প্রপিতামহ
বাপুরে, তুমরাও তো মুণ্ডল আচেলে ।বাড়িউ আচিলি মুণ্ডল পাড়াত। বড়লোক হয়া সরকার হয়া গিচো। ঝুমর মুণ্ডলের ব্যাটা হারু মুণ্ডল । তার ব্যাটা পাঁচু মণ্ডল । তার ব্যাটা ছেরফাত সরকার, তুমার বাপের দাদা।ট্যাকা কড়ি বেশি হয়া সরকার হয়া গেলো।
ছেফাত উল্লাহ সরকার, পিতাঃ পাঁচু মণ্ডল/সরকার, গ্রামঃ মাড়িয়া, থানাঃ বাগাতিপাড়া, মহকুমাঃ নাটোর, জেলাঃ রাজশাহী। তিনি বিয়ে করেছিলেন গালিমপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে।হিন্দু জমিদারদের শাসনামলে তাদের পুকুর , বাগান ও দালান বাড়ি ছিল (তখন সেসব সাধারণ মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল )। জনসেবা পরোপকার এবং বাবুয়ানার জন্য তাদের যথেষ্ট খ্যাতি ও খাতির ছিল। নিয়মিত লক্ষীবিলাস তেলের ব্যবহার এবং চা পানের মত বড়লোকি চল ছিল তাদের বাড়িতে।
ছেফাত উল্লাহ ধর্মভীরু এবং সদাশিব ছিলেন।বড়মা, মাসিমা, ফুফুমা এরকম মাতৃস্থানীয় অনেক বিধবাকে দেখাশুনা করতে হত। এজন্য সুখ্যাতি থাকলেও সাংসারিক শ্রীবৃদ্ধি হয়নি।তিনি গালিমপুর মাইনর স্কুলের পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন। স্কুলের জনৈক শিক্ষক তাঁর বাড়িতে জায়গীর থাকতেন। একদিন ছেফাত উল্লাহ বাইরে থেকে এসে দেখেন একজন মুরুব্বী লোক বৈঠকখানায় বসে আছে। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন বেচারা গরীব বৃদ্ধ লোকটি ঐ শিক্ষকের পিতা। শিক্ষক সাহেব তার খোজখবর নেন না ।এ কথা জানার পর তাৎক্ষনিক ভাবে হিসাব মিটিয়ে শিক্ষক সাহেবকে বিদায় করা হয়। তাঁর বক্তব্য- যে ছেলে পিতা-মাতার দায় দায়ীত্ব বহন করেনা সে শিক্ষক হবার যোগ্য নয়। তার সংষ্পর্শে শিশুরা চরিত্রহীন হতে পারে।
ছেফাত উল্লাহ সরকারের তিন পুত্র মানে আমার দাদারা হলেন-
(১) সাজদার রহমান সরকার, (২) রিয়াছত উল্লাহ সরকার এবং (৩) মাহতাব উদ্দীন সরকার।
বড় দাদা সাজদার রহমান সরকার ওরফে সাদ মিঞা নাটোর ফৌজদারী আদালতে মহুরীর কাজ করতেন।তিনি ধীরস্থির প্রকৃতির লোক ছিলেন (তিনিই হরেকেষ্ট দারগার সাজানো ফিরিঙ্গি ঠেঙ্গানো রিয়াছত ডাকাত) । যাতায়াতের অসুবিধার জন্য বড় দাদা নাটোরেই সস্ত্রীক বসবাস করতেন। একমাত্র পুত্র সাইদুর রহমান ওরফে খোকা মিঞা ছোট থাকতেই দাদা মারা যান। বড় চাচা লালপুর থানার ওয়ালিয়া আমিন পাড়ায় বসবাস করতেন। বড় চাচার বড় ছেলে রেজা শামসুর রহমান ( ফর্দু ভাই ) বিশিষ্ট মানব সম্পদ উন্নয়ন গবেষক এবং কবি।
ছোট দাদা মাহতাব উদ্দীন সরকার লালপুর থানার ইসলামপুর ( সাবেক গবরগাড়ী ) বসবাস করতেন।তিনি হালকা পাতলা লম্বা গড়নের মানুষ, গায়ের রং তেমন ফর্সা বা কাল নয়।তিনি খুব সৌখিন , সদালাপী, ভ্রমনপ্রিয় ছিলেন। গান বাজনা, বই ,পুঁথি গল্প ইত্যাদির সমঝদার । বেশ ফিটফাট থাকতেন।ফুল বাগান করার শখ ছিল তার।নল বাঁধানো ফুর্সি হুকায় ধুমপান করা বেশ উপভোগ করতেন ছোট দাদা। তার পুত্র মোঃ মাজদার রহমান ( রাসু চাচা) -ও দাদার মত সংস্কৃতিবান এবং আলোকিত মানুষ।তিনি অবসর প্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা (এই পোষ্টের সিংহভাগ তথ্য তাঁর কাছে পাওয়া)।
রাসু চাচা
ভাই নাম্বারিং করে দেন! আমি তো ডরায় গেসিলাম কমেন্ট সব গেল কই পরে দেখি এইটা দ্বিতীয় পর্ব!
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
নাম্বারিং করলাম।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
পরিবারের এতো ইতিহাস জানলেন কেমন করে? আপনার আঞ্ছলিক ভাষা আসলে একটু পড়তে কষ্ট হয়। তবে সেটাই বোধহয় লেখাটাকে শেকড়ের স্পর্শ দিয়েছে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
মণ্ডলের সরকার হওয়া যাদের পছন্দ হয়নি তারা মনে রেখেছে অনেক খানি 😛
আঞ্চলিক ভাষা তো শেকড়ের স্পর্শ দেয়ই ।
ঞ + চ = ঞ্চ
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সরকার বাড়ির (বা সরকার বংশের) গোড়াপত্তন কবে সে বিষয়ে কখনো জানার সুযোগ হয়নি। যাদের কাছে জানতে পারতাম তারা কেউ (আমার দাদা, দাদী, বাবা, বড় চাচা, দাদার ভাই) বেঁচে নেই। এর আগে তাহমিনা আপার লেখা পড়ে এরকম আক্ষেপ জন্মেছিল যে জানতে পারলাম না নিজের ইতিহাস। এখন আবার পড়ে আক্ষেপ হচ্ছে। চর চারতলার (গ্রামটি নাকি মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন মেঘনার একটি চর ছিল সেই থেকে নাম চর চারতলা) শীর্ষস্থানীয় বাড়ি (আমাদের এলাকায় বংশ বলার চল নেই বাড়ি বলে। অনেকটা ক্ল্যান্সম্যানশীপের মত) গুলোর একটি হলো সরকার বাড়ি। বাকি প্রতাপশালীদের মাঝে এখনো ধরে রেখেছে মুঞী বাড়ি (আমার নানারা) আর ছোটখাটদের মাঝে আছে বিলাই বাড়ি, কাচকি (মাছের নামে) বাড়ি ও লতি বাড়ি। মাঝে চেষ্টা করেছিলাম সরকার বাড়ির শুরু কবে থেকে সেটা জানার। প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় কিছু বের হয়ে আসেনি। চাইলে হয়তো বের করা যাবে সরাসরি বংশে কেউ না থাকলেও লতায় পাতায় বয়ষ্ক মানুষ এখনো আছেন। তবে দ্রুত তাদের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। কারণ গল্প বলার মানুষেরা কমে আসছে। (সম্পাদিত)
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
সংশোধনঃ ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
মানে "ব্রাহ্মণবাড়িয়া", তাই না ভাই?
আচ্ছা এইটা লিখে কেমনে? আমি প্রভাত ব্যবহার করি। ক্ষ এর সাথে কোনটা যাবে অক্ষর? (সম্পাদিত)
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ভাই অভ্রতে , ব্রা "হ+ম" ন =ব্রাহ্মন
প্রভাতে কেমনে লেখে? প্রভাত তো সেমিফোনেটিক্স! 😕
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
হ +ম= হ্ম । যুক্ত করার নিয়ম মানলে হতেই হবে ।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ধন্যবাদ ভাই! 😀 😀 😀
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
🙂
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ভাই, আমার মায়েরা সরকার বংশ। তাদের পূর্বপুরুষ "ভৈরব" থেকে নেত্রকোনায় আসে। ভৈরব আর আশুগঞ্জ তো লাগোয়া। খোঁজ নিলে হয়তো একই বংশ চলে আসতে পারে। :khekz:
এই বেল্টে সরকার বাড়ি ছড়ায় ছিটায় থাকার কথা। কিন্তু আমি জানতে চাইতেস ভৈরবে বা আশুগঞ্জে আসার আগে কোথায় ছিল এরা? নাকি টিটু ভাইয়ের পরিবারের একটা লতা এইখানে! 😀 😀
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
আমার ডাক নাম টিটো । টিটু 😮
মণ্ডলে ফেরার চিন্তা করে ব্যার্থ হয়েছি 😛
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
😛 😛 নিজগুণে ক্ষমা করে দিয়েন!
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
নো প্রোবলেম B-)
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
নেত্রকোনার কোথায় বাড়ি? আমার মামী নেত্রকোনার। আরেক মামা রাইস মিলের জন্য ধান আনতে এখনো মামা নেত্রকোনা যায়। 🙂
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
:khekz:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
হ্যাঁ দ্রুত যেতে হবে :thumbup:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
আমার বংশের কোন উপাধি আছে কিনা আমি জানি ই না। 🙁 দাদার বাবার নামও জানিনা।
এতে মন খ্রাপ করার কিছু নাই ।
আমার পূর্ব পুরুষ মণ্ডল থেকে সরকার হয়েছে 😛
আমি কোনোটাই ব্যবহার করি না B-)
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল