জেসিসি’র আজব কিছু ট্রেডিশনের একটি ছিল এই টার্মেন্ড সুইট। এটি আর কিছুই না, টার্মেন্ড পরীক্ষার পর জুনিয়রকে দেয়া সিনিয়রদের প্রীতি উপহার…!! পুরো হাউস ধরে অথবা পুরো ইনটেক ধরে পাঙ্গা খাইতে হত। তবে নিঃসন্দেহে হাউসে খাওয়া সুইটটি ছিল বেশি ভয়াবহ…ডর্মের ভিতরে অথবা হাউসের সামনে ফল ইন করে শুরু হত মিষ্টি বিতরন…প্রথমে থাকত হাল্কা পিটি টাইপ পানিশমেন্ট…ওয়ার্ম-আপ হবার পর শুরু হত হ্যান্ড চার্জ! চড়-থাপ্পর, স্কেল, হ্যাংগার এবং অবশ্যই বেল্ট। মোটামুটি গণ পিটুনি টাইপ মাইর…এর মধ্যে যারা আবার একটু মার্কা-মারা থাকত তাদেরকে সমাদর করা হত অনেক বেশি…আমার জীবনের সেরা টার্মেন্ড সুইট খেয়েছিলাম ক্লাস সেভেনে, তখনকার ক্লাস ইলেভেনের কাছে…
কথা প্রসঙ্গে বলে নেই, প্রচলিত ধারনা হচ্ছে- সার্ভে টেস্ট, ট্যালেন্ট শো, নভিসেস প্যারেড…ইত্যাদির মাধ্যমে একটি ছেলে ধীরে ধীরে ক্যাডেটে পরিনত হয়…যত্তসব আজাইরা কথা!! আসল কথা হল, একটি ইনটেকের পোলাপাইন ক্যাডেট হয় অই সময়কার ক্লাস ইলেভেনের দ্বারা…আমাদের কপাল খারাপ, কারন আমরা ইলেভেন হিসেবে পেয়েছিলাম কলেজের ইতিহাসের অন্যতম রাফ ন্ টাফ ইনটেক। অবশ্য এতে করে শারীরিক ও মানসিকভাবে আমরা অনেক শক্তিশালীও হয়ে উঠি…
আবার চলে আসি মূল প্রসঙ্গে। সেকেন্ড টার্মেন্ড পরীক্ষা শেষ, বাসায় যাবার আগের দিন ব্লক থেকে সবাই বই খাতা এনে হাউসে বসে সময় কাটাচ্ছি…লাঞ্চ বেলের তখনও অনেক বাকি। এমন সময় শুনি, ‘ক্লাস সেভেন গেট ডাউন, হারি আপ…’। তড়িঘড়ি করে নামতেই সবাইকে ঢুকানো হল ডর্ম থ্রী তে- ইলেভেনের ডর্ম। প্রথমেই করতে হল ক্রলিং…তাও কান ধরে!!! ডর্মে মোট বেড ১০টি, দুই সাইডে পাঁচটি করে এবং মাঝখানে চলাচলের জন্য ফাঁকা জায়গা। লাইন ধরে ক্রলিং করতে করতে বেশ কয়েকবার চক্ক্র দিলাম…সারা টার্মের ময়লা পরিস্কার করিয়ে নিয়ে মাঝখানে এক লাইনে ফল ইন করিয়ে শুরু হল আসল পানিশমেন্ট…সাইড টু সাইড জাম্প, চিকেন, ডাক, হাফ চেয়ার, পুশ আপ, নাইন নাম্বার, ফ্রগ জাম্প…মোটামুটি কিছু বাকি ছিল না…আর পানিশমেন্ট এর সিরিয়াল্টা এমন ছিল যাতে হাঁটু, থাই খুব দ্রুত ব্যাঁথা হয়ে যায়…যখন আর দাঁড়িয়ে থাকার মত শক্তি নাই হয়ে গেল-শুরু হল হ্যাণ্ড চার্জ…মূলত হ্যাঙ্গার আর বেল্ট…কত গুলো হ্যাঙ্গার যে ভেঙ্গে গেল…তার কোন হিসাব নাই…কেউ কেউ তো হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দিল…একসময় থেমে গেল ঝড়, উত্তাল সাগর হল শান্ত, শুধু বালুচরে রেখে গেল কিছু স্মৃতি…!!!কিসের মধ্যে কি কইলাম…!!যাই হোক, এক সময় লাঞ্চ বেল পড়ল এবং আমাদেরকে ছেড়ে দেয়া হল…এর পর দিন আমাদের কলেজ ছুটি হয়ে গেল।
বাসায় গিয়ে প্রথম কিছু দিন ব্যাথায় অবস্থা খারাপ…প্রকৃতি ডাকতে ডাকতে মুখ ব্যাথা করার আগে সাড়া দিই না…দিব ক্যাম্নে! আমি সাড়া দিতে চাইলেও হাঁটু আর থাই তো সাড়া দিতেই চায় না…বড় টয়লেট সাড়তে জান বাইর হয় টাইপ অবস্থা…আর যখন হাঁটা-চলা করতাম তখন এমনভাবে হাঁটতাম দেখে মনে হত যেন সম্প্রতি ‘ছেলেদের বিশেষ সুন্নত’ আদায় করেছি…!!! মোটামুটি সপ্তাহ খানেক লেগেছিল পুরোপুরি সুস্থ হতে…
টার্মেন্ড সুইট এর পরেও কয়েকবার খেয়েছি…তবে ঐ বারের মত আর কোনটিই ছিল না…ঐ বারের সুইটের স্বাদ যেন এখনও ঠোঁটে (নাকি হাঁটু ও থাইতে??) লেগে আছে…!!!
ঠিকাছেতো। বৈলাভুলকরেন্নাই। :grr:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
এই লাইনটা মাসুদ রানা থেকে মারা...!!!
প্রেক্ষাপটটা ছিল সম্পূর্ন ভিন্ন... 😉 😉
(you know what i mean...! 😀 )
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ইয়া মাবুদ আপনে সেই জিনিসের লগে টার্ম এন্ড সুইটের তুলনা করলেন!!!!
কেলাস সেভেনে তো সবাই আবুল থাকে আমি ছিলাম একটু বেশি আবুল।আর সাইজের কারণে পাঙ্গা যেমুন বেশি খাইতাম,খিদাডাও বেশি ছিল।তো আমার এসিস্টেন্ট ডর্মলিডার মেহেদী ভাই আমারে বিশেষ "সেনেহ" করতেন(প্রথম ইন্সপেকশনে ধরা খায়া উনার ডর্মের নাম উজ্জল করছিলাম কিনা...)
তো উনি যখন জীবনে প্রথম সেই সুইট দিতে ডাকলেন,আমি গিয়া হাত পাইতা কই,মেহেদী ভাই ইয়েস পিলিজ(এমসিসির "কাইন্ডলি" এর মত),আমি কিন্তু মতিচুরের লাড্ডূ খুব পছন্দ করি,ওই সুইট টা থাকলে আমাকে এক্টু দেন প্লিজ।
অফ টপিকঃ এটা শুনে মেহেদী ভাইকে দেখলাম হ্যাঙ্গার এর বদলে হ্যাঙ্গার ঝুলানোর মোটা লাঠি বের করছেন.........
=))
আমরা বিসিসি পার্টি মনে হয় একটু শান্তিতে ছিলাম। আমাদের মারামারির ট্রডিশন তেমন ছিল না। পানিশমেন্ট খাইছি মুড়ির মত, মাগার ছয় বছরে ৭/৮ বারের বেশি মাইর খাইনাই। ৩/৪ জন জুনিয়ার রে মনে হয় থাবড়া দিছিলাম।
(আমি ভদ্র পুলা ছিলাম এইটা একটা কারণ হইতে পারে মাইর না খাওয়ার পিছনে :ahem: )
লেখা কিমুন হইছে কইতে ভুইলা গেসি ~x( ~x(
দোস্ত অতি সৌন্দর্য লেখা। বৃক্ষরা এতটা হিংস্র হয় আগে ঝান্তামনা 🙁
সেই জুন্নেই কইছিলাম,গাছের পাতার থুক্কু বান্ধবির লগে ফেলার্ট করার আগে দুইবার ভাইবা লন... 😀
হুমমমম...। এতটা না করলেই কি নয়?
তবে ভাই, বোঝা গেলো, তোমরা যথেষ্ট কষ্টে ছিলা...।
আল্লাহ'র কাছে শুকরিয়া যে আমাদের এইরকম কোন ট্রেডিশন ছিলনা...।
আহসান ভাই,গায়ে হাত তোলাটা আমি নিজেও প্রচন্ড অপছন্দ করি।খুব মনে আছে ক্লাস সেভেনে প্রথম চড় খেয়ে কিভাবে কান্নাকাটি করেছিলাম।পরে আমিও সেই নিষ্ঠুর সিনিয়রদের মতই হয়ে গিয়েছিলাম...এখন মনে পড়লে নিজের কাছের প্রচন্ড অপরাধী মনে হয়।যদিও কোনদিন কোন ছোটভাই পরে এটা নিয়ে মন খারাপের কোন অভিযোগ জানায়নি,তার পরেও দেখা হলে আমি ক্ষমা চেয়ে নেই।পানিশ্মেন্ট ঠিক আছে কিন্তু গায়ে হাত তোলাটা খুবই বাজে একটা ট্রেডিশন।অবশ্য আমরা কবীর ভাইদের মত এই পরিমান খাই নি...তারপরেও...নদী শুকায় গেলেও দাগ থাকে... 🙁
মানুষ কি আর সাধে গাছ হয়। হয় তো এই জন্যেই। 😛
আমিও লেখা নিয়া বলতে ভুইলা গেসি। ~x( পড়তে ভাল্লাগসে O:-)
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
:)) :)) :)) ""আর যখন হাঁটা-চলা করতাম তখন এমনভাবে হাঁটতাম দেখে মনে হত যেন সম্প্রতি ‘ছেলেদের বিশেষ সুন্নত’ আদায় করেছি…!!! "" ভাই আপনে:boss: :boss: :boss: বেশি জব্বর লিখসেন।
আমাদের আহসান উদ্দিন আবার সুন্নত পালনে একটু বেশি পারদর্শী কিনা 😉
তোর সুন্নত পালন নিয়া কি এইখানে ১টা ব্লগ লিখমু নাকি??
অইডার সুন্দর একটা ডেফিনিশন আছে...
'Cutting ceremony of the fu..ing instrument!!!"
😀 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
=)) =))
আমাগো "পিটি নাম্বার নাইন" নামে একটা পিটি আছিল।দুই হাত লাফায়া দুই সাইডে নিয়া সাথে সাথে পরের স্টেপে বইসা পড়তে হইত।তারপর কাউন্টের সাথে সাথে লাফ দিয়া আবার দাঁড়ানো।মাথা থুক্কু হাঁটু এমন ব্যাথা হইত বাজি...কবীর ভাই মনে আছে? 🙁
ভুলতে চাইলেও পারুম না রে ভাই... :((
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
সাব্বির ভাই আমাদের কলেজ এ ছিলনা কী কন 🙁 আপনি ্ত রুমে থাকতেন আর মিস্কাত ভাই আর ঝুমন ভাই মাইরা আমারে কি যে করসিল :(( তবে সেটিকে আখন ভালই মনে হয় :boss:
আমাদের বযাচ ক্লাস ইলেভেন ছিল কি সেসময়? আমরা ৯৬ তে বের হইসিলাম। আমাদের ঝিনাইদহের বযাচ ত বেশ শান্ত শিষ্ট ছিল। ছুটিতে যাবার আগের দিন এইরকম পানিসমেন্ট আমাদের কলেজে ছিল না। ছুটি তে যাবার আগের দিন মানে হলো ঈদের দিন আহা কি আনন্দ ছিল ওই দিনগুলোতে 😀
🙁 🙁 🙁 🙁 🙁
সামি ভাই, জ়েসিসি'র আপনাদের ব্যাচ আসলেই শান্ত-শিষ্ট ছিল, এবং তার আগের টাও-কিন্তু সেটা আমাদের জন্য খারাপ হয়েছিল, ক্যাডেটদের ক্ষমতা হ্রাস পেয়ে গেছিল ওনাদের আমলে...
আমি কিন্তু পানিশমেন্ট এর পক্ষে (অবশ্যই লিমিটের মধ্যে)!
পানিশমেন্ট যত বেশি থাকবে কলেজের এডমিন তত ভাল থাকবে-এইটা হল অপ্রিয় সত্যি কথা!
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
কবির,
ইনটেকটা কি আমরা নাকি ? ভাইরে মনটাই খারাপ করে দিলে...।।।
আমাদের ইনটেক এর উপর তোমাদের তো হচ্ছে ব্যপক ক্ষোভ...... 🙂
তোমার লেখাটা আমি আমাদের অনলাইন গ্রুপ এবং আমাদের নিজস্ব ওয়েব সাইট (www.pmd28.com) ব্লগে পোস্ট করলাম...সবাই খুব মজা পাইছে..specially me and Firoj...মনে আর কষ্ট রাইখোনা , ভাই 🙂
আজিজ ভাই, আমারে গু-ওয়ালা স্যান্ডেল দিয়ে পিডান- কিছু মনে করব না...
খালি 'আপনাদের উপর আমার ক্ষোভ ভেবে লজ্জা দেবেন না... :bash:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
😀 😀 দূর্দান্ত আইডিয়া তো। আমার বহুত পসন্দ হইছে 😛 😛 ।
Life is Mad.
সায়েদ ভাই, আপনে বড়ই খারাপ আছেন... x-(
স্যান্ডেলের তলার গু দেখলেন...এদিকে আমি যে শরমিন্দায় মইরা যাইতেছি-তা দেখলেন না... 🙁
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
কবির আশা করি তোমার শরমিন্দা ভাবটা এইবার একটু কমেছে 😀
আর এই সাত সকালে যে ধরনের স্যান্ডেলের কথা বললা...মিয়া, ব্রেকফাস্ট টাই মাটি কইরা দিলা......। 🙁 🙁
আজিজ ভাই, ছোট ভাইএর ভুল ক্ষমা করছেন শুনে খুশি হয়ে গেলাম... 😀
তবে, আপনার ব্রেকফাস্ট মাটি করার জন্য আমি মোটেই শর্মিন্দা নই... 😛
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
লেখা কিন্তু আমি এডিট করে দিয়েছি... 🙂
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
কবির দেশে আইসা তোমারে যদি পাই তাহলে আজকের এই ব্রেকফাস্ট মাটি করা সুদে আসলে উশুল করুম কইলাম :))
উশুলটা কিভাবে করবেন-জানালে বড় উপকৃত হতাম... 🙁
মানে জানতে চাচ্ছি, 'কয়দিনের এই জীবন' বলে জোরসে নামাজ-রোজা শুরু করব...নাকি 'আজিজ ভাই আইলে জব্বর এক খান খানা পাওন যাইব' বলে আপনার আসার দিন গোনা শুরু করব??? :-B
ব্যক্তিগতভাবে আমি দ্বিতীয়টার পক্ষপাতী...আহারে! কত দিন গুড-ব্যাড (ভাল-মন্দ!) খাই না...!!! :bash:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আচ্ছা আমি এইটা চিন্তা ভাবনা কইরা দেখি । । । । 🙁
আমিও খাপো আজীজ ভাই
অফ টপিক-আমি কিন্তুক খুব কম খাই কামরুল ভাইরে জিগাইলেই কইবো 😀
মনে হতিছে নিজের বিপদ নিজেই ডাকি আনলাম...। :))
পুরান লেখা পড়লাম। ভাল ই লাগল। তবে ২৭ এর কাছে ২৮......পুফ।