মুস্তাফিজ,
তুমি আজ যে কীর্তি করে দেখালে তা একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে আর কেউ করে দেখায় নি! অভিষিক্ত হবার ম্যাচসহ পরপর দুই ম্যাচে সর্বমোট ১১ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের ব্রায়ান ভেটোরির রেকর্ড তুমি ভেঙ্গে দিয়েছ! তারচেয়েও বড় কথা তুমি ভেঙ্গেছ টিম ইন্ডিয়ার মেকি আভিজাত্য এবং দাম্ভিকতার দেয়াল! আজ থেকে ভারতের প্রতিটি ব্যাটসম্যান (এবং অন্যান্যরা) বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কথা বলার আগে সসম্মানে কথা না বলুক, অন্ততঃ অবজ্ঞা করার সাহস পাবে না!
তবে, তোমার কাজ কিন্তু শেষ হয়ে গেল না, উলটো শুরু হলে! এখন দ্রুত তুমি পরিচিতি পাবে, নাম হবে, যশ হবে, খ্যাতি হবে। তোমাকে কিন্তু পা মাটিতে রাখতে হবে, কেননা এখনো তোমার অনেক পথ চলা বাকি। এখনো অনেক কিছু শেখার আছে, জানার আছে, বোঝার আছে! আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গণ বড্ড কঠিন জায়গা! তোমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে আরও অনেক শক্ত হতে হবে! তবে, তোমার মধ্যে যে সারল্য রয়েছে সেটা আজীবন ধরে রেখ! এই সারল্য তোমাকে সারাজীবন বিনয়ী হয়ে থাকতে সাহায্য করবে!
এখন তোমার জন্য পরামর্শ রইল-
১। ইনসুইং (ডানহাতি ব্যাটসম্যানের জন্য) নিয়ে আরও কাজ করতে হবে! তোমার কাটার এর কোন জবাব নেই! নিয়ন্ত্রণও চমৎকার! সেই সাথে ন্যাচারাল আউটসুইং তো আছেই! কিন্তু ইন সুইং এখনো অতটা কার্যকরী মনে হয় নি। এটার জন্য আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে!
২। তোমার গতি বাড়াতে হবে! তোমার বয়স মাত্র ১৯ বছর। সুতরাং, এখনো তোমার পরিপূর্ণ শারীরিক পরিপক্কতা আসে নি। আশা করা যায়, ২-৩ বছরের মধ্যে তুমি তোমার সেরা শারীরিক অবস্থানে যেতে পারবে! সেক্ষেত্রে মাঝের ক’টি বছরে প্রচুর খাও্য়া-দাওয়া এবং পরিশ্রম করতে হবে! গতি পেস বোলিং এ একটি বড় ফ্যাক্টর!
৩। তোমাকে ইয়র্কার দেয়াটা আরও ভাল করে রপ্ত করতে হবে! হ্যাঁ, তুমি মাঝে মাঝে চেষ্টা করেছ বটে! তবে, এটাকে আরও শাণিয়ে তুলতে হবে! কেননা, মরা পিচে বা ডেথ ওভারে বল করতে গেলে ইয়র্কারের উপর কিছু নেই!
৪। তোমাকে অনেক ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলতে হবে! আসলে, বেশি বেশি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলেই একজন ক্রিকেটার পরিপক্ক হয় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে! তবে, খেয়াল রাখতে হবে তোমার শরীরের উপর যেন বাড়তি চাপ না ফেলে! সবচেয়ে ভাল হয়- যদি তুমি কয়েক মৌসুম কাউন্টিতে খেলতে পার! সত্যি কথা বলতে কি- কাউন্টি খেলে যে কোন খেলোয়াড় সবচেয়ে বেশি শিখতে পারে। কেননা, ওদের উইকেট খুবই স্পোর্টিং এবং ওদের প্রতিটি খেলাই দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়!
৫। তোমাকে ম্যাচের আইন-কানুন সম্পর্কে আরও বেশি বেশি জানতে হবে। তুমি এসেছ- সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত একটি অঞ্চল থেকে (নাহ এতে লজ্জার কিছু নেই- বরং এটা তোমার জন্য অনেক গর্বের!) সম্ভবত ক্রিকেট সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন-কানুন সম্পর্কে তোমার পরিষ্কার ধারনা নেই! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে হলে ক্রিকেটের আইন জানা খুবই জরুরী! আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন!
৬। তোমার জীবনে ভাল সময় যেমন চলছে, তেমনি কখনো খারাপ সময়ও আসতে পারে। তখন কোনভাবেই হাল ছাড়বে না। তুমি অনেক সৌভাগ্যবান যে তোমাকে গাইড করার জন্য বেশ কিছু গ্রেট ক্রিকেটার সব সময় আশে-পাশেই পাবে! বিশেষ করে মাশরাফি! বিপদে-আপদে, প্রয়োজনে- অপ্রয়োজনে এই লোকটার কাছে ছুটে যাবে! বিশ্বাস কর- ও তোমাকে কোন না কোন ভাবে সাহায্য করবেই! এছাড়া সাকিব, মুশফিক, তামিম…এরা তো আছেই!
৭। যে কোন অসৎ বা ধান্ধাবাজ লোকদের থেকে দূরে থাকবে। জুয়ারীদের খপ্পড়ে পড়ে কত খেলোয়াড়ে ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়েছে- তার কিছুটা নিশ্চয়ই জান! নিজের ভাল নিজেকেই বুঝতে হবে!। মনে রাখবে, সবার আগে দেশ! দেশের স্বার্থ সবার আগে দেখবে, নিজের ভাল এমনিতেই হয়ে যাবে!
সবচেয়ে বড় কথা, খেলাটাকে সব সময়ে উপভোগ করবে। সবসময় হাসি-খুশি থাকবে! উপভোগ করে খেললে তোমার পারফরমেন্স আপনাআপনিই ভাল হবে।
তুমি বাংলাদেশের ক্রিকেটে ধুমকেতুর মত উঠে এসেছ! আমরা চাই আগামী বহু বছর তুমি আমাদেরকে তোমার জাদুকরী নৈপূণ্য দিয়ে মুগ্ধ করে রাখবে! দেশের নাম উজ্জ্বল করবে!
বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের দোয়া তোমার সাথে আছে!
প্রথম 😀
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
সত্যিই খুব ভালো সাজেশন।এগুলি মুস্তাফিজের কাছে পোছানোর কোন উপায় আছে কী?
সবচেয়ে ভাল হয়- যদি তুমি কয়েক মৌসুম কাউন্টিতে খেলতে পার! সত্যি কথা বলতে কি- কাউন্টি খেলে যে কোন খেলোয়াড় সবচেয়ে বেশি শিখতে পারে
বাঙালিদের কাউন্টি দলে ঢোকা সহজ কথা নয়। মুস্তাফিজ ইচ্ছে করলেই খেলতে পারবেনা। এব্যাপারেও তাকে রাস্তা বাতলে দিতে হবে
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
সাইদুল ভাই,
কাউন্টিতে খেলার জন্য বিসিবি যদি একটু চেষ্টা করে কঠিন হবার কথা না। তাছাড়া আমাদের সাকিব-তামিমও তো খেলেছে! ফলে, ওরাও সাহায্য করতে পারবে। আই পি এল পেছনে লাগার আগেই যদি কাউন্টিতে যেতে পারে, মুস্তাফিজের অনেক উপকার হবে।
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, ভাই!
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ভাল লেখছিস জুনা :gulli2: :gulli2: :gulli2: :gulli2: :gulli2:
:duel: :duel: :duel: :duel: :duel: :duel:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
অনেক ধন্যবাদ মোস্তাফিজ ভাই! :hatsoff:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আশা করি আমাদের কাবিল বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকের মাথায় এই সবগুলো চিন্তাই আছে। একটা সময় হাতুড়ি নিয়ে অনেক আজেবাজে কথা বলেছি। এখন খুব অনুতপ্ত! লোকটাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। আমি শুধু চাই চুক্তি শেষে বিরক্ত হয়ে যাতে চলে না যায়! 🙁
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
হিথ স্ট্রিকের ব্যাপারে কোন কথা নেই- চোখ বন্ধ করে সশস্ত্র সালাম! কিন্তু হাতুরেরে নিয়ে আমি এখনও নিঃসন্দেহ নই, এই লোক হুদাই সাকিবের পেছন লাগতে গেছিল! কোচ যদি কার সাথে কেমন ব্যবহার করতে হবে না বোঝে, তাহলে তো মুশকিল! তবে হ্যাঁ, সে বর্তমানে দারুণ কাজ করছে বলেই আমার ধারনা!
বাংলাদেশে এতে অবাক হবার কিছু নেই! 🙁
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
বর্তমানে কোচের কম্বিনেশানটা সুন্দর। তবে ফিল্ডিং-এ দুর্বলতা চোখে পড়ছে। দুইটা ম্যাচেই মিস ফিল্ডিং এবং ওভার থ্রো ছিল মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকার মত হতাশাজনক!
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ফিল্ডিং এর সমস্যা মনে হয়েছে অন্য কারণে। আমার ধারণা আমাদের প্রতিটি খেলোয়াড় এতটাই পাম্পড আপ হয়ে ছিল যে বেশি বেশি করে ফেলছিল! এজন্যই বেশ কয়েকবার ওভার থ্রো হয়েছে! ক্যাচিং কিন্তু মোটামুটি ভালই ছিল!
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ক্যাচ ঠিক ছিল। এমনকি মুশফিকের ঐ দুইটা ক্যাচও আমি তেমন ভাবে দেখছি না কারণ সে কাভার করে ফেলেছে। শেষ ভাল যার সব ভাল তার। পরের দিনের লিটন দাসের ধোনির ড্রপ ক্যাচ নিয়ে অনেকেই হা-পিত্যেশ করতে দেখলেও ইংরেজ ধারাভাষ্যকার বললেন, "it will be harsh to call it a drop catch" অর্থাৎ ফিল্ডিং বড় দাগে অবশ্যই ভাল ছিল কিন্তু ওভারথ্রোতে ৯ রান দিয়ে ফেললে একটু ভয় ঢুকে যায়। কারণ ফলাফল নির্ধারণে এই ৯ রানই অনেক সময় যথেষ্ট।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ভাল লিখেছো।
দেখে খুব ভাল লাগলো............
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ধন্যবাদ ভাই! 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
বাবা আমাকে এমন করেই লিখতেন!
দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ
বিশাল কমপ্লিমেন্ট দিলেন, ভাই! :hatsoff:
অনেক ধন্যবাদ! 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
একেবারে আসল কথাগুলো তুলে এনেছেন জুনাদা।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেট আপ নিয়ে আমার শুধু একটাই আফসোস, গতিদানব সুজনের টিম ম্যানেজার হিসেবে থাকা। একজন ভাল টিম ম্যানেজারের এইসব নতুন/তরুন খেলোয়ারদেরকে গড়ে তলার পিছনে ভূমিকা অনেক।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
গতিদানব সুজন, ডন ফারুক এবং জ্যুস খাওয়া দুর্জয়- প্রত্যেককে ঝাঁটা মেরে সরিয়ে দেয়া দরকার! x-(
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
সুন্দর এবং সব আংগিক ছুঁয়ে যাওয়া লেখা।
কোনো পাকচক্রে যেনো এই সম্পদ যেনো হারিয়ে না যায় আমাদের। ওটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ধন্যবাদ, ভাই!
হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন- এই প্রতিভাগুলোকে সযত্নে রাখতে হবে! হারিয়ে যেতে দেয়া যাবে না!
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
বাহ!
দুর্দান্ত।
:hatsoff: :hatsoff:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
জুনা,
দারুন সব উপদেশ দিয়েছো।
আমি মুস্তাফিজের বড় ভাইয়ের কাছে এই ব্ল ফরোয়ার্ড করে দিব, সে আমার ঢাবি'র ক্লাসমেট।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই,
এই আশাতেই আসলে ব্লগে দিয়েছিলাম! কেউ যদি ওর পর্যন্ত লেখাটা পৌঁছতে পারে!
সত্যি হলে দারুণ খুশি হব! 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
অসম্ভব সুন্দর করে বেশ গুছিয়ে আমাদের সবার মনের কথাগুলোই যেন তুমি লিখে দিলে!
খোলা চিঠিটা প্রাপকের কাছে পৌঁছার সম্ভাবনাটুকুর কথা জানতে পেরেও বেশ আশ্বস্ত বোধ করছি।