ক। প্রতিটি সুপার হিরোরই কমপক্ষে দু’টো করে আইডেন্টিটি থাকে। লোক চক্ষুর অন্তরালে সুপার হিরো হলেও সমাজের চোখে তিনিই হয়ত খামখেয়ালি বিলিয়নিয়ার, পিৎজা বিক্রেতা, আইনজীবী, সাংবাদিক, বিজ্ঞানী বা ফটোগ্রাফার। প্রায়শই দেখা যায় দুই জীবনের মধ্যে সমন্বয় করতে তারা হিমশিম খেয়ে ওঠেন। ফলে, কোন এক জীবনকে তাদের অনেককেই বিসর্জন দিতে হয় (অন্যদের দূরে সরিয়ে দিয়ে)।
মাত্র দু’টো দায়িত্বে থাকা সুপার হিরোদের যদি এতটা সমস্যা হয়, তাহলে রক্ত-মাংসের মানুষের জন্য সেটা কতটা কঠিন কাজ? তাও যদি হয় দুই এর অনেক বেশি দায়িত্বে থাকা কেউ?
খ। গত ১২ জুন আবাহনী-প্রাইম দোলেশ্বর ম্যাচ ‘পণ্ড’ হবার পর আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছেন, “হঠাৎ করে আম্পায়াররা মাঠ ছেড়ে চলে যাবে…দুইটা টিমই খেলতে চাচ্ছে কিন্তু আম্পায়াররা খেলা চালাবে না, এটা ফার্স্ট আমি দেখলাম আর কি…আহহহ…বাংলাদেশে এরকম হইল একটি ঘটনা!”
তাঁর কথা শুনে অনেকেই অনেক শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন, আমি নিজেও তাদের মধ্যে ছিলাম। ‘আম্পায়ারের দোষ দিস, তুই নিজেও তো ব্যাটা বিসিবি’র লোক! দোষ তো তোর ঘাড়েও যায়!’ কিংবা ‘লিগে আবাহনী এত অনিয়ম করছে তা দেখস না, আর আম্পায়ার জানের ভয়ে খেলা বন্ধ করলে তোর চুলকানি লাগে?’ ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু একটু ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করার পর বুঝতে পারলাম- বেচারা কী ঝামেলার মধ্যেই না আছে! না পারছে ব্রুস ওয়েইন হয়ে কাউকে বোঝাতে, না পারছে ব্যাটম্যান হয়ে কাউকে ঝাড়ি মারতে। না পারছে ক্লার্ক হয়ে কাউকে সান্ত্বনা দিতে, না পারছে সুপারম্যান হয়ে কাউকে আছাড় মারতে! বেচারা!! সবচেয়ে বড় কথা, কখন কোন দায়িত্বে আছে- সেটা নিজেও হয়ত মনে রাখতে পারছেন না।
গ। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা প্রথমেই প্রক্ষালন সেরে নিই। আমার ধারণা খালেদ মাহমুদ প্রথমেই চিন্তা করেন, ‘আমি কে? আমি কোথায়?’ অর্থাৎ কোন দায়িত্ব নিয়ে তিনি কোথায় আছেন, তা মনে করার চেষ্টা করেন। তাছাড়া আজকের দিনে কোন দায়িত্বে দায়িত্ব-রত অবস্থায় তিনি সকালের প্রক্ষালন করবেন- সেটাও তো ভেবে নিতে হবে, তাই না?
যেসব নিন্দুকেরা জানেন না, তিনি কী কী দায়িত্বে আছেন তাদের উদ্দেশ্যে খালেদ মাহমুদ বর্তমানের সকল পদের লিস্ট দিচ্ছি-
১। বিসিবি পরিচালক
২। গেম ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান
৩। ডিপিএল দলের কোচ
৪। বিপিএল দলের কোচ
৫। একটি ক্রিকেট একাডেমির কোচ (সম্ভবত বাংলা ট্র্যাক নাম)
৬। জাতীয় দলের ম্যানেজার
৭। ক্রিকেট অপারেশনস এর ভাইস চেয়ারম্যান
৮। ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট
৯। কমপক্ষে ২-৩ টি স্ট্যান্ডিং কমিটিতেও আছেন।
(তথ্যসূত্রঃ জনৈক ক্রিড়া সাংবাদিক)
যার যার বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনি হলে এত সব একা ম্যানেজ করতে পারতেন?
ঘ। আমি সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার সোবার্সের খেলা দেখি নি, কিন্তু গল্প শুনেই তাঁরে আমি অল্প অল্প ভালবেসেছি। আমি জ্যাক ক্যালিসের মতন সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের খেলা নিজের চোখে দেখেছি। আমি সাকিবের মতন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের খেলা এখনো দেখে চলেছি। কিন্তু, বাস্তব জীবনে খালেদ মাহমুদ সুজনের মতন অল রাউন্ড মানুষ দেখি নি! আক্ষরিক এবং বৃহৎ অর্থে…
বিসিবি এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের আরও যত পদ আছে সবখানেই তাঁর ছোট ছোট পায়ের পদধূলি পড়ুক, বাংলাদেশ ক্রিকেট হাঁটি-হাঁটি পা করে আরও কোন এক দিকে এগিয়ে যাক-এই দোয়াই করি।
এক কথায় প্রকাশ কর -
যিনি একগাদা পদ হাতিয়ে নিয়ে সর্বত্র আপদ সৃষ্টিতে লিপ্ত
- পদ-হাতিক-আপদ
--> পদাতিক-আপদ
😛
গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।
গতিদানবকে দেখতে পারতাম না ওর খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই, তখন হয়ত এর পিছনে তেমন কোন যুক্তি ছিল না। কিন্তু পরবর্তী কোচ/ম্যানেজার/কর্মকর্তা হয়ে একের পর এক যা করে যাচ্ছে তাতে মাঝে মাঝে মনে হয় ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় নষ্টের গোড়া। ওর হাত থেকে কবে যে মুক্তি পাব কে জানে!
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ, এ রকমের একটা নীরেট অপদার্থের কথা জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য।