ঐ আকাশটায় কেউ ঘুমায়নি
কেউ না,কেউ না, কেউ ঘুমায়নি
চাঁদের প্রাণিগুলো নাক সিটকে
তাদের গুহায় কিছু খুঁজছে।
যারা স্বপ্ন দেখছে না তাদেরকে
জ্যান্ত ইগুয়ানা এসে কামড়ে দেবে
আর ভগ্নহৃদয় লোকটার সাথে
দেখা হবে রাস্তার কোনায়
অবিশ্বাস্য কুমিরটা শান্ত
তারাদের সজীব প্রতিবাদে।
পৃথিবীতে কেউ ঘুমায়নি
কেউ না, কেউ না, কেউ ঘুমায়নি
গোরস্তান থেকে দূরে এক সেনা
তিন বছর ধরে গোঙ্গাচ্ছে
কারণ তার হাঁটুর গিট শুষ্ক
আর যে ছেলেটাকে তারা আজ
মাটি দিয়েছে সে এত পরিমাণে
কেঁদেছিল যে তাকে কুত্তা দিয়ে
থামাতে হয়েছিল।
জীবন কোন স্বপ্ন নয়!
সাবধান, সাবধান, সাবধান
আমরা সিড়ি থেকে পড়ে যাই
কাদামাটি খাবার জন্য
কিংবা বরফের ছোরার ধার বেয়ে উঠি
মৃত ডালিয়ার কণ্ঠের সাথে।
কিন্তু বিস্মরণের অস্তিত্ব নেই
নেই স্বপ্নের অস্তিত্ব, আছে মাংস
চুম্বন আমাদের মুখগুলো বাঁধে
শিরার ঝোঁপঝাড়ের মধ্যে
যে তার বেদনা অনুভব করে
তা চিরতরে অনূভব করতে থাকে
আর যে মৃত্যুকে ভয় করে
ভয় তার কাঁধ থেকে আর নামে না।
একদিন অশ্বেরা থাকবে সেলুনে
আর খ্যাপা পিঁপড়ের দল তাদের
ছুড়ে মারবে গরুর চোখে আশ্রিত
হলদে রঙা আকাশটায়।
আরেক দিন আমরা দেখবো
সংরক্ষিত প্রজাপতি গুলো
জীবিত হয়ে উঠেছে আর
ধুসর স্পঞ্জ ও নিরব নৌকার
দেশের মাঝখানে হেঁটে বেড়াচ্ছে।
আমরা দেখবো আমাদের আংটির ঝলক
আর আমাদের জিহ্বাতে গোলাপ ফুটছে
সাবধান, সাবধান, সাবধান
যে সব মানুষের এখনো নখের আঁচড়
আর বজ্রপাতের চিহ্ন রয়েছে, আর
সেতু আবিষ্কারের কথা কখনো
না শুনতে পাওয়ায় যে ছেলেটা কাঁদছে
কিংবা যে মৃত মানুষটার এখন কেবল
তার মাথা আর জুতা আছে
তাদের নিতেই হবে সেই দেয়ালের কাছে
যে সাপ আর ইগুয়ানারা অপেক্ষা করছে
যেখানে অপেক্ষা করছে ভালুকের দাঁত
অপেক্ষা করছে ছেলেটার মমি করা হাত
আর উটের চুল মারমুখী নীল কাঁপুনিতে দাঁড়িয়ে।
আকাশে কেউ ঘুমাচ্ছে না
কেউ না, কেউ না, কেউ ঘুমাচ্ছে না
কেউ চোখ বন্ধ করলে তাকে চাবুক মার
আগুনের ক্ষতচিহ্ন আর খোলাচোখ
মিলে হয়ে যাক এক চিত্রকর্ম!
কেউ ঘুমাচ্ছে না এই বিশ্বে
কেউ না, কেউ না,
আগেই বলেছি কেউ ঘুমাচ্ছে না
কিন্তু কারো গীর্জায় যদি রাত্রিবেলা
বেশি পরিমাণে আগাছা জন্মায়
তাহলে খিড়কি দরজা খুলে দাও
তা হলে সে চাঁদের আলোয় দেখতে পাবে
খুলির শায়িত পানপাত্র আর বিষ।
মূল: City That Does Not Sleep by Federico Garcia Lorca
অনুবাদ : টিটো মোস্তাফিজ
"গোরস্তান থেকে দূরে এক সেনা
তিন বছর ধরে গোঙ্গাচ্ছে
কারণ তার হাঁটুর গিট শুষ্ক" - সব সেনাদের হাঁটুরই বোধ হয় একই অবস্থা হয়!
দুঃখজনক 🙁
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল