যেহেতু আজ ক্লাস ছিল না,তাই একটু আগে ঘুম থেকে উঠলাম। ঘুম থেকে উঠেই ক্যাডেট কলেজের কথা মনে পড়ে গেল। মনে পড়ে গেল বিভিন্ন সময়ে এক একজনের মুখ থেকে বের হয়া ডায়ালগ গুলো আর মজার মজার সব ঘটনা গুলো। আর তাই শেয়ার করতেই ব্রাশ না করেই ল্যাপটপ নিয়া বসা।
১…আমরা যখন ক্লাস সেভেনে,তখন আমাদের জেপি ভাইয়ার টানটান করে মশারি টাঙ্গানো নিয়া কালজয়ী ডায়ালগ,”পিটি শু থ্রো করলে যাতে আমার কাসে ব্যাক করে”।
২…ক্লাস সেভেনে নতুন নতুন স্যার-ম্যাডাম দের টিজ করা শিখেসি তখন,বুলবুল ম্যাডামের ক্লাস ছিলো,ম্যাডামের সাথে চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গার মিল খুজে পেয়েছিলাম। আর তাই ম্যাডাম কে আসতে দেখে বলেছিলাম,অই বয়েজ,চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা আসতেসে। কিন্তু আমাদের ফর্মলিডার বিপ্লবের গায়ে থেকে তখনও বাইরের স্কুলের গন্ধ যায় নাই। ম্যাডাম ক্লাসে আসা মাত্রই বলে দিল,”ম্যাডাম,তৌকির আর নাসিম আপনাকে চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা বলসে।” ~x(
৩…হঠাৎ করেই রোকনী স্যার ক্লাসের মাঝে তৌহিদ কে উদ্দেশ্য করে বললেন ,”তৌহিদ,মনে মনে মন কলা খাও?!!!”
৪…তখন আমাদের একদিনে সবাইকে চুল কাটাতে হত। জুনিয়র ক্লাসের সিরিয়াল পাইতে পাইতে দেখা যাইতো যে প্রেপ শুরু হয়ে যায়। তো,আমাদের ইকবাল একদিন হাউসে চুল কাটাচ্ছিল আর ততক্ষনে আমরা ইভেনিং প্রেপে। রসায়নের আরিফুর রহমান সরকার স্যার এসে দেখল যে প্রেপে একজন কম। কে নাই জিজ্ঞেস করতেই মিঠু আগবাড়িয়ে বলল,”স্যার,ইক………বাল কাটতেসে।” ও আর যায় কই। :gulli2:
৫…তৌহিদ যেকোন পরীক্ষার আগে কমন দিত,ওর কমন গুলো পড়ে যেয়ে উল্টা আরও বাঁশ খাইতাম সবাই। ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম ও যা কমন দেয় তা শান্তিমত বাদ দেয়া যায়। এরপর ক্লাস টেন থেকে ও যা যা কমন দিতো আমরা তা বাদ দিয়ে সিলেবাস কমপ্লিট করতাম। এবং আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি,ওর দেয়া কমন ৬ বছরেও আসে নাই। আমি ও কে ভার্সিটি লাইফ এ মিস করতেসি খুব।
৬…তিতুমীর হাউসের হাউস মাস্টার ছিলেন আমাদের প্রাণপ্রিয় মান্নান স্যার। তখন আমরা ক্লাস ১২ এ। স্যার একদিন রাত ১০টার পর হাউসে রাউন্ড দিচ্ছিলেন,পোলাপান খেলতেসিলো কার্ড। জুনিয়রের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি ১১ এর ব্লক দিয়ে জোরে জোরে বলতে বলতে যাচ্ছিলাম,”ওই বয়েজ,মন্টে আইসে।” এবং বামে মোড় নিতে গিয়েই দেখি মন্টে।
৭…আমরা তখন ক্যান্ডিডেটস। ২ ব্যাচ সিনিয়র দের ফেয়ারওয়েল দিতে বাইরে থেকে স্যান্ডুইচ ও পেষ্ট্রি নিয়ে এসে হসপিটালের ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম এবং কিভাবে কিভাবে জানি তৎকালীন মেস ও.আই.সি আজিজ স্যারের কাছে ধরা খেলাম। স্যার রিপোর্ট করলেন হাউস মাস্টাও মন্টের কাছে। পোলাপানের মন খারাপ,তার উপর মন্টে হাউস অফিসে ডাকসে। মন্টে যখন থ্রেট দিতেসে যে রিপোর্ট করবে এবং আমরা ভাইয়া দের ফেয়ারওয়েল দিতে পারবো না। শুনে আমাদের তখন তৌহিদ বলে উঠলো,”স্যার,এত কথা না বইলা সবার বাসার ঠিকানায় একটা করে স্যান্ডউইচ আর পেষ্ট্রির ২টা পিস পাঠায়ে দেন।” শুনে মন্টে চুপ আর আমরা হাসতে হাসতে পারলে ওই খানেই পিড়া যাই। ওই কথা শুনে মন্টে সাথে সাথে আমাদের স্যান্ডউইচ আর পেষ্ট্রি ব্যাক করেছিলেন।
৮…আমরা আমাদের দুই ব্যাচম্যাটের গভীর বন্ধুত্ব কে পিসিসিয়ান সম্পর্ক বলে টিজ করতাম। তো একদিন ফর্মে ওদের নিয়া কথা উঠসে,তখন আমি দিয়ে বসি আমার কালজয়ী ডায়ালগ,”ভালোবাসা মানেনা হাউস,মানেনা বাঁধা,মানেনা সেক্স।” পিছনের দরজা দিয়ে আব্দুল লতিফ ওরফে কাঁঠাল বলে উঠে,”এই তৌকির,কি বইললা?”
৯…কাঁঠালের সাথে আমার আর একটা কাহিনী বলে আজকের পার্ট শেষ করি। আমি তখন ক্লাস ৮ এ। ফর্মের প্রথম ডেস্ক টা তে বসি। নাইট প্রেপ। পরদিন কৃষি শিক্ষা পাক্ষিক পরীক্ষা। কাঁঠাল রোস্ট্রামে দাঁড়িয়ে ছবি আঁকছিলো। আমি আর আমার জিগরী দোস্ত নেওয়াজ কৃষি বইয়ে দেয়া কাঁঠালের ছবি আর সামনে দাঁড়ানো কাঁঠালের মিল খঁজতেছিলাম আর হাসতেছিলাম। আমাদের হাসাহাসি দেখে উৎসুক কাঁঠাল কাছে এসে বললেন,“কি হইসে,হাসতেসো কেন?” আমি বললাম,“স্যার,ও কে জিজ্ঞেস করতেছিলাম যে কালকের পরিক্ষার জন্য কাঁঠাল ইম্পোর্টেন্ট কি না।” বলা মাত্রই কাঁঠাল সামনে রাখা স্টিলের স্কেল দিয়ে কয়েকবার মারলেন। কিন্তু তাতে কি? মজা যা পাওয়ার তা তো আমরা পেয়েই গেছি।
১০…আমাদের অংকের নুরুল স্যার অভিশাপ দেওয়ার জন্য খুব বিখ্যাত ছিলেন। তিনি একদিন এনডিএম। আমাদের প্রি-টেস্ট। ১২তা পর্যন্ত পড়ার পার্মিশন। স্যার পৌনে ১২টার দিকে এসে সবাইকে বললেন ১২টায় লাইটস অফ করে দিতে। পরদিন জেনারেল ম্যাথ এক্সাম ছিলো। সালেহিন খুব সিরিয়াস,ভালো করতেই হবে। স্যার যখন আবার রাউন্ডে আসেন ১২ তা বাজার ১০ মিনিট পর তখন দেখেন সালেহিন পড়তেসে। সালেহিন আর যায় কই। নগদ স্যারের অভিশাপ টা খাইল। অভিশাপ টা কি ছিলো জানেন? স্যার বলছিল,“সালেহিন,তোরে আমি কইসি যে ১২ টার সময় লাইট অফ কইরা দিবি। কিন্তু তুই তো আমার কথা কানেই নিলি না। যা,তুই কালকে ফেল করবি।”
সম্মানিত পাঠক,যদিও স্যার খাতা দেখেন নাই,তবুও সালেহিন ওই পরীক্ষায় পেয়েছিল মাত্র ৩৯।
:)) :))
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
যেহেতু কেউ ই ১ম হইতে চায়না,তাই আমিই ১ম। 😛 😀
ক্যামনে কি ? :no: :no: :pira: :pira:
আমাদের ৪ ব্যাচ সিনিয়র এক ভাইয়া ১০ এ থাকতে স্যারের ক্লাসে ঘুমাইতেসিলো। স্যার জেনারেল ম্যাথ করাতেন,জ্যামিতি। তো ভাইয়া কে স্যার বলছিলেন,"কায়সার,তুই এসএসসি তে ম্যাথে এ+ মিস করবি"
ভাইয়া আসলেই এক মার্কের জন্য এ+ মিসস করছিলেন। 🙁
এক মার্কের জন্য মিস করছে,এটা জানা যায়??? :-/
=)) =))
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
x-( এখানে পিসিসির ব্যাপারটা কই থেকে আসল?
:khekz: :khekz:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
অই বেটা তৌকির, আজিজে কেক দিসিলো কিন্তক স্যান্ডুইচ দেয় নাইক্কা, পরের দিন টি'তে সবাইরে এক্সট্রা হিসেবে পুরা ব্যাচরে খাওয়াইছিলো...
চ্রম লেখছোস, সব এক্কেরে কাছ থাইক্যা দেখা জন্য আরো মনটা খারাপ হইলো। পারলে লতিফ স্যারের কাহিনীগুলান 😀
নিজের ইনটেকের কাহীনির লাইগ্যা পাঁচতারা আর সোজা প্রিয়তে। 🙂
যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
- রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
......তৌহিদ মিয়া এখন আছে কই? এর সাথে তো যোগাযোগ রাখা দরকার। :grr:
ভাই, আমি মিরপুরেই থাকি!!!
আহ...তোমাদের কলেজে যাওয়ার আগে আমাদের কলেজে ছিলেন আব্দুল লতিফ স্যার
বিয়াপক মজা পাইলাম।
আমাদের মাসেলম্যান মেডামের নাম ভুলে গেলাম। বদরুদ্দোজা (বদা) স্যারের বউ। চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা পড়ে উনার কথা মনে পড়ে গেল। নাম মনে করতে পারছি না।
হোস্নে আরা??
অনেক শিক্ষক এই ব্লগ এর পাঠক. তাই সরাসরি শিক্ষকদের নাম না লিখলে মনে হয় আরো ভালো হত.
=)) =)) =))
(নিয়মিত লেখা দিন, কমেন্ট করুন … প্রতিদিন অন্তত আধ ঘন্টা হলেও সিসিবির সাথে থাকুন)
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
নাসিম না,বিপ্লব তোর সাথে আমার নাম বলছিল।এবং আমাদের নভিসেস দ্রিল্ এর পর বুলবুল ম্যডাম আমদের দুই জন কে parents নিয়া দেখা করতে বলছিল... 🙁
(সম্পাদিত)
অনেক দিন পরে প্রাণ খুলে হাসলাম .................. এই কাহিনী গুলু ডায়লগ ফ্রম ক্যাডেট কলেজ এ লিখলে আরো মজা হইতো
সরকার ও মন্টে এখনো চালায়ে যাইতেছে ! :just: :pira:
ভাই আপনাদের তৌহিদ ভাইয়ের সাথে আমাদের shoaib এর মিল আসে. ও যা কমন দিত তা আসত না . সবচেয়ে সুবিধা সিল MCQ র সময় অর পাসে যে বসত . ও যা বলত তা বাদ. বাকি ৩ তা থেকে একটা দাও. :)) :)) :)) :)) :))