ক্যাডেট নাম্বার, পোষাক, পিটি, গেমস, হাউস মাস্টার এবং প্রথম হাউস এসেম্বলি
তখনো আমাদের ক্যডেট নাম্বার দেয়া হয়নি কারন আমরা আগে এলেও আমাদের অনেক সিনিয়র ( ক্লাস ১১ এবং অন্যান্য ক্লাসের বাকীরা) এখনো ক্যাডেট হয়ে যোগদান করেনি। এস এস সি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হবার পর ক্লাশ ১১ এর ছাত্র ভর্তি নেয়া হবে যারা মুলত কলেজকে লীড করবে, অন্যান্য ক্লাশের বাকী ক্যাডেটদের নেয়া হবে তারপর ক্যাডেট নাম্বার দেয়া হবে।আমদের ক্যাডেট নাম্বার দেয়া হলে তো আমদের সিনিওরদের ক্যাডেট নাম্বার আমাদের পরে হয়ে যাবে। এটা তো হতে পারেনা একই কলেজে জুনিয়র এর ক্যাডেট নাম্বার সিনিয়র এর আগে। তাই আমাদের ভর্তি পরীক্ষার সময় যে ইনডেক্স নাম্বার ছিল ওটাই ছিল পরিচিতি নাম্বার। আমার ইনডেক্স নাম্বার ছিল ৭৪২৯।
প্রথম সপ্তাহ খানিক পোষাকের কোন আগামাথা ছিলনা। ক্যাডেট কলেজে যোগদান করার জন্য একটা পোষাক পরিচ্ছদের তালিকা ছিল যা আমরা নিয়ে এসেছিলাম তা দিয়েই সব কিছু ম্যানেজ করতে হতো। সকালে পিটি এবং বিকালে গেমস এর পোষাক শুধু সঠিক ছিল। ড্রিল আর ক্লাশ করতাম সাদা পোষাকে আর মাগরিবের নামাজ আর প্রেপ ক্লাশ পাজামা পাঞ্জাবী।
সকালে পিটির সময় কির্তি সারের (এডজুটেন্ড) কির্তিতে পিটি হতো আর বিকালে খেলার মাঠের ওকরা বাছা। স্টাফ আর এ্যডজুটেন্ড এর দাবরানিতে ২/৩ দিনের মধ্যে ফুটবল মাঠ তৈরী হয়ে গেল। আমাদের তৈরী ফুটবল গ্রাউন্ড, একটা বাস্কেট বল গ্রাউন্ড আর একটা ভলিবল গ্রাউন্ড এই তিনটি মাঠে খেলার আয়োজন হতো।
সিনিয়ররা যে আমদের গাইড করবে তাও সম্ভব নয়, কারন তারা তো জানে না ক্যাডেট কলেজ কি ! আমদের পূর্বে এটা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ছিল যেখানে সিনিওররা জুনিওরদের মারধর করতো, ক্যাডেট কলেজের কমান্ড কন্ট্রোল সম্পর্কে তাদের তেমন ধারনা ছিল না। সম্ভবত পরেরদিন আমদের জুনিওর হাউস প্রিফেক্ট ১০ম শ্রেনী থেকে নির্বাচন করা হলো। আমদের হাউস এ ( তিতুমির) মঞ্জুর ভাই দায়িত্ব পেলেন। আর একটা কথা বলে রাখি, রংপুর ক্যাডেট কলেজের জন্ম ১৯৭৯ সালের ১লা জুলাই, ঐদিন আমরা ক্যাডেট কলেজে আসি আর ঐদিন ছিল আমার জন্মদিন।
তিতুমির হাউসের হাউস মাস্টার ছিলেন আজিজ সার ( খুবই রাগি, কিন্তু খুব সুন্দর ইংরেজী বলতেন, সবচেয়ে বড় কথা উনি আমাদের বীজগনিত করাতেন এবং আমার বিবেচনায় উনি আসাধারন ছিলেন অঙ্কের শিক্ষক হিসেবে)। ওমর ফারুক হাউসে হাউস মাস্টার ছিলেন আমিনুল হক সার ( উনি আমাদের জ্যামিতি করাতেন, উনার মতো নিরীহ মানুষ খুব কম চোখে পড়ে) আর জাহাঙ্গীর হাউসে ছিলেন রুহুল আমিন সার উনি আমদের পৌরণীতি পরাতেন এবং আমি খুব এনজয় করতাম উনার ক্লাশ।
প্রথমে হাউস মাস্টারদের কথা বললাম কারন এখন শুরু হবে হাউস এ্যসেম্বলি। প্রথমদিন রাতেই হাউস এ্যসেম্বলি হবে। যথারীতি ফজলু ভাইএর মাধ্যমে সুংবাদ পেলাম। সবাই লাইন ধরে দাড়ালাম কারন তখনও জানিনা ফলইন কি! উনি যেহেতু ইংরেজীতে ভাল তাই উনার কঠিন ইংরেজীর বেশির ভাগ বুঝলামনা। শুধু বুঝলাম হাউস প্রিফেক্টের কথা আর কিছু শব্দ যেমন ধোপী, বারবার, হাউস বেয়ারার, মেস ওয়েটার ইত্যাদি।
যাহোক ওখানে সকল আইনকানুন শিখান হলো ( যার কিছুই বুঝিনি ওইদিন)
পোষ্ট টা মাইরা লই ...
এখন পড়ি গিয়া
প্রথম দিককার কথা শুনতে আগ্রহ ছিলো ... এখন সেটা পাচ্ছি ... আরো শুনতে চাই :hatsoff: :hatsoff:
তোমাদের আমার লেখা যতো ভাল লাগবে আমার লেখা ততদিন চালাতে চাই।
তাইলে তো আপনার খবর আছে... :dreamy:
কারন আপনি যে লেখাই দেন না কেন আমরা সবসময় ভাল লাগা নিয়েই পড়ব... 😀
আর মূলত এই পয়েন্টটাতেই সিসিবি অন্যান্য ব্লগ থেকে আলাদা... :-B
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ভাইয়া,
অসম্ভব মজা পাচ্ছি একটা ক্যাডেট কলেজের জন্মলগ্নের কথা পড়তে...
লেখার ভঙ্গিমাটা খুবই সাবলীল হওয়ায় আরো ভাল লাগতেসে...
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
তোমার মজা পাওয়ার কথা শুনে আমার ভাল লাগছে।
রুহুল আমিন স্যার আপনাদের ইংরেজী গ্রামার এর ক্লাশ নেয়নি। ওগুলোও কি এনজয় করতেন?
আমি বাবা ওনার এই ক্লাস গুলো খুব ভয়ে ভয়ে পার করতাম। আর কি হুংকার রে বাবা, প্যান্টে হিসু হয়ে যাবার ভয় ছিল।
যা বুঝলাম, গাইড বলে কিছু ছিল না তখন।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
না ভাইয়া আমদের ইংরেজী গ্রামার ক্লাশ নিতেন আমার সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক আহমেদ হাসান সার ( ইতিহাসের শিক্ষক, কিছুদিন আগে সি সি আর ভিপি ছিলেন, এখন ইউ এস এ তে সেটেল্ড) আমি ইনার ক্লাশ এনজ়্য় করতাম।রুহুল আমিন সারকে ভয় পায়না এমন কেউ আছে কিনা আমার জানা নেই। উনাকে আমিও ভয় করতাম। কেমন ভয় করতাম আমার লিখা প্রথম ব্লগ "সহজ কথা কইতে আমায় কহ যে, সহজ কথা যায়না বলা সহজে" পড়লেই বুঝতে পারবে।
ভয় পাওয়া আর ক্লাশ এনজয় করা আমার কাছে আলাদা বিষয়। আমদের সময় শিক্ষকরা ক্লাশে ছিল বন্ধুর মতন, অন্য জায়গায় যেমনই হোকনা কেন।ক্লাশে ডাউট দিলে কখনও রাগ করতেন না।
আহমেদ হাসান স্যার কে আমরা পেয়েছি ক্লাস সেভেনে অল্প কিছুদিন। এরপর উনি আবার বদলি হয়ে আসেন যখন, আমরা তখন ক্লাস ইলেভেন, উনার ক্লাস পাওয়া হয়নি। তবে উনার সান্নিধ্য পেয়েছি ডিবেটের সময়। আর এমনিতে যাওয়া আসা তো ছিলই। উনার হেল্প আমরা সবচেয়ে বেশি পেতাম ক্যারেন্ট আফেয়ার্স ডিসপ্লের সময়।
রুহুল আমিন স্যার কে নিয়ে আলাদা কিছু বলবনা। উনি আমাদের হাউস মাষ্টার ছিলেন অনেক দিন। আমাকে আস্বাভাবিক আদর করতেন। আমার ব্যাচে ছেলেরা বলত, আমি নাকি উনার ছেলে। এস,এস,সি তে আমি ষ্টান্ড করিনি শুনে আমার কিংবা আমার বাবার চেয়ে উনি বেশি কষ্ট পেয়েছেন। উনি তখন ময়মনসিংহে, আমার রুমমেট মামুন ছুটিতে ময়মনসিংহে গিয়ে উনার সংগে দেখা করে ঝাড়ি খেয়েছে আমার হয়ে।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আহারে আমরা সব রেডিমেট পাইছি। 😀 😀 😀
আমরা রেডিমেট পায়নি বলে আজকে ব্লগে লিখার খোরাক পাচ্ছি। এটা কম কিসের?
ভাইয়া প্রথম দিকের কাহিনী বেশ ভাল লাগছে। ব্লগে সু-স্বাগতম।
কামরুল তপু তোমাকে ধন্যবাদ।
বস,
সালাম :salute:
বোধকরি, আপনিই সিসবি প্রতিষ্ঠার মূল ধারার লেখক। :clap:
চালিয়ে যান ভাইয়া।
সাথে আছি।
সৈয়দ সাফী
আমি আগেও বলেছি আবার বলছি আমাকে লেখক বলে ভুল করনা।আমি মূলত প্রকৌশলী আমার কাজ বিজ্ঞান পড়া আর অঙ্ক কষা। কোনটা যে মূল ধারা আর কোনটা শাখা ধারা জানিনা। আমি আনন্দ পাচ্ছি তাই লিখছি। আর তোমারা আমার লিখার স্প্রীহা আনেকগূন বাড়িয়ে দিচ্ছ।
এডিসন কি আর এম্নে এম্নে নাম হৈছে??
শুরুটা সবসময়ই দেখে-ঠেকে আগাতে হয়। আমাদের কলেজের গল্পও শুনেছি এইরকম।
ভালো লাগছে :clap: :clap: :clap: ।
Life is Mad.
ধন্যবাদ সায়েদ। ভাল লাগলেই ভাল।
আমাদের কলেজের প্রথমদিকের গল্প শুনে খুউবি ভাল লাগছে। ক্যারি অন ভাইয়া... :clap: আরে বড় ভাইরে কমান্ড করে ফালাইলাম নাকি আবার 😉 ...আমাদের প্রিফেক্টরা সব কিছুতে এইটা ইউজ করতো।
এটা ঠিক কমান্ড না, হয়তো ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ।স্নেহ, ভালবাসা, শ্রদ্ধা এগুলুর আলাদা কোন ভাষা নেই, যে যেমন করে প্রকাশ করে।
লেখা দারুণ হচ্ছে
বাহ আপনাদের কলেজ তো কর্কট রাশির
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
সঠিক, তবে আমিও সেটা কি লক্ষ করেছ ?
সিরিজটা চ্রম হইতেছে। আইডিয়াটাও অসাধারণ। প্রথম দিন থেকে আসতে আসতে শেষদিন পর্যন্ত চলুক ক্যাডেট লাইফ, চলুক লিখা
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
মাঝে মাঝে মনোটনি ভাঙ্গার জন্য কিছু বিষয় আলাদা ভাবে লিখবো যাতে, এখন যারা ক্যাডেট, প্রশাসক, এবং শিক্ষকরা তাদের বর্তমান অবস্থা তুলনা করতে পারে।
ভালো লাগছে এডিসন। কিন্তু তুমি যেভাবে সিনিয়রের সামনে সিগারেট টানছো, সেটা কি কলেজ থেকেই শুরু করছিলা?? ১০টা :frontroll: দাও দেখি ভাইয়া। গুনাগুনির দায়িত্বটা আমিই রাখলাম, জুনিয়রদের দেওয়া ঠিক না। 😀
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ভাল ছিল ...
মনে মনে কইলাম আর কি ...
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
তাইফুর সাবধান! তোমার কিন্তু :frontroll: ইস্যু হয়ে যাবে।
সানাউল্লাহ ভাই আসসালামু আলাইকুম। আমার লিখা এই প্রথম কোন সিনিওর পড়লো। ভাল লাগলো এবং আপনাকে এজন্য ধন্যবাদ। সরি ভাইয়া ছবিটার জন্য।এই মূহুর্তে স্মৃতিচারন জাতীয় লিখার সাথে মানানসই ছবি আমার নাই। একটা তোলা হলে বদলিয়ে ফেলবো।ক্যাডেট কলেজে একবার ভুল বসত আমার মা বাবা কে ডেকে পাঠানো হয়েছিল আমার বিরুদ্ধে সিগারেট খাওয়ার অপবাদে। তখন কিন্তু আমি আসলেও ধুমপায়ী ছিলাম না। এটা ওই ঘটনার প্রতিবাদ। আর :frontroll: ১০ টা দিলাম।
ঠাট্টা করলাম, আর তুমি প্রোফাইলের ছবিটাই পাল্টাইয়া ফালাইলা? আরে মিয়া আমি তো ক্লাস নাইন থাইক্যা শুরু করছিলাম। অহনো চলতাছে। সবার কাছ থাইক্যা ব্যাপক গালিগালাজ খাই; বউ-পোলা, ভাই-বোন, বস-জুনিয়র কেউ বাদ রাখে না। তবে কলেজে কুনুদিন ধরা খাই নাই। হাউস মাস্টার যে কতোবার ফাঁদ পাতছে, পাইছে খালি ম্যাচের পর ম্যাচবক্স। জিগাইতো, এতো ম্যাচ দিয়া কর কি? আমি নিরীহভাবে কইতাম, 'স্যার মোমবাতি জ্বালাই'।
তোমার সব লেখাই পড়ছি। হয়তো প্রতিটায় মন্তব্য থাকে না। লেখা ভাল লাগছে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আরে আমিও তো গত পর্শুদিন এই ডায়লগ মার্ছি। লাবলু ভাই, কপিরাইট নাইতো এইডার আবার?
সি সি আর কে অন্যভাবে দেখছি। দারুন লেখা। লেখা চলুক পুরোদমে।
সিসিআর এগিয়ে যাক।
মান্নান তোমাকে ধন্যবাদ। তোমার বন্ধু পার্থ প্রতিম শাহ এখন আমার এখানে লাইবেরিয়াতে।
ভাল্লাগতাসে ভাই।
চালায়ে যান.......।
ধন্যবাদ আমিন।
ভাইয়া, সিরিজ খুব ভাল লাগছে। চালিয়ে যান।
কির্তি রঞ্জন চাকমা স্যার কোন কলেজের জানেন নাকি? এখন তো সব ক্যাডেট কলেজের এ্যাডজুট্যান্ট এক্স ক্যাডেট হয়। আপনাদের সময় কি নিয়ম ছিল?
ধন্যবাদ রহমান। মেজর কীর্তি রঞ্জন চাকমা অনেক সিনিওর। উনার মতো কড়া এডজুটেন্ড যদি নতুন কলেজে না আসে তাহলে শৃংখলা ঠিক রাখা কঠিন হতো। আমি হয়তো লিখার খাতিরে উনাকে খলনায়ক বানিয়েছি কিন্তু উনি খুব সিন্সিয়ার এবং সৎ ছিলেন। উনার ভাস্তে আমাদের এক ব্যচ জুনিওর ছিল, উনি তাকেও কখন ছাড় দেননি। ১৯৯০/৯১ সালের দিকে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল হিশাবে অবসর নিয়েছেন। আমার জানা মতে উনি কোন ক্যাডেট কলেজের না। কারন তখন এরকম কোন পলিসি ছিলনা। এখন ইউ এস এ আছেন।
ভাইয়া, আপনার সাবলীল লেখাগুলো পড়তে খুব ভালো লাগছে।
কত কিছু অজানা!!!
আমি ওয়েট কর্তাছি কবে ছির্গেট খাওনের কাহিনী থুক্কু মোম্বাতি জ্বালানের্কাহিনী কৈবেন। আপনের্তিন্ডা লেখাই পর্লাম্পরের্টার্জন্য ওয়েট কর্তাছি।
:khekz: :khekz: :khekz: :khekz:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
ধন্যবাদ জিহাদ । আমি কিছু গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করছি তথ্যের জন্য।