কিছু কথা….আজো মনে পড়ে..

ক্লাস নাইনের কথা।ইন্টার হাউস বাস্কেট নিয়ে খুব উত্তেজনা…নুতন নতুন ল্যাপ করা শিখেছি..মজাই আলাদা।
দেখতে দেখতে কম্পিটিশন চলে এলো।তিতুমিরের সাথে শাহজালালের খেলা।তো খেলার মাঝখানে আমি একটা ল্যাপ নিয়ে শাহাজালালের জোন ভেঙ্গে ঢুকবো…নতুন নতুন ল্যাপ তো প্রবল বেগে এসে কোনো দিকে না তাকিয়ে ল্যাপ করলাম ঠিক আমাদের এক ফ্রেন্ডের গায়ের উপর।এবং আমার হাটু গিয়ে লাগলো ঠিক ওর মিডল স্ট্যাম্পে…!!!তারপর শুধু দেখলাম ও গ্রাউন্ডে পরে গেলো আর মুখ দিয়ে শুধু পানি পরছে….সাথে সাথে আমাদের ওই প্রায়প্রয়াত বন্ধুটাকে হাসপাতালে নেওয়া হলো।আমার ত তখন মনের অবস্থা বারটা।এর কয়েক দিন আগেই মনে হয় রমন লাম্বা মারা গেছে।আমিও তখন অপির মত অপরাধ বোধে ভুগছি,খেলা শেষে ওকে গিয়ে দেখে আসলাম ।তখন ও ঠিক মত কথা বলতে পারছে না…যাই হোক আস্তে আস্তে ও ভালো হলো,আমাদের কিছু সরেস বন্ধুরা পরে আবিস্কার করেছে যে আমাদের তৎকালীন মেট্রনের নিবিড় যত্নেই!!!! নাকি আমাদের ওই প্রায়প্রয়াত বন্ধু টাকে নাকি র অকাল প্রয়াত হতে হয়নি…তবে এখনো আমাদের আড্ডাতে এই কথা আসলেই সবাই আমাকে একটা কথাই বলে..”দোসত সজিব(ছদ্মনাম) তোকে হ্মমা করলেও আমাদের ভাবি তোকে জীবনেও হ্মমা করবে না…উনার যেই হ্মতি তুই করছিস…………………………”

এরপরের কাহিনীওটাও বাস্কেটবল গ্রাউন্ডের।ক্লাস সেভেনে তখন।সবাই বাস্কেটখেলার নামে ২০ /২৫ জন মিলে ছোটাছুটি করি ,এর মধ্যে আমাদের মাসফিকের ভয়ে সবাই তটস্থ।সারাটা গ্রাউন্ড ওই খেলছে।কাউকে বল দেয় না।ওর যন্ত্রণায় আমরা অস্থির।তো একদিন ওর ধাক্কা খেয়ে আমাদের ফয়েজ গ্রাউন্ডে পরে গেলো..হাত পা কেটে একাকার অবস্থা কিন্তু পড়ে গিয়ে আমাদের ফয়েজের ডায়লগ…”মাসফিক তুই আমার একি সর্বনাশ করলি…এখন আমি পরীহ্মা দিবো কি করেএএএ …..”(এর ১৫ দিন পরে আমাদের পাহ্মিক পরীহ্মা ছিলো)…ফয়েজের এহেন বিদ্যা প্রীতি কলেযে আমার আর খুব একটা চোখে পড়েনি!!!!
এই মাসফিকেরই কাহিনী।ও আমাদের ব্যাচের প্রথম ক্যাডার(সেভেন থেকেই আমরা এইটা টের পেয়েছি যদিও) ..যাই হোক ক্লাস এইটে উঠে মাসফিকের কেন যেন ক্লাসের প্রতি অনীহা এসে গেলো।সারাটা ক্লাস আওয়ার ও টয়লেটে থাকে..জানালা দিয়ে আকাশ দেখে…এর মধ্যের একদিন শুনলাম আমাদের এই অসীম সাহসী বন্ধুটা নাকি একদিন ক্লাস আওয়ারেই কলেজের বাইরে গিয়ে ঘুরে এসেছে এবং পথ ঘাট দেখে এসেছে কিভাবে যেতে হয়,এখন উইকএন্ডে ও আবার যাবে…..এবার ওর সাথে আমাদের আরও ৪ ক্যাডার যোগ দিয়ে দিলো..এদের মধ্যেই একজন আমাদের নুজরুল,শান্ত শিস্ট সুরমা হাউসের সবচাইতে ভদ্র এই ছেলেটাকে কিছুতেই ক্যাডার গ্রুপে মানাচ্ছিলো না…তো আমি আবার ছিলাম প্রপার এবং ভীতু ক্যাডেট..যাবতীয় দুঃসাহসী কাজে আমার চরম অনীহা।আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে নজরুল কে খুব করে বুঝাতে
লাগলাম যে ক্লাস টেনেই এমন সব কাজ করা ঠিক হবেনা,তাছাড়া এর পরে কধরনের ফল হতে পারে সব ওকে বোঝালাম…ও তো খুব ভালো ছেলের মত সব বুঝে গেলো।।আমাকে বলতেসে “দোস্ত তোকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আমি এখন সব বুঝতে পারতেসি,তুই না বোঝালে তো আমি চলেই যেতাম..কি যে হত আমার তাইলে…” আমিতো খুশি যাক একটা ভালো কাজ করে ফেললাম। কিন্তু অবাক হয়ে পরের দিন শুনলাম আগের রাতে আমাদের ৪ জন কলেজের বাইরে গেছে এবং তাদের মধ্যে আমাদের নজরুল ও আছে…এবং যথারীতি ধরাও খেয়েছে…আমার মনটাই খারাপ হলো…নজরুলকে বললাম এইটা কি হোলো..তোকে এত করে বুঝলাম,তুই বুঝলিও তাও গেলি ক্যান??তখন ও আমাকে বলতেসে”দোস্ত ঘটনা হলো- তুই যখন আমাকে বুঝাইছিলি তখন তো আমি বুঝছিলামই ..কিন্তু পরে যখন মাসফিক আবার আমাকে বুঝালো কেন যাইতে হবে তখন ওইটাও আমি বুঝে গেলাম,তাই আর কি……………..”

ক্লাস ১২ এর একটা কাহিনী দিয়ে শেষ করি।সবাই তখন আস্তে আস্তে আরাম করে করে আড্ডা মেরে মেরে ড্রেস-আপ করি।তো আমাদের একজন রুম মেটের সাথে কথা বলতে বলতে ড্রেস-আপ করতেসে।ও টাওয়াল পড়ে প্যান্ট খুলে ফেললো প্রেপে যাবার জন্যে রেডি হবার জন্যে।হঠাৎ ওর একটা গল্প মনে হল টাওয়াল পড়েই বুকে হাত দিয়ে গল্প করা শুরু করলো..ওর রুমমেট তো এতক্ষন হাসতে হাসতে মজা দেখছিলো..
তারপর ওকে বলতেসে…”দোস্ত তুই তো টাওয়াল না পড়েই প্যান্ট খুলে ফেলছিস………”

১,৬০০ বার দেখা হয়েছে

১১ টি মন্তব্য : “কিছু কথা….আজো মনে পড়ে..”

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।