ফিরিঙ্গী ঠেঙ্গা
ঝুন্ডুর পালের জ্বালায় আতালুত গোবরা ফকির। মাছ খাওয়ার জন্য খালি মালামু করতিচে। নিজের তো পুকুর মাটিয়াল নাই। কি করা যায়। লাইনের খাদে মাছ ধরলে হয়।সরকারী মাল দরিয়ামে ঢাল। ১৯৩২/৩৩ সালের কথা বলছি।সবে রেল লাইন চালু হয়েছে ( ১৯৩০ সালে আব্দুলপুর-আমনুরা ব্রডগেজ সেকশন চালু হয়)। পূর্ব বাংলা রেলের (EBR) জনৈক ইংরেজ সাহেব ট্রলিতে চড়ে দাপ্তরিক কাজে যাচ্ছিলেন। রেল লাইনের পাশে নিচু জায়গায় (খাদ) এক নেটিভকে মাছ ধরা দেখে চান্দি গরম হয়ে যায় তার। নিকৃষ্ট মাটি চষা। সাহস কত ? মহারাণীর সম্পত্তিতে হাত লাগায়। তার দেশে হরিণ মারার জন্য রবিন হুড পর্যন্ত আউট ল হয়েছিল। এখানে তো এমন কিছু করাযাবেনা। ধোলাই দিয়েই হার ম্যাজেস্টির সেবা করতে হবে। রাণীর সেবায় গোবরার মাথা ফাটে।
ইংরেজ সাহেবের রাজভক্তির পুরস্কার মেলে দ্রুতই।ফেরার পথে ট্রলি আটকে বেদম প্রহার করে তার মাথা ফাটিয়ে দেয় রিয়াছত নামের এক দুর্বৃত্ত। অত্যন্ত সাহসী এই লোকটাকে কেউ কেউ চুপিচুপি ডাকাত বলতো। বাগদিপাড়া থানার হরেকেষ্ট দারোগা এই মোকদ্দমার তদন্ত করেন। দারোগা বাবু খুব করিতকর্মা। ছাইয়ের দড়ি পাকাতেও ওস্তাদ। বাবু গুনগুনিয়ে একটি গান প্রায়ই গাইতেন – তোমার কর্ম তুমি কর লোকে বলে করি আমি। দারোগা বাবুর সাথে রিয়াছত ডাকাতের একটা আপোষরফা হয়। নগদ নারায়ন আর হরেকেষ্ট মিলে সৃজনশীল হয়ে ওঠে। কয়েক মাসের জন্য নিরুদ্দেশ হয় রিয়াছত। কোর্টে তার বড় ভাইকে রিয়াছত বলে চালিয়ে দেন দারোগা বাবু। । ইংরেজ সাহেব বদমেজাজী হলেও মিথ্যাবাদী ছিলেন না বোধ হয়।তিনি বলেন, নো নট দিস ম্যান।আসামী বেকসুর খালাশ।
ছদ্মবেশে কোলকাতাসহ বিভিন্ন জায়গায় বেড়িয়েছে রিয়াছত।লম্বা চওড়া জোয়ান লোকটার বড় বড় গোঁফ দাড়ি, কানের লতির নিচে নামা বড় চিপ দেখে কেউ ডাকাত মনে করলে তাকে দোষ দেয়া যাবে না। ট্রাকের হেলপারিসহ অনেক রকম কাজ করেছে সে। দুঃসাহসী রিয়াছত টকটকে ফর্সা এবং সুদর্শন ছিলো । কোন অংশেই সাহেবদের চেয়ে কম ছিল না। তাই কোলকাতায় অনেক মেম সাহেবের সাথে খাতির জমেছিলো। কথায় বলে বীরভোগ্যা বসুন্ধরা । দুর্মুখেরা বলে অনেক মেম রিয়াছতের স্নেহসিক্ত হয়েছেন।বাড়িতে ফিরে রিয়াছত উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগ করে হরেকেষ্ট দারোগার বিরুদ্ধে।অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় দারোগা বাবু বরখাস্ত হয় । দুঃসাহসী রাজদ্রোহী সুদর্শন এবং বিশ্বপ্রেমিক এই রিয়াছত হলেন আমার পিতামহ মোঃ রিয়াছতুল্লাহ সরকার। ফিরিঙ্গিদের পেটোয়াবাহিনী বাগদিদের প্রতি ঘৃণাবশত বাগদিপাড়া থানার নাম পরিবর্তন করে বাগাতিপাড়া রাখা হয়।বাগাতিপাড়া নাটোর জেলার একটি উপজেলা।
:brick:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ইট ফেলার দরকার কী :-/ রাজীব। মন্তব্যকারীর বড্ড অভাব 🙁
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
দাদাজান দেখি ওস্তাদ লোক ছিলেন...... খ্যাপা...... ::salute:: ::salute::
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
😛 :gulti:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
দাদা জান রক করে
মেম সাবেরা নড়ে চড়ে
দাদা জানকে ::salute::
:shy:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ইন্টারেস্টিং।
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।
😀
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
আত্মজীবনী ট্যাগটা দেখি নাই। শেষে আইসা আপনমনেই হেসে দিলাম। পরের পর্বটা দয়া করে তাড়াতাড়ি দেন। গল্পে বইসা থাকার অপেক্ষা ট্রাফিক জ্যামে বইসা পরীক্ষার কথা চিন্তা করার মত! 🙁
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ভয় পাচ্ছি সরকার 😉
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
দারুন ইন্টারেস্টিং, পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আসিতেছে 🙂
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
আচ্ছা তথ্যগত জিজ্ঞাসা, বাঙলাদেশে তাইলে ব্রডগজ লাইন আগে এসেছে। তাইলে পরবর্তী ৭০ বছর কোন বুদ্ধিতে মিটারগজ দিয়ে দেশ ভরায় দিলাম এইটা মাথায় ঢুকতেসেনা! x-( x-(
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
মিটারগেজ খেলনা মনে হয় 😛
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
উইকি থেকে-
১৮৮৯ সালে তৎকালীন অবিভক্ত ভারত সরকার আসাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও উত্তরবঙ্গের সাথে কলকাতার যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যে পদ্মা নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে ১৯০৮ সালে ব্রীজ নির্মাণের মঞ্জুরী লাভের পর বৃটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট গেইল্স সেতু নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯০৯ সালে ব্রীজ নির্মাণের সার্ভে শুরু হয়। ১৯১০-১১ সালে পদ্মার দুই তীরে ব্রীজ রক্ষার বাঁধ নির্মাণ হয়। ১৯১২ সালে ব্রীজটির গাইড ব্যাংক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি ব্রীজটির গার্ডার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। অতঃপর ব্রীজটির গার্ডার নির্মাণের জন্য কূপ খনন করা হয়। ২৪ হাজার শ্রমিক দীর্ঘ ৫ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৯১৫ সালে ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। তৎকালীন ভাইসরয় ছিলেন লর্ড হার্ডিঞ্জ। তাঁর নামানুসারে ব্রীজটির নামকরণ করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রীজ। সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার ১ শত ৬৪ টাকা। ব্রীজটির দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৮ শত ফুট। ব্রীজটিতে ১৫টি স্প্যান আছে। ব্রীজটি ঈশ্বরদী ভেড়ামারা সীমানায় পদ্মানদীর উপর অবস্থিত। ব্রীজটি দিয়ে শুধু ট্রেন চলাচল করে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ব্রীজটির রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
আচ্ছা এই কাহিনী! হুম! জীবনের প্রথম ব্রডগজ চড়া হয় রাজশাহীতে বন্ধুর বড় ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবার নাম করে। ট্রেন এত দ্রুত চলতে পারে বিশ্বাস হচ্ছিলো না! 😕
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ব্রডগেজ ট্রেনে চড়ার মজাই আলাদা B-)
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম!!
রেডি করছি তৌকির 🙂
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ব্রিটিশরাই মিটার গেজ আনছে । উইকি তে পেলাম মোকা্
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
লেখাটা আগেই পড়েছি। পিতামহ দেখা যায় একজন- প্রকৃত খালেক! :boss:
সুন্দর বর্ননা মোস্তাফিজ ভাই।
ধন্যবাদ সিদ্দিক 🙂
খালেক বুঝলাম না 😛
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
খালেক-এর ঘটনা জানাতে সিদ্দিক আরেকটি ব্লগ লিখে ফেল। প্রায় যেকোন বাক্যের শেষে খালেক শব্দটি ব্যবহার করা যায়। চমৎকার এই শব্দটি আমারো খুব প্রিয়। 😀
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
পিতামহ পুরাই :gulli2: :gulli2: :gulli2:
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
😀 😀
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল