সবার ঈদ কত দিনের আমি জানি না, কিন্তু আমার ঈদ আমার ক্যাডেট কলেজের বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি শেষ হওয়ার সাথে সাথে শেষ হয়ে যায়। আজ আমার ঈদ শেষ। প্রতিবার এই ঈদ শেষ হওয়ার পর কি করব বুঝতে পারি না। কিন্তু আজ আমি জানি আমার একটা দায়িত্ব আছে, আর তা হল সিসিবিতে সবাইকে জানানো যে আমার ঈদ কেমন গেলো। এমন নয় যে সবার খুব জানতে ইচ্ছা করছে কিন্তু আমার খুব জানাতে ইচ্ছা করছে।
যেহেতু কোরবানি ঈদ তাই সকাল থেকেই গরু গোসল করানো থেকে শুরু করে জবাই,চামড়া ছাড়ানো,গরু কাটা এবং আত্মীয়দের বাড়িতে মাংস পৌঁছানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় অনেকটা সময়। এবার আমরা কোন কসাই পাই নি তাই সব কাজ আমাকে এবং আমার ভাইকে করতে হয়েছে। হাতের বেশ কিছু স্থানে কেটে যায়, কিন্তু সেটা তোয়াক্কা না করেই আমরা কাজ করে যাই। অবাক্ হলেও সত্য মাত্র ৩ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের মাংস কাটা শেষ হয়ে যায় এবং ৩.৩০ এর মধ্যে সব আত্মীয়দের(যারা কাছাকাছি থাকে) বাড়িতে মাংস পৌঁছানো শেষ হয়ে যায়। ৪.৩০ তে আমাদের কলেজের মাহবুব ফোন করে বলে যে ৫টার মধ্যে সেজান পয়েন্টে থাকতে। তাড়াহুড়ো করে চলে যাই। ৯টা পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে যখন আমরা উঠবো উঠবো করছি তখনই প্ল্যান হল যে আমার বাসায় রাতে থাকবে জাকারিয়া,মাহবুব,জাহিদ আর আরেফিন। ভোর ৫.৩০ পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে আমরা ঘুমাই আবার সকাল ৯টায় উঠে পড়ি। কারণ আজ ইমতিয়াজের বাসায় যাব। আমাদের ৫ জনের পাশাপাশি মাহমুদ,রওনক এবং সাবরিও গিয়েছিলাম ইমতিয়াজের বাসায়। সবাই মিলে যখন ইমতিয়াজের বাসায় যাই তখন মোটামুটি উৎসব শুরু হয়ে যায়। ৯জন ক্যাডেট যখন ইমতিয়াজের বাসায় আড্ডা দেয়া শুরু করলাম তখন আমি খুব অবাক্ হয়ে ভাবছিলাম যে ওর বাসার কেউ কিছু বলছে না কেন। একটু পরে বুঝতে পারলাম যে কারণ হল এরকম অত্যাচার সহ্য করার অভ্যাস ওর বাবা মায়ের হয়ে গেছে কারণ ওর বড় ভাইও জেসিসির এক্স ক্যাডেট।
খাওয়া দাওয়ার পর যথারীতি আমরা সিগারেটের জন্য উসখুস করতে লাগলাম। এর মধ্যেই মনে হয় সবচেয়ে বুদ্ধিমানের মত প্রস্তাব করল রওনক। প্রস্তাবটা ছিল বাউনিয়া যাওয়ার। আপনারা যারা বাউনিয়া যান নি কখনও তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, উত্তরা হাউস বিল্ডিং-র একটু আগে জসিমুদ্দিন রোড ধরে ভেতরের দিকে ১৫ টাকা রিকশা ভাড়ার পথ গেলেই বাউনিয়া। অতঃপর আমরা ইমতিয়াজের বাসা থেকে বিদায় নিয়ে সবাই এক সাথে বাউনিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। জায়গাটা আমার প্রচণ্ড পছন্দ হয়েছে। কারণ একটাই, আর তা হল এইখানে মাথার মাত্র কয়েক গজ উপর দিয়ে প্লেন ল্যান্ড করে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। মনে হয় যেন হাত তুললেই প্লেনটি ছুঁয়ে ফেলা যাবে। আর প্লেনের শব্দ যেন হৃদয়ের মধ্যে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়ে যায়। বুকের মধ্যে গমগম শব্দ যেন ঢেউ দিয়ে ওঠে। আমি জানি না অন্য কেউ জায়গাটাকে কতটা পছন্দ করবে কিন্তু আজ হতে বাউনিয়া ঢাকা শহরের আমার সবচেয়ে প্রিয় স্থান গুলির একটা হয়ে থাকবে।
এত কিছুর মধ্যে পাগলামির কথাতো বলাই হয়নি। সব ঘটনা বলা হয়তবা সমীচীন হবে না, তাই একটার কথাই বলি। বাউনিয়া থেকে ফেরার পথে হঠাৎ আমাদের এক বন্ধুর নম্বরের চাপ দেখা দিল। সে বলেই দিল যে সে আর পারছে না এবং কাপড় নোংরা হওয়ার সম্ভাবনা নাকি আছে। আমরা প্রথমে পাত্তা না দিলেও পরে দেখলাম ছেলেটা ঠিকমতো হাটতেও পারছে না। আমরা বুঝলাম যে অবস্থা খারাপ এবং অশনিসংকেতমুলক। তাই লজ্জার মাথা(আমাদের আছে নাকি তা যদিও প্রশ্নবিদ্ধ) খেয়ে তার জন্য টিস্যু খুঁজতে গেলাম। খুঁজে না পেয়ে হোটেলে গিয়ে কাগজ চাইলাম। হোটেল মালিক একটা কাগজ দেয়ার পর যখন আমরা দ্বিতীয় কাগজ চাইলাম তখন তিনি দিতে অসম্মতি জ্ঞাপন করলেন। আমরাও নাছোড়বান্দা, জোরাজুরি করে দ্বিতীয় কাগজও জোগাড় করে ফেললাম। অতঃপর আমাদের বন্ধুটি অন্ধকার স্থান খুঁজে কর্মটি সমাধা করল।
যাই হোক, এভাবেই আমার এবারের ঈদ কাটল। প্রতিবারই আমরা সবাই মিলে ঈদে এভাবে ঘোরাঘুরি করি, আর প্রতি ঈদই অন্যরকম হয়। আশা রাখি প্রতি ঈদ এভাবেই সবার সাথে শেয়ার করতে পারবো।
উকিল সাব,
অন্ধকার জায়গা গান্ধা করার শাস্তি জানেন তো ??
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
=)) =))
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কেন ভাই আপনি জানেন নাকি? 😀 আমার জানা নাই, জানা থাকলে জলদি জানান।
বসন্তী ... রঙ দে
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
জ্বী ভাই আমাদেরও ঠিক তাই মনে হচ্ছিল।
শার্লী, হোটেলে গিয়ে "টিস্যু" না খুজে "টয়লেট" খুজলে মনে হয় অন্ধকার স্থানে, কাগজ ব্যবহার করে কর্মটি সমাধা করতে হতোনা। ;))
আরে রহমান ভাই...হাজার হোক...ক্যডেট না...সব জায়গায় বদমাইশি না করলে ত চুলকায়...
রহমান ভাই ওই এলাকার হোটেলগুলা খুবই খারাপ, সেখানে টয়লেট নাই।
সুরি ভাই সুরি, 🙁 আমি অবশ্য ওই এলাকায় আগে কখনো যাইনি তো তাই বুঝতে পারি নাই। :no: ভবিষ্যতে কখনো বাঊনিয়া গেলে সাথে করে টয়লেট টিস্যু, লিকুইড সোপ আর পানির বোতল নিয়ে যাব। :-B এই ঘটনাটা আমার জন্য গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে। অনেক ধন্যবাদ 🙂
😀 😛 ঈদটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে মনে হচ্ছে 😀 😛 ।
Life is Mad.
ভাই কলেজ থেকে বের হওয়ার পর সবগুলো ঈদই স্মরনীয় হয়ে আছে এবং থাকবে। ক্যাডেট কলেজ ও আমার বন্ধুদের সবাইকে :salute:
তুই তো বেটা আমাগো কসাইয়ের চেয়ে এক্সপার্ট!বেটা পাক্কা ৪ ঘণ্টা নিছে গরু বানাইতে x-(
ওকালতির পাশাপাশি কসাইগিরি করবি কিনা ভাইব্বা দেখ,শার্লি দা বুচার নামডা তোরে জোস মানাইবো 😛
ভাই আগামী কোরবানির ঈদ দেশে কতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে। যদি সব কিছু ঠিকঠাক মত চলে তবে তখন আমি বাইরে। 🙁
কিন্তু যদি দেশে থাকি তয় আপনার কোরবানিতে আশা রাখি সাহায্য করতে পারব, তবে অবশ্যই লেনদেনের ভিত্তিতে(উপরি কিছু বকশিশ তো আছেই :grr: :grr: )।
আমি মাশরুফ ভাই এর লগে এক্কারে একমত। বন্ধু তরে ভালই মানাইবো। লিখাটা অসাধারন হইছে। প্রতিবার ঈদ এর পর সবাই বলে ঈদ নাকি উপভোগ করতে পারেনি। এটা যদি কোন ক্যাডেট এর কাছ থেকে শুনি তাহলে খুব আফসোস লাগে তার জন্য। এমন বন্ধুসকল পেয়েও যদি কারো ঈদ খারাপ কাটে তাহলে তার মত হতভাগা আর কে হতে পারে??? কেউ আমার কথাগুলো ব্যাক্তিগতভাবে নিলে আমি দুঃখিত। কিন্তু আমি আমার এই বন্ধুদের কথা এক বুক গরব নিয়া সবাইকে জানাতে চাই।
😀 😀 :)) :)) =)) =)) :khekz: :khekz: :goragori: :goragori:
জাহিদ কি কথার সাথে কিসব ইমো দিছিস! তুই একটা_________ :grr: :grr:
বুঝিস নি, কেন দিসি?
শার্লী...তোর মধ্যে এত প্রতিভা...???? 😮 😮 😮
৩ ঘন্টায় !!!!! :salute: :salute: :salute:
যাউক...একটা চাপা মারলি ক্যান...??? কোন বন্ধুর হইসে কাহিনীটা...??
কইলেই পারস অইডা তুই ছিলি...
ইয়ে, মানে, 😛 এই লেখাটা পড়ে আমারও না সেইম ডাউট হচ্ছিল। 😉 ছোডু ভাই মাইন্ড করতে পারে দেইখা বলি নাই 😉
না রেজওয়ান, এভাবে হাটে হাড়ি ভাংগা তোমার উচিৎ হয় নাই। শার্লীরে সরি বল তাড়াতাড়ি 😡
বস ওর লগে তো issb এর আমল থেইকাই আমার লগে দা-কুমড়া চলতাসে... 😀 😀 :grr: :grr: :grr:
আসলে জনসম্মুখে অর ঢিলা ঢালা ট্রাউজার দেইখা লোভটা সামলাইতে পারছিলাম না... 😛 😛 😛
সেই থাইকা আমরা প্রানের বন্ধু...কি কস শার্লী 😕 😕 😕 😕
রেজওয়ান, দূরে আছস দেইখা কিছু কইত পারলাম না নাইলে আজ তোর খবর আছিল। :chup: :gulli2: :awesome:
যাই হোক কাজটা আমার বন্ধুই করছে, আর সবাই যদি আমাকে মুক্ত বাতাসে কর্মসাধনকারী ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চায় তাহলে আমি আর কি করতে পারি। 🙁 🙁
আর রেজওয়ান ISSB এর কথা কেন মনে করায়া দিস। শুধু কি আমার কাহিনী আছে নাকি তোর ও আছে মনে কইরা দেখতো। একই গ্রুপেইতো আসিলাম। :grr: :grr:
😕 😕 😕 😕 😕 😕 😕 😕
আয় না বন্ধু, কোলাকুলি করি... :hug: :hug: :hug: :hug:
😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀