরং আপনি দেরি করে মন্তব্য দিয়েছেন দেখে একটু মন খাইছি। হা হা হা! মন ঠিক করার জন্য, আর বইলেন না। আম্রা আম্রাই তো। :hug:
ও আরেকটা কথা, "সিঁড়ি" ভালো লেগেছে দেখে বুঝলাম, আপনি কী বুঝাতে চেয়েছেন। এই রকমের কবিতা আমি আগে লিখিনি। এখানে পুরো চেহারাটা ফুটে নাই। মানে ডট্ না দিয়ে লিখতে পারলে ভালো হতো... 😀
দেরি করে মন্তব্য দেবার একটাই কারণ,
আমি আসলে বারবার পড়ি তোমার লেখা।
সময় বার করতে হয় একটু ভালো করে
লেখার জন্যেও। ব্যস্ততা আমকে কুরেকুরে খাচ্ছে রোজ।
তোমার বা অন্য সবার লেখা নিয়ে আরো অনেক অনেক বেশী করে
বলতে ইচ্ছে হয় আমার, আরো যত্ন নিয়ে। কিন্তু হয়ে উঠছেনা।
শুধু কবিতা না, সিসিবির গদ্য বা কৌতুক যে কোন কিছু নিয়ে
মেতে ওঠা মন্তব্য করতে হাত নিশপিশ করে, কিন্তু উপায় নাই
গোলাম হোসেন!
যাক, "ক্ষুণ্ণ" ব্যাপারটা একটু ফর্মাল হয়া গেলো বটে।
ওটি করা ঠিক হয়নি আমার।
আর "সিঁড়ি"তে তুমি তবু ডট দিয়ে দারুণ চালালে।
আমারো খুব অসুবিধা হচ্ছে এই সুবিধাটুকু এখানে নেই বলে।
উপায় আছে কোন?
অনেকদিন পর পড়লাম...
ভাবের গভীরতা আমার এরকমটার ছিটেফোটা থাকলে তবু কিছু বলা যেত...
আপাতত শুধুই মুগ্ধতা 🙂