কলেজের প্রথম দিন। সব গাইডরা আমাদের রিসিভ করতে আসছে। আমারতো মজা। তপু ভাইয়া এসে কপালে একটা আদর দিয়ে আমাকে রিসিভ করলো (পরে শুনেছি আমাদের এক ফ্রেন্ড এইটা দেখে নাকি খুব ভয় পাইছে.. ও ভাবছিলো সব গাইডরা বুঝি এভাবেই রিসিভ করবে..!!!!!)
যাই হোক, ভাইয়া রুমে নিয়ে আসলো ..ড্রেস পরালো..সমস্যা হলো ক্যাপ পরানোর সময় …কিছুতেই আমার মাথায় ক্যাপ লাগছে না..তো তপু ভাইয়া তখন বলতেছে সমস্যা নাই কালকেই ক্যাপ মাথায় লাগবে…
আমিতো অবাক।।এইটা কিভাবে সম্ভব …আজকে যা লাগে নাই কালকে তা কি করে লাগবে..কিন্তু পরের দিন সকালে শম্ভুদা’র (আমদের কলেজের বিখ্যাত নরসুন্দর) কাছ থেকে রুমে এসেই তপু ভাইয়ার ভবিষ্যতবাণী টের পেলাম..ক্যাপ দেখি এখন আরো ঢিলা ঢিলা লাগে…হায়রে আমার কত শখের লম্বা লম্বা রেশমি চুল…..)
সেই থেকেই নাপিত আমি ভয় পাই। এমনকি কলেজ থেকে বের হয়েছি আজ ৪ বছর হয়েছে তাও আমি স্যালুনে গেলে ক্যামন ক্যামন লাগে..মনে হয় এই বুঝি ধরে ভুত বানায় ছেড়ে দিবে। যাই হোক, ক্লাস ৯ থেকেই একটু একটু পাখা হইছে.. ২/৪ টাকা শম্ভুদাকে দিয়ে সামনের দিকের চুল ২ মিলিমিটার বড় রাখা কি যে আনন্দের তা বোঝানো যায় না… (এখন যদিও মনে হয় সেই সময় ঘুষ দিছি বলেই কি আজ কপালটা এতো বড় বড় লাগে…?? চুল পরা রোধ করতে মাঝখানে একবার তো ন্যাড়াই হয়ে গেলাম…)
যাই হোক পকেটে টাকা নিয়ে গেলাম চুল কাটাতে। দেখলাম ঘুষ খেয়ে খেয়ে শম্ভুদার পকেট বেশ ফুলে ফেপে আছে…আমাদের এক ফ্রেন্ড আসছে চুল কাটাবে..কিন্তু পকেটে টাকা নাই। কি করা যায়…এমন সময় শম্ভুদার বিড়ি খাবার টাইম হলো.. উনি বাইরে গেলেন..দেখলাম আমাদের ওই ফ্রেন্ড শম্ভুদার পকেট থেকেই ১০ টাকা রেখে দিলো…পরে ওই টাকাটাই ঘুষ দিয়ে সামনের দিকে ২ মিলিমিটার চুল বড় রেখে হাসতে হাসতে বের হয়ে গেলো…..একেই মনে হয় বলে “মাছের তেলে মাছ ভাজা…”
জটিল হইছে। শম্ভুদাকে ঘুষ দেয়ার এই অভিনব পন্থা আমাদের কলেজে কেউ করছিলো কি-না জানা নাই। আমি তো ভাবতেও পারি নাই, এমন একটা কিছু করতে পারে। ক্যাডেট আসলেই জিনিস...
chorom..........
আমার এক ক্লাসমেট এর কথা।সবে মাত্র ক্লাস এইটে উঠেছি।গায়ে নতুন সিনিয়র হবার গন্ধ। বারবার শপে গিয়ে সুনীল ভাইকে বেশ গম্ভীর ভঙ্গিতে বললো
- সুনীল ভাই,সামনের চুলটা একটু বড় করে রাখবেন তো।
-আচ্চা,ঠিক আছে।
আমার বন্ধুর মুখে যুদ্ধ জয়ের হাসি।আমরা হিংসায় মরি।
ওর চুল কাটা শেষে দেখা গেল সুনীল ভাই অন্যদের চেয়ে ওর চুল আরো দুই মিলিমিটার বেশি কেটেছে ।এইবার আমাদের দাঁত দেখানোর পালা। 😀
বোঝা গেল... সেইরকম সিনিয়র হবার আরো বহুদূর বাকি।
একদম..."সেইরকম"।
চুল নিয়ে কখনোই আমার ঘুষ দিতে ইচ্ছে করে নাই। তাও মাঝে মাঝে শম্ভুদা চুল কম কাটলে বেশ ভাব ভাব লাগত। আমার কিন্তু চুল পড়ার কোন লক্ষণ নাই এখনো মাশা আল্লাহ।
এই গল্পের ঈশপীয় উপদেশঃ
কখনো ঘুষ দিতে নাই। একদিন না একদিন সেটার প্রভাগ পড়বেই।(যেমন কনকের চুল পড়ে যাচ্ছে)
নরসুন্দর শব্দটা নিয়ে একটা কাহিনী মনে এসে গেছে। ছোট কাহিনী বলে এখানে দিয়ে দিলাম।
একবার উপস্থিত বক্তৃতায় বিষয় এসেছে আমাদের কলেজের নরসুন্দর। যে পেয়েছে সে কোনভাবে নরসুন্দর কথার মানে জানেনা। পামবাজ ক্যাডেটের বক্তৃতার শুরুটা এইরকম
" আমার দৃষ্টিতে আমাদের কলেজের নরসুন্দর মানে সবচেয়ে সুন্দর নর হচ্ছে আমাদের কলেজের প্রিন্সিপ্যাল। যেমন তার ব্যক্তিত্ব ব্লাহ ব্লাহ ব্লাহ"।
হাহাহাহাহা ফলাফল অনুমেয়...
@samjhang - তোমাদের কলেজে কি চুল কাটাকুটি করার কোন সিস্টেম চালু ছিল?
@কামরুল ভাই- আমি তো ভাই জীবনে ঘুষ টূষ দেইনাই।এমনকি কোন দিন বলিও নাই যে আমার চুল বড় রাইখেন।কারণ আমার চুলের ধর্ম অনুযায়ী সেটা দেখতে সবসময়ই কেন জানি ছোট ছোট লাগে। তাইলে আমার চুল পড়তেসে ক্যান।এইভাবে চললে তো চিরকুমার সভায় একেবারে সভাপতি বানায়া দিব এক চান্সে 🙁
টাকা আসবে বৎস্য খুশিতে কেলাতে থাক। টাক এবং টাকা একসাথে আসে।
বরিশালে আমাদের ব্যাচের এক পোলা... নাম বলব না.... ক্লাস সেভেনে যখন প্রথমবার চুল কাটাইতে গেছিল তখনই চুল কাটা শেষে আস্তে করে দুই হাত উপরে তুলে দিছিল. হে হে হে...কি জন্য তুলছিল কমু? আইজ থাউক।
অভ্যাসের দোষ!
ধন্যবাদ.... ঢিঁচ্চু....
বয়েজ ক্যাডেটদের চুল লম্বা রাখতে এত উৎসাহ কেন?
@কনকঃ জটিল লিখছছ.. যাদের ঘূষ দেয়ার সামর্থ্য ছিলনা, তারা শম্ভুরে কেমন তেল মারত মনে আছে?
@তপুভাইঃ টাক আসতেছে, কিন্তু টাকাতো আসেনা =(
@সামিয়াঃ একটা জিনিসের মূল্য আমরা সেটা হারানোর পরেই টের পাই...
একটা কাহিনী না লিখে পারছিনা.. রিসেন্টলি ঘটা।
ক্যাডেট কলেজে চুল ছোট করে কাটার দুঃখেই কিনা জানিনা, হঠাৎ শখ জাগলো চুল লম্বা করার।
যেই ভাবা সেই কাজ।
বাবা-মা, আত্নীয়-সজন সবার প্রবল আপত্তির মুখে চুল লম্বা করা শুরু করলাম। প্রায় একবছর চুল কাটলাম না। মাঝখানে একবার সেলুন এ গিয়ে 'জাপানিজ পারমানেন্ট স্ট্রেইট' ও করে আসলাম।যাইহোক, লম্বা চুল নিয়ে মাত্র ভাব মারা শুরু করেছি... একদিন সকালে দাতঁ মাজার সময় আয়নায় তাকিয়ে দেখি চান্দির মাঝখানে প্রায় এক স্কয়ার ইঞ্চি জায়গায় কোন চুল নাই!
ঘটনা হল রাতে যখন ঘুমাচ্ছিলাম, মা কাচিঁ নিয়ে এসে মাঝখানের একগুচ্ছ চুল কেটে নিয়ে গেছেন।
আমার এত সাধনার লম্বাচুলের ওখানেই ম্রৃত্যু।
হাহাহাহাহা আন্টীকে ধন্যবাদ....ইউসুফ দোস্ত তুই যে সম্ভদার মেয়ের জামাই ছিলি এইটা
কি ভুলা যায়???