জুলহাস ভাইয়ের পোস্টে কমেন্ট করার সময় মনে হল যে পোস্টটা অনেক পূর্বের আর কমেন্ট করতে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। তাই আমার কমেন্টটা পোস্ট আকারে দিয়ে দিলাম। এছাড়া রাজশাহীর যা অবস্থা, একটা পোস্ট বাড়লে ভালই হয়। 😀
আমার নিজস্ব মতামত হল আমাদের সর্বপ্রথম প্রয়োজন অর্থনৈতিক মুক্তি। যেই দেশের মানুষ খাদ্যের নিশ্চয়তা আজও পায়নি, আদর্শের বুলি তাদের কাছে ফাঁকা আওয়াজের মতোই ঠেকবে, যা শোনা তো যায় কিন্তু তাতে কোন কাজ হয় না। অনেকেই আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলবেন হয়তো যে একটা শব্দ না করলে কাজ শুরু হবে না, কিন্তু আদর্শের শব্দ সেই কানে কোন স্পন্দন তুলবে না যেই পেটে ক্ষুধার আগুন জ্বলছে। তাই অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। এখন হয়তো অনেকের মনে হচ্ছে ড্রয়িং রুমে বসে কোন টক শো-র কথা শুনে তা আমি লিখে যাচ্ছি। আমি কথা গুলো হয়ত তাদের কাছ থেকেই শিখেছি যারা টক শোতে এসে কথা বলেন, কিন্তু আমার নিজের বিশ্বাস যে আমাদের প্রয়োজন অর্থনৈতিক মুক্তি।
এখন প্রশ্ন জাগে অর্থনৈতিক মুক্তি আমরা কীভাবে পাবো। আমার নিজস্ব মতামত বলতে গেলে তা কৃষি কেন্দ্রিক হবে। আমার মতে বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় এবং সম্ভবত সবচেয়ে অবহেলিত বিষয় হল কৃষি। আমরা কৃষির উৎকর্ষ সাধনের জন্য যতটুকু করা দরকার তা কি করেছি এতদিন? আমাদের থেকে অনূর্বর মাটি নিয়ে চীন, ব্রাজিল, কিউবা, জাপানের মত দেশ আজ কৃষিতে এতটা উন্নত। প্রাচ্যের ডান্ডি হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জকে আমরা কি আর পাটশিল্পের আরাধ্যভুমি হিসেবে সমুন্নত রাখতে পেরেছি? কেন পারি নি? আমি জানি অনেকগুলো কারণ এর পেছনে কাজ করেছে। কিন্তু পাটের নিম্নোৎপাদনও কি তার একটা কারণ নয়? বাংলাদেশের মাটিকে খাঁটি সোনার সাথে তুলনা করেছে জাপানী এবং মিশ্রিত বিজ্ঞানীরা (তথ্যসুত্রঃ এশিয়া উইক এবং দ্য ইকোনমিস্ট)। তাহলে কেন জাপানের পাথুরে জমিতে হেক্টর প্রতি উৎপন্ন চালের পরিমাণ বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় ২.৫ গুণ আর মিশরে তা প্রায় ৩ গুণ? অনেকের মতামত জাপানের হাইব্রিড চালের স্বাদ নাকি ভাল না। এমন হাস্যকর কথা আমি আমার জীবনে শুনি নাই। মানুষ আগে তো খাবে, তারপর নাহয় স্বাদের বিচার করবে। যদি খাওয়ার জন্য ভাতই না পেল তবে তার স্বাদের বিচার করে লাভ কি? এখন আসি চিংড়ির প্রসঙ্গে। বাংলাদেশে সেই মান্ধাতা আমলের চিংড়ি চাষ পদ্ধতিতে এখনও চাষাবাদ করা হয়। বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের পানিতে লবনের পরিমাণ চিংড়ি চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। শুধুমাত্র সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে বাংলাদেশের চিংড়ির উৎপাদন প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি সম্ভব (তথ্যসুত্রঃ চিংড়ি চাষী এবং দ্য ইকোনমিস্টের আলোকে হিসেব করে পাওয়া ফলাফল)। আমার মতে যদি বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়ন ঠিকমতো হয় তবে কৃষিভিত্তিক শিল্পের মাধ্যমে শিল্পের উন্নতি সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর একটা দেশের কৃষি আর শিল্পের উন্নতির মাধ্যমেই অর্থনৈতিক মুক্তির ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব। যদিও আমি জানি এইসব উন্নতি যদিও হয় তারপরও মুষ্টিমেয় একদল মানুষেরই উন্নতি বেশি হবে। কিন্তু আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হলে তবেই না আমরা অন্যসব দিকে নজর দেয়ার সময় পাবো, নতুবা নয়।
আরও অনেক কিছু বলার আছে। অন্য একদিন সময় নিয়ে আশা রাখি তা বলব।
🙁
মেহেনী ভাই আবার মন খারাপ করছে :(( :((
কোথাকার কোন 'মেহেনী' ভাই এর মনের খবর দিয়ে আমরা কি করব???? 😛 😛
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:bash: :bash: :bash: :bash: :bash:
:thumbup: :thumbup: ভালো লাগল
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ধন্যবাদ রকিব।
শার্লী, তোমার লেখায় কয়েকটা ভাল পয়েন্ট এসেছে... :thumbup:
আমি একটা জিনিস বুঝি না- আমরা সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে যেসব বুঝি, সেসব জিনিস দেশের ভস পাব্লিক...যারা ক্ষমতায়...তারা কেন বোঝেন না... :-B
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
কারন তাদের সাধারন বুদ্ধির অভাব রয়েছে অথবা সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। আমার বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে যে তারা বুঝতে পারছেন না।
তুমি কোন দিক দিয়ে ভুল না। কিন্তু DOUBT থেকেই যাচ্ছে। কারণ আদর্শগত ঊন্নয়ন-এর'ও দরকার আছে। যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে, আমার মনে হয় তারা ইচ্ছে করেই কোন কিছু করেনা; তাদের কি হচ্ছে না হচ্ছে এসব সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা থাকা স্বত্তেও... ওই ওভারস্মার্ট লিডারদের আদর্শগত পরিবর্তন খুবই প্রয়োজন! ওরা যখন টাকা মারা বন্ধ করবে তখন কিছু একটা আশা করা যেতে পারে। বললাম না, BRING THE CHANGE RIGHT FROM YOURSELF... এটাই আসলে দরকার 😉
ভাই আপনার কথার সাথে সম্পুর্ন একমত। নিজেকে বদলাতে হবে আগে। কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন কি রাস্তায় যে মানুষটা ছেঁড়া ফাঁটা কাপড় পরে, ক্ষুধায় কাতর হয়ে বসে আছে তার কাছে "নিজেকে বদলাতে হবে" কথাটা কতটা ঠুনকো। তার পেটে ভাত আর পরিধেয় কাপড় পেলে তারপর আদর্শবাদী চিন্তা করার কথা সে ভাবতে পারে। তাই আমি অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলছিলাম। আমরা যারা সমাজের সুবিধাভোগী তারা নিজেদের বদলালেও সুবিধাবঞ্চিতদের কথা তো অন্তরালেই পরে থাকলো, তাই না ভাই? আপনার মতামত একটু জানাবেন।
সহমত।
কিন্তু শুধু 'অর্থনৈতিক মুক্তি' বলে ত কিছু নেই। এটা একই সাথে সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকও।
বস্তুগত অবস্থার পরিবর্তন না করে ব্যক্তির নিজের বদল হবার সুযোগ কোথায়?
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
শার্লী,
খুব ভালো লাগল যে তুমি 'কৃষি'কে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য ভিত্তি হিসেবে দেখছ। আর হাইব্রীডের বিষয়টাও যুক্তিপূর্ণ। কিন্তু কথা ওঠে যখন সেই হাইব্রীড সাধারণ চাষীকে- যাদের বেশির ভাগই প্রান্তিক কৃষক, যারা কোন মতে কৃষিকাজ করে সংসার চালায়- পুরোপুরি বাজারের মুখাপেক্ষি করে ফেলে। আমরা অনেকেই হাইব্রীডের অধিক ফলনের জিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে এই বিষয়টা নজরে নেই না। চাষীদের স্বনির্ভর না করলে যেকোন ব্যাবস্থা সুফলের চেয়ে কুফলই বেশী নিয়ে আসবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভাই আপনাদের সবার মতামত আমাকে আমার লক্ষ্য অর্জনের জন্য আরও দৃঢ় সংকল্প করেছে এবং এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সতর্কতার প্রয়োজনিয়তাও উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে। ধন্যবাদ ভাই। :boss:
:thumbup: :thumbup:
Life is Mad.
:shy:
:thumbup: :thumbup: :thumbup:
(সায়েদ ভাইয়ের্মত)
ওই মিয়া, আপ্নের্কিবোর্ড কৈ?