হ্যান্ডস ডাউন হতে চাচ্ছিলাম না। কপট রাগের আরো এক ঝাপ্টা গায়ে লাগতেই আর উপায়ন্ত দেখলাম না। অব্যবহিত পূর্বের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হিসাবে ফেরদৌস ভাইয়ের (ফৌজদারহাট, ৯০-৯৬) হাতে বার-বি-কিউ স্টিক দিয়ে উত্তম মধ্যম খাবার আরেকটি সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়ে হ্যান্ডস ডাউন হলাম। অন্ধকার ছাদের এক কোনায় দাঁড়িয়ে বসে থাকা সিনিয়ারদের নিঃশব্দ ভিলেন টাইপের হাসিটা ছিলো অনুভবের ব্যাপার মাত্র। সাইফুল্লাহ ভাইয়ের (রংপুর, ৯০-৯৬) হাতের ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ঝলসে উঠলো বেশ কয়েকবার। এই যাহ, এতো ইজ্জত নিয়ে হাডুডু খেলার বন্দোবস্ত হচ্ছে। দয়ালু সিনিয়ার ভাইরা বললেন উঠে যেতে। যাক এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম। অপরাধটা গুরুতর। চমৎকার একটি বার-বি-কিউ পার্টি ফাঁকি দিয়ে আমি চলে যাচ্ছি রাতের বাসে খাগড়াছড়ি। দ্রুত অন্যান্য বড় ভাই বদরুল ভাই (ফৌজদারহাট,৮৮-৯৪) শাহরিয়ার ভাই (পাবনা, ৮৯-৯৫) এবং উপস্থিত বাকিদের কাছে বিদায় নিয়ে নিচে সাবিহা আপাকে (ময়মনসিংহ, ৯৩-৯৯) বিদায়ের কথা বলতেই ঠান্ডা আগুনে দৃষ্টি দিয়ে বার-বি-কিউ করার চেষ্টা করলেন। সামনে ডাইনিং টেবিলে সাজিয়ে রাখা হরেক রকমের সুস্বাদু খাবারের উষ্কানিকে উপেক্ষা করে দুই একটি আইটেম চেখে বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম। শাহরিয়ার ভাইয়ের গাড়ি কাকলী বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত এগিয়ে দিল। রাত দশটায় কাকলী এলাকা গড়ের মাঠ। কুপি বাতির মত টিমটিমে আলো নিয়ে একটি ট্যাক্সি ক্যাবের আগমন। পান্থপথ পর্যন্ত ২০০ টাকা চাওয়া মাত্রই উনার মেজাজ মর্জি পরিবর্তন হবার সুযোগ না দিয়ে উঠে পড়লাম। চুক্তি আইনে “Adhesion Contract” নামে একটি ব্যাপার আছে যেখানে চুক্তির শর্ত নির্ধারনের ক্ষেত্রে এক পক্ষের হাত সম্পূর্ন বাধা এবং অপর পক্ষের ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর পুরো চুক্তি সম্পুর্ণ রূপে নির্ভরশীল। পুস্তকগত শিক্ষার বাস্তব প্রয়োগ এবং শিকার। :-B
“বৃহস্পতিবারের মাইনক্যা চিপা” এরকম একটা কথা চলতি আছে এফ,এম শ্রোতামহলে কিন্তু কিছুদূর আগাতেই বুঝলাম রাত দশটায় “ঢাকার চাকা” একদম থেমে নেই। ১৫ মিনিটের মাথায় পান্থপথ শ্যামলী পরিবহন বাস কাউন্টারে এসে বোকা হয়ে গেলাম। এখন এই ৪৫ মিনিট বসে কাটানো কিছুটা কষ্টের হয়ে যাবে। কারণ বাকি ৩ সহযাত্রী ইমরান (মির্জাপুর, ৯৮-০৪), নুরুল্লাহ্ (মির্জাপুর, ৯৮-০৪) এবং (বেগম নুরুল্লাহ্) মৌরী (ময়মনসিংহ, ৯৮-০৪) উঠবেন ফকিরাপুল কাউন্টার থেকে। অগত্যা বেশ কয়েকটি ধূম্র শলাকা, এক কাপ চা, আধা লিটার পানি, রাতে খাবার কিছু ঔষধ এবং প্রকৃতির ডাকে ছোট্ট একটু সাড়া দিয়ে উঠে পড়লাম বাসে। বাসের ড্রাইভার বয়স্ক করে, সাফারী পরিহিত। খুব আয়েশ করে পান চিবুচ্ছেন এবং হাতে যথারীতি ধূম্র শলাকা। বাসের পরিচালক প্যারেড স্টেট নিয়ে গেলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরেও বাস ছাড়ছে না। জিজ্ঞাসা করলাম “ভাই কোন সমস্যা?” পরিচালক বললেন “ভাই তিনজন যাত্রির হিসাব মিলছে না।” শুনে আমি আবার চিন্তায় ডুবে গেলাম। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ খেয়াল হলো। পরিচালক ভাইকে ডেকে বললাম, “ভাই আমার তিনজন যাত্রী ফকিরাপুল কাউন্টার থেকে উঠবে।” প্রায় দাঁত মুখ খিচিয়ে, “আরে ভাই আগে বলবেন না। ১০ মিনিট ধরে হিসাব মিলছে না। কেউ আসেও না। কি একটা ঝামেলা।” আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চাওয়ার মাঝেই বাস প্রায় লাফ দিয়ে উঠে রওনা দিলো। ফকিরাপুল বাস কাউন্টার পৌঁছাতেই বাকি তিন সহযাত্রীদের হদিস পাওয়ার জন্যে বাস থেকে নেমে দাঁড়াতেই একজন জিজ্ঞাসা করলেন, “ভাই আপনার সাথে কি আরো তিন জন আছে?” উত্তর দেয়ার জন্যে মুখ খোলার আগেই চিৎকার করে বললেন, “ঐ পাইসি এইদিকে!” পর মূহুর্তেই ব্যাগ হাতে সাথে আরেকজন লোকসহ ইমরানের আগমন। তারপর রাস্তার ওইপারে চোখ পড়তেই দেখি রাস্তা রীতিমত ট্রাফিক সার্জেন্টের মত সিগন্যাল দিয়ে বন্ধ করে দুইজনকে পার করাচ্ছেন আরেকজন। আর চিৎকার দিয়ে আবার ওইপারের কাউন্টারে জানান দিলেন, “হিসাব মিলসে চার জনের।” যেটা বুঝলাম আমাদের চারজনকে এক সাথে করার জন্যে এখানে মোটামুটি হুলস্থুল কান্ড ঘটে গিয়েছে। চারজন উঠে বসতেই আর এক মুহুর্ত দেরী না করে বাস ছেড়ে দিলো পরের কাউণ্টারের উদ্দেশ্যে। (চলবে)
প্রথম....... 🙂
পরের পর্ব গুলা তারাতারি চাই 😀
:clap:
মকুদা , জটিল 😀
পরের পর্ব তাড়াতাড়ি চাই
সত্যই যদি তোমারে বার্বিকিউ বানাইতে পারতাম, মনে বিয়াপক শান্তি পাইতাম x-(
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
আপা...এখনো খেপে আছেন?! এর পরে আর কোথাও যাবো না তো (আমেরিকা বাদে) 😛
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
তারপর কি হইলো মোকাব্বির...। যাই হোক চিন্তা করো না জিতুর হাতে বারবিকিউ মানে আবার কিছু খাওয়াদাওয়া। :))