[এই লেখাটি লিখেছিলাম ৪ঠা জুন। ১৯৯৬-এ যারা ক্যাডেটে ঢুকেছে তাদের ইনটেক-বার্থডে। তবে অনুভূতি মনে হয় সবার ক্ষেত্রেই সমান। সেখানে সবাই সমানভাবে তাড়িত হয় ইনটেক-বার্থডে নিয়ে। এখনও যে শহরে থাকি, সেখানে এই দিনে আমরা চেষ্টা করি একত্রিত হবার। দেখা করে একটু স্মৃতিচারণ, একটু নস্টালজিক হওয়া।….. এই বছর আমি সেটা করতে পারি নাই। ইচ্ছা থাকা সত্বেও জীবন আর বাস্তবতা আমাদের অনেককিছুই করতে দেয় না। সেসময় নিজের কথাগুলো ব্লগোস্ফিয়ারে লিখে রেখেছিলাম। তারই পুনঃপ্রকাশ করছি। ভালো থাকুন সবাই!! ]
-
৪ঠা জুন, ২০০৮
আজ আমার দ্বিতীয় জন্মদিন। এমন না যে বয়েস হলো দুই বছর, ব্যাপারটা হলো যে আমি মানি যে বছরে আমার দুইটা জন্মদিন। একটা পিতৃ-মাতৃ-সূত্রে প্রাপ্ত, যেদিন পৃথিবীতে পদার্পণ হয়েছিল আমার। আর আজকেরটা অন্যরকম, ১২ বছর আগে আজকের দিনটায় আমি ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। আজকাল ক্যাডেট নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়, ভাল-মন্দ অস্তি-নেতি সবরকমের। আমার মনে আসলে ক্যাডেট কলেজ নিয়ে একটা আলাদা অনুভূতি কাজ করে। বড় হয়ে ওঠার সবচেয়ে দারুন স্পর্শকাতর সময়টা ওখানে কাটিয়েছি। বন্ধু-সিনিয়র-জুনিয়র, স্যার-ম্যাডাম, অ্যাডজুটেন্ট-স্টাফ, ভিপি-প্রিন্সিপ্যাল সবার সাথে ঐ সবুজ এলাকায় কৈশোরের মাতাল ভাবুক সময়টা পার করেছি। আমাদের কলেজের মাঠটা অনেক বড় ছিল। পাশাপাশি তিনটা তিনটা করে ছয়টা ফুটবল মাঠের সমান। কলেজের প্রথম বর্ষে থাকতে সন্ধ্যা হবার একটু আগে আমি মাঠের ধারে সিমেন্টের বেঞ্চিতে বসতাম। বেঞ্চিটার পাশে একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। কমলা আকাশে গাঢ় সবুজ গাছের সারির পিছনে একটু একটু করে সূর্যটাকে টুপ করে চলে যেতে দেখতাম! স্টাফরা এসে বাঁশি দিত, মাগরিবের নামাজে মসজিদে যাওয়ার জন্য। কালো পিচের রাস্তাটা দিয়ে হালকা বাতাসে গা মিশিয়ে হেঁটে হেঁটে চলে যেতাম। তখন একবারও মনে হয়নি যে মাত্র সাত বছর পরেই ঐ মুহূর্তটুকুর জন্য হৃদয় আঁকুপাকু করবে!
এখন মাঝে মাঝে যখন খুব হতাশ, বিধ্বস্ত লাগে, মনে হয় যদি ঐ অবুঝ সময়টায় ফিরে যেতে পারতাম, সব জটিলতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে! বন্ধুগুলোকে দারুন মিস করি, ওরকম একপেশে ভালবাসা আর স্বার্থছাড়া বন্ধুত্ব বাইরে এসে খুব কম পেয়েছি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, এমন কিছু মানুষের খুব নিকট সান্নিধ্যে এসেছি যাঁরা আমার চিন্তাচেতনার জগতে একটা বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছেন। তখন নিজেই বুঝি নাই এই মানুষগুলোর কাছে কত ঋণী হয়ে থাকবো বাকিটা জীবন। আমার দ্বিতীয় জীবনপ্রাপ্তির এই দিনে সবাইকে শুভেচ্ছা দিলাম প্রাণ খুলে! জয়তু জীবন!!
জয়তু ক্যাডেট কলেজের বন্ধু ও ভাইরা! :clap: :clap:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
একেবারে মনের কথা। :clap: :clap:
দারুন আন্দালিব। তোমার লেখার গাড়ি যেনো কোনোদিন না থামে। 🙂
জয়তু আন্দালিব। লেখা ভালৈছে :clap:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
মাঝে মাঝে ভাবি এই জীবনটা খুব ছোট হয়ে গেল কি? একটা জীবনের জন্য বোধকরি এত্ত বিশাল স্মৃতিভান্ডার বড় বেশি হয়ে গেছে।
জয়তু ক্যাডেট কলেজ জীবন।
Life is Mad.
এক্কেরে হক কথা...
স্বাগতম আন্দালিব ভাইজান। 🙂
মনের কথা ভাই। 🙁
অনেক ধন্যবাদ হাসনাইন। তোমার নামে আমার এক ক্যাডেট ফ্রেণ্ড আছে। প্রথমে ভাবলাম সে-ই কী না! পরে সময়কাল দেখে বুঝলাম তুমি অন্য কেউ। এই ব্লগে পরিচিত হয়ে ভালো লাগলো! 🙂
আমার হাউস প্রিফেক্ট হাসনাইন ভাই কই??????উনারেও খবর দেন :((
লেখাটা খুব ভালো লাগল। আসলেই দিনগুলো বড়ই মধুর ছিল।কতো তুচ্ছ ঘটনা আমাদের কাছে তখন বিশাল সব ব্যাপার হিসাবে গন্য হতো, আর এখন জীবন বড় জটিল বার বার মনে হয় যদি ফিরে ্যাওয়া যেতো সেইসব দিনে।
ঠিক ঠিক!! 🙁
ভাই আপনি প্রচন্ড নস্তালজিক করে দিলেন। গলার কাছটায় কি যেন আটকাচ্ছে সেই কলেজের দিনগুলির কথা মনে করে। :clap: :boss:
আমিও যখন পড়ি তখন নস্টালজিক হয়ে যাই! 🙁
কলেজের দিনগুলো আসলেই অনেক রঙিন ছিলো। সেটা হয়তো আরো সুন্দর হয়েছে আমাদের ক্যাডেটকলেজগুলোর জন্যেই। ওখানে যে পরিবেশ পেয়েছি তা তো আর কোথাও দেখলাম না!!
পড়ার জন্যে ধন্যবাদ শার্লী।
মাশা-আল্লাহ আপনের বাংলার ধার একটুও কমে নাই।এইবার মানে মানে আমার লকার পার্টনার ইব্রাহিম ভাইরে এইখানে আনা যায় কিনা এট্টু দেহেন না ভাইজান!
লেখার ধার আগে ছিলো সেটাই তো জানতাম না! তুমি কী যে বলো না? আসতে পারলাম না, আর ঝামেলায় ফেলে দিলা! :shy:
ইব্রাহিমকে আনা দরকার। হুমমম। এটা বেশ ভালো বলেছো। সাথে ফারহানরেও ডাকি। ঐগুলা তো ওয়াল ম্যাগের গাল্পিক ছিলো! ওরা আসলে অবশ্য আমার কলম বন্ধ করতে হইবো মনে হয়! 🙂
x-( হইছে-বেশি টাল্টি বাল্টি করলে কইলাম আপনের জারিজুরি ফাঁস কইরা দিমু।মিয়া আপনাগো ব্যাচে বাংলায় টপ ফাইভের মইদ্যে কেডা কেডা ছিল আমার খুব ভাল মনে আছে-টেস্ট পরীক্ষার সময় নোট নিয়া ম্যালা দৌড়াদৌড়ি করছিলাম। আর কলম বন্ধ করার কুচিন্তা মাথায় আইলেও কইলাম কবীর ভাইরে দিয়া আপনেরে শান্টিং দেওয়ামু।আর রিভার্স সিনিয়রিটি তো আছেই 😀
😕 😕
ডরাইলাম তুমারে। ঐসব পুরানা আমল ছিলো এখন লেখালেখি কিরাম কিরাম জানি হয়া গেছে!!
:shy: :shy:
কিরে আন্দালিব আছস ক্যামন? 🙂
ব্লগ এডজুট্যান্টের প্রতিঃ
আমি কি এই লেখাটারে ই-বুকের জন্য মনোনয়ন দিতে পারি? ;;)
তৌফিক, আছিরে দোস্তো!! মোটামুটি বেঁচেবর্তে আছি। তোর খবর কী??
এই পিচ্চি লেখা ই-বুকে না দেয়াই ভালো। আমার কী কপাল। এখানে ফিরে এসেই দেখি ই-বুক হচ্ছে! ঐটার জন্যে অন্য লেখা রেডি করতেছি! হা হা হা 😉 ;))
একেকটা লাইন, অনেক অনেক ঘটনা মনে করিয়ে দিল। তাই বোধহয় পড়ে শেষ করতে অনেক সময় লাগল। খুব ভাল লাগল। ধণ্যবাদ।
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
আপনাকেও ধন্যবাদ তাইফুর ভাই। লাইনগুলো লেখার সময়ে আমারও অনেক সময় লেগেছিলো!
:boss: :boss: :boss:
:boss:
www.tareqnurulhasan.com
আন্দালিব, খুব ভালো হয়েছে লেখাটা। বেশ নষ্টালজিক হয়ে পড়লাম।
এইভাবে অনেক অনেক লেখা দিয়ে যাও......
তানভীর ভাই, চেষ্টা করবো আরো লেখা দেবার। পড়ার জন্যে ধন্যবাদ!
দোস্ত কেমন আছস।
বুয়েটে করা ২০০৩ সালের ৪ঠা জুনের কথা মনে আছে তোর? সেইরকম হইছিল। লেখতে থাক সমানে। আমি একটু ঝিম মারা ফেজ পার করছি।
ঐ প্রোগ্রামের কথা কেমনে ভুলি। কলেজ থেকে বের হইয়া সেরা মজা করা প্রোগ্রাম। অর্ধেক কেক মনে হয় গায়েই মাখছিলাম!! B-) B-)
ঝিম কাটাইছোস? না হইলে তোরে কি ঝাঁকি দেওন লাগবো!? 😉