যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেশে ইতিমধ্যে একটা প্রধান ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের ভূমিধ্বস বিজয়ের পেছনেও কাজ করেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি। তারা সেটা করবে বলে এখনও ওয়াদা করে যাচ্ছে। আমরা তাদের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস স্থাপন করতে চাই।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মতোই গুটিকয় মানুষ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে আজ গোটা দেশ ঐক্যবদ্ধ। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়ে জামাত এবং এর সহযোগী বলে পরিচিত চিহ্নিত পক্ষটিও আজ তেমন জোরালোভাবে বিচারের বিরোধীতা করতে পারছে না। তাদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক বিএনপিও আজ বাধ্য হয়ে বলছে, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। বিচারে স্বচ্ছতা আমরাও চাই। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা না গেলে সেটাও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
আমাদের সিসিবি ব্লগেও এ নিয়ে জোরালো মত নানাভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এ বিষয়ে শওকত হোসেন মাসুমের গতকালের একটি পোস্টে গত ০৯ নভেম্বর, ২০০৭ দৈনিক সমকালে প্রকাশিত সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান একটি লেখার প্রসঙ্গ আমি তুলেছিলাম। বলেছিলাম এটি আজ ব্লগে দেবো, যাতে সবাই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনার সুযোগ পান।
যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিরুদ্ধ পক্ষ নানা প্রশ্ন বারবার নানাভাবে তুলে ধরছে। বলছে- এখন এর বিচার কেন, এতোদিন কি করেছেন, কেন মুজিব এর বিচার করেনি ইত্যাদি ইত্যাদি। তারা জানতে চান এর পিছনে রাজনীতিটা কি? যুদ্ধাপরাধী বিচার আসলে মুসলিম বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র কিনা?
এসব প্রশ্নের চমৎকার উত্তর দিয়েছেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। লেখাটিতে তিনি যুদ্ধপরাধ, এর বিচার প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং আইন-কানুন নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন ও নিজের মন্তব্য দিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, “আমাদের দেশে যুদ্ধাপরাধের ব্যাপারটার এমনই রাজনীতিকরণ হয়েছে যে আজ পর্যন্ত যে বিচার হয়নি তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। আমাদের এই জানাশোনার দেশে জ্ঞাতিগোষ্ঠীদের প্রতি দুর্বলতার এই বিচারের ক্ষেত্রেই প্রথম থেকেই দোলাচলতা দেখা গিয়েছে। যখন সবচেয়ে সুযোগ ছিল তখনও সম্ভব হয়নি। ৩ জুলাই ১৯৯৯ ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার- এ প্রজন্মের ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনায় প্রবীণ সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্ত (বর্তমানে প্রয়াত) সাত-পাঁচ ভেবে বলেন, ‘মাত্র ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়ে যারা নির্বাচিত হয়েছে তাদের পক্ষে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা অসম্ভব’।”
ড. ফখরুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়েই কেন যুদ্ধপরাধের বিচার সম্ভব ছিল তার একটা ব্যাখ্যা লেখাটিতে দিয়েছেন জনাব রহমান। তবে বর্তমান সরকারের সময়েও এ লেখা প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। তার মত হচ্ছে, “র্বতমান সরকার ভোটের জোরে আসনি। তাদের ভোট হারাবার ভয় নেই। তাঁরা ইতিমধ্যে বেশ কিছু ভালো কাজ করছেন যা এতাবৎকালের সব নির্বাচিত সরকার নানা রকম পাঁয়তারা করে ব্যাহত করে রাখেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এ সরকার না করলে আর হবে না। জন্মসূত্রে বাংলাদেশিদের কেবল প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিচার করা যায় না। এ ব্যাপারে সরকারকে বাদী হতে হবে এবং নিষ্ঠার সঙ্গে তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করে এসপার-ওসপার করতে হবে। বিচার শুরু হোক, রায় যা-ই হোক আমরা মেনে নেব।”
মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের লেখাটির পিডিএফ ফরমেট এখানে আছে।
১ম B-) B-)
লাভলু ভাই লিঙ্ক এ ক্লিক করলে বলতেসে
আমরাও এর বিচার চাই x-( x-(
ভাই ধন্যবাদ এই পোষ্ট এর জন্য 🙂
দুভাবে দিয়েছি। পিডিএফ এবং পত্রিকার লিংক। এবার তো না আসার কথা নয়। লেখাটি স্বাভাবিক কারণেই বড়। তবে ধৈর্য্য নিয়ে তোমরা পড়বে বলে আমার বিশ্বাস। এতে বিষয়টার পূর্বাপর বিশ্লেষণ পাবে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ভাইয়া ব্লগের attachment টা আসতেসেনা 😕
বুঝতে পারছি না। আমার তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কামরুল, জিহাদ নিশ্চয়ই সমস্যার সমাধান দিতে পারবে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ঠিক করে দিয়েছি।
এখন আসছে। 😀
এইডা এক্টু শিখাইয়া দিও। 😀 😀 😀
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
😮 😮 আরে ডাউনলোড হই গেলোতো 😀
আপলোড করার পর insert into post এর উপরে অপশন আছে file url আর post url ।
আপনি সম্ভবত post url দিচ্ছেন। এটা দিতে হবে file url । তাহলেই হবে। 😀
নাকি আপনি অন্যভাবে আপ্লোড করেন ? 😀
2nd, এইবার পইড়া আসি।
সহমত। :thumbup:
বিচার প্রক্রিয়া যদি স্বচ্ছ থাকে যে কোন রায়ই আমরা মেনে নেব...
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
একমত। ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এ-বিষয়টার সুরাহা প্রয়োজন।
নিরপেক্ষতার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের হেল্প নেয়া যায় কি?
জাতিসংঘ এখানে প্রয়োজনে পর্যবেক্ষক থাকতে পারে। তবে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার জন্য আমি মনে করি প্রকাশ্য হতে হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ভালো হবে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাই
একটা জিনিস আমাকে একটু বুঝাইয়া দিবেন?
জামাত কেন এর মধ্যেই জাতিসংঘের আশ্রয়ের জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে ? জামাতের দৈনিক প্রত্রিকা সংগ্রাম-এর প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম নিবন্ধে বাংলাদেশে জাতিসংঘের সমন্নয়কারী রেনাটা লক-এর ভুয়সী বন্দনা করে জাতিসংঘকে জড়িত করার পক্ষে হৈ হৈ করে ওকালতি করা হচ্ছে (১ ফেব্রুয়ারী ২০০৯), এবং কেন জামাতি নেতা কামরুজ্জামান বলেছেন শুধু জাতিসংঘের বিচারই তাঁরা মেনে নেবেন।
আমরা তো জামাতের বিচার চাইছি না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইছি। কিন্তু ওদের বিবৃতি শুনে মনে হচ্ছে 'ঠাকুর ঘরে কেরে, আমি কলা খাই না'।
আর ভাবখানাও এমন যে ফাঁসীর রায় মানার বা না মানার অধিকার খুনীর আছে।
আর জাতিসংঘকে জড়িত না করে কি আমরা আমাদের গণহত্যাকারীদের বিচার করতে পারব না ?
যে দেশে ৯২০টি জানা ও বহু অজানা বধ্যভুমি, যেখানে ক’মাইল হাঁটলে পায়ে বেঁধে মানুষের হাড়, সে দেশে কোটি কোটি ভুক্তভোগীরা বেঁচে থাকতে লক্ষ লক্ষ ধর্ষিতা মা-বোনেরা বেঁচে থাকতে প্রমাণের অভাব? মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ষোল খন্ডের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও হাজার হাজার বই থাকতে প্রমাণের অভাব? আমাদের গ্রাম-গঞ্জের গণহত্যার বিচার আমরা পারব না, হাজার মাইল দুরের বিদেশীরা পারবে?
না - আমরাই পারব।
:thumbup: :thumbup: :thumbup:
কামরুল ভাই একদম মনের কথা বলছেন। আমার মতে যদি বিচার হয় তবে আমরাই করতে পারবো। কোন জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক সংগঠনকে লাগবে না।
শিয়ালের কাছে মুরগী বন্ধক দিবা?
তবে আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার জন্য জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের এড়ানোর উপায় মনে হয় নাই...
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
আমি একটু কম কম বুঝি, বিচার করে ওদের শাস্তি হোক এটাই চাই।
:gulli2: গুল্লি করা হউক।
বংগবন্ধু শেখ মুজিব কে গত গালি দিছি ঐ '...' বাচ্ছাদের সাধারণ ক্ষমা করে দেবার জন্য...এখন বুঝতে পারছি, তখনকার পরিস্থিতিই অন্যরকম ছিল...
সানা ভাই, পত্রিকার লিংক থেকে লেখাটা পড়লাম... আমার মনে হল খুব বেশি কিছু আশা করা ঠিক হবে না...এত প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আমরা কি শেষ পর্যন্ত বিচার পাব???? তাও যথাযথ বিচার????
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
সহমত :thumbup:
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
আমি খুব একটা আশাবাদী না । দেখা যাক কি করে বর্তমান সরকার । লাবলু ভাই কে ধন্যবাদ আর্টিকেলটার জন্য । বিচার হোক না হোক আমাদের বর্তমান প্রজন্মের সত্য জানতে হবে । আর সেটা জানতে আপনারা আমাদের দিক নির্দেশনা দিবেন । আপনাকে :salute:
সহমত। নিদেনপক্ষে জাতির শত্রুকে যাতে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিতে পারি, আমরা ওদের ঘৃণা করি।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
এবারের স্লোগানঃ
"যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হোক"
:thumbup: :thumbup:
(গাজার গনহত্যা বন্ধের দাবীর মতো আমাদের এই ব্লগেও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রতীকি অবস্থান নেয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি, বর্তমান শহীন মিনারের পাশাপাশি ডানপাশে এ ধরনের স্লোগান/প্রতীকি অন্য কিছুও দেয়া যেতে পারে)
উপরের ব্লগ somewhereinblog এ মিরাজ লিখেছেন । আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন । প্রাসংগিক মনে হল তাই দিয়ে দিলাম ।
অসাধারণ ক্যারেক্টারাইজেশন!
আসলেই আমরা অনেকদিন পর পর গাল পাড়ার জন্য জাইগা উঠি...তারপর আবার বছর দশেকের জন্য ঘুমায়া যাই...
এইবার চাকু চালাইতে হবেই...নইলে আর কখনো মনে হয় পারবো না...
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
বিচারপতি মশাই আইনের মেলা প্যাচ-ঘোচ উল্লেখ করেছেন দেখছি।
আমি এত কিছু বুঝি না। বিচার চাই, ব্যাস। নিরপেক্ষ বিচার চাই। ফাসি হলে ফাসি, মাফ হলে মাফ, এইটা মেনে নেব। তবে "বিচার হয় নি, বিচার করতে পারি নি আমরা" এই অপবাদ থেকে মুক্তি চাই।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমি একটু অন্যভানে আইনি জটিলতার ব্যাপারগুলো দেখি। পৃথিবীর সকল দেশের আইনি প্রক্রিয়ায় একটা ব্যাপার আছে, তা হল পলিসি(public policy)। অনেক বিখ্যাত কেসে মানবাধিকারকে পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র জনসাধারনের ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য কোর্ট ডিসিসন দিয়েছে। কিন্তু আমাদের পরিস্থিতিটা এমনও না যে আমাদের মানবাধিকারকে পাশ কাটাতে হবে। চিলির আগাস্টো পিনোশের বিচার কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবির ফলশ্রুতিতেই হয়েছিল এবং ব্রিটিশ আইনে এই কেস অন্যতম আলোচিত একটি কেস বলে বিবেচিত। এই কেসে মানবাধিকারকে সবার ওপরে স্থান দেয়া হয়েছিল এবং বিচার যাতে কোনরূপভাবে বেআইনিভাবে না হয় তাই একজন সম্মানিত বিচারককে এই মামলা হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। তাই আমার বিশ
দুঃখিত।*তাই আমার বিশ্বাস কোনরূপ অবিচার ছাড়াই যুদ্ধাপরাধিদের বিচার করা সম্ভব।
শার্লি,আইনী দিকগুলা আমাদের সাধারণ পাঠকদের জন্য সহজ করে লিখে একটা পোস্ট দেয়া যায় কিনা দেখিস তো...
:clap: :clap: :clap: :clap:
Life is Mad.