কিসমত মাড়িয়া মসজিদ
ঢাকা রাজশাহী মহাসড়কের পাশে শিবপুর বাজার। রাজশাহী শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ২৫ কিমি। শিবপুর বাজারের উত্তর দিকের রাস্তায় কিলো পাঁচেক গেলে পালি বাজার। পালি বাজার থেকে কিলো দুয়েক উত্তর পশ্চিমে কিসমত মাড়িয়া মসজিদ। মুঘল আমলের এই স্থাপনাটি রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের কিসমত মাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত। মসজিদটির চারপাশে ফসলের ক্ষেত আর বাগান। ২০১২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী তারিখে মসজিদটি দেখি। ঐ সময় পুঠিয়া উপজেলায় যাদুঘর এবং পুঠিয়াকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার একটা প্রক্রিয়া চলছিলো। তখনকার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় পুঠিয়া রাজবাড়ি ও মন্দিরসমূহ দর্শনে এসেছিলেন। তাকেঁ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষ থেকে একটা প্রেজেন্টেশন দেখান হয়। পুঠিয়ার বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সাথে কিসমত মাড়িয়া মসজিদের ছবিটিও দেখান হয়। দীর্ঘদিন পুঠিয়া বসবাস করি। বাঘায় থাকাকালে বাঘা মসজিদের প্রাচীনত্ব নিয়ে ব্যাপক গলাবাজি করেছি। পুঠিয়া নিয়েও করি। কিন্তু এগুলোর কথা সবাই জানে। কবিগুরু বলেছেন- দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া……। বাসে যাতায়াতকালে কিসমত মাড়িয়ার সবুজ সাইন বোর্ড অনেকবার দেখেছি কিছু মনে হয়নি। কিন্তু মতবিনিময় সভায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উপস্থাপনা দেখে হঠাৎ পর্যটক হতে ইচ্ছা হল। স্থাপনাটি দেখার পর মনে হল আগে কেন দেখিনি। বার গজ লম্বা চার গজ চওড়া অপূর্ব সুন্দর এ মসজিদটির পূর্ব দিকে তিনটি দরজা আছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটা করে জানালা। কিবলার দিকে তিনটে পাতলা মিহরাব। চুনসুরকির গাঁথনি আর পোড়ামাটির কারুকাজ। মসজিদের দক্ষিণ পুর্ব দিকে একটা দোতলা ঘর। লোকে বলে বিবির ঘর। মনে করা হয় সেটি কবর।
ছবিতে কিসমত মাড়িয়া মসজিদ
দুর্গাপুর এলাকায় একই ধরনের গঠনশেলী রয়েছে আরও কয়েকটি মসজিদে। সে গুলো দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রায়পাড়া মসজিদটি দেখে ক্ষ্যান্ত দিতে হলো। সংস্কারের নামে প্রাচীনত্ব উধাও। দেখুন কি অবস্থা !
কিসমত মাড়িয়া মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তাদের তালিকায় রেখেছে কিন্তু তাদের সাইনবোর্ড থেকে পাবেন শুধু সতর্ক বার্তা। মহাসড়কের পাশের সাইনবোর্ডে বানান ভুল- কিসমত মারিয়া মসজিদ ।
উপজেলা প্রশাসন কি করছেন তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। দুর্গাপুর উপজেলার ওয়েব সাইটে তার প্রমান পাওয়া যায়। কিসমত মাড়িয়া মসজিদের নাম দিয়ে যে ব্যানার আছে তাতে অন্য কোন মসজিদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যানার দেখুন।
আর যদি ছবিটা আসল হয় তাহলে প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদের বিকৃতি ঘটানর জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
আবার দর্শনীয় স্থানের তালিকায় নামটি এখনও আসেনি ।
পরথম 😀
পোষ্ট :thumbup:
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
অভিনন্দন :teacup:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ধন্যবাদ ভাই।
কিছু ছবি মনে হয় একাধিক বার এসেছে।
মসজিদের ভেতরের ছবি কই?
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
বিভিন্ন কোন থেকে ছবি তুলেছি । তাই এক ছবি একাধিকবার মনে হতে পারে। আবার ঘনমূল নেটওয়ার্কে থাকায় আপলোডে ত্রুটি থাকতে পারে 🙁
ভিতরের ছবি আমার কাছে নাই। ক্যামেরা নষ্ট হয়ে গেছে :(( সুযোগ পেলে ভিতরের ছবি পরে কখনও.... :dreamy:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ 'প্রত্নতত্ত্ব' শব্দের মানে বোঝে কি না - তাই সন্দেহ! 😐
দুনিয়ার আকাইম্যা একটা বিভাগ! 😡
আপনার 'পর্যটক হওয়া' জারি থাকুক... 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:khekz: :khekz: :khekz:
ধন্যবাদ জুনা ।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
পানাম নগরীর সংস্কারের নামেও আমাদের প্রত্নতত্ত্ব একই সর্বনাশ করেছিল। আমাদের পর্যটন বিভাগেরও কিভাবে যেন একটা ধারনা হয়ে গিয়েছে পর্যটন মানে শুধু কক্সবাজার আর সুন্দরবন। এসব প্রত্নতত্ত্ব সঠিক ভাবে সংরক্ষন করতে পারলে এগুলোও বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষন করতে পারবে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
সংস্কারের নামে সর্বনাশ কাম্য নয় 🙁 🙁 🙁
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
দেখে রাখলাম, অই এলাকায় গেলে দেখে আসবো।
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা 🙂
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
আমার বাড়ি কিসমত মারিয়া জামে মসজিদ থেকে এক মাইল দক্ষিণে জয়কৃষ্ণ পুর গ্রামে । উপরোক্ত লিখা পড়ে আমার খুব ভালো লাগছে । আমাদের সব সময় নজরে থাকে এমন একটি মসজিদ যাহা বিভিন্ন দার্শনিক দর্শন করতে আসে ।