গার্লস ক্যাডেট কলেজে পানিশমেন্ট বয়েজদের চেয়ে তুলনায় অনেক কম। স্যার ম্যাডামরা মনে হয় মনে করতেন একটু মাইর খাইলেই মেয়েরা কেন্দে দিবে…আমাদের ফ্রন্টরোল ট্রন্টরোল কিচ্ছু নাই, ছিলো যা তা হলো ডিপি, ইডি… যেইটা বয়েজদের কাছে ডালভাত। তবে আমাদের একটা ডিপি খাওয়া মানে একদম মার্কামারা হয়ে যাওয়া, (এবং ক্যাডেটদের কাছে হিরোইন 😀 হয়ে যাওয়া)।
এহেন বোরিং অবস্থায় আমরা নিজেরাই কিছু জিনিসপাতি খুজে নিতাম আনন্দের জন্য। জুনিয়রদের সুপারম্যান পানিশমেন্ট, মোটরসাইকেল পানিশমেন্ট ইত্যাদি নিত্যনতুন উপায়ে নাস্তানাবুদ করতে চাইতাম। পানিশমেন্টের ক্ষেত্রে ছেলেদের শারিরীকভাবে মাইরধর করলে কাজ দেয়, আর মেয়েদের জন্য বিশাল ঝাড়িতেই কাজ শেষ(বেশির ভাগ ক্ষেত্রে!)। তার উপর যদি কাউকে গম্ভীর ভাবে বলা হয়,
“হু, এখন মোটরসাইকেল স্টার্ট দাও (মানে তাকে মোটরসাইকেলে চড়ার ভাব করতে হবে, তার পর ঘর ঘর করে মুখ দিয়ে সাউন্ড করে হাত দিয়ে চাবি ঘুরানোর ভাব করে স্টার্ট দিতে হবে, তার পর ব্লক দিয়ে দৌড়াতে হবে)”
ব্যস, আর কি চাই। অথবা বলা হবে, সুপারম্যানের মতন দুই হাত তুলে পুরা ব্লক দৌড় দিয়ে আসো…এটাতে আমরা তো বিশাল আনন্দ পেতাম, কিন্তু জুনিয়রের হালুয়া টাইট। বিশেষ করে সেই ব্লকে যদি তার চেয়েও জুনিয়র কোনো ব্যাচ থাকে।
জুনিয়রের সাথে তো গেলো, ক্লাসমেটকেও তো পচাতে হবে, এইটাতো একটা ক্যাডেটের দায়িত্বের পর্যায়ে পড়ে। necessity is the mother of invention. এই মটো নিয়ে শুরু হলো যাত্রা।
প্রথমে ট্রেন্ড শুরু হলো লেজ লাগানো। স্ট্যাপলারের পিন একটা আরেকটার সাথে লাগায় তৈরী হত দীর্ঘকায় লেজ। তারপর সেটা খাকি ড্রেসের পেছনে লাগিয়ে দিলে এত সুন্দর মানাত!!! কয়েকদিন এটা করে বিরক্ত হয়ে গেলাম। পেছনে ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া টেয়াও পুরনো হয়ে গেলো। মোচ আঁকাও শেষ। এরপর আসলো কবিতা পর্ব। পিকাসোর ব্লু পিরিয়ডের মতো ছোট কবিতা পিরিয়ড। কেউ কবিতা ছাড়া কথা বলে না। এইসময়কার কিছু কবিতা এতই হিট করলো যে সেগুলো পরীক্ষার খাতায় দিতে গিয়ে…
ধর্ম স্যার খাতা পড়তেন না। ওনার খাতায় এমন লাইন লেখারও সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে, যে, মনিষী শাহরুখ খান বলেছেন…ব্লা ব্লা ব্লা।
এরপর শুরু হলো সেলাই করার ট্রেন্ড। সবাই আরামসে ঘুমাচ্ছে। আমরা কয়েকজন নিজেদের ঘুম স্যাক্রিফাইস করে গিয়ে তাদের সেলাই করে দিয়ে আসতাম। মানে, কাথাটাকে বিছানার সাথে চারপাশ দিয়ে শক্ত করে সেলাই করে দেয়া এমনভাবে যেন সকালে উঠে ও মাথাটাকে কেবল নাড়াতে পারে, এবং ষাড়ের মত চিৎকার করে আমাদের বিমলানন্দ দিতে পারে।
এরপর পানি ঢেলে দেয়া পর্ব গেল। ভয় দেখানো পর্বটার কথা বিশেষ ভাবে আরেকদিন লিখতে হবে, ছোট খাট ভাবে শেষ হবে না।
এগুলাও শেষ। এবারে সরাসরি আক্রমণ। পিছনের সিঁড়িটা দিয়ে কেবল ক্লাস টুয়েলভ আর ইলেভেন ওঠানামা করতো। জুনিয়র ক্যাডেট কলেজগুলোর সব হাউস একই বিল্ডিং এ। আমাদেরটাও। নিচে শান্তি, মাঝে সত্য, উপরে সদাচার। শান্তি হাউসের গুলা অপেক্ষা করতো সত্য সদাচারের জন্য। একসাথে সবাই যখন উঠবে, কোনমতে একজনকে ধরে এনে যদি ব্লকের গ্রিলে বেন্ধে ফেলা যায়, তাহলে সেই হাউসের দাপটে সেইদিন অন্য হাউস মাথা তুলতে পারবে না। ব্যাপারটা প্রেস্টিজিয়াস, তাই শান্তি হাউস পাস করার সময় সত্য সদাচার শক্ত করে হাতে হাত ধরে পার হইত। পারলে একটা দুইটা শান্তি ধরে নিয়ে যাব তাও নিজেরা ধরা দিবো না…যেই দুই তলায় উঠে যেতাম, এইবার সত্যের ভাবগতিক মূহুর্তে চেঞ্জ হয়ে যেত। ওরা চেষ্টা করতো সদাচার ধরার, সদাচার মুহুর্তে সজাগ। উলটা সদাচার চেষ্টা করত দুই একটা সত্য ধরে নেয়ার। ধরে নেয়ার মুহুর্তটাও ছিলো অসম্ভব জটিল। হৈ হৈ রব তুলে এক হাউস আরে হাউসের দঙ্গলে ঝাপায় পড়বে এবং চেষ্টা করবে কাউকে ধরে নিয়ে আসার।
এইভাবে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলে আমরা আমাদের মামুলি ওঠা নামা টাকেও থ্রিলিং করে ফেলেছিলাম। (বোধহয় ক্যাডেটদের পক্ষেই এই অহেতুক কাজ করে অপার আনন্দ পাওয়া সম্ভব)।
একটা ঘটনা বলে শেষ করি, আমি পড়াশোনা করতে চাইতাম না। প্রেপে সবার লাস্টে যাইতাম, সবার আগে উঠে আসতাম। আসা থেকেই একবার পানি খাওয়া, বাথরুম যাওয়া ইত্যাদির নাম করে ঘুরাঘুরি করতাম। আমার পাশে বসে শুভ্রা, বিশাল ধমকেও সে আমাকে ১০ মিনিট বসায় রাখতে পারে না। এসএসসির আগে ক্লাসমেটরা আমার পাশ করা নিয়ে বিশাল চিন্তিত। এইরকম করলে পড়াশোনা কিভাবে হবে?
একদিন ফার্স্ট প্রেপে গিয়ে কেবল বসছি, হঠাৎ চারপাশ থেকে ৫/৬ জন মিলে আমার উপর ঝাপায় পড়লো। হতবাক আমি কয়েক সেকেন্ডের মাঝে আবিষ্কার করলাম আমাকে ওরা চেয়ারের সাথে বেন্ধে ফেলসে হাত সহ। একটুও নড়াচড়া করতে পারতেসি না।
পিঙ্কি এসে ভিলেন মার্কা হাসি দিলো। আজকে উঠবা কিভাবে? আমার বিশাল অভিমান হলো, গোজ মেরে বসে থাকলাম। আমাকে খুলে না দিলে পড়ব না আমি।
এহহহ, ওইসব বলে লাভ নাই। শুভ্রা কে বলবা ও বইয়ের পেইজ উল্টায় দিবে। বলে ও চলে গেল।
পাশে তাকায় দেখি শুভ্রাও মহানন্দে হাসতেসে। আমার মেজাজটা এমন খারাপ হলো…
তবে একটা কথা বলি, এইসব ক্লাসমেটের জন্যই কিন্তু আমি পাশ করে বাইর হতে পারসি, নাইলে……থাক।
Hmm......accha 17 batch er Tamanna apu ke chino?amar chachato bon.....
jottil likso apu!kintu yeah maney.....junior er samne motor cycle hoar cheye amra boys cadet ra mone hoy saradin ED khaiteo pichopa hobona....as Topu Bhai said...."Prestige"....
চরম মজা পাইলাম...বিশেষ করে দিড়ি দিয়ে উঠার যুদ্ধটার কথা শুনে।
মটর সাইকেলেরটা জটিল লাগ্লো......
আমাদের হাফ চেয়ারের MOBILE ভার্সন আর কি!
@মাশরুফ ভাই, তামান্না আপা মানে ডাকনাম মৌলি আপা? উনার ছোট বোন শমি? আরে উনাকে আমি চিনি ছোট বেলা থেকে!! কেমন আছে উনি? উনাকে এই সাইটের খবরটা দিয়েন। উনার কোন ঠিকানা জানি না।
mouli apu amar apon chachato bon......shomi to medical portese ar mouli apu NSU te MS kortese......tumi chino kemne?
superman punishment ta besh mojar.......akta superman style aar video dekhte parle valo hoto....valo hoise.
motor cycle part ta jotil hoise.
ছোট বেলায় আমরা একসাথে থাকতাম রংপুরে। শমি আমার জানের দোস্ত, আমার পাগলা দোস্ত। অসংখ্য কাহিনী করে বেড়াইসি একসাথে। আপনার চাচাতো বোন শুনে খুব মজা পেলাম, পৃথিবীটা আসলে খুব ছোটই বলতে হবে।
aihai apu tumi bolo ki!ami to rangur e beraite gesi chotokale.....obosso tokhon onek picchi chila mone hoy tumi....ami e to halfpant poira ghuira beraitam......
jotil hoyese....
"পারলে একটা দুইটা শান্তি ধরে নিয়ে যাব তাও নিজেরা ধরা দিবো না… " 😀
"পারলে একটা দুইটা শান্তি ধরে নিয়ে যাব তাও নিজেরা ধরা দিবো না… " 😀
মজা পাইলাম...।।
জোস লিখছো আপু... বিশেষ করে মোটরসাইকেলের আইডিয়াটা ফাটাফাটি... কলেজে থাকলে আমিও এই জিনিসটা চালু করে আসতাম.. দেখি নেক্সট রিইউনিওন এ যেয়ে পোলাপাইনদের শিখায়ে দিব 😉
ইডি বুঝলাম... ডিপি টা কি?
DP hoilo giya dress punishment.....ama boys cadetra eitare koitam restriction.......amar cousin MGCC er unar kase shunsi eita....uni eitar niyomito customer silen mone hoy....
ওহ্... হ্যা আমাদের এইখানেও রেস্ট্রিকশন কইতো... ডিপি শুইনা একটু টাশকি লাইগা গেছিলাম... জীবনে নামও শুনি নাই।
আমার একটা ভাল রেকর্ড ছিল... আমি কখনো রেস্ট্রিকশন খাইনাই... আসলে চান্সই পাই নাই... ইডি খাইয়াই বেশিরভাগ গেমস আওয়ার পার করতাম =/
আমাদের ব্যাচে ডিপি আমি স্টার্ট করসিলাম, এইটা নিয়ে এখনো পার্ট নেই। মোটর সাইকেল টা যে এত হিট করবে তাতো বুঝিনাই। তাইলে আগেই জাতীয় দায়িত্ব মনে করে প্রত্যেক কলেজে জানিয়ে দিতাম।
একদিন সামিয়া
নিচতলা নামিয়া
চারদিকে দেখে কেউ নেই আর
এই ভেবে চুপচাপ
ছিড়ে ফেলে টুপটাপ
লেবু নিল গাছ থেকে গোটা চার।
কিন্তু এ হলো কি
পাশে কেউ রলো কি?
ভিপি ছিল হাউসের আড়ালে
সামিয়াতো দেখেনি
ধরা খেল তখুনি
আরেকবার হাতখানি বাড়ালে।
সব দেখে ভিপিটা
দিয়ে দিল DPটা
সামিয়াটা কান্না যে জুড়লো
ইন্ট্রো-ডাকশন
ড্রেস রেস্ট্রিক-শন
জুনিয়রের কপালটাও পুড়লো 😆
মাশআল্লাহ...
দুইটা প্রশ্ন।
১। ৪টা লেবু আমি কি করে খাইসিলাম?
২। কেন্দে দিলাম কেন?
খাইসোও তুমি কান্দিসোও তুমি।
আমি ক্যামনে কই
bah!!! zihad bhai....bhaloi to.......amra ki dos korsi amader nieo kobita lekh 😀
yes....hasnain re nia likha jai..same catagory!!!
hasnain...tor seven er ghumer kahini nia likha fala dosto....
fuad tor pach...ki akhno lal naki ...dosto ato ragar kisu nai....
হুরররর...রাগতাছে ক্যাডা!!!আর লাল কি কইলি???তুই কি বর্ণান্ধ নাকি??
কেন তোর কালার কি? বর্ণান্ধ কেন হয় জানস ত নাকি?
ছি ছি হাসনাইন!!তুমি দেখছি একদম কার্টিসি জাননা!!
কোথায় কি বলতে হয় তাও কি তোমাকে শিখিয়ে দিতে হবে.???
হাসনাইন,তোর শাস্তি....
১০০ বার বল----ছানাচুর
১০০ বার বল----দুকড়ি
হুম ফুয়াদ...। হায়রে কপাল...।অবশেষে "বন্যের" কাছ থেকে "কার্টেসি" শিখতে হবে.........
shotti bolte ki,tukro kahiniguyo pore ami khub moja paysi.Ha ha haaaaaaaaaaaaaaa…………………
এইটাই আমাদের প্রাপ্তি যে আজকাল ইলেকট্রনিক্স বই ছাড়াও বাহাউদ্দিন মজা পাইতেসে!!থ্রি চিয়ার্স ফর বাহাউদ্দিন...
বাহাউদ্দিন...খালি মজা পাইলে হইব না!!অন্যদেরকেও মজা দিতে হইব...বুঝে আসছে??
ওরে জিহাইদ্দা অতি চরম হইছে...
এই লেখাটা দারুণ হইসে :clap:
বিছানার সাথে সেলাই করে দেয়াটাতো ভয়ংকর ব্যাপার! 😮
ভয়ংকররররর!!!!!!!! 😮
লেডিস বুদ্ধি :)) ,তবুও একটু কাট ছাট কইরা কলেজে গিয়া এপ্লাই :grr: :grr: :grr: করব!!!!
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
ভাল কইরা কাটছাট কইরো..নইলে পরে হাফলেডিস থাইকা যাইব... 😉
:clap:
সামিয়া তোমার অসাধারন লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। অনেক দেরিতে হলেও গার্লস ক্যাডেট কলেজ সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত জানা গেল। বেড এর সাথে কাথা সহ সেলাই করে দেবার ব্যাপারটায় বেশ মজা পেয়েছি। ভাগ্যিস আমার হাসিটা অফিসের কেউ শুনতে পায়নি।
আহা! সেই প্রাচীন আমলের ব্লগ। কত কিছু মনে পইড়া যায় :dreamy: 🙁
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
হুম প্রাগঐতাহাসিক দেখি 🙂
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
Apa, 2004 er sports a ekbar shanti house er apara amake bedhe felsilo. pollen apa lead dichchilen....
=)) :)) :clap:
superman punishment.....i thought otherwise :pira2:
"মরনের বীথিকায় জীবনের উচ্ছ্বাস,
জীবনের যাতনায় মৃত্যুর মাধুরী"