আহ ক্রিকেট! আহ রোমান্টিকতা!!

(চৌ জাফরউল্লাহ শরাফত টোনে পড়তে হবে O:) )

-সুপ্রিয় দর্শকমণ্ডলী, জেমস এন্ডারসন প্রান্ত থেকে বল করতে আসছেন ইংল্যান্ডের নয়নমণি, ল্যাঙ্কাশায়ারের সোনার ছেলে, সুইং এর রাজা, সিম এর নবাব জেমস মাইকেল ‘জিমি’ এন্ডারসন!!
এ কী তেলেসমাতি! এ কী অভাবনীয় ব্যাপার! এ কী কাকতলীয় ব্যাপার!
বোলার এবং বোলিং প্রান্তের একই নাম!!

(পাশ থেকে, ফিসফিস করে)
-ভাই, তেলেসমাতি’র কিছু নেই। গত সপ্তাহে ল্যাঙ্কাশায়ার কর্তৃপক্ষ ওর নামেই এই নামকরণ করেছে।

-দর্শকমণ্ডলী, দুঃক্ষিত! আসলে গত সপ্তাহে ল্যাঙ্কাশায়ার ক্রিকেট ক্লাব কর্তৃপক্ষ জিমি এন্ডারসনের নামেই এই নামকরণ করেছে। যাহোক, এই জিমি এন্ডারসনের কথা না বললেই নয়। বর্তমানে খেলছে এমন ফাস্ট বোলারদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক। তাঁর সুইং এর জাদুতে পরাস্ত হয় বিশ্বের…

আউট! আউট! আউট!

যখন জেমস এন্ডারসনের কথা বলছিলাম ঠিক তখনই নিজের ও ইনিংসের মাত্র তৃতীয় বলেই তিনি ডিন এলগারকে এল বি ডব্লিউ আউট করলেন। যেন বললেন, তুমি ডিন হতে পারো, তবে তোমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কিন্তু আমি…! তুমি ঐ প্যাভিলিয়নে চলে যাও…!!

==================

উপরের ধারাভাষ্য কাল্পনিক হলেও ঘটনা সত্য! ল্যাঙ্কাশায়ার ক্লাব কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটি বোলিং প্রান্তের নামকরণ করে ‘জেমস এন্ডারসন প্রান্ত’ রেখেছে। অন্যটির নাম ব্রায়ান স্ট্যাথাম প্রান্ত। সাবেক ফাস্ট বোলার ব্রায়ান স্ট্যাথাম ল্যাঙ্কাশায়ার ক্রিকেট ক্লাবের অন্যতম লিজেন্ড। মোট ১৮১৬ টি ফার্স্ট ক্লাস উইকেট শিকার করা এই পেস বোলার ক্লাবের ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী!

নিঃসন্দেহে এটি জেমস এন্ডারসনের জন্য একটি অনন্য সম্মাননা! শুধু বর্তমান খেলোয়াড় বলেই এই সম্মাননা অনন্য নয়, আসলে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড নিজেও বিশ্বের অন্যতম সুপরিচিত একটি ক্রিকেট গ্রাউন্ড।

সত্যি কথা বলতে লর্ডস এর পর এটি বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীন ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ইতিহাসের প্রথম এসেজ ম্যাচটি (১৮৮৪) এখানেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্পিনার জিম লেকার এই মাঠেই এক ম্যাচে ৯০ রানে ১৯ উইকেট দখল করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ১৯৯৩ সালের এসেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের মাইক গ্যাটিং এর বিরুদ্ধে অসি লেগ স্পিনার শ্যেন ওয়ার্ন ‘শতাব্দীর সেরা বল’ টি করেছিলেন এই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের মাঠেই…!!

জেমস এন্ডারসন প্রান্ত থেকে বল হাতে খোদ জেমস এন্ডারসন নিজেই বল করতে ছুটে আসছেন- এটা নিঃসন্দেহে ক্রিকেটের সুন্দর দৃশ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম!

আহ ক্রিকেট!
আহ রোমান্টিকতা!

২ টি মন্তব্য : “আহ ক্রিকেট! আহ রোমান্টিকতা!!”

  1. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    "ক্রিকেটে মানুষ কি দেখে?"
    এই প্রশ্নের সহজ কোনো সমাধান নাই।
    তবে এভাবে যদি বলা যায়, আমার কাছে তা অনেক বেশী লাগসই বলে মনেহয়:
    "ক্রিকেটে অসংখ্য ছোট ছোট সৌন্দর্য্য আছে, আছে অসংখ্য ছোট ছোট রোমান্টিকতা। ক্রিকেটকে ভাবাবাসা মানেই হলো, সেইসব রোমান্টিকতা, সেইসব সৌন্দর্য্যকে ভালবাসা।"

    তেমন একটা ঘটনার চমকৃতকর বর্ননা।
    ভাল লেগেছে...


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।