অনেক দিন ধরেই কিছু লিখতে পারছিনা,সবার লিখা নীরবে পড়ে যাচ্ছি আর ভাবছি যে কি লেখা যায়।কাল রাতে খবর আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা সাতদিন পিছিয়েছে তাই আজকে বসলাম কিছু আমাকে লিখতেই হবে………………………।
দেবব্রত স্যারের কথা বলি।আমরা যখন সেভেনে স্যার তখন আমাদের ফর্ম মাস্টার।কেন জানি স্যার আমাকে খুবই পছন্দ করতেন।নাহ আমি আর্টে ভালো ছিলাম না বরং এই স্যারের কল্যাণেই আমি কোনমতে এই পরীক্ষাতে পাস করে যেতাম।আমার যেন কোন সমস্যা না হয় স্যার সব সময় সেইদিকে খেয়াল রাখতেন।তাই সবাই এই স্যার টাকে যখন টীজ করতো তখন আমি চেষ্টা করতাম ওদের কথা ঘুরিয়ে দিতে এবং বেশির ভাগ সময়ই আমি সফল হতাম না।
প্রতি সপ্তাহে আমাদের ফর্ম লীডার চেঞ্জ হয়।তো আমি তখনো একবার ও হইনি ,আসলে আমার পড়ালেখার যাতে ডিসটার্ব না হয় স্যার ইচ্ছা করেই আমাকে এই দায়িত্ব দেন নাই।তো সেইদিন স্যার এসে আমাদের বলছেন বল এবার কাকে ফর্ম লীডার বানানো যায়?আমাদের এক ফ্রেন্ড শাহজাদা। ও বলতেসে স্যার রায়হান কে দেন ও এখনো একবারো হয়নাই…।ওর এইকথা শুনেই স্যার খেপে গেলো…”কিরে ব্যাটা রায়হান ফর্ম লীডার হলে তোর কি লাভ হবেরে???যা তুই বরং একটা কাজ কর ,বাইরে গিয়ে ব্যান্ড হয়ে থাক।।”বেচারা শাহাজাদা আমাকে ফর্ম লীডার বানাতে গিয়ে পুরা এক ঘন্টা করিডরে ব্যান্ড হয়ে থাকলো।
আমরা ক্লাস এইটে ।তখন সবাইকে স্যার প্যাস্টেল কালার কিনতে বলছেন এবং এইটা না থাকলে চরম শাস্তি হবে।আমার তখন সমস্যা।প্যাস্টেল কালারের দাম তখন অনেক,২০০ টাকার মতন।আব্বু মারা গেছেন তাই আমিও বাসায় এইটা কিনতে আর চাপ দেই নাই,ভাবলাম দেখি কি হয়।তো স্যার আসছেন ক্লাসে।আজকে চেক করা হবে কার কার নাই।তো ১০ ১২ জনের সাথে আমিও দাড়ালাম ।কেন যেন স্যার সেদিন আর কাউকে কিছু বললেন না ।শুধু বললেন প্যারেন্টস ডের পর যেন সবার কাছে থাকে।দুদিন পর রাতের প্রেপে স্যার ছিলেন ডিউটেতে।স্যার আমাদের ক্লাসে এসে ডায়াসের ভেতর কি যেন রাখলেন,আর আমাকে বললেন তোর জন্যে একটা জিনিস আছে,প্রেপ শেষ হলে ডায়াসের ভেতর থেকে নিয়ে যাবি কেউ যেন না দেখে।পরে আমি রুমে গিয়ে দেখলাম প্যাকেটের ভেতরে এক্কেবারে নতুন একটা প্যাস্টেল কালার। এটা দেখে আমার চোখে পানি চলে এসেছিলো।
জাফর ইকবাল স্যারের কাছে মাসরুফ ভাইর মেইল টা পড়ে দেবব্রত স্যারের কথা মনে পড়ে গেলো।
“স্যার আপনি যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন”
আমাদের আরেক ফর্ম মাস্টারের কথা বলি।রুহুল আমিন স্যার(সিনহা)।দেবব্রত স্যার যাবার পর এই স্যার আমাদের ফর্ম মাস্টার।আমি তখন ক্লাস নাইন আর তপু ভাইয়া ইলেভেনে।একবার বাড়ি যাবার আগের দিন ক্লাসে স্যার আসছেন।ক্লাসের টপিক হলো…সেন্স অফ প্রোপরসন।অনেক কথা বললেন।শেষ কথা হলো…”তোমরা বাসা থেকে আসার সময় মাকে জিজ্ঞাসা করবা মা আমার জন্যে তুমি কি দোয়া করবা?মা যদি বলে বাবা ভালো করে খাবি আর শরীরের যত্ন নিবি তাইলে বুঝবা তোমার পারফরম্যান্স ভালো আর মা যদি বলে বাবা শয়তানী কম করবি আর স্যারদের কথা শুনবি তাইলে বুঝবা তোমার ঘটনা খারাপ …..
বাসায় আসলাম।আনন্দের ২০ টা দিন ফুরুত করে চলে গেলো।তো আসার আগের দিন আমি আম্মুকে বলতেছি…”আম্মু আপনি তপু ভাইয়াকে কি দোয়া করবেন…আম্মু বলতেছে বাবা খাবি ঠিকমতন আর বেশি পড়ালেখা করে শরীর খারাপ করিস না। আর আমার জন্যে কি দোয়া?? “বাবা তুই এক্কেবারে দুষ্টামি করিস না,পড়ালেখা করিস ঠিকমতন আর ভাইয়া আর স্যারদের কথা শুনবি…..”
তপু ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ওর মুখের বাঁকা হাসি দেখে বুঝতে পারলাম “সেন্স অফ প্রোপরসন”এর লেকচারটা রুহুলআমিন স্যার ওদেরকেও দিয়েছেন……………!!!!!
মনে রাখার মতো একটা আর্টিকেল। দিন ১৫ আগে আমি আমাদের সময়ের ভয়ঙ্কর রাগী মোল্লা স্যারের সাথে সেল ফোনে কথা বলছিলাম। কথা বলার ফাঁকে একসময় খেয়াল করলাম আমার দু'চোখ আর্দ্র হয়ে আসছে। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় আমি নুয়ে পড়ছি। জাফর ইকবাল স্যার কি শিক্ষকের প্রতি ক্যাডেটদের এই ভালোবাসার খোঁজ রাখেন?!
সৈয়দ শফি
বিসিসি (১৯৮৬-৯২)
আই সেকেন্ড ইউ শফি ভাই............
মোল্লা স্যারের তুলনাই হয় না।
Life is Mad.
"জাফর ইকবাল স্যার কি শিক্ষকের প্রতি ক্যাডেটদের এই ভালোবাসার খোঁজ রাখেন?"----- >এক্কেরে হাছা কতা....
@কনক
১। সেভেনে থাকতেই আপনার বাবা মারা যান??
২। কামরুলতপু ভাই আপনার ভাই?
৩। সিনহা স্যার কি ইসলামিয়াতের সিনহা স্যার?
তোরা দুই ভাই এর কোন জন যে বেশি ভাল লিখিস বলা কঠিন। ধন্য তোদের মা যিনি এমন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
একদম হাসা কথা।
কামরুল ভাইকে নিয়ে আমার একটা লিখা লিখাইর ইচ্ছা।অবশ্যই সত্য কাহিনী এবং আমার নিজের জীবনেরই। সময় করতে পারলেই এই মানুষ্টার প্রতি আমি আমার কৃতজ্ঞতা আরো একবার সবার সামনে স্বীকার করতে চাই।
Dr. Jafor ke kei keo ai lekhata mail kore diben??? amar mone hoy valo hobe. Uni amar mail er reply den nai keno bujlam na...
@আলম ভাই(আমি ৯৮ ব্যাচ,তাই নো "আপনি")
১.আমার সিক্সে থাকতে আব্বু মারা গেসেন।
২.কামরুল ভাই আমার ভাই এবং কলেজের গাইড।
৩.সিনহা স্যার আমাদের কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতেন,তবে কুমিল্লায় উনি ইসলামিয়াত পড়াতেন।
@মাসরুফ ভাই
থ্যাঙ্কু....
@Konok ... tomra dui vai ak room e cila ... ai ta to thik na ... tumi to kono punishment kao ni ... tai na
@মেহদি ভাইয়া
অল্পের জন্য দুইভাই একরুমে থাকতে পারি নাই,তপু ভাইয়া আমার পাশের রুমে ছিলো তবে দুই রুমের মাঝখানে একটা ফুটা ছিলো।
ফিজিকাল পানিশমেন্ট কম খাইছি কিন্তু মেন্টাল পানিশমেন্ট যা খাইছি তা নিয়ে একটা ব্লগ লিখা যাবে...কিছু করলেই এক কথা " কামরুলের ভাই হয়ে তুমি এমন হইলা ক্যামনে??বলেন ভাইয়া ক্যামন লাগে এইসব কথা শুনতে??
সিনহা স্যার খুব স্মার্ট ও ব্রিলিয়ান্ট লোক ছিলেন। মাদ্রাসা বোর্ড থেকে স্ট্যান্ডসহ দাখিল-আলিম-কামিল পড়ার পর, যতদূর জানি, ইউনিভার্সিটি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স-মাষ্টার্স করেন। তাই সিলেটে গিয়ে সাবজেক্ট চেঞ্জ করেন!
একবার জুম্মা নামাজে হুজুর ছিলোনা বলে ওনিই খতীবের কাজ করেছিলেন, তবে কোনো বই দেখে রিডিং পড়েননি, বাংলা ও আরবীতে অনর্গল খুতবা দিয়েছিলেন।
ওনি কিন্তু চমত্কার ধর্ম নোট করে দিতেন, প্রতি শব্দের অর্থসহ সূরাগুলো শিখাতেন, আমাদের সবার ধর্মে লেটার মার্কসের পেছনে তাঁর অবদান ছিল।
Alam...amder dhorme later marks???? amra na grading system e porikkha disi???!!??
😆
@শাহেদ দোস্ত
গ্রেডিং সিস্টেমে বলে আমরা কি ধর্ম পরীক্ষা দেই নাই??
বাংলা-ইংরেজি ছাড়া আমাদের সব বিষয়ে A+ ছিলো- মানে কি- ধর্মে লেটার না পাওয়া?
লেটার শব্দটা একটি সার্বজনীন শব্দ, এই ব্লগের আমাদের যতো সিনিয়র আছে সবারই পরিচিত/ব্যবহৃত শব্দ হলো লেটার, আর সিনহা স্যারের প্রসঙ্গটা আসছে সিনিয়রদের ক্যাডেট জীবনকালের সাথেই।
(Try 2 get things from their simplest meaning. অন্য কেউ শব্দটা নিয়ে কাড়াকাড়ি করলে আমি কিন্তু জবাবই দিতাম না।)
sorry দোস্ত আলম...আসলে তুই হয়তো জানিস না...আমি ধর্ম তে লেটার পাই নাই...আমাদের পুরা intake এ আমি one of those two unlucky...so তোর ধর্ম এর েলটার এর কথা শুনে মাথা গরম হয়ে গেসিল...anyways....I will try to think simply from now on....
accha eita kon shahed?CCC er durdanto guiterist shahed naki?oi beta tui kemon asos?shala net e asho jindegite to akta knock o korona....
ji mashroof...eita shei shahed....
BTW...ami guitar ar bajai na........bhalo lage na ar.....
sorry for not knocking in the net,,,,,,may be next time....
আর্ট কলেজের স্যার দেবব্রত মল্লিক
অ্যাঁ বাবু অ্যাঁ বাবু করতো...
কনক ভাই, গেঞ্জি হয়ে গেছে। আমাদের ব্যাচের বুয়েটের রহমানের (মেকানিকাল, সিসিসি) সাথে একটু আলাপ করেন। ওর কাছ থেকে তপু ভাই আর আপনারটা নিয়ে নিয়েন।
ahh.. deba...
দেবব্রত স্যার ক্লাসের প্রথম দিন থেকেই ক্যানো যেন আমারে দেখতে পারতোনা।ক্লাস এইটের প্রথম দিককার কোন একটা ক্লাসেই ব্যাড সাউন্ড করতে গিয়ে ধরা খাইসিলাম। বোধহয় এই জন্যই
আমার ক্যাডেট লাইফে খাওয়া তেরটা চড়ের মধ্যে তিনটা তার অবদান। 😆
তারে নিয়া অনেক কাহিনি মনে পইড়া গেল। আল্লাহ যদি এই সেমিস্টার সহি সালামতে পাশ করায় তাহলে ইনশাল্লাহ সেগুলার কথা লিখবো।
লেখা পুরা সেইরকম হইসে।
ahh.. deba…!!! 😉 😆
@ raihan
amader genji ker kas theke nibo??????rahman???
হ রহমানের কাছে কালকে পাবি।
ok thnx...
raihan
rahmaner cell number ta taratari dao....
rahmam--01817-599682
@abir.....amarta raikha dis polapain.......senior manush...tar jinish maira dish na......teka poysa ja lage dibe gouri sen....
গেঞ্জি আমার কাছে আছে আপ্নের টা।
"@abir…..amarta raikha dis polapain…….senior manush…tar jinish maira dish na……teka poysa ja lage dibe gouri sen…."
টাকা কত লাগবে ভাবতেছি। 🙂
এত্ত সুন্দর লিখা!!! অনেক দেরী করে পড়লাম। ক্যাডেট কলেজের এই স্যার ম্যাডামদের জন্যই আমার মতন মানুষগুলা এখনো বেচেবর্তে আছে।
দেবব্রত মল্লিক স্যারের সুনজরে ছিলাম আমিও।
ক্লাস এইটের থার্ডটার্মের অংক পরীক্ষার দিন আবু সাঈদ বিশ্বাস স্যার (ভিপি) এসে সবার ক্যালকুলেটর চেক করা শুরু করলেন। সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না, এটা আমরা কেউ জানতাম না। উনি আমাদের ফর্মে এসেই সবার ক্যালকুলেটর আছড়ে ভাঙা শুরু করলেন। আমার এত সাধের 570w ক্যালকুলেটরটার আয়ু শেষ ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেল।
কপালগুণে সেদিন দেবব্রত স্যার আমাদের ফর্মে গার্ড ছিলেন। ভিপি স্যার আমার কাছে আসতেই দেবব্রত স্যার আমার হাত থেকে ক্যালকুলেটরটা কেড়ে নিয়ে বললেন, "আমাকে দেন স্যার, দুই একটা আমিও ভাঙি..."
ভিপি স্যার আমার পেছনের জনেরটা ভাঙার জন্য এগিয়ে গেলেন। দেবব্রত স্যার তাড়াতাড়ি আমার ডেস্কের ভিতরে ক্যালকুলেটরটা ঢুকিয়ে রেখে আমাকে চুপ থাকতে ইশারা করলেন।
শুধু উনার জন্যই আজ পর্যন্ত সেই ক্যালকুলেটরটা আছে। ইনশাআল্লাহ, এই ফাইনাল পরীক্ষাতেও আমার সাথেই থাকবে।
ক্যালকুলেটরটা দেখলেই আমার দেবব্রত স্যারের কথা মনে হয়।
why the hell he had to break the calculators??was he mentally sick?
tuhin er kahini ta suina sir ta re khub posondo hoise.. 😀
এখন যাইয়া ত্যালা। দেখ তোরে JP বানায় কিনা। 😉
[-X
ek sir re talai jp pawar kotha to konodin suni nai!! tui ki eivabe chesta korsili naki? =))
dhut..smiley kam kore na ka?? 🙁
ঐটা কোন স্মাইলি ছিলো? 😕
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
dia dakh yahoo te konta silo.. 😛
হ তুমি স্মাইমি বস। ঠিক আছে? দুনিয়ার সকল কোড তোর মুখস্থ আছে।
স্মাইমি!!!!:D
L-)
কঠিন লেখা.............
বেশি কোঠিন হৈলে তো প্রব্লেমাছে। 🙁
:clap: :clap: চমৎকার লিখা, কর্কশ কাক-কন্ঠী কনইক্কা।
অই আমাদেরকে যে রুহুল আমিন স্যার গন্ডগোলে বাসায় যাবার সময় অনেক কাহিনী বলেছিলেন ঐটা নিয়ে আর এক্তা লিখ। আমার একজ়াক্টলি মনে নাই, কিন্তু এটুকু মনে আছে যে, ঐদিনেই উঁনি আমাদের কাছে চলে এসেছিলেন আর এক,রকম আদর্শ স্যারের উদাহরণ ও হয়েছিলেন।
দেব্ব্রত স্যারের এই কাহিনীতা জানতাম না।মানুষতাকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে মনে হচ্ছে।
সবশেষে রেটিং না মাইরা পারলাম না।চমৎকার হইছে। 😉 😉