মৃত্যু- যখন আসার কথা তখনই আসবে। সময়মতোই এসে হাজির হবে-
উদার কপাটে-
থামানো যাবে না তাকে কোনমতে।
ক্ষয়রোগ বাসা বেঁধেছে- চলে যেতে কীটস এর পথে। শরীরটা শেষ ঝাকুনি দিয়ে
থেমে যাবে অবশেষে- চির দুখী বিদায়ে।
ভাবতেই পারি না কোনভাবে- নাহ! মানতেই পারি না যে!
এই আলোর মতো জীবনটা, এই চৈত্রের হলকা হলকা হাওয়ার মতো জীবনটা
আমার- নাই হয়ে যাবে একেবারে!
আশা আর হতাশা, চঞ্চল কম্পন- শেষ হয়ে যাবে সব রুদ্রর সিফিলিসে-
বাতিঘরও হয়তোবা নিভে যাবে ধীরে ধীরে, মোপাঁসার মতো করে
তিলে তিলে ক্ষয় হয়ে- চীৎকারে চীৎকারে- কোন মানসিক গারদে
মৃত্যু- যখন আসার কথা তখনই আসবে-
নিমন্ত্রণ করে কোন লাভ নেই, উপলক্ষ খুঁজে-যবনিকা আসে মরণের কালে
তিনদিনের মাথায় হেনরিয়েটার সাথে যেভাবে মাইকেল মিলেছে!
মধুসুদনের জীবনটাইতো একটা মিথের মতো ছিল।
দারিদ্রে কেটেছে- ধারে দেনায় জর্জরিত হয়েছে- তবুও প্রফুল্লচিত্তে
সে বেজায় উপভোগ করেছে জীবনটাকে, বিদায়টাও নজরুলের মতোই হয়েছে
ধীরে ধীরে, ধীরে ধীরে, শূণ্য হয়ে-
বিদ্রোহী শির চলে গেছে মুক্তি পিয়ে- নত শিরে- ভূগে ভূগে, ক্লান্ত হয়ে-
প্রহসনের মতোই দাতব্যঘরে বিদায় নিয়েছে মাইকেল- বাতিহীন সাঁঝে!
জীবনানন্দের জীবনটা হারিয়ে গেল মদের চুমুকে- ট্রামলাইনে কাটা পড়ে,
তিমির হননের কবিকে- আঁধারে- ভালোই পেয়েছিল সে রাতে-
মৃত্যু কখনো কখনো না বলেই চলে আসে, হুট করে চলে আসে সময়ের মাঝপথে
তখন বনলতা সেনের মুখখানি একেবারে ফিকে হয়ে আসে।
মল্লিকাসেন বনলতা হতে চেয়েছিল নাগরিক জীবনে!
বিশাল একখানা চিঠি লিখেছিল সে-
কবি জীবন দাশ কে।
রূপসীর রূপে- গা ভিজিয়ে ভিজিয়ে ধুয়ে- চলে গেছে যে ধাঁনসিড়ি ছেড়ে-
সে কি আর ফিরে আসে! মরণপুরী থেকে!
সত্য-সুন্দর সব ভুলে গিয়ে শেলীও চলে গেছে, মরণের কাছে বিজিত হয়ে-
যৌবণে যার যুদ্ধ ছিল বিধাতার সাথে!
বায়রণ মরে গেছে গ্রীক বীর হয়ে- মরণ মুকুট মাথায় পড়েছে লর্ড- দুনিয়ার ওপারে!
আমি ভাবতেও পারি না এমন মৃত্যু- ধুকে ধুকে বোদলেয়ারের বেদনার ফুলে-
বিদায়ের শেষ মিছিলেও বিষ্টি এসে বাঁধা দেয় ঝমঝমিয়ে!
আর বেঁচে আছি-
গোর্কি হয়ে-
আধাখানা জীবনে। বেঁচে আছি কোনমতে- ফুটো হয়ে যাওয়া ফুসফুস নিয়ে।
মৃত্যু নিয়ত আমার কাছে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হয়ে আসে, আমি আশা খুঁজি
-মেরীর আঁচলে।
[সাহিত্যের হতভাগা ‘তারা (নক্ষত্র)’দেরকে উৎসর্গ-করে লেখা
কড়া কবিতা।
ভাল ছিল।
:boss:
-আলীম হায়দার.1312.