সেবছর অন্যসব বছরের চেয়ে শীত বেশ খানিকটা জাঁকিয়ে পড়েছে। সকালবেলা বিরেন মাস্টারের বাসায় গেলে, শরীর ভাল নেই অজুহাতে মাস্টার ছুটি দিয়ে দেন। এই কড়াল শীতকে অগ্রাহ্য করে বাইরের বাংলো ঘরে ঘণ্টাখানেক ছাত্রকে বিদ্যাশিক্ষা করাবেন না- সেটা জানা ছিল বলেই বিরেন স্যার আমার সবসময়ের প্রিয় শিক্ষক।
সেদিন স্যার আমার পায়ের আওয়াজ শুনেই ভেতর থেকে বলে উঠেছিলেন-
-এই ঠাণ্ডায় বাইরে কি রে? যা ঘরে গিয়ে লেপের নিচে ঢুকে ১৩’র ঘরের নামতা মুখস্ত কর।
-ঠিক আছে স্যার। কাল কি আসবো স্যার?
-শীত কমলে তো আসবিই। সবার আগে শরীর। ফাইনাল কয়েকদিন পর। ফাইনালের আগে বিপদে পড়িসনা।
-জ্বি স্যার। যাই তাইলে?
-চা খাবি? চা খায়ে যা।
-না স্যার। বাসায় যাই।
-আচ্ছা যা তাইলে।
বিরেন স্যারের সাথে এবার দেশে গিয়ে দেখা হয়েছে। বুধবার আমাদের হাটের দিন। স্যারের বাজারের ব্যাগ থেকে পেঁয়াজের ফুল আর সজনে ডাটা বের হয়ে আছে। মোটা ফ্রেমের আড়ালে স্যারের বৃদ্ধ চোখ সেদিন কীভাবে যেন ভিড়ের মাঝেও আমাকে খুঁজে পেয়েছিল। অবাক হয়েছিলাম খুব।
-আমাকে চিনতে পারছেন স্যার?
-তুই মুকুলের ছেলে না? আরে তোর বাপকেও তো পড়াইছি। চিনবো না কেন?
-না, স্যার। অনেকদিন দেখা হয় না তো।
-দেখা না হলে কি রে? তোর বাপের সাথে বাজারে মাঝে মাঝে দেখা হয়। তোর খবর কানে আসে। তুই বিদেশ কি করিস- টরিস?
আমি হাসি।
-কিছু করি না স্যার। পড়াশুনার চেষ্টা করি মাঝেসাঝে। বাকী সময় ঘুরি।
স্যারও হেসে ফেলেন।
-তুই তো ঘুরবিই। ইসমাইল তোর বন্ধু না? ক্লাস সিক্সে সকাল বেলা আমার বাড়িতে আসার নাম করে, তোরা দুইটা হারাইলি একবার! এলাকায় মাইকিং হল।
আমি হাসি। স্যার কিছুই ভোলেননি। দীর্ঘ বিরতির পর কোন একদিন স্যারের সাথে দেখা হলে, তিনি গল্পটি হয়তো আবার আমাকে মনে করিয়ে দেবেন। ছেলেবেলার শিক্ষকে’রা এমনই। নিশ্চয়ই আমার বাবার সাথে দেখা হলে, স্যার তাঁকেও এভাবেই সব কিছু মনে করিয়ে দেন। ইসমাইলের সাথে দেখা হলে, স্যার নিশ্চয়ই ওকেও আমার গল্পটাই এভাবেই শোনাবেন। আমি আর ইসমাইল আলাদা কেউ ছিলাম না- এটা সবাই ভুলে গেলেও, বিরেন স্যার ভুলে যান নি।
ইসমাইলের বাবা’র সুপারির ব্যবসা। বাবার সাথে ট্রেনে করে সে বাগেরহাট পর্যন্ত চলে যায়। সুপারি কিনে আনে। আর পান কিনে আনে চাপাইনবাবগঞ্জের বরজ থেকে। হাটের দুইটা দিন- শনিবার আর বুধবার তার খুব ব্যস্ত যায়। এই দুইদিন ইসমাইলের ছুটি। সে স্কুলে আসে না। শুক্রবারও তার ছুটি। আমরা সপ্তাহে স্কুলে যাই ছয় দিন। ইসমাইল যায় চার দিন। সেটা নিয়ে তার অহংকারের শেষ নাই। আমরা হিংসা চোখে নিয়ে তাঁকে দেখি। বাবার ব্যবসার হিসাব-নিকাশও সে করে দেয়। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়া বিদ্যা দিয়ে সে হাতে গুনে বাবার ব্যবসার হিসাবটা ঠিকই মিলিয়ে দিত পারতো। আর স্কুলে চালতার আচার বিক্রি করতো যে লোকটা- ইসমাইল ছিল তার মাস চুক্তির খরিদদার। আমরা অনেকেই ইসমাইল হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অনেক চেষ্টার পরও কেউই চালতাওয়ালার মাসচুক্তির খরিদদার হতে পারিনি। দুইটাকার বেশি সে কাউকে বাকী দিত না। সে বয়সেই আমরা বুঝে গিয়েছিলাম, টাকা হাতে না আসলে বড় হওয়া যায় না। বড় হওয়ার জন্য হাতে টাকা থাকা জরুরী। ইসমাইল ছিল আমাদের ছোটদের মাঝে ‘বড়’ একজন।
সারা রাত ৭১১-খুলনা ডাউন ট্রেনের ছাদে বসে বাগেরহাট থেকে ফেরার পথে, সে আর তার বাবা নতুন কী কী জিনিস দেখেছে- সেটা সে স্কুলের বাকীদিনগুলোতে আমাদের উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিকতা মেশানো ভাষায় গল্প করে শোনাতো। পাকশীর উপর একটা বিরাট রেলের ব্রিজ আছে, ট্রেন ব্রিজের উপর উঠলে সেটা ঝনঝন করে কাঁপে। আর ব্রিজের উপর ট্রেন ওঠা মাত্র নিচে তাকানো মানা! তাকালেই নিচ থেকে নদী মানুষ টেনে নেয়- এই অদ্ভুত গল্পগুলো সবই ইসমাইল আমাদের প্রথম শুনিয়েছিল। যে বয়সে আমাদের ছোট মফস্বলের উপর দিয়ে কোন প্লেন উড়ে গেলে, আমরা ঘর থেকে বের হয়ে দল ধরে ছুট লাগাতাম- কোন কারণ ছাড়াই; সে বয়সে ইসমাইল জেনে গিয়েছিল- সৈয়দপুরে একটা বিমানবন্দর আছে- এইসব বিমান সেই বন্দরে গিয়ে নামে।
আমার প্রথম বাড়ি পালিয়ে ‘দূরদেশ’ দেখায় ইসামাইল সাথে ছিল। সাথী হয়েছিল ওর জ্ঞানের জন্য। সৈয়দপুরে যে বিমান নামে- এ তথ্যটুকু যেহেতু ইসমাইলের জানা ছিল- তাই সে জ্ঞানী। জ্ঞানীদের উপর ভরসা করা যায়। ইসমাইলের ‘অগাধ জ্ঞান’ কে সাথে করে ২০০০ সালের কোন এক পৌষের সকালে বিরেন স্যারের প্রাইভেট ফাঁকি দিলাম। আন্তঃনগর রূপসার ছাদে উঠতেও খুব একটা সমস্যা হয়নি। সমস্যা হয়েছে তখন- যখন টের পেয়েছি ভরা পৌষের কুয়াশা-ভারী বাতাসে ট্রেনের ছাদে বসে থাকা আনন্দদায়ক কিছু না। অন্যসময় আমনের ধান ছুঁয়ে আসা যে বাতাসের গন্ধ বুক ভরে টেনে নিলে বেশিদিন বেঁচে থাকা যায়, সেই একই বাতাস ট্রেনের ছাদে বিষকাঁটালি হয়ে হাতেপায়ে বিঁধে। চোখ বন্ধ রাখতে হয়, নাহলে চোখেও বিঁধে। টপটপ করে পানি পড়ে।
চোখমুখ উপচে পড়া ‘অনভ্যস্ততা’ দেখেই বুঝি ট্রেনের ছাদের বাকী যাত্রী’রা তাদের সবার ঠিক মাঝখানে আমাদের বসার জায়গা করে দেয়। আমাদের ঘিরে তারা গোল হয়ে বসে। তারা সবাই দেখতে এক। এমনকি ওদের গায়ের গন্ধও এক- কড়া তামাকের গন্ধের সাথে সন্ধ্যার ঠিক আগে আগে আমনের খড় পোড়ানো গন্ধের মিশেল। উত্তর থেকে আসা পৌষের ভীষণ উন্মত্ত বাতাসেও এ গন্ধের আড়াল হয় না। আমাদের সহযাত্রীদের আরেক পরিচয় হচ্ছে- তারা প্রতিবছরের আশ্বিন- কার্ত্তিক মাসে দেশের সবচেয়ে অভাবী মানুষে’রা। শীতে তারা অপেক্ষাকৃত অবস্থাসম্পন্ন এলাকায় ধান কাটতে আসে। এখন তাদের বাড়ি ফেরার সময় হয়েছে। যেটুকু সরলতা কারও চোখে গাঁথা থাকলে তার ভিতর দেখা যায়; এদের চোখ তার চেয়েও বেশি সরল। এরা এক একজন মানুষ তাঁদের চোখে এক একটা করে আয়না ধারণ করে।
মানুষগুলোর চোখের আয়নায় সেদিন আমারা ধরা পড়েছিলাম। বাড়ি পালালে চোখের পাতা যে কম কাঁপাতে হয়, সেটা সেদিন বোঝা হয়ে ওঠেনি। পরের স্টেশনে বেশ আয়োজন করে ট্রেনের ছাদ থেকে আমাদের নামিয়ে দেওয়া হল। টিটিই নিজে হাতে ধরে আমাদের স্টেশন মাস্টারের রুমে বসিয়ে দিয়ে যায়। বিরামপুর স্টেশনের, স্টেশন মাস্টারের রুমে এগারো বছরের দুই কিশোর নজরবন্দী। এদের একজন দ্বিধা চোখে পালাবার পথ খুঁজছে। আর দ্বিতীয়জন দ্বিতীয়বার পালালে, ভুলেও আর কী কি ভুল করা যাবে না- সে চিন্তায় ব্যস্ত। স্টেশন মাস্টারের ঘর থেকে বাইরের দিকে টানা বারান্দা ঘিরে বেশ ক’টা চায়ের স্টল। ধোঁয়া ওঠা কেটলি। চায়ের কাপে চা চামচের টুংটাং ধ্বনি অবিরত সুর তোলে। একটানা নয়, অল্প কিছুক্ষণের ব্যাপ্তিতে। কান পাতলে, সে সুর চোখে ঘুম হয়ে জড়িয়ে যায়। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভেঙে দেখি ইসামাইল পাশে নেই। ইসমাইল পালিয়েছে।
এর ঠিক অনেক দিন পর, ২০০৮ সালের অগাস্টের কোন এক রাত,
রাতে আমার ঘুম আসতে বেশ খানিকটা সময় নেয়। সেদিনও এমন ছিল। দোতালা বাসার সামনের বারান্দার রেলিং পা ঝুলিয়ে বসে আছি। কী দেখছি- না দেখছি জানি না। হয়তো কিছুই দেখছি না। নওগাঁর দিকে যে রাস্তাটা সোজা চলে যায়- সেটা কাঁপিয়ে মাঝরাতের ট্রাকগুলো চলে যায়। আমাদের বাড়িটা বোধহয় একটু আধটু কেঁপে ওঠে। রাস্তা-লাগোয়া বাড়িগুলো এমনই; সারা রাতই কাঁপে। তাতে কারও ঘুম ভাঙে না। খেয়াল করি, রাত দেড়টার কিছু পরে দুটো পিকআপ থামে; শহর থেকে বেশ খানিকটা বাইরে আমাদের বাড়িটার সামনে। লোক নামে জনা দশেক। কার্ত্তিকের পরিস্কার আকাশ। তারপরও আকাশের নীচে ছায়ার মত আঁধারে কারও মুখ চেনা যায় না। লোকগুলো সামনে এগিয়ে যায়। বেশ খানিকটা উঁচু জয়পুরহাট- সান্তাহার মহাসড়কের ঢাল বেয়ে আরও নীচে। ধানক্ষেত ছাড়িয়ে ওদের চলে যাওয়া দেখি। খেতের আইল ধরে প্রায় আধেক মাইল হাঁটলে একটা হাফ বিল্ডিং পাওয়া যায়। কারা যেন বাড়ি বানাতে গিয়ে আর শেষ করেনি। করে বেশ ক’বছর ধরে এটা এভাবেই আছে। পড়ে আছে যাবতীয় অর্থহীনতার সাক্ষী হয়ে!
মিনিট দশেক পড়ে গোটা এলাকা কাঁপিয়ে শব্দ হল। পরিস্কার বোঝা গেল, এটা গুলির শব্দ। পর পর ছ রাউন্ড। আমি কিছু ভাবার সুযোগ পাই না। কয় মিনিট হবে? বড়জোর পাঁচ থেকে সাত। এরই মাঝে আমার মা ঘুম ছেড়ে দৌড়ে এসে বারান্দা থেকে টান দিয়ে আমাকে ভেতরে নিয়ে যায়। মুহূর্তেই বাড়ির সব জানালা দরজা বন্ধ হয়। শুধু আমাদেরই নয়, আশেপাশের সব বাড়ির। এরপর বেশ কিছুক্ষণের জন্য পৃথিবী শব্দহীন হল। বহুদিন পর আমরা নিবিড় করে আমাদের হৃদপিণ্ডের শব্দ শুনলাম।
পরদিন ভোরবেলা ধীরে ধীরে লোক জড়ো হয়। একজন-দুজন করে অনেকেই। হয়তো পাড়ার সবাই। পুলিশের গাড়ি এসে জায়গা নিয়েছিল তারও অনেক আগে। লোকেদের কৌতূহলী চোখের মণিতে ভয়টুকু সে পর্যন্ত প্রকাশ্যই থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভয় কমতে থাকে। লোকেরা বুঝে যায়, ডাকাতি কিংবা খুন হয়নি। সুপারিওয়ালার সেই বাড়ি পালানো ছেলেটা- যে ট্রেনের ছাদে করে শহরে ফেনসিডিল বয়ে আনতো, আর তিন রাস্তার মোড়ে ভোররাতে যার ভয়ে দূরের গ্রাম থেকে আসা হাটুরে’রা দল বেঁধে চলতো- ছেলেটা ক্রসফায়ারে মরেছে। এটা বুঝে স্বস্তি’র হাওয়া এ জনপদের লোকেদের গা ছুঁয়ে যায়।
চাটাইয়ে মোড়া ইসমাইলের দিকে আমার তাকাতেও ইচ্ছে করে না। সে বিরেন স্যারের বাড়ি পালানো গল্পে বেঁচে থাকুক। আমি শুধু এগিয়ে যাই। আমার মোড়ের পর মোড় চলে আসে, রাজপথ কখনো আসেনা। শুধু কার্ত্তিকের অনিয়ত কিছু রাতে আমাদের নক্ষত্রের মত ঘাসফুল ছড়ানো প্রান্তর চিড়ে শৈশবের ট্রেনটার হুইসেল কানে এসে বাঁধে। সেসব রাতে আমি টের পাই, ইসমাইল আর আমার মাঝের রাষ্ট্রীয় দূরত্বটুকু ধীরে ধীরে কমছে। আমাদের শৈশবের ট্রেন চলছে, এ ট্রেন থামার নয়। আবার কোন এক কার্ত্তিকের দুপুরে বালকদের বাড়ি পালানোর আগে এ ট্রেনের বিশ্রাম নেই।
অসাধারণ বলাটা কম হবে। :boss: :boss: :boss: :boss: :boss:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ওভাররেটেড হতে বড় ভাল লাগে। ধন্যবাদ নেন মোকাব্বির ভাই। 🙂
ওভাররেটেড ছিল না সিদ্দিক। নিঃসন্দেহে, নিঃসংকোচে এটা বলতে পারি।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
এ লেখার পরতে পরতে মুগ্ধতা!
শৈশব, পলায়ন এবং অন্যান্য অনুষঙ্গে ব্যাপৃত জীবনকথা ঈর্ষামেশানো আনন্দ আর ব্যথা নিয়ে পড়লাম।
একটা উপন্যাস লেখো এই বেলা। কুয়াশা আর হুইসেলের গল্প শুনি -- বারুদের সঙ্গে, রক্তের সঙ্গে লেপ্টে থাকা জীবনের গন্ধ শুঁকি।
ভাই আপনি বানান ভুল খুঁজে পাননি, না খুঁজে দেখেননি- সেটা ভাবাচ্ছে! আমি দুর্বল ব্যাকরণ জ্ঞান নিয়ে সব সময় চিন্তায় থাকি। লজ্জাও পড়ি। 😉
:)) :))
খুব বেরসিক এই বানান ভুল ধরা, তাই না?
খুঁতখুঁতে এই স্বভাব থেকে মাঝেমধ্যেই ছুটি নেবার চেষ্টা করি।
আর প্রকাশযোগ্য লেখায় আসলে বানান ভুল নিয়ে অত কচলাকচলি না করলেও চলে, কেন না ছাপানোর সময় প্রুফরিডার তো থাকবেনই।
এই লেখায় বানানভুল যদি দেখতে যাই, তাহলে নিম্নোক্ত কয়েকটি নিয়ে বলবোঃ
সুপাড়ি > সুপারি
কার্ত্তিক > কার্তিক
বিরেন > বীরেন
চায়ের কাঁপে > কাপে [চন্দ্রবিন্দু নির্মূল অভিযানের অংশ হিসেবে]
মুখস্ত > মুখস্থ [তবে কথ্যভাষা ধারণ করতে চাইলে ঠিক আছে আমি বলবো]
লোকে'রা , শিক্ষকে'রা, মানুষে'রা ইত্যাদি বানানে '
কেন?
এই কয়েকটা ভুল সম্পাদনার সময়েই ঠিক হয়ে যাবে। মূল ব্যাপার হচ্ছে - ভাষার উপর অনায়াস দখল। সেটা আছে বলে তুমি আমার প্রিয় লেখকদের একজন।
ভাইয়া কার্ত্তিক এভাবে ইচ্ছে করেই লিখছি, আর ' ব্যাপারটাও তেমনই। কোথায় যেন এভাবে পড়েছিলাম, মাথায় ঢুকে গেছে।
নূপুরদা ধন্যবাদ। দারুণ অনুপ্রাণিত হলাম।
কয়েকটা টাইপো দেখলাম। সময় পেলে ঠিক করে নিও...
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
কার্ত্তিক ইচ্ছে করে লিখে থাকলে ভালো। এটা পুরনো বানান - গ্রামীণ গন্ধ আছে। পঞ্জিকা আর গ্রাম্য অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণে 'কার্তিক' লেখেনা -- কার্ত্তিকই লেখে মানুষ। যেমনঃ সূর্য্য, উপলক্ষ্য। আর এই 'ত্ত' বানান দেখলে আমার মনে হয় সবুজ প্রান্তর গিয়ে মিশেছে দূঊরে কালো কালো পাহাড়ে, ওপরে ঝকঝকে নীলাকাশ। অন্যদিকে, 'র্ত' বানানে মনে পড়ে কার্তিক ঠাকুরকে -- ময়ূরের পিঠে ধনুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ফুলবাবু।
যাক, খুব বড়সর বেলাইন ব্যাপার হয়নাই জেনে আনন্দিত হলাম। নূপুরদা ধন্যবাদ। আমার আরও কিছু বানান একটু বেলাইনে লেখার ইচ্ছা আছে। ইনবক্সে লিস্ট আপনাকে পাঠিয়ে দেব। B-)
সিসিবিতে আসতে আসতে আমি ভাবতেছিলাম রেজা শাওন ছেলেটা লেখে না কেন। তারপরই তোমার নাম দেখলাম। এবার যাই লেখা পড়ে আসি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপনি বই লিখবেন কবে? মেলায় গিয়ে এবার আপনার বই খুঁজেছি। না পেয়ে হতাশ হয়েছি। পাঠককে বঞ্চিত করবেন না। ভাল থাকবেন।
বলেন কি!! ভয়াবহ!!
একেই বলে সোলেমানী বোলগ :clap:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
সিসিবি তে আজকে দেখি ঈদ ঈদ ভাব... পুরো লেখা টানা দুইবার পড়লাম। আরো অনেকবার পড়ব হয়তো পরে.. মাননীয় স্পীকার টাইপ ফিলিংস ! একদম ভিতরে গিয়ে লাগলো প্রতিটা লাইন। কিভাবে পারেন ভাই? একটু শেখা দরকার আপনার কাছে থেকে। ইউরোপে আসার ইচ্ছে আছে সামনের শীত এ বা তার পরে.. শিখায়েন তখন ! 🙂
ইউরোপ আস, রান্না করে খাওয়াই। শীতের আগেই আস। শীতে এদিকটা জঘন্য। তোমাকে বারে বারে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করি। আচ্ছা, এখন তোমার হাইট কত?
ছোটবেলায় ঠিক মতন পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার ছিল... খালি চকলেট খাইতাম। উচ্চতা তাই এখন ৫ ফিট ৫ ইঞ্চি 🙁
কিন্তু নাফিস তুমি পারবে। কারণ তুমি সোহরাওয়ার্দী হাউজের ক্যাডেট। এবং সোহরাওয়ার্দী হাউজের ক্যাডেটদের প্র্যাকটিস লাগে না! 😀
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
কথা কিন্তু সত্য :))
আচ্ছা, এই প্র্যাকটিস না লাগা নিয়ে আপনাদের ব্যাচ এ কোন কাহিনী আছে নাকি ? 😛
কাহিনি এইখানে:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
কেন তোমার লেখা একটানে পড়া যায় তার একটা ব্যাখ্যা খুঁজছিলাম। মূলত তুমি শুধু ভাষার খেলা দেখাও না - একটা পূর্ণাংগ গল্প বলার চেষ্টা করো। ঘুড়ির সুতোর মতো প্রতিটা লাইনেই একটু একটু করে সেই গল্পের রেশ ছাড়তে থাকো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু ভীষণ অনুপ্রাণিত হলাম। আপনি কি দেশে? 'বিতংস' আমার বন্ধু গিয়ে কিনে রেখেছে। সুযোগে সে পাঠিয়ে দেবে। পড়ে জানাবো, কেমন লাগলো। 🙂
যদি তোমার মত করে লেখতে পারতাম :dreamy:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
আপনি চমৎকার লেখেন।
আপনার মতই লোকদের জন্যই সিসিবিতে ঢুকতে ইচ্ছে করে না। 😛
কারণ একবার ঢুকলে বের হওয়া খুব কঠিন।
লেখা প্রিয়তে নিয়ে নিলাম।
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
ঢুকতে বলছে কে? তুমি এরপর থেকে প্রবেশ করবে, কেমন?
বুয়েটে তোমার সাথে দেখা হল, দৌড়ের উপর ছিলাম বলে সেভাবে কথা হল না। এরপর অবশ্যই হবে। ভাল থেকো।
🙂 খুবই ভালাে লাগলো,চালিয়ে যান
ভাই ধন্যবাদ।
আজ আসলেই ঈদ ঈদ লাগতেছে সিসিবিতে। প্রথমে পড়লাম মোকাব্বির ভাইএর লেখাটা এর পরই রেজার। আহা সিসিবির এমন শুভ দিনে মিষ্টিমুখ করতে ইচ্ছে করে।
সিরিয়াস কথাঃ একটা উপন্যাস লিখে ফেল না। নিদেন পক্ষে একটা গল্পের বই। ছোট গল্প থাকবে, তোদের জয়পুরহাটের রাস্তা, রেল লাইনের গল্প, নিঝুম রাতের ঝিঁঝিঁ জোনাকির গল্প। খারাপ হবে না।
লেখার জন্য :boss: :boss: :boss:
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
মাথায় তো গল্প ঘোরে, সেসব গল্পের শক্তি কম, অলসতার শক্তি বেশী। এই হল অবস্থা। বিনীত ধন্যবাদ জানবেন ভাই।
অনেক চমৎকার লেখা। :hatsoff:
ভালো থাকা অনেক সহজ।
সাদাত বন্ধু, ধন্যবাদ নাও।
:teacup: :clap: :clap: :clap:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:teacup:
এই গল্প পড়ার পরে এখন কি আর ফার্মাকোলজি পড়তে বসতে ইচ্ছা করে??
কুর্ণিশ করে গেলাম :boss: :boss:
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
পড়তে পড়তে তো শহীদ হয়ে যাচ্ছ! ব্রেক নাও খালেক। ধন্যবাদ।
ভালোলাগার মাত্রা প্রকাশের সঠিক শব্দ বের করতে পারছিনা।। তোর সাথে তো দেখা হচ্ছেই। তখন আলাপ হবে, কিভাবে পারিস।
:boss: :boss: :boss:
স্টকহোমে কঠিন একটা সম্মেলন দিতে হবে। আসেন, দেখা হবে। :thumbup:
:thumbup: :thumbup:
তোমার লেখা পড়তে খুব ভাল লাগে। বরাবরের মতন মুগ্ধতার সাথে পড়লাম। তবে আমি তোমার নন-ফিকশন লেখার বেশি ভক্ত!
এখানে ''জাগতিক'' দূরত্ব হলে আমার কাছে বেশি ভাল লাগত।
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ভাইয়া অনেক ধন্যবাদ। 🙂
'রাষ্ট্রীয় দূরত্ব' বলতে রাষ্ট্র কর্তৃক সৃষ্ট দূরত্বের কথা বলতে চেয়েছি। জাগতিক দূরত্ব তো তাও কমানো যায়, এই দূরত্ব কমার নয়।
প্রথমবার পড়লাম গোগ্রাসে হাভাতের মত। দ্বিতীয় বার থেমে থেমে...। এরপর আবার আবার...... প্রতিবার নতুন!
লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়!
জুনাইদ ভাই অনেক ধন্যবাদ, অনুপ্রানিত হলাম।
মানসিক অস্থিরতায় থাকি মাঝে মাঝেই। তার উপর খুব প্রেশার যাচ্ছে উপর দিয়ে। লেখাটা পড়ছি প্রায় ছয় ঘন্টা আগে। মন্তব্য করার জন্য অস্থির লাগছিল। এখন কিছুই লিখতে পারছি না। আপনার লেখনী নিয়ে কিছু বলব না। দুনিয়া আজব কারখানা,ভাল লাগে না কিছু। ছেড়ে ছুড়ে চলে যেতে ইচ্ছা করে।
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
তোমার সাথে তো কথা হল, লাইনে চলে আসছ আশা করি। লাইনে থাকো, তাহলেই হবে।
সাবাশ ভাই সাবাশ, পাঠক এখন বই চায়, বই লেখার কাজে হাত দেন। চমৎকার পোস্ট হইসে।
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
ঠিকাছে, সাক্ষাতে বিস্তারিত আলাপ হবে। :thumbup:
Read this off of my dear ex-cadet dosto Humaira Khan's FB notification string. (somehow Bangla font doesn't work on this new phone or that I couldn't figure out the right app!). There I go off tangent again! Read it while waiting in the car, parked by the stairs of my son's best friend's house on a steep hillside in Los Angeles suburbs, while he's trying every possible excuses to extend his playdate. His BFF's mom, the free-spirit-love-all type, pleads on his behalf - 'few more minutes', 'he was such a good boy today, ' ate vegetarian taco' ..... smiles contently at the two fully bare-bum 5 year olds running in and out of the small pool on their deck, with their old near-blind dog, hobbling, slipping, sliding around the ecstatic boys on this super hot spring evening. She waves at me from the deck and mouths 'its OK, they are just being boys, don't worry!' I smile back and check FB until I stumble on your write-up. It took me instantly to the haat-bazar day, very fluidly written and intelligently too with detailed observations, not just bland with pretty poetic language. My son knocked on the door, a little confused that I wasn't yelling 'time to go' yet and asked if he could stay the night at LP's! Uh..oh... Time to take charge! I exchange looks with my friend and tell her 'we need to leave before he changes his last name to yours'!! Another week night of busy chores - but your words stayed on! keep on writing :)!
আপু অনেক অনেক ধন্যবাদ। দোয়া করবেন।
So beautifully written! Liked it very much, @Zakia Meraj.
তোমার লেখা পড়তে পড়তে আমি এই দুরদেশে বসেও শীতের বিকেলের বাতাসের মত খড় পোড়া গন্ধ পেলাম - খুব ভালো লাগলো শাওন, ভালো থেকো
আপু ধন্যবাদ জানবেন।
প্রসংসা বাক্য খুঁজে পাচ্ছি না, টুপি খোলা অভিবাদন :hatsoff:
(এই মানের লেখা পড়ার পরে নিজে আবজাব লেখার আগে দশবার ভাবতে হয় 😛 )
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
কি যে বলেন ভাই!
ধন্যবাদ জানবেন।
:boss: :boss: :boss:
আপনার লেখার পরতে পরতে মুগ্ধতা। লেখাটা পড়া শেষে প্রথম যে কথাটা মনে হয়েছে, আপনার মত লেখকের সাথে একি প্ল্যাটফর্মে লেখার সুযোগের মত সৌভাগ্য আমার হইছে। এতো সুন্দর লেখা। কীভাবে পারেন??
• জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব - শিখা (মুসলিম সাহিত্য সমাজ) •
এভাবে বললে সত্যি বিব্রত হই। বিনয় দেখাচ্ছি না। তুমি বরং লাইনে আসো। সিসিবিতে লেখালিখি জারী রাখো। লাস্ট লেখা কবে লিখেছ?
এইতো ভাইয়া একমাসের একটু বেশী।
• জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব - শিখা (মুসলিম সাহিত্য সমাজ) •
বহুদিন পরে সিসিবি এসেছি।
ঢুকেই তোমার লেখা দেখে মনের মধ্যে একটা খারাপ লাগা আসল। এই লেখা আমি এতদিন মিস করে বসে আছি।
শুধু মাত্র এটুকু বলার জন্য লগইন করেছি।
নুপূর দার সাথে একমত। এইবার তুমি একটু সিরিয়াসলি লেখালেখিতে মন দাও। তোমার লেখা পড়লে আমার এক সাথে শামসুল হক এবং কেন জানি শাহরিয়ার কবিরকেও মনে পড়ে। দুজনই লেখক হিসেবে আমার খুব প্রিয়। তুমিও।
তপু ভাই, পিকনিকের দিন দৌড়ের উপর ছিলাম। নানাবিধ কারণে সেভাবে কথা বলতে পারি নাই। আপনি কি ফেসবুকে আছেন?
Just wonderful.
ধন্যবাদ।
অসাধারন লিখছ রেজা। বীরেন স্যারও মুগ্ধ হতেন। ইসমাইল বেঁচে থাকবে এ লিখার মধ্য দিয়ে। বড় কিছু হয় যাক, কি বল ? :clap:
জিয়া ভাই, ধন্যবাদ জানবেন।
just speechless....
উফ! পড়ে লগইন করতেই হল! ব্যাপক মুনশিয়ানা এ গল্পের প্রতিটি শব্দের এবং গল্প বলার পরতে পরতে!
কি খবর রেজা শাওন?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
:boss: :boss: ::salute::
এক বছরেরও বেশি হয়ে গেলো কিন্তু তোর এই লেখাটা কিভাবে মিস করলাম???
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর লেখা পরে ভাবতাম লেখকের পাঠককে মোহাবিষ্ট করে রাখার কি অপরিসীম ক্ষমতা!!! তুই আরেক জাদুকর রে ভাই। তোর লেখা পড়লে কেন জানি সেটা আর আমার জন্য নিছক গদ্য থাকেনা, বরং প্রতিটা দৃশ্য-প্রতিটা চরিত্র আর গ্রামের অপরুপ সৌন্দর্য নিজের চোখের সামনে দেখতে পাই, হৃদয়ের মাঝে অনুভব করি।
চমৎকার গল্প বলা। একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেলাম!
"এরপর বেশ কিছুক্ষণের জন্য পৃথিবী শব্দহীন হল। বহুদিন পর আমরা নিবিড় করে আমাদের হৃদপিণ্ডের শব্দ শুনলাম।" - পাকা হাতের লেখা।