(ইংরেজিতে একটা কথা আছে “worst nightmare”, ঠিক কিভাবে বাংলায় বললে এটার অর্থটা ঠিক থাকবে আমি জানিনা।সেরকমই একটা দুঃস্বপ্নের আশঙ্কা আজকাল প্রায়ই গ্রাস করছে।এখানে তারই লেখ্য রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি)
আজ কি জন্য লিখতে বসলাম এখনো ঠিক জানিনা।বুকের মধ্যে এই কষ্টটা গত দুমাস ধরেই।চাপা ব্যাথা চাপা বেশিদিন থাকেনা।তা ক্রোধে রুপ নেয় একদিন। আমার সাথেও মনে হয় তাই হয়েছে।এবার সময় এসেছে কিছু বলার।তাই কলম ধরা।
আমরা যারা এখানে লিখছি বা ফেসবুক,ব্লগে লিখছি;তারা অধিকাংশই মধ্যবিত্ত পরিবারের রুচি,বোধ ও শিক্ষা পেয়েছি আমাদের অভিভাবকের কাছ থেকে।তারা শিখিয়েছেন কিভাবে সবসময় খারাপ ও ভালোর মধ্য থেকে ভালোটা বেছে নিতে হবে। বন্ধু বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা।এমন লোক খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে যাকে তার মা (অধিকাংশ ক্ষেত্রে) বলেনি ক্লাসের সবচেয়ে ভালো ছেলে বা মেয়েটার সাথে মেলামেশা করতে।সেটা নিয়ে আমি কথা বলতে চাচ্ছিনা।ফিরে আসি রুচিতে।
আমাদের ছোটবেলায় আমাদের কাউকে গালি দেওয়া মানা ছিল। চতুর্থ শ্রেণীতে থাকতে একবার এক ছেলেকে না বুঝেই সে আমাকে যা বলেছিল তার ইকো করেছিলাম। বাসায় এসে মাকে জিজ্ঞেস ও করেছিলাম শব্দটার অর্থ।মা বলেছিল এটা শোভন শব্দ নয়।এখন বড় হয়েছি।তাই বলে কিন্তু শোভন, শালীনতা এই শব্দগুলো ভুলিনি।এগুলোতো চারের বা ছয়ের নামতার মতো কেবল ছোটবেলার জন্য শেখানো হয়নি!বাবা মা সন্তানের চারিত্রিক সৌন্দর্যের জন্য এই শিক্ষা দিয়েছেন। তবে কেন এই ভুলে যাওয়া!!! কেন যাচ্ছেতাই ভাবে সকলের কাছে খারাপটা তুলে ধরা!এটা কি বাবা মার ব্যর্থতা জাহির করা নয়?
আমরা বন্ধুদের সাথে কথা বলার সময় ভাষার কোন ঠিকঠিকানা থাকেনা।ইনসাইড জোক ও করি অনেক।তাতে শালীনতাও সবসময় থাকেনা। সে ভাষায় আমরা শিক্ষক বা গুরুজনদের সাথে কথা বলতে পারিনা।আজকাল দেখছি সেটাই সবাই লেখালেখির নামে নির্দ্বিধায় চালিয়ে দিচ্ছে সর্বত্র!বিদেশি সাহিত্যের স্বাধীনতার তুলনা আনতে পারেন সমালোচকেরা।তার আগে খেয়াল রাখতে হবে ওখানেও কিন্তু ঘুমের পোশাকে বাইরে যাওয়া অভদ্রতা!যখন দেখছি সর্বত্র লেখায়,গল্পে,প্রতিবাদে,সাহিত্যে(!) নগ্নতার জয়জয়কার তখন এক অজানা আশঙ্কা কাজ করে আমার মধ্যে।আমাদের অভিভাবকদের নাহয় ইন্টারনেটে বিচরন নেই; কিন্তু আমাদের তো আছে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যখন এই ভাষায় নিজের মনের ভাব সবার কাছে প্রকাশ করবে,তখন আমরা কি পারব সহ্য করতে? আর যদি পারি তবে বলতে হবে যে ভাষার বই,নাটক,উপন্যাস,কবিতা আমাদের মুগ্ধ করেছে এতদিন;সে ভাষার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করার সময় তখন ঘনিয়ে আসবে।
বিখ্যাত হওয়ার জন্য আজেবাজে কথা লিখে,বা কাউকে গালি দিয়ে ফেসবুকে লাইক বা সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর দরকার হয়না।প্রতিবাদের ভাষা যে রাগের ভাষাই হতে হবে এমন কোন কথা নেই। কলমের জোড় যার আছে সে তার সাধারন আঁচড়েই মনের ভাব প্রকাশ করে অন্যের মনে ঠাই করে নিতে পারবে; সেটা আকর্ষণীয় করার জন্য তাকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রঙ মেশাতে হবেনা।হুমায়ুন আহমেদ বা জাহানারা ইমাম প্রমুখ আমাদের সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন।তাহলে কেন কর্দমাক্ত পথে হাঁটা?এ নোংরা জুতা যে পরবর্তীতে নিজেদেরই ধুতে হবে!
অনেক সুন্দর লেখা।ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া 🙂 😀 আপ্লুত হয়ে গেলাম
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
কথা কম,লেখা বেশি :chup:
আপু আপ্নার কলম আসলেই শক্তিশালী ।
আমার কি বোর্ড 😀
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
তোমার লেখাটা চমৎকার, রুচিসর্বস্ব। তবে রুচিটা কি, এটা নিয়ে আজকাল আমার বড় বিভ্রম হয়। ঠিক কোন মাপকাঠিতে রুচিকে মাপা যায়? আমি আমার কাছের বন্ধুদের কুকুর বলে গালি দেই, এটা তো মহা মহা কুরুচিকর, তথাকথিত সামাজিক মতে। তবে এই 'কুকুর' কথাটার মধ্যে যে ভালবাসা আছে, তা 'ওগো শুনছ'-এর মধ্যে নেই, এটলিস্ট আমি পাই না। 😛 যা বলছি, তা লেখাতে আসতে সমস্যা কোথায়? ব্যাপারটা আমার কাছে কিছুটা হিপোক্রেসির মত লাগে। আসলে, যে কোমল ভাবে কথা বলে, সে কোমল ভাবে লেখেও। যে কঠিন ভাবে কথা বলে, তার লেখাও কঠিন।
কেন পারব না? অবশ্যই পারব। ভাষা পরিবর্তনশীল, অবশ্যই এর পরিবর্তন হবে। ঠিক যতটুকু পরিবর্তন হলে ভাষা হারিয়ে যায় না, ততটুকু পরিবর্তন মেনে নেয়ার ক্ষমতা থাকাটা বোধহয় খুব একটা খারাপ কিছু না। 🙂 নইলে, হুমায়ূন আহমেদকেও শরৎচন্দ্র আর রবীন্দ্রনাথের ভাষাতেই লিখতে হত।
আমি নিজে রুচি সম্বন্ধে কিছুটা দ্বিমত পোষণ করলেও, তোমার লেখাটা আমার মায়ের খুব পছন্দ হয়েছে। খুব খুব পছন্দ হয়েছে। সে আজকে অফিসের মাঝে ফোন করে আমাকে বলেছে আমি যেন এই লেখায় অতি অবশ্যই একটা সুন্দর দেখে কমেন্ট করি। তোমাকে আম্মুর পক্ষ থেকে, এবং অবশ্যই আমার পক্ষ থেকেও, ভালবাসা।
আপা রুচি টা অবশ্যই আপেক্ষিক। আপনি লেখার সংলাপে "কুকুর" , " হারামি" বা " বাইঞ্চোত" ব্যাবহার করলে এবং সেটা যদি কাহিনিকে প্রাঞ্জল করতে সাহায্য করে তবে অবশ্যই করবেন। কিন্তু লেখক নিজে যখন কোন বর্ণনায় নিজের মনের ঘৃণা প্রকাশ করার জন্য এ ধরণের শব্দের প্রয়োগ করে তখন টা আসলে আমার দৃষ্টিকোণ থেকে ভালো লাগেনা ... কোন লেখক যদি কারো চেহারার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলে " লোকটার চেহারাতেই একটা বাইঞ্চত ভাব" _ এটা কি পড়তে ভালো লাগবে? এখানেই আমার আপত্তি ।
আন্টিকে সালাম দেবেন, এবং অবশ্যই ধন্যবাদ
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
"কেন যাচ্ছেতাই ভাবে সকলের কাছে খারাপটা তুলে ধরা!এটা কি বাবা মার ব্যর্থতা জাহির করা নয়?" :thumbup:
অনেক দিন পর সিসিবিতে ঢুকলাম,রাকু (রাকিব,এম সি সি ৯৮-০৪)তোরে Thanks.
২০০৯ এর বাম্পার টাইমে আমিও নিয়মিত ছিলাম।তারপর কিভাবে যে হারায় গেলাম,নিজেও জানি না।
ধইন্নবাদ 😀 দোয়া করবেন যাতে আরও লিখতে পারি B-)
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
Most Welcome
u pom gana?
আই পম মইমনসিং 😀
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
ইটিং পুড পম ময়মনসিং?
নাউ ইটিং পুড পম ইন্ডিয়া 😀
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
মানে কি?ভারতবর্ষ গিয়া পুড়াশুনা করস?
হ! আর চিনিওয়ালা তরকারি খাই :'(
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
মাহমুদ,কলেজে মামেন গ্রুপের কথা মনে পড়ে????
রাকু লাইইইইস্ট
মাহমুদ,লস্ট হ.................. :gulli2:
পালন কর
:-/
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
ইন্টারেস্টিং লেখা।
কিন্তু আমিও সামিয়ার সাথে সহমত...রুচি ব্যাপারটা মনে হয় আপেক্ষিক।
সময় থাকলে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের "চিলেকোঠার সেপাই" পড়ে দেখতে পারো।
ব্যক্তিগতভাবে, হুমায়ুন আহমেদের শেষদিকের লেখায় "গু" জাতীয় শব্দের ছড়াছড়িতে আমার রুচিবোধ যথেষ্ট আহত হইসে x-(
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
সেটা আমার ও হইসে :/ আসলে কেউ কেউ গালি গালাজরেই ফ্যাশন ভাবতেসে... এখানেই সমস্যা । ঠাণ্ডা মাথায় না চিন্তা করে কারো গুষ্টি উদ্ধার করা সাহিত্য কি! জানিনা ...
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে
ভাগ্যিস অনেক দিন তার বই পড়া হয় না,না হলে আমার এক কালের এত প্রিয় লেখক টার প্রতি ধারনা বদলে যেত
সাকেব ভাই নাকি????চেনা চেনা লাগে 😀
চিন্তার বিষয় .. ;)) সত্যি কথা বলতে কি এই বিষয় এ আমার মনে কখনো কোনো প্রশ্ন জাগে নি...আমি এটা কে স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছি সবসময়.....যার হাতে এ কলম , ক্ষমতা তার কাছেই.... লেখকের স্বাধীনতা আর পাঠকের রুচি কে এক করে দেখা ঠিক নয় .. পাঠক যদি কারো লেখায় সাচ্ছন্দ বোধ না করেন , তবে তার উচিত সেটা না পরা.. এক্ষেত্রে তাকে সেটি লিখতে না বলাটা কখনই শ্রেষ্ঠ সমাধান নয় .. লেখা ভালো ছিল..... থট প্রভোকিং .. :clap: :thumbup:
বাইসাব মানা করিনাই, উনাদের লেখা যাতে কারো খারাপ না করে সে্টা চাইছি 🙂 ধন্যবাদ কমপ্লিমেন্টের জন্য
যখন চলে যাব দূরে...বহুদূরে...নৈশব্দের দূর নগরীতে