অতীত বয়ান – কেউ যদি শুনতে চায় (শেষ পর্ব)

অতীত বয়ান – কেউ যদি শুনতে চায় (শেষ পর্ব)
-ওয়াহিদা নূর আফজা

এদিকে বদলীপ্রাপ্ত সব পাকা চুলের স্যারদের মধ্যে শুধু একজন ছিলেন বয়সে তরুন। উনি রসের বিষয় রসায়ন পড়াতেন। স্যার প্রথম ক্লাস শেষ করে চলে যাওয়ার পর আমরা মেয়েরা ক্লাসে দু ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলাম। একদল বলছে উনার গোফ আছে আরেকদল বলছে নেই। আসল সত্যটা জানার জন্য দুদল থেকে দু প্রতিনিধি পলি আর নিলা স্যারের পিছু নিল। ওদের উদ্দেশ্য স্যার যখন ওনার রুমে গিয়ে বসবেন তখন আড় চোখে ওরা স্যারের গোফ পরখ করে নিবে। এদিকে নতুন স্যার তখনও একাডেমিক বিলডিংটা চিনে উঠতে পারেননি। উনি বার বার ভূল করে একবার এদিকে যাচ্ছিলেন আরেক বার ওদিক যাচ্ছিলেন। ঝানু গোয়েন্দার মতো নিলা আর পলিও স্যারকে অনুসরন করে চললো। একেবারে শেষ পর্যায়ে আর ধৈর্য্য ধরে রাখতে না পেরে পলি স্যারকে পেছন থেকে ডাক দিল। যখন স্যারের সাথে ওরা মুখোমুখি হয়ে গেল, তখন নিলা সব ভুলে চিৎকার দিয়ে উঠলো, ’স্যারের গোফ আছে।’ স্যার তো রীতিমতো হতভম্ব। সেই সাথে ওরাও বেকুব।
এদিকে পুরো ঘটনাটা কলেজের সবচেয়ে সন্দেহপ্রবন ম্যাডামের আনুবিক্ষনীক চোখে ধরা পরে গেল। আর যায় কোথায়? ক্লাসে এসে ওদের দুজনকে দাড় করিয়ে পাকা আধ ঘন্টা ঝাড়ি দিয়ে শেষে বললেন, ‘তোমাদের ভালো রেজালট হবে কি করে? তোমরা তো খালি ফুজি দেখ। রঙ্গিন রঙ্গিন ফুজি‘।
তখন বাংলাদেশে এ্যনালগ ছবি প্রিন্টের জন্য ফুজি কোম্পানী বেশ বিখ্যাত। এই ঘটনার পর ফুজি শব্দটা আমাদের জাতীয় শব্দে পরিনত হয়ে গেলো। আমরা ক্লাস টেনের মেয়েরা তখনও জীবনের সেইসব অজানা রহস্য – প্রেম, ভালবাসা, কোন ছেলেকে ভাললাগা এসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে শুরু করিনি। গোপন কথা ঝেড়ে কাশবার মতো সাহস তখনও হয়ে উঠেনি। ভাবতাম এমনটা বোধহয় শুধু আমারই হচ্ছে। আরেকজনকে বললে সে হয়তো আমাকে খারাপ ভাববে। কিন্তু ফুজি শব্দটা কাল বৈশাখী ঝড়ের ঝাÌটার মতো এক লহমায় আমাদের মনের সব দ্বিধাদ্বন্ধ উড়িয়ে নিয়ে গেল। এরপর থেকে আমাদের ব্যাচে এই শব্দটাই ছিল সবচেয়ে বেশিবার উচ্চারিত শব্দ। এর একটা নমুনা দেই।
সেতু রুমাকে জিজ্ঞেস করছে,’কি আজকে কোন ফুজি দেখেছিস?‘
‘না, ভূগোলের হোমওয়ার্কটা শেষ করে তারপর দেখবো। তুই দেখেছিস?’
‘আমার ফুজি দেখা শেষ। এখন ছবির প্রিন্ট চলতেছে।‘

এভাবে নতুন প্রিন্সিপ্যালের পড়াশোনার প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া বা অনভিজ্ঞ-অভিজ্ঞ শিক্ষকদের চাপে পরে বা বহুল আলোচিত ফুজি শব্দের কল্যানে – যে কোন একটা কারণেই হোক আমাদের ব্যাচ মেট্রিক, ইন্টারমিডিয়েটে সারা বাংলাদেশে মেয়েদের স্কুল কলেজের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছিল। এমনকি হলিক্রশ, ভিকারুন্নেসাকে আমরা সে বছর ’কোন ছার’ বানিয়ে ছেড়েছিলাম।
কিছুটা Œনিশ বিশ হতে পারে তবে মোটামুটিভাবে আমাদের ব্যাচের মেয়েদের একটা পরিসংখ্যান দিই। ৭ম ব্যাচে সর্বশেষ আমরা একচল্লিশজন ছাত্রী ছিলাম। তার মধ্যে পঁচিশজন ডাক্তার, সাতজন ইঞ্জিনিয়ারিং বা আইটি পেশায়, ছয়জন বিভিন্ন ভার্সিটির শিক্ষক হিসেবে বা কোন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছে। আর হাতে গোনা যে কয়জন কিছু করছে না তাদের মধ্যে অনেকেই কলেজে অনেক বেশি প্রতিভাবান ছিল। যে এক সময় খুব ভালো রবীন্দ্র সংগীত গাইতো, শান্িতনিকেতনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতো – তার বাসায় এখন শুনি গান, টিভি হারাম। সে এখন এক অসূর্যস্পর্শা জীবন বেছে নিয়েছে। আমার এক চৌকষ বন্ধুকে দেখে সব সময়ই মু© হতাম। সে ঝটপট কথা বলতে পারতো, কঠিন কঠিন সব ইংলিশ গান পানির মতো করে গাইতে পারতো। আমি বাংলা গানের এক লাইনও কখন শুদ্ধ করে বলতে পারতাম না। তাই আমার কাছে ও ছিল এক বিস্ময়। ওকেও দেখলাম মোটামুটি একই রকম জীবনদর্শন বেছে নিয়েছে। ওর সাথে আমার কথোপকথন ছিল এরকম,
-আচ্ছা তোমার প্রতিভাময় সন্তান যদি কিছু না করে শুধু তোমার তোষামদী করে বাপের হোটেলে বেকার একটা জীবন কাটিয়ে দেয় তাহলে কি তুমি মনে কষ্ট পাবে?
-পাবো না কেন, পাবো।
-তাহলে স্রষ্ঠা যখন তার কোন সৃষ্টিকে একটা দুর্লভ ক্ষমতা দেন এবং যখন দেখেন তার সেই সৃষ্টি সে ক্ষমতাটি একদমই ব্যবহার করছে না তখন কি স্রষ্টা কষ্ট পান না?
-কোরান সুন্নাহ অনুসারে জীবন পালন করা ছাড়া আমাদের জীবনের আর কোন উদ্দেশ্য নেই।

আমি নিজে আস্তিক মানুষ। তবে নিজেকে ধর্মভীরুর থেকে ধর্মপ্রেমী ভাবতে ভালবাসি। ধর্মের যা পালন করি তা করি জেনে, বুঝে এবং ভালবেসে। স্রষ্ঠাকে আমার ভয়ংকর কিছু মনে হয় না। বরং মনে হয় সৃষ্ঠির থেকে স্রষ্ঠাই খুব বেশি করে চান যে তাঁর সৃষ্ঠি যেন ভাল থাকে, টিকে থাকে। সেই সাথে এটাও মনে করি নিজের ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন না জাগলে, সে প্রশ্নের সমাধান খোঁজার প্রয়াস না থাকলে আসলে নিজের মননজগতের তেমন একটা উত্তরন ঘটে না।
অবশ্য কাউকে কোন জ্ঞান দেওয়া আমার উদ্দেশ্য নয় – বিশেষ করে জিনিষটা যখন আমার নিজেরই নেই। ভালো লাগে বলে মাঝে মধ্যে মানুষের মনঃস্তত্ব বোঝার চেষ্টা করি। আমি মোটামুটিভাবে বুঝে গেলাম সে এখন কিভাবে চিন্তা করছে। প্রতিটা ধর্মেই অন্ধবিশ্বাসী অনুসারীরা এই একমাত্রিক পথেই চিন্তা করে থাকে। যদিও অনেকাংশেই দেখা যায় এর পেছনেও একটা কারণ থাকে। সেদিন সেই বন্ধুর সাথে এ বিষয়ে আমি আর কোন কথা বাড়ালাম না। পরে শুনেছিলাম ওর একটা সন্তান অটিস্টিক। খুব কষ্ট পেয়েছিলাম কথাটা শুনে। একজন মা হিসেবে আরেকজন মায়ের অনুভুতির জায়গাটা সহজেই বুঝতে পেরেছিলাম । মনে হয়েছিল ও বুঝে শুনেই এই জীবন বেছে নিয়েছে। এভাবেই সে হয়তোবা খুঁজে পাচ্ছে তার মনের শান্িত, বেঁচে থাকার শক্তি।

কত কথা যে মনের মধ্যে এসে ভীড় করছে। লেখাটা পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলতে চাইছে। যেন বেয়ে চলা দুর্বার কোন নদী। এবার বাঁধ দিয়ে আবার ক্যাডেট কলেজের দিকে মুখ ফেরাই।

তখন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা চলছিল। আমরা ক্লাস টেনে। বাংলার ক্লাসে খুরশীদা ম্যাডামের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ম্যাডাম সেদিন ক্লাসে এলেন না। পরদিন শুনলাম যে ম্যাডামের মেয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়েছিল তারপর পর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে অবশ্য খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। পেছনের ঘটনা হলো সেদিন ছিল জৈব রসায়ন পরীক্ষা। পরীক্ষার হলের দিকে যেতে যেতে মেয়ের হঠাৎ মনে হলো সে পাশ করতে পারবে না। তাই পরীক্ষার হলে না গিয়ে সে তার এক আত্মীয়ের বাসায় চলে গিয়েছিল। পরের ক্লাসে আমরা সবাই খুব দুঃখী দুঃখী আর সমব্যথী মুখ করে ম্যাডামের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিন্তু ক্লাসে এসেই উনি আমাদের উপর ওনার মনের যত ক্ষোভ সব ঝাড়তে লাগলেন।
-আমি আমার সন্তানদের মানুষ করবো কখন? সব সময় তো তোমাদের মানুষ করতেই চলে যায়।
তখন আমরা কিছু না বুঝে এর ওর দিকে তাকিয়েছিলাম।

ক্যাডেট কলেজ ছাড়ার প্রায় বার বছর পর হঠাৎ একদিন একটা ফোন কল পেলাম। ইতিমধ্যে আমি তখন এই ক্যালিফোর্নিয়াতে আমার জীবন সাজিয়ে নিয়েছি। যিনি ফোন করেছেন তিনি কিছুতেই রহস্য ভাঙ্গছেন না বার বার বলছেন, ’আরেকটু চিন্তা করে বলো আমি কে?’ শেষে যখন একেবারেই হাল ছেড়ে দিয়ে নিজের অপারগতা প্রকাশ করলাম, তখন তিনি রহস্য ভাঙ্গলেন।
-আমি তোমাদের মাহফুজা ম্যাডাম।
আমার রীতিমতো আকাশ থেকে পড়ার উপক্রম। আমি দ্রুত অতীত হাতড়ে বার বছর পেছনে চলে গেলাম – না আরো পেছনে পনের বছর আগে। কারণ মাহফুজা ম্যাডাম ক্যাডেট কলেজের চাকুরী ছেড়ে সরকারী কলেজে যোগ দিয়েছিলেন আমরা যখন ক্লাস নাইনে।
-আপনি এখন কোথায়, আমার নাম্বার পেলেন কি করে :::
বুঝতে পারছিলাম ট্রেনের মতো না থেমে এক ঝাক প্রশ্ন করে যাচ্ছিলাম। ম্যাডাম ধীরে সুস্থে উত্তর দিলেন। তিনি এখন আরকানসাসে থাকেন। ওনার বদরুন্নেসার এক ছাত্রীর কাছ থেকে, যে বুয়েটে আমার সাথে পড়তো, নাম্বার পেয়েছেন। একটা ইউভার্সিটিতে ম্যাডামের স্বামী ফেলো হিসেবে আছেন।
এখনও স্পষ্ঠ মনে পরে একাডেমী ভবনের প্রথম দিন ক্লাস সেভেনের সেকশন বিতে বসে আছি। ক্লাস টীচার মাহফুজা ম্যাডাম ঢুকলেন। লাল পাড় সাদা শাড়ি পরা টিপটপ, হাসি হাসি মুখ। খুব ভালো প্রাণীবিজ্ঞান পড়াতেন। ওনার শিখিয়ে দেওয়া পরিপাকতন্ত্র এখনও ভুলিনি। তখন ওনাকে বেশ ভয় পেতাম। অথচ এখন যখন মাঝে মধ্যে কথা হয় তখন অতীতের সেই দূরত্বটা অতিক্রম করে একজন যেন আরেকজনের বন্ধুর মতো হয়ে উঠি। অকপটে বলে যাই নিজেদের ব্যক্তিগত কথা। ম্যাডামকে সেদিন বলছিলাম,
-আমার ছেলেটার সাত বছর বয়স। কিন্তু মাঝে মাঝে এমনভাবে কথা বলবে যেন তার সতের বছর বয়স।
-তাহলে সে তোমার মতো হয়েছে। মনে আছে তুমি ছোট্ট মানুষ ছিলে কিন্তু কথা বলতে বড়দের মতো। তোমার সাথে যে কোন বিষয় নিয়ে কথা বলা যেত।
আমার আবারও অবাক হবার পালা। এতোদিন ভাবতাম আমার ভাবুক স্বভাবটির খবর শুধুমাত্র আমি আর আমার কাছের দু একজন মানুষ জানে। কিন্তু চৌদ্দবছর আগেই ম্যাডামের কাছে তা আবিষ্কৃত ছিল এটা জানার পর ক্যাডেট কলেজের টীচারদেরকে সম্পূর্ণ এক অন্য আঙ্গিকে দেখতে শুরু করলাম। অনুধাবন করতে পারলাম সেদিনের খুরশিদা ম্যাডামের ক্ষোভের কারণ।
বছরের বার মাসের মধ্যে নয় মাসই আমরা থাকি ওনাদের তত্ত্বাবধানে। সকাল, দুপুর, রাত পালাক্রমে সব সময়ই আমাদের দেখে রাখছেন। শুধু চাকুরী মনে করলে এতোটা কষ্ট বা এতোটা দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হতো না। অনেকাংশে আসলেও ওনারা পরিবারের থেকে আমাদের বেশি সময় দিচ্ছেন। আজ আমরা যে যেখানেই থাকি যে যাই করি তার পেছনে যে আমাদের সেই শিক্ষকদের একটা বড় ভুমিকা রয়েছে এ কথা না বললেই নয়।

আঠারো বছর আগে কলেজ ছেড়েছিলাম। সত্যি বলতে কি গত পনের বছরে আমাদের এক্স-ক্যাডেটদের কোন জমায়েতের কথাও মনে পরে না। তাই গত বছর দেশে গিয়ে প্রথমেই পুরোনো বন্ধুদের খোঁজ করলাম। যাদেরকে পেলাম তাদেরকে বাসায় একটা দিন আসতে বললাম।
মোটামুটি সবাইই চাকুরীজীবি। সবার সংসার আছে, সন্তান আছে তার উপরে আছে ঢাকা শহরের জ্যাম, টাক্সিক্যাব না পাওয়ার ঝামেলা। এর মধ্যেও যারা যারা পারলো তারা আসলো। একসাথে হয়ে আমরা ভুলে গেলাম যে মধ্যে দিয়ে সতেরটা বছর চলে গেছে। পুরোনো দিনের গল্পে মেতে উঠলাম। অবজ্ঞা করতে লাগলাম ক্ষণে ক্ষণে বেজে উঠা সেল ফোনকে – কারো বাসায় বাচ্চা কাদঁছে, কারো স্বামী অফিস থেকে বাসায় ফিরে ড্রয়িং রুমে বসে আছে কারণ বেডরুমের চাবি বৌয়ের কাছে, কারো বা গাড়ি চলে এসেছে তাকে নিয়ে যেতে। এমনি হাজারো পিছুটানের মাঝেও অন্তত কিছুটা সময় সব কিছু ভুলে গিয়ে সেই ক্যাডেট কলেজের সোনালী দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছিলাম। আমরা মোটামুটি পয়ত্রিশের সব মহিলারা কি এক আশ্চর্য পরশ পাথরের স্পর্শে কিছুক্ষনের জন্য হলেও সেই সতের আঠারো বছরের তারুন্যে ফিরে গিয়েছিলাম।
রূপকথার সিন্ডারেলাকে ফেইরী গড মাদারের বেঁধে দেওয়া সময় রাত বারটার মতো আমরাও একসময় বাস্তবতার বেঁধে দেওয়া সময় অতিক্রম করে ফেলি। ধীরে ধীরে এক এক করে সবাই তার নীরে ফিরে যায়। ততক্ষনে আমরা বুঝে গেছি সেই পরশ পাথরের রহস্য। এও জেনে গেছি এই পরশ পাথরের জোরে যখনই সবাই এক হবো তখনই আবার ফিরে যেতে পারবো সেই ফেলে আসা তারুন্যে। সে রহস্যটা আসলে কি? আমাদের সোনালী ক্যাডেট জীবনের অßান স্মতি।

৮,৯৯৫ বার দেখা হয়েছে

১১২ টি মন্তব্য : “অতীত বয়ান – কেউ যদি শুনতে চায় (শেষ পর্ব)”

  1. স্মৃতিচারণ পড়তে পড়তে কেমন যেন হিপনোটাইজ হয়ে যাই...
    সতের বছরের আগের স্মৃতিরা জেগে উঠেছে তা পড়ে আমার কেমন যেন অনুভূতি হলো...... হয়ত বেঁচে থাকলে একদিন আমরাও...... 🙁

    সময় খুব নির্মম। 🙁 🙁

    আপু, লেখাটা খুব ভালো লাগলো। আপনারা কে কোথায় আছেন পড়ে আমি বিষ্মিত! ২৫ জন ডাক্তার!! :boss: :boss:

    জবাব দিন
  2. রকিব (০১-০৭)

    অসাধারণ। :boss: :boss: এ অনুভূতিটুকু বোধকরি আমাদের সবার। অনেক আগে মইনুল ভাইয়ের বলা একটা কথা মনে পড়ছে, "আমাদের সবচেয়ে বড় অ্যাচিভমেন্ট হলো ক্যাডেট কলেজে চান্স পাওয়া।"


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  3. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    তোমাদের সবাইকে ধন্যবাদ পড়ার জন্য। কিন্তু এখানে একটা সমস্যা দেখতে পারছি। আমি মডারেশনের জন্য ১ম আর শেষ দুটো পর্বই দিয়েছিলাম। এখানে দেখছি প্রথম পর্বটা না ছেপে শেষ পর্বটা আগে দিয়ে দিয়েছে। এখন কি করা যায়?


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
  4. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)

    স্মৃতিচারণ...... পড়লেই মন উদাস হয়ে যায়... :thumbup:

    আমরাও একদিন এমন করে স্মৃতিচারণ করবো ইনশাল্লাহ... :awesome: :awesome:

    ব্লগে স্বাগতম আপু... লেখাটা দারুন হয়েছে... :salute: :salute:

    জবাব দিন
  5. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ব্লগে স্বাগতম আপু... অসাধারন লাগল... আশা করি নিয়মিত আপনার লেখা পাব।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  6. পুরো লেখাটা পড়লাম। কম্পিউটারে বড় লেখা পড়তে ভালো লাগে না। চোখে অসুবিধা হয়। কিন্তু আজ এত বড় লেখা পড়েও মনে হল, লেখাটা এত ছোট কেন? কিছু মনে করবেন না আপু, এখন আমি হাউমাউ করে কাঁদছি।

    জবাব দিন
  7. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)
    এতোদিন ভাবতাম আমার ভাবুক স্বভাবটির খবর শুধুমাত্র আমি আর আমার কাছের দু একজন মানুষ জানে। কিন্তু চৌদ্দবছর আগেই ম্যাডামের কাছে তা আবিষ্কৃত ছিল এটা জানার পর ক্যাডেট কলেজের টীচারদেরকে সম্পূর্ণ এক অন্য আঙ্গিকে দেখতে শুরু করলাম।

    আমিও মনে করতাম কলেজের তিনশ ক্যাডেটের মধ্যে আমাকে বুঝি কেউ খেয়ালই করে না - নামও হয়তো জানে না। কিন্তু ক্লাস টেনে ওঠার পর ফর্ম মাস্টার শামীম আখতার স্যারের (ভূগোল) এক মন্তব্যে এই ভুল খুব ভালোভাবেই ভেঙ্গেছিল।

    এই পর্বটা আগের চেয়েও অসাধারণ :boss: :boss: ।


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  8. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    ওয়াহিদা আপু,

    ক্যাডেট কলেজ নিয়ে স্মৃতিচারণ সম্পর্কিত সেরা লেখাগুলোর একটি এটি-আমি নিশ্চিত দ্বিমত করার মত কেউ নেই এটা নিয়ে।পরীক্ষা দিয়ে আসি এর পর সময় নিয়ে লম্বা কমেন্ট করব।

    এই ফায়সাল , শিজ্ঞিরি রকিবকে বল আপুকে কড়া লিকার ফ্রেশ পাত্তি এক কাপ গরমাগরম চা দিতে x-(

    জবাব দিন
  9. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    দুর্দান্ত স্মৃতিচারণ শান্তাপু :hatsoff: :hatsoff:
    একজন দারুণ প্রকৌশলির সাথে সাথে আপনি দারুণ একজন লেখকও 🙂
    মাত্র দুটো পর্বেই শেষ করে দিলেন 🙁


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  10. তানভীর (৯৪-০০)

    শান্তাপু, চমৎকার একটা লেখা, একটানে পড়ে গেলাম দুইটা পর্ব। :boss:

    আমাদের সবার গেট-টুগেদারগুলো মনে হয় একই রকমের, একদম সেই কৈশোরের কলেজ জীবনে ফিরে যাওয়া।

    আপু, আপনার কাছ থেকে কিন্তু আরও অনেক লেখার দাবী জানিয়ে গেলাম। 🙂

    জবাব দিন
  11. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    এক লেখায় তুমি অনেক জমানো স্মৃতি উপুর করে দিয়েছো। চমৎকার। আমরা এখনো শিক্ষকদের স্মৃতিগুলো ভীষণভাবে স্মরণ করি। আরো লিখো। থেমো না কিন্তু। :hatsoff:


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  12. হাসান (১৯৯৬-২০০২)
    এখনও স্বপ্ন দেখি সব কিছু ছেড়ে দিয়ে পুরোদস্তুর লেখক বনে গেছি।

    বেস্ট অফ লাক। আমাকে কিছু টিপস দিয়েন, লিখতে না পারলেও আমিও এমন স্বপ্ন দেখি :dreamy:

    দুটো পোস্টই অসাধারণ লাগলো :hatsoff:

    জবাব দিন
  13. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    ভালো লাগলো, খুব ভালো লাগলো লেখাটা। কিন্তু প্রথম পর্ব কোথায়?
    কেবল আমিই কি খুঁঝে পাচ্ছিনা?
    আচ্ছা তুমি তাহলে সুদীপা-র ব্যাচমেট, তাইনা?
    আর সুমনা আর আলফের এক ব্যাচ জুনিয়র..

    জবাব দিন
  14. রাশেদ (৯৯-০৫)

    শান্তাপু লেখাটা পড়তে পড়তে দেরী হয়ে গেল তাই আগেই দেখি সবাই সবকিছু বলে দিয়েছে। আসলে অনেকদিন ব্লগে কলেজের স্মৃতি নিয়ে এরকম দারুণ কিছু পড়া হয় নি। লেখাটা খুব ভাল লাগল আপু। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত দেখা হবে এইখানে অন্য কোন লেখায় 🙂


    মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

    জবাব দিন
        • খেকজ খেকজ

          পড়াশোনা ছাড়া পরীক্ষা দিয়া এইবার শান্তাপুর পোস্ট পড়তে আইছেন নি মিয়া ভাই??
          আউলা ঝাউলা কথা কইতাছেন দেখি আবার...... কী খেয়েছেন একটু আগে বলেন দিকিনি... 😛

          আমি যে দেখছি উপায়ন্তর না দেখে আকাশদাকে ডাকতে বাধ্য হব... আপনার হাত থেকে উদ্ধার আর কীভাবে পাবো!!

          আকাশদা... ও আকাশদা... দেখে যান দিকিনি ............

          জবাব দিন
              • রকিব (০১-০৭)

                দুইন্যাআ থেইকা ইন্সাফ উইঠাই গেলো মনে হয়। এই যে ফ্রি তে অক্সিজেন দিয়া কার্বো গুলান গিলা ফেলাই, সেই বৃক্ষজাতির গায়ে আপনেরা কুঠার চালান। মাস্ফ্যু ভাই, আন্দা ভাই, সাদিদ ভাই, আমার কী হইবো 😛
                বৃক্ষসেনার কিছু হলে জ্বলবে আগুন :grr: :grr: ঘরে ঘরে।


                আমি তবু বলি:
                এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

                জবাব দিন
                  • রকিব (০১-০৭)

                    আসুন শুধু তর্কের খাতিরে তর্ক না করে আমার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলুন, "বৃক্ষ রোপন করুন আর আপনার ভবিষৎকে একটি দূষন মুক্ত পরিবেশ দিন।" (খিয়াল কইরা 😛 )


                    আমি তবু বলি:
                    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

                    জবাব দিন
                    • সেইদিন এক পরিবেশ বিজ্ঞানীর লেখা একটা কলামে পড়লাম, কিছু কিছু বৃক্ষ পরিবেশ এর জন্য কিছুই রাখে না...
                      যেমন ইউক্যালিপ্টাস গাছে পোকামাকড় কিছুই আসে না... নিম্নমানের কাঠ... 😕 😕

                      যদি সিসিবি'তে এইসব বৃক্ষ পাওয়া যায়, তাহলে দক্ষিণে সুন্দরবন এলাকার কাঠুরিয়া বরিশালের আকাশদাকে ডেকে সাহায্য চাইব বিলক্ষণ 😀

                    • রকিব (০১-০৭)

                      শুনেন আমাগোরে নিয়া কোবতেও লেখা হয়। পইড়া দেখেনঃ
                      বৃক্ষের ভাগ্যকে ঈর্ষা করি-
                      (পূর্ণেন্দু পত্রী)

                      বৃক্ষের ভাগ্যকে ঈর্ষা করি।
                      নিজের বেদনা থেকে নিজেই ফোটায় পুস্পদল।
                      নিজের কস্তুরী গন্ধে নিজেই বিহ্বল।
                      বিদীর্ণ বল্কলে বাজে বসন্তের বাঁশরী বারংবার
                      আত্মজ কুসুমগুলি সহস্র চুম্বনচিহ্নে অলংকৃত করে ওষ্ঠতল।

                      আমি একা ফুটিতে পারি না।
                      আমি একা ফোটাতে পারি না।
                      রক্তের বিষাদ থেকে একটি আরক্তিম কুসুমও।
                      আমাকে বৃক্ষের ভাগ্য তুমি দিতে পারো।

                      বহুজন্ম বসন্তের অম্লান মঞ্জুরী ফুটে আছো।
                      নয়নের পথে দীর্ঘ ছায়াময় বনবীথিতল
                      ওষ্ঠের পল্লব জুড়ে পুস্প বিচ্ছুরন।
                      আমাকে বৃক্ষের ভাগ্য তুমি দিতে পারো।


                      আমি তবু বলি:
                      এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

                    • রকিব (০১-০৭)

                      আকাশদা কি পার্ট টাইম কাঠুরিয়ার জব নিছেন নাকী?
                      তথ্যসূত্রঃ সুন্দরবন এলাকার কাঠুরিয়া বরিশালের আকাশদাকে (উপ্রে দেখেন :grr: :grr: )


                      আমি তবু বলি:
                      এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

                    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

                      B-) কোবতেটা বিরিক্ষকে নিয়া ল্যাকা হইছিল। তাছাড়া রবি ঠাকুরের বৃক্ষ বন্দনা তো জেসিসির জাতীয় কবিতার মর্যাদাপ্রাপ্ত।আছে আর কুনো কলেজ যার জাতীয় কবি স্বয়ং বিশ্বকবি? পিসিসির জাতীয় কবি এলটন জন কিন্তু সে তো রবি ঠাকুরের ধারে কাছেও না B-)

                      (সাম্প্রদায়িক ও উস্কানিমূলক কমেন্টের জন্য নিজেই নিজের ভ্যাঞ্চাইয়া অনেক আগেই আবেদনপত্র জমা দিয়া দিছি 😀 )

                    • শুনেন আমাগোরে নিয়া কোবতেও লেখা হয়। পইড়া দেখেনঃ
                      বৃক্ষের ভাগ্যকে ঈর্ষা করি-
                      (পূর্ণেন্দু পত্রী)

                      পরিষ্কার দেখতে পাইতেছি পূর্ণেন্দু পত্রী লেখা আছে। আবার কয় এইটা নাকি রবীন্দ্রনাথ :bash: :bash: :bash: বৃক্ষ সম্প্রদায়ের এই অবস্থা দেখে আমি যারপরনাই বিরক্ত। বিশ্বকবিকে অপমান করার স্পর্ধা দেখে আমি স্তম্ভিত
                      :duel: :duel: :duel: :duel:
                      অর্ধশিক্ষায় শিক্ষিত সাম্প্রদায়িক এইসব বিকারসম্পন্ন কথা যারা বলেন তাদের ব্যান চাই

                    • রকিব (০১-০৭)

                      😛

                      😛
                      তাছাড়া রবি ঠাকুরের বৃক্ষ বন্দনা তো জেসিসির জাতীয় কবিতার মর্যাদাপ্রাপ্ত।

                      মাস্ফ্যু ভাই তো ভিন্ন একটা কবিতার কথা বলছেন।
                      এইযে কয়েক লাইনঃ

                      অন্ধ ভূমিগর্ভ হতে শুনেছিলে সূর্যের আহ্বান
                      প্রাণের প্রথম জাগরণে, তুমি বৃক্ষ আদিপ্রাণ
                      ঊর্ধ্বশীর্ষে উচ্চারিলে আলোকের প্রথম বন্দনা
                      ছন্দহীন পাষাণের বক্ষ­ পরে আনিলে বেদনা
                      নি:সাড় নিষ্ঠুর মরুস্খলে,

                      সুন্দরের প্রাণমূর্তিখানি
                      মৃত্তিকার মর্তপটে দিলে তুমি প্রথম বাখানি
                      টানিয়া আপন প্রাণে রূপশক্তি সূর্যালোক হতে
                      আলোকের গুপ্তধন বর্ণে বর্ণে বর্ণিলে আলোতে।’

                      বুইঝা দেখেন আমরা না থাকলে রবিগুরু কবিঠাকুর কী এমনটি লিখতেন। 😀 😀

                      ­


                      আমি তবু বলি:
                      এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

  15. হাসনাইন (৯৯-০৫)
    এও জেনে গেছি এই পরশ পাথরের জোরে যখনই সবাই এক হবো তখনই আবার ফিরে যেতে পারবো সেই ফেলে আসা তারুন্যে। সে রহস্যটা আসলে কি? আমাদের সোনালী ক্যাডেট জীবনের অßান স্মতি।

    ক্যাডেট চিরতরুণ... আরেকবার প্রমাণ করলেন আপু। 🙂

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।