কিছু প্রশ্ন ছিল মনে। (অবশেষে রাইটার্স ব্লক ছেড়ে কিছু লিখতে পারলাম)

বাঙলাদেশ
(১) জনসংখ্যাঃ ১৬,৮৯,৫৭,৭৪৫ (আনুমানিক ষোল কোটি ঊননব্বই লক্ষ সাতান্ন হাজার সাতশ পয়তাল্লিশ)। বাস করেঃ ১৪২,৬১৫ (আনুমানিক এক লক্ষ বেয়াল্লিশ হাজার ছয়শ পনের) বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।
(২) রাজধানীঃ ঢাকা। রাজধানীর জনসংখ্যাঃ ১,৫৬,৬৯,০০০ (আনুমানিক এক কোটি ছাপ্পান্ন লক্ষ ঊনষাট হাজার)
(৩) বিটিআরসির ৩০ নভেম্বর ২০১৫ হিসেব মতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাঃ ৫,৩৯,৪১,০০০ (আনুমানিক পাঁচ কোটি ঊনচল্লিশ লক্ষ একচল্লিশ হাজার)
অন্তর্জাল ব্যাপ্তির হারঃ ৩১.৯%
(৪) নভেম্বর ২০১৫ হিসেব মতে ফেইসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যাঃ ২,৮০,০০,০০০ (আনুমানিক দুই কোটি আশি লক্ষ)। ফেইসবুক ব্যাপ্তির হারঃ ১৬.৬%
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট ওয়ার্ল্ড স্ট্যাট ডট কম।

আমার প্রশ্নগুলো হচ্ছেঃ
(ক) দেশের সামগ্রিক হিসেবে এই ২,৮০,০০,০০০ (দুই কোটি আশি লক্ষ) কত বড় সংখ্যা? (শব্দগুচ্ছঃ রাজাকার সাঈদীকে চাঁদে দেখা, শাহবাগ আন্দোলন, রামুতে গ্রাম পুড়ে যাওয়া, তনু হত্যা, এবং সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেট।)

ইদানিং বাঙলাদেশের ক্রিকেটের সমর্থক ও দর্শকদের আরো পরিপক্ব হতে বলা হচ্ছে দেশী-বিদেশী ক্রিকেট বোদ্ধা ও অনেক দেশী সমর্থকদের পক্ষ থেকে।
(খ) এই সমর্থক বলতে তারা কোন ধরণের জনগণদের বোঝাচ্ছেন? উপরে উল্লেখিত (১), (২), (৩), নাকি (৪) নং দর্শক/সমর্থকদের?

(গ) আমরা যখন আঞ্চলিক বিষোদগারে ঝাঁপিয়ে পড়ছি সেটা কাদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছি?
ভারতঃ ফেইসবুক ব্যবহারকারীঃ ১৩,৬০,০০,০০০ (তের কোটি ষাট লক্ষ)। ব্যাপ্তিঃ ১০.৯% এবং
পাকিস্তানঃ ফেইসবুক ব্যবহারকারীঃ ২,৩০,০০,০০০ (দুই কোটি ত্রিশ লক্ষ)। ব্যাপ্তিঃ ১১.৬%

জাতীয় দলের খেলোয়ার ও সাবেক অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকুর রহিম যখন অখেলোয়ারসূলভ ফেইসবুক পোস্ট দেন, সেটার দায়ভার হয়তো আমাদের উপর এসে পড়ে কারণ ক্রিকেট বিশ্বের দরবারে বাঙলাদেশকে প্রতিনিধিত্বের দায়িত্বটুকু তাদের ঘাড়ে। কিন্তু ক্রিকেটের সমর্থক হিসেবে আমাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়া করাতে যদি ফেইসবুকের স্যাম্পল সাইজকেই আদর্শ ধরা হয় তবে এই ফেইসবুক কেন্দ্রীক ক্রিকেটবোদ্ধা নব্য-সুশীলদের মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কি ধরণের মালামাল ব্যবহারের অভাবে পঁচে যাচ্ছে তা নিয়ে আরো একটি প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে।

সেই প্রেক্ষিতে মাননীয় স্পীকার আমার সর্বশেষ ও সম্পূরক প্রশ্নঃ তবে কি সময় পরিবর্তন হচ্ছে তাই পরিসংখ্যানে স্যাম্পল সাইজের সংজ্ঞাও পরিবর্তন করতে হবে? তবে কি অদূর ভবিষ্যতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমই হবে একমাত্র হালাল ও সহীহ স্যাম্পল সাইজ?

৫,০৭৪ বার দেখা হয়েছে

১৮ টি মন্তব্য : “কিছু প্রশ্ন ছিল মনে। (অবশেষে রাইটার্স ব্লক ছেড়ে কিছু লিখতে পারলাম)”

    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      উত্তর খুঁজতে গেলে হয়তো ত্যানা প্যাচানো শুরু হবে কিন্তু প্রশ্নগুলো করেছি এবং উত্তরও আমার জানতে হবে। গরু ছাগল মানুষ সব যদি এক কাতারে দাঁড়িয়ে হাম্বা বলে উঠে তাহলে তো বিপদ।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    বিষয় টা বেশ জটিল।
    আমাদের পচাত্তর পরবর্তী জেনারেশন স্বাভাবিক ভাবে ভারত বিরোধী।
    এর নানা কারণ ও রয়েছে।
    তবে দুঃখজনক এই যে সেই জেনারেশন এর একটা বড় অংশই পাকমনপেয়ারু।

    আমি এটাকে বেশ আশাব্যঞ্জক হিসাবে দেখি যে এই জেনারেশনের বড় একটা অংশ তাদের পূর্বের জেনারেশনের পাকিস্থান প্রেম থেকে বের হয়ে এসেছে।

    এটাকে আবার ভূতপূর্ব পাকমনপেয়ারু রা ভালোচাবে দেখেন না।
    এদের দাবী ব্যালেন্স করতে হবে। কী ব্যালান্স?
    পাকিস্থান কে গালি দিলে ভারত কেও দুটো গালি দিতে হবে।

    সত্য এই যে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ এর সাথে ভারত হারায় বাঙলাদেশের একটা বড় অংশ খুশি।
    আমি নিজে খুশি।
    আমি খেলা দেখি নাই।
    ফেবু তে রেজাল্ট দেখে তারপর ক্রিক ইনফোতে দুইবার হাইলাইটস দেখলাম।

    এইখানে কয়েকটি বিষয় হিসাবে আনতে হবে।
    * আমরা যেহেতু এক রানে ওদের সাথে হেরে গেছি সেহেতু আমাদের একটা জ্বলুনি আছে।
    * দিন দুই আগে আমাদের সাংবাদিকেরা বোম্বে না কোথায় জেনো কোন হোটেলে জায়গা পায়নি। সত্য মিথ্যা জানি না কিন্তু নিউজে এসেছে আমাদের সাংবাদিকদের নাকি ওরা বাঙলাদেশি হবার কারণে হোটেলে জায়গা মেলেনি।
    * লোটাস কামাল এর পদত্যাগ
    * আই সি সি তে ভারতের অন্যায় মোড়লগিরি
    * ভারতীয় খেলোয়াড়দের অখেলোয়াড়োচিত আচরণ
    * বাঙলাদেশি দুইজন বোলার এর বিরুদ্ধে আই সি সি র অবস্থান।
    * ধোনি আম্পায়ারিং নিয়ে উলটাপালটা বললেও তার শাস্তি হয় না।
    * এমনকি এই খেলাতেই আম্পায়ারদের দায়িত্ব জ্ঞান হীন আচরণ ২ টা নো তারা দেখেন নাই। আবার কোহলি ব্যাটিং এর সময় আবেদন করায় একটা নো ডেকেছেন লেগ আম্পায়ার। অথচ ভারতের বোলিং এর সময় একটা নো কে লেগ আম্পা নো দেন নাই।

    আমি আবার অনেক আগে থেকেই ওয়েষ্ট ইন্ডিজের সাপোর্টার।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      আচ্ছা ভাই আমি আসলে ভারত/পাকিস্তানপ্রীতি বা ঘৃণা পর্যন্ত যাচ্ছি না। আমার প্রশ্নঃ এই কাঁদা ছোড়াছুড়ি কাদের বিরুদ্ধে? ভারতের ১৩ কোটি ৬০ লক্ষ ও পাকিস্তানের ২ কোটি ৩০ লক্ষের বিপরীতে আমাদের ২ কোটি ৮০ লক্ষের? নিশ্চয়ই নয়! যদি তা না হয়ে থাকে তবে ভেটেরান ক্রিকেট বোদ্ধা থেকে শুরু করে আমাদের পরিচিতরা পর্যন্ত এমন আচরণ কেন করছে যে এই তিন দেশের সমর্থক বলতেই এই ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা? আমার প্রশ্ন সেখানে। এমন যদি হতো ফেইসবুকের ব্যাপ্তি তিনটি দেশেই ৫০% বা ততোধিক সে ক্ষেত্রে এই উদ্ভট আচরণকে কিছুটা হলেও জাস্টিফাই করা যায়। আমার প্রশ্ন এই অন্ধত্ব ও নির্বুদ্ধিতা আসছে কিভাবে?


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
      • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

        আমি কাদা ছুড়াছুঁড়ি তে নাই।
        আমার ফেবু বন্ধু দের এক শতাংশ ও এটা করেন বলে মনে করি না।

        আমার ধারণা এটা অনেকটা আত্মরতির মতো। কোন যুদ্ধের ব্যাপার নেই।


        এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

        জবাব দিন
  2. রাইটার্স ব্লকের বাইরে কিছু লিখতে পারায় ধন্যবাদ সুস্মিত। ১৯৮৩ থেকে ক্রিকেট খেলা দেখি। ঝিঁঝিবাঙ্গালদের পাঁড় সমর্থক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না।

    জবাব দিন
  3. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ফেসবুক তথা ইন্টারনেটে পুরোদেশের জনগনের প্রতিনিধিত্বের শতকরা হার চিন্তা করে যখন ব্লগ, ফেসবুক ইন্টারনেটের পরিস্তিতির উপর ভিত্তি করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বা সচেতনতা বাড়ছে বা উলটো দিকে দেশ গোল্লায় যাচ্ছে জাতীয় মন্তব্য করি তখন আমার মনেও এ ধরনের চিন্তা আসে। তবে একথাও ঠিক ইন্টারনেট বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বড় একটা অংশ কিশোর তরুনেরা, অন্তত দেশের এই প্রজন্মের একটা ভাল স্যাম্পল সাইজ মনে হয় অনলাইনে পাওয়া যায়।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  4. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    অবশেষে খরা কাটল তবে 🙂

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অবশ্যই সমাজের প্রতিফলন অবশ্যই করে, তবে সবটা নয় যেমন তুমি তুলনামূলক পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝাতে চাইলে। আমার কাছে মাঝে মাঝে ভার্চুয়াল এই যোগাযোগের জগৎটাকে মনে হয় 'কুয়া'র মত।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      জীবন প্রচুর উচ্চচাপ দিচ্ছে। স্বাভাবিকে নামিয়ে নিয়ে আসাই যাচ্ছে না। লিখি না, লিখার কিছু পাই না, লিখতে ভাল লাগে না তাই লিখি না--এই দুষ্ট চক্রের পাল্লায় পড়েছি। 🙁

      এবং সেই কুয়াতে বসবাস করি আমরা নানান রকমের ব্যাঙ :brick:


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।