কলেজের হিন্দী গান

রুমমেটের পিসিতে ‘সুর’ এর গান বাজছে, জানে কেয়া ঢুনতা হ্যায়…হাবিজাবি হাবিজাবি …শুনেই মন উড়ে যাচ্ছে বারবার পাঁচ ছয় বছর আগে…সম্ভবত ইলেভেনে থাকতে এইগানগুলা খুবই জনপ্রিয় ছিল আমাদের মাঝে। তু, দিলকি খুশি দিলকি পেয়ারে তুউউউ…শুনতে শুনতে আর ঝুটি দুলাতে দুলাতে সেভেনের মেয়েগুলো ব্লক পেরিয়ে প্রেপে যেত। আমরা কমন রুমে ক্যাসেট বদলাতাম, এরপর আসত আও নাআআআ…ফাংশনগুলার সময় খুব রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে গেল দেবদাসের ডোলা রে ডোলা রে। হৃত্বিক রোশনের বুমরো বুমরোকে নিয়ে মুনা আপারা প্যারোডি বানিয়ে ফেললেন, বুম মারো বুম মারো…গভীর রাতে হাউস ম্যাগাজিনের কাজ করার সময় হাউসের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে যেত শানের গুমসুম হ্যায় কিউ…।এই গানের নুপুরের মতন শব্দটা শুনতে তখন যে কি ভালো লাগত…

আমরা যখন ক্লাস এইট কি নাইনে, তখন স্পোর্টসে জনপ্রিয় ছিল একটা গান, এখন মনে পড়ছে না, শুধু মনে আছে ও চাল্লি ও চাল্লি বলে একটা লোক খুব দরদ নিয়ে গেয়ে যাচ্ছে। এরপর থেকে যতবারই এই গান শুনেছি, স্পোর্টস এসে উকি দিয়ে গেছে মনে, বিপাশা আপাদের লাস্ট মোমেন্টের ক্যাল্কুলেশন, তারপর সবার মন খারাপ হয়ে যাওয়া…এবারও থার্ড হচ্ছি আমরাই। ক্লাস নাইনে ও মারিয়া ও মারিয়া গেয়ে মারিয়া আপার কাছে ধরা খেল অর্চি। ‘মুসু মুসু হাসি’ কে প্যারোডি বানায়ে মৌলি পিটির কোরিওগ্রাফী বানাল। এক্সকারশনের সময়ের গান ছিলো তিন বন্ধুকে নিয়ে কি জানি একটা মুভি ছিল, সেটার গান, আর আরও কি কি জানি গান। এই মুহুর্তে নাম মনে পড়ছে না।

কলেজ থেকে বের হওয়ার ঠিক আগ দিয়ে কিংবা ইলেভেনে, হলো ইন্ডিয়ান আইডল। সেখানে অভিজিৎ সাওয়ান্তের কিংবা অমিত পাল (সম্ভবত এই নামই ছিল), এর গাওয়া একটা বিরহ টাইপ গান ছিল। আর একটা ছিল বিবেক ওবেরয়ের কিসনা মুভির গান, হাম কি জানি পাল ইয়াহা…এই দুইটা গান শুনলে পারলে চোখে পানি এসে যায় টাইপ অবস্থা…

কলেজে যাওয়ার আগে গানটান তেমন শোনা হয়নি। বয়জোন আর বিএসবির কয়েকটা গান ছিল বাসায়, আর কিছু চিরায়ত বাংলা গান, এই ছিল আমার দৌড়। ইন্সট্রুমেন্টাল বলে কিছু আছে, জানতাম না। কলেজে গিয়ে প্রথম হিন্দী সিনেমা দেখেছিলাম সম্ভবত। সেখান থেকেই হিন্দী গান শোনা শুরু, শেষও সেখানেই। তবে কলেজেই বাংলা সব ধরণের গান শোনার অভ্যেস শুরু হয়েছিল। এখন হাতের কাছেই বাংলা গানের এত বিবিধ আর এত সুন্দর কালেকশন, যে হিন্দী শুনতে হয় না খুব একটা। কেবল কাজ করার সময় শোনা হয়। তাও একটাই মাত্র ফোল্ডার, ওয়েইক আপ সিড। যাকে নামায় দিতে বলেছিলাম গানগুলা, সে আবার ফোল্ডারের নাম দিয়েছে, ওয়েইক আপ স্যাম! আমি ওই নামই রেখে দিয়েছি। মাঝে মাঝে ঘুম থেকে জাগার জন্য এই গান শুনতে ভালই লাগে 😀

৭,১০১ বার দেখা হয়েছে

৭৮ টি মন্তব্য : “কলেজের হিন্দী গান”

  1. শাহরিয়ার (২০০৪-২০১০)

    এখনকার দিনে ক্যাডেট কলেজের টিভি রুম কাপায়9XM !কিছু ভাইয়া ছিল,উনারা "কম সময়ে বেশী মজা"র জন্য দেখতো হিন্দী সিনেমার ট্রেইলার দেখতো... :awesome: :awesome:
    বাদশাহ ভাই আর ভিগি বিল্লিরে মিস করি... 🙁 🙁


    People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.

    জবাব দিন
    • সাব্বির (০৩-০৯)

      কলেজে টিভি রিমোট হাতে পাওয়া -আর দ্যাশের রাজা হওয়া ...একি কথা ছিলো !! :)) ১০০ বার চ্যানেল চেঞ্জ 😡
      9XM আর B4U...গান আর ট্রেইলার ...আহা , কি সুখ :guitar:
      এমন দিন ও গেসে...যেদিন "বাচনা এ হাসিনো" B4U তে গুনে গুনে ২১বার দেখাইছে !! প্রতিবার দেখি আর বিরক্ত হই, এরপর আবার দেখি , আবার বিরক্ত হই 😛

      জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    অনেকদিন পরে সামিয়া... লেখা ভাল লাগল। আমরা বেশিরভাগ হিন্দিগান গুলোরই বাংলায় নিজেদের ভার্সন করে নিতাম।

    তা দিল্লি আর কতদূর? এখনো পৌছতে পারলে না !


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. তাইফুর (৯২-৯৮)

    কত দিন "ফুল ভলিউমে গান সাথে চিল্লায়া গলা মিলানো" হয় না ...
    অনেক কিছু মনে পিরা গ্যাল ...
    থ্যাঙ্কু স্যাম ...
    লেখা ভাল লাইগছে ...


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  4. আব্দুল্লাহ্‌-আল-আমীন (৯৮-০৪)

    ......"বুম মারো, বুম মারো" এই প্যারোডি তো আমাদেরও ছিল ।।।

    ......হায়রে হিন্দী গান। সারাদিন তো কমন রুমেই পইড়া থাকতাম। ক্লাস ইলেভেনে ছিলাম ১১ নাম্বার রুমে, দরজার বাইরেই ছিল কমন রুম। গানের আওয়াজ পাইলেই দৌঁড়। আহা কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।

    ......কোন প্রিফেক্টশিপ এর ধারে-কাছেও তো যাইতে পারি নাই, কিন্তু পুলাপাইন আমার কমন রুম প্রীতির জন্য "টি ভি প্রিফেক্ট" বানাই দিল। আদর কইরা ডাকত "ট্যাপা"। ক্লাস ১২ এ তিতাস হাউসে নতুন টি ভি আসল, সেইটা উদ্বোধন করছি আমি। রিমোট টাও আমার দখলেই থাকত। 🙂 😀 B-)

    জবাব দিন
  5. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    পৃথিবীর শ্রেষ্ট হিন্দী গান হইলো মুন্নি বদনাম হুয়ি ডার্লিং তেরে লিয়ে... এইটা যে দেখে নাই তার জীবন বৃথা :grr:
    আমার তো এখন এই গান না দেখলে কাজে মন বসেনা :grr:


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  6. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    আমাদের সময়ে ''হাওয়া হাওয়া ও হাওয়া খুশবু লুটা দে" হেভি চলেছিলো বেশ কিছুদিন।
    তারপর তেজাবের " এক দো তিন..."
    তাছাড়া কেউ কেউ পুরানা জমানার গান গেয়ে ভাড নেবার চেষ্টা করতো। তখন তো কেব্‌ল বা ডিশ আ্যান্টেনা ছিলোনা। সেটা ছিলো ভিসিপি/ভিসিআর এর যুগ।
    ভিডিও ক্যাসেটের রেকর্ডিং এর কারণেই কি না জানিনা, কথাগুলো ভালো করে বুঝতে পারতামনা। আর শ্রীদেবী, মাধুরী সবাইকেই একইরকম মনে হতো, আলাদা করে চিনতে পারতামনা।
    কিছু আঁতেল পোলাপান আবার 'নিকাহ্‌' টাইপের কঠিন ছবি (রাজ বাব্বর, সালমা আগা)-র গান গেয়ে হালকা ভাব নিতো।

    তবে হিন্দি ছবির গানে পুরোপুরি ভেসে যাবার মতো সময় বাংলাদেশে তখনো আসেনি। তখন বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকের স্বর্ণযুগ। সোলস্‌, ফিডব্যাক বেশী জনপ্রয় ছিলো। আর পোলাপান শুনতো ইংরেজি গান। একটা শব্দও বুঝতামনা ( এখনো বেশীর ভাগ ইংরেজি গান বুঝিনা লিরিকস হাতে না থাকলে), তবু লাফাতাম। ভালো লাগতো। বিট, সুর, তারুণ্যের উদ্দাম প্রকাশ টানতো। সেই তুলনায় ভিসিপিতে
    মুভি শো্র সময় হিন্দি ছবিতে গানের প্রকোপ টানতোনা তেমন। কারণে অকারণে বৃষ্টি আর বিচিত্র কসরত (মতান্তরে নাচ) আমার বেশ অশ্লীল লাগতো।

    এখন হিন্দি বুঝি বলে হিন্দি ছবির গানের ভান্ডার অনেকটাই দেখা জানা হয়েছে, ভালো লাগে খুব। তবে ক্যাডেট কলেজ জীবনে হিন্দি গানের সংগে পরিচয়টাকে (সাপ্তাহিক মুভি শো-র মাধ্যমে) আমি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন হিসেবেই দেখেছি। কথা বুঝিনা, সুর বুঝিনা, গল্প বুঝিনা ---- তবুও কি দেখতেই হবে আমিতাভ, অনিল কাপুর দের ছবি?

    জবাব দিন
  7. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    রঙ্গিলা সিনেমাটার "পেয়ার ইয়ে জানে ক্যায়সা হ্যায়" গানটা অসম্ভব ভালো লাগত ... প্রেপের সময় মাঝে মাঝেই আমাদের মাসুমকে ডিস্টার্ব করতাম ক্যাহনা হি ক্যায়া গানটা গাইবার জন্যে ....... তারপরে শেষের দিকে মুসু মুসু হাসি আর ওহ প্যাহলিবার এই গান দুটোও বেশ ভালো লেগেছিলো৷

    দেখি সময় করে সেই সময়ের গানগুলো আবার খুজে বের করতে হবে৷

    আর সামিয়া, আমি সিরিজ খেলাপ নিয়ে কোনো ইংগিত করতে চাচ্ছিনা, তবে আমার মনে হয় হেটে হেটেই এত দিনে মানুষ কলকাতা থেকে দিল্লী পৌছে যেতে পারে৷

    জবাব দিন
  8. মেলিতা

    ছাত্রীহলের ৩০৪ এ আমাদের অতন্ত্য প্রিয় আপু ছিলেন। উনি ইনডিয়ান আইডলে অমিতসানার "জিন্দেগীমে কই কাভি " শুনে এর বাংলা ভেবেছিলেন "জীবনে কেউ আসেনা কেন? আস্লে যায় না কেন?"

    জবাব দিন
  9. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    আমাদের একাডেমিক ভবনের পাশে একেবারে বাউন্ডারী দেওয়াল লাগোয়া একটা বাড়ি ছিল সেখানে কিছু যুবক ভাই থাকতো। বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে তারা 'আবহে যুদাইকা মৌসুম' কেয়ামত সে কেয়ামত তাকের গান লাগিয়ে দিতো। সবাই আর ক্লাস কী করবে উদাস নয়নে সে গান শুনতে থাকতো। গানের সে আবেদন ভোলার নয়। আর চাঁদনীর গানগুলোও সুপারহিট ছিলো। এই তো --- গান বদলে যায়, মানুষ বদলে যায় কিন্তু ক্যাডেট কলেজের প্রাচীলের মাঝে অনুভূতিগুলো চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। নতুন নতুন গানের বাহনে একই কিউপিড একই জায়গায় তীর ছুরে মারে। প্রতিবারই বিদ্ধ হয় নতুন কেউ।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
  10. রকিব (০১-০৭)

    আমাদের সময় চলতো B4U, আর ফ্রি নাইটের হিন্দি সিনেমাগুলোর বদৌলতে মোটামুটি কম বেশি গান শোনা হয়েছে। যদিও ক্যাসেটে যা শোনা হতো তার সিংহভাগই ছিল বাংলা আর কিছু ইংরেজি গান। কিছু পোলাপাইন অবশ্য ধাতব গানবাজনা (হার্ডকোর মেটাল 😕 ) শুনতো। আমি চিল্লানি আর বেইজের আওয়াজ ছাড়া কোনকালেই কিছু বুঝতে পারি নাই। :((
    দুটো হিন্দি গানের কথা মনে আছে, যারা যারা বেহেকতা হ্যায় আর শেষের দিকে এসে রাং দে বাসন্তি'র মাস্তি কি পাঠশালা বেশ ধুমিয়ে গাইতো পোলাপাইন।

    আমি আবার বেশ ভালোই গাইতাম গান টান (যদিও কেউ কেন জানি শুনতে চাইতো না)।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  11. রবিন (৯৪-০০/ককক)

    ইশ মনে পড়ে গেলো ডিডি চ্যানেলে কি বারে জানি হইতো এক সে বারকার এক। দেখার জন্য প্রেপ থেকে কি দৌড়। আর "টিপ টিপ বারসে পানি" আর রাবিনা । আহা। আর রাংগিলা এর সেই গান। :grr:

    জবাব দিন
  12. তানজিনা মেহেদী অমী (অতিথি)

    tin bondhur dui ta e cinema ace hindi te: dil chahta hai ar 3 idiots. Dil vil pyar vyar a o 3 nayok, tobe tara bondhu ki na ta janina ami. "aaona, aaaaaooooona...." gaan ta mathai asce, kintu chokhe asce na. eta kon movie er gaan- nayok nayika ke! Kisna er gaan ta holo-
    hum hai is paal yahaan,
    jane ho kal kaha?
    hum mile na mile,
    hum rahe na rahe-
    rahenge sada yahaan
    pyar ke ye daastan-
    sunenge sada ise, ye jameen aasmaaa.....

    amar boro priyo gaan!

    nostalogic hoye gelam re Sam! koto koto priyo gaan.... sur er kabhi shaam dhale to meri dil me aa ja na, pukar er kismat se tum hum ko mile ho kaise chorenge, saathiyar chupke se laag ja gale (Tumpa apu, maaf kore diyen, apnar pasher room a 24/7 ei gaan high volume a shune koto kosto diyeci pura ek term!)....saaya-r aye meri jindegi tum meri saath ho, aro koto ki!

    Tobe best hindi song holo Yaahan movie-r .

    puche jo koyi meri nishani
    'rangheena' kahna.

    jara shonen ni, plz miss korben na.

    জবাব দিন
  13. আয়েশা ( মগকক) আয়েশা

    তোমার লিখা কলেজের কথা পড়তে খুব ভালো লাগলো।ধন্যবাদ তোমার পোস্টটার জন্য। :boss:
    যখন কলেজে প্রথম যাই তখন কলেজে ডিশ ছিলনা। ছুটিতে আসার পর নতুন কলেজ কেমন লাগছে জেনারেল আইনুদ্দিন আঙ্কেল ( তৎকালীন mymensing ডিভিশনের প্রথম জি ও সি ) জানতে চাইলে স্পষ্ট বলে দিয়েছিলাম যে ওখানে ডিশ নেই। এরপর টার্ম দু'এক বাদেই আমরা ডিশ পেয়েছিলাম। তখন আমাদের সব ক্যাডেটদের মনে আনন্দ আর ধরেনা! আমরা জি টিভিতে ফিলিপস টপ টেন দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকতাম. আজও কখনো যদি রাহ মে উনসে মুলাকাত হ গায়ি, 1942 a love স্টোরি, বা মহরা র কোনো গান শুনি....মনে হয় হাউজের কমন রুমে বসেই শুনছি।ও আরেকটা মুভির কথা মনে পরছে.. "ফের তেরে কাহানি ইআদ আয়ি"- এই মুভির "তেরে দার্পার সানাম" এবং "বাদালোমে ছুপ্রাহাহে" আমাকে মুখস্ত করতে হয়েছিল- সিনিয়ার আপুদের শোনাতে হত।

    জবাব দিন
  14. আদনান (১৯৯৭-২০০৩)

    সামিয়া তোমার স্মৃতিচারণমূলক লেখা খুব খুব খুব ভাল লাগল।

    হাউজে গান শোনার গ্রুপ ছিল তিনটা -- ১)বাংলা ২)হিন্দি ৩)ইংলিশ। বাংলা বেশিরভাগ ব্যান্ড মিউজিক চলত। ইংলিশ হয় বয়জোন, ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ, এবং পরের দিকে শাকিরা, ব্রিটনি, জেলো'র গান চলত (পপ ঘরানার গান আর কি)। আর হিন্দির কথা না হয় না-ই বললাম; ওটা তো যে সময় যে সিনেমা হিট সেটার গানেই শোর হয়ে থাকত।

    ৯৮-৯৯ এর দিকে আর্ক-এর জন্মভূমি এ্যালবাম টা খুব বাজতো। মনে আছে অান্দালিব ভাইরা যখন টেন-এ, তখন ক্লাস ফাংশনে তাঁরা "যা রে যা" গান টি গেয়েছিলেন।

    ঐ আমলে জেমস-এর তখন হিটাহিট অবস্থা। একের পর এক জোশ জোশ এ্যালবাম। এখনকার ঐ 'দিওয়ানা দিওয়ানা আমি তোমার দিওয়ানা' মার্কা বাজাইরা গান ছিল না। আমাদের ফ্রেন্ড আজাদের জেমস শোনার কায়দা দেখে অনাথবন্ধু মল্লিক স্যার-ও inspired হয়ে জেমস এর মত সুরের/লিরিকের গান কম্পোজিশনে নেমে গিয়েছিলেন।

    ২০০০-২০০২ হল অল্টার-মেটাল, প্রগ্রেসিভ রক এর প্রাথমিক যুগ। "ছাড়পত্র" "অনুশীলন" এই এ্যালবামগুলি আমাদের মত বাংলা গানের অনুরাগীদের সারাক্ষণ আন্দোলিত করত। বিশেষ করে ২০০০ এ রিলিজ পাওয়া ওয়ারফেজ-এর 'আলো' এ্যালবাম যে কি পরিমান শুনেছি, ভাবলে অবাক হই যে, ঐ ক্যাসেটের ফিতা ছিড়ে যায়নাই ক্যান! আরেকটা ব্যান্ড ছিল তখন - ভাইকিংস। অসাধারণ লাগতো ওদের গান গুলি। এখনকার সাথে তুলনা করলে ওদের কম্পোজিশনে tightness মোটেই ছিল না, quantized ছিল না। কিন্তু গানগুলি এবং সেতু'র গিটার বাজানো চমৎকার লাগতো।

    ইংলিশ গানও শুনতাম আমরা, তবে বাছাইকৃত। আয়রন মেইডেন, স্করপিওন্স, বনজোভি ইত্যাদি শোনা হত বেশি। ২০০০ এর ক্লাস ফাংশনে আমরা স্করপিওন্স-এর Wind of Change কাভার করেছিলাম। MJ ও শোনা হত।

    হিন্দির মধ্যে যেগুলি মনে পড়ে - কুচ কুচ হোতা হ্যায়, দিল তো পাগাল্ হ্যায়, কাভি খুশি কাভি গাম, অশোকা ইত্যাদি ছবির গান চলত। আর সোলো'র মধ্যে শান, বোম্বে ভাইকিংস, সনু এদের গান শুনতো খুব পোলাপান।

    জবাব দিন
  15. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    আমাদের মঞ্জুর ওয়াহিদ ছিল হিন্দি গানের আর্কাইভ। কি দারুণ গাইতো! ওর সঙ্গে থেকে থেকে বাথরুম সিঙ্গার হিসাবে এই অধমসহ অনেকেই আবির্ভূত হয়েছিল! ওর এক বোন ছিল বিমানবালা। উনি বাইরে থেকে হিন্দি গানের ক্যাসেট আনতেন। আর মঞ্জুর ওয়াহিদ বাসা থেকে প্রথমে ক্যাসট পরে ভিসিআরে সেসব গান শুনে সঙ্গে সঙ্গে তুলে ফেলতো। সব রিলিজ করতো এসে কলেজে। হিন্দি ফিল্মের সংলাপও দিতো দারুণ।

    আব তেরা ক্যায়া হোগা রে কালিয়া.........

    ধন্যবাদ সামিয়া নস্টালজিক করে দেওয়ার জন্য।
    ..... আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম........


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  16. অর্চি (৯৯-০৫)
    ক্লাস নাইনে ও মারিয়া ও মারিয়া গেয়ে মারিয়া আপার কাছে ধরা খেল অর্চি।

    দোস্ত, ক্লাস ৯ এ না ওটা ক্লাস ৭ এ ছিল,মারিয়া আপারা ক্লাস ১২ ছিলেন...:D কমন রুমে কিছু গান এত বেশি বাজতো যে মাথা খারাপ হয়ে যেতো! খাকি সিনামার "ওয়াদা রাহা" "দিল ডুবা" আর রাজ সিনামার গান গুলা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেসিলো! ~x( কিন্তু ওই কিসনা মুভির "হাম হায় ইস পাল ইয়াহা" গান্ টা শুনলে এখনো চোখে পানি আসে...so many memories!

    জবাব দিন
  17. তানভীর (98-04)

    "গান বদলে যায়, মানুষ বদলে যায় কিন্তু ক্যাডেট কলেজের প্রাচীলের মাঝে অনুভূতিগুলো চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। নতুন নতুন গানের বাহনে একই কিউপিড একই জায়গায় তীর ছুরে মারে। প্রতিবারই বিদ্ধ হয় নতুন কেউ।"

    ওয়াহিদা আপু আপনার কমেন্ট পড়ে খুব খারাপ লাগছে...

    হাম হায় ইস পাল ইয়াহা...... যখন কলেজে শুনতাম তখন খারাপ লাগতো না ...... এখন শুনলে সারা দিন মন খারাপ থাকে...... যারা গানটা মনে করিয়ে দিল
    তাদেরকে তিরষ্কার......আজ সারা দিন মন খারাপ থাকবে......
    পোস্টটা পড়ে মনে হচ্ছে আবার কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেই......
    হুনাইন হউসের কমন রুম আর ক্যসেট প্লেয়ারটাকে অনেক মিস করছি......

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।