প্রথম পর্ব
দুই.
বাবার একটা পদোন্নতি হলো। মুক্তিযুদ্ধের আগেই আমরা বাসা বদল করে কলোনীর আইডিয়াল স্কুল অঞ্চলে চলে গেলাম। এফ-৪৯ নম্বর ভবনে। এই বাসাটা কমলাপুর রেল স্টেশনের কাছে। ‘৭০-৭১ সালে কলোনীর ভেতরে প্রায় প্রতিদিনই মিছিল-সভা হতো। সন্ধ্যায়-রাতে নিয়মিত ছিল মশাল মিছিল।
‘৭১-এর ২৫ মার্চ সন্ধ্যা থেকেই বাইরে রাস্তায় প্রবল উত্তেজনা দেখছি। তরুণ-যুবক বয়সীরা কেউ বাসায় নেই। সবাই রাজপথে নেমে গেছে। এই বাসাটা থেকে সরাসরি রাজপথ দেখা যায় না। তবে উত্তাপটা ভালোই বোঝা যায়। রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হচ্ছে। কাঠের গুড়ি, ইট-পাথর, ঠেলাগাড়ি যা পাচ্ছে ছেলেপিলেরা সব ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে রাস্তায়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে ঠেকাতে হবে যে। রাস্তার উত্তেজনা বাসাতেও লাগে। প্রতিবেশীরা সুযোগ পেলেই জড়ো হয়ে কথাবার্তা বলেন। একটা পরিবর্তনের জন্য টগবগ করে ফুটছে যেন গোটা বাংলাদেশ।
কখন ঘুমিয়ে পড়েছি মনে নেই। একসময় টের পেলাম, বাবার আমাকে বিছানা থেকে কোলে তুলে নিচ্ছেন। ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। আমাকে খাটের নিচে নিয়ে শোয়ালেন তিনি। দেখি মা, ছোট ভাই-বোনরা সবাই একে একে খাটের নিচে জায়গা করে নিচ্ছি। বাসার সব আলো নেভানো। বাইরে তখন তুমুল গুলির শব্দ। কোনটা রাইফেলের, কোনটা মর্টার বা ট্যাংকের গোলা তখনো বুঝিনি। কিন্তু কানে এখনো সেই ভয়ংকর শব্দ বাজে। টানা টা..টা..টা..। কখনো গুড়ুম। বাবা ফিসফিস করে জানালেন, পাকিস্তানি সেনারা নেমে পড়েছে। কালোরাত। কখনো ঘুমিয়ে, কখনো জেগে সারারাত কাটিয়েছিলাম। আতংক ঘিরে ছিল আমাদের। কি নৃশংস সেই রাত! অসহায়, নিরস্ত্র বাঙালিদের মেরেছিল পাকিস্তানি সেনারা শিকারের মতো, জান্তব উল্লাসে।
২৭ মার্চ কার্ফ্যু তোলা হলো। প্রয়োজনীয় সব জিনিষপত্র নিয়ে বাসায় তালা মেরে আমাদের নিয়ে বেরিয়ে পরলেন বাবা। কখনো রিকশায়, কখনো হেটে, কখনো নৌকায় করে ঢাকার পূর্ব দিক দিয়ে ত্রিমোহনী হয়ে আমরা প্রথম যাচ্ছি নরসিংদী। রাস্তায় মানুষের ঢল। পুরো ঢাকাটা যেন ভেঙ্গে পড়েছে। রিকশায়, হাটাপথে শুধু মানুষ আর মানুষ। নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সবাই আমরা পাকিস্তানিদের তৈরি করা নরক ছেড়ে পালাচ্ছি। আর স্থানীয় লোকজন গ্লাস-জগ ভর্তি পানি নিয়ে, মুড়ি নিয়ে পথে পথে দাঁড়িয়ে উদ্বাস্তুদের সেবা করছেন।
নরসিংদী ওখানে আমার এক ফুপুর শ্বশুরবাড়ি। বাবার চাচাতো বোন। এই ফুপু বিয়ের আগে আমাদের বাসায় ছিলেন বহুদিন। ওই সময় সেখানে অনেকগুলো পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। নরসিংদীতে দুই বা তিনদিন থেকে আমরা লঞ্চে করে গ্রামের বাড়ির দিকে ছুটলাম। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া তখন মহকুমা, নবীনগর থানা। মানিকনগর লঞ্চঘাটে নেমে হাটা পথে ৭ মাইল, তারপর আমাদের গ্রাম শাহপুর। গ্রামটা নবীনগর থানায় হলেও মুরাদনগর থানার সীমান্তে। মুক্তিযুদ্ধের নয়মাস ওটাই ছিল আমাদের স্থায়ী ঠিকানা।
নয়মাসে মাঝে-মধ্যে পাকি সেনারা আসছে আওয়াজ উঠলে আমরা বাড়ি ছেলে পালাতাম। বর্ষায় নৌকা নিয়ে চলে যেতাম দূরে কোনো আত্মীয়ের বাড়ি বা বিলের মাঝখানে আশ্রয়। আবার সব ঠান্ডা হয়ে এলে বাড়ি ফিরতাম। আমার দাদা ছিলেন আবার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এবং ইউপি মেম্বার। ছোট চাচা মুক্তিযুদ্ধে চলে গেলেন। সেনা কর্মকর্তা মামা পরিবারসহ আটকে পরলেন পাকিস্তানে। গ্রামের যুবক বয়সীরা সব মুক্তিযুদ্ধে গেছে। শাহপুর গ্রাম থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা ঢিল মারা দূরত্বে। ১২-১৪ মাইল। বাবা মাঝে-মধ্যে ঢাকায় এসে অফিসে হাজিরা দিয়ে আবার বাড়ি ফিরে আসতেন। বসে বসে তো খাওয়া যাবে না। আব্বা প্রতিবেশি মাঞ্জু চাচাকে নিয়ে শুরু করলেন চালের ব্যবসা।
নয়মাসের পুরোটা সময় আমাদের গ্রামের বাড়িটা মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রানজিট ক্যাম্প হয়ে ওঠে। আগরতলা যাওয়ার দলগুলো যেমন এখানে আশ্রয় নিতো, তেমনি অপারেশনে যাওয়া বা ফেরার পথে মুক্তিযোদ্ধারা আসতো। ওরা এলেই দাদি-মা-চাচী আর পাড়ার নারীরা রান্নাবান্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। হারিকেন বা কুপির আলোয় আমরা ছোটরা ভিড় করে বীরদের দেখতাম। আমার আরেক মামা (মায়ের চাচাতো ভাই) বাহার ছিলেন আমাদের অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার। উনি এখন কুমিল্লা সদরের সাংসদ।
বর্ষায় মুক্তিযোদ্ধারা আসতেন “সরঙ্গা” নৌকায় করে। ওই নৌকাটি আমাদের অঞ্চলে দ্রুতগতির বাহন হিসাবে পরিচিত। পাতলা, ছিপছিপে, লম্বা এই নৌকাগুলো বাইচের জন্য আদর্শ ছিল। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের দেখতাম, তাদের অস্ত্রগুলো হাতিয়ে দেখতাম। রাইফেল, স্টেনগান থাকতো মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে কাঁধে। ইস্পাতের ঠান্ডা নলের স্পর্শ আমার গায়ের প্রতিটি লোমকূপে উত্তেজনা ছড়াতো।
অফুরান আনন্দের দিন ছিল ওই সময়টা। বয়স তখন ১০-এর মতো। আমরা ছোটরা মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযুদ্ধ খেলতাম। ভাবতাম আমাদের বয়সী পাকিস্তানি সেনা নেই কেন? তাহলে তো আমরাও মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারতাম!
পুরো গ্রাম চষে বেড়াতাম আমরা। বড়দের শাসন-টাসন তেমন ছিল না। গাছে উঠে পেয়ারা-আম-জাম পেড়ে খেতাম। বাবার কিছুটা দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে আবুল ছিল আমার ঘণিষ্ট বন্ধু। সব বাদরামির সঙ্গি ছিল ও। পাখির বাসায় হানা দেয়া, মাছ ধরা, নৌকা চালানো, ক্ষেতে মটরসুটি পুড়িয়ে খাওয়া- আহ্ কি সব অসাধারণ স্মৃতি! গ্রামে আমাদের জমিগুলোও চিনেছিলাম ওই সময়। কোনটায় পাট, কোনটায় সরষে, কোনটায় ধান হতো সব এখনো মুখস্ত বলতে পারবো। আবুলই সব চিনিয়েছিল আমাকে। মুক্তিযুদ্ধের পরও বছরে এক-দুবার গ্রামে যেতাম। বাড়ি পৌঁছেই আবুলকে সঙ্গে নিয়ে চলতো পুরো গ্রাম চষা। আলগা বাড়ি, পূব পাড়া, পশ্চিম পাড়া, বাজার, নাগারচি পাড়া, আলাদা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল, ফুটবল মাঠ, শশ্মান ঘাট, মসজিদ, ঈদগা- সব মিলিয়ে বিশাল গ্রাম।
নাগারচিরা পেশায় ছিল মুচি, পাশাপাশি ওরা ঢোল বানানো ও বাজাতো। পরে লোক গবেষক শ্রদ্ধেয় যতীন সরকারের কাছে শুনেছি, নাগারচি সম্প্রদায় ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য। ওরা না মুসলমান, না হিন্দু। দুই ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা পালন করে। কি অসাধারণ জীবন দর্শন ওদের!
একবার ক্যাডেট কলেজ থেকে ছুটিতে এসে শুনি আবুল ঢাকা মেডিকেলে। দেখতে গেলাম। কেমন মুটিয়ে গেছে ও। শুনলাম ক্যান্সার, ব্লাড ক্যান্সার! আবুলকে আর পাবো না, ও হারিয়ে যাবে- এমন একটা কষ্ট নিয়ে কলেজে ফিরে গেলাম। সে সময় এর চিকিৎসা ওর দরিদ্র বাবার পক্ষেও চালানো কি কষ্টকর তা আজ বুঝি। কলেজে বসেই আবুলের মৃত্যুর খবর পেলাম।
ওর মৃত্যুটা আমার কিশোর মনে ভীষণ আঁচড় কেটেছিল। কলেজের স্যুভেনিরে আবুলকে নিয়ে আমার একটা লেখাও সে সময় ছাপা হয়েছিল। ওই স্যুভেনিরটা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে লেখাটাও। কিন্তু আবুল আজো হারায়নি আমার মন থেকে। আমার শৈশবের বন্ধু আবুল।
😀
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
😀 😀
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
বসের পোস্টে ১ম :awesome:
অসাধারন লাগল সানা ভাই :hatsoff: :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:-B :-B :-B
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
অসাধারণ লাবলু ভাই, অসাধারণ :hatsoff: :hatsoff:
এই প্রথম কোন কিশোরের চোখে মুক্তিযুদ্ধকালীন অবস্থার প্রত্যক্ষ প্রামাণ্য উপাখ্যান পড়ছি। এর আগে যেখানে যা পড়েছি তার সবই হয় গল্প কিংবা পরিণত বয়সীদের স্মৃতিরোমন্থন। কিন্তু এটি একদম টাটকা :thumbup: :thumbup:
চমৎকার একটি স্মৃতির ঝাঁপির সিরিজ পেতে চলেছি আমরা। লাবলু ভাইকে এর জন্য :salute: :salute:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কাইয়ুম : নিজে তো লেখ না! ফৌজদারহাট অর্ধেকটা তো আমি টাইন্যা গেলাম। পাঙ্গা খাইবা....... জলদি লেখা নামাও। :grr: :grr: :grr:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
:salute: :salute: 😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
সামান্য :salute: :salute:
আরও জানতে চাই
শুরু করে দিয়ে তো এখন বিপদে পরলাম!! কেমনে যে শেষ করমু............ 🙂 🙂 🙂
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
শেষ করা লাগবে না সানা ভাই ...... চলতেই থাকুক ...... :clap: :clap: :clap:
এইরকম করে স্মৃতিচারণ আগে কোনদিন পড়িনি,
মহান মুক্তিযুদ্ধের একটা ছবি মনের মধ্যে ভেসে উঠলো
:boss: :boss: :boss:
ফয়সাল : লজ্জায় ফেলে দিলে ভাই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কতো চমৎকার সব লেখা গল্প আর উপন্যাস আছে, আছে স্মৃতিচারণ। কখনো ভাবিনি এভাবে লিখবো। কিন্তু শুরু করে দিলাম। দেখা যাক।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ভালো লাগলো ভাইয়া,
আবার এমন কবে হবে, শেষ হবে অসমাপ্ত যুদ্ধ।
পরবর্তী যুদ্ধ হবে বিএনপি-আওয়ামী লীগে! খাওয়া-খাওয়ি নিয়া ওই যুদ্ধে যোগ দিবা কিনা ঠিক করো!! :-B :-B :-B
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
দুর্দান্ত হচ্ছে ভাইয়া। :salute: :salute:
কাইয়ুমের সাথে এক মত
ধন্যবাদ আপু। ভালো থেকো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
অনেকদিন ধরেই ভাইয়া আমি আপনাকে এবং আপনাদের সমসাময়িক যারা আছে সিসিবিতে ( আর কেউ তো নাই মনে হয় একটিভ ) তাদের বলব ভাবছিলাম যদি একটু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্মৃতিচারনলেখা দিতেন। আজ দেখলাম আপনি শুরু করেছেন খুব ভাল লাগল ভাইয়া। এখনো পড়িনি কারণ এসে এত লেখা দেখে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছি। ভাইয়া আপনার পিলিজ লাগে এইটা এত তাড়াতাড়ি শেষ কইরেন না । যা যা মনে আছে এক্কেবারে খুটিনাটি সব লেইখেন।
এই স্মৃতিচারণে ক্যাডেট কলেজ পর্ব তেমন থাকবে না। কারণ ওগুলো তো প্রায়ই লিখি। দেখি পরের পর্বে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী অবস্থা নিয়ে কি লিখি!
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
কি অদ্ভুত সুন্দর স্মৃতিচারণ....বস্ আপানাকে ১০০ :salute: :boss:
প্রিন্সিপালের কোনো বিষয়ে অ্যাডজুটেন্ট কি ভিন্নমত দেয়? তেলটা ভালো লাগলো ইউসুফ!! :shy:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
🙁 🙁 🙁
:))
:khekz:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ছোট ছোট ঘটনা, আসেপাশের মানুষদের কথা কিন্তু আমাদের না দেখা সময়ের এক দারুণ বর্ণনা :hatsoff:
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ধন্যবাদ রাশেদ। তুমি যে কষ্ট করে এক লাইন মন্তব্য লিখেছ, সে জন্য। :clap:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
😕
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ভাইয়া, অসাধারণ হচ্ছে। একটা অনুরোধ, সম্ভব হলে মুক্তিযুদ্ধ এবিং যুদ্ধ পরবর্তী পর্বগুলো খানিকটা বড় করলে ভালো হতো। ঐতিহাসিক কিংবা লেখকদের বর্ণ্নায় অনেকবার পড়া হয়েছে, কিন্তু আপনার লেখার ভঙ্গিতে বেশ সহজবোধ্যতা এবং সাবলীলতা আছে, সে জন্যই এই অনুরোধ।
নেন :teacup: ।
:salute: :salute:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
গরম গরম :teacup: ভালো লাগলো। ধন্যবাদ রকিব, চেষ্টা করে যাবো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আমার কেনো জানি ৭১'এর যে কোনো ঘটনা পড়লেই গায়ের লোম সব খাড়া হয়ে যায়।মনে হয়,ইশ,যদি তখন জন্মাইতাম।কি উত্তাল সময় ছিল তখন,ঠিক না ভাইয়া?
অসাধারণ লেখা ভাইয়া। :boss: :boss:
আমার দুঃখ হয়, কেন ওই সময় বয়সটা ১৮ বা ২০ ছিল না! তবে কষ্টটা অনেকটা ভুলিয়ে দিয়েছে আশির দশকের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন। একটা দারুণ সময় পেয়েছিলাম আমাদের প্রজন্ম। একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। বিজয় অর্জন করে রাজপথ থেকে উঠেছিলাম। তবে সেই অর্জন ধরে রাখতে পারলাম না!! ~x( ~x( ~x(
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
চমৎকার সাবলীল স্মৃতিচারন।
ধন্যবাদ সাল্লু।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
অসাধারন!!! :boss:
সানা ভাই, আপনার স্মৃতির ঝাঁপি উজার করে লিখতে থাকুন প্লিজ...যতটা সম্ভব ডিটেইল... 😀
আবুল ভাইকে স্বশ্রদ্ধ :salute:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
তোমাদের আবদারে তো ভাই বিপদে পরে গেছি। তবু চেষ্টা করে যাচ্ছি। যতোদূর স্মৃতি সাহায্য করে।
সমবয়সী ভাই-বন্ধু আবুলের জন্য এখনো মনটা হু-হু করে। বেঁচে থাকলে কি হতো? হয়তো একজন কৃষক। হয়তো ভূমিহীন। ওদের পরিবারের পরের ট্র্যাজেডি হলো, একরাতে কলেরায় চাচা-চাচী আরো ছোট দু' ভাইবোন মারা গেল। বেঁচে থাকা সবচেয়ে ছোট ভাইটা ইমরান এখন আমাদের নতুন বাড়ির কেয়ারটেকার!! সৌদি আরব গিয়েছিল, নিঃস্ব হয়ে ফিরেছে গতবছর।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
চমৎকার।
সারাদিন অফিসের ব্যস্ততার মধ্যেও স্মৃতির ঝাপি খুলে এতো সময় নিয়ে লিখছেন শুধু আমাদের জন্যে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে।
ক'দিন আগে আপনার বদনাম করছিলাম ফয়েজ ভাইয়ের কাছে যে, লাবলু ভাই আমাদের ঠকাচ্ছে। আগে যেসব দারুন স্মৃতিচারণ আর রাজনৈতিক কলাম লিখেছিলেন মাঝখানে সেগুলি বাদ দিয়ে আমার মতো ফাঁকিবাজি শুরু করেছিলেন। সেটা সুদে আসলে উসুল হচ্ছে এই সিরিজে। এই রকম লেখাই চাই আপনার কাছে।
বেশি কিছু বলবো না, শুধু একটা কথা, প্রকাশক হলে আমি এটা নিয়ে বই করার প্রস্তাব দিতাম আপনাকে।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ধুর মিয়া, তেল মারা ছাড়ো। চেষ্টা করছি লিখতে, নিজেকে ঠকাচ্ছি না। যতোটুকু দেখেছি, বুঝেছি ওই বয়সে, তাই লিখছি। অন্যের চোখ বা লেখার কোনো ছাপ এতোটুকু যেন না থাকে সে চেষ্টা করছি।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
বাসায় তেল নাই, সেই জন্যে গত দুইদিন ধইরা পরটার বদলে রুটি দিয়া নাস্তা করতেছি আর আপনি আমি বলেন তেল দেই! 😀
ঠিক আছে এর পরের পর্বে কঠোর সমালোচনা করুম। 😉
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
Muktijuddher shomoy ta jeno chokher shamne dekhte pelam vaiya. Ekta request: aro boro kore likhun plz. Onek kisu jante isse kore to...
Abul vai ke :salute:
Kamrul vai er shathe ekmot.
সুন্দর হাঁসের ছানা, এখন কেমন আছো? ব্যথা কি আছে এখনো?
ভাইরে, তখন আমার বয়স ১১/১২/১৩। যতোটুকু বুঝেছি, জেনেছি, তাই লিখছি। বড় করতে গেলে তো অন্যের কাছ থেকে ধার করতে হবে। সেটাতো চাইছি না।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
:salute:
ভাইয়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা এতদিন বইয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু আপনার লেখার মধ্যে ৭১' এত সাধারণ ও সুন্দর ভাবে তা উঠে এসেছে, খুব ভাল লাগছে। পড়তে সহজ মনে হচ্ছে।আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আমার মনের ভিতর যা এসেছে, আমি আপনাকে তাই বলছি।
আপনার সামর্থ্যের মধ্যেই আপনি লিখেন। আমরা পাবলিকরাতো চাইব, আমাদের চাওয়ার কোন শেষ নেই। আর বড় ভাইএর কাছে আবদার তো থাকবেই। 😛
অফটপিকঃ ভাইয়া, ভাবির মজার মজার রান্না বাদ দিয়ে খালি পেটে থাকতে পারবেন কি করে? 😮
দিহান : আমাদের বাসায় রান্নাটা এখনো মা করেন। আর মায়ের রান্না এখনো অসাধারণ। ভাবী সহজে ওই রাস্তায় যায় না। কোনোদিন রাধলে ছেলে বলে, মা তোমার রান্না মজা না। ছেলে আবার মাস্ফ্যুর মতো ভোজনরসিক হয়ে ওঠছে কিনা!! 😛 😛 😛
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাভলু ভাইয়া, ওরে বাবা মা'র রান্নার উপরতো কোন কথা চলেনা। :salute: আমিও খুব'ই ভোজনরসিক। 😀 দেশে এসে খালাম্মার হাতের মজার মজার রান্না খেতে এবং শিখতে হবে। 🙂
এইরে এখন মাস্ফু এসে " আমিও খাপো " বলে কান্না শুরু করে দিবে। ;;;
খালি দেশে এসে আওয়াজ দিও! গোপনে আমরা একটা তালিকা করে নেব!! :grr: :grr: :grr:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
হাত মেলাবার ইমো নাই। তাই :thumbup:
বস ৯৯৯ হয়ে গেছে... :awesome:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
দেখলাম, ৯৯ ব্যাচের। কামরুল আর রবিনের খবর আছে........... 😡 😡 😡
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আমিই তো জুনারে পাঠাইলাম আপনারে ঘুম থেইকা তুলতে 🙁
রবিনরে এখনো গার্ডে রাইখা আসছি। :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
সানা ভাই,কিছুক্ষনের জন্য একাত্তরে নিয়ে গেলেন...নিজেকে দুর্ভাগা মনে হচ্ছে ওই সময়টায় ছিলাম না বলে....একটা দেশের সব মানুষ যখন এক হয়ে যায়(কতিপয় বেজন্মা ছাড়া)...তখন ওই দেশকে কোনভাবেই ঠেকিয়ে রাখা যায়না...
আমরা কেন আবারও এক হতে পারছি না??আমরা কি আর এক হতে পারব না?
দূর্ভাগ্য হবে কেন? সবাই কি সব সময় পায়? আমি তো মুক্তিযুদ্ধের দর্শক ছিলাম মাত্র।
কেম্নে এক হইবা ভাই? আওয়ামী-জাতীয়তাবাদী আছে না! আমরা সহজে আর এক হচ্ছি না। খাওয়া-খাওয়ি জিন্দাবাদ.............
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আমি ঠিক করেছি লাবলু ভাইয়ের লেখার কোন প্রশংসা করব না। ভাই মনে করে তেল দিতেছি। এনারে নিয়া ভালো বিপদ। সুন্দর সুন্দর পোস্ট দেবে, আবার ভালো বলাও যাবে না। এখন কি যে করি?
লেখাটা শেষ করে এক ধরনের কষ্ট লাগা বুকের মধ্যে আছে। এই অনুভুতি আপনি দিতে পেরেছেন, একেই কি ভালো লেখা বলে কিনা আমি জানি না।
আপনাকে :salute: (তেল আম্রতেছি না, প্রিন্সিপাল দেখে দিলাম আর কি O:-) )
*আম্রতেছি= মারতেছি ~x( ~x( :bash: :bash:
শার্লী : কষ্ট আছে বলেই না আমরা সুখ চিনি! অনেকগুলো কষ্ট না মিললে পুরো মানুষ হওয়া যায় না।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
বলার কিছু খুজে পেলাম না। :hatsoff:
মরতুজা : বহু দিন পর। কেমন আছো? পার্বতী কেমন যত্ন নেয়?? 😀
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
অসাধারণ লাগল লাবলু ভাই।
একদম ভিন্ন দৃষ্টিতে লেখা মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা। :salute: :salute:
ধন্যবাদ তানভীর। ভিন্ন দৃষ্টির চেয়ে বলো বালকের চোখে দেখা মুক্তিযুদ্ধ।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
পড়ছি,
পুরোটা আসুক, এরপরে গুছানোর পালা
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ধন্যবাদ ফয়েজ। শেষ কইরা জানাইও।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
চমৎকার স্মৃতিচারন। দারুন লাগলো। পাঁচ তারা।
আমার আগেরটার চেয়ে এই পর্বটা বেশী ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ এহসান। দেশে আসছো কবে?
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
এখনো সঠিক জানি না ভাইয়া। আগস্টের শেষে আসার সম্ভাবনাই বেশী।
এই পর্বটা সব ছাড়িয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধকে একটা নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখাতে পেরেছেন। মুক্তিযুদ্ধ ১০ বছরের একটি ছেলের মনে যতটুকু আঁচড় কাটতে পারে ঠিক ততটুকুই প্রকাশ করেছেন।
মুহাম্মদ : আমি আসলে এইটাই চাইছি। আমার ওই বয়সটাকেই আমি সামনে রেখেছি। ওই চোখে যা দেখেছি........... তাই তুলে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ধন্যবাদ তোমাকে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
অনেক ধন্যবাদ লাবলু ভাই এমন চমতকার ভাবে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা আপনার চোখ দিয়ে আমাদের দেখানোর জন্য । আর সবার মত আমিও বলতে চেয়েছিলাম বড় করে লিখুন, কিন্তু আপনার যুক্তি দেখে অফ গেলাম । :salute:
ধন্যবাদ। তোমাদের প্রতিক্রিয়া আমার জন্য কাজটা আরো কঠিন করে দিচ্ছে। তবুও চেষ্টা করে যাবো।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানা ভাই এ সিরিজটা আমার খুবই পছন্দ হয়েছে । সামি ভাইয়ের মত আমিও ৭১' পরবর্তী ঘটনা জানার জন্য আপেক্ষা করে আছি । আরে কমেন্ট তো আসলেই ১০০ হয়নাই কেম্নে কি?
সানা ভাই, আমি বসে আছি কবে আপনি স্বাধীনতা পরবর্তী পর্বগুলো দিবেন। তখনকার সত্যিকার অবস্থাগুলো জানার খুব ইচ্ছা ছিল।
স্বাধীনতা পরবর্তী অর্থাৎ ৭২-৭৭ সময় টা
সানা ভাই, পরের পর্ব দিবেন না ???? 🙁 🙁
মন্তব্যে অহনো সেঞ্চুরি হইলো না!! কেম্নে কি?
সিরিয়াস মালের বেইল নাই (কপিরাইট : সিসিবি)
:no: :no: :no:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
নাহ! লাবলু ভাই, আপনি ফয়েজ ভাইয়ের মতো কমেন্টখোর লেখক হয়ে যাচ্ছেন। :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
উপায় নাই গোলাম হোসেন........... :grr: :grr:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাইয়া, আপনি চিন্তা করবেননা। আমরা আছি কি করতে? আপনে খালি একবার আওয়াজ দেন। তাহলে কমেন্ট করা সবাই বন্ধ করে আপনাকে সুযোগ করে দিব। 😛
আমি খালি কইতে চাইছিলাম, উপরেরটা ছাড়ছি শনিবার। মন্তব্য পড়ছে ৮০টা। আর নিচেরটা ছাড়ছি রোববার। মন্তব্য পড়ছে ১৬৮টা। কেম্নে কি?? ~x( ~x( ~x(
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
বিকজ দেয়ার ইজ নো রাইস অব সিরিয়াস রাইটিং এন্ড সিরিয়াস গুডস
(কপিরাইট লাবলু ভাই এন্ড জুনা)
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কাইয়ুম : তোমার প্যারেড গ্রাউন্ডে থাকার কথা!! x-( অ্যাডজুটেন্টও ফাঁকি মারা শুরু করছে?? :bash:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আপনার লাস্ট ৫টা পোস্টের ৪টাতে গড়ে সোয়া'শ কইরা কমেন্ট পড়ছে, আর কতো চান ? :grr: এরপরও যদি কমেন্ট খাইতে চান, আপনারে বুর্জোয়া বলা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না কিন্তু :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
আমারে পাতিবুর্জোয়া বলতে পারো। বুর্জোয়া তো দিহান!! যেমনে কমেন্ট খাইতাছে... :grr: !! কিন্তু আমার এইডা তো এখনো সেঞ্চুরি করলো না? দেখি আরো ১২/১৪ ঘণ্টা!! :dreamy: :dreamy: :dreamy:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
😕 🙁 🙁 🙁
ডরাইছি.......... দিহান :teacup: । ভাগি............ ~x( ~x( ~x( একটা চুলও আর বাকি নাই!!
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ঠিক আছে, আপনারা দুই বুর্জোয়া ভাই-বোন সিসিবির সব কমেন্ট নিয়া নেন, আমরা গরীব অভাগা, প্রলেতারিয়েত লেখক শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি। :bash:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
কেম ভাইয়া, হিংসা কইরোনা। তুমিতো দেখি হিংসিতো হতে হতে শেষ ... 😛
:boss: :boss:
আয় হায়... 🙁
এখনো সেঞ্চুরী হয় নাই... :bash:
আসলেই সিরিয়াস লেখার ভাত নাই...no rice for serious write... :no:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ভাত না থাকলে সমস্যা নাই... বিরানি আছে... ( সানা ভাইয়ের জন্য ডাইনোসরের বিরানি... 😀 )
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
এইডা আমার চেয়ে মাহমুদ, মুহাম্মদ ভালো জানে!! :bash: :bash: :bash:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
যুদ্ধটা খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল ভাইয়া। আমার খুব যুদ্ধের কাহিনি পরিচিত লোকের মুখে শোনার শখ একেবারে সামনে বসে। ওরকম কাউকে পাইনি কখনো।
ওই বয়সে একটা বালকের চোখে যা দেখেছি, তাই তুলে আনার চেষ্টা করেছি। ধন্যবাদ তপু, পড়া ও মন্তব্যের জন্য।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
Life is Mad.
বস দারুন লাগলো । :clap: :boss: :salute:
যদিও অনেক পরে মন্তব্য করছি তবু একটা কথা বলি আপনার এই লেখা :just: অসাধারণ । আপনার এই লেখার মধ্য দিয়ে আমি ৭১ কে দেখতে পাচ্ছিলাম ।
::salute:: :hatsoff: