সকলের মত সকাল আসে না আমার
জানালায়
ভোর কিংবা সকালের রোদসকল দানাবাঁধা
সিলুয়েট
ছবিহীন দুপুর আঁকতে থাকে নিরলস শ্রমে।
২.
আমাদের শহরে বছরের মাঝের মাস দু’টা ঘুণপোকার মতো একাগ্রতায় বিঁধে থাকে। কাঠের শরীর কুরে কুরে খাওয়ার সুখ পেতে থাকে মধ্যমাসের ঘন্টাগুলো। তারা শ্লথ এবং নির্বিকার, সেই কারণে অনেকাংশেই নিঃসংশয়ে আমাদের শহরের ইতিহাস থেকে মধ্যমাসের ঘটনাবলি ঝরে যায়। জুন ও জুলাই মধ্যমাসের টানাহ্যাঁচড়ায় পড়ে বাদী-বিবাদী অথবা বাঁদী হয়ে আদালত চৌকাঠে আছড়ে পড়ে। কোমল নিঠুর শহরের রাজপথে জুন ও জুলাই যেভাবে বিস্মৃত হয় সেই দুর্ধর্ষ ঘটনার বিচার চাই– আমরা নীরব জনগণ এবং ধর্মালয়ের জাগ্রত পিতা! জুন ও জুলাইয়ের খিন্ন-বসনা শরীরের দিকে আমরা জুলজুল করে তাকিয়ে থাকি। আরে ভিখারীর শরীর এমন ডগমগে! কোথায় খায়, কোথায় পরে? জানা গেছে কি মোক্তারের নথিতে সে’সকল আখ্যান? আমাদের মননে জুন ও জুলাইয়ের ভাঁজ ঢুকে যেতে থাকে নিরন্তর ঘামের সাথে। আদালত কক্ষের বাইরে সকাল বা বিকাল গড়িয়ে যেতে যেতে মধ্যমাসের শরীর শীর্ণ ও জীর্ণ হয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা বুকে পুষে রাখি আমরা।
৩.
আমার যন্ত্রণাদায়ক যন্ত্রের রোগে ভোগা শরীর থেকে গত পরশু জীবন বেরিয়ে গেছে। নিথর, নিস্পন্দ বুক দেখেও আমি পুরোপুরি নিশ্চিত নই, আশার নিভন্ত সল্তে তখনও দপদপাচ্ছে যে এক্ষুনি ঈষৎ ফুলে উঠবে নির্ঘাত। এই জীবন বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনাটিতে যেরকম আন্দোলন ও প্রতিক্রিয়া আশা করা যায়, তার কোনটিই আমি অনুভব করি না বলে আশ্চর্য লাগে। মৃতের প্রস্থানের চাইতে জীবিতের ভাবলেশহীনতা আমাকে পীড়িত করে। সেইসাথে মৃতের প্রভাব কেটে গেছে, আমি তার তাবৎ স্মৃতি ও কান্নার শেকল থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে পেরেছি, এমন মহাতৃপ্তিতে আমি কোমল ও আকুল হর্ষবোধ করি। যুগপৎ হর্ষ ও পীড়া, যুগপৎ শান্তি ও শ্রান্তি আমাকে ঝাঁঝরা করে দিতে থাকে।
৪.
খেলাপ্রেমের বেলা গেল
সেই সাথে উল্লসিত বন্ধু
আর উচ্ছ্বসিত বাতাস এল
আমাদের মাঝ থেকে আমি
ছুটে ছিটকে পড়লাম
বুঝলাম– এই বাতিঘরে
আমাদের দিনাতিপাত
ফুরিয়েছে সকল চাহিদা,
বৃথা খেলা বৃথা অশ্রুপাত!
৫.
গতরাতে সংকুচিত বিছানায় শীতের বাতাস
বৃষ্টিছাঁটের সাথে এসে আশ্রয় নিলো
শাদা চাদরের কোঁচকানো ত্বকে ধীরে ধীরে
ব্যাপিত শৈত্য ও সিক্ততা
রোমান লিজিওনের মত ক্ষিপ্র দ্রুততায়
আমাকে স্পর্শাকুল করলো।
আমি নিঃসন্দেহ হলাম, এটা শ্রাবণ।
জুন ও জুলাইয়ের চক্করে, চিৎকারে আমাদের দিনপঞ্জি থেকে শ্রাবণ মুছে গেছে। যেভাবে পাতায় শুকনো কালির দাগ ম্রিয়মাণ স্রোতের পিঠে করে হারিয়ে যায়, শ্রাবণ ও বর্ষণ সেভাবেই পশ্চাতে হটে গেছে। রোমান লিজিওনের মত কেবল স্মৃতিময় দৈন্যতায় তারা আমার বিছানায়, সংকুচিত পরিসরে ঘুরে বেড়ায়। হায়!
আমি সরে যাবার বদলে একটু নিবিড় হই।
যন্ত্রের শীতল শরীরের মত শৈত্য
আমার ত্বক ও হাড়ে প্রবেশ করলে
একাত্ম হয়ে ওঠার সুখ সুখ কোমল আগুন
আমাকে পোড়াতে থাকে।
***
২৯.৭.৯
[গত দু’মাসের টুকরো টুকরো চিন্তাগুলো জুড়ে বাঁধাইয়ের চেষ্টা।]
১ম :awesome: ...
:clap: :teacup:
B-) দ্বিতীয়
পড়ে ভালো লাগল, আন্দালিব ভাই।
আরে সৌমিত্র! কেমন আছো?? অনেকদিন পর দেখা হলো, এখানে। পড়ার জন্য ধন্যবাদ তোমাকে।
আইচ্ছা বৃষ্টি তাইলে আসছে না 🙂
তয় দুই তিন বুঝি নাই, জুন-জুলাইকে বকা দিলা ক্যান? গরম জন্য?
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
জুন-জুলাই মাস দুটো কেমন বেখাপ্পা, ঘটনাবিহীন আর অসহ্য বলে মনে হয়। 🙁
এই জুন জুলাইয়ের নামতা আউড়ে আউড়ে ভুলেই গিয়েছিলাম শ্রাবণ মাসের কথা!
তোর মন তো মনে হয় ভালই বিক্ষিপ্ত । ২ এর আবজার্ভেশন হয়তো একটা বড় গদ্য হতে পারত । আর বাকি সবই তো কবিতা । ৪ আর ৫ দু'টোই ভাল লেগেছে । ৩ এ আবারো হতাশ/মনটা বিক্ষিপ্ত ।
১ টা কি এলোমেলো ভাবনা? তবে তোকে সরব দেখে ভাল লাগলো । ইদানিং অনেক কবিতা লেখা হচ্ছে । তোর শেষ কবিতাটা অনেক ভাল লেগেছিল । আবার সরব হলি এজন্য ধন্যবাদ ।
:tuski:
ঠিক বিক্ষিপ্ত না ভাই। এগুলো টুকরো লেখা। প্রায় দু'মাসের সময়কাল নিয়ে। হয়তো আলাদা আলাদা লেখা তৈরি করা যেত, কিন্তু আমার আলসেমি+অস্থিরতা সেটা হতে দেয়নি। তবে মাথায় থাকলো। এর পরে সময় নিয়ে বসে এগুলোকে 'মানুষ'করতে হবে! 🙂
:goragori: :thumbup:
হুম......বিক্ষিপ্ত চিন্তাভাবনা......... :dreamy:
জুন-জুলাই মাস দুইটা এমনিতেই আমার খুব বিরক্তির। রোদ, ভ্যাপসা গরম, তার উপর কোন সরকারী ছুটি নাই......এক্কেবারে পেইন।
লেখায় :thumbup:
আপনার মন্তব্যের সাথে আমি পুরোপুরি একমত! :thumbup: :thumbup:
জুন-জুলাই মাসের জন্য আমি বসে থাকি। আর এইখানে দেখি সবাই বিরক্ত। 🙁
কেন বসে থাকেন?
দাঁড়ায়া থাকলেতো কইতি কেন দাঁড়ায়া থাকেন, এই জন্যেই মনে হয়
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
x-( x-( :grr:
আন্দালিব ভাইয়া, আমাদের এইখানে জুন-জুলাই-অগাষ্ট মাসে গরম যা পরার একসাথে পড়েনে। শীতের সময় এত শীত পড়ে ... তাই বইসা আর দাড়াঁইয়া ও থাকি। 😛
জুঞ্জুলাইমাস্ভালো না, বিষ্টি হয়। :-B :-B :-B
সহমত :thumbup:
বিষ্টিহয়াবার্গ্রম্পড়েয়ার্ঠাণ্ডালাগে! 😡
এতদিন পর পর লিখা দাও কেন? 🙁
ভাইয়া খুব ভালো লেগেছে,
যদিও প্রথমবার পড়ার পর পুরা মাথার উপর দিয়ে গেছে। 😕
এই নিয়ে ৪ বার পড়লাম। চমৎকার। 😛
তোমার লেখাগুলো হল নির্ভেজাল সাহিত্য। আমার মত বোকাদের জন্য নয়। 🙁
বস কি করেছেন এডা কি লিথছেন পুরা ফাটাফাটি
চার নম্বর টা সবচে' ভালো লেগেছে।
দুয়েকটা পড়া হয়নি,
রয়েসয়ে পড়বো।
দেশে গেলেই সিসিবির একটা আড্ডার ব্যবস্থা করতে হয়!
আমার আর তর সইতেসেনা...
বস্ সবাই এই কথা কয়, কিন্তু দেশে আইসা সবাই ভুইল্যা যায় 🙁 আপনি আশা করি উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হয়ে দুর্দান্ত খানাদানার আয়োজন করবেন আমাদের জন্য 😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
:thumbup:
সহমত জানাইতে বুইড়া আঙ্গুল তুললাম!
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
কাইয়ূম,
আমি দরিদ্র ব্যক্তি,
দুর্দান্ত খানাদানার আয়োজন করি কি প্রকারে?
তবে একেবারে ঠনঠন শুকনা মুখেই বা
আড্ডা হয় কি করে!
দেখা যাক!
আমার এট্টু গলাডা ভেজাইতে পারলেই হবে! :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
বস্ খানাদানাতো :just: উসিলা 😀 খালি আমাগোরে ভুইলা না গেলেই হইলো 🙂
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!