“বাবা কতদিন…কতদিন দেখিনা তোমায়…
কেউ বলেনা তোমার মত কোথায় খোকা ওরে বুকে আয়।
বাবা কতরাত…কতরাত দেখিনা তোমায়…
কেউ বলেনা মানিক কোথায় আমার ওরে বুকে আয়……”
আজ ২১শে জুন ,যদি ভুল না করি আজ ‘বাবা দিবস’। বিদেশ বিভূঁইয়ে বসে আজকাল দেশের সব ‘বিশেষ দিবস’ এর হিসাব অতোটা রাখা হয়ে উঠেনা। মাঝে মাঝে পত্রিকার পাতায় দৃষ্টিগোচর হলে সেটা নিয়ে কম বেশি ভাবা হয়। আজও তার ব্যাতিক্রম হলনা। ডিনারের পর এসে প্রতিদিনের মত সিসিবি’র পাতা উল্টাতে গিয়ে ব্লগের মধ্যমণি ‘স্পেশাল চা’ পরিবেশনকারি ছোট্টবন্ধু রকিবের “একটা গোপন কথা ছিল বলবার” এর ওপর নজর পড়ল। ভেবেছিলাম কাল সকালে উঠে পিটিতে যেতে হবে বলে একটু আগেভাগেই ঘুমিয়ে পড়ব। কিন্তু ওর লেখা পড়ে কিছুটা আবেগপ্রবনণ হয়ে গেলাম। তাই ‘বাবা দিবসে’ আমার স্বর্গবাসী প্রিয় বাবাকে নিয়ে কিছু না লিখে পারছি না।
বাবাকে হারিয়েছি প্রায় ৫ বছর হল…তখন আমি বিএমএ’তে ২য় টার্ম শেষ করেছি মাত্র। তার কয়েক মাস আগেও মাকে নিয়ে বাবা বিএমএ’তে আমাকে দেখতে গিয়েছিলেন আমার ‘১ম গেস্ট ডে’ তে। কে জানত এটাই হবে বাবার শেষবারের মত আমাকে দেখতে বিএমএ যাওয়া…
স্মৃতির পাতা আর একটু পিছনের দিকে উল্টাই। ৩ জুলাই ১৯৯৭… জ়েসিসি’র আঙ্গিনায় আমার পদার্পণ বাবার হাত ধরেই। সেই থেকে শুরু…পরবর্তীতে কলেজ জীবনের সিংহভাগ ‘প্যারেন্টস ডে’ তেই বাবা ঠিক সময় মত গিয়ে হাজির হতেন…কোন প্রতিকূল আবহাওয়া বা বৈরি পরিবেশও বাবাকে নিরুৎসাহিত করতে পারেনি। এখানেই শেষ নয়,মা এর তৈরি করে দেওয়া হরেক রকম মুখরোচক খাবারের টিফিন ক্যারিয়ারটি বহন করতেও বাবাকে দেখেছি অক্লান্ত,সর্বদা পরিতৃপ্ত।
দীর্ঘ ছয় বছর ধরে ছুটি থেকে বাড়িতে ফেরার সময় বাস থেকে নামার পর বাবা নিজের কষ্ট হলেও আমার ভারি ব্যাগটিতে কখনও আমাকে হাত দিতে দেননি… । ছুটিতে গেলে আমার প্রিয় সব খাবারের আয়োজনে মাকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া… আদরে আলগে রেখেছেন সবসময়…সেই বৃত্তান্ত লিখে শেষ করার নয়।
রকিবের কথা মত এই দিনে হয়ত বাবাকে এসএমএস দিয়ে ভালবাসার গল্পটুকু জানাতে পারবনা…শুধু মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি “হে আল্লাহ!আমার বাবাকে তুমি জান্নাতবাসী কর…”। আজ এই দিনে আমার মত যারা বাবাকে হারিয়েছেন তাদের সকলের বাবার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।সেই সাথে সকল বাবাকে জানাই ‘বাবা দিবস’ এর শুভেছা…।
দোয়া করি সকলের জন্য ভাইয়া। 🙁
🙁
🙁
লিখার মত ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। উনার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
অসংখ্য ধন্যবাদ,ভাবি... 😀
ওয়েলকামু ভাইয়া 🙂
:salute:
আল্লাহ নিশ্চই সকল বাবাদের বিদেহী আত্মাকে জান্নাতবাসী করবেন।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
জাহিদ,এমন শোকাবহ একটা ঘটনার পরেও বিএমএর কঠোর প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে তোর আজ যে অবস্থান-আমি নিশ্চিত যে আঙ্কেল তোকে নিয়ে খুব গর্বিত-ই হতেন।তোর বন্ধু হিসেবে আমি গর্বিত।আঙ্কেলের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
দোস্ত...ধন্যবাদ 😀
সব বাবাগুলাই অনেক বস, কিন্তু কখনো মুখ ফুটে বলা হয়না ।
ঐ... :salute:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আপনার বাবার জন্য দোয়া, সকল বাবার জন্য শ্রদ্ধা, আর আমার আব্বুর জন্য ভালবাসা।
জাহিদ তোর লেখা পড়ে তো মন খারাপ হয়ে গেল।
আমার বাপটাও অনেক বস! :salute: :salute:
আসলেই...আমরা না হারা্নো পর্যন্ত সেটা অনুভব করিনা
🙁
জাহিদ,
প্রথমে বুঝিনি এইটা তোর লেখা... এই কারনেই তোকে একটা ই-মেইল করেছি নিশ্চিত হওয়ার জন্য। কারন আমি জানতাম আমার মতো তুইও সিসিবির নীরব পাঠক।
শ্রদ্ধয় বড় চাচাকে নিয়ে তোর এই মর্মস্পর্শী লেখা পড়ে চোখের জল ধরে রাখাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে রে। দেশে যেয়ে দেখলাম আব্বুও অনেক ভেঙ্গে পড়েছেন বড় চাচার ইন্তেকালের পর। চাচার মৃত্যুর সময় তোর মত আমারো থাকা হয়নি দেশে, নিষ্ঠুর প্রবাস এভাবেই বুঝি দূরে সরিয়ে রাখে আমাদেরকে প্রিয়জনদের কাছ থেকে, তাইতো শেষ দেখাটাও দেখা হয় না আর। বড় চাচার কবর জিয়ারতের সময় বার বার এই কথা গুলোই মনে হচ্ছিলো। মন খারাপ করিস না রে ভাই, আল্লাহ পাকের কাছে প্রতিনিয়ত দোয়া করি আল্লাহ বড় চাচাকে বেহেশত নসীব করুন।
ভাইয়া...এইটা ছাড়া আমাদের আর কি ইবা করার আছে?
ভাইয়া,আমিও নীরব পাঠক...মাঝে মাঝে টুকিটাকি লিখার চেষ্টা করি আর কি